বৈবাহিক চুক্তি পর্ব ৫+৬

0
2006

পর্ব ৫+৬
#বৈবাহিক_চুক্তি
#লিখাঃ Liza Bhuiyan
#পর্বঃ৫

হসপিটালের বেডের পাশে বসে আছে রুশি তার পাশেই রুহান বেডে ঘুমাচ্ছে, হাতে স্যালাইন লাগানো একটু পুর্বেই ডাক্তার এসে ইঞ্জেকশন দিয়ে গেছে। অনেকদিন ভালো করে খাওয়া দাওয়া হয়নি তাই এই অবস্থা। রেডিও তে কাজ করার সুবাদে বিকাল পর্যন্ত স্টেশনেই থাকতে হতো, তারপর সুজি আর ও একসাথে ফিরতো।এরপর বাসায় এসে রান্না করে রুহানকে চাইল্ড কেয়ার থেকে আনতে যেত। সারাদিন বেচারা কি খেত না খেত কে জানে? নিজের সন্তানের মা যেরুপে খেয়াল রাখে অন্য কেউ সেরুপে রাখতে পারেনা, আর রুহানটাও বড্ড জেদি ওর হাত ছাড়া অন্য কারো হাতে খুব একটা খেতে চায় না। তাই খুব দুর্বল হওয়ার কারণে এখনো ঘুমাচ্ছে। রুশি রুহানের হাত ছেড়ে উঠে দাড়ালো তারপর কেবিন থেকে বের হলো। বর্তমানে স্কয়ার হসপিটালের ভিআইপি কেবিন বুক করেছে সে না ঠিক সে বুক করে নি যে বাচিয়েছে সে বুক করেছে। ছেলের টেনশনে এতক্ষণ এটা মাথায় না আসলেও এখন ওর অস্থির লাগছে, এই হসপিটালের নরমাল কেবিনেটই হয়তো ও এফোর্ড করতে পারবে আর তো ভি আইপি কেবিন। ওইসময় লোকটিকে তাড়াহুড়ায় কিছু বলতেও পারেনি।
হসপিটালের রিসেপশনের দিকে এগুচ্ছিলো তখন পেছন থেকে বলে উঠলো

” রিসেপশনে দিকে কেন যাচ্ছেন আপনি? কিছু লাগলে বলুন আমায়”

” নাহ, কিছু লাগবে না আমি আসলে…বিল কত হয়েছে সেটা জিজ্ঞেস করতেই যাচ্ছিলাম ”
কিছুটা সংকোচ নিয়েই কথাটা বললো রুশি

“সেকি এখন বিল জেনে কি করবেন? ডক্টর তো বললো আরো একদিন থাকতে হবে, আপনার ছেলেতো পুরোপুরি সুস্থ নয় ”

” জি, সেটা আমি জানি কিন্তু আমার একজাগায় যেতে হবে খুব জরুরি তাই ভাবছি রুহান ঘুম থেকে উঠলেই ডিসচার্জ করিয়ে চলে যাবো ”
রুশি বিনা সংকোচে কথাটা বললো কারণ ওর কাছে এতটাকা নেই তারউপর আরেকদিন থাকা মানে বিল দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া।

” দেখুন আপনার সন্তানের ভালো যদি আপনি না বুঝেন তাহলে আর কে বুঝবে? বাই এনি চান্স আপনি কি বিল নিয়ে টেনশন করছেন? ”

” না…ঠিক তা না আসলে… ” রুশি প্রশ্নটি শুনে একটু ইতস্তত বোধ করলো,

“আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন, আপনি হসপিটাল থেকে বের হওয়ার আগে বিল পে হয়ে যাবে”

“আপনি আমার এত সাহায্য করলেন আর আমি আপনার দয়া আর নিতে পারবো না, বিল আমি নিজে পে করে দিতে পারবো ইনশাহ আল্লাহ ”

” এটা আমার দায়িত্ব ছিলো কোন দয়া নয়, বাই দ্যা ওয়ে বারবার আপনি বলে সম্মধোন করতে আমার কেমন জানি লাগে, তুমি বলতে আপনাকে? ”

” সে নাহয় বলবেন কিন্তু আপনার নামটাই তো জানা হলো না ”

” ওহ আমার নাম সাহিল রেজওয়ান, ইউ ক্যান কল মি সাহিল”

” জি সাহিল, আপনি আমার অনেক বড় উপকার করেছেন আজ আপনি না হলে তো আমরা বেচেই ফিরতাম না ”

” কিন্তু আমিতো তোমাকে শুধু হসপিটালেই পৌঁছে দিয়েছি সেফলি তাহলে… ”

” মানে! যদি আপনি আমাদের বাচান নাই? তাহলে ওইযে কালো হুডি পরা লোকটি… ওয়েট আপনি তো ফরমাল ড্রেসে তাইলে ওই লোকটি কে ছিলো?” অস্থিরতায় একটু জোরেই বলে ফেললো

” রিলাক্স, প্যানিক করোনা আমার বস তোমাকে বাচিয়েছে, আমাকে বলেছে যেহেতু তোমার ছেলে অজ্ঞান হয়ে গেছে তাই হসপিটালে নিয়ে যেতে”

” ওই লোকটি আপনার বস ছিলো?যে আমাকে গান পয়েন্ট থেকে বাঁচিয়েছিল? “জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রুশি,তার চাহনি দেখে হ্যা বোধক ইশারা করলো সাহিল। রুশি চিন্তায় পড়ে গেলো

চার বছর আগের সেদিনের মত আজোও একটি লোক ওকে বাচিয়েছে, সে হাত সেই ছোঁয়া খুব কাছের মনে হয়েছিলো লোকটিকে ওর। এয়ারপোর্টের বাইরে যখন লোকটি ওকে টেনে সরিয়ে নিয়েছিল তখন রুহান চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলো ভয়ে তাই কালো হুডি পরা লোকটি ওকে টেনে কোলে নিয়ে নিয়েছিল আর ওর হাত ধরে দৌড়াতে শুরু করেছিলো তারপর সামনের গাড়ির গেট খুলে রুহানকে ভেতরে রেখে ওকে ভেতরে বসিয়ে দিয়েছিলো, রুশি রুহানকে নিয়ে অনেক প্যানিক ছিলো তাই সামনের সিটে কে বসেছে খেয়ালি করেনি। কে ওই লোকটি যাকে এত পরিচিত মনে হচ্ছিলো!! তবে কি সে রুহানের বাব? যদি সে হয় তাহলে তার চেহারাও আমি দেখতে চাই না, ঘৃণা করি আমি ওই লোকটিকে যার জন্য আমার পুরো জীবন নষ্ট হয়ে গেছে, যেখানে বড় হয়ে কিছু একটা হওয়ার সপ্ন দেখতাম, এত কষ্ট করে পড়াশুনার খরচ চালিয়েছি সেখানে লোকটির কারণে আমি আর পড়াশুনা করতে পারিনি, ঘর ছাড়া হয়েছি আমি নিজ দেশ ছেড়ে এত দূরে ছিলাম এতদিন আমার তারুণ্য শেষ হয়ে গেছে, আমি বিবাহিত হয়েও কাউকে বলতে পারিনি আমি বিবাহিত ।আমি চাইনা ওই লোকটি কখনো আমার সামনে আসুক কখনো না!

🌸🌸🌸

হাতে গান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সায়ান, তার সামনেই চেয়ারে বাধা একটি লোক যাকে দেখেই বুঝা যাচ্ছে এতক্ষণ বেদরম পেটানো হয়েছে

” শেষ বারের মত বলছি বল তোকে কে পাঠিয়েছে? তোদের ওই গোলাগুলির উদ্দেশ্য ছিলো আমাকে মারা তাইনা?তাহলে আমার সাথে লড়াই করতি নিরিহ মানুষ গুলোকে কেন মারছিস? বল কেন? ”

” আমাকে মেরে ফেললেও আমি বলবো না, কারণ তুই আমার শত্রু, আমি তোর হার দেখতে চাই ”

” মরার যখন এতই শখ তাহলে মর”
বলেই গুলিতে ঝাঁজরা করে ফেললো লোকটির বুক,কপালে আংগুল ঘষছে রাগে তখনি ফোন বেজে উঠলো, সবাই কার ফোন বাজছে তা খুঁজতে লাগলো কারণ তাদের বস অনেক রেগে আছে নেক্সট টার্গেট কে হয় কে জানে! সবাই খুঁজে যখন বুঝতে পারলো তাদের না তখন একজন গিয়ে মৃত ব্যাক্তির বডি খোজা শুরু করলো এবং একটা মোবাইল পেয়েও গেলো। কলটি ধরে লাউডস্পিকারে রাখতেই একটা পুরুষালী কণ্ঠস্বর শুনা গেলো

” অলরেডি মেরে ফেলেছিস? তুই কি ভাবছিস আমার লোককে তোকে ধরা খেতে কেন দিয়েছি? যাতে তোকে এই মেসেজ দিতে পারি যে আমিই তোকে মারতে পাঠিয়েছি ”
” কে তুই, আমার পেছনে কেন লেগেছিস? তুই জানিস আমি কে?কুকুরের মত পেছন থেকে ঘেউঘেউ করেছিস কেন ? সাহস থাকলে সামনে আয় ”
” ইশশ এতো বছরেও তোর স্বভাব বদদালো না, সময় হলেই সামনে আসবো তখন দেখবি কে কুকুর আর কে বাঘ, ওহ তোকে তো একটা কথা বলাই হয়নি যাকে চারবছর ধরব খুজছিস পেয়েছিস তাকে? আমি কিন্তু পেয়ে গেছি,সেই দেখতে আমার তো নেশা ধরে গেছে”
” মুখ সামলে কথা বল, কোথায় দেখেছিস ওকে? হ্যালো, হ্যালো… ডেম ইট ফোন কেটে দিসে আবার প্রাইভেট নাম্বার দিয়ে ফোন করেছে যাতে ট্রেস করতে না পারে ”

সায়ান ভাবছে কে এই শত্রু কথা শুনে মনে হচ্ছে খুব ভালো করে চিনে।নাহ তাড়াতাড়ি খুজে বের করতে হবে ওকে আর বউ…নাহ তাড়াতাড়ি খুজে বের করতে হবে ওকে যদি কোন ক্ষতি করে?

হসপিটালের কেবিনে রুশি আর রুহান ঘুমিয়ে আছে আর তাদের খুব গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে কেউ, ঠোটের কোনে তার হাসি ঝুলছে রহস্যময় হাসি। আচমকা রুশির ঘুম ভেংগে গেলো, ওর মনে হচ্ছিলো ওকে কেউ দেখছে কিন্তু চোখ খুলে কাউকে দেখতে পেলো না। আশপাশটা ভালো করে দেখে রুহানকে জড়িয়ে ধরে ঘুমানোর চেষ্টা করলো, নাহ কাল সকালেই এখান থেকে চলে যাবে ও।

#পর্বঃ৬

কেবিনের বাইরে দাঁড়িয়ে একজন খুব কষ্টে নিজের হাসি আটকানোর চেষ্টা করছে, এতক্ষণ আটকাতে পারলেও এবার শব্দ করে হেসে ফেললো, তখনি ভেতর থেকে কম্পিত কন্ঠে আওয়াজ এলো “কে? বাইরে কি কেউ আছেন?”
উচ্চস্বরে হাহা করে হাসতে যাবে তখনি কেউ একজন টেনে নিয়ে গেলো ব্যাক্তিটিকে

“হা হা হা, এত ভিতু যে বুঝতে পারছে কেবিনে কেউ ছিলো তবুও উঠে চেক না করে চোখ বন্ধ করে ঘুমের ভান করছে, আবার এখন হাসির আওয়াজ শুনেছে তবুও ভয়ে বেরিয়ে আসছে না। ভিতুর ডিম কোথাকার! এই মেয়ে নাকি আবার ছেলেটিকে বাচানোর জন্য গান পয়েন্টে উল্টো দিকে দাঁড়িয়েছে!”

“বস আপনি ঠিক আছেন? না মানে আপনি কি ড্রিংক বেশি করে ফেলেছেন? আর ইউ ড্রাংক? ”

” শাট আপ সাহিল, আমি ড্রিংক করলেও আমার নেশা হয়না আর আজতো টাচ পর্যন্ত করিনি ”

” না মানে আপনাকে এই প্রথম হাসতে দেখলাম, আপনি এত সুন্দর করে হাসতেও পারেন জানা ছিলো না, ছেলে হওয়েই ক্রাশ খেয়েছি, মেয়ে হলেতো ডিরেক্ট প্রেমে পরতাম ”

সাহিলের কথা শুনে সায়ান ভ্রু কুচকে তাকালো ” বাই এনি চান্স তোমার কোন সমস্যা নেই তো? দেখ তাহলে কিন্তু সাবধান, আমি কিন্তু মোটেও ওই টাইপ নই ”

” ছি ছি তওবা তওবা এসব কি বলেন, আমার গার্লফ্রেন্ড আছে ”

” থাকলেই ভালো ” বলে ভ্রু কুচকে গাড়ির দিকে হাটা শুরু করলো।

“আচ্ছা শুনো এই যে এই মেয়েটির সব ইনফরমেশন চাই আমার, আগে কোথায় ছিলো, কোন দেশ থেকে এসেছে যাবতীয় সব ডিটেইলস ”

” ইয়েস বস, কিন্তু বস আপনি এই মেয়েটাকে নিয়ে এত ইন্টারেস্টেড কেন? আই মিন মেয়েটার অলরেডি একটা ছেলে আছে দেখে মনে হচ্ছে বিবাহিত তাহলে… না মানে দাদাজি এত বছর আপনাকে বিয়ে করানোর জন্য এত সুন্দরি মেয়ে দেখালো আর আপনি কিনা এই বিবাহিত মেয়ের দিকে… ”

পরের অংশ মিনমিনে কন্ঠে বললেও সায়ান স্পষ্ট শুনতে পেলো
” তোমাকে যতটুকু বলা হয়েছে ততটুকু করো আর ওদের দিকে খেয়াল রেখো এক মিনিটের জন্যও যেন এদিক সেদিক না হয়”

” জি বস” সাহিল এই প্রথম নিজের বসকে কোন মেয়ের প্রতি খেয়াল রাখতে দেখে সত্যিই অবাক হলো।

সায়ান ড্রাইভ করছে আর ভাবছে যে ওর যতটুকু খেয়াল রাখা দরকার তার থেকে বেশিই কি রাখছে। ও ক্যালিফোর্নিয়া থেকে যে ফ্লাইটে ল্যান্ড করেছে সেটা একটু ডিলে হওয়ার কারনে কলকাতা থেকে আগত ফ্লাইটের দশমিনিট আগে ল্যান্ড করেছে সেটি। প্লেন থেকে নেমে ফোন অন করতেই ওর ফোনে সাহিলের ফোন আসে যে ও খবর পেয়েছে সায়ান কে মারার জন্য কয়েকজন ওত পেতে আছে। ও অলরেডি সকল বডি গার্ডদের খবর দিয়েছে কিন্তু তাদের আসতে আধঘণ্টা সময় লাগবে তাই ও যেন ওর কাপড় চেঞ্জ করে নেই। এমন ঘটনার সাথে সায়ান পরিচিত, বিজনেসের যত ব্রাঞ্চ বেড়েছে শত্রু সংখ্যা যেন দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। ওকে হারিয়ে টপে যাওয়ার জন্য অনেকেই এমন প্ল্যানিং করছে। তাই কালো হুডি পরে নিলো সাথে মাস্ক, কিন্তু এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে ডান দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো একটা লোক গান পয়েন্ট করে আছে, লোকটির দৃষ্টি লক্ষ করে সামনে তাকাতেই দেখতে পেল একটা মেয়ে বাচ্চা ছেলেকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটা কি পাগল নাকি! তখনি ওর নিজের প্রিয়তমার কথা মনে পড়লো, ওতো এভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো, আচ্ছা পৃথিবীর সব মেয়েগুলো বোকা নাকি এই দুজনই স্পেসিফিক বোকা ভেবে পায়না ও। তারপর দ্রুত গিয়ে নিজে বাচালো মেয়েটিকে, বাচ্চাটি ততক্ষণে অজ্ঞান হয়ে গেছে তাই বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে দৌড়াতে লাগলো গাড়ির দিকে। ততক্ষণে ওই লোকেরা ওদের নোটিস করেছে তাই তাদের মাইন্ড ডাইভার্ট করতে অন্যদিকে ছুটলো তাদের গাড়িতে বসিয়ে।আজ হসপিটালে গিয়ে যখন দেখলো মেয়েটি তার ছেলেকে আগলে রেখে শুয়ে আছে তখন ওর নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যায়।

সায়ানের বয়স যখন দশ বছর আর ওর বোনের বয়স আট তখন ওরা ভেকেশনে নিজেদের ফার্মহাউজে বেড়াতে যাচ্ছিল কিন্তু গাড়ির ব্রেক ফেইল হয়ে যায় তাই ওর বাবা মা ওদের দুইভাই বোনকে গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ও রাস্তায় পড়ার কারনে হাত পা কেটে গিয়েছিল কিন্তু ওর বোন হাতে খুব জোরে ব্যাথা পায়। ট্রিটমেন্ট করার কারনে অনেকটা ঠিক হলেও পুরোপুরি হয়নি, ডক্টর বলেছে আকস্মিক শক খাওয়াতে মাইনর স্ট্রক করেছিলো ওর বোন তাই সাময়িক প্যারালাইজড হয়ে গেছে হাত।হয়তো ঠিক হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। ওর বোনের নাম সামায়রা তবে ও সামু বলে ডাকে। সামু আর ও দাদার আর চাচা চাচির কাছেই বড় হয়েছে। তারা সবাই ময়মনসিংহে থাকে আর ও বছরে একবার ওইখানে যায়।ও হয়তো মেয়েটিকে সাহায্য ওই পর্যন্তই করতো কিন্তু কথা হচ্ছে ওকে যারা মারতে এসেছে তারা এই মেয়েটিকেও কেন টার্গেট করেছে, কি শত্রুতা আছে মেয়েটির ওদের সাথে? তাই মেয়েটির ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করতে বললো যাতে ওর শত্রু সম্পর্কে আরো ধারণা হয়।

“কিন্তু মেয়েটি সত্যিই ভিতু হাহা, আজ বছর বহু বছর পর এভাবে হাসলাম, থ্যাংকস টু দেট গার্ল”

🌸🌸🌸

“হাহা হাহা মাম্মা তুমি… ”
” এই এভাবে হাসছিস কেন? পাগলে ধরেছে তোকে রুহান? ”
“মাম্মা তোমার ছেলেদের মত দাড়ি গজিয়েছে ”
“কি বলতেছিস আবোল তাবোল ” আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে থ হয়ে গেলো রুশি। কি সুন্দর কলম দিয়ে মুছ আকা, ওই জন্যই কালরাতে ঘুম ভেংগে গিয়েছিলো, আর ওই হাসির শব্দ!যেটা শুনে যত দুয়া মনে ছিলো সব পড়া শুরু করে দিয়েছিলো। এর মানে এখানে সত্যিই কেউ ছিলো সামনে পেলে তাকে… রাগে রুশির শরির থরথর করে কাঁপছে।

সকাল-১০টা
সায়ান ঘুম থেকে উঠে দ্রুত ফ্রেশ হয়ে অফিসে ছুটছে। অফিসে ঢুকেই নিজের কেবিনে একজন মেয়েকে বসে থাকতে দেখলো, একটু আগেই ওর বডিগার্ড জানালো সে নাকি তার বউকে খুজে পেয়েছে তাই একপ্রকার দৌড়ে এসেছে এখানে।সাড়ে নয়টা নাগাত নাকি একটা মেয়ে ওর অফিসে এসেছে আর বলেছে ও সায়ানকে দেখতে চায়, বডিগার্ডরা পরিচয় জিজ্ঞেস করলে বলে যাকে সায়ান এত বছর ধরে খুজছে সে। সায়ান এটা শুনে খুব দ্রুত এখানে ছুটে এসেছে, হয়তো তার শ্রেয়সীর মান ভেংগেছে তাই নিজেই ধরা দিতে এসেছে।

” নাম কি আপনার? ”
” আমাকে তুমি করে বলো ডিয়ার, আর নিজের বউয়ের নাম জানোনা তুমি? ওহ ওইদিনতো নাম বলিনি তোমাকে তাই না? আজ বলছি আমার নাম আনিকা ইউ ক্যান কল মি এনি, তোমাকে কত মিস করছি জানো? কেন চলে গিয়েছিলে আমাকে ফেলে? তোমাকে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে গিয়েছিলাম সেদিন। প্রমিস মি আর কোনদিন ছেড়ে যাবে না ” মেয়েটি কথা বলতে বলতে কান্না করে দিয়েছে যা দেখে সায়ানের খুব মায়া হলো। সায়ান মেয়েটির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কিছুটা কাছে গিয়ে গালের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো তারপর…

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here