বেলা_শেষে_শুধু_তুমি পর্ব ৯

0
1501

বেলা_শেষে_শুধু_তুমি পর্ব ৯
#আনিশা_সাবিহা

ঐশানী চোখজোড়া আধো ভাবে খোলা রেখে মিটমিটিয়ে হাসছে। আবার গালে দেখা যাচ্ছে রক্তিম লাল আভা। তার ধারণা, সে শাহরুখ খানকে কিস করেছে। কিন্তু আসলে তো ব্যাপারটাই অন্য। অভয় উশখুশ করছে বার বার। ঠিক গলায় কাটা আটকালে যেমন হয় তেমনই করছে অভয়। তার মনটা তো চাইছে মেয়েটাকে আবারও ঠাসস করে চড় বসিয়ে দিতে। নিজের ইজ্জত তো মরুভূমির ধুলোতে চাপা দিয়েছে এখন তার ইজ্জত নিয়েও টানাটানি করছে। মানতে হবে মেয়েটা ডেঞ্জারাস!

–“হেহেহেহে! ভাবি বোধহয় বিয়ের আগেই বাসরটা সারতে চাইছে। বলছিলাম আর একটা দিন ওয়েট করতে পারল না? সবার সামনে কিস…?”
বলেই নিজের মুখটা চেপে ধরে অনিন্দিতা। সামনে বড়রা সবাই দাঁড়িয়ে আছে। সে কি আবোলতাবোল বলছিল? অবশ্য সামনে যা ঘটল তা দেখে কিছু না বলে থাকা যায়? রাহাত সাহেবও বিষয়টার মজা পেলেন ভীষণ। ঐশানীর পাগলামিতেও যদি ছেলেটার সুবুদ্ধি হয়! অভয় কারোর দিকে তাকাতে অবধি পারছে না দেখে বিদ্রুপ করে বললেন….
–“মুখটা পেঁচার মতো করে দাঁড়িয়ে রইলি কেন? লজ্জা পাওয়ার কি আছে? আমরা কিছু দেখিনি। তুই ব্যাটা ছেলে মানুষ। তুই লজ্জা পাবি কেন? লজ্জা পাবে তো ঐশানী!”

অভয় নিজের বাবার এমন কথার জবাবে কি বলবে তা ভেবে পায় না। সে সবার কাছে হাসির খোরাক হলো শুধুমাত্র ওই মেয়েটার জন্য। চোখ গরম করে একবার ঐশানীর দিকে তাকালো সে। এটা ছিল ঐশানীর জন্য এক নম্বর সংকেত! হুঁশে এলে যে অভয় তার সাথে কি করবে তা নিজেও জানে না। এরই মাঝে অভয়ের মা মিসেস. তনয়া রাহাত সাহেবের হাতে হালকা চিমটি কেটে বললেন….
–“এই তোমার বোধবুদ্ধি কিছু হবে না? ছেলেকে সবার সামনে কি বলছো এসব? বুড়ো বয়সে এসব কথা ছেলেকে বলা মানায়?”

–“ওমা, যা দেখেছি তা বলব না?”
–“না বলবে না। চুপ করো তুমি।”
ঝাঁঝালো কন্ঠে বলে ওঠেন মিসেস. তনয়া। পরিস্থিতি সামলাতে ঐশানীর বাবা ইমতিয়াজ সাহেব গলা খাঁকারি দিয়ে বলে ওঠেন….
–“অভয় তুমি কি যেন বলছিলে? ঐশানী নাটক করছে মানে?”
–“আংকেল, আপনার মেয়েকে যদি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে দিতেন নম্বর ওয়ান হিরোইন হতো। সি ইজ এন এক্টিং কুইন!”

কেউ অভয়ের কথার মানে বুঝতে পারে না। তবে ঐশী এসবের মানে ঠিকঠাক বুঝে গেছে। কিন্তু এটা মাথায় আসছে না এসব অভয় কি করে জানল? তবে এখানে থাকা যে তার জন্য ভালো হবেনা তা ঠিক বুঝে গেছে। বোনকে সাহায্য করতে সে নিজের ফেঁসে গেছে। ভীড়ের মাঝেই দরজা ঠেলে বেরিয়ে যায় সে। এরই মাঝে আবারও শোনা যায় ঐশানীর গলা। বারবার একই কথা বকছে….
–“শাহরুখ খান, শাহরুখ খান মাই লাভ!”

অভয় একটা শুকনো ঢক গিলে সরে আসে। আবারও ঐশানীর শিকার হতে চায় না সে। বলতে শুরু করে…..
–“আমি এই ঘরেই আসছিলাম একটা জরুরি কথা বলতে। ঘরের দরজা নক না করতেই শুনতে পাই ঐশী ঐশানীকে জ্বর আসার জন্য রসুনের ব্যবহারের কথা বলছিল। ঐশানী আর ঐশীর কথোপকথন শুনতে পেয়েছি আমি। কিন্তু কিছু বলার আগেই ওরা নিজের প্ল্যানটা করে ফেলে। এবং কাজটাও করে ফেলে।”

আশেপাশের সবাই কনফিউজড হয়ে যায় অভয়ের কথা শুনে। আসলে এই ব্যাপারটাতে তাদের কি রিয়েক্ট করা উচিত সেটাই তো বুঝে উঠতে পারছে না। এসবের মাঝে মিসেস. তনয়া প্রশ্ন ছুঁড়েন….
–“মানে কি? আচ্ছা দিশা ভাবি, ঐশানী এমন করল? ও কি বিয়েতে রাজি নয়? কোনো সমস্যা আছে বিয়েতে?”
মিসেস. দিশা কি বলবেন তা খুঁজে পান না। উনার খুব করে ইচ্ছে করছে দুটো মেয়েকেই চড়িয়ে সোজা করে দিতে। একবার শুধু দুটোকে হাতের নাগালে পেলে হয়! সেসব ভাবনা বাদ দিয়ে উনি আমতা আমতা করে বলেন…..

–“আসলে তা ঠিক নয়। ঐশানী আর ঐশী ছোট থেকেই বড্ড চঞ্চল। কোথা থেকে কি করে বসে তা নিজেই জানে না। এর সঙ্গে বিয়েতে রাজি হওয়া না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই।”
–“হ্যাঁ ঠিক তাই। দিশা ঠিকই বলেছে। তনয়া ভাবি, আপনি অযথায় চিন্তা করছেন।”
স্ত্রীর সাথে তালে তাল মিলিয়ে বলেন ইমতিয়াজ সাহেব। তাতে সবাই আস্বস্ত হয়। অভয় আর এসবের মাঝে থাকতে না পেরে বাইরে যেতে পা বাড়ায়। তখনই ঐশানীর বান্ধবী দলের মাঝে একজন ঠোঁট টিপে হেঁসে বলে….
–“জিজু, কোথায় যাচ্ছেন? নিজের হবু বউয়ের দেওয়া গালের সিলমোহর কি সবাইকে দেখাবেন?”

বলেই হু হা করে হেঁসে ফেলে তারা। অভয় ভ্রু কুঁচকে তিক্ত দৃষ্টিতে তাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ঐশানী যেমন তার বান্ধবীগুলো জুটিয়েছে তেমন। অনিন্দিতা সামনে এসে অভয়ের গালে ইশারা করে বলে….
–“আরে ভাইয়া লিপস্টিকের দাগ!!”
অভয় দ্রুত নিজের ডান হাতটা গালে রাখে। তার গালে স্পষ্ট লাল রঙের লিপস্টিকের দাগ। গালে হাত দিয়ে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে ওয়াশরুমের উদ্দেশ্য বেরিয়ে যায় সে।

ওয়াশরুমে এসেই গেট সজোরে লাগিয়ে দিয়ে আয়নার সামনে এসে বেসিনের দুপাশ হাত রেখে হালকা নিচু হয়ে রাগে ফোঁসফোঁস করতে থাকে সে। মেয়েটা তাকে পেয়েছে টা কি?
–“ইডিয়েট একটা! বাবা বলছে বিয়ে করে কয়েকদিন থাকার জন্য ওর সাথে। একই ছাঁদের নিচে ওর সাথে কি করে কাটাব কে জানে।”
মাথা তুলে আয়নায় দেখতে থাকে লিপস্টিকের দাগ। গাঢ় রঙের লিপস্টিকের দাগ ঠোঁটের শেপে বসে গেছে অভয়ের গালে। পানি ছেড়ে দিয়ে অনবরত কয়েকবার লিপস্টিকের দাগ মুছতে থাকে সে। কিন্তু উঠছে না সহজে।

হঠাৎ যেন আয়নাতে থাকা অভয় হেঁসে উঠে বলে….
–“আরে অভয়, তোর অর্ধাঙ্গিনীর দেওয়া দাগ কি করে মুছবি এতো সহজে? নিজের জেদ ছাড়। মেনে নে ঐশানীকে। মোহ থেকে বেরিয়ে আয়। ঐশানীকে দেখ মনোযোগ দিয়ে। ওকে ভালোবাসতে তোর বেশিক্ষণ লাগবে না। যতই সায়রা সায়রা কর। মনে রাখিস বেলা শেষে শুধু ঐশানীই থাকবে।”
অভয় চোখ খিঁচে বন্ধ করে ফেলে। মাথা ঝাঁকিয়ে বলে……
–“ইম্পসিবল। যেখানে ভালোবাসা নেই। এতোদিনের পরিচয়েও যেখানে ভালোবাসা উঁকি দেয়নি ওর প্রতি সেখানে ও কি করে?”

এবার উত্তরটা অভয়ের মন থেকেই আপনাআপনি চলে আসে……
–“ভালোবাসা জাগতে ৩৬৫ দিন লাগে না। মাত্র কয়েকটা মূহুর্তই যথেষ্ট!”
অভয় চোখ খোলে দ্রুতই। এই উত্তর কেন এলো তার মন থেকে? নিজেকে সামলায় সে। মনের কথাগুলো আবেগের হয়। মনের কথাকে পাত্তা দেওয়া উচিত নয়। আবারও কয়েক বার পানি দিয়ে লিপস্টিকে দাগ উঠিয়ে ফেলে বেরিয়ে আসে সে ওয়াশরুম থেকে।

‘আজ প্রিয় মানুষটির গায়ে হলুদ। হলুদ রঙে মুড়িয়ে দেওয়া হবে প্রিয় মানুষটিকে। তবে আমার নামের গায়ে হলুদ নয় তার। অন্য একজনের নামে গায়ে হলুদে রাঙিয়ে দিচ্ছে সবাই তাকে। সামনেই চকচক করছে হলুদ শেরওয়ানি পরা প্রিয় মানুষটি। গালে অন্যের দেওয়া লিপস্টিকের দাগ জ্বলজ্বল করছে। প্রিয় মানুষটির মুখশ্রী লাল-গোলাপি আভায় ছেয়ে গেছে।’
কলমটা আর চলল না। কলম থেমে গেল। দাঁড়ি দিয়ে একমনে তাকিয়ে থাকল সায়রা তার ফোনের দিকে।

কিছুক্ষণ আগেই একটা আননোন নম্বর থেকে অভয়ের ছবি এসেছে। তার সঙ্গে বড় বড় করে মেসেজ করে দিয়েছে, ‘অভয় খানের থেকে দূরে থাকো। সে অন্যকারো। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে তৃতীয় ব্যক্তি কাম্য নয়।’
এতটুকু দেখেই সায়রার বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে। এ যেন তারই পাপের ফল! সে অভিনয় করেছে অভয়ের সাথে। ভালোবাসা নিয়ে অহরহ মিথ্যে কথা বলেছে। বাবার কথায় ইনজয় করার জন্য হাতিয়ে নিয়েছে মোটা অংকের টাকা। অভয়ও অন্ধের মতো সায়রার সকল আবদার পূরণ করে গেছে।

এখন সে যখন অভয়কে ভালোবাসলো। তখন অভয় অন্যকারো হয়ে গেল। এটাই প্রকৃতির নিয়ম হয়ত। এবার খুব রাগ হলো সায়রার। মাথা যেন ফেটে যাচ্ছে। তার একটুখানি শান্তি চাই। বসে থাকতে না পেরে উঠে তার হাতের কাছে থাকা সমস্ত জিনিস ছুঁড়ে ফেলতে শুরু করে। জিনিসপত্র ভাঙার শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন মিসেস. রুপা। মেয়েকে ধরে কোনোমতে থামাতেই ফুঁপিয়ে কেঁদে বলে….
–“আমি আর কখনো কারোর সাথে অভিনয় করব না মা। আজ যে অভয়ের গায়ে হলুদ। ও অন্যকারো হয়ে যাচ্ছে। কিছু তো করো!”
মিসেস. রুপা কি বলবেন বা করবেন? একূল-ওকূল কোনো কূলেই রাস্তা নেই। মেয়েকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন উনি।

একটা বড় কৃত্রিম পদ্মফুলের ওপর বসিয়ে রাখা হয়েছে ঐশানীকে। ঐশানীকে দেখতে পদ্মফুলের ওপর বসা আরেকটি পদ্মফুল মনে হচ্ছে। শরীর জুড়ে হলদে রঙের মুড়ানো তার। গায়ে ফুলের এক ঝাঁক গয়না। মুখটা ফ্যাকাশে করে আছে। এতোকিছুর পরেও অনুষ্ঠানটা বাতিল হলোই নয়। এর বদলে মায়ের হাতের আরেকটা টাটকা থাপ্পড় খেতে হয়েছে তাকে। বাম গালটা এখনো জ্বলছে। ঐশীও বাংলার পাঁচের মতো মুখ করে পাশে ঐশানীকে হলুদ মাখাচ্ছে। সেও থাপ্পড় খেয়েছে।

সবাই মিলে গাল, গলা, হাতে যেখানে পারছে হলুদ ছুঁইয়ে দিচ্ছে। ঐশানী বাঁকা চোখে তাকায় অভয়ের হলুদের আসরের দিকে। অভয় হাসিবিহীন মুখে বসে আছে। আর হলুদ দেখলে বারবার নিজের মুখ ঢাকছে আর কিছু একটা বলছে। হয়ত কম হলুদ মাখাতে বলছে। অভয়ের সাথে চোখাচোখি হতেই ভেংচি কাটে ঐশানী। অভয় চোখ রাঙিয়ে অন্যদিকে তাকায়। এ যেন চোখে চোখে লুকোচুরি খেলা!

–“কিরে অভয়, তুই ঐশানীকে হলুদ ছোঁয়ালি না?”
মিসেস. তনয়ার কথায় কপালে ভাঁজ পড়ে অভয়ের।
–“আমি কেন হলুদ লাগাতে যাব?”
–“কেন যাবি না? আজকাল তো আমার বর-কনে একে ওপরকে হলুদ মাখাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। সবাই হলুদ মাখাবে বর-কনে একে ওপরের কাছে থেকেও হলুদ লাগাবে না তা কি হয় নাকি? যা লাগিয়ে আয়। দেখ মেয়েটাকে কি সুন্দর লাগছে। ঠিক যেন একটা তাজা ফোঁটা পুষ্প!”
–“এখন তো ঐশানীর সবটাই তোমার ভালো লাগবে। ওকে পছন্দ হয়েছে কি-না!”
বিদ্রুপাত্মক কন্ঠে বলল অভয়।

–“আমার পছন্দের কথা তোকে জানতে হবে না। তুই উঠে যা ঐশানী কাছে।”
অভয় বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে আসর থেকে উঠে গেল। কিন্তু ঐশানীর কাছে গেল না। অন্য কোথাও গিয়েছে সে।
কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে ঐশানীর কাছে এসে দাঁড়ায় অভয়। হাতে তার ছোটখাটো বালতি। হুট করে অভয়কে দেখে চমকায় ঐশানী। একটু আগেই তো লোকটা হলুদের আসরে ছিল। এখন হুট করেই এখানে কখন এলো? রসকষহীন কাঠখোট্টা গলায় ঐশানী বলে….
–“কি চাই?”

–“কিছু চাইতে আসিনি। আই ওয়ান্ট গিভ ইউ সামথিং লাইক এ স্পেশাল থিং। এমন কিছু দেব যা তোমায় কখনো কেউ দেয়নি।”
–“মা….মানে? আমি কি ভাবছেন? শুনুন আমি তখন জ্বরের ঘো…ঘোরে আপনাকে কিস করে দিয়েছিলাম হ্যাঁ। আপনি আবার অন্যকিছু ভাবেননি তো? এখানে এসে বলছেন কিছু দিতে চান। দেখুন, আমি আপনার প্রতি মোটেও ইন্টারেস্টেড নই হ্যাঁ?”
ঘাবড়ে গিয়ে বলে ঐশানী। অভয় উত্তরে ধমক দিয়ে বলে….
–“শাট আপ। যখনতখন উল্টাপাল্টা চিন্তাভাবনা ছাড়া ভালোকিছু বলতে পারো না?”
–“তাহলে কি দিতে চান?”
–“এইযে এটা।”

কথাটুকু শেষ হতে না হতেই অভয় তার হাতে থাকা বালতি উপুড় করে ঐশানীর মাথার ওপরে ধরে। সঙ্গে সঙ্গে ভিজে কিছু অনুভব করে ঐশানী। এক মূহুর্তেই খেয়াল হয় তার ওপর দুধ ঢালছে অভয় অনবরত। নাক শিটকে ওপরে তাকায় সে। পুরো বালতি খালি হবার পর সবার চোখ চড়কগাছে পরিণত হয়। ঐশানী নিজের দুই হাত দিয়ে দুই বাহু ধরে ভিজে অবস্থায় বসে আছে। অভয় ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখ খুলে ঐশানী বলে….
–“আজকে আমার গায়ে হলুদ ছিল। কিন্তু আপনি….”
–“কিন্তু আমি তোমার গায়ে হলুদে হলুদ ছুঁইয়ে দিয়েছি। বুঝলে না তো? দুধের সাথে গায়ের হলুদ মিক্সড করা আছে। এক ঢিলে দুই পাখি মারা হলো! প্রথমত সবার সামনে আমার বেইজ্জতি করার প্রতিশোধ, দ্বিতীয়ত তোমায় হলুদ লাগানোও হলো।”

হালকা ঐশানীর দিকে হেলে ফিসফিস করে বলে অভয়। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে জোরে জোরে বলে ওঠে….
–“আমি অলওয়েজ ইউনিক আইডিয়া খুঁজি। আজ আমার হবু বউয়ের গায়ে হলুদ। তার এতো ইম্পরট্যান্ট দিনে কি করে ইউনিক কিছু না করে থাকতে পারি?”
সবাই বেশ মজা পেয়েছে অভয়ের এই কাজে তা বোঝায় যাচ্ছে। শুধু কপাল চাপড়াচ্ছেন মিসেস. তনয়া। তিনি যে কেন অভয়কে বলতে গেলেন হলুদ ছোঁয়ানোর কথা!

অভয় সোজা হেঁটে এসে নিজের আসরে বসে। ঐশানী থরথর করে কাঁপছে রাগে-দুঃখে। এরই মাঝে রিনি তার কানের কাছে এসে ফিক করে হেসে বলে….
–“যাই বল। জিজু কিন্তু বেশ রোমান্টিক। আমার তো খুব পছন্দ হয়েছে।”
কথাটা ঐশানীর কাছে আগুনে ঘি পড়ার মতো লাগল। রেগেমেগে সে বলে….
–“তো আয় না আয়। তোরে এই গন্ধওয়ালা দুধ এবং হলুদ মিক্স করা জিনিসে চুবাই। ভালো বা ছাই! শ্যামলা ঘোড়া আমারও দিন আসবে। দিন বা রাত যাই হোক। আসবেই যেকোনো একটা। সেদিন গোবর মাখা পানিতে চুবাবো!”

চলবে……

[বি.দ্র. অনেকেই প্রশ্ন করেছে রসুনের মাধ্যমে কি সত্যি জ্বর আসে? উত্তরটা হলো, আমার জানামতে আসে। কিন্তু পারফেক্ট নিয়মটা জানা নেই। আম্মুর কাছ থেকে শুনেছিলাম একদিন। তাই মনে পড়েছে কথাটা। গুগলে এই নিয়ে অনেক মতবাদ আছে।
আর আপনাদের কথায় আমি কনফিউজড। অনেকেই সায়রাকে চাইছেন দেখলাম। বুঝতেই পারছি না কাকে ছেড়ে কাকে দেব নায়িকা। ??]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here