বেলা_শেষে_শুধু_তুমি পর্ব ৬
#আনিশা_সাবিহা
ডান পায়ে হালকা ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে বাড়িতে ঢুকল ঐশানী। লিভিং রুম থেকে আসছে তার মা মিসেস. দিশার কন্ঠস্বর। তিনি কারোর সাথে ফোনে কথা বলছেন। কৌতুহল নিয়ে মায়ের কথা শুনতে পা বাড়ায় ঐশানী। ডান পায়ের হাঁটুর কাছে কাটার ব্যাথা এখনো ঠিকঠাক সারেনি। পা ফেললে ব্যাথা করছে। বেশ কয়েক ধাপ হাঁটার পরেই শুনতে পায় তার মায়ের বলা কথাগুলো।
–“তাড়াতাড়ি বিয়ের ডেট ঠিক করে ফেলতে চান? তাড়াহুড়ো করে বিয়ে দিয়ে দেওয়া কি ঠিক হবে?”
কাঁপুনি দিয়ে ওঠে ঐশানীর সারা শরীর। বিয়ের কথাবার্তা বলছে তার মা সম্ভবত ওই বাড়ি থেকে বিয়ের ডেট ফিক্সড করার জন্য ফোন দিয়েছে। অস্থির হয়ে ওঠে তার চাহনি। আশেপাশে তাকায় স্বস্তি পাবার উদ্দেশ্যে। কিন্তু অস্বস্তি বেড়ে চলেছে তার। আবারও মিসেস. দিশার কথায় কান দেয় সে।
–“না আমাদের তরফ থেকে কোনো সমস্যা নেই। আর অভয় তো নিঃসন্দেহে ভালো ছেলে। আর ঐশানীর বাবা বোধহয় কাজে ব্যস্ত অফিসে। তাই কল ধরতে পারেননি। উনি আসুক আমি আলোচনা করে আপনাদের জানাই?”
–“ওই শ্যামলা ঘোড়া আর ভালো? আমার মা আজ উনাকে ভালো বলে ভালো শব্দটার অপমান করল। ইশশ….একবার যদি জানতো যাকে তারা ধোঁয়া তুলশী পাতা ভাবছে সে আসলে…. (একটু ভেবে) হ্যাঁ গাঁজা পাতা! তাহলে আমার থেকে এই দুনিয়ায় আর বেশি খুশি কেউ হতো না।”
এক পাহাড় সমান আফসোস নিয়ে কথাগুলো বলে ঐশানী। একটু থেমে ফোন কেটে দেন মিসেস. দিশা। পেছন ঘুরে তাকান তিনি। ঐশানীকে দেখে এক গাল হাসি দিয়ে নরম সুরে বলেন….
–“ওহ এসে পড়েছিস? কেমন লাগল অভয়ের বাড়ি?
–“আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার তোড়জোড় করছো পুরো দমে তাই না?”
ঐশানীর কথায় মিসেস. দিশা থমকান। মেয়ের মুখে এমন কথা কেমন লাগবে মায়ের? মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে আসে। মায়ের উত্তর না পেয়ে ঐশানী আবারও বলে……
–“হয়ত ভাবছো এতো বড় মেয়ে কতদিন আর বসে বসে খাওয়াবে। তাছাড়াও সে এখন অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পরে। যথেষ্ট হয়েছে তার পড়া। এখন বিয়েটা দেওয়ায় উচিত! তাই না??”
মিসেস. দিশার চোখে পানি ভরে আসে। ঐশানী কষ্টে-আবেগে সব কথা বলে ফেলেছিল। তবে মায়ের চোখজোড়াতে পানি দেখে পরিস্থিতি সামলাতে ব্যকুল হয় ঐশানী। জোর করে ফিক করে হেসে বলে….
–“তোমার মেয়ে কেমন এক্টিং পারে বলো? সিরিয়ালে এক্টিং এর জন্য চান্স নিলে ফার্স্ট ক্লাস নিয়ে চান্স পেতাম বলো?” (স্টাইল নিয়ে দাঁড়িয়ে)
মিসেস. দিশার হাসি পেয়ে যায়। মেয়েটা পারেও বটে। ঠোঁটজোড়া প্রসারিত করে হেসে বলেন….
–“তুই মজা করছিলি?”
–“ইয়াহ মাই ডিয়ার মম। কেয়সা লাগা নটাঙ্কিবাজ কা নটাঙ্কি? ইমোশনাল কার দিয়া না?”
–“তুই আর শোধরালি না।” (জোরে হেসে)
হাসতে হাসতে জড়িয়ে ধরে ঐশানীকে মিসেস. দিশা। ঐশানীর মাথায় হাত রেখে স্নেহের সাথে বলেন…..
–“আশা করছি তুইও বিয়েটা মেনে নিবি। বিয়ে সবাইকেই করতে হয়। আর মনে রাখবি আমরা তোর মা-বাবা। তোর খারাপ চাইবো না।”
–“হ্যাঁ মা মনে রাখব তো।”
আরো কিছুক্ষণ মা-মেয়ে সময় কাটিয়ে ক্লান্ত হয়ে ওপরে আসে ঐশানী। লক খুলে রুমের দরজা খুলতেই জানালা খোলা থাকায় এক দমকা হাওয়ায় একটি কালো আবরণে মুড়ানো ডায়েরী খুলে যায়। ভেতরে থাকা কিছু ছবি বাতাসে নিচে পড়ে যায়। ছবিগুলোর দিকে এক দৃষ্টিতে স্থির চোখে তাকিয়ে থাকে ঐশানী। ভাবনার সুতো ছিঁড়ে যাওয়ায় দৌড়ে গিয়ে ছবিগুলো দ্রুত ডায়েরীর পাতার ভাঁজে রেখে বসে পড়ে। মনের মাঝে এখন একটাই প্রশ্ন বিরহ তৈরি করছে। ‘বিয়েটা থেকে কি করে ছাড়া পাবে?’
নিজের ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছে অভয়। কপালটা হালকা কুঁচকানো। কুঁচকানো কপালে হালকা ঘাম চিকচিক করছে। বিকেলের রোদের মিষ্টি ঝলকানিতে অভয়ের শ্যামলা চেহারায় অন্যরকম উজ্জ্বলতা এনে দিয়েছে। তার বাম হাতের বৃদ্ধা আঙ্গুল মোটা ও গোলাপি ঠোঁটের সাথে ঠেকানো। ডান হাত দিয়ে টাইপিং করছে ল্যাপটপে। মিনিট বিশেক পর ফোঁস ফোঁস করে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ল্যাপটপটা বন্ধ করে কোলের ওপরে থাকা বালিশের ওপর দুই হাতের ভর রেখে বলে….
–“এট লাস্ট অনলাইনে ইন্টারভিউ এর জন্য সবটা ইমেইল করা হলো। কালকে ইন্টারভিউ। জাস্ট চাকরিটা পেলে হয়।”
অভয় এবার ফোন নিয়ে বসে। বিরবির করে বলে….
–“এখন ওই মেন্টাল মেয়ের সাথে বিয়েটা কি করে পিছিয়ে দেব?”
ফোনের স্ক্রিন অন করতেই জ্বলজ্বল করে ওঠে সায়রার ছবি। মনোযোগ দিয়ে ছবিটা দেখতেই অভয় খেয়াল করে ছবিতে সায়রার পরিবর্তে ঐশানীকে। চোখ বড় বড় হয়ে আসে তার। সে একি দেখছে? মাথা ঝাঁকুনি দিয়ে চোখ এক হাত দিয়ে কচলে আবারও তাকায়। এবার সব ঠিকঠাক আছে। স্ক্রিনে সায়রার ছবিই তো আছে।
–“মেয়েটা আমাকে এমন ভাবে জ্বালিয়েছে যে এখন যেখানে সেখানে ওর ছবি দেখতে পাচ্ছি! ও মাই গড। আমি কি করে মুক্তি যে পাবো?”
রাত প্রায় সাড়ে আটটা। আকাশটা অন্ধকারে ছেয়ে আছে। চাঁদ বা তাঁরা কারোর হদিস নেই। কালো মেঘে ঢাকা আকাশ। যেকোনো সময় বৃষ্টি আসতে পারে।
–“দেখো মাহবুব, দোষটা তোমারই। তুমি নিজে থেকে মেয়ের সঙ্গে প্ল্যানিং করে অভয়কে ফাঁসাতে চেয়েছিলে। লাভ কি হলো? আমার মেয়েরা উল্টে প্রেমের জালে ফেঁসে গেল। ও ঠিকমতো খাচ্ছে না, কলেজে যাচ্ছে না।”
স্বামীর দিকে কড়া ভাবে কথাগুলো ছোঁড়েন মিসেস. রুপা। মাহবুব আলম যেন আকাশ থেকে পড়েন। তার মেয়ে প্রেমে পড়েছে? জানা তো ছিল না।
–“কি বলছো? আমি তো ওকে শুধু অভিনয় করতে বলেছিলাম। যাতে অভয়কে হাতের মুঠোয় করে ওই রাহাতের থেকে নিজের অপমানের বদলা নিতে পারি।”
–“অভিনয় করতে করতে ভালোবেসেছে তোমার মেয়ে। ভালোবাসা এমন একটা জিনিস যে কখন কার ওপর এই অনুভূতি জন্মে কেউ কখনো আগে থেকে বুঝতে পারে না। আমি কিচ্ছু জানি না তুমি আমার মেয়েকে আগের মতো করে দাও।”
মাহবুব আলম সায়রার ওপর ক্রুদ্ধ হন। অবশ্য সায়রারও বা কি দোষ? মনের ওপর কারো হাত আছে কি? সামনে সায়রা বসে আছে মাথা নিচু করে। তার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে মাহবুব প্রশ্ন করেন…..
–“সায়রা তোর মা যা বলছে তা কি সত্যি?”
সায়রা দ্বন্দ্বতে ভুগছে। বাবাকে কি ভালোবাসার কথা বলা সহজ? এটা বোধহয় পৃথিবীর সব থেকে কঠিন বস্তুর মধ্যে একটা। ঢোক গিলে সে। তবে মুখ থেকে চেষ্টা করেও একটি শব্দও বের হয় না।
–“কি হলো? বল। একটা কথা জিজ্ঞেস করছি তোকে।”
সায়রা থম মেরে বসে থাকে। বহু কষ্টে বলার চেষ্টা করে….
–“আ…আসলে বাবা আ..আমি….”
–“আসলে নকলে শুনতে চাইনি। তুই অভয়কে ভালোবাসিস হ্যাঁ কি না?”
সায়রা চোখ বন্ধ করে মাথা নাড়ায়। মাহবুব নিজের কপালে হাত দিয়ে চিন্তা নিয়ে ভাবতে থাকেন।
–“ভেবেছিলাম কি আর হলো কি? বলেছিলাম অভয়কে জালে ফাঁসাতে। উল্টে তুই নিজেই ফেঁসে গেলি?”
–“তুমি অভয়ের ফ্যামিলির সাথে যা ইচ্ছে করো। কিন্তু প্লিজ বাবা আমি অভয়কে ছাড়া থাকতে পারব না। হি ইজ ইনোসেন্ট। আর আমার মনে হয় ওর সাথে প্রথমে আমি যেই অভিনয় করেছি তা আমার ভুল ছিল।”
কথাটুকু বলতে বলতে কেঁদে ফেলে সায়রা। মাহবুব আলম সায়রার প্রতি বিরক্ত হন। ভালোবাসা মানে কি বোঝে এতটুকু মেয়ে? হতে পারে অভয় সায়রার জেদ কিংবা মোহ। জেদ, মোহ নাকি ভালোবাসা এটা জানার জন্য সময় প্রয়োজন। সেই সময়টাই তো হাতে নেই। সামনে অভয়ের বিয়ে। একসময় কাঁদতে কাঁদতে নিজের ঘরের দিকে ছুটে যায় সায়রা।
–“আর ৪ দিন পর তোর বিয়ে আপু। আমি এক্ষুণি বাবার রুমে উঁকি মেরে সবটা শুনে আসলাম।”
নিজের ঘরের বেডে এলোমেলো হয়ে শুয়ে ইচ্ছেমতো ফোন চাপতে ব্যস্ত ছিল ঐশানী। ঐশী তার ঘরে ঢুকে পড়ে ধড়ফড় করে। তারপর সে যা বলে তাতে হাত থেকে ফোন সরাসরি মুখে এসে পড়ে ঐশানীর। নাকে ব্যাপক ভাবে আঘাত লাগে ফোন দিয়ে। ব্যাথায় চিনচিন করে ওঠে নাক। ফোনটা সরিয়ে নাক দুহাত দিয়ে নাড়তে নাড়তে উঠে বসে সে।
–“এই অভয়ের সাথে বিয়ের কথা শুনতেই আমার ফোনটাও জানান দিলো বিয়েটা না করতে। এরপরও কেমনে বিয়েটা করি??”
অসহায় ভঙ্গিতে বলে ওঠে ঐশানী। ঐশী বেডে এসে ঐশানীর ফোনটা খপ করে নিয়ে নেয়। বন্ধ চোখ খুলে ঐশানী তার ফোন ঐশীর হাতে দেখে তার হাতড়ে কেঁড়ে নিয়ে চোখ গরম করে বলে….
–“আমার জিনিসে হাত দেওয়ার স্বভাব তোর যাবে না?”
–“ওহ হো আপু! ৪ দিন পর তোর বিয়ে। মানে ৩ দিনের মাথায় তোমার গায়ে হলুদ। তোর ধারণা আছে কত শপিং করতে হবে? সেকারণে ভাবলাম তোর ফোন থেকে অনলাইন কিছু জামাকাপড় দেখি।”
ঐশানী অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে ঐশীর ঝুটি টেনে ধরে।
–“তোর শপিং এর কাঁথায় আগুন। তুই কোন গাঞ্জা খেয়ে গাঞ্জার প্ল্যান দিছিলি সেটা আমাকে বল। তোর আইডিয়া কাজ করেনি।”
–“দেখ, আমার ছোট মস্তিষ্কে যেই আইডিয়া এসেছে তা তোকে বলেছি। এখন কাজে লাগাতে না পারলে তোর দোষ। আমার চুল ছাড়। নয়ত আম্মু আর বাবাকে ডেকে সব বলে দেব যে তুই বিয়ে ভাঙার প্ল্যানিং করছিস।”
ঐশানী ঐশীর চুল ছেড়ে দেয়। তার ছোট বোন তাকে যে হারে থ্রেট দিচ্ছে তাতে সে হতবাক। তবে ঐশানীও কম যায় না। ফোনের লকটা খুলে গ্যালিরি মাঝে গিয়ে একটা ছবি দেখিয়ে দাঁত কেলিয়ে বলে….
–“ওহ রিয়েলি মাই ডিয়ার, সোনা, তামা, হাড্ডি, পাতিল, কালা কাউয়া, হাড়গিলার গার্লফ্রেন্ড? এই ছবিটা এখন কি হবে জানিস? সুন্দর করে বাবাকে গিয়ে দেখাবো। এতে তোর হেল্পই হবে। বাবা আমার আগে তোর বিয়ে দেবে। তাই না?”
ঐশী ছবিটার দিকে তাকায়। ছবিটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ঐশীকে আর তার প্রেমিক রিত্তিককে। দুজনে রিকশাকে বসে একে অন্যের হাত ধরে মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে যাচ্ছে। বিষম খায় ঐশী।
–“এ…এই ছবি কোথা থেকে পেলি আপু। বিশ্বাস কর এটা আমি না। আমার ছোট বেলায় হারিয়ে যাওয়া একটা জমজ বোন ছিল। এটা নিশ্চয় ওটা হবে।”
–“আমি এতোটাও মাথামোটা নই যে তোর কথা বিশ্বাস করব। তোর জমজ বোন মানে আমার আরেকটা বোন আছে জানতাম না তো। দাঁড়া মাকে জিজ্ঞেস করি সাথে ছবিটাও দেখায়। ভালো হবে না?”
বলেই উঠে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে যাওয়ার জন্য পা ফেলে ঐশানী। পেছন থেকে ঐশী ভয়ের ঠেলায় ঐশানীকে জড়িয়ে ধরে। ভয় নিয়ে বলে….
–“তুই না আমার বড় বোন? বড় বোন হয়ে আমার কবরে যাওয়ার রাস্তা খুঁড়ে দিবি? খারাপ লাগবে না? যখন আম্মু আমাকে খুন্তি, চিরুনি, লাঠি, ঘড়ি, পাতিল হাতে যা পাবে তাই দিয়ে পিটাবে তখন মায়া হবে না বল?”
ঐশানী ঐশীর দিকে ঘুরে তাকায়। ঠোঁট উল্টে বলে….
–“তোর খারাপ লাগবে না যখন আমি ওই খবিশের সাথে বিয়ে করে প্রতিদিন খবিশের সাথে কাটাতে কাটাতে জীবনটা তামা তামা হয়ে যাবে?”
–“আমার তো মনে হয় না অভয় ভাইয়া খারাপ।”
ঐশানী ভেংচি কাটে।
–“আমার থেকে ভালো ওই ব্যাটাকে কেউ চেনে না। যাক গে বাদ দে আমার কথা। তুই খুব ভালোবাসিস না তোর পেনসিল মার্কা বয়ফ্রেন্ডকে?”
–“হু তা তো বাসি। ও আমার বয়ফ্রেন্ডের থেকে বেশি বন্ধু। আর আমার মনে হয় প্রেমিক কে আগে ভালো বন্ধু হতে হয়।”
ঐশানী হাসে। কেন হাসে তা ঐশীর জানা নেই। অন্যদিকে তাকিয়ে আনমনে বলে….
–“ঠিকই বলেছিস। পৃথিবীর সব থেকে বড় বন্ধু তো তারাই হয় যারা আমাদের আপনজন।”
রাতে বৃষ্টি হবার পড়ে সকালের আকাশটা স্বচ্ছ! মেঘের আড়ালে উঁকি দিয়ে নিজের তেজ দেখাচ্ছে সূর্যমামা। শহরটা ব্যস্ত মানুষে হয়ে উঠেছে ব্যস্ত। অভয় দ্রুত রেডি হচ্ছে। সাদা শার্ট পড়ে সুন্দর করে শার্ট ইন করে নেয় সে। সেই সঙ্গে কালো প্যান্ট আর হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি। চুলগুলো একপাশে গুছিয়ে হাতে কালো রঙের ফাইল নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সে।
এতো সকালে নিজের ছেলেকে ফরমাল ড্রেসে দেখে হতবাক হন রাহাত সাহেব। চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে বলেন….
–“কোথায় যাচ্ছো এতো সকাল সকাল? তাও না খেয়ে?”
যেতে যেতে থেমে যায় অভয়। পেছন ফিরে সোজাসাপটা উত্তর দেয়…..
–“ইন্টারভিউ দিতে।”
–“হোয়াট?? ওগো শুনছো তনু? তোমার ছেলের বোধহয় মেমোরি লস হয়েছে। সে ভুলে গেছে তার বাপের একটা কোম্পানি আছে। আলাদা করে কারোর কোম্পানি চাকরি নেওয়ার প্রয়োজন নেই।”
–“আমি তোমার প্রয়োজনে না বাবা। আমি আমার প্রয়োজনে চাকরিটা করতে চাই।”
এতোক্ষণ রসিকতা করছিলেন রাহাত সাহেব। এবার বেশ সিরিয়াস হয়ে ভ্রু কুঁচকান। থমথমে গলায় বলে….
–“সায়রার সাথে সম্পর্ক রাখার জন্য এবং ঐশানীর সাথে বিয়ের জন্য নাকচ করার জন্য তোমায় যে ত্যায্যপুত্র হতে হবে। সেই প্রস্তুতি কি তুমি আগেই নিচ্ছো?”
চলবে…..
[বি.দ্র. সবার একই প্রশ্ন আসল নায়িকা কে? আমিও কনফিউজড আসল নায়িকা কে? ধৈর্য ধরে দেখুন। আস্তে আস্তে সব বুঝে যাবেন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]