বৃষ্টিশেষে প্রেমছন্দ পর্ব ২২

0
488

#বৃষ্টিশেষে_প্রেমছন্দ
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন

২২.
‘আসবো ইয়াং ম্যান?’ পুলকিত হাসি দিয়ে বলল রুহুল হক।
মাথা উঠিয়ে সামনের পানে দৃষ্টি আবদ্ধ করে আদর ব্যস্ত কণ্ঠে বলল, ‘আসুন আসুন। শরীর স্বাস্থ্য ভালো তো?’

চেয়ার টেনে বসতে বসতে রুহুল হক জবাব দেন,

‘একদম দারুন! তা তোমাকে কাল রাতে ফোন করেছিলাম আমার ভাগ্নি…’

‘জি মনে আছে। তা পেসেন্ট কোথায়?’

‘পেসেন্ট ওইতো একটা ফোন এলো, বলল মামাজান আপনি যান আমি আসছি। আমার খুব আদরের বড় ভাগ্নি বুঝলে? খুব বুজুর্গ, ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী, বিচক্ষণীয়। ভালো করে মাথার চিকিৎসাটা করে দিও তো ওর ইয়াং ম্যান।’

আদর হাসলো। চেম্বারের দরজায় খটখট শব্দ হলো। দু’একবার শব্দ হওয়ার পর দরজাটা টেনে খুলে ঢুকলো কেউ। চেম্বারের এক কোণায় থাকা জানালা মাড়িয়ে ঘরে ঢুকে পরলো ঠান্ডা হাওয়া। আগুন্তক নারীটির চুল উড়ে অবলীলায় গন্ধ মিশে গেলো হাওয়ায়। কালো টেবিলটার উপর থেকে কয়েকটা পাতা উড়ে চলে গেলো দূরে কোথাও। চারিপাশ স্তব্ধ অনুত্তর নিঃশব্দ। পেশিতে টান টান উত্তেজনা। দীর্ঘ একমাস পর চেনা মুখটির দর্শন। অনুভূতি স্থিত হয়ে রইল রক্তে। আদর নিজের জন্য বরাদ্দকৃত চেয়ারটা থেকে উঠে দাড়িয়ে পরেছিলো অনেক আগে।

টিকলি এলোমেলো চোখে ক্লান্ত, তৃষ্ণার্ত, চমকানো হৃদয়ে তাকিয়ে দেখছিলো। আদর বিহীন অনুর্বর বুক-জমিনে বন্যার পানিতে পলি মাটি জমলো। উর্বর হলো ভূ-খণ্ড। এরপর শুধুই চলল নিস্তব্ধতা। চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে থাকা। এতোদিন দেখা না হওয়ার অপরাধে দিনগুলোর প্রতি অভিমানের ছোঁয়া। চাপা নিঃসৃত নিঃশ্বাসের ভারে বুক উত্তাপ। রুহুল হকের কথায় ঘোর ভাঙলো দুজনার। আদর ছিটকে বসে পরলো। এরপর উদভ্রান্তের মতো তাকিয়ে রইল টিকলির ওই ফুলের পাপড়ির ন্যায় বদনখানার দিকে। টিকলি দুরুদুরু বুকে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে এসে বসলো। রুহুল হক বললেন,

‘তোমার এই রোগী প্রচুর মাত্রায় বিজি বুঝলে? সারাক্ষণ সে ফোনের উপরই থাকে।’

টিকলি তার এতো দিনের… এতো বছরের ব্যক্তিত্ব ভুলে বেহায়ার মতো তাকিয়ে ছিলো আদরের দিকে। টিকলিকে দেখে আদরের সন্তুষ্ট শীতল চোখ জোড়া আবার অসন্তুষ্ট হয়ে উঠলো। ভ্রু কুচকে তাকালো। প্রশ্ন করতে গিয়েও করলো না। যতই হোক পেসেন্টের সাথে তো কেউ আর গালগল্প করবে না। যথাযথ গাম্ভীর্যপূর্ণ গলায় বলল,

‘কি সমস্যা?’

কোনো উত্তর পাওয়া গেলো না। রুহুল হক এবার জিজ্ঞেস করলেন, ‘টিকলি বলো তোমার কি কি সমস্যা?’ তবুও নো রেসপন্স। টিকলির অমনোযোগীতায় টিকলির দিকে চোখ তুলে আবারো তাকালো আদর। এখনো টিকলির দৃষ্টি তার উপর সীমাবদ্ধ। সেই হৃদয় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, আচ্ছন্ন দৃষ্টির দিকে তাকাতেই আদর দিশেহারা হয়ে গেলো। মনেতে বাজতে থাকল একটাই প্রশ্ন,

‘এতো সুন্দর মেয়েটা কেনো সারাদিন ফোন কলে বিজি থাকে?’

মনের প্রশ্নে আদর হেসে জবাব দিলো, ‘আরে সুন্দর দেখেই তো ফোন কলে বিজি থাকে।’

আদর চোখ সরিয়ে নিয়ে নিজে নিজেই জিজ্ঞেস করলো, ‘কি? মাথা ব্যথা?’

টিকলি সম্ভিত ফিরলো। ঘোরমাতাল রাজ্য থেকে বেরিয়ে এসে মাথা নিচু করে মৃদু নাড়ালো। আদর কাগজে কিছু লিখতে লিখতে বলল,

‘কোথায় কোথায় ব্যথা?’

‘হৃদয়ে, মনে, বুকে।’

আদর থতমত খেয়ে তাকালো। রুহুল হক অবাক চোখে বললেন,

‘কি বলছো এসব?’

দাঁত দিয়ে জিব কামড়ে ধরে চোখ খিচিয়ে বন্ধ করলো টিকলি। কেশে উঠলো কয়েকবার। মিথ্যা কথা সাজিয়েও বলতে পারলো না। তবুও অনেক কষ্টে কাঁপাকাঁপি করে বলল,

‘মুভির ডায়লগ। সকালে মুভি দেখেছিলাম তো। সেটাই মাথায় ঘুরছে।’

‘এমন মুভি আছে?’ নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো রুহুল হক। তৎক্ষণাৎ আদর বলল,

‘মাথার কোন সাইডে ব্যথা হয়? কখন হয়? সারাক্ষণ?’

বেশ চিন্তিত শোনা গেলো আদরের গলা। টিকলি বলল,

‘নাহ সারাক্ষণ না। যখন ঠান্ডা লাগে তখন বেশি ব্যথা হয়। কপালের দিকটা। নাকের আশেপাশের জায়গাগুলো আর চিপের জায়গাগুলোতে জ্বালাপোড়া।’

আদর লিখতে লিখতেই জবাব দিলো, ‘কয়েকটা টেস্ট করিয়ে আনুন। ব্লাড টেস্ট, ইউরিন টেস্ট, সিটি স্ক্যান আর এক্স-রে। সিটি স্ক্যান এবং এক্স-রে এর মধ্যে একটা করালেও চলবে।’

রুহুল হক দাড়াতে দাড়াতে বললেন, ‘নাহ, দুটোই করাই।’

‘আচ্ছা।’

ঘড়ি দেখে নিয়ে রুহুল হক বললেন, ‘এখন তো লাঞ্চ টাইম হয়েগেছে। অলমোস্ট দুটো বাজে। লাঞ্চ করবে না?’

‘জি করবো।’

‘তাহলে চলো আজ লাঞ্চটা একসাথেই করি। টেস্ট গুলো করিয়ে পাশের রেসটুরেন্টে বসছি। আমি তোমাকে ফোন দিবো।’

আদর হালকা হেসে বলল,

‘আচ্ছা।’

,

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জাকজমকপূর্ণ রেসটুরেন্টের বড় সোফাটায় বসে ছিলো টিকলি এবং রুহুল হক। অপরপাশে বসেছে আদর। ওয়েটারকে অর্ডার দেওয়া শেষ হতেই রুহুল হক কপালে কিছু ভাঁজ ফেলে বললেন,

‘রিপোর্ট পেতে তো অনেক সময় লাগবে তাই না? একটু আগে করা যায়না। মানে টাকা-পয়সা যাই লাগুক রিপোর্টগুলো আর্জেন্ট পেলে ভালো হতো।’

আদর সৌজন্যে হেসে বলল, ‘আমি আসার সময় কল করে এসেছি। ওরা তাড়াতাড়ি করে দিবে। এক ঘণ্টার সময় চেয়েছে।’

‘ওহ অনেক ধন্যবাদ ইয়াং ম্যান।’

আদর মাথা ঝাঁকিয়ে মৃদু হাসলো। রুহুল হক আবারো কিছু বলতে চাইলেন। পকেটে ফোন বাজার বাজখাঁই শব্দে ভ্রু কুচকে থেমে গেলেন। এক্সকিউজ মি বলে সে উঠে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়িয়ে ফোন রিসিভ করলেন।

এদিকে জড়তা-সংকোচে কাটা হয়ে বসে রইল টিকলি। এদিক ওদিক তাকিয়ে আড়চোখে একবার টিকলির দিকে তাকিয়ে সোফায় হেলান দিয়ে বসলো আদর। চোখ ঘুরতে লাগলো অপরূপ মহারানীর সারামুখ জুড়ে।

আদরের চোখের নিশানা যে তার উপর টিকলি তা ঠিক বুঝতে পেরেছে। অস্বস্থিতে জড়োসড়ো হয়ে বসতেই তার মনে হলো কথা বলা দরকার। যেই আদরের সাথে কথা বলার জন্য মুখ খুলল ওমনি খেয়াল করলো তার গলা দিয়ে আওয়াজ আসছে না। চোখ মেলে তাকানো যাচ্ছে না সামনের মানুষটার দিকে। দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষার পর অপ্রত্যাশিত ভাবে মানুষটাকে পাওয়ার পর গলার স্বর বন্ধ হয়ে গেছে। টিকলির ভারী অসহায় লাগলো নিজেকে। অনেক কথা বলার বাকি। অনেক কিছু বুঝানো বাকি। কত কিছুই না ভেবে রেখেছিলো! যেদিন আদরের সাথে দেখা হবে সেদিন এই করবে সেই করবে। অথচ আজ গলার স্বরটাই তার সাথে বেঈমানী করছে।

আদর খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলো টিকলিকে। অক্ষিপট ঘুরছিলো টিকলির টিকলো নাকে, চশমায় ঘেরা চোখে, ছোট ছোট গর্তের অধিকারী গালের খাঁজে, গোলাপের পাপড়ির ন্যায় মসৃণ ঠোঁটের ভাঁজে। স্কাপে ঢেকে যাওয়া টিকলির অর্ধাংশ ঘন কালো রেশমি কেশগুলো দেখতে আদরের অযথাই ভালো লাগে। আদরের দেখার মাঝেই হঠাৎ টিকলি অপ্রকাশিত চোখে তাকালো। আদর সেখানেই স্থবির হয়ে রইল। কথা বলার ভাষা খুঁজে পেলো না। এতোক্ষণ মনে মনে কথা সাজালেও এই মুহুর্তে এসে সব এলোমেলো হয়ে গেলো। ইশশ…কি অসহায় দুটি চোখ! স্বপ্নমুখী সমুদ্রবিলাশী চোখ গুলো খালি দেখার আদরের ভারী ইচ্ছা। চশমার আড়ালে চোখ দুটো পড়তে পারেনা আদর। কবে এই মেয়েটার খালি চোখ দেখবে? কবে পড়তে পারবে?

আদরের ভাবনার ঘোর কাটলো রুহুল হকের কথায়, ‘সরি ইয়াং ম্যান।’

আদর হকচকিয়ে গিয়েও সামলে নিলো নিজেকে। ভদ্রতার সহিত বলল,

‘ইটস ওকে মি.রুহুল হক।’

‘আচ্ছা এবার তো আমাকে আংকেল চাচা মামা কিছু ডাকতে পারো নাকি? আমাদের মধ্যে তো শুধু ডাক্তার পেসেন্ট সম্পর্ক না। ডাক্তার পেসেন্টের ফর্মালিটিপূর্ণ সম্পর্ক হলে কি আর এই রেসটুরেন্টে বসে একসাথে লাঞ্চ করতাম?’

লোকটা বড্ড ঠোঁটকাটা। আদর বড্ড লজ্জিত এবং অপমানিত বোধ করলো। সত্যি দোষটা তার। এতো বড় মানুষটার নাম ধরে ডাকা একদম উচিত হয়নি। আস্তে করে আদর বলল,

‘সরি মামা।’

আদরের কথায় টিকলি অবাক হয়ে তাকালো। আদরও থতমত খেয়ে গেলো। চোরাচোখে তাকালো রুহুল হকের দিকে। খাবার এসে গেছে। প্লেট এগিয়ে দিতে দিতে হাসি হাসি মুখ করে রুহুল হক বললেন,

‘মামাই ডেকো। মামা ডাকটা আমার ভীষণ পছন্দ। আমি ভাবতাম একমাত্র আমার ভাগ্নিদের মুখেই মামা ডাকটা অতুলনীয় লাগে। কি সুন্দর করে ওরা ডাকে মামাজান! কিন্তু তোমার মুখে ডাকটা শুনে ভুল ভাঙলো। বেশ ভালো লাগলো।’

_____________________________

রিপোর্টগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখছিলো আদর। কিছুক্ষণ দেখার পর ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করলো,

‘আপনার ঠান্ডার সমস্যা আছে? এলার্জি?’

মাথা নিচু করেই টিকলি জবাব দেয়, ‘জি।’

‘অনেক সমস্যা? হঠাৎ সর্দি লাগে নাকি মাঝে মাঝেই?’

‘জি। প্রায় প্রতিদিনই আমার ঠান্ডা লাগে। ঠান্ডা জাতীয় কিছু খেলে কিংবা অসময়ে গোসল করলে ধুলোবালিতে, এলার্জি জাতীয় কিছু খেলে। ঠান্ডার সাথে অসহ্য মাথা ব্যথা। আগে খুব কম হতো। ইদানীং মাথা ব্যথা বেড়েছে।’

‘কিন্তু নিঝুম….. ‘ আদর থেমে গেলো। টিকলি সন্তুষ্ট চোখে তাকালো আদরের দিকে। যাক, মানুষটা তবে তাকে ভুলেনি। মনে আছে সব।

রুহুল হক বললেন, ‘সিরিয়াস কিছু?’

চেয়ারে শরীর ঠেসে দিয়ে হাতের দু’আঙ্গুলে কলম ঘোরাতে ঘোরাতে আদর জবাব দিলো,

‘নাহ বেশি সমস্যা হয়নি। আসলে উনার সাইনোসাইটিস এর প্রবলেম ধরা পরেছে।’

রুহুল হক একটু ভীত গলায় বললেন, ‘ঠান্ডা থেকেই?’

‘নাহ দীর্ঘমেয়াদি হাঁচি কাশি কিংবা নাক বন্ধ থাকলেই যে সাইনোসাইটিস হয় এমন কোনো কারণ নেই। তবে ঠান্ডার কারণে মাথা ব্যথা করবেই এবং নাকের আশেপাশে ব্যথা করবে। মুখের হাড়ের ভেতরে চারজোড়া যে ফাঁপা বায়ুপূর্ণ জায়গা থাকে সেগুলোকে সাইনাস বলে। আর এই সাইনাসের মধ্যে জ্বালা পোড়া শুরু হলে তাকে সাইনোসাইটিস বলে। সাইনাস প্রদাহ হলেই মাথা ব্যথা এবং ঘন ঘন সর্দি লাগে।’

‘ভালো হবার উপায়?’

‘বলতে গেলে মাইগ্রেন এর ম্যথা সাইনোসাইটিস এর ব্যথা যাদের আছে তাদের নিজ থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। নিয়মিত ওষুধ খেলে আস্তে আস্তে কমে যাবে। তবে অনেকের একবারে উপশম নাও হতে পারে তবে কমে যায়।’

আদর প্রেসক্রিপশন লিখতে বসলো। রুহুল হকের আবার ফোন এলো। রুহুল হক বললেন,

‘সরি ইয়াং ম্যান। আসলে আমার মেয়ে রুমকি পরে গিয়ে ব্যথা পেয়েছে তাই বারবার ওর মা ফোন করছে। এক্সকিউজ মি। প্রেসক্রিপশন টা নিয়ে এসো টিকলি।’

টিকলি অবাক হয়ে কিছুক্ষণ মামাজানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলো। রুমকি পরে গেছে। ব্যথা পেয়েছে। অথচ মামার কোনো হেলদোল নেই। কিন্তু এখানে রাহুল ভাইয়া থাকলে মামা নিশ্চয়ই পুরো হসপিটাল মাথায় তুলে ফেলতেন।

প্রেসক্রিপশন লিখে আদর টিকলির দিকে এগিয়ে দিলো। টিকলি চমকে ফিরে তাকিয়ে প্রেসক্রিপশন টা হাতে তুলে নিলো। আদর কথা বলতে চাইলো৷ কিন্তু বারংবার কথারা দলা পাকিয়ে গলায় আটকে গেলো। হঠাৎ আদরের কিছু মনে পরলো। প্রেসক্রিপশন টা ছিনিয়ে নিয়ে সে একটা আনস্মার্ট কাজ করে বসলো। টিকলি অবাকের উপর অবাক হলো। আদর প্রেসক্রিপশন টা ভাঁজ করে আবার ফেরত দিলো। টিকলি নিদারুণ বিস্ময়তায় দুনিয়াদারী ভুলে গেলো। মিনিট দুয়েক থম মেরে বসে থেকে ঘোরের মাঝেই উঠে দাড়ালো। টলমল পায়ে দরজা পর্যন্ত যেতেই আদর দাঁড়িয়ে ছোট করে বলল,

‘প্রেসক্রিপশন কারোর হাতে দিবেন না।’

বিস্ময়তা আকাশ ছুঁলো। চারিপাশ নিস্তব্ধ পাতালপুরীতে পূর্ণ হল। শূন্যে ভেসে উঠলো আশেপাশের সব। কেবল অস্তিত্ব বিরাজমান আদর টিকলি দুটি প্রাণহৃদয়ের। হাতের প্রেসক্রিপশনের দিকে একবার তাকিয়ে ঢোক গিলল টিকলি। সে কথা বলতে পারছে না। আদরের সাথে একান্ত সময়টুকুতেই তার গলার স্বর আসছে না। বেঈমানী করছে। আহ! কষ্ট! প্রচুর কষ্ট! টিকলির কান্না পেয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ আদরকে অবাক করে দিয়েই এক দৌড়ে সে বেরিয়ে গেলো।

আদর স্বাভাবিক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকার পর টেবিলে জোরে বাড়ি মারলো। শূন্যে দীর্ঘশ্বাস ফেলে দাঁড়ানো থেকে চেয়ারে বসে পরলো। হেলান দিলো। চোখ বন্ধ করলো। এরপর মৃদুমন্দ কাঁপন কণ্ঠস্বরে হতাশ নিঃশ্বাসে বলে উঠলো,

“আজও সরি বলা হয়ে উঠলো না। দেখা হয়েও যেনো দেখা হলো না। কথা হয়েও যেনো কথা হলো না। দুজন দুজনার দিকে তাকিয়েও যেনো তৃষ্ণা মিটলো না। চোখের আঁশ মিটলো না। হৃদয় পূর্ণ হলো না। বুকে ঢেউ বইলো না। আজ যেনো চোখে চোখ রেখেও রাখা হলো না।”

চলবে❤

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here