#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_৪৭
জাওয়াদ জামী
কুহুর রা’গ দেখে তাহমিদ আর বিছানায় থাকেনা। বিছানা থেকে লাফিয়ে নেমে সোজা ওয়াশরুমে ঢোকে।
খাবার টেবিলে সবাই একসাথে জড়ো হয়েছে। আফরোজা নাজনীন, তাহমিনা আক্তার মিলে খাবার পরিবেশন করেছেন। কুহুও তাদেরকে সহযোগিতা করতে চেয়েছে, কিন্তু তারা রাজি হননি। জোর করেই কুহুকে খেতে বসিয়েছেন। তারা কুহুকে খুব একটা কাজ করতে দিতে চাননা।
সানাউল রাশেদিন স্বভাবসুলভ ভাবেই গম্ভীর মুখে বসে পরোটা খাচ্ছেন।
কিন্তু তাহমিদের এই মুহুর্তে তাকে শান্তিতে খেতে দিতে ইচ্ছে করছেনা।
” ও ফুপু শ্বাশুড়ি, আমার ফুপা শ্বশুরকে আরেকটা পরোটা দিন। এত বড় পেটে দুইটা পরোটায় কিচ্ছু হয়না। আমার মনে হয় পেটের এক কোনাও ভরেনা। ”
তাহমিদের কথা শুনে শফিউল রাশেদিন হো হো করে হেসে উঠেন।
আর সানাউল রাশেদিন দাঁত কিড়মিড়িয়ে তাকিয়ে থাকে তাহমিদের দিকে।
আফরোজা নাজনীন আর তাহমিনা আক্তার মিটমিটিয়ে হাসছেন।
” আফরোজা, এই বেয়াদব ছেলেকে আমার পেছনে লাগতে নিষেধ করে দাও। কিসের ফুপা শ্বশুর হ্যাঁ? সে যদি আমাকে সম্মান করতে তাহলে যেন আমাকে সবরকম সম্মোধন বন্ধ রাখে। ”
” মা, তোমার বেয়াইকে হাইপার হতে নিষেধ কর। শেষে দেখা গেল ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাবে। পরে তাকে নিয়ে আমাকেই দৌড়াতে হবে। কিন্তু আমার শরীরের যে অবস্থা তাকে কোলে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তার স্বাস্থ্যতো মাশা-আল্লাহ। ”
” আফরোজা, আমি কিন্তু এখনই উঠে যাব। তখন সব খাবার এই বেয়াদবটাকে খাইও। এরকম একটা ছেলে বাড়িতে থাকলে, সেই বাড়ির মানুষের হার্ট অ্যাটাক হওয়ার অন্য কোন কারন লাগবেনা। আর শফিউল, তোমাকে বলছি, ছেলেকে একটু শাসন কর। নইলে দেখবে ভবিষ্যৎ বংশধরও তার মত বেয়াদব জন্মাবে। ”
” বাবা, তুমি আমার ফুপা শ্বশুরকে বলে দাও, আমার ছেলে-মেয়েদের শিষ্টাচার দিয়েই গড়ে তুলব। তারমত শুধু শরীরসর্বস্ব জীব বানাবনা। সে আর কিছু না পারুক তেজ দেখানোর বেলায় ভদ্রলোক এক্সপার্ট। ”
কুহু অসহায় চোখে ফুপার দিকে তাকিয়ে আছে। পারলে সে তাহমিদকে চিবিয়ে খায়।
” তাহমিদ, তুমি আমার ভাইকে এভাবে বলছ কেন? মনে হচ্ছে আজকাল বড়দের সম্মান দিতে ভুলে গেছ! এখন যদি তুমি চুপ না কর, তবে আমি রে’গে যাব। আমার ভাইয়ের নাহয় একটু ভুঁড়ি আছে, তাই বলে কি তুমি তাকে এভাবে বলবে! ” শফিউল রাশেদিন মিটমিট করে হাসছেন৷
” আজ বুঝলাম, তোমার ছেলে এতটা বেয়াদব কেন হয়েছে। যার বাপই বড় ভাইকে সম্মান করতে জানেনা, তার ছেলের কাছ থেকে সম্মান আশা করা বোকামি। ”
আয়েশা সালেহা বুঝতে পারলেন তিনি হস্তক্ষেপ না করলেন,ঘটনা বহুদূর গড়াবে। এই দুই বাপ-ছেলে মিলে তার বড় ছেলেকে আরও পঁচাবে।
” তোরা কি শুরু করেছিস বলত? আমার ছেলেটাকে এভাবে বিরক্ত করছিস কেন? তোরা যদি এখন না থামিস, তবে আমি না খেয়ে উঠে যাব বললাম। ”
বৃদ্ধার হুমকি শুনে ওরা দুজনেই মিইয়ে যায়। চুপচাপ খেতে থাকে।
সানাউল রাশেদিন হাসতে হাসতে খেতে থাকেন।
” ও ফুপু শ্বাশুড়ি, আপনার জামাইকে ভালোমত খাওয়ান। তিনি আজ ভিষণ খুশি। খুশিতে দুই-চারটা পরোটা বেশিও খেতে পারেন। আহারে, বয়স্ক ভদ্রলোক কতদিন এমন খুশি হননি। ”
” বাপ, এবার খেয়ে নে। চাচ্চুকে অনেক বিরক্ত করেছিস। আজকের মত যথেষ্ট হয়েছে। ”
” আফরোজা! কি বললে তুমি? আজকের মত যথেষ্ট হয়েছে, মানে কি? তুমি ওকে আবার ভবিষ্যতের জন্য উস্কে দিলে! এখন বুঝলাম, ঘরেই যদি বিভীষণ থাকে, তখন বাইরের শত্রুর দরকার পরেনা। ”
” তুমি এমন কেন বলত! তাহমিদ যে তোমার সাথে মজা করে, এটা বুঝতে পারনা! তুমি যতই রে’গে যাও, ও তোমাকে ততই রা’গা’য়। তাই বলে তুমি কি মনে কর, ও তোমাকে ভালোবাসেনা?
মাঝেমাঝে এত অবুঝ হও কেন তুমি? ”
সানাউল রাশেদিন স্ত্রীর কথার কোন প্রত্তুত্যর করেনা।
” বড়মা, বাদ দাও।তার বয়স্ক ব্রেইনে এসব ঢুকবেনা। মিছেই তুমি অরন্যে রোদন করছ। বড়মা শোন , আজ কিছুক্ষণ আগে দৃষ্টির সাথে কথা হয়েছে। আমি ওকে কাল আনতে যাব বলেছি। দুপুরের মধ্যে সেখানে চলে যাব। একটু জামাই আদর খেয়ে বিকেলেই আবার রওনা দিব। অনেকেই জামাই আদর পেতে হা হুতাশ করে। কিন্তু আমি দেখ ফ্রীতেই পাচ্ছি। একই বাড়ির দুইজন মানুষের একটাই শ্বশুর বাড়ি। কিন্তু একজনের কপাল দেখ, আর আমার কপাল দেখ। আমার শ্বশুর আমাকে কত ভালোবাসে আমাকে। কিন্তু আরেকজন এতিমের মত থাকে। ” সানাউল রাশেদিনের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বলে তাহমিদ।
সানাউল রাশেদিন দাঁতে দাঁত চেপে বসে থাকে।
দৃষ্টি ঘরে বসে কাঁদছে। তার সাথে কেন এমন হল? ওর জন্য আব্বু মানসম্মান সব হারাল। আম্মু সবকিছু খোয়ালো৷ ভবিষ্যতে ওর জন্য কি অপেক্ষা করছে তা ভাবতেই ওর বুক শুকিয়ে যায়। আজ মায়ের ওপর ওর ভিষণ অভিমান হচ্ছে। যদি সে প্রথম থেকে দৃষ্টিকে আটকাত, শাসন করত, তবে আজ এতবড় ভুল দৃষ্টি করতনা।
এদিকে সবুজ বারবার ফোন করছে। কিন্তু দৃষ্টি রিসিভ করেনা।
দৃষ্টির ফোনে ওকে না পেয়ে, সবুজ শিউলির ফোনে ফোন দেয়। কিন্তু সবুজের নাম দেখে শিউলিও ফোন রিসিভ করেনা। সে দৃষ্টিকে জানায়, সবুজ ফোন করেছে। দৃষ্টি তাকে রিসিভ করতে নিষেধ করে।
সবুজ দৃষ্টিকে না পেয়ে উন্মাদ হয়ে গেছে। যেকোন মুল্যেই দৃষ্টিকে তার চাই। দৃষ্টি সোনার ডিম দেয়া হাঁস। ওকে কিছুতেই হারাতে দেয়া যাবেনা। দৃষ্টিকে নিজের কাছে রাখতে পারলেই ওর লাভ।
আবার দৃষ্টিকে ফোন দেয় সবুজ। একের পর এক ফোন করতেই থাকে।
দৃষ্টি পরেছে বিপদে। তাহমিদ ওকে ফোনের সুইচড অফ করতে নিষেধ করেছে। তাই ফোন অফ করতে পারছেনা। সবুজের নম্বর সে ব্লক করে দিয়েছে। কিন্তু প্রতিবার নতুন নতুন নম্বর থেকে ফোন করছে সে। দৃষ্টি রিসিভ করে সবুজের গলা শুনলেই সেই নম্বরও ব্লক করছে।
দৃষ্টি ফোন হাতে নিয়ে অসহায়ের মত বসে আছে। এমন সময় টুং করে ম্যাসেজ আসে।
সবুজ দৃষ্টিকে ফোনে না পেয়ে ম্যাসেজ দিয়েছে।
” তুই যদি আজকের মধ্যে আমার বাড়িতে না আসিস, আর মামলা তুলে না নিস, তবে তোর যে আমি কি হাল করব, তা তোর কল্পনায়ও নেই। নিজের ভালো চাইলে, তোর ঐ হা’রা’মী বাপের সাথ না দিয়ে আমার বাড়িতে আয়। ”
দৃষ্টি সবুজের ম্যাসেজ দেখে সাথে সাথেই সবুজকে ফোন করে। সবুজ সাথে সাথে ফোন রিসিভ করে।
” তুই কেন বারবার আমাকে বিরক্ত করছিস? তোর কি একটুএ লজ্জা নেই? আমার বাড়িতে এসে অপমানিত হলি? তারপরও এমন ছ্যাঁচড়ার মত করছিস? ” সবুজ ফোন রিসিভ করতেই দৃষ্টি ওকে কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বলতে শুরু করে।
” তোর তেজ দেখছি খুব বেড়েছে রে হা’রা’ম’জা’দি! এত বাড়িসনা, এমন ডোজ দিব যে ধপ করে নিচে পরবি। ভালো চাইলে আমি যা বলছি তাই কর। ”
” আমি তোর বাড়িতে যাবনা। আর না মামলা তুলব। তুই যা পারিস করে নে। তবে আমি তোকে জেলের ভাত খাইয়েই ছাড়ব। ”
” তুই আজ খুব ভুল করলি। এর জন্য তোকে পস্তাতে হবে। ”
সবুজ ফোন কেটে দিলে দৃষ্টি হাঁফ ছাড়ে।
তাহমিদ নিজের রুমে ডিভানে বসে কারো সাথে ফোনে কথা বলছে। কুহুকে ভেতরে আসতে দেখে সে উঠে বেলকনিতে যায়। কুহু বুঝতে পারল, তাহমিদ চায়না কুহু ওর কথা শুনুক।
কুহু ঠোঁট একটু বাঁকা করে সেন্টার টেবিল থেকে বই নিয়ে বিছানায় বসে।
প্রায় চল্লিশ মিনিট পর তাহমিদ রুমে আসে।
কুহু এক মনে পড়ছে। তাহমিদ বারবার কুহুর মনোযোগ আকর্ষনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
” আমার বউটা কি করে? ও বউ, একটু তাকাওনা কতক্ষণ তোমার মুখটা দেখিনি। আমার বুকের ভিতর খাঁ খাঁ করছে। ”
” হয়েছে। এত ঢং করার দরকার নেই। নিজেই এতক্ষণ যাবৎ কার সাথে গুজুরগুজুর ফুসুরফুসুর করে এসে এখন বলছে, কতক্ষণ দেখিনা। ভালোবাসা যেন উপচে পড়ছে। ”
” আমার বউ দেখি রা’গ করেছে! আমি এতক্ষণ একটা ছেলের সাথে কথা বলছিলাম। যদি কোন মেয়ের সাথে কথা বলতাম, তাহলে রা’গ করলে মানাত। আমার বউ আজকাল হিং’সু’টে হয়ে যাচ্ছে! রাগ করলে আমার সোনা পাখিকে একদমই পঁচা লাগে৷ ও বউ, একটু হাসোনা।” তাহমিদ কুহুকে জাপ্টে ধরে।
” ভাই, রুমে আছো? এই অধম অনেকক্ষণ যাবৎ নিচে তোমার জন্য অপেক্ষা করছিল। দয়া করে তোমার মুখটা একটু দেখাবে। ” দরজার বাইরে থেকে আনান কথা বলে।
আনানের আওয়াজ পেয়ে তাহমিদ কুহুকে ছেড়ে দেয়।
” এভাবে চোরের মত ডাকছিস কেন? ভেতরে আয়। ”
আনান ভেতরে আসে।
” ভাইয়া, তুমি কেমন আছো? ফুপু কেমন আছে? আরোশি, ফুপা ওরা কেমন আছে? ”
” আমি এখানে আসলেই তোর সবার কথা মনে পরে? এমনিতে তো খোঁজ নিসনা। এতদিন শুনেছি বিয়ের পর ভাই পর হয়ে যায়। কিন্তু তোকে দেখে সেই ধারনা পাল্টে গেছে। কেম্নে পারলিরে কুহু, সবাইকে এত তারাতারি ভুলে যেতে! এখন বর তোর কাছে আপন হয়ে গেল! ”
” তুই আমার বউকে এভাবে বলছিস আনান ! বউ আমার, সময় দিবে আমাকে, এতে তোর এত জ্ব’ল’ছে কেন! একটামাত্র বউ আমার। তাকে এভাবে বললে আমার হাত চুলকায় , বুঝেছিস? আর তাছাড়া, এগুলো বড় ভাইয়ের কথা? ”
” ভাই, তুমিও আজকাল আগের মত নেই। আর খোঁজ খবর নাওনা। শুধু সারাদিন বউ বউ কর। বিয়ে তো তোমার দাদা করেছে, তোমার বাবাও করেছে, তারা তো এমন বউ বউ করেনা! যদিওবা তোমার দাদার কথা আমার মনে নেই। কিন্তু চোখের সামনে তোমার বাপ-চাচাকে দেখছি। ”
” আমার বউ নিয়ে তোর এত মাথা ব্যথা কেন! তুই নিজের দিকে নজর দে। এখনই যেমন ছ্যাঁচড়ার মত পেছন পেছন ঘুরিস, বিয়ের পর মনে হয় এক বছর রুম থেকে বেরই হবিনা। ”
” আসতাগফিরুল্লা, তুমি না বড় ভাই! একটুতো লজ্জা কর। তোমার কথা শুনে আমি লজ্জা পাচ্ছি। ” আনান লজ্জা পাওয়ার ভান করে।
” ওরে লজ্জাবতী বানর রে। থাক এত লজ্জা পেতে হবেনা। শেষে দেখা যাবে…..
” আমি কি একটু কথা বলতে পারি? নিজেরা যেভাবে আজাইরা প্যাচাল শুরু করেছেন, মনে হচ্ছে ইহকালে আপনাদের এই প্যাচাল শেষ হবেনা। আজাইরা পাব্লিকদের আজাইরা প্যাচাল৷ ”
” ওহে, আনান, আজকাল তোর বোন ভিষণ ঝ’গ’রু’টে হয়ে গেছে। কথায় কথায় আমার সাথে রা’গ করে, গাল ফুলিয়ে থাকে। আগে ভেবেছিলাম বউ আমার ভিষণ শান্ত, ঠান্ডা মাথার। কিন্তু এখন দেখছি পুরাই উল্টো। ” তাহমিদের কথা শুনে কুহু আর রুমে থাকেনা। তাহমিদের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে রুম ত্যাগ করে।
” দিলে তো ওকে রা’গি’য়ে। পরে তোমার খবর আছে। উইমেন পাওয়ার কি রাতে টের পাবে। এক মিনিট তুমি আমাকে বানর বললে কেন? আমি বানর হলে, তোমার ভবিষ্যৎ ভাগ্নে-ভাগ্নীও বানর হয়ে জন্মাবে, বুঝলে? ” চোখ টিপে বলে আনান।
” মনে রাখিস তুই ছোট বোনের বিষয়ে কথা বলছিস। তোর ছোট বোন রাতে কি করবে এটা ভাবছিস তুই! তুই দেখছি বেশি পেকে গেছিস! ভবিষ্যৎ পোলাপানের কথাও ভেবে রেখেছিস? ”
” মাফ চাই, ভাই আমার। এবার আসল কথায় এস। ডেকেছ কেন? ”
” শোন, সবুজের কোন খোঁজ আমার ছেলেরা পায়নি। শা’লা যে কোন গর্তে ঢুকেছে, আল্লাহই জানে। ওকে পেলে এবার কে’টে টু’ক’রো টু’ক’রো করব। আমার শ্বশুরকে ওই শা’লা ভিষণ প্যারা দিচ্ছে। তুই তোর ছেলেদের ভালো করে বলে দে, ওকে যত তারাতারি পারুক খুঁজে বের করতে। ”
” ভাই, আমি ওদের বলে দিয়েছি। কাল ফুলতলা যাওয়ার পথে ওদের সাথে দেখা করতে হবে। ওদেরকে কিছু টাকা-পয়সাও দিতে হবে। ”
” আমি একটু আগেই আমার ছেলেদের সাথে কথা বলেছি। টাকাও পাঠিয়ে দিয়েছি। কালকে তোকে টাকা দিব, তুই ওদেরকে দিস। ”
” ভাই, আমার কাছে টাকা আছে। তোমার দিতে হবেনা। ”
” কি করতে হবে আর না হবে সেটা আমি বুঝব। কিন্তু এবার বল, তুই এত আগেই এখানে এসেছিস কেন? আমরা ফুলতলা যাব কালকে। কিন্তু তুই আজ দুপুর না হতেই হাজির হয়েছিস! আমি তোকে রাতে আসতে বলেছিলাম। ”
তাহমিদের কথা শুনে আনান মাথা চুলকে হাসে।
” বুঝোইতো ভাই। তবুও এভাবে প্রশ্ন করে লজ্জা দাও কেন। জানোনা আমি একটু লাজুক টাইপের। ”
” জানিতো তুই কেমন লাজুক। তবে এখন থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তুই আমার সাথে থাকবি। নো হাংকিপাংকি। ”
” ভাই, এত নির্দয় হয়োনা। তোমার এই হিরো মার্কা চেহারায় অমরেশ পুরীর রোল ভিষণ বেমানান। আরেকটা গোপন কথা, তোমার বোনও কিন্তু তোমার মতই। ঠিক যেন অমরেশ পুরীর লেডিস ভার্সন। আমি যদি তার সাথে একটু ইয়ে সিয়ে না করি, তবে সে আমার দিকে ফিরেও তাকাবেনা। ”
” তুই আমাকে আর আমার বোনকে ইনসাল্ট করছিস! আবার আমার থেকে সুযোগও চাচ্ছিস! নো ওয়ে। তুই আজ রাতেও আমার কাছে ঘুমাবি। ”
” তোমার বউকে আলাদা রেখে আমার কাছে ঘুমাবে! এটা একদমই ঠিক হবেনা ভাই। আমি জানি বউকে দূরে রেখে তোমার ঘুম আসবেনা। আমি এতটাও নির্দয় নই যে, আমার জন্য সারারাত তোমাকে নির্ঘুম কাটাতে হবে। আমি এটা হতেই দিবনা। ” দাঁত কেলিয়ে বলে আনান।
” আমার চিন্তা তোকে না করলেও চলবে। এবার চল একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি। রাতের হিসেব রাতে হবে। ”
আনান মুখ কাঁচুমাচু করে তাহমিদের পেছনে হাঁটতে থাকে।
চলবে….