বিন্দু থেকে বৃত্ত পর্ব ৫১

0
2068

#বিন্দু_থেকে_বৃত্ত
#পার্ট_৫১
জাওয়াদ জামী

তিনদিন পর তাহমিদ সানাউল রাশেদিনের সাথে কথা বলে।
তাহমিদ বড় চাচ্চুকে সব খুলে বলে।
সব শুনে সানাউল রাশেদিনের চোখ কপালে উঠে।

” তোমরা ভেতরে ভেতরে এত কিছু করেছ! ছেলেটাকে অত্যাচার পর্যন্ত করেছ! এত কিছু করেছ, তোমাদের একটুও ভয় হয়নি? আবার বলছ, ঘটনা অ্যাকসিডেন্টের মত করে সাজাবে! তুমি কবে থেকে এত সাহসী হলে! ”

” আমি আগে থেকেই সাহসী ছিলাম, শুধু তোমার দেখার চোখ ছিলনা। আমি এসেছি তোমার সাথে আলোচনা করতে কিন্তু তুমি সহযোগিতা না করে বাগড়া দিচ্ছ। এখন আমার মনে হচ্ছে তোমাকে বলেই ভুল করেছি। একয়দিন যেটা গোপন রেখেছিলাম, তুমি এখনই বোধহয় সেটা প্রকাশ করে দিবে। বাই দ্য ওয়ে, তুমি তোমার ফ্রেন্ডকে বলে সবুজকে গ্রে’ফ’তা’র করার ব্যবস্থা করো৷ বড়মার চাচাতো ভাই যিনি এসপি তাকেও বলো। আমি সবুজকে বের করার ব্যবস্থা করছি।”

” ঠিক আছে, ঠিক আছে, আমি ওদের সাথে কথা বলছি। একটা কথা বললে, হাজারটা কথা শুনিয়ে দেয়। কপাল করে এমন একটা ছেলে পেয়েছিল আমার ভাই। ”

” সেভাবে দেখতে গেলে তোমার কপালও ভালো। এমন একটা জামাই পেয়েছ। তোমার চৌদ্দ গোষ্ঠিতে এমন জামাই এখন অব্দি হয়নি। ”

” আমার চৌদ্দ গোষ্ঠির মধ্যে বোধকরি তুমিও আছ।আমাকে সম্মান না করলেও, নিজের বংশের মানুষকে সম্মান করতে শিখ। ”

” কেন তুমি কি আমার বংশের বাইরের মানুষ? যে তোমাকে সম্মান করা যাবেনা! হায়রে মানুষ, নিজেই বলছে তাকে সম্মান না করতে। তোমার বুদ্ধি দেখছি তোমার ভুঁড়িতে সীমাবদ্ধ। ”

” তুমি এখান থেকে যাও। আজকের পর থেকে আমার সাথে কথা বলবেনা। তুমি আমাকে অপমান করতে দুইবার ভাবোনা। ” সানাউল রাশেদিন রেগে গেছে।

” বুঝেছি, কেন তোমার সাথে কথা বলতে নিষেধ করছ। বড়মার ভাইয়ের মেয়েকে বিয়ে করেছি, তাই জামাই হিসেবে তোমার কাছ থেকে অনেক কিছুই পাই। সেসব না দেয়ার জন্যই কথা না বলার বাহানা দিচ্ছ! তুমি কৃপণ জানতাম, কিন্তু এতটা ছোট মনের আজ প্রথম জানলাম৷ ”

” তুমি কি আমার সামনে থেকে যাবে? নাকি আমিই চলে যাব? বাপের জন্মে এমন বেয়াদব ছেলে দেখিনি। ” সানাউল রাশেদিন গজগজ করতে করতে প্রস্থান করে।

তাহমিদ বড় চাচ্চুকে রাগতে দেখে মিটিমিটি হাসছে। লোকটাকে রা’গা’তে মন্দ লাগেনা।

মাঝরাতে শহরের রাস্তায় একটা মাইক্রোর সাথে অ্যাকসিডেন্টে আহত অবস্থায় পাওয়া যায়। মাইক্রো ড্রাইভার ওকে আহত অবস্থায় রেখে পালিয়েছে। দুইজন পথচারী ওকে হসপিটালে ভর্তি করে। পরদিন সকালে ফুলতলার দুইজন ব্যক্তি হসপিটালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে সবুজকে আবিষ্কার করে। এবং তারা তৎক্ষনাৎ থানায় খবর দেয়। ঘন্টাখানেকের মধ্যে পুলিশ এসে সবুজকে গ্রে’ফ’তা’র করে।
কেউ জানলনা এসব ঘটনা তাহমিদের সাজানো। চিকিৎসা নিতে আসা ব্যক্তিরাও তাহমিদের নির্দেশেই হসপিটালে এসেছে। আবার দুইজন পথচারীও তাহমিদেরই লোক।

সানাউল রাশেদিন তার বন্ধুর সাথে কথা বলে, সবুজের নামে দৃষ্টির আত্নহত্যায় প্ররোচনের জন্য, নারী নির্যাতনের জন্য, কায়েসের টাকা ও সম্পত্তি আত্মসাৎ সহ কয়েকটা মামলা কায়েসকে দিয়ে করালেন।
আফরোজা নাজনীন তার চাচাতো ভাইকে বলে সবুজ ও তার বাবাকে আটকে রাখার ওদের কঠিন শাস্তি হওয়ার সকল ব্যবস্থা করেন।
সেই সাথে সবুজের স্বীকারোক্তি যেটা ওকে আটকে রাখা অবস্থায় তাহমিদরা নিয়েছিল, সেটা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ওরা স্বীকারোক্তির বিষয়টি এমনভাবে সাজিয়েছিল, যেন সবুজ ওর বন্ধুর সাথে কথা বলছে এমন সময় কেউ রেকর্ড করেছে। অবশ্য এটা করতে ওদের কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি।
সবুজ আচ্ছামত ধো’লা’ই করে ওকে রাকিবের সাথে কথা বলতে রাজি করাতে হয়েছে।
ধো’লা’ই খেয়ে সবুজ তাহমিদের কথামত রাকিবের সাথে ওর সকল কুকর্মের গল্প করে।
সবুজের আজীবন জেলে পঁচে ম’রা’র মত তথ্য সংগ্রহ করেই তবে তাহমিদ ওকে পুলিশে দেয়।
সবুজকে গ্রে’ফ’তা’র করার তিনদিন পর চেয়ারম্যানকে সিলেটের একটা হোটেল থেকে আটক করে পুলিশ।

শিউলি আক্তার আজকাল কাউকেই চিনতে পারছেনা। সে কুহুকে দৃষ্টি ভেবে বারবার বুকে জরিয়ে নিচ্ছে। মাঝেমধ্যে আবোলতাবোল বকছে। আফরোজা নাজনীন নিজে শিউলিকে নিয়ে ডক্টরের কাছে গিয়েছে। কিন্তু ডক্টর কোন আশার বানী শোনাতে ব্যর্থ হয়েছে।

দৃষ্টির মৃত্যুর একমাস পেরিয়েছে। শিউলির অবস্থার কোন উন্নতি হয়নি৷ এই একমাস কুহু বাবার বাড়িতেই ছিল। তাহমিদ দুই-এক দিন পরপর এসে দেখা করে গেছে৷
আফরোজা নাজনীন, নাজমা পারভিন, শাহনাজ সুলতানা পালাক্রমে থেকেছেন ভাইয়ের কাছে।

একমাস পর তাহমিদ আর কুহুকে ফুলতলা থাকতে দিতে চাচ্ছেনা। এখানে এসে কুহুর পড়াশোনা হচ্ছেনা এই অযুহাত দিচ্ছে। কিন্তু কুহু বেশ বুঝতে পারছে তাহমিদ ওকে ছাড়া আর থাকতে পারছেনা। তাই এমন করছে।

তাহমিদ ফুলতলা আসলে কুহু কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ওর সাথে আলোচনা করে। এরপর ওরা সিদ্ধান্ত নেয় ফুপুদের সাথে এবং তাহমিদের বাবা-মা’র সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার।

পাশের বাড়ির সেই বৃদ্ধা দাদীকে বাবার বাড়িতে রেখে কুহু আর তাহমিদ কয়েকদিনের জন্য ঢাকায় আসে।

ছেলের বউ বাসায় এসেছে জন্য তাহমিনা আক্তার অনেকরকম রান্না করেছেন৷ রাতে খাওয়ার পর কুহু শ্বশুরের কাছে যেয়ে বসে।

” বাবা, আপনার কাছে একটা অনুরোধ আছে। যদি অনুমতি দেন, তবে বলব। ”

” মা তার ছেলের সাথে কথা বলবে, এতে অনুমতির কোন প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করিনা। তোমার যা বলার নির্ভয়ে বল। ” শফিউল রাশেদিনের খোলামেলা জবাব।

” বাবা, আমার বাবার বাড়ির বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সব কিছুই আপনারা জানেন। আমি বাবার কাছে পাশের বাড়ির একজন বৃদ্ধা দাদীকে রেখে এসেছি। ছোটমার অবস্থা ভালো নয়। তার এখন সংসার করার মত অবস্থা নেই। সে এখন বলতে গেলে উ’ন্মা’দ। এই অবস্থায় তাদের গ্রামে রাখার সাহস আমি পাচ্ছিনা। তাই আমি চাচ্ছিলাম তাদের ঢাকা নিয়ে আসতে। আমাদের বাসার আশেপাশে কোন বাসা নিয়ে তাদের রাখতে। এখানেই শিহাবকে ভর্তি করে দিব। ছোটমার চিকিৎসাও হবে। সবচেয়ে বড় কথা আমি মানসিক ভাবে স্বস্তিতে থাকতে পারব। ”

” তোর বাবা-মা’কে এখানে নিয়ে আসবি ভালো কথা। কিন্তু তাদের অন্য কোথাও রাখতে হবে কেন! আমাদের বাসায় তাদের থাকার মত যথেষ্ট জায়গা আছে। তাছাড়া আমরাও তাদের দেখাশোনা করতে পারব। ” কুহুর কথা শেষ হতেই তাহমিনা আক্তার বললেন।

” এটা হয়না, মা। আমার কথায় আপনি রাগ করবেননা। আমি জানি আপনারা আমার বাবা-মা’র যথেষ্ট খেয়াল রাখবেন। কিন্তু তবুও আমি চাই তাদের আলাদা বাসায় রাখতে। তাছাড়া মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে কোন বাবা-মা দীর্ঘদিন থাকলে বিষয়টি ভালো দেখায়না। আত্মীয়তা দূর থেকেই সুন্দর। আপনারা তাদের কাছে বেড়াতে যাবেন, তারা এখানে বেড়াতে আসবে, সম্পর্কটা এভাবেই থাকুক, মা। এতে সম্পর্কের সৌন্দর্য বজায় থাকে। সবার আত্মসম্মান ঠিক থাকে। ”

” আমি তোমার সাথে একমত, মা। তুমি চাইলে আমরা তোমার বাবা-মা’র জন্য ফ্ল্যাট দেখব। তারা এখানে আসবে, আমাদের আশেপাশে থাকবে এটা খুবই ভালো কথা। বিপদআপদে আমরা তাদের পাশে থাকতে পারব। তাদের খেয়াল রাখতে পারব। মা, তুমি কি তোমার বাবার সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছ? ” শফিউল রাশেদিনও কুহুর সাথে একমত হলেন।

” না, বাবা। এখনও তাকে কিছু বলিনি। আপনারা সবাই, ফুপুরা রাজি হলেই, তবে তার সাথে কথা বলব। ”

আফরোজা নাজনীন সপ্রশন্ন নয়নে কুহুর দিকে তাকিয়ে আছেন।
তিনি ভাবছেন, প্রতিকূল পরিস্থিতি মেয়েটাকে কতটা বদলে দিয়েছে! অল্প বয়স থেকেই পরিনত মেয়েটা আজকে ভালোমন্দ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিখেছে। জীবনে চলার পথকে মসৃণ করতে যা করতে হয় সবটাই তার নখদর্পনে চলে এসেছে।

” সোনা মা, আমি শাহনাজ আর নাজমার সাথে কথা বলব। আমার বিশ্বাস তারা তোর এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত করবেনা। আমিও চাই কায়েস এখানে এসে থাকুক। তাকে এ অবস্থায় অতদূর থাকতে দিতে আমিও চাচ্ছিনা। ওদেরকে এখন চোখেচোখে রাখা ভিষণ প্রয়োজন। আমরা শান্তিতে এখানে বাস করব, আর ওরা সেই কতদূরে গ্রামে একা একা কাটাবে, এটা হতে দেয়া যাবেনা। ”

‘কুঞ্জছায়া’র ড্রয়িংরুমে বসেই সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় কায়েস ও তার পরিবার ঢাকায় এসে থাকবে। শুধু বাকি রইল ছোট দুই বোনের মতামত। আফরোজা নাজনীন তার দুই বোনকে ফোন করে সবটা জানালে তারা আপত্তি করেনা।তারাও চান তাদের ভাই ভালো থাকুক।
তিন বোন মিলে পরামর্শ করেন সাতদিন পর তারা ফুলতলা যাবেন। ভাইকে রাজি করাবেন ঢাকায় এসে থাকতে।

সাতদিন পর আফরোজা নাজনীন তিন বোনের সাথে ফুলতলা যাচ্ছেন। তাদের সাথে কুহু ও তাহমিদ আছে।

বিকেলে তারা ফুলতলা পৌঁছান। কায়েস একসাথে সবাইকে দেখে হুহু করে কেঁদে উঠে।
এই কয়দিনে শিউলির অবস্থা আরও খারাপ হয়ে গেছে।
রাতের খাবার তিন বোন মিলে রান্না করলেন।
সবাই একসাথে খেয়ে নেয়। শিউলি হাত দিয়ে খেতে পারছেনা বিধায় কুহু তাকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়।
শিউলি কুহুকে যখনই দেখছে, তখনই দৃষ্টি ভেবে বুকে টেনে নিচ্ছে।

খাবার পর সবাই কায়েসকে ডেকে নিয়ে কুহুর দেয়া প্রস্তাব শোনায়। সেইসাথে এ-ও জানায় তারা কিছুতেই কায়েসদের এখানে রেখে যাবেনা।
সকলের জোড়াজুড়িতে কায়েস রাজি হয় ঢাকায় যেয়ে থাকতে।
সিদ্ধান্ত হয় তাদের ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ভাড়া দেয়া হবে। একমাস পর তাহমিদ এবং শিহাব এসে ভাড়া নিয়ে যাবে। এবং ভাড়ার টাকা কায়েসের এ্যাকাউন্টে জমা রাখা হবে। জমিজমাও লিজ দেয়া হবে। সেই টাকাগুলোও কায়েসের এ্যাকাউন্টে রাখা হবে। আম, লিচুর বাগানও লিজ দেয়া হবে। আর দুরের কিছু জমি আছে যেখানে সব সময় যাওয়া সম্ভব হয়না, সেগুলো বিক্রি করে দেয়া হবে। এতে তাদের ঢাকায় থাকতে কোন অসুবিধা হবেনা।
আফরোজা নাজনীন জানান, তারা সাতদিন গ্রামে থেকেই সব ব্যবস্থা করে কায়েসদের নিয়েই তবে ঢাকা ফিরবেন।

সবুজকে কয়েক দফা রিমান্ডে নেয়া হয়। প্রতিবারেই সে সব সত্যি উগরিয়ে দেয়। সানাউল রাশেদিনের হস্তক্ষেপে সবুজের জেল থেকে বের হওয়ার সকল পথ বন্ধ হয়ে যায়। সবুজ ও তার বাবা-মা ও জেলে বন্দী জীবন কাটাচ্ছে।

তাহমিনা আক্তার বড় জায়ের কথামত তাদের বাসার পাশেই একটা ফ্ল্যাট দেখেছে। তিন রুমের একটা ফ্ল্যাট। আফরোজা নাজনীন ছোট জায়ের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়ে সেই ফ্ল্যাটের মালিকের সাথে কথা বলতে বলেন।
তাহমিনা আক্তার মালিকের সাথে কথা বলে সব ঠিকঠাক করলেন৷

নির্দিষ্ট দিনে তারা সকলে ফুলতলা থেকে রওনা দেন। এই সাতদিনে তাহমিদ, কায়েস এবং আনান মিলে সব কাজকর্ম সেড়ে নেয়। আনান ওদের সাথে না গেলেও পরে তাহমিদ ওকে ডেকে নেয়।
যাবার আগে কায়েস তার বাড়ির দেখভালের দ্বায়িত্ব তার চাচাতো ভাইদের কাছে দেয়। তারা শুধু নিজের কাপড়চোপড় আর প্রয়োজনিয় জিনিসপত্র সাথে নেয়। সব ফার্নিচার রেখে যায়। কায়েসের নিজের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে খারাপ লাগছিল। বারবার পেছন ফিরে তাকায়।

আফরোজা নাজনীন ভাইকে নিয়ে নিজেদের বাসায় উঠেছেন। আগে ফ্ল্যাট গুছিয়ে নিয়ে তারপর কায়েসদের সেখানে পাঠাবেন।

নাজমা পারভিন আনানকে সাথে নিয়ে প্রয়োজনিয় ফার্নিচার কিনেন। এরপর আনানকে দ্বায়িত্ব দেন সেগুলো বাসায় পৌছানোর।
আনান সব ফার্নিচার নিয়ে বাসায় আসে।

সিক্তা আর কুহু মিলে সব গোছগাছ শুরু করে। মাঝেমধ্যে তাহমিনা আক্তার এসে তাদের সাথে হাত লাগান।
একে একে নাজমা পারভিন, শাহনাজ সুলতানাও আসেন। হাসি আনন্দে তারা ভাইয়ের ফ্ল্যাট সাজান।

তবে এতকিছুর মাঝে তাহমিনা আক্তার লক্ষ্য করলেন আনান মাঝেমধ্যে সিক্তার সাথে ফ্লার্ট করছে। সিক্তাও সেসব বেশ উপভোগ করছে। তিনি বুঝে নেন, ওদের দুজনের মধ্যে কিছু একটা চলছে। তিনি আফরোজা নাজনীনের সাথে কথা বলতে মনস্থির করলেন। আনান ছেলেটাকে তার কাছে বেশ লাগে।

সবকিছু গোছানো শেষ হতে ওদের দুইদিন লেগে যায়। দুইদিন পর কায়েস তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে নতুন বাসায় উঠে। তাহমিনা আক্তার কায়েসের বাড়ির জন্য একজন মাঝবয়েসী মহিলা ঠিক করেন। সেই মহিলা শিউলির যত্ন নেয়ার পাশাপাশি বাসার সকল কাজ করবে।

কুহু আজ ভিষণ খুশি। শেষ পর্যন্ত বাবাকে তার কাছে এনে রাখতে পেরেছে। প্রতিদিন না হোক সপ্তাহে একদিন অন্তত বাবাকে দেখতে পারবে।
এই বাড়ির মানুষদের ওপর কৃতজ্ঞতায় ওর মন ছেয়ে গেছে। এতটাও ভালো কেউ হতে পারে!
আর তাহমিদ সে একজন আদর্শ স্বামী। সকল মেয়েই তাদের জীবনে এমন একটা পুরুষ চায়, যে স্ত্রীর সকল বিপদেআপদে, সুখ-দুঃখে স্ত্রীর পাশে ঢাল হয়ে থাকে।
কুহুর আজ নিজেকে পরিপূর্ণ সুখী মনে হচ্ছে। এক জীবনে আর কি চাই!

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here