পঞ্চভুজ তারা পর্ব-১০

0
341

#পঞ্চভূজ_তারা!
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ১০
মনির,আফরান,নিবির,আরিফ আর মেরাজ দাত কেলিয়ে তাকিয়ে আছে।আর তাদের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে আছে সাদু,নূর,আলিশা,আলিফা,আর মিম।
—“আপনারা আমাদের থেকে জিজ্ঞেস না করেই এমনটা কিভাবে করলেন?আর তোরা আমার দুইটা ভাই না শত্রু(নিবির আর আফরান কে উদ্দেশ্য করে)।”দাতেদাত চেপে বললো সাদু।
—“জিজ্ঞেস করার কি আছে?এটা স্বিকার করে নেও যে তোমরা ড্যান্স পারো না।”বাকা হাসি দিলো মনির।
—“yes! You all have no ability. ” দাত কেলিয়ে বলে আফরান।”
—“আপনার দাত কেলানো বন্ধ করুন নাহলে দাত ভেংগে ফেলবো।”চোখ রাঙ্গিয়ে বললো নূর।
—“জীবনেও মুখ দিয়ে একটু ভালো কথা বের হবে না।”বিরবির করে আফরান।
—“সেটা আপনার ক্ষেত্রে তো কোনদিনও বের হবে না।” নূর এর কথা শুনে হকচকিয়ে গেলো আফরান।
আলিশা সবাইকে ঠেলেঠুলে সামনে গিয়ে বলে,,
—“শাকচুন্না,উগান্ডার প্রেসিডেন্ট,কল্লাছাড়া মোরগ,লেজছাড়া বান্দর,সুর ছাড়া হাতি,ঠ্যাং ছাড়া কাকড়া,আপনি জেনেশুনে এইসব করেছেন না।যেন আমরা সবার সামনে এম্বেস্ড হই।”
নিবির ঠাস করে আরিফ এর গায়ে পড়ে বলে,
—“,হেই দোস্ত ওকে বুজা আমি দূর্বল হার্টের অধিকারি।আমাকে এইসব উদ্ভব গালি দিতে মানা কর।স্ট্রোক করে মারা যেতে পারি।”
—“,বেশ হয়েছে!”বলেই মুখ ভেংচি দিলো।
এদিকে আলিফা’র মনে লাড্ডু ফুটছে সে আরিফ এর সাথে ড্যান্স করবে শুনেই খুশিতে লাফাতে ইচ্ছে করছে তার।ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে সে আরিফ এর দিকে।
—-“সাহস থাকলে আমাদের সাথে ড্যান্স করো?”মেয়াজ বলে উঠলো।
—“সেটা তো অবশ্যই করবো।আমাদেত চ্যালেঞ্জ করা৷ হয়েছে আর কোন চ্যালেঞ্জে আমরা হারি না।”মিম বাকা হেসে বলে।
—“so girl’s you guy’s are ready.”সাদু বাকিদের উদ্দেশ্য বলে।
সবাই “yes” বলে ছেলেদের ভেংচি কেটে স্টেজের দিকে গেলো।
In the dance stage……..

প্রেম থাকে রঙ্গিন কূলে
মোরা নদীর দু কূলে (সাদুর দিকে তাকিয়ে মনির)

প্রেম আছে মনের খাতায়
চোখেরই পাতায় পাতায়(নূরকে ঘুরিয়ে আফরান গাইলো)

প্রেমের শুরু আছে
সীমানা জানা নেই (সাদু নেচে গাইলো)

শূন্য থেকে আসে প্রেম
পূর্ণ করে দিতে(নূর গাইলো)

স্বর্গ সুখের আকাশ
নামে মাটির পৃথিবীতে(সাদু মনির এর চারপাশ ঘুরে গাইলো)

ঠিকানা হয়ে তুমি, আছো জীবনে
ধ্রুবতারা কাকে বলে, জানা নেই(আলিশা)

বিরহ হয়ে তুমি, আছো এ প্রেমে
ভালোবাসি কত অতলে (আলিফা আরিফ এর সাথে নেচে গাইলো)

আর কেউ নেই হৃদয়ে(আলিশাকে ঘুরিয়েনিবির গেয়ে উঠলো)

তুমি মিশে আছো আমিতে(আলিফাকে বুকে টেনে নিলো আরিফ আলিফা লজ্জায় লাল হয়ে গেলো)

শূন্য থেকে আসে প্রেম
পূর্ণ করে দিতে(সাদু গাইছে আর নাচছে)

স্বর্গ সুখের আকাশ
নামে মাটির পৃথিবীতে(নূর গেয়ে উঠলো)

মোহনা ফেলে আমি
ডুবে যাব সাগরে
অভিমানে যদি দূরে রও (মিম গাইলো)

সাধনা করে আমি শুধু চাই তোমাকে
আলো ছায়া জুড়ে, আলো হও(মেরাজ এর চোখে তাকিয়ে গাইলো মিম)

আর কেউ নেই হৃদয়ে
তুমি মিশে আছো আমিতে। (ছেলেরা সবাই গাইলো)

শূন্য থেকে আসে প্রেম
পূর্ণ করে দিতে
স্বর্গ সুখের আকাশ
নামে মাটির পৃথিবীতে (মেয়েরা ঘুরে ঘুরে নেচে গাইলো)

শূন্য থেকে আসে প্রেম
পূর্ণ করে দিতে
স্বর্গ সুখের আকাশ
নামে মাটির পৃথিবীতে (ছেলেরাও সমান তালে নেচে নেচে)

শূন্য থেকে আসে প্রেম
পূর্ণ করে দিতে
স্বর্গ সুখের আকাশ
নামে মাটির পৃথিবীতে(সবাই একসাথে নেচে গাইলো)

এইভাবেই তারা সম্পূর্ণ গানটা নিজেরা গেয়ে গেয়েই আবার নিজেরাই নাচলো।সবাই জোড়ে হাত তালি দিয়ে উঠলো।অসম্ভব সুন্দর হয়েছে ওদের নাচটা। তারপর সবাই স্টেচ থেকে নেমে গেলো।

সাদু ভাব নিয়ে বললো,
—“কি চমকে দিলাম তো!”
—“বলেছিলাম না আমাদের দ্বারা কিছুই অসম্ভব না।”নূর বলে উঠে।
মনির অবাক হয়ে বলে,
—“তুমি বিদেশে থেকেও এতো সুন্দর বাংলা গান গাইতে পারবে আমি ভাবি নি।”
আফরান আর নিবির একসাথে বলে,
—“আমিও অবাক আমাদের পিকু এতো ভালো গাইতে পারে।তাছাড়া তো ওকে কোনদিন bts এর গান ছাড়া গাইতে দেখি না।সারাদিন ওই কোরিয়ান ব্যান্ড এর গান শুনে আর গাইতে থাকে সাথে তো লাফানি আছেই।বাট আমরাও সার্প্রাইজ্ড পিকুকে বাংলা গান গাইতে দেখে আর সাথে নাচটাও দারুন হয়েছে।”
সাদু দাত কিরমিরিয়ে বলে,
—“ভাইয়ারা তোদের দুটোকে কতোবার বলেছি আমার bts দের নিয়ে কিছু বলবা না নয়তো একদম মেরে দিবো।”
মনির বিরবির করে বলে,
—“যে কাছে আছে তাকে তো চোখ তুলেও দেখো না।আর যাদের ধরা ছোয়া’র কাছে যাওয়ার সাধ্য নেই তাদের নিয়ে ঠিকি লাফালাফি করতে পারে।”
সাদু স্পষ্ট না বুঝে জিজ্ঞেস করে,
—“কিছু বললেন?”
মনির অপ্রস্তুত হয়ে বলে,
—“নাহ নাহ!! কিছু না।”
হঠাৎ একটা মেয়ে এসে মেরাজকে জরিয়ে ধরলো সবার সামনে।মেয়েটা মেরাজকে জরিয়ে ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বলে,
—“বাবু আই মিস্ড ইউ সো মাচ।”
মেরাজ ও তাকে একহাত দিয়ে জরিয়ে ধরে বলে,
—“আই মিস্ড ইউ টু সুইটি।”
এদিকে মনির, আরিফ,নিবির আর আফরান এর চেহারা স্পষ্ট বিরক্ত দেখা যাচ্ছে।মিম ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে।আসলে ও বুজতে পারছে না কাহিনিটা কি?সাদুরা সবাই বিষ্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছে।
মেরাজ ওকে মেয়েটাকে একহাতে জরিয়ে ধরেই সবার উদ্দেশ্যে বলে,
—“hey guy’s meet my girlfriend Jui..”
সবাই হা করে কতোক্ষন তাকিয়ে থাকলো মেরাজ এর গফ মেয়েটা।মানতে বেশ পেগ পেতে হচ্ছে ওদের।
জুই এগিয়ে এসে বলে,
—“হাই এব্রিওয়ান আ’ম জুই।”
সবাই বাধ্য হয়ে জুইয়ের সাথে কুশলাধি বিনিময় করলো।এদিকে মিম এখনো হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।কেন যেন এই জুই মেয়েটাকে ওর একদমি সয্য হচ্ছে না।জুইয়ের চুল টেনেটুনে ছিরে ফেলতে ইচ্ছে করছে।কেন যেন প্রচুর রাগ লাগছে ওর।কিন্তু কেন এতো রাগ লাগছে।মেরাজ কে কতোক্ষন ইচ্ছামতো কেলাতে পারলে মনে হয় ওর খুশি লাগতো।।
__________________
রজনী রাগে রিতীমতো থরথর করে কাপছে।মনিরকে সাদুর সাথে নাচতে দেখে ওর এতো পরিমান রাগ লাগছে বলে বুজাতে পারবে না।

—“যতো হাসার হেসে নেও।আজকেই তোমার শেষদিন মনির এর সাথে এরপর আর তুমি বেচেই থাকবে না।আমার মনির এর সাথে ড্যান্স করা,এর শাস্তি একমাত্র মৃত্যু তুমি সে যাই হোও না কেন?মনির এর আশেপাশে এসেছো এটাই তোমার বড় ভূল।”
বলেই শয়তানি হাসি দিয়ে চলে গেলো।রজনীর মাথায় চলছে ভয়ানক সব পরিকল্পনা। কি হবে সাদু’র সাথে। রজনী কি করবে?
_________
সাদু যখন বাকিদের সাথে কথা বলায় ব্যস্ত তখন একটা মেয়ে সাদু’কে বলে,
—“সাদুপ্পি তোমাকে রাজিয়া ম্যাম থার্ড ফ্লোরে যেতে বলেছে।”
—“থার্ড ফ্লোরে কিন্তু কেন?”অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো সাদু।
—“সেতো জানি না।”মেয়েটি বললো।
—“আচ্ছা তুমি যাও আমি আসছি।”সাদু বলতেই মেয়েটি চলে গেলো।”
আলিশা চিন্তিত হয়ে বলে,
—” থার্ড ফ্লোরে কেন ডাকলো।ওখানে তো এখন সব ফাকা।”
আলিফা সাফ জানালো,
—“নাহ সাদু তুই যাস না।”
—“আরে কি বলছিস ম্যাম ডেকেছে দরকার আছে নিশ্চয়ই।”সাদু বুজালো।”
নিবির বলে উঠে,
—“পিকু তাহলে চল আমি যাই তোর সাথে।”
—“আরে তোরা এতো হাইপার হচ্ছিস কেন?এখান থেকে এখানে যেতে ৫ মি. লাগবে।”সাদু বললো।
মনির কপালে চিন্তার সুক্ষ্মভাজ ফেলে বললো,
—“কিন্তু তোমার নিবিরকে নিতে প্রোবলেম কোথায়?নিবির কে নিয়ে যাও।”
সাদু বিরক্ত হয়ে বলে,
—“এখান থেকে এখানে যাবো তাও বডি….”
সাদু কিছু বলার আগেই মনির ধমকে উঠে,
—“তোমাকে যেটা বলা হয়েছে সেটা করো।ফারদার আর একটা কথা বললে এই মুখ আর কথা বলার জন্য থাকবে না।এক থাপ্পরে সব দাত ফেলে দিবো।”
সাদু কাদো কাদো হয়ে তাকালো আফরান আর নিবির এর দিকে।আফরান আর নিবির তৎক্ষনাত অন্য দিকে তাকালো মানে তারা কিছুই শুনিনি এমনভান ভান ধরলো।মনির আবারো ধমক দিয়ে বলে,
—” মুখ এমন করে লাভ নেই।যা বলেছি তাই করো নিবির কে নিয়ে যাও!”
সাদু গালফুলিয়ে বলে,
—“নিবু ভাইয়া চল।আমার সাথে গিয়ে আমাকে উদ্ধার কর।”
সাদু গটগট করে চলে গেলো নিবির ও ওর সাথে গেলো।
এদিকে মনির ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে বলে,
—“পাগলি একটা পুরাই বাচ্চা।এটাকে যে আমি কিভাবে বড় করবো।ইসসস! গাল ফুলালে কি কিউট লাগে মন চায় গালগুলো কামড়ে খেয়ে ফেলি।”
আবারো হাসলো মনির।

কিন্তু এই হাসি কতোক্ষন থাকবে তা কেউ জানে না।সাদুর জন্যে কি অপেক্ষা করছে তা ওদের কারো ধারনা নেই।সব ওদের কল্পনারো বাহিরে।

চলবে,,

আজ নিয়ে ৩ দিন হলো কারেন্ট নেই।পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে চার্জ দিয়ে এটুকু লিখলাম।তারউপর হাতের যন্ত্রনাটা প্রচুর বেড়ে গেছে। যেখানে আমি ঠিক মতো খাবার টাই খেতে পারি না।সেখানে আপনাদের জন্যে কষ্ট করে আমি গল্প লিখি।আর আপনারা আমাকে উৎসাহিত করার জন্য একটা ভালো কমেন্ট করতে পারেন না।এটুকু আশা করা কি আমার ভূল আপনারাই বলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here