পঞ্চভুজ তারা পর্ব-৯

0
258

#পঞ্চভূজ_তারা!
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি
#পার্টঃ০৯
(হাত কেটে গেছে যার কারনে ছোট করে লিখেছি)

.সেদিন ওরা চলে যায় নিজ নিজ বাড়িতে।কারন তারপরের দিন ভার্সিটিতে ফাংশন হবে।পরেরদিন যথারিতি বিকেল বেলা ওরা রেডি হচ্ছে।নূর,আলিফা,মিম হাবার মতো দাড়িয়ে আছে।কারন ওরা শাড়ি পড়তে পারে না।সাদু আবার এই কাজটা অনেক ভালো পাড়ে।আলিশা আর সাদু মিলে ওদের শাড়ি পড়িয়ে দিলো।আলিশা যেখানে একসাথে যেখানে নূর আর মিম কে শাড়ি পড়িয়ে দিয়েছে সেখানে সাদুর জান যায়যায় অবস্থা আলিফা শুধু ব্যাঙের মতো লাফায়।ওর না-কি সুরসুরি লাগে।বিরক্ত হয়ে সাদু যখন একগাদা ঝাড়ি দিয়েছে তখন শান্ত হয়েছে।পাচজন রমনী একই পোষাক পরিডধান করেছে।ইসস কিযে মিষ্টি লাগছে।অবশেষে ওরা গিয়ে পৌছালো ভার্সিটিতে।
.মনির,আফরান,নিবির,আরিফ আর মেরাজ কথা বলছিলো। হঠাৎ নিবির বলে উঠে,
–“ওয়াও?!!”
সবাই ওর দৃষ্টি অনুসরন করে সেদিকে তাকালো।দেখে সাদু,নূর,আলিফা,আলিশা আর মিম আসছে সবাই হুয়াইট আর ব্লু কম্বিনেশনের শাড়ি পড়েছে সাথে হুয়াট আর ব্লু কম্বিনেশনের অর্নামেন্টস হালকা মেক-আপ অসম্ভব সুন্দর লাগছে দেখতে।মনির মুগ্ধ হয়ে নয়নে তাকিয়ে আছে বুকে বড় ব্যাথা করছো ওর।ইসস!!এতো সুন্দর কেন মেয়েটা এইযে সবাই কেমন ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে এতে যে ওর গা জ্বালা করে সে কি মেয়েটা জানে না।ওর যে তখন মন চায় সবকিছু ভেংগে গুড়িয়ে দিতে।মনির চোখের পলক ওই ফেলছে না।আফরান বুকে হাত দিয়ে জোড়েজোড়ে নিশ্বাস নিশ্বাস নিচ্ছে এই মেয়ে বোধহয় তাকে মেরেই ফেলবে।উফফ!এই মেয়েটা তার শুধুই তার ভাবতেই অসম্ভব ভালোলাগা কাজ করে আফরান এর মনে।
-আরিফ তাকিয়ে আছে আলিফা’র দিকে। এই মেয়ের আর কতো রূপে সে ঘায়েল হবে ও নিজেও জানে না।এক একদিন একএকরূপে ভীষনভাবে ঘায়েল করে ওকে।কেন এমন লাগে?কেন তার এতো ভালোলাগে আলিফা’কে নিয়ে, চোখ বন্ধ করতেই কেন এই মেয়ের মুখটা ভেসে উঠে?তবে কি ও আলিফা’কে ভালোবাসে।হ্যা ভালোবাসে সে আলিফা’কে! ভালোবাসি। আরিফ চেচিয়ে বলে,
–“ইয়েস!আই এম ইন লাভ ইউথ হার!”
এদিকে সবাই ক্রাশ বাশ খাওয়া বন্ধ করে আরিফ এর দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকালো।আরিফ তো এখনো আলিফা’র দিকে তাকিয়ে ভেটকি মাছের মতো হাসছে।মনির আরিফ’কে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে বলে,
–“,ওই সালা কার প্রেমে পড়ছিস বল?”
আরিফ এর খেয়াল হলো ও কি বলছিলো।এখন সে কি বলবে। যেই মেয়েকে দেখলে ও ভয়ে একশো মাইল দূরে থাকে সেই মেয়ের প্রেমেই ও পড়েছে।সবাই ভ্রু-কুচকে তাকিয়ে আছে।আরিফ আমতা আমতা করে এদিক ওদিক তাকালো।উপায় না পেয়ে উল্টো পথে ভৌ দৌড়।নিবির আহাম্মক বনে বলে,
–“,হেই ব্রো!আরিফ ভাগ গায়া!”
আফরান ওকে একটা দুম করে কিল দিলো বললো,
–“তো আবুইল্লার মতো দাড়ায় আছিস কেন?চল ধরি সালারে কার প্রেমে পড়ছে জানাই লাগবে। ”
–“ওহ নো!ফিরসে মিলখা সিং ওয়ালা দৌড় হাম নেহি দে ছাকতা।”নিবির এর কথায় ওরা একপ্রকার নিবিরকে টেনেই নিয়ে গেলো আরিফকে ধরতে।
এইদিকে মেয়েরা তাকিয়ে আছে ওদের দিক।হঠাৎ কি হলো এদের এতোক্ষন তো দেখছিলো সবগুলা স্ট্যাচু হয়ে দাড়িয়ে ছিলো এখন আবার এমন কি হলো যে আবুলের মতো দৌড় লাগালো।সাদু সেদিকে তাকিয়েই নূর কে বলে,,
–“,এই নূর এদের আবার কি হলো আমার ভাইকে এইভাবে টেনেটুনে কোথায় নিয়ে গেলো।”
নূরের কোন জবাব নেই।সাদু আবারো বলে,
–“,কিরে বলছিস না কেন?”
সাদু বিরক্ত হয়ে পাশে তাকাতে দেখে নূর হা করে তাকিয়ে আছে।মানে তার মুখের ভীতর আস্তো এক হাড়ি রসগোল্লা অনায়াসে ডুকে যেতে পারে।নূর আফরান কে হুয়াইট আর ব্লু কম্বিনেশন পাঞ্জাবিতে দেখে বেচারি এমন শক্ডওয়ালা ক্রাশ খেয়েছে যে আশে পাশে কি হচ্ছে ভূলে গেছে।আসলে মনির, আর আফরান জেনে গিয়েছিলো যে মেয়েরা সবাই হুয়াইট আর ব্লু কম্বিনেশনের শাড়ি পরবে তাই ওরাও সবাই একই কালারের পাঞ্জাবি পড়েছে।নিবির আর মেরাজ পড়তে চাই নি।মনির আর আফরান জোর করে পড়িয়েছে যাতে ওরা সন্দেহ না করে।আর আরিফ একবার বলাতেই রাজী হয়ে যায়।কেন যেন ওর পড়তে ইচ্ছে করছিলো আলিফার সাথে ম্যাচিং পাঞ্জাবি পড়তে তাই ও আর না করেনি।
……
সাদু নূরের কাধে ধাক্কা দিয়ে বলে,
–“কিরে! আমার ভাইকে দেখে জোড়েসোড়ে ক্রাশ খেয়েছিস নাকি?যে এইভাবে বোয়াল মাছের মতো হা করে আছিস!”
সাদুর ধাক্কায় নূর এর ধ্যান ফিরে এলো।সাদুর কথা শুনে নূর থতমত খেয়ে গেছে।আসলেই সে আফরান কে দেখে বড়সড় ক্রাশ খেয়েছে।যতোই হোক ভালোবাসে তো সে আফরান কে।
–“এমন কিছুই না ওই আসলে উনারে ছুটাছুটি করছে তাই দেখছিলাম।”
–“হ্যা হ্যা বুজেছি আমি!”
–“তুই চুপ থাক সাদ্দুনি ফকিন্নি।”
–“আজকাল সত্যি কথা বললে তার দাম নেই।”
–“তোর ঘোড়ার আন্ডার সত্যি কথা।”
–“বলে দে না রে নূর যে তুই ভাইয়াকে ভালোবাসিস।আর কতো এভাবে চলবে।মাফ করে দে-না।”
নূর ভ্রু-কুচকে ফেললো সাদুর কথায়,
–“তুই চুপ থাক ফকিন্নি।এহহ! ভাইয়ের জন্য দরদ উতলে পড়ছে।আমি কি একাই ভালোবাসি উনি ভালোবাসে না।তো বলে না কেন?আমি কেন আগে বলবো?সে আগে বলবে আমার আগে ভালোবাসি বলতে বয়েই গেছে।যেদিন উনি আমাকে ভালোবাসি বলবে কোন দ্বিধা ছাড়াই সেদিন উনাকে মেনে নিবো।নাহলে নাই,এইভাবেই সারাজীবন আমার পিছনে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবো।”
–“তাহলে আমি বলে দেই ভাইয়াকে যে, ভাইয়া নূর বলেছে তুই ওকে প্রোপোজ করলেই ও মেনে নিবে।”
–“থাপ্রাইয়া মুতায় দিমু ফকিন্নি।তুই বলবি কেন?তোর ভাই কি ফিডার খায়।নিজের মাথায় বুদ্ধি নাই।”
–“ফার্স্ট ওফ ওল ক্ষেমা দে আমায় ভূল হয়ে গেছে।আর সেকেন্ড এইসব ছিহহহ মার্কা কথা এখানে বলিস না।”
ওদের কথার মাজেই এনাউন্সমেন্ট এ টিচার এমন কিছু বললো যার জন্য ওরা মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।ওদের চোখ রসগোল্লা সাইজ বড়বড় হয়ে গেছে।চোখ অক্ষিকোটর থেকে বেড়িয়ে আসার উপক্রম।
–“দোস্ত আমি যা শুনলাম তুই ও তাই শুনেছিস।” আলিশার কথায় ওরা সবাই “হ্যায়ায়ায়ায়ায়া” বললো জোড়ে।
–“এএ ভাই এটা কেন বললো আমরা তো এমন কোনকিছুই করিনি। ”
আলিশার কথায় মিম দাতেদাত চেপে বলে,
–“নিশ্চিত ওই মেরাইজ্জার এর পিছনে হাত আছে।”
সাদু রাগীভাবে বলে,
–“মেরাজ ভাইকে একা দোশ দিচ্ছিস কেন?নূর এর ভাই উগান্ডার হাতিটাও আছে।”
–“আমার মনির ভাইয়া একা কেন?তোর দুই ভাইও আছে এতে।”নূর আর আলিশা চিৎকার করে বলে।
সাদু কানে হাত দিয়ে বলে,
–“হ্যা ভাই আমার ভাইরাও আছে। সবাই সমান দোশ তাও আমার কানটার অকালে ইন্না-লিল্লাহ করিস না।
এইভাবে চিল্লাপাল্লা না করে ভাব এখন কি করবি।”
সাদুর কথায় সবাই টেন্সনে দাত দিয়ে নখ কাটতে লাগলো।এখন কি করবে ওরা।শেষমেষ ওদের এইভাবে ফাসানো হলো।কথাগুলো ভাবতেই ওদেত হাত পা ছড়িয়ে ভ্যা ভ্যা করে কাদতে ইচ্ছে করছে।

চলবে,,,

ভূলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আপনাদের রেস্পন্স গল্প কমে গেছে।এরকম চলতে থাকলে গল্প অতি তাড়াতাড়ি শেষ করে দিবো আমি।আমি হাত কাটা নিয়ে কষ্ট করে আপনাদের জন্য গল্প লিখি।আর আপনারা গল্পে রেস্পন্স করেন না।তাহলে কষ্ট করে গল্প লিখে কি লাভ।৩ দিন পর পর রিলেক্সে গল্প দিলেই হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here