তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ৯

0
681

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম (লেখিকা)
“৯”

–‘” পায়ের উপর পা তুলে চেয়ারে বসে রুদ্র। রুদ্রর লোকেরা ওই লোকগুলোকে আচ্ছা মতো ধোলাই দিয়ে ফ্লোরে বসায় একসাথে। সবাই কাচুমাচু হয়ে বসে আছে মা/র খেয়ে।
– রুদ্রনীল চৌধুরী ওয়াইফকে তুলে নিয়ে এসেছিস মাত্র এই কয়টা লোকজন নিয়ে। তোদের দেখেও আমার করুণা হয়। দুনিয়ার কোনো শক্তি আছে যেখানে আমার ওয়াইফকে বেঁধে রাখতে পারে। সেখানে তোরা মাত্র চুনোপুঁটি। বেশ স্বাভাবিক ভাবে বলে রুদ্র।
– বাই দ্যা ওয়ে! কার কথায় দোলাকে তুলে নিয়ে এসেছিস বল? হুংকার ছেড়ে বলে এবার রুদ্র। লোকগুলো ব্যথায় কাঁতরাচ্ছে।
– কি রে কথা কানে যাচ্ছে না৷ স্যার কি বলছে শুনতে পাসনি। বল! কার কথায় ম্যাম কে তুলে এনেছিস তোরা৷ রুদ্রর একটা লোক বলে তার মধ্যে থেকে।

— লোকগুলো চুপচাপ হয়ে আছে। তাই দেখে রুদ্রর রাগ উঠে যায় মাথায়। তোদের হাতে আর মাত্র পাঁচ সেকেন্ড সময় আছে। যদি এই পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে না বলিস কার কথায় এমনটা করেছিস তাহলে তোদের সব কয়টাকে উপরে পাঠাতে আমার ১০ সেকেন্ডও সময় লাগবে না৷ রুদ্রর কথায় ভয় পেয়ে যায় লোকগুলো। কারণ রুদ্রনীল চৌধুরী সম্পর্কে আইডিয়া আছে তাদের।
– নাও টাইম স্টার্ট! কথাটা শেষ করার আগেই লোকগুলো বলে আমি বলছি আমি বলছি। রুদ্র বাঁকা হাসে।
– বিশ্বাস করুন স্যার আমরা জানি না কে ম্যামকে তুলে আনতে বলেছে। আমাদের শুধু পাহারা দিতে বলা হয়েছে এখানে৷ আর আমরা তাই করছি। আমরা ম্যামকে এখানে নিয়ে আসিনি। লোকগুলোর কথায় রুদ্র ভ্রু কুচকে বলে কে বলেছে তোদের পাহারা দিতে?
– আমরা বিভিন্ন কাজ করে থাকি স্যার৷ যখন যে কাজ দেয় আমরা সেটা করি। আমাদের একটা নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে বলা হয় এখানে এসে একটা মেয়েকে পাহারা দিতে হবে৷ আর যাতে কেউ তাকে নিয়ে যেতে না পারে। আমাদের ফোনেই টাকা পেইড করা হয়। কে ছিলো জানি না স্যার।
– লোকগুলোর কথায় রুদ্র ভাবনায় পড়ে যায়। কে হতে পারে? তবে সামির এর সাথে জড়িত আছে শিওর। আর যেই এটা করে থাকুক না কেনো সে যে খুবই চালাক এতে সন্দেহ নেই। রুদ্র কিছুখন ভাবান্তর থেকে বলে, কোন নাম্বার থেকে তোদের ফোন দেওয়া হয়েছিলো সেটা দেখা৷ এরপর একজন লোক সে নাম্বার দেখায়। রুদ্র ফোন দিলে সুইচ অফ বলে।।রুদ্র এমনটাই আশা করেছিলো।

– স্যার এদের কি করবো? ছেড়ে দেবো নাকি ঝেড়ে দেবো? একজন বলে রুদ্রর লোক।
– ওদের পুলিশের হাতে তুলে দাও৷ তারপর যা করার আইন-ই করবে ওদের সাথে। অতঃপর রুদ্র উঠে দোলার কাছে যায়৷ দোলা চেয়ারে অজ্ঞান অবস্থায় বাঁধা আছে। রুদ্র আহত চোখে তাকায় দোলার দিকে। দোলার বাঁধন খুলে কোলে তুলে নিয়ে বলে আমি থাকতে তোমার কোনো ক্ষতি কখনো হতে দেবো না। তুমি আমার অনেক সাধনার পর পাওয়া অমূল্য সম্পদ। তোমাকে আমি আগলে রাখবো দোলা পাখি। রুদ্র দোলাকে কোলে তুলে নিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে আসে।

— অন্ধকার রুমে থাকা ব্যক্তিটি রাগে ঘরের সব জিনিস এলোমেলো করে ফেলে। ক্লান্ত হয়ে বিসানায় বসে বলে, আমিও জানতাম রুদ্রনীল চৌধুরী তুমি ঠিক দোলাকে খুঁজে নিয়ে যাবে৷ তাই তো আমি আড়ালে থেকে সবটা করেছি৷ যাতে তুমি দোলাকে পেলেও আমার খোঁজ কখনোই না পাও৷ তোমার কোনো আইডিয়া নেই রুদ্রনীল চৌধুরী আমার সম্পর্কে। তুমি কখনোই আমাকে খুঁজে পাবে না যতক্ষণ না আমি নিজ থেকে তোমার সামনে যাবো। আর চিন্তা করো না৷ আমি খুব শীগ্রই তোমার সামনে উপস্থিত হবো তোমাকে ঝটকা দিতে। আমাকে দেখার পর তোমার মুখের ভাষা হারিয়ে যাবে। তোমার মধ্যে অসহায়ত্ব গ্রাস করবে আর আমি সেটাই দেখতে চাই৷ অনেক কিছু এখনো বাকি রুদ্র। যা তোমার কল্পনাতেও নাই। কথা টা বলে হা হা করে হেসে উঠে।

— রাজ! এইদিকটা সব ঠিক আছে। রুদ্র বলে ব্যস্ত কন্ঠে। দোলাকে নিয়ে সোজা অফিসে চলে আসে রুদ্র।
– ভাবি! রুদ্র কি হয়েছে দোলা ভাবির? চিন্তিত হয়ে বলে রাজ।
– সব পরে বলছি রাজ। আগে বল মিটিং কতদূর?
— উনারা তোর জন্য অপেক্ষা করছে রুদ্র। জলদি যা আমি ভাবিকে দেখছি। অনেক রিকুয়েষ্ট করে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করাতে পেরেছি। রুদ্রর চোখ মুখ চকচক করে উঠে প্রত্যাশায়। রুদ্র দোলাকে সোফার উপর শুয়ে দিয়ে রাজের হাত ধরে বলে থ্যাঙ্কিউ ইয়ার৷ তুই এইদিকটা খেয়াল রাখ আমি আসছি আর হ্যাঁ তানিয়াকে ফোন করে বলে দিস দোলা আমার কাছে আছে। মা যেনো চিন্তা না করে । রুদ্র যেতে গিয়ে আবারও থেমে যায়। দোলার দিকে মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে মুচকি হেসে এগিয়ে আসে৷ দোলার কপালে একটা ভালোবাসার পরশ দিয়ে গটগটে পায়ে বেরিয়ে যায়৷ রাজ ঠোঁট এলিয়ে হাসে রুদ্রর কান্ডে।
– এতটা ভালোবাসে সে দোলাকে কিন্তু সঠিক ভাবে প্রকাশ করতে পারে। কিন্তু ভালোবাসাটা তার মিথ্যা না।

— মিনিট দশ পরে দোলার জ্ঞ্যান ফিরে। মাথা ধরে উঠে বসে দোলা। ভালো ভাবে তাকাতেই চমকে উঠে। এটা তো রুদ্রর অফিস। এখানে আসলো কিভাবে? তাহলে কি রুদ্রই তাকে এইখানে নিয়ে এসেছে? দোলার জ্ঞ্যান ফিরে আসতে দেখে রাজ মুচকি হেসে বলে এখন কেমন লাগছে ভাবি? ঠিক আছো তো?
– রাজ ভাইয়া! আমি এখানে? কৌতুহলী হয়ে বলে দোলা। রাজ বুঝতে পারছে দোলার মধ্যে অনেক প্রশ্ন জমা হয়ে আছে এখন। –
—আচ্ছা ভাবি আমাকে একটা বলো! তুমি বিয়ে বাড়ি ছিলে। সেখানে থেকে তোমাকে কে নিয়ে এসেছে?
– আমি জানি না রাজ ভাইয়া। আমি ওয়াসরুমে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি ঘর অন্ধকার হয়ে গেছে। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম অনেক। অচেনা একটা জায়গা এমন পরিস্থিতিতে পড়বো ভাবিনি। ভেবেছিলাম লোডশেডিং হয়েছে কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম আমি ছাড়াও ওই রুমে কেউ ছিলো। আমি যখন কে কে বলে চিৎকার করতে থাকি তখন কেউ একজন আমার মুখ চেপে ধরে কাপড় জাতীয় কিছু একটা হবে। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই। চোখ খুলে নিজেকে এখানে আবিষ্কার করলাম। আচ্ছা উনি কি আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে এইভাবে?

— না না ভাবি রুদ্র কিছু করেনি। ওই!.. রাজ কিছুটা দৃঢ় কন্ঠে ডেকে উঠে রুদ্র।
– মিটিং শেষ? সব ঠিকঠাক আছে তো? বিস্ময় নিয়ে বলে রাজ।
– হুম এভরিথিং ইজ ওকে। ডিলটা আমরাই পেয়েছি। তুই যা ওদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা কর আমি আসছি। রুদ্রর কথায় রাজ দোলার দিকে তাকিয়ে চলে যায়।
– দোলার রাগ হয় রুদ্রকে দেখে।
– আপনি খুব খারাপ। আপনি বিয়ে বাড়িতে যেতে পারেননি বলে আমাকে এখানে তুলে নিয়ে এসেছেন মানুষ দিয়ে। দোলার এমন বাচ্চাসুলভ কথায় রুদ্র ভ্রু কুচকে বলে হোয়াট?
– হ্যাঁ শুধু এইটুকুই তো পারেন। যে কোনো কথায় হোয়াট আর হোয়াট।
– শাট আপ দোলা। রেগে বলে রুদ্র। দোলা কেঁপে উঠে রুদ্রর ধমকে। মুখটা কাচুমাচু রেখে বলে ওইখানে সবাই চিন্তা করছে নিশ্চয় আমার জন্য। আপনি আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেনো? নুয়ে পড়া কন্ঠস্বর দোলার।
– নিয়ে এসেছি বেশ করেছি! তাতে তোমার কি? আমার বউকে আমি যেখানে ইচ্ছে নিয়ে যাবো, নিয়ে আসবো। তোমার কিছু বলার আছে? রুদ্রর এমন অধিকারবোধ দেখে দোলা ফেসটা হযবরল করে বলে এহ!
– তাছাড়া তোমাকে দিয়ে আমার একদম বিশ্বাস নেই। যে-ভাবে সেঁজেগুজে গেছো আমি শিওর তুমি ছেলেদের.. দেখুন রুদ্র সব সময় এক কথা বলবেন না। আমি মোটেও তেমন কিছু ভাবিনা আর না আমার মধ্যে এমনটা প্রবণতা আছে। আপনার যদি এতই সমস্যা তাহলে যেতে দিলেন কেনো আমায়? বারণ করে দিতেন মাকে। দোলার চোখে পানি। রুদ্র বুঝতে পারে দোলা কষ্ট পেয়েছে।

– আমি বাড়ি যাবো। আমাকে রেখে আসবেন আপনি নাকি একাই চলে যাবো। অভিমান নিয়ে বলে দোলা।
– চুপচাপ বসো এখানে। আমি হাতের কাজটা সেরে এখনি আসছি। আমি তোমাকে সাথে নিয়ে বাড়ি যাবো। এক-পা নড়বে না এখানে থেকে বুঝেছো৷ রুদ্র বেরিয়ে যায় কেবিন থেকে।
– কেনো আপনি এমন রুদ্র? কেনো সন্দেহ করেন আমাকে। কি করেছি আমি যার জন্য আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারেন না? কথাগুলো ভাবে আর চোখ দিয়ে অশ্রুকণা গড়িয়ে পড়ে।

– সরি দোলা-পাখি। আমি তোমাকে সত্যিটা বলতে পারবো না৷ তাহলে তুমি চিন্তা করবে আরো। আমি চাইনা আমার জন্য তুমি কোনো কিছুর শিকার হও। তবে আমাকে তো খুঁজে বের করতেই হবে কে ছিলো? কে আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। তার সাথে সামিরের কি সম্পর্ক?

— দোলাকে নিয়ে রুদ্র বাড়ি আসে। ড্রয়িং রুমে রত্না চৌধুরী, তানিয়া, জেসমিন চৌধুরী, তানভীর আহমেদ সবাই বসে আছেন চিন্তিত লুক নিয়ে। শুধু মাত্র জেসমিন চৌধুরী বিরক্ত এখানে।
– দোলাকে দেখা মাত্র রত্না চৌধুরী স্বস্তি পাই। তানিয়া ছুটে যায় দোলার কাছে।
,- ভাবি তুমি ঠিক আছো? কোথায় গিয়েছিলে তুমি? আমরা কত খুঁজেছি তোমায় জানো? মামি তো তোমার চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছিলো। একসাথে বলে উঠে তানিয়া৷ জেসমিন চৌধুরী মুখ বাকিয়ে বলে যতসব ন্যাকামি।
– দোলা আমার কাছে ছিলো তানিয়া। গম্ভীর কন্ঠে বলে রুদ্র। সবাই কৌতুহলী হয়ে বিস্ময় নিয়ে তাকায় রুদ্রর দিকে।
– তোর কাছে ছিলো মানে? তুই তো অফিসে ছিলি রুদ্র। তাহলে দোলা তোর কাছে গেলো কিভাবে?
– রত্না চৌধুরীর প্রশ্নে রুদ্র দৃঢ় কন্ঠে বলে আমি দোলাকে নিয়ে গিয়েছি আমার লোক দিয়ে।

– কিন্তু কেনো রুদ্র? তুই দোলাকে নিয়ে যাবি ভালো কথা! সেটা আমাদের বলে নিয়ে যেতি। শুধু শুধু তোর বউয়ের জন্য চিন্তা করা। এই মেয়েটা সব কিছু নষ্ট করার মূলে। এত সুন্দর করে সেঁজেগুজে গেলাম বিয়ে খেতে। একগাদা চিন্তা নিয়ে ফিরে আসতে হলো। কটাক্ষ কন্ঠে বলে জেসমিন চৌধুরী।
– তুমি চুপ করো জেসু। তুমি তো ছিলে দিব্যি আয়েস করে। কই তোমার মধ্যে তো একফোঁটা চিন্তার ছিটেফোঁটা দেখিনি দোলার জন্য। এখন আবার বড় বড় কথা বলছো। তানভীর আহমেদ বলেন। তার কথায় জেসমিন চৌধুরী চোখ পাকিয়ে তাকালে চুপসে যায় তানভীর আহমেদ।

— রুদ্র! এইসবের মানে কি? তুই দোলাকে নিয়ে গেছিস মানে কি? আর কেনো নিয়ে গেছিস? মৃদু রেগে বলে রত্না চৌধুরী।
– আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই নিয়ে গেছি। তাছাড়া দোলা আমার স্ত্রী মা। আমি যখন ইচ্ছে দোলাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে পারি। এখানে এত কৈফিয়ত দেওয়ার কি আছে। দোলা অবাক চোখে রুদ্রকে দেখছে। কেমন অদ্ভুত লাগছে রুদ্রর কথাগুলো দোলার কাছে৷ তানিয়াও বেশ অবাক রুদ্রর কথায়।
– সে তুমি নিয়ে যেতেই পারো দোলাকে সমস্যা নেই। কিন্তু বলে নিয়ে যাবে না। তুমি হয়তো ভুলে গেছো এইখানে দোলা একা না আমরাও ছিলাম। চিন্তা হয় আমাদের। তোমার থেকে এমন কান্ড-জ্ঞ্যানহীন কাজ একদম আশা করিনি। রত্না চৌধুরী বলে।

– ভাবি বাদ দেন৷ দোলা ফিরে এসেছে আর সুস্থ আছে এটাই অনেক। দোলা মা ঘরে যাও ফ্রেস হয়ে আসো। আর রুদ্র বাবা তুমি আর মাথা গরম করো না ঘরে যাও৷ তানভীর আহমেদের কথায় রুদ্র আর কিছু বলে না৷ সত্যি সত্যি ঘরে চলে আসে৷ দোলা ভ্রু কুচকে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে৷ কেমন সন্দেহ হচ্ছে রুদ্রকে তার।

— সন্ধ্যার সময়! রুদ্র বিকালের আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে৷ রুদ্র বাড়ি ফেরার পর দোলার সাথে কোনো কথা বলেনি আর না দোলাকে কিছু বলার সুযোগ দিয়েছে৷ এরপর বিকেলে বেরিয়েছে কোনো একটা কাজে৷ দোলা হাতের কাজ সেরে তানিয়ার ঘরের দিকে যায়৷ তানিয়া ঘরে বসেই ফোন টিপতে ছিলো। তানিয়া আসবো? দোলাকে দেখে তানিয়া মুচকি হেসে বলে ভাবি তুমি! ভেতরে এসো। আমার ঘরে আসার জন্য তোমার আবার পারমিশন নেওয়া লাগে কবে থেকে? ভ্রু উঁচিয়ে বলে তানিয়া। দোলা ঠোঁট এলিয়ে হাসে৷

— ভাবি! তুমি কি কিছু বলবে? সন্ধিহান চোখে তাকিয়ে বলে তানিয়া। কারণ দোলাকে কেমন অস্থির অস্থির লাগছে৷ দেখেই বোঝা যাচ্ছে কিছু একটা বলতে চাই দোলা। তানিয়ার কথায় দোলা চমকে উঠে বলে এএহ- হঠাৎ দোলার চমকে উঠাতে তানিয়া ঘাবড়ে যাওয়া চোখে তাকিয়ে বলে কি হয়েছে ভাবি?

— তানিয়া আমার মনে তোমার ভাইয়া মিথ্যা বলেছে তখন? কিছু একটা লুকাচ্ছে সে। আমাকে যদি তার নিয়ে যাওয়ারই হবে তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে কেনো নিয়ে যাবে? সে তো নিজেই আমাকে নিয়ে যেতে পারতো অনেকটা বিস্ময় নিয়ে বলে দোলা।
– আমারও যে সন্দেহ হয়নি এমন কিন্তু নয় ভাবি। ব্রো কেমন উদ্ভট কথা বলতে ছিলো। বিশ্বাস করো ভাবি আমিও অবাক হয়েছিলাম ব্রোর কথায়৷ তাছাড়া ব্রো কখনোই মামির সাথে এইভাবে কথা বলে না৷ কিন্তু তখন! আমার মনে হয় এখানে অন্য কোনো কাহিনি আছে। ভাবান্তর হয়ে বলে তানিয়া।
আমাদের পেছনে অনেক বড় রহস্য আছে তানিয়া। কিন্তু আমরা জানি না বা বুঝতে পারছি না। তোমার ভাইয়া আমার সাথে মাঝে মাঝে যে রুড বিহেভ করে এটার জন্যও নিশ্চয় কারণ আছে। নাহলে দেখো না এই উনি আমার ব্যাপারে প্রজেসিস আবার এই হার্ড। আমাকে ভালোবাসতেও দেরি লাগে না আবার আমাকে দূরে ঠেলে দিতেও সময় লাগে না উনার। কিন্তু কেনো করেন উনি এমন? তানিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে দোলা। কিন্তু দোলা লক্ষ্য করে তানিয়ার মধ্যে কিছু একটা নিয়ে ভয় সংশয় কাজ করছে। দোলা ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে কি হয়েছে তানিয়া? তুমি এতটা ঘাবড়ে আছে কেনো? আচ্ছা তুমি কি কিছু জানো এই ব্যাপারে। উনি কেনো এমন করে?

– না না ভাবি আমি কিছু না৷ আমি কি করে জানবো কিছুটা আমতাআমতা করে বলে তানিয়া৷ দোলা অদ্ভুত ভাবে তাকিয়ে থাকে তানিয়ার দিকে। তানিয়া এতটা উত্তেজিত হয়ে কেনো গেলো?

– তানিয়া আরও একটা কথা বলার আছে তোমায়। দোলার কথায় তানিয়া ভয়ার্ত চাহনি রেখে বলে ক-কি কথা ভাবি?
– আমাদের রুমের পাশে যে একটা রুম আছে। আই মিন দুই রুম পরে তালা বন্ধ একটা রুম যেটার দরজায় ক্রস দেওয়া আছে। যার মানে ওই রুমে যাওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু কেনো? কি এমন আছে ওই রুমে। আর জানো আমি সেদিন রুমের সামনে যাওয়াতে তোমার ভাইয়া ভীষণ রেগে যায়। অথচ আমি কিছুই করিনি৷ আমি জিজ্ঞেস করলে উনি উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেয়। আচ্ছা ওই রুমটায় কি আছে তুমি জানো? তুমি তো ছোট থেকে এই বাড়িতে আছো। তুমি নিশ্চয় ওই ঘর সম্পর্কে অবগত।
– তানিয়া ঘামতে শুরু করে। চিন্তিত দেখায়। তানিয়া পাশে টেবিল থেকে পানির গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে খেয়ে নিয়ে বলে আমি কিছু জানি না ভাবি। ওই রুমটা এমনই সব সময় বন্ধ থাকে৷ হয়তো আছে পুরনো জিনিসপত্র। বাদ দাও না। যা ইচ্ছে থাক সমস্যা কি। ভাবি তুমি না এখন যাও। আমার কিছু কাজ আছে। আমি পরে আসছি নিচে। দোলা কিছুখন সন্ধিহান দৃষ্টিতে তানিয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে আসে। তবে দোলার মধ্যে খটকা একের পর এক বেড়েই চলেছে।
– নিশ্চয় কিছু একটা লোকাচ্ছে এরা আমার থেকে। কিন্তু কি লোকানো হচ্ছে আর কেনো? আর উনি বা কেনো এমন করেন আমার সাথে? আমি তো সব কিছুর উত্তর জেনেই ছাড়বো আর এই রুমেও আমি যাবো। এর মধ্যে দোলার ডাক আসে নিচে থেকে রত্না চৌধুরী ডাকেন দোলাকে।
– রত্না চৌধুরীর ডাকে দোলা নিচে গিয়ে থমকে দাঁড়ায়। সামনে থাকা ব্যক্তিটিকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।

– চলবে….

– ❌কপি করা নিষেধ ❌ ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here