তুমিময় আসক্তি ২ পর্ব ১০

0
634

#তুমিময়_আসক্তি_২
#আলো_ইসলাম (লেখিকা)
“১০”

– “” সজলকে দেখে থমকে দাঁড়ায় দোলা। ঠোঁটের কোণে আপনাআপনি একটা হাসির রেখা আসে। দোলাকে দেখে সজলের মুখেও ফুটে হাসি।
– ভাইয়া তুমি? উল্লাসিত কন্ঠে বলে দোলা। রত্না চৌধুরী কৌতুহলী হয়ে দেখছে সবটা। জেসমিন চৌধুরী তার ঘরে আছে। উনি যদি থাকতেন এখানে! তাহলে এতখনে দোলাকে কটু কথা শুনিয়ে ছাড়তেন।
– কেমন আছিস দোলা? হাসি মুখে বলে সজল।
– আমি ভালো আছি। তুমি কেমন আছো? আর তুমি দেশে ফিরলে কবে?
– ফিরেছি এক সপ্তাহ হলো। মামার কাছে থেকে তোর ঠিকানা নিয়ে সোজা এখানে৷ হঠাৎ বিয়ে করে নিলি কিছুই জানলাম না৷ আমি তো রীতিমতো শকড দোলা।
– দোলা মুচকি হাসে। সব কপালে ছিলো ভাইয়া। তাই হয়ে গেছে৷ বসো তুমি দাঁড়িয়ে কেনো। ওহ! পরিচয় করিয়ে দিই। মা এটা আমার মামাতো ভাই সজল ভাইয়া। আর ভাইয়া এটা আমার শাশুড়ী’মা। হাসি মুখে বলে দোলা।
– আসসালামু আলাইকুম আন্টি। আমি আসলে প্রথমে চিনতে পারিনি আপনাকে কিছুটা সংকোচ নিয়ে বলে সজল।
— রত্না চৌধুরী সালামের জবাব দিয়ে বলে সমস্যা নেই বাবা। আমাকে তো আর এর আগে দেখোনি কখনো। তাই না চেনা’টাই স্বাভাবিক। এর মধ্যে তানিয়া নিচে নেমে আসে। সজলকে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায় তানিয়া। কিন্তু সজল যেনো তানিয়াকে দেখে ফিদা। মুগ্ধ চোখে অপলক ভাবে তাকিয়ে থাকে তানিয়ার দিকে।
– এটা আবার কে? এমন ড্যাবড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেনো? জীবনে কি মেয়ে মানুষ দেখেনি নাকি? উফফ অসহ্য একটা। এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে। বিরক্ত নিয়ে মনে মনে বলে তানিয়া।
– তানিয়া! পরিচয় করিয়ে দিই। এটা আমার ভাইয়া সজল খান৷ আর ভাইয়া এটা আমার একমাত্র ননদী তানিয়া।
– দোলার কথায় সজলের যেনো কোনো হেলদোল নেই। সেই একই ভাবে তানিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে৷ এক দেখায় ভালোলাগা, ভালোবাসা যাকে বলে।
– তানিয়ার এবার অস্বস্তি হয় সজলের এমন অদ্ভুত চাহনি দেখে৷ কিছুটা লজ্জাও পাই সে। দোলা খেয়াল করে দেখে সজল কেমন ভাবে তানিয়াকে দেখছে৷ দোলার বুঝতে বাকি নেই এই চাহনির মানে। দোলা মুচকি হেসে সজলের সামনে গিয়ে তুড়ি বাজিয়ে বলে ভাইয়ায়ায়া! কি হলো কোথায় হারালে। দোলার হঠাৎ এমন কান্ডে সজল হকচকিয়ে উঠে। তাই দেখে তানিয়া ফিক করে হেসে উঠে। সজল এবার নিজেই লজ্জায় পড়ে যায়।
– দোলা! ভাইয়ার সাথে শুধু গল্প করলে হবে৷ যাও নাস্তার ব্যবস্থা করো। এই প্রথম তোমাদের পক্ষ থেকে আমাদের বাড়ি আসলো কেউ। আমি তো অনেক খুশি হয়েছি। আপ্যায়নের যেনো কোনো ক্রুটি না থাকে আমার মেহমানের। আর শুনো বাবা রাতে খেয়ে তবে কিন্তু যাবে। নয়তো যেতে দেবো না কিন্তু। রসিকতা করে বলে রত্না চৌধুরী। তার কথায় সজল লজ্জা মিশ্রিত হাসি দেয় একটা। আড় চোখে তানিয়ার দিকে তাকায় শুধু সজল।
– ভাইয়া তুমি বসো আমি আসছি। মা আপনারা গল্প করেন বলে দোলা ছুটে রান্না ঘরে যায় নাস্তার ব্যবস্থা করতে সবার জন্য। এমনিতেই সন্ধ্যার সময় সবার জন্য নাস্তা করা লাগে। এখন তো সজল এসেছে৷ স্পেশাল কিছু হওয়াই চাই। আসুন ততখনে আমরা সজলের পরিচয় জেনে নিই!

– সজল হলো দোলার মামাতো ভাই৷ স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে গিয়েছিলো পড়াশোনা করতে৷ ওইখানে পড়াশোনা শেষ করে আবার দেশে ফিরে আসে। এরপর ভালো একটা কোম্পানিতে জয়েন করেন দুইদিন হয়েছে৷ দোলাকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসে সজল। কারণ সজল বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।

— দোলা রান্নাঘরে যেতেই পেছনে পেছনে তানিয়াও যায়।
– তোমার ভাইয়ার চোখে সমস্যা আছে এটা জানো ভাবি? মুখটা মলিন করে বলে তানিয়া৷ তানিয়ার কথায় দোলা মুচকি হেসে বলে উঁহু জানতাম না তো। এইমাত্র জানলাম তোমার থেকে। তা কি সমস্যা আছে আমার ভাইয়ার শুনি? দোলা কাজ করছে আর কাজের ফাঁকে তানিয়ার সাথে দুষ্টামিও করে।
– দেখলে না কেমন ড্যাবড্যাব করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। এমন একটা ভাব নিয়ে ছিলো যে! জীবনে মেয়ে মানুষ দেখেনি৷
– উমম! মেয়ে দেখেছে কিন্তু তোমার মতো সুন্দরী মেয়ে হয়তো দেখেনি। কথাটা বলে দোলা ঠোঁট চেপে হাসে। তাই দেখে তানিয়া বলে ভাবি তুমিও মজা নিচ্ছো আমার সাথে৷ এরপর দোলা আর তানিয়া দুজনেই হেসে দেয় একসাথে।
– আমাকে এবার একটু সাহায্য করো দেখি। দোলা বলে তানিয়াকে। তানিয়া দোলার হাতে হাতে কাজে লাগে।
– জানো তানিয়া! খুব ভালো হয়েছে এই মুহুর্তে তোমার ভাইয়া বাড়ি নেই। তিনি যদি থাকতেন তাহলে অনেক বড় সমস্যা হয়ে যেতো। উনি নিশ্চয় রেগে যেতেন ভাইয়াকে দেখে এমনকি অপমান করে তাড়িয়েও দিতেন৷ আমার তো ভয় হচ্ছে ভাইয়া থাকতে থাকতে উনি না এসে পড়েন। তাহলে যে কি তুলকালাম কান্ড বাধবে আল্লাহ জানে৷ ঘাবড়ে যাওয়া কন্ঠে বলে দোলা।
– ব্রো তো এমনিতেও দেখবে ভাবি। শুনলে না মামি কি বললেন। উনাকে তো রাতে খেয়ে যেতে বললেন। তানিয়ার কথায় ভয়ার্ত চোখে তাকায় দোলা। কি করবে এখন। যদি রুদ্র আসে তাহলে তো সত্যি অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে। দোলার মনটা অস্থির হয়ে উঠে। হাত-পা যেনো নিশ্চল হয়ে আসে ভয়ে৷

–দোলা নাস্তা রেডি করে সবার জন্য নিয়ে যায়। জেসমিন চৌধুরী এতখনে নিচে চলে আসেন। সজলকে দেখে প্রথমে তিনিও ভ্রু কুচকান। পরে রত্না চৌধুরী পরিচয় দিলে বিরক্ত নিয়ে বসে থাকে। দোলার আশেপাশের কাউকেই যেনো সহ্য হয়না উনার৷

— দোলা সজলকে নাস্তার প্লেট এগিয়ে দিলে সজল দোলার হাত টেনে ধরে পাশে বসিয়ে দেয়।
– আমার পাশে একটু বস দোলা। কতদিন আমরা পাশে বসে গল্প করিনা বল তো। আমার জন্য তোকে কিছু করা লাগবে না৷ তুই কি আমার দূরের কেউ নাকি যে আমার সাথে ফর্মালিটি করতে হবে৷ চুপটি করে এখানে বস দেখি।
– যতসব আদিখ্যেতা। রুদ্র থাকলে তোমাদের এই পিরিত বের করতো৷ ন্যাকামি যত কথাটা বলে জেসমিন উঠে চলে যায়৷ জেসমিন চৌধুরী যেতেই দোলা তার দিকে তাকায়৷ তানিয়া রত্না চৌধুরীর পাশে সোফায় বসে আছে৷
— দোলা হাস্যজ্বল মুখে সজলের পাশে বসে গল্প করছে৷
– দোলা শুন! সজল দোলার হাত টেনে ধরে একটু কাছে নিয়ে বলে তোর ননদী টা দেখতে তো মাশা-আল্লাহ। এমন সুন্দরী একটা ননদ আছে আমাকে আগে জানাসনি কেনো?
– জানালে কি করতে ভাইয়া? ভ্রু উঁচিয়ে বলে দোলা।
– আরে কি আবার প্রেম করতাম কথাটা বলে সজল মুচকি হাসে৷ দোলাও হেসে দিয়ে বলে এইসব কি কথাবার্তা ভাইয়া৷ আমি তোমার ছোট বোন ভুলে যেওনা।
– আরে তাতে কি! বোনই তো ভাইয়ার ব্যাপারটা দেখবে ফিসফিস করে বলে সজল। দোলা শব্দ করে হেসে উঠে। তানিয়া ভ্রু কুচকে সন্ধিহান চোখে তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে। এমন সময় প্রবেশ হয় সিংহের না মানে রুদ্রর। দোলা আর সজলকে পাশাপাশি দেখে রীতিমতো শকড রুদ্র৷ তার উপর সজল দোলার হাত ধরে আছে আবার দুজন হাসাহাসি করছে৷ সব কিছু দেখে রুদ্রর মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে উঠে যেনো। রাগে পুরো শরীর টনটন করতে থাকে। হাতের মুঠো শক্ত করে তাকিয়ে থাকে দুজনের দিকে৷

– রুদ্রর আভাস পেয়ে দোলা চমকে সামনে তাকাতেই দেখে রুদ্র আগ্নেয়গিরির লাভার ন্যায় জ্বলজ্বল করে যেনো তাকিয়ে আছে তার দিকে। দোলা পিলে চমকে উঠে সজলের থেকে হাত ছাড়িয়ে নেয় এক টানে। সজল অবাক হয় একটু দোলার কাজে৷ দোলার দৃষ্টি অনুসরণ করে তানিয়া, রত্না চৌধুরী, সজল সামনে তাকিয়ে রুদ্রকে দেখতে পাই। তানিয়াও চমকে উঠে রুদ্রকে দেখে৷ সাথে সাথে শুকনো ঢোক গিলে কয়েকবার। দোলা তো অনেক আগেই উঠে গেছে সজলের পাশ থেকে। সজল বাদে সবার মধ্যে আতংকের ছাপ।

— আরে রুদ্র! আয় দেখ কে এসেছে কিছুটা উত্তেজনা নিয়ে বলে রত্না চৌধুরী। কিন্তু রুদ্র যেনো তার কথায় কোনো ভ্রুক্ষেপ না দেখি সোজা হনহন করে রুমে চলে আসে।
– সজল শুধু বিস্মিত হয়ে দেখছে সবটা।
– ওইটা কে? কৌতুহল নিয়ে বলে সজল।
– আরে ওইটাই তো আমার ছেলে। তোমার বোনের স্বামী রুদ্র।
– ওহ! এটাই দোলার হাসবেন্ড? ভেরি স্মার্ট পারসন। দোলা আর যাই হোক জামাই কিন্তু একটা পেয়েছিস তুই? গদগদ কন্ঠে বলে সজল। ওর কথায় সবাই হাসলেও দোলা হাসতে পারে না৷ তারপরও জোর পুর্বক হাসি আনার চেষ্টা করে।

– না জানি ভাবির কপালে আজ কি আছে। আল্লাহ রক্ষা করো আজ ভাবিকে ব্রোর থেকে। ব্রো যেনো ভুল না বুঝে মনে মনে প্রে করে তানিয়া।
– যে ভয়টা করছিলাম সেটাই হলো। উনি আবার আমার উপর চোটপাট করবে। হয়তো গায়ে হাতও তুলবেন রেগে৷ আমাকে আবার অবিশ্বাস করবে। আমাকে যেতে হবে। উনাকে সবটা বুঝিয়ে বলতে হবে। হ্যাঁ উনাকে সবটা বুঝিয়ে বলতে হবে আমায়। দোলা মনস্থির করে ঘরে যাওয়ার।
– আচ্ছা উনি ওইভাবে চলে গেলেন কেনো? বিস্ময় নিয়ে বলে সজল।
– ওর কথা বাদ দাও বাবা। আমার ছেলেটা এমনই। মানুষ থেকে দূরে থাকে। সব সময় গম্ভীর থাকা আর বসগিরি করা স্বভাব। রত্না চৌধুরীর বলার ভঙ্গিতে সজল হো হো করে হেসে উঠে বলে সিরিয়াসলি আন্টি আপনি কিন্তু বেশ রসিক মানুষ আছেন।

– আমি না একটু আসছি। ভাইয়া তুমি বসো আমি আসছি বলে দোলা দ্রুত পায়ে ঘরে আসে।
– রুদ্র ঘরে এসে গায়ের কোটটা ছুঁড়ে মারে নিচে। চোখের সামনে বারবার দোলা আর সজলের হাত ধরে বসে সেই হাসিখুশি মুখটা ভেসে উঠছে।
– রুদ্র নিজেকে সামলাতে পারছে না৷ রাগে সামনে থাকা পানির গ্লাস ছুড়ে মারে। ততখনে দোলা দরজার কাছে এসে পৌছায়। রুদ্রকে এমন উত্তেজিত হতে দেখে আঁতকে উঠে। ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে থাকে রুদ্রর দিকে। ভয়ে যেনো গলা কাঠ হয়ে আসছে দোলার। দোলা ধীর পায়ে রুমের মধ্যে প্রবেশ করে। দোলাকে দেখে রুদ্র চোখ পাকিয়ে তাকায়। এমন ভাবে তাকিয়ে থাকে দোলার দিকে যে চোখ দিয়েই গিলে খাবে।
– দোলা ভয়ার্ত ফেসে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে আসলে ওই.. কিছু বলার আগে রুদ্র দোলার হাত টেনে ধরে দুই বাহু শক্ত করে চেপে ধরে কাছে টেনে নেয়। দোলা ভয় পেয়ে কেঁপে উঠে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে। রুদ্র এত শক্ত করে চেপে ধরেছে যে জান যায় যায় অবস্থা। অসহ্য ব্যথা করতে শুরু করে দোলার হাতে। দোলার চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়তে শুরু করে ।
– আমার বাড়িতে বসে আমারই সামনে আরেকটা পুরুষের হাত ধরার সাহস হয় কীভাবে তোমার? আবার তার সাথে বসে হাসাহাসি করছিলে। সুখ দুঃখের গল্প করছিলে বুঝি গা-ঘুষাঘুষি করে। খুবই ভালো লাগছিলো নিশ্চয় তোমার? রুদ্রর এমন নোংরা বাজে কথায় দোলার গা গুলিয়ে আসে। বরাবরের মতো ঘৃণায় সারা শরীর রিরি করে উঠে তার। এতখন যে ভয় গুলো ছিলো রুদ্রর জন্য তার মধ্যে । এখন সেটা ঘৃণাতে পরিনত হয়েছে।

— তোমার এত সাহস হয় কি করে উত্তর দাও। চিৎকার করে উঠে রুদ্র। আগের ন্যায় আরো শক্ত করে দোলার হাত চেপে ধরে। এবার মনে হচ্ছে হাত ভেঙে গুড়িয়ে যাবে। দোলা ধাক্কা দিয়ে রুদ্রকে সরানোর চেষ্টা করে কিন্তু পারে না। রুদ্র আরো ক্ষেপে যায়।
– ছাড়ুন আমাকে। আমার লাগছে তিক্ত কণ্ঠে বলে দোলা।
– লাগুক! আমি চাই লাগুক তোমার। তোমার এইটুকু ব্যথা সহ্য হচ্ছে না আর আমার মধ্যে যে জ্বলন হচ্ছে সেটার খবর রাখো। বুঝো আমার মধ্যে কি চলছে?

– আর ইউ ম্যাড রুদ্র? কি যা-তা বকছেন আপনি। ভাই হয় ওইটা আমার। আর আপনি উনাকে নিয়ে আমার সাথে জড়িয়ে এইসব নোংরা কথা বলছেন। সমস্যা কি আপনার হ্যাঁ? আমি যদি কোনো ছেলের সাথে কথা বলিও তাতে আপনার কি? কেনো সহ্য করতে পারেন না আপনি? কেনো বিশ্বাস করতে পারেন না আপনি আমাকে? আপনি আমার বাবা- ভাই আত্মীয় কাউকে এলাউ করেন না। কারণ তারা ছেলে বলে। ছিহ রুদ্র আপনার মধ্যে এই নোংরা মানসিকতা আমার ভাবলেও ঘৃণা হয়। এমন কেনো আপনি? কেনো এতটা ডেস্পারেট হয়ে উঠেন। আপনাকে দেখে মনে হয়না আপনি একজন সুস্থ মানুষের দলে পড়েন। কেনো এত উগ্রতা? কেনো এতো এতো নিয়মের বেড়াজাল। ইউ আর সিক রুদ্র! ইউ আর সিক।

– হ্যাঁ আমি ম্যাড! আমি সিক সেটাও তোমার জন্য। তোমার জন্য যদি আমাকে আরো পাগলামি করতে হয়৷ আমাকে অসুস্থ হতে হয় আমার প্রবলেম নেই। তুমি কিন্তু আমার কথাটা এড়িয়ে যাচ্ছো। এইসব বলে আমাকে ভোলাতে পারবে না তুমি। উত্তর চাই আমার উত্তর। কেনো করছিলে এমন। হ্যাঁ মানলাম সে তোমার ভাই বা যেই হোক। কেনো হাত ধরে হাসাহাসি করছিলে? গায়ের সাথে গা লাগিয়ে… রুদ্র! চিৎকার করে উঠে দোলা। রুদ্রর এই নোংরা কথাগুলো শোনার ধৈর্য দোলার মধ্যে আর নেই।
– গায়ে লাগছে না। সত্য কথা গায়ে লাগছে। জ্বালা করছে গায়ে। তুমি সব কিছু করতে পারো আর আমি বলতে গেলে তোমার গায়ে জ্বালা ধরে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে রুদ্র৷ দোলা করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে রুদ্রর দিকে। রুদ্রর সাথে কথা বলার একটু ইচ্ছে জাগ্রত নেই দোলার মধ্যে আপাতত। আর না রুদ্রর সামনে থাকতে ইচ্ছে করছে।
– দোলা মাথা নিচু করে চোখের পানি ফেলে। রুদ্রর কাজে বরাবরই হতাশ সে৷ নিজের প্রতি নিজের রাগ জমা হয় প্রতিবারই। নিজেকে অন্যের হাতের পুতুল মনে হয় তার।

– রুদ্র দোলাকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। দোলা ভয়ার্ত চোখে তাকায় রুদ্রর দিকে। রুদ্র দোলার গলায় মুখ ডুবিয়ে দিয়ে ঘাড়ে জোরে কামড় বসিয়ে দেয়৷ দোলা যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে। রুদ্রর থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করতে থাকে৷ কিন্তু দোলা ব্যর্থ! রুদ্র দোলার দুই হাত দেয়ালে চেপে ধরে রেখেছে৷ যার জন্য দোলা চাইলেও কিছু করতে পারে না। তাছাড়া একটা মেয়ে যতই শক্তি প্রয়োগ করুক না কেনো একজন শক্তিশালী সুঠাম দেহি পুরুষের সাথে কখনোই পেরে উঠবে না।

— রুদ্র দোলার ঘাড় থেকে মুখ তুলে দোলার দিকে তাকিয়ে হাসে। যেটাকে বলে শয়তানি হাসি। রুদ্র ছলছল চোখে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে আছে।
– আমার চোখের সামনে থেকে যাও। হুট করে বলে উঠে রুদ্র। দোলার হাত ছেড়ে দেয় এরপর।
– দোলা ছাড়া পেয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে।
– আমি যেতে বলেছি তোমাকে? আমি যেনো তোমাকে এই ঘরে না দেখি। নাও লিভ হুংকার দিয়ে বলে রুদ্র। দোলা রুদ্রর ধমকে গুটিয়ে যায়। দুঃখ ভারাক্রান্ত চোখে একবার রুদ্রর দিকে তাকিয়ে ছুটে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে। দোলা আসতেই রুদ্র মাথা চেপে ধরে দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে বসে পড়ে। কেনো এত কষ্ট দাও আমাকে দোলা? কেনো এমন করো তুমি? আমি যত চাই তোমার সামনে স্বাভাবিক থাকতে। তোমার সাথে ভালো ভাবে চলতে। তুমি ততই রাগিয়ে দাও আমাকে। তুমি ভালো হতে দাওনা আমায়। কেনো করো এমন? রুদ্রর চোখেও পানি আসে। এটা দোলা তাকে কষ্ট দিয়েছে তার জন্য না। সে এতখন দোলাকে যে নির্মম অত্যাচারটা করেছে তার অনুশোচনা। রুদ্র নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছিলো। নিজের রাগকে সংযোত করতে পারে না যার ফলে দোলাকে কষ্ট দিয়ে ফেলে। দোলা সামনে থাকলে আরও কি করতো ঠিক নেই। তাই রুদ্র দোলাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। নিজেকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করে।

– চলবে….

— ❌❌কপি করা নিষেধ❌❌ গল্পটা নিয়ে কেউ আশাহত হবেন না। এখনো অনেক কিছু বাকি আছে। ধৈর্য সাথে থাকুন শুধু আর যদি কারো খারাপ লাগে তাহলে এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ রইলো। ভুলক্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষে বিবেচনা করবেন আশা করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here