গুছিয়ে রাখা আবেগ পর্ব ১০

0
534

#গুছিয়ে_রাখা_আবেগ
#পর্ব_১০
#আজরিনা_জ্যামি

“সারপ্রাইজ কিন্তু কি সারপ্রাইজ হতে পারে ?”

আফরিন আর রোজা বসে আছে আরুহির রুমে। আরহাম নিজের রুমে আছে। আরুহি ওয়াশরুমে গেছে। আফরিনের কথায় রোজা বলল,,

“আরে বোকা মেয়ে বলে দিলে কি সেটা আর সারপ্রাইজ থাকে রে!”

“সেটাও ঠিক তবে আমার যে ভিশন জানতে ইচ্ছে করছে।”

“এই আফরিন আরহাম ভাইয়া বলেছে তোর জন্য সারপ্রাইজ আছে আচ্ছা আরহাম ভাইয়া তোর সাথে বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে যাবে না তো ! আমি ভাই ভেবেই এক্সাইটেড।”

এ কথা শুনে আফরিন কি রিয়্যাক্ট দিবে ভুলেই গেল। যদি সত্যি তাই হয় তাহলে ওর থেকে বেশি খুশি কেউ হবে না। আফরিন বলল,,

“আরে ধুর এরকম কিছু হবে না। ওসব চিন্তা ভাবনা বাদ দে।”

“আরে যদি সত্যিই ওরকম কিছু হয়।”

“তাহলে তোকে আমার বিয়েতে একপিচ রোস্ট বেশি দেব শান্তি।”

“শুধু এক পিচ রোস্ট যা কিপ্টা পুলাপাইন।”

তখন পেছন থেকে আরুহি বলল,,

“আমাকে ছাড়াই খাওয়া দাওয়ার প্ল্যান হচ্ছে বুঝি তা কি নিয়ে খাওয়া দাওয়া।”

তখন রোজা বলল,,

“তেমন কিছু না ঐ তোরা নাকি শুক্রবার আফরিন দের বাড়িতে যাবি। আফরিন জানতে চাইছে কিসের জন্য যাবি তাই আমি একটা কথা বলছি সেটা সত্যি হয় তো হলে আফরিন বলছে এক পিস রোস্ট বেশি খাওয়াবে।”

“তা তুই কি বলছিস শুনি?”

“আমি বলছি আরহাম ভাইয়া,,,

রোজা আর কিছু বলার আগেই আফরিন রোজার পিঠে একটা কিল মেরে বলল,,

“ঐ রোজা তুই এতো বেশি কথা বলোস কেন? মুখটা বন্ধ করে রাখতে পারিস না। আর আরু এসব বাদ দে!”

“কেন বাদ দেব আমি শুনতে চাই বল রোজা।”

“আমাদের এখন বাড়ি যেতে হবে সন্ধ্যা হয়ে এলো তো। ভালো মা বলেছে সন্ধ্যার আগেই বাড়ি ফিরতে।”

“আচ্ছা তোর ভালো মা সেদিন হাসপাতালে গিয়েছিল কেন?”

“একটা ওষুধ নিতে!”

“ওহ আচ্ছা তোর ভালো মায়ের নাম্বার টা আমাকে দিয়ে যা!”

“ভালো মায়ের নাম্বার দিয়ে তুই কি করবি।”

“নাম্বার দিয়ে মানুষ কি করে ফোন দেব কথা বলবো। ওনার খোঁজ খবর নিব আর কিছু।”

“না আসলে ভালো মা তেমন কারো সাথে কথা বলে না। । কারন ভালো মার আমাদের সাথে ছাড়া আর কারো সম্পর্ক নেই।”

“ওহ আচ্ছা ফোন ইউজ করে তো?”

“হ্যা ভাইয়া কিনে দিয়েছে।”

“তাহলে সমস্যা নেই! দে নাম্বার দে!”

আফরিন আরুহিকে নাম্বার দিল। ওরা আরো কিছুক্ষণ কথা বলে চলে গেল। আরুহি রাতে আরহামের রুমে গেল। ও গিয়ে দেখতে পেল আরহাম ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। ও যেতেই ও ল্যাপটপ টা বন্ধ করে বলল,,

“আরে বোনু তুই এখন?”

‘ভালো লাগছে না!”

“কেন?’

“আমি কি জানি! ভাইয়া ভাবো তো মায়ের মুখ থেকে কি করে সত্যি টা বের করা যায় যে উনিই আমাদের মা।”

“আমিও তো সেই চিন্তায় আছি। শুক্রবার এর আগে করতে পারলে ভালো হতো। নাহলে আর কোন সমস্যা থাকতো না। নাহিয়ান খানের সাথে কথা হয়েছে উনি রাজি আছেন।”

“ওহ আচ্ছা তাহলে তো ভালোই। আমি কিছু ভেবে দেখি কিভাবে কি করা যায়।”

“আচ্ছা এখন তুই গিয়ে ঘুমিয়ে পর আজ যা গেল।”

“তুমি ও ঘুমিয়ে পড়!”

“হুম !”

“আল্লাহ হাফেজ!”

“আল্লাহ হাফেজ!”
______________

আবরারের কিছু ভালো লাগছে না সব কেমন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। তাই উপন্যাস পরতে চাইলো ও বুকশেলফ থেকে একটা বই বের করার সময় কিছু একটা পরলো। ও দেখলো সেদিন কার সেই বক্স টা যেটায় একজনের আবেগ গুছিয়ে রেখেছে। বক্স টা উঠিয়ে আবরার বলল,,

“সেদিন ওরকম না করলে কি ভালো হতো সুভাসিনী। তাহলে হয়তো আমি তোমাকে হারাতাম না। কিন্তু আমি যে তোমার ঐ অবস্থা দেখতে পারছিলাম না । তোমার এত সুন্দর ব্যক্তিত্ব তোমার তুমি হয়তো হাড়িয়ে ফেলছিলে ধীরে ধীরে কিন্তু শেষ সময় তুমি তার জন্যই আমার থেকে দূরে গিয়েছিলে। তুমি আবেগের বয়সে ভুল করে বসেছিলে। যে ভুলটা প্রায় কিশোর -কিশোরী করে থাকে আর হাড়িয়ে যায় নিজের লক্ষ থেকে। আমি তেমন টা চাই নি আমি চাই নি তুমিও তোমার লক্ষ্য থেকে হাড়িয়ে যাও। এই জন্য তোমার ভালোবাসা কে আবেগ বলে নিজেকে বুঝিয়েছি এবং তোমাকেও। তুমি মুভ অন করলেও কোথাও আজও আমি রয়ে গেছি। তাই তো মাঝে মাঝে আমায় ভেবে কাঁদো সে খবর আমি রাখি। তুমি যে সেই অধ্যায় টাকে নাকচ করো কারন আমি তোমায় বলেছিলাম আমি তোমার হতে চাই না। তাই তো এখন তুমি আমার হতে চাও না। ”

ও কোন কিছু না ভেবেই আরুহি কে ফোন দিল।রাত প্রায় এগারো টা। এত রাতে কারো ফোন পেয়ে বেলকনি থেকে রুমে আসলো আরুহি হুট এত রাতে আবরারের ফোন পেয়ে অবাক হলো কোন কিছু হলো না তো ভেবে আরুহি ফোনটা ধরে সালাম দিল,,

“আসসালামু আলাইকুম!”

‘ওয়ালাইকুমুস সালাম!”

“এত রাতে ফোন দিয়েছেন কেন?”

“ঘুমিয়ে পরেছিলেন নাকি?”

“ঠিক তা না কিন্তু রাত এগারোটা বাজে এখন। যাই হোক এখন বলুন ফোন দিয়েছেন কেন?”

“সুভাসিনীর সাথে কথা বলতে চাই!”

সুভাসিনী বলেই আরুহি একটা লম্বা শ্বাস নিল। আর বলল,,

“সুভাসিনী মারা গেছে অনেক আগেই তাকে আর ফেরানো সম্ভব নয়।”

“প্লিজ আরুহি সুভাসিনী হয়ে ফিরে আসো না।”

একথা শুনে আরুহির কান্না পেল ভিশন কিন্তু ও কাঁদলো না একটা ঢুক গিলে বলল,,

“আরুহির সুভাসিনী হওয়া সহজ হলেও সুভাসিনী থেকে আরুহি হতে অনেক কষ্ট হয়েছে আমার। এখন আমি আর সুভাসিনী হতে চাই না। সুভিসিনী থেকে অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নিয়েছি আমি আর সেই জায়গায় যেতে চাই না। হুট হাট মন খারাপ করা বুক ভারি হয়ে আসা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে এগিয়ে যাওয়ার প্রয়াশ এগুলো খুব খারাপ জিনিস মিস্টার আবরার। এখন আমি বলতে পারি আমার আপনার জন্য কোন দুঃখ নেই আমি ভালো আছি। পুরোনো দিন ভুলে নতুন দিন গুলোর মাঝে আমি বেশ আছি।”

“কিন্তু আমি তো ভালো নেই!’

“আপনার ভালো থাকার দায় তো আমার ছিল না কখনো। আপনি ছিলেন আপনার মর্জির রাজা। আমি আপনাকে কোন কিছু নিয়ে জোর করে নি। আমি ভালোবাসলেও কিন্তু কখনো বেহায়া হই নি।”

“একটু বেহায়া হলে কি খুব ক্ষতি হতো।”

“তখন বেহায়া হলে কি আপনাকে পাওয়া যেত তখন যেতনা। কারন তখন আপনার কাছে অনেক অপছন্দের মানুষ ছিলাম। হ্যা হয়তো বেহায়া হওয়া যেত তবে নিজের ব্যক্তিত্ব হাড়িয়ে আপনাকে পাওয়ার কোন ইচ্ছে ছিল না আমার। তাছাড়া সেটা আবেগের বসে হয়েছিল নিজেকে সামলিয়ে উঠতে না পারলেও কিছু কিছু জায়গায় ঠিকই সামলাতে পেরেছি।

এ কথা শুনে আবরার চুপ করে রইল আসলেও তখন আরুহি বলল,,

“যা হয়েছিল তা আমি ভুলে যেতে চাই নিশান। আমি সেই পথে যেতে চাই না। সবশেষে বলতে চাই ভালোবাসা নিয়ে আমার বিন্দুমাত্র আক্ষেপ বা আফসোস নেই। আবেগের বশে করা ভুল আমি এখন দৌড়াই না । আমি পুরোনো কিছু ভাবতে চাই না আর না ভবিষ্যত নিয়ে কিছু ভাবতে চাই আমি শুধু বর্তমান নিয়ে থাকতে চাই। অনেক কথা বললাম নিজের খেয়াল রাখবেন আল্লাহ হাফেজ।”

“সুভাসিনী আমার কথা টা শোনো প্লিজ!”

“আমি আর কিছু শুনতে চাই না। সুভাসিনীর কথা উঠলেই আমার বুক ভারী হয়ে আসে নিশান আমি সুভাসিনীকে চাই না। আমি চাই তার অস্তিত্ব মুছে যাক।”

‘নিশান কখনো সুভাসিনীকে অপছন্দ করতো না আরুহি।সে সুভাসিনীর ভালোর জন্যই সুভাসিনীকে দূরে রেখেছিল।”

“যে ভালো আমাকে কষ্ট দেয় সে ভালো আমার দরকার নেই নিশান।”

“আমি আমার সুভাসিনীকে পেতে চাই।”

“সুভাসিনী কখনো আপনার ছিল না নিশান।”

“আমার ছিল সুভাসিনী আমারই ছিল। তুমি বিশ্বাস করো আর না করো সুভাসিনী আমারই ছিল।”

“রাখছি নিশান এরপর থেকে আমাকে ফোন দিবেন না।”

“আরুহি প্লিজ ফিরে এসো আমার হয়ে ।”

“অতঃপর সে আপনার না হোক নিশান।”

“কেন এরকম করছো?”

“এমনিই!রাখছি আল্লাহ হাফেজ।”

বলেই আরুহি ফোন কেটে দিল আর ওর চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো। আর বলল,,

“আমি চাই না নিশান আবরার আপনার হতে। আপনি এতদিন পর কতো সহজে সব বলে ফেললেন আরুহি ফিরে আসো আমার হয়ে । এই ফেরা টা সহজ নয় নিশান। আপনার ঐ ভালোবাসা আমাকে নিঃশেষ করে ফেলেছে আমি কতো হাসতাম এখন কিভাবে কান্না করি । আপনার জন্য কষ্টের সাগরে পড়ে গেছি আমি। আমি ঐ পুরোনো দিন গুলো ভুলতে পারি না। এক তরফা ভালোবাসা কতটা কষ্টের সেটা আমি বুঝেছি নিশান আপনি বোঝেন নি। আপনি একবার শুধু আমায় বলেছিলেন আমি যেন আপনাকে ছেড়ে দিই আপনি আমার হতে চান না। ব্যস এইটুকতেই আমি ঐ রাস্তায় যাই নি। তাহলে আজ এতবছর পর কেন আপনি আমাকে চান।

বলেই আরুহি কান্নায় ভেঙে পরল। ওপাশে আবরার বাকরুদ্ধ হয়ে বসে আছে ফ্লোরে আবরারের মাথা কাজ করছে না।
_________________

অতীত,,

তখন আরুহিরা ক্লাস নাইনে পড়তো। আর আবরার ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। ওদের স্কুল আর কলেজ একসাথে ছিল । আফরিন কে একটা ছেলে ভিশন ডিসটার্ভ করছিল কিছুদিন ধরে। আরুহি বলে আফরিন কে ওর ভাইকে জানাতে কিন্তু আফরিন ভয় পায় বলতে তার ভাইয়ের রাগ সে ভালো করেই জানে। তাই আরুহি সিদ্ধান্ত নেয় সে বলবে আফরিন কে সাথে নিয়ে। যেই ভাবা সেই কাজ আফরিন আরুহি আর রোজা একসাথে আবরারের কাছে এলো তা দেখে আবরার বলল,,

“কিরছ নিশু এই সময় তোরা আমার কাছে কেন?”

তখন আফরিন আমতা আমতা করে বলল,,

“আসলে ভাইয়া!

তখন আরুহি বলল,,

“আরে কি আমতা আমতা করছিস আসলে আফরিন কে একটা ছেলে খুব ডিস্টার্ভ করছে কয়েকদিন ধরে। সেটাই বলতে এসেছে আফরিন তো বলতেই চাইছিল না। আমিই ঘার ধরে নিয়ে এলাম।”

এ কথা শুনে আবরার রেগে পাশের টবে থাকা একটা ফুল খুব জোরে মুঠো করে চেপে ধরে ছিঁড়ে ফেলে বলল,,

” ছেলেটার সাহস তো কম নয় আমার বোনকে বিরক্ত করে। ওর হবে আজকে ।কোন ছেলে কোন ক্লাসে পড়ে আমাকে বল। আর নিশু তোকে বলেছি না কোন সমস্যা হলে আমাকে আগে বলবি। এরপর থেকে যেন এরকম না করতে দেখি।”

আফরিন ছোট করে বলল,,

“ঠিক আছে ভাইয়া।”

ফুল ছেড়ার ব্যাপারটা আর কেউ খেয়াল না করলেও আরুহি ঠিকই দেখেছে। ও একজন ফুল প্রেমী ফুলের সাথে এরকম দৃশ্য ওর সহ্য হলো না। ইচ্ছে করলো সামনে থাকা লোকটাকে কিছু বলতে কিন্তু মহল গরম দেখে কিছু বললো না। আবরার ওখান থেকে চলে গেল। তখন আরুহি আফরিনকে বলল,,

“তোর ভাই আস্ত একটা বেয়াদব?”

“আরে আমার ভাই কি করেছে?”

“তোর ভাই এতো সুন্দর ফুল টাকে কিভাবে মুঠোয় করে চেপে ধরে নষ্ট করলো।”

“সামান্য ফুলই তো ভাইয়া রাগ করে ছিঁড়ে ফেলেছে।”

“কি বললি সামন্য ফুল!”

এ কথা শুনেই আফরিন আরুহির দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারল সে কি বলেছে ফুল হচ্ছে আরুহির জান। সে ফুলকে কতটা ভালোবাসে সেটা তার অজানা নয়। তখন রোজা বলল,,

“এই আরু তোর ভালোবাসার জিনিস কে আফরিন সামান্য বলেছে শুনেছিস তুই।”

“ঐ ভাই রোজা তুই তো আমারো বান্ধবী তাহলে আগুনের ভেতর ঘি ঢালছিস কেন? আসলে আমি ওটা মিন করি নি আরু ওটা যাস্ট বেরিয়ে গেছে মুখ ফস্কে।”

“মুখ ফস্কে সবসময় সত্যি কথাটাই বের হয় আফরিন।”

আরুহির এমন কথায় আফরিন মুখটা ছোট করে বলল,,

“আচ্ছা সরি আরু আর বলবো না।”

“ফুল দেখতে সামান্য মনে হলেও ফুল কিন্তু সামান্য বস্তু নয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর কোমল প্রিয় সৃষ্টি হচ্ছে ফুল। এটাকে ভালোবাসার প্রতীক ও বলা হয়। দ্যাখ মানুষ তার প্রিয়জন ফুল নিবেদন করে ভালোবেসে ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ করতে। একট সামান্য ফুল প্রিয়জনের রাগ বা অভিমান কমাতে কতটা কাজ কর
রে তুই ভাবতেও পারবি না।আর তুই তাকে সামান্য বললি। ”

“ওকে বাবা সরি বলেছি তো।”

“হুম তোর ভাইকে বলে দিবি এভাবে যেন ফুল না ছিঁড়ে।”

“একথা বললে ভাইয়া আমাকে শেষ করে ফেলবে। ভাইয়ার রাগ আমি খুব ভয় পাই আরু। ভাইয়া ফুল টুল খুব একটা পছন্দ করে না। একথা বললে ভাইয়া বলবে আমি যা ইচ্ছে করি তোর কি তাতে। আমার বিষয়ে একদম নাক গলাবি না। আর সামান্য ফুলের জন্য তুই আমাকে বলছিস একদম আমার সামনে ফাও কথা বলবি না। একটা ফুল ছিড়েছি তো কি হয়েছে দুনিয়ার সব ফুল মরে গেছে। আমার হাত আমি যা ইচ্ছে করি তোর কি!”

এ কথা বলেই আফরিন দম ছাড়লো। আরুহি আর রোজা অবাক হয়ে আফরিনের দিকে তাকিয়ে আছে। তা দেখে আফরিন বলল,,

“আমায় মাফ কর তোরা তুই বলিস আরুহি। আমার দ্বারা এটা হবে না।”

তখন আরুহি বলল,,

“ঠিক আছে বলবো ওনাকে নাহলে উনি একই কাজ পরেও করবে যেটা আমার সহ্য হবে না। বলবো তবে অন্যভাবে যাতে বুঝতে না পারে কে দিয়েছে।”

“কে কি দিয়েছে!”

“একটা চিরকুট লিখবো আর নাম দেব সুভাসিনী এ নামে আমাদের স্কুলে বোধহয় কেউ নেই। তোর ভাই আর বুঝতেও পারবে আর ঝারতেও পারবে না আফরিন যেভাবে বললো।”

“ও মাই আল্লাহ তোর মাথায় কতো বুদ্ধি রে আরু!”

“আফরিন তুই তোর ভাইয়ের ব্যাগে চিরকুট রেখে আসবি আমি লিখে দিব। যে বইটা তোর ভাই বেশি পরে সেই বইয়ে রাখবি।”

‘ওকে ডান।”

আরুহি সুন্দর করে একটা চিরকুট লিখলো আর আফরিন কে দিল আফরিন লুকিয়ে আবরারের ব্যাগে রেখে এলো। রাতে পরতে যেয়ে আবরার চিরকুট টা পেল।তাতে লেখা আছে,,

“পৃথিবীর সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সুন্দরতম কোমলপ্রিয় সৃষ্টি হচ্ছে ফুল। জানেন কি? ফুলের মধ্যে কিছু মানুষের আত্মা থাকে তাই ফুলকে যত্ন করতে শিখুন নষ্ট করতে না।”

পড়ে অবাক হলো এরকম কে করতে পারে নিচে নামও দেখলো সুভাসিনী কিন্তু ও সুভাসিনী নামের কাউকে চেনে না। সামান্য ফুলের জন্য কেউ এভাবে সুন্দর করে চিরকুট লিখতে পারে জিনিস টা ওকে খুব করে টানলো। আবরার পরের দিন এসে সুভাসিনীকে খুঁজলো কিন্তু সে নেই কোথাও।

~চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here