গুছিয়ে রাখা আবেগ পর্ব ৯

0
492

#গুছিয়ে_রাখা_আবেগ
#পর্ব_৯
#আজরিনা_জ্যামি

বন্ধ ঘরে কেউ বড় টিভি স্ক্রিনে আরহামের সাথে কি হচ্ছে সব দেখছে। এমন কি আরুহিও কি করছে সেটাও দেখছে। আরুহির ওভাবে চলে যাওয়া দেখে লোকটা অবাক হলো আর বলল,,

“তারমানে কি আমি যাকে আরুহি ভাবছিলাম আসলে সে আরুহি নয়। আরুহি তার ভাইকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে আরহাম কে এই অবস্থায় দেখে আরুহি কখনোই ব্যস্ততা দেখিয়ে চলে যাবে না। কিন্তু এটা কি করে হতে পারে। আমি তো আগে ভেবেছিলাম আফরিনের বান্ধবীই আরুহি তার ওপর সেদিন হাসপাতালে ওদের কে আমি একসাথে কথা বলতে দেখেছি। না যা হচ্ছে কোথাও ভুল হচ্ছে।”

তখন পাশে থেকে আরেক জন বলল,,

“আরে সেদিন ওদের একসাথে দেখার কারন আরহামের বন্ধু এক্সিডেন্ট হয়েছিল আর আরুহির বন্ধুর ভাই তাই বন্ধুকে সামলাতে গিয়েছিল।”

“না ভুল হয়ে গেছে সেদিন হাসপাতালে আরো কিছুক্ষণ থাকা উচিত ছিল। ওদের একসাথে দেখে ওভাবে চলে আসা উচিত হয় নি। আরো কিছুক্ষণ দেখলে হয়তো সিওর হতে পারতাম এভাবে কনফিউজড হতে হতো না। সেদিন ভুল করে ফেলেছি। ”

“এটাই তো তোমার অভ্যাস সব কাজ পুরোপুরি না দেখেএকটু দেখেই চলে আসা। এই জন্যই তো পাঁচ বছর আগে আরুহি সব দেখে ফেলেছিল প্রথমে তুমি টের ও পাওনি।”

এ কথা শুনে লোকটা আর কিছু বললো না। শুধু বলল,,

“এখন কি করবো তাহলে?”

“সবুর করো ওই আরুহি আরহামের বোন আরুহি না হলে কি হবে। আরহামের বোন আরুহি তো জানবেই তার ভাই বিপদে পড়েছে সে তো একবারের জন্যও হলে ভাইয়ের কাছে আসবে। আজই দেখে নিব আরুহিকে শুধু আসতে দাও ওর খেল খতম করে দেব আজকেই।”

“যদি না আসে?”

“আমি যতদূর আরুহিকে চিনি ও আসবেই। ভাইয়ের বিপদে ও থাকবে না এটা হতে পারেনা। ওরা দুই ভাইবোন একে অপরের জান বুঝলে।”

_______________

আরহাম চুপচাপ বসে আছে। ওর কোন ভাবান্তর নেই। আরুহি গেছে প্রায় দশ মিনিট হতে চলল। আবরার কেও কোথাও দেখা যাচ্ছে না। আরহাম এর এই অবস্থা দেখে আফরিনের খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কিছুই করতে পারছে না। কারন আরুহি ওদের এগুতে বারন করেছে নাহলে নাকি আরহামের আরো বিপদ হবে। রোদে আরহাম এর ঘাম পরছে আরহাম বলল,,

“এই ভাই তুই আমাকে বসিয়ে রাখবি রাখ কিন্তু এই গরমে রোদে রেখেছিস কেন? তুই তো রোদে আসিস-ই সাথে আমাকেও রোদে বসিয়ে রেখেছিস। এরপর অসুস্থ হলে কিন্তু তুই দায়ী থাকবি।”

“এই তোর ভয় ডর নেই। নিজে বাচবি কিনা তার ঠিক নেই সে আছে রোদে অসুস্থ হলে নাকি আমি দায়ী থাকবো।”

“একদিন তো মরতেই হবে তাই যতক্ষন বেঁচে আছি নিজের খেয়াল তো রাখ তে হবে। নাহলে আমার বোন এসে বলবে না ভাইয়া আমি আসার আগ পর্যন্ত তো নিজের খেয়াল রাখা উচিৎ ছিল।”

“বস তো বলেছিল তোর বোন এই কলেজেই আছে কিন্তু তাকে বলেছে সে তো চলে গেল। তোর বোন আসবে কোথা থেকে।”

“সে কথা তোর ভাবতে হবে না। এখন চল ছায়ার বসবো।”

আরহাম উঠে দাঁড়ালো লোকটা কিছু বললো না। লোকটা আরহামের পিছু পিছু যেতে নিল। তখনি একটা গাড়ি খুব গতিতে ভার্সিটিতে ঢুকলো। সেই গাড়ি থেকে একটা হুডিওয়ালা লোক নামলো মুখে মাস্ক হুডি টানা হুডির ভেতরে ছেলে না মেয়ে বোঝা গেল না। লোকটা আস্তে আস্তে আরহামের দিকে এগুতে লাগলো। আরহাম তার দিকে মুচকি হেসে তাকিয়ে আছে। সে হুট করেই কিছু একটা আরহামের দিকে ছুড়লো। আর পাশের লোকটাকে আরেক হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি করলো। আরহাম কে সে বন্দুক ছুড়ে মেরেছিল। তখনি কোথা থেকে গুলি আসতে লাগলো আরহাম কে আটকে রাখা লোকগুলোর ওপর। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রায় দশজন গার্ড সবগুলো লোককে ঘিরে ধরলো। আরহাম আর হুডিওয়ালা লোকটাও কয়েকজন কে গুলি করেছে। ওখানে প্রায় দশ জনের মতো লোক ছিল। সবাইকে আটকে ফেলল আরহামের গার্ড গুলো। সবকিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটলো যে কেউ কিছু ঠাহর করতে পারলো না। সবাইকে আটকে ফেলেছে হুডিওয়ালা লোকটা একটা কিছুর ওপর তাকিয়ে ‘হাই” দিল হাত দিয়ে। সে আরহামের কাছে গেল। আর সেই লোকের সামনে গেল যে আরহাম কে ঘুসি মেরেছিল। সেই লোকের সামনে গিয়ে তাকে বেধরম মারতে লাগলো। হুট করে তাকে মারার কারন কেউ বুঝতে না পারলেও আরহাম ঠিকই বুঝতে পারল। আরহাম গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনলো। তখন লোকটা বলল,,

“ওর সাহস কি হলো তোমার গায়ে হাত দেওয়ার। ওকে আমি শেষ করে ফেলবো।”

“রিল্যাক্স আই এমন ফাইন!”

“তা তো দেখতেই পাচ্ছি।”

তখনি ওখানে পরে থাকা একজনের ফোন বাজতে লাগলো। হুডিওয়ালা লোকটা গার্ডকে বলল ফোন এনে দিতে গার্ড ফোন এনে দিল। ও বোন নিয়ে সবার থেকে দূরে গেল। আর ফোন কানে নিতেই ওপাশ থেকে আওয়াজ আসলো ,,

“মিস আরুহি মাহমুদ খান। ফাইনালি তোমার দেখা পেলাম। আমি জানতাম তুমি আসবে আরহাম কে বাঁচাতে আর বাঁচিয়েও নিলে। কিন্তু এখন তুমি বাঁচবে কি করে।”

“আমি জানতাম আপনি ফোন দিবেন আমার সাথে কথা বলার জন্য । আরেকটা কথা আমি বাঁচবো কি করে তা আপনাকে ভাবতে হবে না মিস্টার আপনি আপনার টা চিন্তা করুন। এত বছর ধরেও যেটা করতে পারেন নি আপনি কি ভাবলেন একদিনেই করে ফেলবেন আমাকে মারা ওতো সহজ নয়।”

“এখনো এতো তেজ!”

“তেজ না থাকার কথা নাকি!”

“আমি দশ পর্যন্ত গুনলেও তোমার গেল খতম।”

“তাহলে গুনেই দেখুন না।”

লোকটা বিশ্রি হেসে দশ পর্যন্ত গুনতে লাগলো। কিন্তু দশ গোনার পর কিছু হলো না দেখে সে ভয় পেয়ে গেল। তখন আরুহি হেসে বলল,,

“ইসস এখন যদি আপনার ঐ ভয় পাওয়া মুখ দেখতে পেতাম কিন্তু আফসোস পারলাম না।”

“তারমানে তুমি সব জানতে?”

“আপনার কি মনে হয় আপনি আমার ভাইকে ভার্সিটির মাঠে এনে সবার সামনে বন্দুক ধরবেন আমি আশেপাশে না দেখেই চলে আসবো আমার ভাইকে বাঁচাতে যেখানে আপনি কিনা আমাকে মারতে চান জেনেও। আমি জানতাম আপনি শুধু আমাকে ভয় দেখাতে ভাইয়ার সাথে ঐরকম করেন নি। আপনি আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টাও করবেন। তাই আগে থাকতেই ভার্সিটির সব বিল্ডিং চেক করেই এসেছি।”

“এই একটা কারনেই তোমাকে ভালো লাগে সব কিছুই আগে থাকতে বুঝে যাও। তোমার ঐ মুখের দর্শন যদি পেতাম তাহলে আরো বোধহয় ভালো লাগতো।”

“দুঃখিত আপনাকে আরো ভালো লাগাতে পারলাম না।”

“আই লাইক ইট।”

এ কথা শুনে আরুহি হাসলো আরুহির হাসি দেখে আরহাম ও এগিয়ে এসে বলল,

“কি হলো বোনু হাসছিস কেন?”

“সে আমার পত্যাখান কে পছন্দ করে। যাই হোক মিস্টার আপনার সাথে আমাদের খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে। জানিনা সেদিন কি হবে। তবে খুব তাড়াতাড়ি আমি আপনার সাথে দেখা করতে চাই।”

“সেটা তো আমিও চাই। কিন্তু তুমিই তো হতে দিচ্ছো না।”

“তবে যেদিন আপনার সাথে দেখা হবে সেদিন আপনি চমকে যাবেন। অবশ্য এর মাঝে আপনার সাথে আমার একবার দেখা হয়েছিল কিন্তু আপনি চিনতে পারেন নি। এটা আপনার ব্যর্থতা বুঝলেন। ওকে অনেক কথা বললাম আল্লাহ হাফেজ।”

বলেই আরুহি ফোনটা রেখে দিল। আর আরহামের হাত ধরে গাড়িতে উঠলো। আফরিন এগিয়ে আসলেও কথা বলার সুযোগ পেল না।

_____________________

না! না! না! এটা কি করে হতে পারে। আরুহি কিভাবে এবারও সব ভন্ডুল করতে পারে। ও কিভাবে জানতে পেল। আমি ওকে মারার জন্য বিল্ডিং এ লোক ঠিক করে রেখেছিলাম। এমন কি আমি ক্যামেরায় সব দেখছি সেটাও ও কিভাবে জানতে পারলো। আমাকে হাত নারালো এটা কি করে সম্ভব আমি তো সব প্রি প্ল্যান করেই আজকের সবকিছু করেছিলাম। কে ওকে সাহায্য করছে আর কেন? কে হতে পারে। না না আমাকে তার খোঁজ নিতেই হবে। ছাড়বো না কাউকে ছাড়বো না সবাইকে এর ফল পেতে হবে।

__________________

“সবার সামনে না এসে ভালো করেছিস বোনু। নাহলে শত্রু পক্ষ জেনে যেত।

“কিন্তু একজন যে দেখে ফেলেছে ভাইয়া!”

“কে সে?”

“মিস্টার নিশান আবরার!”

“কি! আর কিভাবে?”

“আমি বেরুনুর পরেই উনি বোধহয় আমাকে বিশ্বাস করতে পারছিল না আমি ওভাবে তোমাকে রেখে আসবো। তাই উনিও গাড়ি নিয়ে আমার পেছনে আসে। আর ওখান থেকেই উনি মার্কেটে ঢুকতে দেখে সেখান থেকেই উনি আমাকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন।”

“এখন আবরার কোথায়?”

“এই যে আপনাদের পেছনে!”

আরুহি আর আরহাম গাড়িতে ছিল। ওদের কথার মাঝেই আবরার পেছন থেকে কথা টা বলল,

“আরে মিস্টার আবরার আপনি এখানে?”

“আমি তো প্রথম থেকেই এখানে ছিলাম শুধু কিছু বলছিলাম না। তবে আপনার বোনের কার্যকলাপ দেখে আমি সত্যিই বিশ্মিত!”

“আর আপনার কাজ দেখে আমি শিহরিত! সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ মিস্টার নিশান আবরার।

তখন আরহাম বলল,,

“কিন্তু আমি কিন্তু তোদের দুজনের কথার কিছুই বুঝতে পারছি না।”

“তুমি জানো ভাইয়া মিস্টার নিশান-ই আমাকে বলেছিলেন আজকে আমাকে মারার প্ল্যান করেছে সে?”

“মানে?”

“মিস্টার আরহাম আসলে কয়েকদিন আগে মিস আরুহি আমাকে বলেছিলেন আমাদের একজন কর্মকর্তা আমাদের কিছু মেন ইনফরমেশন ওনার কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন সেল করার জন্য। ওনার কথা শুনে আমি লোকটাকে ধরি এবং লোকটার কাছে থেকে জানতে চাই কেন সে আমাদের কম্পানির ক্ষতি চায়। তখন সে জানতে চায় মিস আরুহির সম্পর্কে জানার জন্য। তাই তার কাছাকাছি থাকার জন্য উনি এটা করেন। মিস আরুহি তো অফিসে প্রপার সব পর্দা করেন আজ পর্যন্ত ওনার কেউ চেহারা দেখতে পারে নি। তাই ওনাকে চেনার জন্য ওনার কম্পানিতে জয়েন হতে চেয়েছিলেন। তাতে খুব সহজেই মিস আরুহির সম্পর্কে সব জানতে পারেন। এটা তাকে কেউ করতে বলেছিল। না করলে নাকি তার পরিবারের ক্ষতি করে দেবে। তাই বাধ্য হয়ে উনি কাজ টা করে। তাই আমি ওনাকে বলি যে মিস আরুহি সম্পর্কে জানতে চায় তার কথা মতো চলতে কিন্তু আমাকে সব খবর দিতে এর পর আরুহির ওপর কোন এ্যাটাক করবে কি না সেটার খবরও দিতে নাহলে আমি ওনাকে পুলিশ দিব এবং জেল থেকে বের হতে না পারে তার ব্যবস্থাও করবো। এ কথা শুনে লোকটা ভয় পেয়ে যায়। আর লোকটা যেহেতু আপনাদের শত্রুর খুব কাছের তাই ওনাকে সব বলে আর উনি আমাকে আজ সকালে জানায়। সেটা বলার জন্যই আমি আরুহির পেছনে তাই আর ওনাকে বলি উনি লোক লাগিয়ে বিল্ডিং এ থাকা শুটার কে সরিয়ে ফেলে আমিও সাহায্য করেছি এই কাজে। তবে আপনার ব্যাপারটা আমাকে জানায় নি।নাহলে আগে থাকতেই সব করে রাখতে পারতাম। তবে মিস আরুহি এত তাড়াতাড়ি সব করে ফেলতে পারবে বুঝতে পারি নি।”

সবকিছু শুনে আরহাম কি বলবে বুঝতে পারলো না। শুধু বলল,,

“ধন্যবাদ আবরার সবকিছুর জন্য আজ যদি তুমি না থাকতে তাহলে আমার বোনের যে কি হতো।”

“ইটস্ ওকে মিস্টার আরহাম আমি তো শুধু ওনাকে বাচাই নি নিজেকেও বাঁচিয়েছি।”

“মানে?”

“কিছু না আচ্ছা আপনাদের শত্রুর কে আপনারা জানেন?”

তান আরুহি বলল,,

“হুম চিনি আর আমাদের শত্রু আছে বলেই আমরা সবসময় গার্ড নিয়ে চলাচল করি অবশ্য কেউ বুঝতে পারে না আমাদের গার্ড সবসময় ফরমাল ড্রেসে আমাদের সাথেই থাকে আমরা কিছু না বলা পর্যন্ত তারা কিছুই করে না।”

“ওহ আচ্ছা!”

আবরার আর কিছু বললো না অন্য কিছু ভাবতে লাগলো। না যে করেই হোক সেই শত্রুকে বের করতে হবে। আবরার যদি ভুল না হয় তাহলে তাদের জন্যই আরুহিরা লন্ডনে চলে গিয়েছিল।
__________________

“ভাইয়া তোমার ব্যাথা করছে না তো?”

“বেশি লাগে নি বোনু ঐ একটু ?”

“দেখি আর কোথাও লাগে নি তো বলো আমি জেল লাগিয়ে দিচ্ছি।”

“এত ঢং দেখানোর কি আছে বাপু। যে নাকি ভাইকে ঐ অবস্থায় ফেলে চলে আসতে পারে সে এখন ঢং দেখিয়ে ভাইয়ের কন্সার্ন দেখাচ্ছে।”

এমন কথায় আরুহি আর আরহাম পেছনে ঘুরে দেখলো আফরিন আর রোজা এসেছে আর কথাটা আফরিন -ই বলেছে। তবে আফরিনের কথা শুনে আরুহি আর আরহাম দুজনেই হাসলো। আরুহি বলল,,

“কেন রে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকলে কি হতো। বসে বসে ভাইয়ের মার খাওয়া দেখতাম নাকি। তুই ওখানে দেখেছিদি কতগুলো লোক ছিল আমরা তো কিছু করতে পারতাম না তাই না।”

“তুই একদম আমার সাথে কথা বলবি না। আর কে বলল কিছু করতে পারতাম না পুলিশ কে ফোন করতে তো পারতি। এই তুই ওনার বোন!”

“কেন রে ভাই যে ওকে তো বাঁচানো হয়েছে ওখানে দাঁড়িয়ে আর কি করবো। যে লোকটা বাচিয়েছে তাকে আমি খবর দিয়েছি বুঝেছিস।”

“হুম ঢং!”

তখন রোজা বলল,,

“তোরা বাদ দে আরহাম ভাইয়া এখন কেমন আছো?””

“এই তো রোজা আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তা মনে হচ্ছে মিস আফরিনের মাথাটা একটু গরম আছে।”

এ কথা শুনে আরুহি আর রোজা হাসলো আর আফরিন মুখ শক্ত করে দাঁড়িয়ে রইল। তা দেখে আরহাম বলল,,

“তা মিস আফরিন রাগটা কার ওপর আরুহি ওভাবে চলে আসায় ওর ওপর নাকি নিজের ওপর আপনি আমার জন্য কিছু করতে পারেন নি তার জন্য?”

এ কথা শুনে আফরিন থতমত খেলো কিন্তু প্রকাশ না করে বলল,,

“আপনি আমার কে যার জন্য কিছু করতে না পারলে কষ্ট হবে।”

“কে যেন কিছুদিন আগে তার বান্ধবীদের বলেছিল আমি এবার না করলে তুলে নিয়ে বিয়ে করবে।”

একথা শুনে আফরিন লজ্জা পেল। আর বলল,,

“আপনার সাথে কথা বলাই বেকার!”

“তা এখন এখানে কেন মিস?”

“কেন আসা যাবে না বুঝি।”

“না তা না আপনি তো সচরাচর আমাদের বাড়িতে না বলে আসেন না তাই।”

“আসলে ভালো মা সব শোনার পর বলল আপনাকে দেখে যেতে আপনি ঠিক আছেন কি না।”

“শুধু ভালো মা বলল দেখে আসলেন তারমানে আপনার আসার ইচ্ছা ছিল না তাই না।”

“ব্যাপারটা তেমন না আপনি তো আমার বান্ধবীর ভাই তাই আপনাকে দেখতে আসা আমাদের দায়িত্ব তাই।”

“ওহ আচ্ছা আমি ভাবলাম অন্য কিছু!”

“আরে ভাই আরো দুজন মানুষ এখানে আছে তা কি কেউ খেয়াল করেছে।”

রোজার কথায় সবাই ওর দিকে তাকালো। আরুহি বলল,,

“ঠিক তাই এখন তোরা বস আমি কফি নিয়ে আসছি।”

আরুহি কিচেনে চলে গেল ও যাওয়ার পর আরহাম বলল,,

“মিস আপনার বান্ধবীর ওপর রাগ করবেন না। সে এমনি এমনি আমাকে ওভাবে দেখেও চলে যায় নি ।সে আমাকে বাঁচানোর জন্যই গিয়েছিল।”

“মানে ঠিক কি বলতে চাইছেন। খুলে বলুন।”

“এখন খুলে বলা সম্ভব নয় শুধু এটুকু জানুন আপনার বান্ধবী যা করেছে আমাদের ভালোর জন্যই করেছে।”

“আচ্ছা।”

“আচ্ছা আপনার ভালো মাকে নিয়ে আসতেন তাহলে?”

“বলেছিলাম কিন্তু এলো না।”

“ওহ আচ্ছা।”

“সামনে শুক্রবার আমি আর আরুহি আপনাদের বাড়ি যাবো একটা ইম্পোর্টেন্ট কথা বলতে!”

“আমাকে বলছেন কেন? বলবেন তো আমাদের বাড়ির বড় কাউকে!”

“আপনার বাবাকে আজ রাতে ফোন করে জানিয়ে দিব। আর আবরার কে বলেছি ।”

“তাহলে তো সমস্যাই নেই।”

“ওকে মিস রেডি থাকবেন তাহলে শুক্রবার আপনার জন্য সারপ্রাইজ আছে।”

~চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here