আমায় ডেকো একা বিকেলে পর্ব ২

0
1105

#আমায়_ডেকো_একা_বিকেলে?
#লামিয়া_সুলতানা_সিলভী ( লেখিনীতে)
#পর্বঃ_২

নিচে যেতেই দেখি সব গুলো গাল ফুলিয়ে বসে আছে, আচ্ছা আমি এদের ছোট নাকি এরা আমার ছোট? মানে সিরিয়াসলি, নিলুফা আপু? তার তো বিয়েও হয়েছে, একটা এক বছরের বেবীও আছে আর একে দেখে মনে হচ্ছে সে আমার ছোট! আমি আম্মুকে ভাত দিতে বলে সোফায় গিয়ে বসলাম, এখন বাজে রাত ১১:৩০! আমার শ্বাশুর-বাড়ির লোকজন গিয়েছে রাত ৯ টার দিকে! আমার দিকে সবাই এমন ভাবে তাকালো আমি যেনো কোন এলিয়েন, মাত্রই টুপ করে এলিয়েনের দেশ থেকে পড়লাম! আর ভাত চেয়ে বিরাট বড় অপরাধ করে ফেলেছি, আমি এদের কোন পাত্তা দিলাম না! সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ও মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে, ওর কান লাল হয়ে আছে,, এটা দেখে আমারই এখন খারাপ লাগছে! সামিয়া কে কাছে ডাকলাম,,,

লামিঃ বোন এদিক আয়! ( হাতের ইশারায়)

সামিয়া মন খারাপ করে কাছে আসলো! মানে হলো বাসায় মেহমান আসলে ওর ডানা গজায়, এমন ভাব করে আমাকে চেনে না, প্রতিবারই এমন হয় তারপর আমার পিটুনি খেয়ে সোজা হয়! কাছে এসে বসতেই ওর বা গালে হাত দিয়ে ডান গালে একটা চুমু দিলাম,,, সাথে সাথেই ও আমাকে জরিয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো!

লামিঃ কি হয়েছে, কাঁদছিস কেনো?

সামিয়াঃ আপু, তুই আ আমাকে বকলে অনেক কষ্ট হয়! (হেচকি তুলে) সরি আপু আর ক কখনো তোকে ওভাবে বলবো না, তুই তো আর তিন মাস পরে আমাকে রেখে চলেই যাবি! তখন তো তোকে আর কাছে পাবো না, এখন থেকে সব-সময় ভালো ভাবে কথা বলবো তোর সাথে!

সামিয়া একনাগারে কথাগুলো বলে দিলো, ওর কথা শুনে আমার চোখেও পানি চিকচিক করছে! সামনে তাকিয়ে দেখি আম্মু ভাতের প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে! পরিবেশ এখন খুবই শান্ত, সবাই আমার আর সামিয়ার দিকেই তাকিয়ে আছে! আম্মু কোনমতে ভাত সেন্টার টেবিলে রেখে চলে গেলো, বুঝলাম আম্মুরও মন খারাপ! এই নিরাবতা ভাঙার জন্য সায়ন ভাইয়া হটাৎই বলে ওঠলো,,,

সায়নঃ এই লামি, ওর নাম কি রে? ( চাচাতো ভাই)

আমি ভ্রু কুঁচকে তাকালাম,,,

লামিঃ কার?

সায়নঃ ওইযে আয়াশের বোন, মানে তোর ননদ!

নিলুফাঃ ভাই ক্যারেকটার ভালো করো, দুদিন পর বিয়ে করলে এসব ফাইযলামি গীরি তোমার বউ পছন্দ করবে না! হ্যা রে সায়ন, সত্যি করে বলতো তোর গার্লফ্রেন্ড কয়টা? (ফুপাতো বোন)

সায়নঃ ধুর নিলুফা আপু, কি যে বলো না! আমি তো এমনি মজা করলাম, আমার বউ তো ওইযে! (একবার আদিবার দিকে তাকিয়ে দিপ্তীর দিকে তাকিয়ে বলে)

আমি ভাত খাচ্ছি আর সামিয়া কে খাইয়ে দিচ্ছি! এদের কথায় কোন জবাব দিলাম না, শুধু নিরোব দর্শকের মতো শুনে আর দেখে গেলাম!

রাফিঃ তাই? আমি কি কিছু বলবো সায়ন ভাইয়া? (মামাতো ভাই)

সায়নঃ চুপ থাক, বেশি চপর চপর করিস না! কেস খাওয়ায় দিবো কিন্তু!

আমি এবার দিপ্তীর দিকে তাকালাম, বেচারী অসহায় ভঙিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে! দীপ্তি আর নিশা আমার বান্ধুবী, আম্মু আজকে ওদের বাড়ি যেতে দেয়নি!

লামিঃ সত্যি? তুই সায়ন ভাইয়ার বউ কবে থেকে হলি দিপ্তী, বলতো? ( ভাত খেতে খেতে)

আদিবাঃ আমি মনে হয় কিছু জানি!

আদিবা দাত কটমট করে সায়ন ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কথাটা বললো! আদিবা হচ্ছে আমার একমাত্র মামার মেয়ে, মানে রাফি ভাইয়ার ছোট বোন! আদিবা আর আমি সেইম ইয়ার! আর আদিবা ছিলো সায়ন ভাইয়ার গার্লফ্রেন্ড, সেটা সবাই জানে! বাট ওদের কেনো ব্রেকয়াপ হয়ে গেছে জানিনা কি কারণে!..

দীপ্তিঃ আরে না হুদাই, সায়ন ভাইয়া এমনেই বলছে, আদিবাকে রাগানোর জন্য! আয়াশ ভাইয়ার খবর কি? কল দিয়েছিলো?

লামিঃ ( ভ্রু কুঁচকে) এই,, তুই এই কথা বললি ক্যান? বলতো, তাকে আমার নাম্বার কে দিয়েছে?

পাশে থেকে সামিয়া এবার গালে হাত দিয়ে ওঠে দাঁড়ায়,,

সামিয়াঃ আপু আমার খাওয়া হয়ে গেছে, বাকিটুকু তুই খেয়ে নে!

বুঝলাম এই ভিলেনগীরি টা আমার ছোট বোনই করেছে, মেয়েটা এতো ইচরে পাঁকা কেনো? আমি অদ্ভুত দৃষ্টিতে সামিয়ার দিকে তাকাতেই, ও অমায়িক একটা হাসি দিয়ে কিচেনের দিকে গেলো পানি খাবে বলে! অথচ ওর সামনেই পানি রাখা, কি পরিমাণ ফাযিল হয়েছে মেয়েটা!

নিশাঃ আচ্ছা কালকের পার্টির কথা তো লামি জানেই না! ও কি বাদ তাহলে?

সায়নঃ পিচ্ছিদের এসবে থাকতে নেই + আমাদের যে অপমান করলো তার একটা ছোট্ট শাস্তি!

নিলুফাঃ হ্যা হ্যা ঠিক বলেছিস, আমরা কেও কথা বলবো না লামির সাথে! শুধু আয়াশের সাথেই পার্টি দিবো!

আমি কিছু না বলে ওঠে গিয়ে হাত ধয়ে এসে নিলুফা আপুর গলা জরিয়ে ধরে বললাম,,,

লামিঃ আপু, তোমার লামি বুড়ি কি তোমায় কষ্ট দিতে পারে বলো? তখন আমার রাগ হয়েছিলো, জানোই তো আমার রাগ হলে সেন্স থাকে না আর আমি তো তোমাকে কিছু বলি নি, আমার রাগ হয়েছিলো দিপ্তী, সামিয়া, নিশা, আর সায়ন ভাইয়াদের ওপর!

আদিবাঃ আমি কিন্তু এই জন্য ওপরে তোকে জ্বালাতে যায়নি, জানি তুই এখন রেস্ট নিবি, দেখ আমি কতো ভালো? (ভাব দেখিয়ে)

সায়ন ভাইয়া ফট করেই বলে ফেলে,,,

সায়নঃ আদিবা? তোমার হাতে মেহেদী দিয়ে AS লেখা কেনো? S টা কি আমাকে ডেডিকেটেড করে দিয়েছো?

আদিবাঃ (থতমত খেয়ে) কি আজে-বাজে বলছো সায়ন ভাই? S তে কি দুনিয়ায় তুমি একাই, আর কেও নেই? S হচ্ছে S মানে হলো আমার নিউ বয়ফ্রেন্ড! হুহ,, ( মুখ ভেংগিয়ে)

সায়নঃ ( বাকা হেসে) ওহ আচ্ছা তাই? তো তোমার নিউ বয়ফ্রেন্ডের নাম কি?

আদিবাঃ (মাথা চুলকিয়ে) ওর নাম, ওর নাম হচ্ছে সাজিদ! হ্যা তোমার গার্লফ্রেন্ড যেমন দিপ্তী আমার বয়ফ্রেন্ডও সাজিদ!
_________________________

আজকে সূর্যের কিরণটা যেনো অন্যদিনের চেয়ে বেশিই প্রখর, চারদিকে মানুষের ঘামাক্ত চিত্র! ক্লান্তিমাখা নিয়ে আজ সবাই তার কাজ করছে, আর এই অসহ্য গরমেও আজকে আমাকে ভার্সিটি আসতে হলো ইমপ্রটেন্ট ক্লাস আছে বলে! ভার্সিটি ক্লাস শেষে বের হতেই দেখি এক যুবক বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,, গায়ে ওয়াইট কালারের টি-শার্ট, একটা ব্ল্যাক জ্যাকেট, ব্লু জিন্স, কেটস, চোখে সানগ্লাস আর হাতে সিলভার কালারের ওয়াচ! এই যুবকটি হচ্ছে আমার চেনা, হ্যা খুব করে চেনা! আর এই যুবুকটিই হচ্ছে আয়াশ, তাকে দেখে আমার ভ্রু অটোমেটিক কুঁচকে গেলো, এখানে সে কেনো এসেছে? আমি কোথায় পড়ি সেটা তো সে জানে না, তাইলে অন্য কোন মেয়ের জন্য! নিজের মাথায় চাপর দিয়ে,,, না না কিসব ভাবছি আমি! আমি এগিয়ে যেতেই, আয়াশ চোখ থেকে সানগ্লাস খুলে আমাকে দেখেই ক্লান্তিমাখা হাসি দিয়েই বলে উঠলেন,,

আয়াশঃ ক্লাস শেষ?

আমি উনার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি, এই ছেলেটা আমায় নতুন নতুন পদ্ধতিতে মুগ্ধ করে চলেছে প্রতিনিয়ত,, কালকে কথা বলার স্টাইল আর আজকে এমন লুক! উফফ, আমি কি ক্রাশ খেয়ে যাচ্ছি? আমার এসব ভাবনা মনে হয় তার পছন্দ হলো না, তাই আমার ভাবনায় এক বালতি পানি ঢেলে বলে ওঠলেন,,,

আয়াশঃ কি দেখছো এভাবে তাকিয়ে, প্রেমে ট্রেমে পড়লে নাকি? আমার কিন্তু সমস্যা নেই, শ্বশুরকে ফাঁকি দিয়ে শ্বশুরের মেয়েকে নিয়ে পালাবো, কি দারুন ব্যাপার হবে তাইনা?

ওনার কথাটা শুনে দুই মিনিট হ্যাং মেরে দাঁড়িয়ে থেকে বললাম,,,

লামিঃ মানে?

আয়াশঃ ( মৃদু হেসে) বাইকে ওঠো,,,

লামিঃ কেনো?

আয়াশঃ আমি বলেছি তাই!

লামিঃ আপনে বললেই ওঠতে হবে?

এই কথা বলায় আমার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই আমার আত্না শুকিয়ে গেলো, শুকনো ঢোক গিলে সুন্দর মতো তার বাইকে ওঠে বসলাম,,

আয়াশঃ এনি প্রব্লেম?

লামিঃ উহুম!

আয়াশঃ তাহলে এতো দূরে কেনো বসে আছে? আমাকে ধরে বসো, নাইলে পড়ে যাবে!

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে আছি,কি করবো ভাবছিলাম,,

আয়াশঃ নিচের দিকে না তাকিয়ে আমার দিকে তাকাও, প্রবলেম না থাকলে আমাকে ধরে বসো আমি বাইক স্টার্ট দিবো!

একটা জোরে শ্বাস টেনে তার কাধে হাত দিতেই সে বাইক স্টার্ট দিলো! এখন ভয়ে জিজ্ঞেসও করতে পারছি না, কোথায় নিয়ে যাচ্ছে,, তাই চুপচাপ দেখে গেলাম! বাইক চলছে নিজের আপন গতিতে আর সাথে আয়াশের সিল্কি চুলগুলো বাতাসে হেলছে, কি অপরূপ লাগছে দেখতে! মিষ্টগন্ধযুক্ত পারফিউমও চারদিকে ছড়িয়ে যাচ্ছে, ইশ! এভাবে আর কতোক্ষন থাকলে আমার নিজেরই এখন হার্ট এর্টাক হয়ে যাবে!

বাইক গিয়ে থামলো একটা লেকের পাড়ে, যেই লেকটা আমার সবচেয়ে ফেবেরিট জায়গা! আমি বুঝি না আমার প্রিয় জিনিস গুলোর কথা একে চালান করে দেয় কে? আমি নেমে যেতেই সে গাড়ি পার্কিংয়ে বাইক পার্ক করে আসলো, এসে আমার হাত ধরলো! আমি হাত ছাড়াতে নিতেই আবার সেই রাগী দৃষ্টি নিক্ষেপ, উফফ কি যে প্যারা দেয় এই লোকটা! আর আমিও এর সামনে আসতেই ননীর পুতুল হয়ে গেলাম, কিচ্ছু বলতে পারছি না কিন্তু কেনো? অন্যান্য জায়গায় তো পুরো ধানী লংকা আর এর সামনে? আমার হাত ধরে নিয়ে গেলো ফুচকার দোকানে! এটাও আমার চেনা দোকান, আমি সব সময় এখান থেকে ফেন্ডের সাথে আসি! ফুচকাওয়ালা আমাকে দেখেই মৃদু হেসে বললো,,,

ফুচকাওয়ালাঃ কেমন আছো মামুনি? অনেকদিন হলো তো আর আসোনা? আর এই বাবাটা কে?

আয়াশঃ আমি হচ্ছ তোমার মামুনি বাগদত্তা!

ফুচকাওয়ালা আবারো হাসলো, তারপর দুজনকে অনেক দোয়া করে, ফুচকা বানাতে লাগলো! আমি আর আয়াশ পাশের টেবিলে গিয়ে বসলাম, আর এদিকে আয়াশ আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কিছুক্ষন পর হটাৎ বলে ওঠলো,,

আয়াশঃ লামি, আমাকে তোমার ভালো লাগে?

এটা কেমন কথা হলো, গতকাল বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে গেছে আর আজ এমন প্রশ্ন? আমাকে ভাবতে দেখে আয়াশ আবার বললো,,,

আয়াশঃ কি হলো, বলো? দ্রুত উত্তর দিবে, তোমার মনের উত্তরটাই দিবে! কুইক…

আমি ভেবে পাচ্ছি না কি উত্তর দিবে, ভালো লাগে সেটা কি এনাউন্স করে দিতে হবে? আর এদিকে সে উত্তরের আশায় আমার দিকে তাকিয়ে আছে! কিন্তু আমি কিছু বলতে পারছি না, কি বলবো? আয়াশ আবারো বললো,,,

আয়াশঃ লামি তুমি এতোটা কনফিউজড হয়ে যাচ্ছো কেন? ইজিলি উত্তর দাও, আমি তো সহজ কিছুই বলেছি তাইনা? সেকেন্ডে উত্তর হয়ে যায় এটা, বলো আমাকে ভালো লাগে?

আমি নিচের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলাম,,

লামিঃ হ্যাঁ!

আয়াশঃ তুমি এই বিয়েতে হ্যাপি তো?

লামিঃ হুম!

আয়াশ এবার মৃদু হেসে আমার হাত আবার তুলে নিলো,,

আয়াশঃ বলোতো মানুষ এংগেজমেন্টের সময় এই আংগুলেই কেনো আংটি পড়ায়?

আমি এবার তার দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে উত্তর দিলাম,,

লামিঃ জানিনা!

আয়াশঃ আমি বলবো?

লামিঃ হ্যাঁ!

আয়াশঃ এই অনামিকা আংগুলই পরিণয় দুটি হৃদয়কে মিলিয়ে দেয়, দুটি প্রেমময় হৃদয়ের মিলন হয় গোলাকার আংটির রূপ ধরে! কেন গোলাকার হয় জানো? গোল দিয়ে মূলত বোঝানো হয় শাশ্বত, চিরন্তন, যার বৃত্তের বলয়ের নেই কোনো প্রান্ত! আর এই মিলন আবিষ্কার করবার জন্যই চলে সারাজীবন তীব্র সংগ্রাম!

লামিঃ ওহ, এর প্রচল কবে থেকে?

আয়াশঃ বিয়ের আংটি পরার চল প্রাচীন মিসর থেকে! বলা হয়,, প্রাচীন প্যাপিরাসে আছে, মমিদের ওপর পাওয়া গেছে বাঁশের বিচিত্র বুননিতে তৈরি রিং! এর দ্বারা আত্মার সঙ্গে পরবর্তী গন্তব্যের যোগাযোগ হয় বিবাহিত দম্পতির! তবে এর সঙ্গে আংটির তেমন কোনো সম্পর্ক নেই, এর আকৃতি গোলাকার বা বলয়ের মতো হয়, যা তাঁদের নিয়ে যায় অজানা গন্তব্যের উদ্দেশে! আমি এগুলো তোমাকে কেনো বললাম বলোতো?

লামিঃ কেনো?

আয়াশঃ যাতে তুমি এই সম্পর্কের মানেটা বোঝ! তুমি তো অনেক ছোট, ভুল করতেই পারো তাই তোমাকে বোঝালাম একজনের বাগদত্তা মানে কি? এর গুরুত্ব কতোতা!

এরই মাঝে দুই প্লেট ফুচকা হাজির,, এই ফুচকা টা আমার সবচেয়ে প্রিয়! একে পাইলে আমি ভাত খাওয়া ছেড়ে দেই! আমি একটার পর একটা খেয়ে যাচ্ছি কিন্তু একি? আয়াশ তো খাচ্ছেই না, ওর প্লেটে সবগুলাই আছে! সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমাকে কি ও খাদক ভাবছে?

লামিঃ আপনে খাবেন না? ( নিজের মুখে একটা পুরে দিয়ে)

আয়াশঃ না,, এই দুই প্লেট তোমার জন্য, তোমার তো ফুচকা অনেক ফেবরিট তাইনা?

লামিঃ তাই বলে আপনে খাবেন না?

আয়াশঃ তুমি খেলে আমার খাওয়া হয়ে যাবে!

আমি আর কোন কথা না বাড়িয়েই একে একে দুই প্লেট ফুচকা খেয়ে ফেললাম!

আয়াশঃ রাতে নাকি পার্টি আছে তোমাদের বাসায়, সায়ন ফোন দিছিলো তাই বললো আমাকে আর রাইসা কে যেতে!

লামিঃ ওরা আমাকে নেবে না পার্টি তে!

আয়াশঃ কেন? ( অবাক হয়ে)

লামিঃ ওদের বকেছি অনেক, এংগেজমেন্টের সময় ওরা আমার অবস্থা দেখে হেসেছিলো অনেক তাই আমার রাগ হয়ে যায়! আর আপনেও তো হেসেছিলেন তাই,,,( থামিয়ে)

আয়াশঃ তাই? আমাকেও বকবে?

আমি মাথা নাড়িয়ে না জানালাম,,

আয়াশঃ কেনো আমাকে কেনো বকবে না?

আপনাকে যে ভয় লাগে আবার বকা হুহ,,মনে মনে বললাম!

আয়াশঃ আচ্ছা, এবার উঠি তাইলে!

তারপর দুজন ফুচকাওয়ালা মামার কাছে বিদায় নিয়ে বাইকের কাছে আসতেই আয়াশ আবার বললো,,,

আয়াশঃ কালকে কি আমাকে একটু সময় দিতে পারবে? (বাইকের চাবি দিয়ে স্টার্ট দিতে দিতেই)

লামিঃ কেন?

আয়াশঃ আমি কেনো কথা পছন্দ করি না, ওঠে বসো!

“হুহ, আমি কেনো কথা পছন্দ করি না! আবার বলে আমি সরি পছন্দ করি না, তাইলে তুই কি পছন্দ করিস? আমাকে একটা সিডিউল বানিয়ে দিস!” কিন্তু এই কথাগুলো আর মুখে বলা হলো না, মনে কথা মনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলো!

আয়াশঃ এমন নিরাবতা পালন করছো কেনো? বাসায় যাবে না, এখানেই দাড়িয়ে থাকবে?

আমি আর কিছু না বলে আবার তার বাইকের পিছনে গিয়ে বসলাম! সারা রাস্তা আর কোন কথা হলো না, বাসার একটু আগে নামিয়ে বললো,,,

আয়াশঃ বাকিটুকু যেতে পারবে না?

লামিঃ হুম!

আয়াশঃ ওকে,,, যাও তাইলে, রাতে দেখা হচ্ছে!

#চলবে…

[ হ্যাপি রিডিং❤️]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here