অস্তিত্বের খোজে part 20+21

0
719

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ২০




– কৌশিক ফোনে কথা বলতে বলতে নিচে নামার উদ্দেশ্য যাচ্ছিল। হঠাৎ পরীর রুমের সামনে এসে থমকে দাড়ায়। চাপা আর্তনাদ আর ধস্তাধস্তির শব্দ পেয়ে। কিছুক্ষন দাড়িয়ে থেকে বুঝার চেষ্টা করল…… এবার বিকট একটা শব্দ হয় রুমে সেটা শুনেই কৌশিক জোড়ে জোড়ে থাবা দিতে থাকে দরজায়।




– পরী তুমি ঠিক আছো এত্ত শব্দ হচ্ছে কেন…… কিন্তু কোন উত্তর নেই…… রুমের ভিতর শুধু পরীর আর্তনাদই শোনা গেল।



– কোন সমস্যা হয়েছে বলেই কৌশিক জোড়ে জোড়ে দরজায় লাথি এবং ধাক্কা দিতে লাগল। লাথি আর ধাক্কার শব্দে বাসার সবাই এসে দেখল কৌশিকের কান্ড গুলো।
– শুভ্র পরীর নাম শুনতেই ল্যাপটপ রেখে জলদি দৌড়ে আসে…..
– দাদা কি হয়েছে এরকম করছিস কেন?
– শুভ্র পরী ঠিক নাই বলেই আবার জোড়ে ধাক্কা দিতে লাগল।
– শুভ্রর মাথার উপর যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল…… পরী পরী বলে বার বার ধাক্কা দিতে লাগল দরজায়।




– নিতু কে এক ধাক্কা দিয়ে পরী বিছানা থেকে উঠতেই নিতু পিছন দিক থেকে পরীর চুল ধরেই দেওয়ালে একটা বাড়ি মারে। পরীর মনে হয় দুনিয়া অন্ধকার হয়ে আসে আর এদিকে বাসার সবাই বাহিরে থেকে চিল্লাচাটি করেই যাচ্ছে।




– আজ তো আমি যাবই তবে তোকে দুনিয়া থেকে বিদায় করেই যাব বলে পরীকে হিচড়ে টেনে কয়েকটা থাপ্পড় মারে এতে ও দরজার সামনে পরে। ও টলতে টলতে দরজার ছিটকি খুলে দিতে গিয়েও পারলনা। আধা খুলে গেল।
– এবার কৌশিক জোড়ে একটা লাথি মারে এতে দরজার এক ধাক্কায় পরী আছড়ে গিয়ে ওয়াড্রপের সাথে বাড়ি খায় এবং নেতিয়ে পরে।
– এদিকে পরীকে উদ্দেশ্য করে নিতু একটা ফুল দানি ছুড়ে মারে যেটা গিয়ে কৌশিকের কপালে লেগে ফেটে যায়। কৌশিকের কপাল বেয়ে ঝরঝর করে রক্ত বেয়ে পরে।




– কৌশিক সোজা গিয়ে নিতুকে ধরেই কয়েকটা থাপ্পড় লাগিয়ে বলল পাগল হয়ে গেছ তুমি। আমাদের বাসায় এসে আমাদেরই আঘাত কর?


– নিতু কোন কথায় শুনছে না ওর পরীকে মারা চাই চাই…… টেবিলের উপর যা ছিল একেকটা সব কৌশিক আর পরীকে উদ্দেশ্য ছুড়তে লাগল। কৌশিক নিতুকে এবার শক্ত করে ধরল। আর নিতু রাগে গর গর করে দাপাতে লাগল।




– শুভ্র পরীর কাছে এসে ধপ করে বসে পড়ল। আর পরীর মাথা থেকে রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে। শুভ্রর আর হুশ নাই নিথর ভাবে অপল দৃষ্টিতে পরীকে দেখছে। অধিক মনের উপর ধাক্কা পেলে যা হয়।




– অনিতা এসে শুভ্রকে ধাক্কা মেরে বলল শুভ্র! ওকে ধর জলদি ওর চিকিৎসা দরকার…….. না হলে অঘটন ঘটে যাবে।

– শুভ্র পরীকে তুলে দ্রুত নিচে চলে গেল এবং কারে উঠাইয়ে গাড়ী স্টার্ট দিল।



– অনিল দৌড়ে আসতেই দেখে শুভ্র গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেছে……. অনিলও দ্রুত আর একটা গাড়ি নিয়ে শুভ্রকে অনুসরন করে।




– নিদ্রা ঘুম থেকে উঠে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দে। এক পা ২ পা করে এগিয়ে এসেই দেখে পরীর রুম থেকে শব্দগুলো আসছে। ও দ্রুত রুমে ঢুকেই দেখে নিতুকে শক্ত করে কৌশিক ধরে আছে আর ওর কৌশিকের কপাল বেয়ে রক্ত পড়ছে।


-কৌশিক বলে নিদ্রা দ্রুত ওর কাছে যায়।

– নিতাই জলদি নিতুর বাবা- মা আর সাথে পুলিসের এসআইকেও কল দিয়ে বাসায় আসতে বলে।

– নিতু এবার শান্ত হয় এবং ঐ অবস্থায় বসে পড়ে। কৌশিক ছেড়ে দেয় নিতুকে।

– নিদ্রা জলদি কৌশিককে ড্রেসিং করাতে ব্যাস্ত। আর কাঁদছে।

– নিদ্রা আমার কিছুই হয়নি পরীকে আজ ও শেষ করে দিয়েছে। মেয়েটার যে কি অবস্থা গড জানে। আমি যদি না আসতাম নিতু পরীকে এতক্ষন যে কি করত ভাবতেই গায়ে কাটা দিচ্ছে।





– শুভ্র আসলামের হসপিটালে এসে থামে এবং পরীকে কোলে নিয়ে দ্রুত হসপিটালে ঢুকে যায়। রাস্তায় আসার সময় আসলামকে সব জানিয়েছে শুভ্র তাই আসলাম সব রেডী করেই রাখছিল।

– আসলাম জলদি ওর কাজ শুরু করে দেয়। বেশ ডিপ
ভাবে কেটে গেছে তাই রক্ত ক্ষরন ও বেশ হয়েছে।

– শুভ্র ওর রক্তের গ্রুপ কি জানিস কারন পরীক্ষা করার মত আর সময় নেই।

– o+

– ওকে বলেই আসলাম চলে গেল। পরীকে রক্ত দেওয়া হলো।




– অনিল এসে শুভ্রর পাশে বসে পড়ল। সব ঠিক হয়ে যাবে বাবা চিন্তা করিস না। শুভ্র শুধু চুপ করে কথা গুলো শুনল।




– বাসায় নিতুর বাবা-মা আর ওর বড় ভাই এসেছে। একটু পর এসআই ও আসল।

– নিতাই সেন বেশ গম্ভীর গলায় বলল আপনাদের মেয়ে আজ যা করেছে…. ওকে পুলিশে দেওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই আমাদের।

– নিতুর মা বলে উঠল আমার মেয়ে দোস করেছে মানছি…….. কিন্তু শুভ্র ওর সাথে যে অন্যায় করেছে সেটা কি বলবেন? আপনারা যদি ওকে পুলিশে দেন আমারাও আপনাদের নামে আমাদের সম্মান হানি করার জন্য মামলা দিব।


– এবার নিতু বেশ জোড় দিয়ে বলে উঠল………. হবু স্ত্রীকে রেখে অন্য একটা মুসলিম মেয়ের সাথে পরকিয়া সম্পর্কে কি বলবেন আপনারা…..!আপনারা তো কিছু বলবেন না শুভ্রকে তাই এই ব্যবস্থা।


– অনিতা এবার মুখ খুলল। এই মেয়ে তোমার চরিত্র আগে ঠিক কর তারপর শুভ্রকে নিয়ে কথা বলবে। তোমার সম্পর্কে সব কথা শুভ্র আমাকে বলেছে।

– আপনি একদম চুপ করবেন.. যেমন মা তেমন তার ছেলে……. আপনার ছেলে পরীকে নিয়ে ফস্টিনষ্টি করবে সেটা আপনাদের বাড়ীর অনেকে দেখেও চুপ থাকলে আমি থাকব না। নিজের ছেলের চরিত্র আগে ঠিক করুন তার পর আমাকে বলুন বলেই অনিতাকে যাইচ্ছা তাই বলে কথা শুনায় নিতু।



– স্যার আপনার নাতির দোষও কম দেখছি না। একটা মেয়ের সাথে বিয়ে হবে তাকে রেখে অন্য জনের সাথে অবৈধ সম্পর্ক করবে সেটা কোন মেয়েই সহ্য করবেনা। আপনাদের সমস্যা আপনারা মিটিয়ে নেন।




– আসলাম এসে শুভ্রকে বলল আরে পাগল এত্ত ঘামছিস কেন…..! একটু ডিপ কেটে গেছে। কিছু হবেনা। জলদি ওর সেন্স ফিরবে চিন্তা করিস না।

” শুভ্র মাথা তুলছে না কারন ওর চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে।

– অনিল আসলাম কে বলল বাবা মেয়েটা সেরে যাবেতো! কোন ইফেক্ট পড়বেনা তো?


– না আঙ্কেল কিছু হবেনা। কয়েক জায়গায় আঘাত ছাড়া আর তেমন কিছু না। ও গুলো ধীরে ধীরে ভাল হয়ে যাবে। ওর সেন্স আসলে ওকে আজ রাতে কিংবা কাল সকালে নিয়ে যেতে পারবেন। কোন চিন্তা করবেন না ও ঠিক আছে আঙ্কেল।




– এমন সময় অনিলের কাছে কল আসল নিতাইয়ের।

– হ্যাঁ বাবা বলেন…..

– অনিল পরী কেমন আছে…….

– জ্বী বাবা ভাল আছে……. কিছুক্ষন পর হয়ত সেন্স ফিরবে।

– শুভ্রকে ফোনটা দে তো?

– শুভ্র চোখ মুছে বলল দাদু কিছু বলবেন?

– তুই এখনি বাসায় আয় বলে সব খুলে বলল নিতাই।

– শুভ্র কথাগুলো শুনে পায়ের রক্ত মাথায় উঠে গেল। জলদি বাসায় চলে আসল। পরীর কাছে ওর বাবাকে রেখে।





– শুভ্র এসে দেখল জল অনেক দুরে গড়িয়ে গেছে। নিতাই সেন বলে দিছে নিতুর যদি কোন দোষ না থাকে তাহলে আজই শুভ্রের সাথে নিতুর বিয়ে হবে তাও রেজিস্ট্রি করে। নিতাই সেন এক কথার মানুষ…..


– সব রেডী করে রেখেছে নিতুর বড় দাদা। শুধু শুভ্রের অপেক্ষায়।

– বাসায় একপ্রকার ঝগড়া চলে গেল ২ পক্ষের মধ্য। কারন শুভ্র কোন প্রমান দ্বাড় করাতে পারছেনা। যাই বলছেনা কেন….. সব নিতু বিভিন্ন যুক্তি দেখিয়ে সব কিছু শেষ করে দিচ্ছে।


– শুভ্র আর কিছু না বলে ওর রুমে চলে গেল। নিতু তো মহা খুশি যাক ওর কষ্ট সার্থক তার পর পরীর এমন হাল করবে যেটা ও ভাবতেও পারবেনা।




– শুভ্র ওর আই প্যাডটা এনে সোজা এসআই এর হাতে দিয়ে বলল এবার দেখুন তো! এমন যদি আপনার সাথে হত তাহলে আপনি কি এই মেয়েকে বিয়ে করতেন? বলেই নিতুর উপলের সাথে বিশেষ মুহুত্বের কিছু ভিডিও দেখাল।


– আমি চাই নি ওর সম্মান যাক কিন্তু আজ ও এমন কাজ করেছে যে ওর মত মেয়ের কোন সম্মান পাওয়ার কোন যোগ্যতা নেই।


– এসআই সব দেখে বলল স্যরি ম্যাম আপনাকে আমাদের সাথে যেতে হবে বলেই ২ টা মহিলা পুলিশ নিতুকে টেনে হিচড়ে নিয়ে গেল বাসা থেকে।

– আপনি কি এমন দেখলেন যে আমার মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছেন।( নিতুর বাবা)


– পুলিশের তো যা মুখ…… সবার সামনে বলল আপনার মেয়ের বেশ্যাগিরির পর্নোগ্রাফী দেখলাম তাই কোন ছেলেই আপনার মেয়েকে বিয়ে করতে চাইবে না। আপনার মেয়ের কলিসির ফুটা রেখে অন্যর কলসি ফুটো করতে চাবে আর সেটা মি. শুভ্র বসে বসে দেখবে? একদম কোর্টে দেখা হবে…… বাই।





– শুভ্র নিতুর বাবা কাছে গিয়ে বলল আমার সম্মান নিয়ে এতক্ষন খেলতে ব্যাস্ত ছিলেন। আপনার মেয়ে আমার মাকে যাইচ্ছা তাই বলল আপনি একবারও নিষেধ করেন নি। আপনি কেমন শিক্ষা দিয়েছেন মেয়েকে যে আমার মায়ের শিক্ষার প্রশ্ন তোলে!



– এবার কৌশিক বলে উঠল আপনার মেয়ে পাগল হয়ে গেছে ওকে একটা ভাল সাইক্রেটিক ডাক্তার দেখান। না হয় পাবনাতে দিয়ে পাঠান…… সেটাও না পারলে বলুন আমি নিজে আপনাদের সাহায্য করব ছিটের ব্যবস্হা করতে।




– নিতুর বাবা- মায়ের মুখ দিয়ে কোন কথা বের হল না। শুধু লাষ্টবার বলে গেল। স্যার আমার মেয়ের জিবন নষ্ট হয়ে যাবে….. আমরা বাহিরে মুখ দেখাইতে পারবনা। দয়া করে এমনটা করবেননা ওর সাথে বলেই চলে গেল।




– রাত ১০ টার পর অনিল পরীকে নিয়ে বাসায় এল। মেয়েটার চোখমুখ একদম শুকিয়ে গেছে।
– অনিতা সবার সামনে শুভ্রকে থ্রেড দিয়ে বলল তোকে যেন পরীর আসপাশ না দেখি। তোর জন্য একের পর এক ওর জিবনে বিপদ আসতেই ছে।
তুই সব নষ্টের মূল।

– আমি করুন ভাবে শুভ্রর দিকে তাকালাম। ওকে ছাড়া আমি কেমনে থাকব।





– শুভ্র লজ্জায় চুপ করে আছে মাথা নিচু করে।
– আমি রুমে এসে বসে পড়লাম। সব শেষ করে দিল নিতুটা।



– সবার কড়া চোখের নজরে শুভ্রর সাথে কথা বলা তো দুরে থাক দেখা অবদি সম্ভব হয়না। জাষ্ট খাবার টেবিলে দেখা হয়। কিন্তু কেউ কারো দিকে তাকায় না।
তবে রাতে ভিডিও কলে কথা হয় ২ জনের মধ্য প্রচুর। এতেই অনেক আমার জন্য।



– একদিন শুভ্র বাসায় ফেরে নি তখনও। বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আমি অনেকবার কল দিছি কিন্তু রিসিভ করেনি। এদিকে ৯ টা বেজে গেছে তাও ফিরছেনা। টেনশন বেড়েই চলছে আমার।


– মাও খুব টেনশন করছে বার বার কল দিচ্ছে কিন্তু কল ধরছেনা শুভ্র।

– প্রায় রাত ১১ টার দিকে কাক ভেজা হয়ে বাসায় ফিরল শুভ্র। আমি শুধু ওকে দেখে রুমের ভিতর ঢুকলাম।




– শুভ্র এত্ত দেরী হল কেন? আর ভিজে গেছিস তো…..!

– মা গাড়ীটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। দেড় ঘন্টা হেটে ম্যাকারকে গাড়ির কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বাসায় ফিরছি বলেই হাঁচি ফেলতে শুরু করল।



– আর গাড়ি?

– অমিত দা নিয়ে আসবে।( ডাইভার)

– ওকে তুই চেঞ্জ কর আমি খাবার গরম করে আনছি।

– খাবনা মা…… আমার শরীর খুব খারাপ লাগছে……মনে হয় জ্বর আসবে।

– আচ্ছা আমি আসছি তুই চেঞ্জ কর বলেই অনিতা চলে গেল।

– শুভ্র কোন মতে চেঞ্জ করেই কম্বল মুড়ী দিয়ে সুয়ে পড়ল। নাকমুখ মনে হয় বন্ধ হয়ে আসছে ঠান্ডায়।




– আমি শুভ্রকে কল দিব কি দিবনা সেটাই ভাবছি এমন সময় অর্পিতাকে দেখে বললাম অর্পিতা একটু শোন!


– কিছু বলবে পরী দিদি! দাদার খুব গায়ে জ্বর এসেছে তাই মা দাদার কাছে যেতে বলল।

– খুব জ্বর এসেছে শুভ্রর? মেডিসিন নেয়নি!

– এসেই দাদা সুয়ে পড়েছে দিদি…….. বলে অর্পিতা চলে গেল।

– কথা গুলো সুনে আমার অস্থিরতা বেড়েই গেল। রুমের ভিতর পায়াচারী করতে লাগলাম। যদি একটু শুভ্রর কাছে যাইতে পারতাম।




– অর্পিতা শুভ্রের কাছে বসে আছে এমন সময় অনিতা এসে বলল কাল না তোর পরীক্ষা যা জেগে থাকতে হবে না আমি আছি।


– অর্পিতা চলে যেতেই অনিতা শুভ্রের গায়ে হাত দিল। জ্বরে ছেলেটার গা পুড়ে যাচ্ছে। শুভ্র….. শুভ্র একটু কথা বল…..
“”
– শুভ্র নাক টেনে শুধু হুম বলে।

– কিছু খেয়ে মেডিসিন নে……..

– ও শুধু মাথা নাড়িয়ে না করল।

– অনিতা এসে জলপট্টি দিতে লাগল। বার বার ওর কপাল মুছে দিচ্ছে ঠান্ডা পানি দিয়ে।




– আমি নামাযে দাড়িয়ে গেলাম। আল্লাহ্ ওর সাথে দেখা করার একটা ব্যবস্থা করে দাও দয়া করে।
– অনিতা এবার জোর করে শুভ্রকে জাষ্ট একটু সুপ খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিল।



– রাত ১ টা বেজে গেছে তাও ছেলেটার জ্বর কমার কথা নেই। বেশ দুশ্চিন্তায় আছে অনিতা।

– মা!

– শুভ্রর ডাকে অনিতার ধ্যান ফিরল।
– কিছু বলবি বাবা?

– একটু পরীকে ডেকে দিবে?

– শুভ্রের মুখের পরীর নাম শুনেই অনিতা একটু রেগে বলল ওকে কি দরকার?

– ডাকো না মা?

– পরী এত্ত রাত অবদি জেগে নেই….. ও হয়ত ঘুমাচ্ছে বলেই আবার শুভ্রের গায়ে হাত দিল। নাহ্ জ্বর কমার কথাই নাই দেখছি। আর একটা মেডিসিন দিব নাকি মনে করতেই শুভ্র আবার বলল মা পরী ঘুমাইনি এখনও।


– শুভ্র এত্ত রাত অবদি ও কেন জেগে থাকবে জ্বরে ভুলভাল বকছিস…….

– না মা ও ঘুমাইনি…. তুমি যাও ওকে একটু ডেকে দাও প্লিজ।

– অনিতা বাধ্য হয়ে পরীর রুমে এসে দেখে স্যতি ও ঘুমাইনি। রুমে লাইট জ্বলছে। দরজা খুলে ভিতরে গিয়ে দেখে মেয়েটা কেবল নামায পরে জায়নামায গুছিয়ে রাখছে।

– পরী তুমি ঘুমাওনি?

– অনিতার কথা শুনে পরী পিছন ফিরে বলল না আন্টি আমিতো তাহাজ্জুদ পড়ছিলাম…… কিছু বলবেন?

– না মানে যদি কিছু না মনে কর একটা কথা বলতাম।

– বলেন আন্টি কোন সমস্যা নেই।




– তুমি কি মনে করবা সেটাই ভাবছি……. আসলে শুভ্রর তো খুব জ্বর এসেছে ও একটু তোমাকে ডাকছে। বেশিক্ষণ থাকতে হবেনা কয়েক মিনিট ওর সাথে কথা বলেই চলে এসো মা। শুধু শুধু তোমার ঘুমের ডিসর্টাব করলাম।


– মার কথাগুলো শুনে মনে হচ্ছে এক দৌড়ে শুভ্রের কাছে যাই। কিন্তু নিজেকে কন্টোল করে বললাম ওকে আমি যাচ্ছি।

– অনিতা ওখান থেকে ঠাকুর ঘরে চলে গেল কিছু আনতে।




– আমি শুভ্রর রুমে গিয়ে মনে মনে বললাম আল্লাহ্ তোমাকে লাখ লাখ শুকরিয়া আমি ওর কাছে আসতে পেরেছি।

– আমি শুভ্রর পাশে বসে ওর কপালে হাত দিতেই ও বলল এত দেরী করলা কেন পরী?

– আমি শুভ্রর কপালে একটা কিস করে বললাম ভুল হয়ে গেছে সোনা…. আর এমন হবেনা।


– এবার শুভ্র চোখ খুলে দেখল পরী কাঁদছে। পরীর কান্নাটাও শুভ্র কাছে বেশ ভাল লাগে।

– পরী আমার বুকে একটু হাত দাও তো?

– আমি ওর বুকে হাত দিলাম। প্রচন্ড গা গরম ওর। আমি আবার হাত উঠাতেই শুভ্র আমার হাত চেপে ধরে বলল রাখনা একটু…. তুমি এত্ত কিপ্টা কেন আদর করতে……..!


– কই আমি কিপ্টামো করলাম………. বল আমায় কি কি করতে হবে!


– শুভ্র আমার হাত নিয়ে ওর পুরো শরীরে বুলাতে লাগল। শেষে যখন আমার হাত ওর নাভির কাছে নিয়ে যায় তখন আমি চট করে হাতটা ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে পড়লাম। কারন কিছুক্ষন পর মা আসবে। তাছাড়া শুভ্রের মতিগতি ভাল ঠেকছেনা।




– আমি উঠে বেলকুনিতে গেলাম। খুব বৃষ্টি হচ্ছে। এই টাইম টাই প্রচুর বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির মৌসুম তাই অঝোরে বৃষ্টি পড়েই চলছে। আমি খানিক পর রুমে এসে বেলকোনির থাই লাগাতেই শুভ্র পিছন দিক থেকে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে।




– আমি ওকে বললাম শুভ্র মা আসবেতো ছেড়ে দাও। ও বলল আসুক।
– শুভ্র তুমি ঘোড়ের মধ্য আছো তাই বুঝতে পারছোনা মা যদি একটু কিছু আন্দাজ করে তাহলে কিন্তু আমাদের পস্তাতে হবে!



– শুভ্র আমার ঘাড়ের কাছে এসে বলল প্লিজ সোনা বলেই কানের পিঠে একটা কিস করল এবং আস্তে করে কানের লতিতে কামড় দেয়। আমার পুরো শরীরে যেন বিদ্যুত চমকালো।

– ও আমাকে ছেড়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল।


– আমি ওর কাজ গুলো দেখে জাষ্ট অবাক এই না ওর জ্বর এসেছে তার মধ্য ঠিকছে ফিলিংস দেখাচ্ছে। কিন্তু আমাকে ওর কথায় সায় দিলে চলবে না…. কারন মা যদি এসে দেখে দরজা বন্ধ তাহলে আর রক্ষা নেই।



– শুভ্র পরীকে একটানে বুকে নিয়ে বলল কি সব সময় ওড়না পরে থাকো আমার সামনে….. খুলে রাখতে পারোনা বলেই ওড়না টান মেরে ফ্লোরে ফেলে দিল। আমি তো এর ব্যাবহারে অবাক। শুভ্র…..! তুমি কিন্তু নষ্ট খারাপ হয়ে গেছ ….. ছাড় আমায়……..




– অনিতা শুভ্রর রুমে এসে দেখে দরজা বন্ধ……
দরজা বন্ধ কেন বলেই কেবল নক করবে এমন সময় পরীর আওয়াজ পায়….. শুভ্র ছাড়ো আমায়। শব্দটি শুনে অনিতার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে। তার মানে পরী ভিতরে। ভগবান কেন আমি বদজ্জাত টার কথা শুনে মেয়েটাকে ওর রুমে পাঠাইলাম। এই যদি মেয়েটার কোন ক্ষতি করে ফেলে তাহলে নিজেকে কখনও ক্ষমা করতে পারবনা। কিন্তু অনিতার আর দরজায় ডাকার সাহস পায় না। লজ্জায় নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায়।




– শুভ্র পাগলের মত কিস♥♥♥♥ করে চলছে….. থামার কোন নাম নেই।।।।।

– আমি ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম…. শুভ্রর শরীর প্রচন্ড গরম……নিঃস্বাস ভারি হয়ে আসছে আমার…….


– শুভ্র… শুভ্র দেখ যা করছো ভেবে করছোনা এত্ত নষ্ট হলে কবে থেকে হুম?

– আমি নষ্ট খারাপ সেটা শুধু তোমার জন্য, গালি দাও মারো যা খুশি তাই কর কিন্তু আজ তোমাকে আর ছাড়ছি না বলেই খাটে আমাকে ফেলে দিল।


– শু……..ভ্র আর বাকিটা কথা শেষ করতে দিলনা পুরোটাই আমি তার দখলে…… সে এখন কিছু শুনতে চায়না এমনকি কোন বাহনা অবদি না। আমিও আর কতক্ষণ এভাবে থাকব আমিও ওকে কিস♥করতে লাগলাম। ২টি রূদয় আজ তাদের পবিত্র ভালবাসা সম্পূর্ন রূপে পরিপূর্নতা পেল।




– ভোরের দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গল। শুভ্র আমাকে জড়িয়ে ধরে সুয়ে আছে। আমি আস্তে আস্তে উঠে শুভ্রর গায়ে হাত দিয়ে দেখলাম ওর গায়ে ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়িয়ে গেছে। ওকে ডাক দিয়ে উঠিয়ে বললাম আমি চলে যাচ্ছি……..

– শুভ্র আমার হাত ধরে বলল কই যাচ্ছো?

– আমার রুমে যাচ্ছি………

– শুভ্র আমার আরও কাছে এসে বলল আর একটু থাকনা…. আমার খুব ভাল লাগবে……।

– কি আর করা ওর কাছে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই ও একটু পর আবার ঘুমিয়ে পরে। আজ সাপ্তাহিক ছুটি তাই ভাল করে ঘুমাক আমি এই ফাকে বের হয়ে এলাম জলদি……..হয়ত মা আসবে। জানিনা আজ কি কপালে আছে বলেই চলে আসলাম।
চলবে——

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ২১



– অনিতা খাটে বসে ঝিমুচ্ছে। সকাল হয়ে গেছে ততক্ষনে। অনিল ঘুম থেকে উঠে অনিতাকে ঐ অবস্থায় দেখে একটা আস্তে ধাক্কা দিয়ে বলল ঘুমালেই পারতে…….. এরকম করে কেন ঝিমুচ্ছ!
“”
– সব শেষ……….(অনিতা)

“”””
– কি শেষ! (অনিল)
“””””
– তোমার বদজ্জাত ছেলে সব শেষ করে দিছে…….
“””””””””
– কি করেছে বলবে তো?(অনিল)
“”””

– না কিছু নয় বলে অনিতা শুভ্রের রুমে এসে দেখে শুভ্র ঘুমাচ্ছে………. অনিতা ওর কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর ছেড়ে গেছে। তাই অনিতা চলে এলো। পরীর রুমের দরজা লাগানো। পরীকে আমার মুখ কিভাবে দেখাব…..(অনিতা)




– এভাবে আরও ১ টা মাস কেটে গেল। সেই দিনের পর থেকে শুভ্রকে আর পরীর কাছে যেতেই দেয়না। আর পলাতো আছেই।

– নিদ্রার ছোট বোনের বিয়ে বাসা সহকারে ইনভাইট করে গেছে। নিদ্রা আরও ৩ দিন আগে চলে গেছে।



– আজ নিদ্রার বোন নিশার গায়ে হলুদ তাই সবাই রেডী হচ্ছে ওদের বাসায় যাওয়ার জন্য। শুভ্রও ছুটি নিয়েছে। আমি যাবোনা তাও জোড় করে নিয়ে যাচ্ছে। আমার এগুলো তেমন ভাল লাগেনা। কি আর করা বাধ্য হয়ে লাগেজ গুছিয়ে রেডী হয়ে বসে আছি।



– কাজের লোকগুলো আমাদের সবার লাগেজ গাড়িতে তুলে দিল। আমি গিয়ে একটা গাড়িতে বসলাম কিন্তু মা আমাকে তার কাছে নিয়ে বসাল।




– সন্ধার দিকে বাসায় গিয়ে পৌছালাম। আমি গিয়েই রুমে ধপ করে সুয়ে পড়লাম।
“”””
– পরী তোমার কি খুব কষ্ট হচ্ছে?(অনিতা)
“””””””
– হচ্ছেতো কিন্তু কি বলি ওনাকে। না না আন্টি ঠিক আছি আমি।
“”””
– নিদ্রা আপু এসে বলল কি পরী কখনও হিন্দু রিতিতে বিয়ে দেখেছো?

– না আপু…….
“”””
– তাহলে দেখ কতটা মজা হয় এসব বিয়েতে। চল রেডী হও আমাদের সবাইকে যেতে হবে……..(নিদ্রা)

– আবার কই যাবো?

– কমিনিউটি সেন্টারে ওখানে সবাই একসাথে বর বউয়ের গায়ে হলুদ হবে। শুভ্র এই ড্রেস তোমায় দিতে বলেছে। এটা পড়ে নাও। (নিদ্রা)
“”””
আমি ড্রেসটা নিলাম। নিদ্রা আপু চলে গেল।
-দরজা বন্ধ করে ড্রেস চেঞ্জ করে আয়নার সামনে দাড়ালাম। হলুদ লেহেঙ্গা….. স্টোনের কাজ করা বেশ দারুন দেখতে। ম্যাচ করা হলুদ রেশমি
চুড়ি….. ভারি গহনা ম্যাচিং করা। একটা পার্স। খোঁপায় বাঁধার জন্য গাঁদা বড় বড় ফুলের মালা। সব ম্যাচিং করা একদম। শুভ্র এগুলো কবে কখন কিনল। বেশ চয়েস আছে ওর। এমন সময় কেউ নক করল দরজা খুলে দেখি অর্পিতা। সেই সাজ দিয়েছে। দারুন লাগছে মেয়েটাকে।

– অর্পিতা! আমাকে খোঁপা বেধে দিয়ে এই ফুল গুলো পরে দাও তো!

– ওকে দিদি বলেই কাজ করতে লাগল।(অর্পিতা)
“”””
– অর্পিতা শুভ্র কই?
“””””
– জানিনা দিদি আসার পর থেকেই দেখি নাই।
“”””””
– খোঁপা বেঁধে দিয়ে বলল দিদি তোমাকে সেই লাগছে।(অর্পিতা)
“”””””””
– তোমাকেও সেই লাগছে।
“””””””
– ধুর ””””’আমিতো মেকাপ সুন্দরী আর তুমি ন্যাচারাল।
“””
– তুমি ও।




– তারপর আবার সবাই মিলে কমিনিউটি সেন্টারে চলে গেলাম।
– লোকে লোকারণ্য দেখছি। ২ পক্ষের একসাথে অনুষ্ঠান। এই প্রথম নিজের চোখে দেখলাম। সারা জিবন আলাদা আলাদা দেখে আসছি। সব কিছু পারফেক্ট ভাবে সাজানো গোছানো। রাত ৯ টায় শুরু হয়ে গেল অনুষ্ঠান। মাস্তি….. বর- বউকে হলুদ মাখানো….. নাচ গান সব কিছু। হাইস্প্রিডে গান চলছে…… আর আমার মাথা ব্যাথার পরিমান বেড়েই যাচ্ছে। উফ্ কি অসহ্য ব্যাথা।




– পরীকে এক জায়গায় বসে থাকতে দেখে কৌশিক এগিয়ে এসে বলল পরী! তোমার কি শরীর খারাপ?
“”””””””
– না না আমি ঠিক আছি।
“”””””
-বেশি খারাপ লাগলে বল তোমাকে কষ্ট করে এখানে থাকতে হবে না।(কৌশিক)
“”””
– আচ্ছা……




– কৌশিক নিদ্রাকে গিয়ে বলল পরীর মনে হয় এগুলোতে অভ্যস্ত না ওকে একটু টাইম দিও””” বলেই চলে গেল কৌশিক।



– নিদ্রা এসে বলল এই পরী এখানে বসে আছো কেন চল আমার সাথে…..
“”””””
– কই যাবো আপু?
“””””””
– আমার হাত ধরে স্টেজে টেনে নিয়ে গেল। সবার সাথে কয়েকটা পিক উঠাতে বলল।
“”””
– কি আর করা দাড়িয়ে গেলাম। নিদ্রা শুভ্রকে স্টেজে আসতে বলল…….. এই প্রথম আমি আর শুভ্র এক সাথে পিক উঠালাম সবার সামনে পাশাপাশি দাড়িয়ে। শুভ্র একদম আমার কাছে এসে দাড়িয়ে গেল।


– কি মেডাম,,,,,,,,পরিবেশ টা কেমন লাগছে? অন্য দিকে তাকিয়ে….(শুভ্র)
“””
শুভ্রটাকে দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে গেল….. দারুন লাগছে। মন চাইছে বার বার প্রেমে পড়তে….
পরী! ওতো শুধু তোর তাহলে এত্ত অধর্য্য কেন মনে মনে কথাটি বলে আবার ওর দিকে তাকালাম। নাহ্ সেতো আমার দিকে ফিরেও তাকায়না। মনে হয় আমাকে চিনেই না। ধুর ভাল লাগে?




– অর্পিতা এসে আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে বলল চল একজায়গায়।
“”””
– কই যাবো?
“””””””‘””
– আরে চলনা বলেই আমাকে টেনে বাহিরে আনল।

“””একটা ফুচকার দোকান যেখানে ইচ্ছা মত সবাই ফুচকা খাচ্ছে………

– দিদি আমরাও খাবো চল।(অর্পিতা)

– অর্পিতা আমার ফুচকা ভাল লাগেনা খেতে,,,,, চটপটি হলে খাইতাম……. তাও সুস্বাদ হলে। তাছাড়া তোমার দাদা যদি আমাদের দেখে এত্ত ছেলে মেয়েদের ভীড়ে তাহলে
একটা থাপ্পড় ও মাটিতে পড়বেনা সব গালে পড়বে হুম
তাই চলো এখান থেকে।
“””””””
– ধ্যাত কৌশিকদা বা শুভ্রদা কেউ নেই সবাই কাজে ব্যাস্ত আজতো আমরা শুধু ইনজয় করব বলেই ও ফুচকার অর্ডার দিল। পরী দিদি এই প্রথম তোমাকে দেখলাম যে ফুচকা খায় না……..



– আমি দাড়িয়ে আছি আর অর্পিতা তৃপ্তি সহকারে ফুচকা মুখে পুরছে।
“””
– কোথায় থেকে কৌশিকদা এসে বলল অর্পিতা এখানে কি করছিস?
“””
– অর্পিতা আর আমি তো ভয়ে শেষ। বকা দেয় নাকি আল্লাহ্ জানে।
“””””
– দাদা একটু খেয়েই চলে যাচ্ছি…….(অর্পিতা)
“””””
– জলদি যা শুভ্র দেখলে তোদের খবর আছে।
“”””
– ওকে…….
“”””””
– শুভ্র দেখলে কি হবে অর্পিতা!
“””””””
– দাদা এভাবে সবার মাঝে খাওয়া পছন্দ করেনা………
“”””
– অহ।


– কিন্তু শুভ্রতো এদের দেখে ফেলছে।
-অর্পিতা না হয় ছোট কিন্তু পরী! ও এখানে কেন আসল বলেই কাছে এল শুভ্র।
“””
– কয়েকটা ছেলে এদের ২ জনের অনেকগুলো পিক তুলছিল। শুভ্র সেখানে গিয়ে ওদের হাত থেকে মোবাইল টা কেড়ে নিয়ে দেখল অর্পিতা আর পরীর অনেক গুলো পিক……. এই তোমরা এই কাজ গুলো কেন কর? মাইর খাওয়ার কি খুব সখ তোমাদের! এই এত্তগুলো মানুষের সামনে? শুভ্র সব পিক ডিলেট করে দিয়ে বলল আসপাশ যেন তোমাদের না দেখি….. এবার ভদ্র ভাবে বললাম পরের বার আর ভদ্রতা থাকবেনা…..



– অর্পিতা! my sister মজা করে ফুচকা খাচ্ছিস?
“””””””
– অর্পিতার খাওয়া যেন বন্ধ হয়ে গেল……. ও ভয়ে শেষ।
“””””
– আমি বললাম ফুচকায় তো খাচ্ছে তো কি হইছে?
“””
– কিছু না…. মামা ফুচকা দেন ২ প্লেট একদম কড়া স্পাইসি মানে খুব ঝাল।
“””
– অর্পিতা যা বোঝার বুঝে গেল…… ভয়ে চোখমুখ শুকিয়ে গেল আজ কি হতে চলেছে।
“””””
– নাও ২ জনেই শুরু করো….. (শুভ্র)
“”””
– কেন! আমাদের খাওয়া শেষ… তুমি অর্ডার করছো তুমি খাবে…..
“”””



– এই তোরা ২ জনে বের হয়ে কেন আসছিস রাস্তায়?
-অনুষ্ঠানের আর কি কেউ নিলজ্জের মত এসেছে এখানে! ছেলেদের দেখতে আসছিস….. আজ তোদের ২ জনের জন্মের মত ফুচকা খাওয়ার স্বাধ মিটাচ্ছি বলেই জোড়ে একটা ধমক দিল।
সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে হাসছে আর আমরা ২ জনে শুভ্রর ধমকে ফুচকা গিলছি।




– আমার ঝাল খাওয়া কোন ব্যাপার না কিন্তু এটা মনে হয় বিন্দু ঝাল। অত্যন্ত তিখা ঝাল। অর্পিতা তো শেষ…. চোখ নাক দিয়ে অঝড়ে পানি পড়ছে……


-দাদা আর কোন দিন হবে না এবারেরর মত ছেড়ে দাও।(অর্পিতা)

– অর্পিতার মাফ হলেও আমার আর মাফ হয়নি কারন আমি মুখে মুখে তর্ক করেছি এর জন্য।


– আমিও রাগের চোটে খাচ্ছি কোন টু শব্দ করছিনা। জাষ্ট চোখ আর নাকদিয়ে পানি পড়েই যাচ্ছে। শেষে শুভ্রই ভয় পেয়ে গেছে আমার কান্ড দেখে। টাকা মিটিয়ে আমার হাত ধরে টেনে ভিতরে আনল। আর যেন বাহিরে যেতে না দেখি বলেই শুভ্র চলে গেল।




– পরী দিদি তোমার কষ্ট হচ্ছে বলেই অর্পিতা কাঁদতে লাগল…….


– এই বোঁকা মেয়ে,,,,,,, আমি ঠিক আছি…… বলে দুম করে চুপ হয়ে গেলাম….. কারন ভিতরে যা হচ্ছে সেটা আমিই জানি। জিহ্বা আর পেট ২ টাই জ্বলে যাচ্ছে।



– একটু দুর থেকে শুভ্র শুধু আমার দিকে তাকিয়ে বলল ভাঙ্গবে তবু মচকাবেনা বলেই চলে গেল।


– অর্পিতা গিয়ে টপাটপ মিষ্টি মুখে পুরছে আর আমি পানি খাচ্ছি…….. কারন আমি মিষ্টি একদমই খেতে পারিনা।




– লাষ্টে আমি আর সহ্য না করতে পেরে গিয়ে কৌশিকদা কে বললাম আমার শরীর খারাপ করছে……



– কৌশিক দা সব ব্যবস্হা করে দিল।


– আমি নিদ্রা আপুদের বাসায় এসে একটা রুমের ভিতর ঢুকে সুয়ে পড়লাম। কারন ঝালে আমার পেট ব্যাথা করছে প্রচন্ড…… শেষে কাঁদতে লাগলাম।


– কিছুক্ষন পর শুভ্র রুমে ঢুকেই বলল কি কেমন লাগছে! বরের মুখে মুখে তর্ক করবা না,,,,,,,,সবার সামনে!


– শুভ্রকে দেখে আমি লজ্জায় চুপ…….. কই আমার তো কিছু হয়নি….. আমি বেশ আছি বলেই পাশ ফিরে কাঁদতে লাগলাম নিশব্দে।



– শুভ্র চলে গেল……. আমারও মনে যত্ত গালি বকা ছিল সব একসাথে ঝাড়তে লাগলাম। বজ্জাত, হুনমান, আমড়া কাঠের ঢেকি, পঁচা আলু, কুমড়া, বলে নানান গালি…..
আবার আমার পিছে পিছে আসছে হুনমানটা।




– শুভ্র এসে দরজা লাগিয়ে দিয়ে বলল পরী আমাকে গালি দিচ্ছো?


– আবার আমি চুপ……. ভাবছিলাম চলে গেছ বলে একটু জোড়েই কথা গুলো বলছিলাম। যাহ্ সব শুনে ফেলেছে।


– খুব কষ্ট হচ্ছে পরী?(শুভ্র)


– এবার আমার সহ্যর বাহিরে,,,,,,,,,,,, ,আমি ফুফিয়ে কাঁদতে লাগলাম।


– শুভ্র এসে বলল পরী! তোমার জ্বীভ বের করতো?

– আমি কান্না করতে করতে বললাম কেন? আরও ঝাল লাগাতে এসেছো বলেই জ্বীব বের করলাম….এ্যা
“”””
– ঝাল লাগাতে না সোনা,,,,,,,, ঝাল খেতে আসছি বলেই পরীর জ্বীভ মুখে নিয়ে নিয়ে একটা চোষক♥মারল শুভ্র। পরীর চোখের পানি শুভ্রের গাল দিয়ে বেয়ে বেয়ে পড়ছে।


” ( স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা মধুর এবং পবিত্র….. তাই সব মেয়েরা ভালবাসা গুলো স্বামীর জন্যই তুলে রাখুন। সে ভালবাসেনা বলে আমি চুপ করে কেন থাকব জোড় করে তাকে আমিই ভালবাসা দিব। এমনি সব ঠিক হয়ে যাবে♥)


– পরী চট করে নিজেকে সামলিয়ে বলল ঝাল কমাতে আসছো না উত্তেজনা বাড়াতে আসছো বলেই ফুফাতে লাগল।


– শুভ্র কিছুক্ষন চুপ করে থেকে আমার কাছে এসে লেহেঙ্গা টা একটু নাভীর নিচে নামিয়ে দিয়ে পেটে আইস প্যাক দিল। ও পুরো পেটে আইসপ্যাক ম্যাসাজ করে দিচ্ছে আর আমি চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছি। বেশ আরাম লাগছে।


– শুভ্র বলল জানো পরী!,,,, যদি তোমার খুব কষ্ট হয় তাহলে প্রিয় কোন কাজে মত্ত থাকবে তাহলে ঐ সময়টা তুমি আর কষ্টর কোন কিছুই অনুভব করবে না……..


– শুভ্র পরীর দিকে তাকিয়ে দেখে ও ঘুমিয়ে পড়েছে…..
– শুভ্র পরীর পেটে প্রায় দেড় ঘন্টা আইস প্যাকটি মাস্যাজ করে দিল আর ও গভীর ঘুমে মগ্ন।


– শুভ্র পরীর ঠোটে একটা কিস♥ করতেই বুঝল প্রচুর ঝাল খাওয়া হয়ে গেছে পরীর,,,,,, কারন শুভ্রর ঠোটেও ঝাল অনুভব করছিল।



– শুভ্র পরীকে জড়িয়ে সুয়ে পড়ল…………
– সকাল ৮ টার দিকে আমার ঘুম ভাঙ্গল। দেখি আমি শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাইছিলাম এতক্ষন।


– খুব ভাল লাগছিল। এরকম সকালটা যদি থেমেই থাকত খুব ভাল হত। আমি ওকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই সুয়ে রইলাম। যেহেতু বাসায় কেউ নাই তাই নো প্রবলেম।




– আরও ঘন্টা খানেক পর শুভ্রের ঘুম ভাঙ্গল। good morning বউ♥
“””
– আমি ওর বুকের মধ্য গিয়ে বললাম good morning
সোয়ামী♥
“””
– এই তুমি এই ভাষা ছাড়বা?
“”””
– নাহ্ আমার ভালো লাগে……
“””””
– কিন্তু আমার বিশ্রী লাগে।(শুভ্র)
“”””””
– ওকে আর বলবনা।
“”””””
– এমন সময় বাবার কল আসল।
– শুভ্র তুই কই?
“”””
– কিছু দরকার আছে বাবা!,,,,,,,, পরীকে বুকে জড়িয়ে নিয়েই।
“”””””
– পরী নিদ্রাদের বাসায় আছে,,,,,,,,, যেখানেই থাক আসার সময় বাসায় গিয়ে নিয়ে আসিস পরীকে।
“”””””””
– ওকে বাবা,,,,,, কল কেটে দিয়ে শুভ্র বলল আমিতো আমার কলিজার কাছেই আছি বলেই আমার কপালে একটা কিস♥ করে।
– চল রেডী হই…….. জলদি যেতে বলছে।
“”””””

– নাহ্ আমি যাবোনা বলেই ওকে জড়িয়ে ধরলাম।
“””
– পরী জেদ করনা…… সব সময় ফিলিংস দেখাতে নেই।(শুভ্র)
“”””
– হুম আর তুমি সেদিন জ্বরের ঘোরে ফিলিংস দেখাইছো তার বেলায়!
“”””
– উমহ্ তার বেলায় কিছু না বলেই আমাকে কোলে নিয়ে ওয়াস রুমের ভিতর নিয়ে গিয়ে সাওয়ারের নিচে দাড় করিয়ে দিল। ১৫ মিনিট সময় দিচ্ছি….. কুইক বলেই চলে গেল।


– আমি রাগে কয়েকটা গালি দিলাম……শুভ্রকে।
“”””
– পরী,,,! গালি দিয়ে কোন লাভ নাই জলদি করো…….
“””””
– কি আর করা সব কাজ কমপ্লিট করে বের হলাম।
“”””
– পরী!,,, সময়ের মূল্য দিতে হয় ৮ মিনিট লেট…..
“”””””””
– আমি কিছু না বলে গাল ফুলিয়ে ওর সামনে এসে দাড়ালাম।
“”””””
– ও বলল দাড়িয়ে কোন লাভ নেই ওখানে ড্রেস আছে জলদি পড়ে নাও বলেই ওয়াস রুমে চলে গেল শুভ্র।
“””””””””
– এরে নিয়ে আমি কি করি আল্লাহ্ বলেই ড্রেসের প্যাকেটটি খুলে দেখলাম ব্লাক কালার একটা লেহেঙ্গা প্লাস একটা শাড়ী। বিয়েতে কখনও ব্লাক কালার জিনিস পরে?



– ড্রেস গুলো হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছি…. কারন কোনটা পড়ব চুজ করতে পারছিনা।
“””””
– শুভ্র বের হয়ে বলল এখনও রেডী হওনি পরী?
“””””
– ড্রেস গুলো ২ হাতে দেখিয়ে বললাম কোনটা পড়ব?
“”””
– তোমার যেটা ইচ্ছা…..
“””””
– না তোমার ইচ্ছা বল জলদি।
“””””””
– ওকে কাল যেহেতু লেহেঙ্গা পড়েছে তাই আজ শাড়ী পড়।
“”””””
– আমি শাড়ী পড়তে পারিনা তো?
“””””
– ওকে আমি দেখছি…. বাদ বাকি সব পরে নাও আমি আসছি বলেই চলে গেল।
“””””
– আমি শাড়ী আর ব্লাউজ পরে দাড়িয়ে আছি।



– শুভ্র এসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল এভাবে কেউ থাকে? মাথাতো এমনি গরম হয়ে যাবে…….
“”””””
– যাক…. আমিকি গরম করতে নিষেধ করেছি……
“””””””‘

– শুভ্র শব্দ করে হেঁসে বলল তুমি যে কি চাও সেটা আমি ভাল করেই বুঝি পরী…..!
টেনশন নিওনা এই সময় গুলোও একদিন আমাদের হাতে এসে ধরা পড়বে। তখন দেখব কত্ত আমাকে সহ্য করতে পার বলেই শাড়ী পড়াতে লাগল।



– শুভ্র তুমি শাড়ী পড়াতে পারো?
“””
– বউ অকর্মার ঢেঁকি হলে বর কে সব কাজই শিখতে হয় বলে শাড়ী পড়িয়ে দিল। যাও বাঁকি কাজ গুলো জলদি কমপ্লিট কর।


– ওকে বলেই আয়নার সামনে দাড়াতেই আমি অবাক শুভ্র দারুন শাড়ী পড়িয়ে দিছে।


– আমি শুভ্র,,,,,,,,, বলে পিছন দিকে তাকাতেই ও বলল,,,,,,,,, অবাক হওয়ার কিছু নেই আমি জানি আমার বউ শাড়ী পড়তে জানেনা তাই নেট দেখে শিখে নিছি।


– আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে জুয়েলারি গুলো পড়তে লাগলাম। মেকাপ বক্সে হাত দিতেই…..


– পরী নো মেকাপ। আমি একদম মেকাপ পছন্দ করিনা। তাই কোন কিছু ব্যবহার করবা না বুঝেছো?

– ওকে।




– আমি সব কাজ কমপ্লিট করে পিছনে ফিরে দেখি শুভ্র ব্লাক সেরওয়ানী যার উপর গোল্ডেন কাজ করা আর ধুতি পাজামা যার গোল্ডেন প্যারেরর নকশা রয়েছে। জাষ্ট ওয়াও লাগছে।


– আমি বললাম বেশ লাগছে তোমাকে শুভ্র।
“”””
– শুভ্র শুধু একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলল আর আমার বউকে পেঁচীর মত লাগছে….. যাকে বলে ব্লাক পেঁচী,,,,,,,, পরী,,,,,,, তুমি আবার আমার ঘাড়ে কামড় বসিয়ে রক্ত চুষে খেয়না……কেমন!


– আমি চুপ করে গেলাম। সবাই আমার চেহারার কত্ত প্রসংসা করে কিন্তু শুভ্রকে কোন দিন করতে দেখলাম না। অদ্ভুত লাগে বিষয়টা।


– পেঁচী টা তো আমারই,,,,,,,,, বলে আমাকে নিয়ে ডাইনিং রুমে এসে বলল নাস্তা করে নাও।


– তুমি?


– টাইম নাই…..পরী! তুমি জলদি খেয়ে নাও।।

– আমি একটা সেদ্ধ ডিম নিয়ে ওর মুখে পুরে দিয়ে আমিও নিজে একটা খেলাম দেন ২ জনেই জুস খেয়ে বাসা থেকে বের হলাম।
-শুভ্র কাজের লোককে চাবি দিয়ে বের হয়ে গাড়িতে উঠে গাড়ী স্টার্ট দিল।



-১৫ মিনিটের মধ্য পৌছে গেলাম। তখন দুপুর ১২ টা বেজে গেছে।
– শুভ্র আমাকে বলল মার পাশে পাশে থাকবা। কোথাও যেতে যেন না দেখি বলেই চলে গেল অন্য দিকে।

– আমিও ওর কথা মত মার কাছে গেলাম।
– মা আমার দিকে তাকিয়ে বলল পরী লাল বেনারসি পড়তা?
– আমি চুপ করে আছি।
– আমার চুপ করা দেখে বলল সমস্যা নাই এটাতেও তোমায় খুব ভাল লাগছে।



– আমি মার কাছে কাছেই আছি।

-মা বলল যাও ওদিকে সবাই মজা করছে তুমিও কর!

– না ঠিক আছে আমার এখানেই ভাল লাগছে।

– অনিতাও বেশ খুশি পরী ওর সাথে সব সময় আছে বলে।

– অনিতার সাথে পরীকে সবসময় দেখে একজন বলল অনিতা মেয়েটা কে?

– মা চট করে বলে দিল শুভ্রর বউ।

– আমি মার দিকে মা আমার দিকে তাকালাম।
– মা চোখ নামিয়ে নিল। হয়ত মার মুখ ফসকে কথা টা বের হয়ে যাবে সেটা মা নিজেও ভাবেনি।

– শুভ্র কবে বিয়ে করল বলেই আমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,এই মেয়ে তোমার সিঁথিতে সিদুর নেই কেন?

– আজ কালকার মেয়ে তাই সিঁদুর দেয়না কাকি মা….. আমি বা শুভ্র কেউ কিছুই বলিনা। যে যার মত থাকুক।(অনিতা)


– সুন্দরী বউমা পাইছো তাই যা ইচ্ছা তাই করলেও কিছু বলনা দেখছি। স্বামীর চিহ্ন ধারন করবেনা তাই বলে! বলেই উনি চলে গেলেন।


-আমি সেদিকে পাত্তা না দিয়ে দিদুনের কাছে গিয়ে বসে বললাম কিগো বিমলা সুন্দরী তোমার কর্তা কই?

– এই ছুড়ি মুখে লাগাম দে…. কি বলছিস। এখানেও কি আমার মান সম্মান খাবি!

– মানসম্মান কি আর খাওয়ার জিনিস গো….. তাহলে তো তোমার সৌন্দর্যতা টাই খেয়ে ফেলতাম গো……
– এই বয়সে এত্ত সুন্দর না জানি ইয়াং বয়সে কত সুন্দর ছিলা বলেই মুচকি হাসি দিলাম।


– এবার দিদুন কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বলল হুম আমি আগে অনেক সুন্দর ছিলাম ঠিক তোর মত।

– আমার মত কি! বল আমার থেকেও সুন্দর। অনেক গল্প করলাম আজ দিদুনের সাথে। মনে হচ্ছে সব স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে শুভ্রর কথায় তাহলে ঠিক সময় একদিন ঠিকি আমাদের হাতে ধরা দিবে……..





– বিয়ে শেষ হতে হতে রাত ৮ টা বেজে গেল। আমি বুঝছি না কয়েক দিন থেকে আমার শরীর কেমন জানি করছে। দুর্বল হয়ে পড়ছি।

– শুভ্র এসে অনিতাকে বলল মা কাল আমার অফিস আছে আমি বাসায় যাব। তোমরা ধীরে সুস্থে আসো। আর পরীকে নিয়ে গেলাম ওর শরীর খুব অসুস্হ……


– অনিতা কি জানি ভেবে বলল দ্বারা পলাকেও সাথে নিয়ে যা।

– উনি যেয়ে কি করবে মা?(প্রচন্ড রেগে)

– যা বলছি তাই কর বলেই পলাকে ডেকে শুভ্রদের সাথে পাঠিয়ে দিল।


– শুভ্র তো রাগে গজ গজ করতে গাড়িতে উঠল। এরা পাইছে টা কি বউয়ের সাথে একটু সময় কাটাবো তাও সাথে সিসি ক্যামেরা পাঠিয়ে দিচ্ছে যত্তসব।




– পরী আর পলা পিছনে বসল আর শুভ্র ড্রাইভ করছে। শুভ্রের তো মনে হচ্ছে এই মহিলাকে চান্দের দেশে রেখে আসে।

– রাত ১২ টার পর বাসায় আসল ওরা। এর মধ্য পরী ঘুমিয়ে পড়েছে।

– শুভ্র গাড়ী থেকে নেমে এসে দেখে পরী ঘুমিয়ে পড়েছে।
– শুভ্র পরীকে কোলে নিতেই পলা বলল শুভ্র তুমি দিন দিন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছো কিন্তু! আমি পরীকে ডেকে দিচ্ছি।

– এবার শুভ্র চটে গেল একদম চোখ গরম করে পলার দিকে তাকাতেই পলা চুপ।




– শুভ্র পরীকে নিয়ে সোজা ওর রুমে ঢুকতেই পলা দৌড়ে এসে বলল শুভ্র পরীকে তোমার রুমে কেন ঢুকাচ্ছো!

– শুভ্র কোন কথা না বলে পরীকে সুয়ে দিয়ে বাহিরে এসে বলল আপনার সমস্যা টা কি হুম। আমার বউ আমি যেখানে খুশি যেভাবে রাখি আপনার কি তাতে।


– শুভ্র!,,,,,,,, পরীকে ওর রুমে দিয়ে আসো বলছি। তাছাড়া বউদিকে কিন্তু কল দিব এখুনি। দেখ বউদি তখন তোমার কি হাল করে।


– এবার শুভ্রের বাধ ভেঙ্গে গেল ধর্য্যর। পলা আন্টি যদি আজ এই কথা গুলো তুমি কাউকে বলছো তাহলে তোমাকে আমি খুন করব বুঝেছে?


– এবার পলা কিছুটা ভয় পেয়ে বলল মায়ের সামনে মিউ মিউ কর আর আমাকে সিংহের হুংকার শুনাচ্ছো?

– হুংকার শুনাচ্ছিনা,,,,,,,, করে দেখাব বুঝলেন! ভাল চানতো কোন কথা নয় বলেই পলার মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিল শুভ্র।


– পলা ও ভয়ে আর কোন কথা না বলে রুমে চলে আসে ওর।



– শুভ্র রুমে এসে বলল এই মহিলা আমাকে পাগল করে ছাড়বে।

– শুভ্রের চিৎকার শুনে আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়। কি হয়েছে শুভ্র?

– এবার শুভ্র কিছুটা শান্ত হয়ে বলল কিছু না। স্যরি তোমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে দিলাম।

– সমস্যা নাই বলেই ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে এসে আমার রুমে গেলাম।

– সব কিছু চেঞ্জ করে আবার শুভ্রের রুমে এসে দেখি ও ওয়াসরুমে।

– আমি সোজা গিয়ে খাটে সুয়ে পড়লাম কম্বল মুড়ী দিয়ে।

– কিছুক্ষন পর শুভ্র বের হয়ে এসে আমাকে দেখে বলল শরীর কি খুব খারাপ লাগছে পরী?

– না জার্নিতে জাষ্ট একটু ক্লান্ত লাগছে।




– শুভ্র আর কিছু না বলে চেঞ্জ করে এসে বলল কিছু খাবা পরী! খাবার নিয়ে আসব?

– না আসার সময় তো খেয়ে আসলাম পেট ভরাই আছে বলে চোখ বন্ধ করলাম।

– শুভ্র লাইট অফ করে দিয়ে আমার কাছে এসে শুয়ে পড়ল।

– শুভ্র আমাকে জড়িয়ে ধরতেই কেমন যেন শিহরন হল আমার শরীরে।

– আমি শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কয়েটা শব্দ করে কিস করলাম ওর বুকে।

– পরী নো দুষ্টমি…… তোমার শরীর খারাপ লক্ষী মেয়ের মত ঘুমিয়ে পড়।

– না ঘুমাব না বলেই আবার কিস করলাম।

– শুভ্র লাইট জ্বালিয়েই চট করে আমার বুকের উপর উঠে বলল পরী তোমার সমস্যা কি বলতো! কাল আমার অফিস আছে আমাকে ঘুমাতে দিবা? আমার ভাল লাগছেনা এসব…….. কাল থেকে একই রকম ব্যবহার করছো কেন?



– আমি শুভ্রর কথা শুনে ওকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে পাশ ফিরে শুইলাম।

– শুভ্র যা ধারনা করছে সেটা যদি হয় তাহলে পরীর শরীর খুব খারাপ। এখন যদি ওর কাছে যায় তাহলে বেশ সমস্যা হবে। তাই নো রিক্স…….

– আমি পাশ ফিরে কাঁদছি……. ওর কাছে পারমেন্টলি না থাকতেই এরকম ব্যবহার?

– পরী কান্না বন্ধ করবা! আমাকে ঘুমাতে দাও।

– এই কথা শুনে আমি চট করে উঠে পড়লাম। থাকবনা এখানে আর। কার জন্য থাকব! সেই আমার সাথে এরনের ব্যবহার করছে কি করে থাকি এখানে?


শুভ্রও সাথে সাথে আমাকে টান দিয়ে ওর বুকের মধ্য জড়িয়ে নিয়ে বলল এত্ত রাগ,,,,,,,,,,! যে আমাকে ছেড়েই চলে যাচ্ছো?


– আমি কিছু বললাম না। চুপ করে গাল ফুলে বসে রইলাম।

– কি হলো কথা বলবানা সোনা♥,,,,,,,!

– শুভ্র,,,,,!আমরা এরকম আর সময় পাবোনা হয়ত কথাটি বলেই ওর দিকে তাকালাম।


– সেটা পরে দেখা যাবে….. ঘুমাও এখন বলে আমার কপালে কিস♥ করে ও চোখ বন্ধ করল।

– কি আর করা আমিও ওর বুকেই ঘুমিয়ে পড়লাম।



– পলা অনেকক্ষন পর শুভ্রের দরজার সামনে দাড়িয়ে বোঝার চেষ্টা করল শুভ্র পরীর সাথে জোর জবস্তি করছে কিনা?
– কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে পলা চলে গেল আর মনে মনে বলল দাড়াও না বাছা তুমি পলার সাথে লাগতে আসছো…… তোমার জন্ম আমার সামনেই হয়েছে শুভ্র…… বৌদিকে দিয়ে এমন তোমার ব্যবস্হা করব যে বার বার পরীর কাছে আসার ভিমরতি তোমার ছুটিয়ে দিব। আর এই কাজ যদি না করতে পারছি তো আমার নাম পলা না হুম।
চলবে——

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here