অস্তিত্বের খোজে part 18 +19

0
681

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১৮



– পরী জানেই না শুভ্র ওকে নিতে এসেছে। পরী ছেলেটির কাছে গিয়ে একটা হাঁসি দিয়ে বলল মৃদুল!
– yes mam I am mridul……
– অহ…. তোহ কেমন আছো?
– ভাল…… অনেক সুন্দর তুমি পরী। ছবির থেকেও।
-ধন্যবাদ মৃদুল।
– আমরা কোথাও বসি?
– ওকে বলেই ভার্সিটির কাছেই যে পার্ক আছে ওখানে ২ জনেই ঢুকল। শুভ্র ব্যাপার গুলো দেখে রাগে কষ্টে বাসায় চলে আসল।




– অনিতা শুভ্রকে বলল তুই আজ এত জলদি বাসায় এলি যে?
– এমনি বলেই ওর রুমে আসে। পরীকে অন্য ছেলের সাথে দেখে নিজের বুকটা ফেটে যাচ্ছে। আজ ও বাসায় আসুক ওকে সত্যই নিজের জিবন থেকে মুক্ত করে দিব………. ও পাইছেটা কি! ফোন
সাইলেন্ট করে শুয়ে পড়ল। চোখে ছল ছল করছে।




– একটা বেঞ্চিতে পরী বসল…. একটু ফাঁক রেখে মৃদুল ও বসল। তাদের মধ্য অনেক কথা হল। শেষে মৃদুল বলল পরী আমার সাথে যাবে…… বিশ্বাস কর খুব ভালবাসব সাড়া জিবন। কখনও কষ্ট দিবনা বলেই হাটু গেরে বসে প্রপোজ করল মৃদুল।


– আমি মৃদুলের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললাম উঠ এখানে বস। আমরা ধীরে সুস্থে কথা বলি!
– ওকে বলে মৃদুল এসে পাশে বসল।




– আমার বিষয়ে দেখছি সব কিছু জানো। তা এই কাজ করার জন্য মৃদুল তোমাকে কত টাকা দিছে?


– ছেলেটি হচকিয়ে উঠে বলল কি বলছ! আমিই তো মৃদুল।


– Just shut up এক থাপ্পড়ে সব দাঁত ফেলে দিব। এই তুমি আমাকে চিনো?


– পরী এসব কি অসভ্যতামি করছো সবার সামনে……..


– জলদি জলদি স্বীকার করেন মৃদুল কই। আমার হাতে টাইম নাই।


– এভাবে প্রায় ১ ঘন্টা ২ জনের মধ্য তর্ক বিতর্ক হয়।


– শেষে ছেলেটিকে বললাম আপনি এখান থেকে এক্ষুনি যাবেন আর মৃদুলকে বলবেন ও না আসা অবদি আমি এখান থেকে যাবনা…………


– তুমি ভুল করছ পরী আমিই মৃদুল।


– এবার কিন্তু সবার সামনে চড় খাবেন যান এখান থেকে বলেই একটা ধমক দিলাম। ধমক খেয়ে ছেলেটি চলে যায়।


“পরী বসেই আছে। সন্ধা গড়িয়ে রাত হয়ে গেল। সবাই তাককিয়ে আছে ওর দিকে। শেষে ফোন বের করে বার বার কল দিচ্ছে কিন্তু নাম্বার অফ। কয়েকটা মাসেজ দিল এবং কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল।




– অনিতা এসে বলল শুভ্র রাত ৯ টা বাজতে চলেছে এখনও পরী আসেনি ওর কোন বিপদ হলনাতো?
– ও ঠিক আছে চিন্তা করনা এসে যাবে বলে শুভ্র পাশ ফিরে শুইল।



– রাত ১১ টার দিকে আবার অনিতা এসে দেখে শুভ্র ঘুমাচ্ছিল। এই শুভ্র….. শুভ্র……… শুভ্র ওঠ বলছি মেয়েটা বাসায় ফেরেনি আর তুই ঘুমাচ্ছিস। আমি টেনশনে শেষ হচ্ছি আর ও সুখের ঘুম দিচ্ছে।



– শুভ্র ওর মায়ের ঝাকুনিতে জেগে উঠে বলল মা কিছু হয়েছে? এভাবে কেউ কাউকে ডাকে…… মাথা ব্যাথা করবে তো!


– নিকুচি করেছি তোর মাথা বাথ্যার বলে অনিতা শুভ্রের দিকে তাকাল।
– কি হয়েছে বলবাতো! ঘুমটা কেন ভাঙ্গালা।


– শুভ্র পরী এখনও আসেনি বাবা ওর নিশ্চয় কোন বিপদ হয়েছেরে। তোর দাদু বার বার ওর কথা বলছিল
আমি মিথ্যা বলে ওদেন থামিয়ে দিয়েছি। যানা বাবা দেখনা। ফোনও ওর অফ দেখাচ্ছে।


– শুভ্র এবার ধরপর করে উঠে বসে। ঘড়িতে দেখে ১১ পার হয়ে গেছে। মা আগে ডাকবানা বলেই ঐ অবস্থায় শুভ্র ফোনটা নিয়ে বের হয়ে এল বাসা থেকে।



পরীকে কয়েকবার ফোন দিল দেখল সুইচ অফ। বার বার কল দিচ্ছে বন্ধ দেখাচ্ছে।
– শুভ্রর এবার টেনশন শুরু হয়ে গেল। লাষ্ট পার্কে দেখেছিল। ওখানে আছে? না মৃদুলের সাথে চলে গেল। নানান টেনশনে পার্কে এসে গাড়ি ব্রেক করল। ১২ পার হয়ে গেছে। গাড়িতে এসি থাকার পরও গা ঘেমে একাকার শুভ্রের। কতটা টেনশনে এই পর্যন্ত এসেছে ও শুধু জানে।




– পার্কের মধ্য ডুকে দেখে বেঞ্চি তে একজন বসে আছে আর পাশে ৩ জন মানুষ দাড়িয়ে গল্প করছে। গড ওটা যেন পরী হয় বলেই দৌড়ে এসে দেখে হুম এটা পরী।


‘”
– শুভ্রর যেন বুকে যেন পানি এল। একটা স্বস্তিকর শ্বাস ফেলে পরী কাছে এসে সামনে দাড়িয়ে বলল এখনও এখানে বসে থাকবি? আসছিলি তো নাগরের সাথে দেখা করতে কি দেখা হলো? তোর নাগর কই দেখছিনা যে!



– লোকগুলো বলল বাবা তুমি একে চিনো?
– শুভ্র শুধু বলল হুম চিনি।


– এই মেয়েটাকে নিয়ে যাওতো বাবা। আমরা কাজ রেখে ওকে পাহারা দিচ্ছি। সেই কখন থেকে বলছি বাসা কই কিছু বলেনা। শুধু বলছে একজন আসবে। তুমিই কি সেই! আর ঝুপ ঝুপ করে বসে থেকে কাঁদছে এসব দেখা যায় বল? এমনি দিনকাল খারাপ তার উপর সুন্দরী মেয়ে মানুষ একে রেখে ও কোথাও যেতে পারছিনা।




– শুভ্র সব শুনে পরী কে বলল আরও নাটক করা তোর বাকি আছে?
– সবাইকে জ্বালাইতে তো খুব এক্সপার্ট। মা যে বাসায় চিন্তা চিন্তায় অবস্থা খারাপ করে ফেলছে সেদিকে তো তোর ভাবনা। মনে হচ্ছে কষে ২ থাপ্পড় লাগাই। মানুষজন আছে বলে বেঁচে গেলি।




– কে হও ওর তুমি বাবা বলে ওরা শুভ্রের দিকে তাকাল।


– ওর অধম স্বামী। বউ প্রেম করতে আসছে আর আমাকে তাকে নিতে আসতে হল। প্রেমিক আসেনি হয়ত তাই দুঃখে কাঁদছে। আমার কি চেহারা খারাপ না স্ট্যাটাস নেই না আমি ওর অযোগ্য তাও আমাকে দিয়ে তার হয়না। তার পরপুরুষ চাই। নিজের সম্মান যাবে তাই নিতে এলাম।




– লোকগুলো শুভ্রর কথা শুনে অবাক হয়ে গেল। সামনে ছেলেটি একটা থ্রী কোয়াটার প্যান্ট আর মিনি গেন্জী পরে আছে। দেখেই বোঝা যাাচ্ছে ঘুম থেকে উঠে আসছে। এমন একটা হ্যান্ডসাম ছেলেকে রেখে কিনা মেয়েটা পরকিয়া করছে। আচ্ছা বদজ্জাত মেয়েতো!



– কিরে উঠবি? না বসেই থাকবি বলে শুভ্র পরীর হাত ধরতেই পরী হাত জোড়ে ঝিটকানি দিয়ে ফেলে দিল এবং ওভাবে বসে কাঁদতে কাঁদতে বলল আমি যাবোনা। তুমি কেন এসছো……… এখান থেকে যাও। আমি ডিসিশন নিয়ে ফেলেছি আর বাসায় যাব না।



“একে তো চুরি তার উপর সীনা চুরি……..
– শুভ্রকে আর পায় কে লোকগুলোর সামনে ফটাফট কয়েকটা চড় বসিয়ে দিয়ে হাত ধরে হিরহির করে টেনে এনে গাড়িতে বসিয়েই গাড়ী স্টার্ট দিল।



– লোকগুলো বলল ছেলেটা ভাল বলে ওকে নিতে এসেছে অন্য কেউ হলে খুন করতো। মেয়েটাকে আরোও ২ টা চড় দেওয়া উচিত ছিল। আমাদের এমন হলে যে কি করতাম। দিনকাল বড়ই খারাপ হয়ে গেছে……. শেষ জামানায় আর কত কি দেখব আল্লাহ্ ভাল জানে।




– শুভ্র ড্রাইভ করছে আর পরী কেঁদেই চলছে ফিকরে ফিকরে……….
-শুভ্ররও চোখে পানি টলটল করছে। কি নেই ওর মধ্য যে ওকে ছেড়ে অন্য ছেলের চিন্তা করে। এমন সময় পরী শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগে।



“শুভ্রও কেঁদে ফেলে এবং বলে ওঠে মৃদুল কে পাসনি বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিস। তোর মত বেহায়া মেয়ে আমি জিবনে ও আর একটি দেখিনি বলেই গাড়ী ব্রেক করল।




– পরী ওকে জড়িয়েই ধরে আছে। শুভ্র ওকে এক টানে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল আমি ভালর ভাল খারাপের মহা খারাপ। তাই আমাকে চটাস না। রাগে এমন কিছু করে ফেলব যেটা কখনও শুধরানো যাবেনা। একদম ন্যাকামি করবি না আমার সাথে বলে জোড়ে ধমক দিয়ে বলল বাসায় চল তোর ব্যবস্হা করছি। বলিনি আবার মৃদুলের সাথে কথা বললে কি করব……… দেখ কি করি। শুভ্রর রাগে চোখ মুখ লাল করে বলল কথা গুলো। আমার সম্মান নিয়ে টানা হিচড়া করা! আমাকে তোর মানুষ মনে হয়না……. বেহায়ার মত তোর পিছে শুধু ঘোড়ব? তুই যা চেয়েছিস আজ অবদি সব পুরুন করেছি আর তার ফলাফল এটা।




– এবার পরী শুভ্রকে আরও জোরে জড়িয়ে ধরে বুকে কয়েকটা কিস করে♥♥♥♥

-শুভ্র ছাড়ানোর চেষ্টা করে কিন্তু পরী ছাড়ার নাম নেই। তাই বাধ্য হয়ে চুপ করে বসে রইল। দুর্বলতা এমন একটা ভাইরাস যেটা রাগ নামক শক্তিশালী সফটওয়ার কেও এক নিমিষেই ভ্যানিস করে দেয়। কিছুক্ষন শুভ্র চুপ করে থেকে বলল ছাড়ো আমার ড্রাইভ করতে প্রবলেম হবে……..



– পরী চোখ মুছে চুপ করে রইল। শুভ্র আবার ড্রাইভ করতে লাগল।
– বাসায় পৌছাতে ১ টা পার হয়ে গেল। ওরা বাসায় আসতেই অনিতা চাপা গলায় বলল কিরে কই ছিলি। পরী কোন কথা না বলে উপরে এসে শুভ্রর রুমে ঢুকে কি যেন রেখে ওর রুমে চলে যায়।



– অনিতা শুভ্রকে বলল ওকে কি মেরেছিস?
– মারার কাজ করলে কি না মেরে আদর করব!
– কাল কথা হবে মা তুমি ঘুমিয়ে পড় বলেই শুভ্র উপরে উঠে ওর রুমে চলে গেল। অনিতা কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে নিজের রুমে গেল।




– শুভ্র আজ প্রচন্ড ক্ষেপে গেছে। গাড়ির চাবি টেবিলে রাখতেই একটা গিফট্ পেপারে মোড়ানো একটা কিছু দেখতে পেল। ওটা হাতে নিয়ে বলল এটা কে দিল আবার। পেপার খুলে দেখে একটি ডায়েরী।
– উপরে লেখা প্লিজ আমাকে পড়। এটাতো পরীর লেখা। ও এটা কখন রেখে দিল বলেই ডায়েরী নিয়ে পড়তে বসল।



০০/০০/০০০০/ তারিখ সময় বছর সব উল্লেখ করা…….

– আজ নীলস্বপ্ন নামে একটা আইডি থেকে রিকুয়েস্ট এসেছে। পুরোটা দেখলাম। আমার কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে এটা শুভ্র।


“০০/০০/০০০০
– ছেলেটির নাম নাকি মৃদুল। ব্যাটা মিথ্যা কথা বলছে। এটা আমার মনে হচ্ছে এটা শুভ্র হবে।



০০/০০/০০০০
সন্দেহটা দুর হল হুম এটা শুভ্র। আজ আমার সাথে ভয়েস চেন্জ করে কথা বলেছে। ভেবেছে আমি বুঝতে পারবনা। কিন্তু ও জানেনা পরীর কাছে ধরা পড়ে গেছে। দেখি কত দুর জল গড়ায়। ১ হাজারের বেশি আমায় কিস করছে ফোনে। পাগল করে দিবে।



০০/০০/০০০০
আমি মনে হয় মৃদুলের অফ স্যরি মৃদুল রুপী শুভ্রর প্রেমে পরে গেছি। খুব মিস করছি ওকে। ইনশাল্লাহ ওকে আমার করে ছাড়বই।


– ০০/০০/০০০০
আজ শুভ্রকে বার বার বলতে ইচ্ছা করছে শুভ্র আমার হাত ধরে হাটবা? তুমি যেখানেই নিয়ে যাবা সেখানেই যাবো। বিস্বাস কর একবারও জিঙ্গাসা করবো না তুমি কোথায় নিয়ে যাচ্ছো।


০০/০০/০০০০
আজ আমাকে নিয়ে নিতুকে দেখতে গিয়েছিল। আমার বুঝি কষ্ট হয় না।


০০/০০/০০০০
অর্পিতার জন্য সেদিন নিদ্রা আপুর হাতে চড় খেয়েছিলাম। আমি যখন কাঁদতে কাঁদতে মৃদুল মানে শুভ্রকে বললাম তখন ও গম্ভীর হয়ে যায়।


০০/০০/০০০০
নিতু আর শুভ্রের আশীর্বাদ আজ। কলিজাটা ফেটে যাচ্ছে। আল্লাহ্ সাহার্য্য কর আমায় ধর্য্য ধরার জন্য।


০০/০০/০০০০
শুভ্র নেশা করে আমার সাথে কথা বলছে। জানি একটু পর ছাদে আসবে। আমার সাথে ঝগড়াও করবে। হুম করেছে। আমায় খুব জ্বালাইছে।


০০/০০/০০০০
আজ আমার আর শুভ্রর বিয়ে হল। এটা আমার জন্য আল্লাহর দেওয়া সব থেকে বড় নেয়ামত। অবশেষে আমি আমার অস্তিত্বের খোজ পেয়েই গেলাম।


০০/০০/০০০০
শুভ্র আমার সাথে কেন অভিনয় করছে। ওকে আমিও অভিনয় চালিয়ে যেতে পারি। শুভ্র আমিও তোমার বউ। আমাকেও পার্টিসিপেট করতে হবে না? তাইতো এমন মৃদুল হেসেছে……..একই চোখেতে সে ধরা পড়েছে।♥♥♥♥


০০/০০/০০০০
শুভ্রকে জ্বালাইতে খুব ভাল লাগে। আমি ওর থেকে এক ধাপ এগিয়ে। কাল শেষ পরীক্ষা দেখি ও মৃদুল সেজে কাকে আমার সামনে দাড় করায়। না ও নিজে আসে। আমিতো শুধু শুভ্রের পরী। আর তো কারো না। মৃদুল নামের কোন অস্তিত্ব নেই শুধু শুভ্রের অস্তিত্ব আছে পরীর বুকে। I Love You শুভ্র♥♥♥♥

এ রকম আরো অনেক লেখা ডায়রী তে। শুভ্র চট করে ফোন হাতে নিয়ে দেখে অসংখ্য বার কল। ১০০ র উপর। যে ছেলেটিকে পাঠানো হয়েছিল তার নাম সবুজ। পরীও অনেকবার কল দিয়েছে।


– sir! mam কিন্তু প্রমিস করেছে আপনি না গেলে উনি আসবে না। এরকম অনেক মাসেজ সবুজ শুভ্রকে দিয়েছে। ফোন সাইলেন্ট করে ঘুমাইছিল শুভ্র।



– পরীর মাসেজ ও এসেছিল। শুভ্র সন্ধা হয়ে যাচ্ছে আমাকে নিতে আসবা না!
আমার ভয় করছে। সবাই কেমন জানি করে তাকিয়ে আছে। ফোন ধরছোনা কেন। তুমি না আসলে কিন্তু আমি কিছুতেই বাসায় যাব না।
এরকম ১০/১২ টা মাসেজ।




– শুভ্রর মুখে এবার তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠল। ধরা পরে গেছে যে সে অনেক আগেই। অযথা রাগ করে ওরে শাস্তি দিয়ে এসেছে কিন্তু ও একবারও প্রতিবাদ করেনি কিংবা বুঝতেও দেয়নি ও সব জেনে গেছে।



– শুভ্র আর দেরি না করে পরীর রুমে গিয়ে দেখে দরজা বন্ধ। এই রাতে ডাকতেও সাহস পাচ্ছেনা শুভ্র। যদি কেউ জেগে যায়। তারপরও কয়েক বার নক করে। না খুলছেনা। ফোন অফ। শেষে শুভ্র একটু ধীরে বলল পরী দরজা খোল বলছি…….. না হলে আমি বাসা থেকে বের হয়ে যাব কিন্তু এই রাতে। আর তুমি জানো আমি কি করতে পারি।



কথা গুলো বলতে দেরী দরজা খুলতে দেরী হয়নি। তারমানে ও দরজার সামনেই ছিল। কাঁন্না করে চোখমুখ ফুলিয়ে তুলেছে। ফর্সা গাল লাল হয়ে গেছে। শুভ্র কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে রুমে ঢুকে ছিটকি লাগিয়ে দেয়।




– পরী খাটে গিয়ে মাথা নিচু করে চুপ করে বসে আছে।
-পরী…….!
——————!
-কি কথা বলবানা তো!
—————————–?
“”””””””””””””
ওকে না বল বলে শুভ্র বেলকুনিতে এসে দাড়িয়ে যায়।
“”””””””””””
এভাবে প্রায় আধা ঘন্টা সময় কাটিয়ে যায়…….শুভ্র বেলকুনিতে ও ভাবেই দাড়িয়ে আছে।

“””””””””””””””””””””””
এর পর পরী আস্তে আস্তে করে শুভ্রর কাছে গিয়ে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে বলে খুব ভালবাসি♥♥♥♥ শুভ্র তোমায়।



♥♥♥♥
♥♥♥♥
শুভ্র I need you বলেই একটা কিস করে পিঠে।
শুভ্র I want you বলেই হাতটা ঠিক শুভ্রর বুকে উপর রাখল।
শুভ I miss you বলেই ২ হাতই বুকে রাখল।
শুভ্র I Love you বলেই পরী হাতটা ঠিক শুভ্রের বুকের বাম পাশে রেখে একটু উচু হয়ে দাড়িয়ে শুভ্রের কানের পিঠে কিস করল।
♥♥♥♥
♥♥♥♥



– শুভ্রের চোখ দিয়ে পানি পরে যাচ্ছিল। এটা কষ্ট না আনন্দের সেটা বুঝতে বাকি রইলনা শুভ্রের।

Sorry বউ তোমাকে এত্ত miss করার জন্য
তোমাকে নিজের মনে করার জন্য
তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখার জন্য
তোমাকে প্রচুর বিরক্ত করার জন্য
তোমাকে প্রচুর থাপ্পড় মারার জন্য
তোমাকে প্রচুর ভালবাসার জন্য এবং
পরীকে প্রচুর কিস করার জন্য বলেই শুভ্র পিছন ফিরেই পরীকে একটানে বুকের ভিতর নিয়ে আসে। আর একমুহুত্ব বিলম্ব না করে ১ জোড়া ঠোট একে অপরকে আলিঙ্গন করে। শুভ্রকে আর পায় কে পাগলের মত কিস করতে থাকে পরীকে একের পর এক। পরী আটকাতে চাচ্ছে কিন্তু শুভ্রর সাথে পেরে উঠছে না।




– শেষে পরী বলেই উঠল শুভ্র আমার না খুব খুদা লেগেছে। পুরো দিন কিছু খাইনি। শুভ্র ঐ অবস্থায় বলে উঠল আমাকে খাবা! ওকে খাও। তা পরী কোথা থেকে খাওয়া শুরু করবে? হাত, পা না মাথা থেকে হুম হুম হুম…….
– শুভ্র সত্যি আমার খুদা লাগছে ছাড় আমায়।
– এবার শুভ্র থেমে গিয়ে বলল দিলেতো মোড টা নষ্ট করে। এত্ত পেটুক কেন তুমি! কোন সময় কি কথা বলতে হয় তুমি বুঝনা?




– সত্যি আমার খুদা লাগছে শুভ্র । চলনা খাবার খেয়ে আসি।
– শুভ্র পরীর দিকে তাকিয়ে বলল ওকে তুমি ওয়েট কর আমি আনছি বলেই শুভ্র চলে গেল।
– উফ্ বড্ড বাচা বেঁচে গেছি তানা হলে সব শেষ করে ছাড়ত যে তেতে গেছে ও♥♥♥♥




– শুভ্র ১০ মিনিট পর খাবার গরম করে রুমে নিয়ে আসে।
– শুভ্র!
“”””””””””’
– উমমম….
“”””””””‘”””””
– আমাকে একটু খাইয়ে দিবা?
“”””””””””””””””
– কেন তুমি কি ছোট্ট খুকি যে তোমায় খাইয়ে দিতে হবে?
“””””””””””””””””””
– আমি ঠোট ফুলিয়ে বললাম লাগবে না….
“”””””””””””””””””””’
– পরী! আমাকে একটা কিস করবে?♥♥♥♥
“”””””””””””””””””’
– পাব্বোনা হুমহ্…….
“”””””””””””””””””
– তাহলে তুমি কেমনে আশা কর আমি তোমাকে খাওয়াইয়ে দিব? বলেই শুভ্র খেতে শুরু করল।
“”””””””””””””””””
– বললাম তো লাগবে না……
“””””””””””””””””””””
– উমমমম আমি জানিতো তোমার খাওয়ার দরকার নেই তুমি আমাকে সরানোর জন্য বাহনা করেছিলে।
“””””””””””””””””””””
– আমি টপ করে শুভ্রর গালে কিস করে ওর কাছে গিয়ে বসে পড়লাম। তুমি একা খাচ্ছো….. আমাকেও একটু দাওনা……..
“”””””””””””

– পরী! অন্যর খাবারের দিকে নজর দিতে নেই বলেই আমার মুখের সামনে খাবার তুলে ধরল।
– আমি চট করে মুখে নিয়ে বললাম এটা দাও ওটা নাও আর একটু বেশি ভাত নাও। এভাবে না আর একটু কম নাও বলে জ্বালাতে লাগলাম। শুভ্রতো হয়রান হয়ে গেল আমার কাজে। আর আমি মজা নিচ্ছি। পুরো দিনের রাগ ঝাড়ছি ওর উপর।


– এবার শুভ্র যা করল মুখে প্রকাশ করার না। আমি খাচ্ছিলাম ঐ অবস্থায় এক হাতদিয়ে আমার গাল শক্ত করে ধরে ওর ঠোট দিয়ে আমার ঠোট ধরে আলতো করে কামড় দিয়ে বলল আর জ্বালাবা আমায়……!
– আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম না না আর জ্বালাব না।
– আর একবার যদি বিরক্ত কর তাহলে কিন্তু আজ তোমার খবর আছে কথাটা মাথায় রাখ। যা দিচ্ছি যেভাবে দিচ্ছি খেয়ে নাও আর আমাকেও খেতে দাও। কারন পুরো দিন আমারও খাবার পেটে পড়ে নি।




– আমাদের দিনগুলো এভাবে খুব চমৎকার যাচ্ছিলো। একদিন আমি চুল ছেড়ে দিয়ে সুইমিং পুলের পানিতে পা দিয়ে বসে আছি…….অর্পিতা আর নিদ্রা আপু সাঁতার কাটছিল। আমাকে বার বার পানিতে নামতে বলছে ওরা কিন্তু আমি নামতে চাইনি কারন আমি সাঁতার জানিনা।



– নিদ্রা আপু উঠে গেল একটু পর। এমন সময় শুভ্র এসে কখন যে আমার পাশে দাড়িয়েছে আমি জানিই না।

– কি mam আমার সাথে পানির নিচে ডুব দিবা?

– আমি পিছনে তাকাতে গিয়েও তাকাতে পারছিনা চুলে লাগছে। কারন শুভ্র আমার চুলের উপর পা দিয়ে দাড়িয়ে আছে। অ ও হয়ত বুঝতে পারেনি ব্যাপারটা।

– শুভ্র সরো তুমি আমার চুলের উপর দাড়িয়ে আছো…

শুভ্র কিছু বোঝার আগেই আমি জোড়ে ওর পা সরাতেই ও ঝপ করে পানির মধ্য পরে যায়।

– আমি তো জ্বীভে কামড় দিয়েই দাড়িয়ে যাই। আজ আমার আর রক্ষা নাই……..
চলবে…………

অস্তিত্বের খোজে
নাফিসা মুনতাহা পরী
পর্বঃ ১৯



– আমি দাড়িয়েই দৌড়…… জানি আমার সাথে কি হতে চলছে। শুভ্রও সুইমিং পুল হতে উঠেই পরীর পিছে পিছে দৌড় দিল।
– আমি কোন দিশা না পেয়ে বাগানের দিকে দৌড়াতে লাগলাম কিন্তু বেশিক্ষণ দৌড়াতে পপারলামনা ও এসে আমাকে ধরে ফেলল এবং জাপটে ধরে পুলের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। এই তুমি ওমন করে দৌড়াচ্ছো কেন? আমি কি তোমাকে রেপ করব নাকি হুমম…….
– এই ছাড়….. আমি আর জিবনে এরকম করবনা বলতেই শুভ্র আমাকে নিয়ে পানিতে ঝাঁপ দিল। নাকে মুখে পানি গিয়ে আমারতো বিষম উঠে গেল।




– পলা দুর থেকে এই দৃশ্য দেখে বাসার ভিতর গিয়ে অনিতাকে বলল বৌদি দিন দিন শুভ্র বেয়াদপ হয়ে যাচ্ছে। পরীকে নিয়ে কেন ওভাবে বলেই…….. সব খুলে বলল।
– অনিতা কিছু না বলে বাহিরে চলে আসল।




– অর্পিতা যাতো ২ টা টাওয়াল নিয়ে আয় বলে ওকে সরিয়ে দিল শুভ্র। আমি আর ও সুইমিং পুলে। আমি ওর গলা ধরে আছি। আমি সাঁতার জানিনা তাই ওভাবে জড়িয়েই বললাম আমায় উপরে তুলে দাও না।



– কেন আমাকে ফেলে দেওয়ার সময় মনে ছিল না এর পরিনিতি কি হতে পারে বলেই আমাকে নিয়ে একসাথে ডুব দিল পানির নিচে। আমার ছোট বেলা থেকে পানিতে ভয়। মনে হয় কেউ পা টেনে নিয়ে যাবে যদিও সচ্ছ পানি ছিল তবুও।
– আমি পানির ভিতর ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।
– শুভ্র আবার পরীকে নিয়ে পানির উপরে উঠল ভেসে।
– আমায় ছেড়ে দিন আমার কেমন জানি লাগছে।
– আরে কিছু হবে না বলেই আ…প করে আবার ডুব।
– পানির মধ্যই আমি ছটপটাতে লাগলাম। সাধারনত সুইমিং পুলের পানি হাই হলে গলা অবদি হয় কিন্তু এটাতে আমি থাও পাচ্ছিনা। মনে হয় একটু ডিপ বেশিই।




– শুভ্র আবার পরীকে নিয়ে পানিতে ভেসে ওঠে।
– আমি হাঁপিয়ে উঠলাম। কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম শুভ্র আমায় ছেড়ে দাওনা আমার কষ্ট হচ্ছেতো।
– হোক ছেড়ে দেওয়ার জন্য ধরিনি। এত্ত পানি ভয় পাও কেন বলেই আমাকে নিয়ে মধ্য চলে আসল।
– আমি ওকে জড়িয়েই ধরে বললাম আমার ভয় করছে শুভ্র!
– তোমার ভয় ভাঙ্গানোর জন্যই এই ব্যবস্হা বলে কিস করতে যাবে এমন সময় অনিতা এসে শুভ্র বলে কঠিন গলায় ধমক দেয়।



– আমরা ২ জনেই চমকে উঠি। আমার ওড়না কই গেছে আল্লাহ্ জানে বলেই শুভ্রকে ছেড়ে দেই।
– শুভ্রও আর কিছু বলেনা লজ্জায়…. মা কই থেকে এলো। পিছনে পলাকে দেখে রাগী দৃষ্টিতে শুভ্র পলার দিতে তাকায়। পলাও ভয়ে অনিতার আড়ালে চলে যায়। যত্তসব নাটের গুরু এই মহিলা।




– আমি শুভ্র কে ছেড়ে দিয়ে পাড়ে আসতে গিয়েই ডুবতে শুরু করলাম। নিজেকে ভাসিয়ে রাখতে পারছিনা। পানি খেয়ে একাকার।
– অনিতা চিল্লায় বলল শুভ্র পরীকে ধর ও তো ডুবে যাচ্ছে……
– শুভ্র পরীর দিকে তাকিয়ে দেখে সত্যিই পরী নাকানিচুবানি খাচ্ছে। শুভ্র জলদি পরীকে ধরে পাড়ে এনে উপরে ওঠে। এতক্ষন যে কত পানি খাইছে ঠিক নাই।
– আমি পাড়ে বসে কাঁশি দিতে শুরু করলাম এবং বিষম উঠে গেছে। শুভ্রর সেদিকে খেয়াল নেই আগে ওড়না দিয়ে আমাকে ঢেকে দিল তারপর আমার দিকে তাকালো।




– অনিতা এসে শুভ্রকে অনেক গুলো বকা দেয়। থ্রেডও দেয় পরীর আসপাশ যেন ওকে না দেখে।
পলাতো মহা খুশি। পলা পরীর ভাল চায় কিন্তু ও তো জানেনা এরা ২ জন ২ জনকে এভাবেই চায়।
– পরী তুমি সাতার জানো না? (শুভ্র)
– আমি চুপ করে মাথা নেড়ে না বললাম।
– শুভ্র আর কিছু না বলে বাসার ভিতরে চলে গেল।



– অর্পিতা টাওয়াল এনে বলল এমা পরী দিদি তোমার কি হয়েছে?
– কিছুনা বলে অনিতা পরীকে নিয়ে ভিতরে গেল।
– অনিতা কড়া নির্দেশ দিল পলাকে যখনই দেখবি পরীর আসপাশে শুভ্র গেছে সাথে সাথে আমায় বলবি। লও ঠেলা কিহতে কি হয়ে গেল। পলা দায়িত্ব পেয়েতো মহা খুশি।




– আমি রুমে এসে সাওয়ার নিয়ে ড্রেস চেন্জ করতেই শুভ্রের কল।
– আমি রিসিভ করতেই বলল বেলকুনিতে আস।
– আমার আর ড্রেস চেন্জ করা হলনা। ওভাবেই বেলকুনিতে গেলাম। গিয়ে দেখলাম ও দাড়িয়ে আছে আর ফোন দিয়ে আমার সাথে কথা বলছে।
– পরী তুমি সাঁতার জানোনা আমাকে আগে বলবে তো?
– বলে কি হত?
– কি আর হত তোমাকে মাঝ খানেতে ছেড়ে দিতাম আর তুমি বার বার আমাকে এসে ভয় পেয়ে জড়িয়ে ধরতে। উফ্ কি শান্তি যখন বার বার এসে আমাকে জড়িয়ে ধরছিলে। পাগল করে দিচ্ছিলে। কিন্তু বজ্জাত পলাটা সব শেষ করে দিল।
– ধ্যাত ফাজিল কোথাকার বলেই ওর দিকে তাকালাম। ও আমাকে কয়েকটা ফ্লাইং কিস♥ করে বলল তুমি জানো পরী……..!
“””””””””””
-কি?
-পলা নতুন জব পেয়েছে । যদি আমি তোমার কাছে যাই বা আসপাশে থাকি…. তো সাথে সাথে মাকে জানিয়ে দিবে। তাই সাবধান। আমরা এভাবেই এখানে কথা বলব কেমন?
– আমি একটু অবাক হয়ে বললাম পলা আন্টি?
– হুম।
– ওকে কি আর করা চুরি করে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য প্রেম করতে হবে।
– পরী তোমার পিছনে কে যানি…..
– আমি ভয়ে চট করে পিছনে তাকেতেই টাওয়াল খানিকটা খুলে গেল। আমি ঝট করে বুকে উঠিয়ে শুভ্রর দিকে কঠিন চোখে তাকাতেই ও উচ্চস্বরে হেঁসে উঠল এবং কল কেটে দিয়ে রুমে চলে গেল।
– আমিও ফাজিল বলে চলে আসলাম। এই বাসাটা পুরো বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা। প্রায় দেড় বিঘার উপর জায়গা নিয়ে এই বাসাটি। তাই আশে পাশে অন্য বাসা দেখার সুযোগ নাই। চোখ যেদিকে যায় বাউন্ডারির শেষ সীমানা অবদি সবুজ বাগান।




– আমি রুমে ড্রেস চেন্জ করে বসে ফোন ঘাটছি এমন সময় শুভ্র ফেসবুকে আমাকে নক করল।
– পরী কি করছো?
– ছেলেদের লগে চ্যাট করি।
– শুভ্র সাথে সাথে ভিডিও কল দিল। আমি একটু হেঁসে রিসিভ করে বললাম বিরক্ত করেন কিয়ের লায়।
– এই তুমি আচ্ছা তো এমন একটা হ্যান্ডসাম বর পেয়েও অন্য ছেলেদের নাম মুখে নাও।
– কি আর করতাম সোয়ামি আপনাকে যে কাছে পাইনা তাই এই ব্যবস্হা।
– ও হাত উচিয়ে করে বলে মাইর দিব কিন্তু।
– আমিও সাথে সাথে গালটা এগিয়ে দিয়ে বললাম দাও দাও জলদি……. তোমার মাইর খাইতে আমার না হেব্বি জোস্ লাগে বর মশাই।
– যেদিন দিব সেদিন বুঝবা মারের কত জ্বালা।
– হুম যেটা দিতে পারনা সেটা নিয়ে এত্ত বড়াই করা উচিত না…..
– এই দাড়াও আমি আসতেছি…….
– এই এই ভয় দেখাও কেন? আর বলবনা স্যরি মাফ করে দাও।
– ওকে মনে থাকে যেন। আর ফেসবুকে এত্ত ঢোক কেন? মাকে বেশি টাইম দাও। কাজে দিবে। ফেসবুক ডিএক্টিভ করে দাও।
– ওকে আমার কলিজা বলে কয়েকটা কিস♥ করে কল কেটে দিয়ে নিচে নামলাম।




– আন্টি কি করেন?
– অনিতা পরীর দিকে তাকিয়ে বলল এই তো মা রান্না করছি। কিছু বলবে?
– না আন্টি আমি কি আপনাকে সাহার্য্য করতে পারি?
– না না দরকার নেই।
– ওকে আপনি রান্না করেন আমি দাড়িয়ে থেকে আপনার কাছ থেকে রান্নাগুলো শিখি। আপনি দারুন রান্না করেন করেন।
– ও এখানে কেন! বলেই বিমলা রান্না রুমে এসে রেগে পরীর দিকে তাকাল।
– তোমার বকা খেতে এসেছি দিদুন……… তোমার বকার যা টেষ্ট…. আহ্ কি স্বাদ। সেটার স্বাদ কয়েকদিন ধরে পাইনি তো সেটাই নিতে এসেছি আরকি! নাও শুরু করে দাও।
-বিমলা পরীর কথা শুনে থমথম করে চলে যেতেই পরী বলল দিদুন আমাকে নিয়ে তোমার এত্ত ভয় কেন হুম আমি কি তোমার বর কে নিয়ে ভেগে যাব…………
– বিমলা থেমে বলল ঐ ছুড়ি আমার কর্তার কাছে এবার আসিস তোরে ঝেটিয়ে বিদায় করব।
– ঐ এক কাজ ছাড়া আর তুমি কি পার বলেই জ্বিভে কামড় দিলাম। আল্লাহ্ আমি কি বলে ফেললাম।
– ঐ তুই কি বললি! আর একবার বল।
– স্যরি দিদুন কানে ধরছি বলেই কানে হাত দিয়ে বললাম উঠবস করতে হবে বলে সেটাও করলাম ২ বার।
– পরীর কান্ড দেখে অনিতা তোহ হেঁসেই যাচ্ছে।
– উনি ব্যাপক রেগে গেছেন দেখে ওনার কাছে গিয়ে টুপ করে ওনার গালে একটা কিস করে বললাম আমি ছেলে হলে বিমলা সুন্দরী…………. তোমাকেই বিয়ে করতাম। আহাহা কি ঐ রুপ। ঐ রুপে বার বার মরে যেতে মন চায়। কথাটি বলে জলদি ওখান থেকে চলে এলাম। কখন কি হয় বলা যায়না তো?




– বৌমা এই ছুড়ি এমন কেন?
– ওর কথায় কিছু মনে করেন না মা। বাচ্চা মেয়ে( অনিতা)




– সন্ধার পর ড্রয়িংরুমে চিৎকারের শব্দে আমি রুম থেকে বের হয়ে দেখি নিচে নিতু দাড়িয়ে চিৎকার করছে। নিতুকে দেখে আমার কলিজাতে মোচড় দিয়ে উঠল। ও এখানে কেন?



– আন্টি সেদিন মাথা গরম করে আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি……. আমার ভূল হয়ে গেছে আন্টি। বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েন না প্লিজ। আমি শুভ্রকে খুব ভালবাসি। ওকে ছাড়া থাকতে পারবনা। আমাকে যেভাবে রাখবেন আমি সেভাবেই থাকব। প্রয়োজনে কাজের মেয়ের মত থাকব তবুও বিয়েটা ভেঙ্গে দিয়েন না।(নিতু)




– নিতুর কথা শুনে বাসার সবাই ড্রয়িংরুমে চলে আসে। শুভ্র এখনও বাসায় ফেরেনি। নিতুর কান্নাকাটিতে পুরো বাসার মানুষ থ হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। আর আমার হাত পা কাঁপছে ওর কথা শুনে। বাসার সবাই যদি রাজি হয়ে যায়?



– নিতু সেদিন মাকে ওভাবে অপমান করতে তোমার বাধছিলনা আর আজ মাফ চাইছো? আচ্ছা মেয়েতো তুমি। শুভ্রর জিবন…… ও সেটা কিভাবে কাটাবে ওর ব্যাপার এর ভিতর আমাদের টানছো কেন? (নিতু)


– বৌদি প্লিজ অমন ভাবে বলেন না আমি খুব লজ্জিত।(নিতু)
– আবার যে এমন কাজ করবেনা তার কোন গ্যারান্টি আছে নিতু!(কৌশিক)
– নিতু এবার নিতাই সেন এর পায়ে গিয়ে পড়ল। দাদু প্লিজ শুভ্রকে একটু বুঝান। আমার কোন দিক থেকে যোগ্যতার অভাব আছে বলেন। ও কেন বিয়ে করতে পারবেনা আমায় প্লিজ একটু বলেন।




– বাসার মানুষগুলোও বেশ চিন্তিতো যে ছেলে বিয়ে করার জন্য মত দিল সে হঠাৎ আশীর্বাদের পর কেন বিয়ে ভেঙ্গে দিচ্ছে। আশীর্বাদের পর বিয়ে ভাঙ্গার কোন প্রশ্নই উঠেনা।



– এভাবে নিতুর কাহিনী চলতেই লাগল। নিদ্রা আপু শুধু রাজি না তাছাড়া সবার মন গলতে শুরু করে দিছে। একটু পর শুভ্র বাসায় ঢোকার সাথে সাথেই নিতু গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে।
প্লিজ শুভ্র এমনটা করনা। আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবনা। শুভ্র চমকে যায় হঠাৎ নিতু এভাবে জড়িয়ে ধরাতে।।



– শুভ্রর চোখ উপরে যেতেই পরীকে দেখে ও কাঁদছে। নাও এবার বউকে সামলাতে ওর জিবন শেষ হবে। মাঝ থেকে এক উটকো ঝামেলা এসে বাধল। আমি মরি আমার জ্বালায় আর এ মরা কান্না শুরু করে দিছে।


শুভ্র নিতুকে এক ঝটকায় ছাড়িয়ে নিয়ে বলল এই তোমার সাহস কিকরে হয় এতগুলো মানুষের সামনে জড়িয়ে ধরা। আর তোমাকে তো আমি আমার ডিসিশন জানিয়ে দিছি তাহলে এখানে কেন নাটক করতে এসেছো?



– শুভ্র আমি কিন্তু সুইসাইড করব? (নিতু)
– কর…… তোমার মত মেয়ের ওটা করার কথা আরও ২ বছর আগে ভাবা উচিত ছিল বলেই শুভ্র উপরে উঠে গেল।



– নিতুর কথা শুনে অনিল বলল নিতু তুমি বাসায় যাও আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে দেখি এর কিছু একটা সমাধান বের করতে পারি কিনা।
– নিতু আস্বাস পেয়ে চোখের পানি মুছেই উপরে তাকিয়ে দেখল পরী শুভ্রর রুমে ঢুকছে। নিতু রাগে বাসা থেকে বের হয়ে এলো। এই মেয়ে যতদিন থাকবে আমি শুভ্রকে কোনদিন কাছে পাবনা……. এর একটা ব্যবস্হা করতে হবে।



– শুভ্র কেবল শার্টটা খুলছে শরীর থেকে আর পরী ওকে টেনে ওয়াসরুমে নিয়ে গিয়ে সাওয়ার এর নিচে দাড় করিয়ে সাওয়ার চালু করে দিল। শুভ্র বুঝতে পারল ও কেন এরকম করছে তাই কিছু না বলে চুপ করে রইল।
– পরী বডি ওয়াস বের করে নিতু যেখানে যেখানে শুভ্রকে ছুয়েছে সেখানে সেখানে লাগিয়ে ঘষছে আর কেঁদেই চলছে।



– পরী কি করছো! এরকম করার কোন মানে হয়!

-এত্ত জোড়ে জোড়ে ঘষলে তো চামড়া উঠে যাবে।


– পরী এবার শক্ত করে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরে বলল আমি কিন্তু তোমাকে ছাড়া মরে যাব…….. পাগল হয়ে যাব। একটুও নিস্বাস নিতে পারিনা তোমায় ছাড়া । আমার অস্তিত্ব কে কেরে নিও না শুভ্র বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পরল পরী।



– পরী রিলাক্স রিলাক্স…. তোমার কি মনে হয় আমি নিতুকে বিয়ে করব?
– যদি বাসার সবাই রাজি হয়ে যায়?(পরী)
– ধ্যাত বোকা মেয়ে কিচ্ছু হবেনা। আমার তো আমার পরীকে চাই। আমার এই বউ ই চাই চাই♥



– জানিনা আমি…… কিছু শুনতে চাইনা বলেই জোড়ে কেঁদে উঠল পরী…….. নিতুর সাহস কিরে হয় আমার শুভ্রকে ছোয়ার♥



– অনিতা এসে শুভ্রকে ডাক দিল এমন সময়।


– শুভ্র ওর মায়ের ডাক শুনে পরীকে বলল পরী চুপ … চুপ কর একটু মা আসছে।
– কে কার কথা শোনে……..পরী ফিকরেই যাচ্ছে।


– শুভ্র তুই কি ওয়াসরুমে?


– পরীর কান্নার আওয়াজ যেন বেড়েই গেল। আজ মনে হয় ও সবাইকে জানিয়েই ছাড়বে শুভ্র ওর শুধু ♥
……..শুভ্রর উপর শুধু ওর ই অধিকার আছে।



– শুভ্র ফটাফট ব্যাক ছাইটের বাকি সাওয়ার গুলো অন করল। যতগুলো পানির লাইন ছিল সব একসাথে। যাতে পানির শব্দে কিছু শোনা না যায়। তাও পরীর কান্নার আওয়াজ যেন দরজা ভেঁদ করে বের হয়ে যাবে।


– মা আমি সাওয়ার নিচ্ছি বলেই পরীর ঠোট দুটি ওর ঠোট দিয়ে চিপে ধরল। এটা করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।

অনিতা বলল আচ্ছা আমি দাড়িয়েই আছি।


– মহা ঝামেলা তো মা আবার কেন দাড়াতে গেল।
আজ বুঝি ধরাই পরে যাই। শুভ্র পরীর কান্না থামানোর জন্য ওর গালে কয়েকটা কিস♥ করে ফিসফিসিয়ে বলল পরী আমার কাছ থেকে আদর নিবা আগে বললেই হতো এভাবে কান্নার কোন দরকার ছিলনা বলেই কিস♥ করতে লাগল। কারন শুভ্র ভাল করে জানে বউয়ের যদি স্বামীর উপর থেকে আস্থা একটু কমে যায় তাহলে তাকে আরও বেশি ভালবাসতে হয় তাহলে সে বুঝে নিবে যে তার স্বামী তাকেই শুধু চায়।

– লক্ষী বউ আমার আর কাঁদেনা…….. মা বাহিরে দাড়িয়ে আছে….. আমরা ২ জনেই ধরা পরে যাব সোনা। একটু রিলাক্স হও। আমার বউ আছে তো আবার কয়টা বিয়ে করব তাই…….



– শুভ্র আর কতক্ষণ বাবা! আমার কাজ আছে।


– মা তুমি যাও আমি একটু পর তোমার কাছে যাচ্ছি।


– অনিতা বাধ্য হয়ে চলে গেল।

– পরী মা আছে তাই চুপ……. ওকে?
– পরী অনেকটা ঠান্ডা হয়ে গেছে। তাই মাথা নাড়াল শুধু।
– এই তো good girl বলেই একটা কিস♥ করে বলল তুমি এখানে থাক। আমি না বলা অবদি বাহিরে আসবেনা কেমন! শুভ্র সব পানির লাইন বন্ধ করে দিয়ে ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে আসে।


– ওর মাকে দেখতে না পেয়ে দরজা নক করে দিয়ে একটা টাওয়াল নিয়ে ওয়াস রুমে এসে বলে টাওয়াল পরে বাহিরে আস পরী………



– শুভ্র আলমারি থেকে আর একটা টাওয়াল বের করে শরীর মুছতেই পরী এসে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে।
– শুভ্র একটু হেঁসে বলল বাহ্ আমার পরীটা যে এত্ত এত্ত রুমান্টিক আগে যানতাম না। আমিতো জানতাম আমার বউ একটা শিকারী বাঘিনী যে শুধু আচড়াতে আর কামড়াতেই জানে……..



– আমি শুভ্রর পিঠে মুখ ঘষতে ঘষতে বললাম মানে……! আমি কবে তোমায় আচড়িয়েছি বা খামচি দিছি যে আমার বিরুদ্ধে এত্ত বড় অভিযোগ করছো?
– শুভ্র শুধু হেঁসেই গেল আর কিছু বলল না।



– ছাড়ো পরী মা ডাকছে…….. বলেই শুভ্র একটা ট্রী শার্ট পড়ে নিল।
– আমি আবার ওকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম।
– এত্ত ফিলিং দেখাতে নেই বাবা সবসময়……অসময়ে কোন কিছুই সুন্দর না বুঝছো?????
– আর শোন! তোমার অনেক আগে থেকে আমি তোমাকে ভালবাসি তাই আমার ভালবাসা নিয়ে যেন কখনও তোমার মনে সন্দেহ না দেখি।
– আমি বাহিরে যাচ্ছি তুমি একটু পর রুমে যেও বলে বাকিটা চেন্জ করেই শুভ্র বের হয়ে যায়।



– মা ডেকেছিলে!(শুভ্র)
– হুম……….. নিতু যে ধমকি দিয়ে গেল সেটা যদি করে ফেলে তাহলে মহা বিপদে পড়বতো আমারা।
– শুভ্র ওর মায়ের কোলে মাথা রেখে সুয়ে বলল ছাড় তো ওর কথা। বিয়াদপ একটা মেয়ে……. ওকে আমি হারে হারে চিনি।
– তাহলে কি বিয়েটা ভেঙ্গে দিবি…… মেয়েটার আশীর্বাদ হয়ে গেছে এখন যদি বিয়ে ভেঙ্গে যায় তাহলে ওরা মুখ দেখাবে কেমন করে সমাজে…..!(অনিতা)
– মা আমাদের ফ্রেন্ড উপলের কথা মনে আছে তোমার?
– যে ছেলেটা সুইসাইড করেছিল ২ বছর আগে একটা মেয়ের জন্য?
– হুম…………… সেই মেয়েটা নিতু ছিল।
– নিতু?
– হুম……. তাহলে বোঝ ও কেমন। সৌন্দর্য, আভিজাত্য,স্টাটাস্, সব কিছু আমার আছে তাই লোভ সামলাবে কিভাবে বল!
– সাংঘাতিক মেয়েতো……
– এমনি আর স্বাধে বলছি মা…… ওকে বিয়ে করা যাবে না।
– ঠিক ডিসেশন নিছিস।
– হুম



– আমি ওর ভিজা কাপড় আর আমার কাপড় নিজ হাতে ধুয়ে দিলাম। এবং ড্রাই মেশিন এ দিয়ে ওয়েট করলাম শুখানোর জন্য। কিছুক্ষন পর কাপড় বের করে পরে নিয়ে শুভ্রর রুম থেকে বের হলাম। কিন্তু আমাকে নিদ্রা আপু দেখে ফেলে।



– পরী তুমি শুভ্রর রুমে কেন গিয়েছিলা?
– আমি থতমত খেয়ে যাই। কি বলবো ওনাকে! আমার কিছু জিনিস লাগত আপু তাই ওকে বলতে গিয়েছিলাম কিন্তু ও তো রুমে নাই বলেই আমার রুমের ভিতর ঢুকতে পারলে বাঁচি।
– নিদ্রা পরীর কথা বিস্বাস করলনা কারন পরীর ২ চোখ অসম্ভব রকম লাল ছিল আর পুরো চেহারা ফোলা ফোলা। দেখে মনে হল প্রচুর কেঁদেছে।




– ঠিক একসপ্তাহ পর একদিন দুপুরের পর সবাই খাওয়া কমপ্লিট করে যে যার রুমে চলে গেছে। শুভ্রও অফিস থেকে এসেছে লাঞ্চ করার জন্য। এখন রেগুলার আসে। শুভ্র ওর রুমে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে। আর পরী ওর রুমে ঘুমিয়ে আছে। এমন সময় বাসায় নিতু আসে। পলা কাজ করছিল। পলা নিতুকে দেখে বলল তুমি এখানে?
– হুম আসতে কি মানা আছে?
– না না মানা থাকবে কেন? তুমি বস আমি নাস্তা নিয়ে আসছি।
– হুম…… বলে বসে পড়ল।


” পলা চলে যেতেই নিতু সুযোগ বুঝে উপরে চলে আসল। আজ সব রেডী করেই নিয়ে আসছে।
ধীরে ধীরে পরীর রুমে গেল। দরজা খোলাই ছিল তাই ঢুকতে অসুবিধা হলো না। দরজার ছিটকি লাগিয়ে দিয়ে পরীর সামনে এসে বলল আমিতো শুভ্রকে কোনদিন পাবো না তাহলে তোকে কেমনে সুখে থাকতে দেই বলেই একটা বালিশ নিয়ে ঘুমন্ত পরীর মুখে চেপে ধরে……………..
চলবে………….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here