অবহেলায় ভালোবাসা? পর্ব-৯

0
443

#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৯
আমি মরে গেলেই তোমার জন্য ভালো হবে তাইনা জানপাখি? তখন আর কেও তোমাকে বিরক্ত করবে না, কেও আর সবসময় তোমার পিছে পড়ে থাকবে না, জানপাখি বলেও কেও ডাকবে না

আমার কিছু হয়নি দেখে তুমি খুব কষ্ট পেয়েছো তাইনা জানপাখি। আমি তো ওখানে থাকতে চেয়েছিলাম তোমার ইচ্ছেটা পূরন করার জন্য হলেও আমি থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কি করবো বলো ওরা আমাকে জোর করে নিয়ে এলো

অল্পের জন্য তোমার ইচ্ছেটা পূরন হলো না। তুমি একদম কষ্ট পেয়ো না জানপাখি পরেরবার তোমার ইচ্ছেটা পূরন করার চেষ্টা করবো। তখন তুমি স্বাধীন হয়ে যাবে জানপাখি। যার সাথে ইচ্ছা কথা বলতে পারবে আমি আর বাঁধা দেওয়ার জন্য থাকবো না

মেঘা কিছু বলছে না। এই প্রথম রবির কথা শুনে ওর খারাপ লাগলো। ও রবিকে ঘৃনা করে ঠিক আছে কিন্তু এতটাও ঘৃনা করেনা যে ওকে মেরে ফেলতে চাইবে

রবি ভাবছে ও মরে গেলে আমি খুশি হবো। কিন্তু আমি তো চাইনা এটা। আমি শুধু চাই ও আমাকে বিরক্ত করা ছেড়ে দিক

মেঘা রবিকে বলল, দেখো আমি তোমাকে ভালোবাসিনা এটা ঠিক তাই বলে তোমার মৃত্যু কামনা কেনো করবো? আমি শুধু চাই তুমি ভালো হয়ে যাও

– আমি জানি জানপাখি তুমি আমার উপরে কতটা রেগে আছো। তুমি তো এর আগেও বলেছো আমি মরে গেলেই তুমি খুশি হবে

– দেখো ওসব রাগের মাথায় বলে ফেলছি। আমি মন থেকেই চাইনা তোমার সাথে খারাপ কিছু হউক। আমি শুধু চাই তুমি ভালো হয়ে যাও। আমাকে বিরক্ত করা ছেড়ে দাও, মারামারি ছেড়ে দাও। তুমি এমন ভাবে বললে মনে হলো যেনো আমি তোমার মৃত্যু কামনা করি। নিজেকে অপরাধি মনে হচ্ছে।

– জানপাখি তোমাকে এর আগেও বলেছি, তুমি শুধু প্রথম অংশটাই দেখেছো। শেষ অংশটা দেখলে সয্য করতে পারবে না

– যা কিছু হয়ে যাকনা কেনো মারামারি কোন কিছুর সমাধান হতে পারে না। রিয়ানকে দেখো ও তো তোমার মত মারামারি করেনা

– হাহা,

– হাসছো কেনো?

– একদিন তুমি নিজেই জানতে পারবে জানপাখি। আমি বললে তো বিশ্বাস করবে না। ভাববে আমি তোমার ভালোবাসার জন্য এসব বলছি। তাই বলবো না। আমি চাই তুমি নিজেই সবকিছু বুঝতে পারবে

– তুমি কি বলবে আমি বুঝেছি। তোমার নিজের খারাপ গুনগুলো রিয়ানের উপর দিবে। কিন্তু তুমি বললেই তো হবেনা আমি নিজ চোখে দেখেছি কে ভালো আর কে খারাপ

রিয়ানকে আমি আজ পর্যন্ত মারামারি করতে দেখেনি। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে। আর তুমি সবসময় ঝামেলা করো

– বাধ্য হয়ে করি জানপাখি

– আমাকে আর উল্টা- পাল্টা বলবে না। গুন্ডারাই কেবল মারামারি করে। আর তুমিও তাদেরই একজন।

এটা বলেই মেঘা চলে গেলো। আর রবি ভাবতেছে রিয়ানের উপর নজর রাখতে হবে। ওর প্রতি মেঘার এই অন্ধবিশ্বাস ভালো না। রিয়ান হয়তো মেঘার কোন ক্ষতি করতে পারে

ভাই আমাদের সব ড্রাগ রবি জব্দ করেছে। আমাদের সব ছেলেদের মেরে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রবির কিছু একটা করুন ভাই তা না হলে আমাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে।

কথাটা শুনে আবির প্রচন্ড রেগে গেলো।

– আমাদের ছেলেরা কি সব চূড়ি পড়ে ছিলো যে রবির কিছু করতে পারলো না। এই রবি নামটা শুনতে শুনতে আমার মাথা ব্যাথা হয়ে গেছে। ও নিজেকে কিভাবে ও যা খুশি করবে আর কেও ওর কিছু করতে পারবেনা

– ভাই আমরা এখন কি করবো?

– চূড়ি পড়ে সব ঘরের ভিতর বসে থাকবি। আমাকে জিজ্ঞেস করছিস কেনো যা পারলে ওই রবিকে মেরে আয়। সেই সাহস আছে কারও?

বাহির থেকে ছেলেরা আসে রবিকে মারতে পারে আর তোরা পারিস না। তোদের সবার জন্য রবি একাই যথেষ্ট। মারতে সাহস হয় রবিকে?

সবাই মাথা নিচু করে আছে। কেও কোন কথা বলছে না। রবির জন্য আবিরের অনেক ক্ষতি হয়ে গেলো অথচ আবির কিছুই করতে পারছেনা রবির

মেহেদী রবিকে বলল, আমরা আবিরের অনেক ক্ষতি করেছি তাই সাবধানে থাকিস ও আমাদের উপর আক্রমন করতে পারে।

– ওদের ছেলেদের এখন এত সাহস নেই যে আমাদের উপর আক্রমন করবে। ওরা সব ভয়ে চুপসে আছে। এই শহরে যত অপকর্ম হচ্ছে সব আমরা ধংস করে দিবো।

ওরা প্রতিটা কলেজ স্টুডেন্টদের মাঝে ড্রাগ ছড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদেরকে ওদের থামাতে হবে। স্টুডেন্টদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হতে দেওয়া যাবেনা। ওদেরকে ড্রাগের হাত থেকে বাঁচাতে হবে

এখান থেকে ড্রাগ অন্য কোথাও যায় কিনা তাও দেখতে হবে। প্রতিটা কলেজে ওদের ড্রাগ এজেন্ট আছে ওদেরকে ধরতে হবে। ওদের পিছু আমাদের লোক লাগিয়ে দিতে হবে। যারা ওদের সাথে মিশে আমাদের জন্য কাজ করবে

মেহেদী রবিকে বলল, আমার একটা কথা রাখবি?

– বলো। তোমার কথা রাখবো না তা কি করে হয়

– মেঘাকে ভুলে যা। তোকে আর কষ্ট পেতে দেখতে চাইনা ওর জন্য অনেক কষ্ট পেয়েছিস আর না। মেঘাই তোর একমাত্র দুর্বল পয়েন্ট ওর জন্য তোর ক্ষতি হবে

– ভাই, তুমি তো জানো আমি ওকে ভুলে থাকতে পারবো না। ওর জন্য যদি আমি মারাও যাই তারপরও আমি ওকে ভুলে থাকতে পারবে না।

মেহেদী অনেক বুঝানোর পরও রবি বুঝলো না। মেহেদী সবাইকে বলে দিয়েছি রবির খেয়াল রাখতে। ওকে কখনও একা না ছাড়তে

এখন রবির বিপদ সবথেকে বেশি। মেহেদী রবিকে ছোট ভাই মনে করে। দুজনেই অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছে। দুজনের মিলও অনেক

রবি ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতেছে হঠাৎ খেয়াল করলো সাব্বির চুপচাপ আছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে ওর মন খারাপ

রবি সাব্বিরকে বলল, তোর কি হয়েছে? এভাবে মন খারাপ করে বসে আছিস কেনো?

– এমনি। কিছু হয়নি

সাকিব বলে উঠলো, ও আমাদের জন্য ওর গার্লফ্রেন্ডকে ছেড়ে এসেছে। ওর গার্লফ্রেন্ড ওকে বলেছে, হয় তুমি রবিকে ভুলে যাবে না হয় আমাকে। ও তোকে বেছে নিয়েছে

রিয়ান কলেজে সবার সামনে মেঘাকে প্রপোজ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে

চলবে—

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here