অবহেলায় ভালোবাসা? পর্ব-১১

0
702

#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ১১
তুমি এসব কি বলছো তোমার মাথা ঠিক আছে তো? আগে তো কখনও এমন কথা বলোনি। তাহলে হঠাৎ কি হলো তোমার?

– আগে বলিনি কারন তখন আমি ভুল ছিলাম। মেঘা আমাকে বার বার বুঝানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু আমি বুঝিনি। এখন নিজের চোখেই সব দেখতে পেয়েছি কে ভালো আর কে খারাপ। তাই এখন আর কোন ভুল করতে চাইনা

– কি বলতে চাইছো তুমি? কিসের খারাপের কথা বলছো?

– বলছি তোমাদের রবির কথা। এতদিন তুমি আমাকে বলে এসেছো রিয়ান খারাপ। কিন্তু আমি আজ পর্যন্ত রিয়ানের মাঝে খারাপের কিছু দেখিনি। তারপরও আমি তোমার কথা বিশ্বাস করেছি কারন আমি তোমাকে ভালোবাসি

ওইদিন তোমরা যা করলে তাতে আমার ভুল ধারনাটা চলে গেছে। আমি বুঝতে পেরেছি এতদিন আমি ভুল ছিলাম। রবি কতটা খারাপ ছেলে তা জানতে পেরেছি

কথাটা বলার সাথে সাথেই সাকিব দিশাকে থাপ্পর মারলো। দিশাকে বলল, রবির সম্পর্কে আর একটাও বাজে কথা বলবেনা। তুমি কি জানো রবির সম্পর্কে। রবি মেঘাকে রিয়ানের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য এসব করেছে। রিয়ান আর ওর ভাই মিলে ড্রাগের ব্যবসা করে। প্রতিটা কলেজে ওরা ড্রাগ ছড়িয়ে দিয়েছে। আর রবি ওদের ড্রাগের ব্যবসা ধংস করে স্টুডেন্টদের বাঁচাচ্ছে

শুধু ড্রাগ না ওরা আরও অনেক খারাপ কাজের সাথে জড়িত। ওরা শিশুদের বিদেশে পাচার করে। আর রবি তার প্রতিরোধ করে।

ওরা অনাথ শিশুদের জোর করে ধরে নিয়ে যায় পাচারের জন্য। আর রবি সেই শিশুদের বাঁচিয়ে দেখভাল করে। পুলিশ ওদের হাতের মুঠোয় তাই পুলিশকে বলেও কোন লাভ নেই

রবি নিজে অনাথ কিন্তু ও চায়না কোন অনাথ শিশু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে। আর এসব কাজে মেহেদী আমাদের সাহায্য করে। শুধু রবি না আমরা সবাই অনাথ তারপরও আমরা একে অপরের ভাইয়ের মত

রিয়ান কত মেয়ের জিবন নষ্ট করেছে তা তুমি জানো। রবি মেঘাকে রিয়ানের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সবসময় ওর পিছু পড়ে থাকে। ও জানে মেঘা ওকে কোনদিন ভালোবাসবে না। মেঘা রিয়ানকে ভালোবাসে। তাই রবি মেঘাকে চোখে চোখে রাখে যাতে রিয়ান মেঘার কোন ক্ষতি করতে না পারে

রিয়ান মেঘাকে ভোগের জন্য সুযোগ খুজতেছে আর মেঘা রিয়ানকে ভালোবেসে নিজেই সেই সুযোগ করে দিয়েছে। আমি জানি আমার কথা তোমার বিশ্বাস হবে না। যেদিন নিজের চোখে দেখবা সেদিন বুঝতে পারবা

তুমি আমাকে ভালোবাসো আর না বাসো আমি রবিকে ছাড়তে পারবো না।

– নিজের চোখেই দেখেছি তোমরা কতটা ভয়ংকর। এখন নিজেদের দোষ ঢাকতে রিয়ানকে খারাপ বানাচ্ছো। রবি মেঘাকে ভালোবাসে না তাই রবি চাইছে মেঘা রিয়ানকে খারাপ ভাবুক। কিন্তু মেঘা এমনটা কখনই করবে না

আবির মিমকে বলল, তুমি আবার সাব্বিরের কাছে সরি বলে ওর সাথে আগের মত ভালোবাসার অভিনয় করবে। ওদের সবকিছু জানবে। সাব্বিরকে এমন ভালোবাসার জালে ফেলবে যাতে ও তোমার সব কথা শুনে। ওদের বন্ধুত্ব নষ্ট করবে

– সাব্বির রবির জন্য আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। ও কি আবার আমাকে মেনে নিবে

– সাব্বিরকে কিভাবে মানাতে হয় তা তুমি ভালো করেই জানো

মিম সাব্বিরকে বলল, আমাকে মাফ করে দাও। আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি ওইদিন তোমাকে বুঝতে পারিনি। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না

এতদিন অনেক কষ্ট পেয়েছি তোমার জন্য। তোমার কি একবারও আমার কথা মনে পড়েনি?

– সবসময়ই তোমার কথা মনে পড়তো। কিন্তু কি করবো তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে

– আর কখনও ছেড়ে যাবো না

– সত্তি তো

– হ্যা, সত্তি

– তুমি আবার আমার কাছে এসেছো। আমি কি করলে তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে? তোমাকে এখন আমার ভয় হয়। কোনদিন না জানি তুমি আমাকে মেরে ফেলো। তুমি কতটা নির্মম আর ভয়ংকর তা ওইদিন দেখেছি

– তুমি এসব কি বলছো। আমি তোমাকে ভালোবাসি। যা করেছি তোমার জন্যই করেছি।

– তুমি যদি সত্তি আমাকে ভালোবেসে থাকো তাহলে আমার জিবন থেকে চলে যাও। আর কখনও আমার সামনে আসবে না।

– এটা সম্ভব না। আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তোমার ভালোর জন্য হলেও আমাকে তোমার সাথে থাকতে হবে

– আমার ভালো খারাপ আমি বুঝে নিবো। তুমি আমার জিবন থেকে চলে গেলে আমার জন্য এর থেকে ভালো আর কিছু হবে না। আজকের পর যদি তুমি আর কখনও আমাকে বিরক্ত করো তাহলে আমি আত্নহত্যা করতে বাধ্য হবো

মেঘার কথা শুনে রবি অবাক হয়ে গেলো। মেঘা ওকে এতটাই ঘৃনা করে যে আত্নহত্যার পথ বেছে নিবে। আমি না হয় দূর থেকেই ওর খেয়াল রাখবো। তারপরও ও ভালো থাকুক

– কি বলছো এসব তুমি? তোমার আত্নহত্যা করতে হবেনা। আমি আর কখনও তোমাকে বিরক্ত করবো না। তুমি যার সাথেই কথা বলো না কেনো আমি বাধা দিবো না। তোমার জিবন থেকে অনেক দূরে চলে যাবো

আমার জন্য তুমি আত্নহত্যা করবে তা আমি কখনও চাইবো না। তবে আমার একটা কথা রাখবে , রিয়ানের সাথে কম মিশবে। ওর জন্য তোমার ক্ষতি হতে পারে

– তা নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। আমার ভালো আমি বুঝি। আমার জিবন থেকে চলে গেলেই আমি খুশি হবো

– ভালো থেকো

রবি ওর বন্ধুদের বলল, এখন থেকে তোরা রিয়ানের উপর নজর রাখবি। আমি আর কখনও ওর সামনে যাবো না।

– রিহানের উপর কেনো নজর রাখবো?

– রিহান মেঘার ক্ষতি করতে পারে তাই তোরা ওকে চোখে চোখে রাখবি

দিশা মেঘাকে বলল, এতদিন তোর কথা না শুনে ভুল করেছিলাম। আমি ওদেরকে ভালো মনে করতাম। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি ওরা কতটা নির্মম আর ভয়ংকর।

ওরা নিজেদের স্বার্থে সবকিছু করতে পারে। ওদের মত ভয়ংকরদের সাথে রিলেশন করা উচিত না

– পরে হলেও বুঝতে পারছিস এটাই অনেক।

১০ দিন পর

– রিয়ানকে ওর বন্ধুরা বলল, অনেকদিন তো হয়ে গেলো। কতদিন আর মেঘার পিছু ঘুরবি? পরবর্তি প্লান কি?

– ওকে যে বলবো তার সুযোগই পাচ্ছি না

– তাহলে কি এভাবেই চলতে থাকবে?

– না। দেখি কি করা যায়

হঠাৎ মেঘা এসে রিয়ানকে বলল,তুমি এখানে আর আমি তোমাকে ক্যাম্পাসে খুজতেছি। আমরা ঘুরতে যাবো চল

রিয়ান মেঘাকে নিয়ে নদীর পাড়ে আসলো। হঠাৎ রিয়ানের এক বন্ধুর সাথে দেখা হলো। রিয়ান ওর বন্ধুর সাথে কথা বলতেছে আর মেঘা একা একা দাঁড়িয়ে আছে।

হঠাৎ একটা মেয়ে মেঘার কাছে এসে বলল, তুমি রিয়ানকে কিভাবে চিনো?

– আমরা রিলেশনে আছি

মেয়েটা অবাক হয়ে মেঘাকে বলল, তোমরা তাহলে রিলেশনে আছো?

– এভাবে বলছো কেনো?

চলবে—

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here