#অবহেলায়_ভালোবাসা
#লেখকঃRabi_Al_Islam
#পর্বঃ৭
আমার বাবা- মা থাকলে হয়তো আমায় ভালো শিক্ষাই দিতো কিন্তু তারা তো কেও বেঁচে নেই। আমি এক অনাথ তাই হয়তো এরকম হয়ে গেছি
কিন্তু বিশ্বাস করো আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি আমার জিবনের প্রথম কোন মেয়ে যাকে আমার ভালো লেগেছিলো। তোমাকে দেখার আগ পর্যন্ত কখনও ভাবিনী যে আমি কাউকে ভালোবাসবো
আমি বুঝতে পারছিলাম তুমি সহজে আমার ভালোবাসা মেনে নিবেনা। আমার ভাগ্যটাই হয়তো খারাপ তাইতো তোমার সাথে যখনই দেখা হয় তখনই আমি কোন না কোন ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ি আর তুমি আমাকে খারাপ ভাবো
তুমি শুধু শেষ অংশটাই দেখলে প্রথম অংশটা দেখলে না আর জানার চেষ্টাও করলে না। তোমাকে কখনও এসব বলা হয়নি। আমি চাইনা তুমি সবকিছু জেনে আমাকে ভালোবাসো
আমি তোমার কাছে যেমন তেমনই ভালোবাসবা আমাকে। আমার জিবনকাহিনী শুনে না। কেও আমায় করুনা করে ভালোবাসুক এটা আমি চাইনা। তাই তোমাকে কখনও বলিনি আমি অনাথ
– তোমাকে কে বলেছে তুমি অনাথ এটা শুনে আমি তোমাকে ভালোবাসবো? দেখো তোমাকেই আমার পছন্দ না তাহলে ভালোবাসা তো প্রশ্নই আসেনা
তুমি যদি ভেবে থাকো তুমি অনাথ এটা শুনে আমি তোমাকে ভালোবাসবো তাহলে সেটা তুমি ভুল ভাবছো। আমি তোমাকে কখনই ভালোবাসতে পারবো না
– কেনো পারবেনা? আমি তোমার জন্য সবকিছু করতে রাজি আছি
– কারন আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি। ওকে ছাড়া আর কাউকে আমি চিন্তাও করতে পারিনা
– আগে তো কখনও বলোনি আমায় তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো
– তুমি কে যে তোমাকে এটা বলতে হবে। আমি কি তোমাকে কোনদিন বলেছি আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমাকে বার বার ভালোবাসার কথা বলেছো আর আমি তোমায় বলেছি, আমি তোমাকে পছন্দ করিনা। তারপরও তুমি আমার পিছু পড়ে আছো। আমাকে টর্চার করতেছো
আমার কোন কথা শুনোনি। এখন তো শুনলে আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি তাই আমাকে আর কখনও ভালোবাসার কথা বলবেনা
– আমি তোমাকে ভুলে থাকতে পারবো না জানপাখি। তুমি আর কাউকে ভালোবাসো না। এটা তুমি বলছো যে তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসো কিন্তু তোমার মনে অন্য কারও প্রতি ভালোবাসা নেই
– আমি মন থেকেই বলছি আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি
– ভালোবাসো না
– আমি বলছি ভালোবাসি। তুমি আমার সিদ্ধান্ত বদলানোর কে?
– হাহা, তুমি রেগে যাচ্ছো জানপাখি। তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারো না। তোমার মনে কেবল আমিই আছি। হয়তো ভালোবাসো না কিন্তু ঘৃনা তো করো তাই তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারো না
– তুমি আমার সাথে চালাকি করার চেষ্টা করছো। শুনে রাখো, আমি তোমাকে ভালোবাসি না। আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি
– এটা কোনভাবেই সম্ভব না জানপাখি। তোমার রিদয়ে কেবল আমি আছি। সেখানে অন্য কেও কখনই আসতে পারেনা
– তুমি আমাকে কনফিউজড করছো। এসব করে তুমি কি ভাবছো আমি তোমাকে ভালোবাসবো। তাহলে তুমি ভুল ভাবছো। তা আমি কাকে ভালোবাসি তা শুনবে না?
– তুমি অন্য কাউকে ভালোবাসতেই পারো না তাহলে শুনবো কেনো?
– তুমি না শুনলেও আমি বলবো , আমি রিয়ানকে ভালোবাসি
এটা শুনার জন্য রবি একদমই প্রস্তুত ছিলোনা। রবির প্রচন্ড রাগ হলো। রাগ সামলে মেঘাকে বলল, তুমি রিয়ানকে ভালোবাসতে পারো না। আর কখনও ওর সাথে কথা বলবে না
– একশো বার বলবো। তুমি বাধা দেবার কে? কেও না তুমি আমার। আর কখনও হবার চেষ্টাও করো না
এটা বলেই মেঘা চলে গেলো
কিছুখন পর
রবিকে ওর বন্ধুরা বলতেছে, কি হয়েছে তোর? তোকে দেখে রাগান্বিত মনে হচ্ছে
– মেঘা রিয়ানকে ভালোবাসে এটা আমায় বলেছে
আমি রিয়ানকে বলেছিলাম মেঘার থেকে দূরে থাকতে। ওকে মারার পরও শুনেনি। আর মেঘা কি করে রিয়ানকে ভালোবাসতে পারে
সাকিব রবিকে বলল, দিশা তো কখনও বলেনি মেঘা রিয়ানকে ভালোবাসে। হয়তো মেঘা তোকে রাগানোর জন্যই এসব বলেছে। ও চাইছে তুই রিয়ানের সাথে ঝামেলা করিস। কিন্তু মেঘা এমনটা কেনো করবে?
– তোর আর রিয়ানের মধ্যে ঝামেলা লাগিয়ে মেঘার কি লাভ?
এর আগেও মেঘা এমন করেছে। দিশা প্রিন্সিপ্যালকে বলায় সে এসেছিলো। তখন মেঘা অনেক রেগেছিলো। দিশাকে অনেক কিছু বলেছিলো।
মেঘা চাইছে দিশার সাথে আমার সম্পর্ক শেষ হয়ে যাক। ও দিশাকে অনেকবার বলেছে আমার সাথে সম্পর্ক শেষ করতে। মেঘা এখন জানে দিশা আমাদের কাছে এসে সবকিছু বলে দেয় তা ও এখন দিশার সাথে আমাদের ব্যাপারে কিছু বলছে না
রবি ওর বন্ধুদের বলল, মেঘা আমাকে এতটাই ঘৃনা করে যে আমাকে মার খেতে দেখতে চায়। মেঘার এই ইচ্ছাটাও আমি কোন একদিন পূরন করে দিবো
এখন রিয়ানের কিছু একটা করতে হবে। মেঘা রিয়ানকে ভালোবাসে এটা হয়তো এখনও রিয়ানকে বলেনি। মেঘা যাতে বলতে না পারে সেই ব্যাবস্থা করতে হবে
– কি করবি তুই?
– ওকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যাবস্থা করতে হবে
রবি আর ওর বন্ধুরা ক্লাসের পর নদীর পাড়ে আসলো । দুপুর তখন তেমন কেও একটা থাকে তখন। যারা আছে সবাই গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড কলেজ স্টুডেন্ট
ওরা বাইক থামিয়ে সবাই আড্ডা দিতেছে। হঠাৎ একটা ছেলে হেঁটে যাওয়ার সময় রবির সাথে ধাক্কা খেলো। মনে হচ্ছে যেনো ইচ্ছা করেই ধাক্কা দিয়েছে
রবি ছেলেটাকে বলল, অন্ধ নাকি দেখে চলাফেরা করতে পারো না
ছেলেটা থেমে রবিকে বলল, তুই কি দেখিস নাই তাহলে ধাক্কা খেলি কেনো?
একে তো অন্যায় করছে তার উপরে সরি না বলে রবিকে তুই করে বলছে ওর মাথাটা গরম হয়ে গেলো। ছেলেটাকে গিয়েই থাপ্পর মারলো
ছেলেটা বলল, আমাকে থাপ্পর মেরেছিস এর জন্য তোকে মূল্য দিতে হবে। হঠাৎ দেখলো দূরে অনেক ছেলেরা আসতেছে সবার হাতেই ছুরি রয়েছে
রবির বন্ধুরা বলল, দোস্ত এখান থেকে চল
– আমি কি ওদের ভয় পাই নাকি যে চলে যাবো আসতে দে ওদের
– ভাই তুই বুঝতে পারছিস না। ওরা আমাদের মেরে ফেলার জন্য আসতেছে তার মানে এসব আগে থেকেই পরিকল্পিত। আমাদের হাতে কিছুই নেই এখন। ওরা সংখ্যায় অনেক প্রত্যেকের হাতেই ছুরি আছে। এখানে থাকা মানে আত্নহত্যা করা
রবিকে ওর বন্ধুরা জোর করে নিয়ে গেলো। ছেলেগুলো এসেছে আর ওরাও বাইক চালিয়ে চলে গেলো
ওরা কলেজে চলে আসলো। রবির বন্ধুরা বলল, দোস্ত কেও আমাদের মারার পরিকল্পনা করেছিলো আজকে
চলবে—