অনন্যময়ী সানজিতা_তুল_জান্নাত পর্ব_৪৩

0
6349

অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_৪৩

রিশাদের অশ্রুসিক্ত নয়নে অসহায় চাহনি আর করুণ কণ্ঠস্বর অনির বিচলতাকে বাড়িয়ে তুলছে। নির্জন রাস্তায় রিশাদের মুখনিঃসৃত প্রতিটি শব্দ অনির কানে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। রিশাদের অশ্রুগুলো অনি মুছে দেওয়ার জন্য হাত বাড়াতে গেলে রিশাদ তাকে আটকে দেয়। অনি অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে।

রিশাদের দৃষ্টি বোধ হয় অনিকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয় যে সে হয়তো রিশাদের প্রতি দয়া দেখাচ্ছে। রিশাদের অভিমান যে তীব্র তা অনি বুঝতে পেরেছ। অনিকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে রিশাদ নিজেকে তচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে অনির বাহু ছেড়ে দেয়।

রিশাদ গাড়ির দিকে হাঁটতে থাকে। রিশাদের এমন ছন্নছাড়া ব্যবহার অনি কিছু বুঝতে পারছে না। রিশাদের মান অভিমানের সাথে পাল্লা দিয়ে রিশাদের প্রতি অনির অনুভূতি গুলোও তীব্রভাবে জাগ্রত হতে শুরু করেছে যা তার পক্ষে উপেক্ষা করা মোটেও সম্ভব নয়।

অনি কোন কিছু না ভেবেই দৌঁড়ে গিয়ে পেছন থেকে রিশাদকে জড়িয়ে ধরে অনির বাহুর মাঝে আবদ্ধ করে নেয়। রিশাদ অনির এভাবে হঠাৎ জড়িয়ে ধরায় থেমে যায়। অদ্ভুত শান্তি অনুভব করে।

অনি রিশাদকে জড়িয়ে ধরে তার পিঠের সাথে মাথা ঠেকিয়ে নীরবে অশ্রু ফেলতে থাকে। রিশাদের শার্ট ক্রমশ ভিজে ওঠে। অনির এভাবে কান্না করাটা রিশাদ মেনে নিতে পারছে না। অনির উপেক্ষা যেমন রিশাদকে অস্থির করে তেমনি অনির অশ্রুও যেন তাকে অস্থির করে তুলছে।

রিশাদ বেদনাহত কণ্ঠে বলে;

–“আপনার উপেক্ষা মানতে পারলেও অশ্রুগুলো মানতে পারিনা। ভালোবাসি বলে কি ইচ্ছে করে কষ্ট দিচ্ছেন অনন্যময়ী? প্লিজ কান্না থামান। আপনার শরীর খারাপ করবে। “(রিশাদ)

রিশাদের কথায় অনির কান্নার বেগ যেন আরো বেড়ে যায়। থামার নামই নেই। অনি কোন কথা বলতে পারছে না।কথাগুলো যেন গলার মধ্যে এসে সব জটলা পেকে যাচ্ছে।

রিশাদ অনিকে পেছন দিক থেকে সামনে এনে দাঁড় করায়। অনির কাঁদতে কাঁদতে নাক লাল হয়ে গেছে।

রিশাদ খুব যত্ন নিয়ে তার চোখ মুছে দেয়।

–“কাঁদছেন কেন?কি হয়েছে?”(রিশাদ)

অনি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কিভাবে ঘটাতে হয় তা তার জানা নেই। সে শুধু জানে রিশাদকে সে ভালোবাসতে শুরু করেছে।

রিশাদ অনির কোন সাড়া পায় না। দুহাত অনির গালে রেখে রিশাদের দিকে অনির চোখের দিকে তাকায়। অনির অশ্রুর ভিড়ে রিশাদ তার জন্য ভালোবাসার হদিস পায়। সে কি ঠিক বুঝতে পারছে নাকি তার ভুল হচ্ছে কোথাও?

রিশাদ অনির কপালের সাথে তার কপাল লাগিয়ে নীরবতা ভেদ করে বলে;

–“সবচেয়ে কাছের মানুষটা যখন আমার বিশ্বাস ভেঙে দিয়ে স্বার্থপরের আমাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে তার ক্যারিয়ার কে বেছে নিয়েছিল সেখানে আপনি শুধুমাত্র দুদিনের আলাপে আপনার স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়ে আমার পাশে থেকে ছিলেন।আমার পরিবারকে ভরসা জুগিয়েছেন। প্রতিনিয়ত আপনাকে যতটা দেখেছি খুব অবাক হয়েছি। কষ্টকে কিভাবে আড়াল করে সবাইকে ভালোবেসে আপন করে নিয়ে ভালোবাসতে হয় আপনাকে দেখে শিখেছি। আপনাকে দেখে বেশ অবাক হয়েছি সাথে জন্মেছে মুগ্ধতা। মুগ্ধতা যে কখন মস্তিষ্ক কে ছাড়িয়ে আমার মনের গভীরে ছাপ ফেলেছে বুঝতেই পারিনি। মানুষ তো আর চাইলেই সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। কখনো চাইনা আপনার উপর জোর করতে। আপনার জীবনটা অন্য সবার থেকে একটু বেশিই জটিল। সেখানে আমাদের এই অপ্রত্যাশিত সম্পর্ক সব কিছু আপনার জন্য আরো বেশি কঠিন হয়ে গেছে। তাই আপনা যা চান তাই হবে।বোধ হয় এই জোরপূর্বক সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে পারলেই আপনি স্বস্তি পাবেন। কিন্তু প্লিজ যে ক’টা দিন আছেন আমাকে ইগনোর করবেন না। আগে যেমন স্বাভাবিক ভাবে থাকতাম সেভাবেই থাকতে চাই। আপনার থেকে বিশেষ কিছু চাওয়ার নেই আমার। তবে মাঝে মাঝে যখনই মনে হয় আপনি চলে যাবেন ব্যাপারটা কেমন অবিশ্বাস্য মনে হয়। সত্যিই কি চলে যাবেন অনন্যময়ী? রিশাদ কি অনন্যময়ীর ভালোবাসা পাবার যোগ্য নয়?”(রিশাদ)

–“কি সহজেই বলে দিচ্ছেন আমি আপনাকে ইগনোর করেছি,আপনি আমার অযোগ্য। কখনো কি একবার ভেবে দেখেছেন আমার দিকটা?আমি কি চাই? যখন কিছুই বুঝিনি তখন দেশ ছেড়েছি দিদার সাথে। পরিবার থেকে দূরে অজানা,অচেনা মানুষগুলোর মাঝে বড় হয়েছি।নিয়তি আমাকে যা যা দিয়েছে সবটা আমি সাদরে গ্রহণ করেছি। কখনো কারো কাছে অভিযোগ অভিমান করার সুযোগ হয়নি। তবুও আমি মেনে নিয়েছি।হুট করেই অদ্রিপুর জোরাজুরিতে দেশে আসতে হলো। অপরিচিত কাছের মানুষগুলোকে কাছ থেকে দেখার সুযোগ হলো। সব কিছু কেমন অন্যরকম অনুভব হতে থাকল। এই অনুভূতির রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আমার দুদিন আগে পরিচিত হওয়া পরিবারের কথা ভেবেই বিয়ের মতো একটা সিদ্ধান্ত নিতে হলো। জীবনে একটা নতুন ক্লাইম্যাক্স যুক্ত হলো। সবকিছু মেনে নিয়ে চলছিলাম। আপনি শুরুতেই বলে দিলেন আমাকে কখনো হয়তো ভালোবাসতে পারবেন না। আমাকে খুব শীঘ্রই এই অযাচিত সম্পর্ক থেকে মুক্তি দেবেন। আমার মতামত নেয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি। তাতেও আমার কোন আপত্তি নেই। আমি নিজেই চাইনি এখানে বেশি দিন থাকতে।তাই তো চলে যেতে চেয়েছি। আপনার পরিবারের সবাই আমাকে যেভাবে আপন করে নিয়েছে তাতে আমার মনে হয়েছে যেন এরা সবাই আমার নিজের বাবা মা বোন। যেখানে আমার নিজের মা কখনো আমার দিকে ঘুরেও তাকাও নি সেখানে আপনার মা আমাকে তার সমস্ত ভালোবাসা স্নেহ উজার করে দিয়েছে। আমার মনে লোভ জন্মায় এই ভালোবাসা হাতছাড়া না করার। প্রতিনিয়ত আমি তাদের ভালোবাসা সান্নিধ্য পেয়ে লোভী হয়ে পড়েছিলাম। সবাইকে ভালোবাসতে বাসতে কখন আপনার ভালোবাসা পাওয়ার সুপ্ত বাসনা জন্মেছিল তা বুঝে উঠতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে। সেখানে আপনি প্রতিনিয়ত আমাকে বুঝিয়ে দেন আমি আপনার জীবনের ক্ষণিকের অথিতি। তাইতো নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছি আপনার থেকে যাতে আমার জন্য আপনাকে কোন রকম ঝঞ্ঝাটে পড়তে না হয়। বলুন কি ভুল আমার?”বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ে অনি। রিশাদের বুকে ঢলে পড়ে সম্পূর্ণ ভর ছেড়ে দেয়।

অনির প্রতিটা কথায় কতটা কষ্ট আর অভিমান জমে আছে তা রিশাদ হারে হারে টের পাচ্ছে। কত অভিমান চাপা রেখে ঠোঁটের কোণায় হাসির রেখা অটুট রাখে। অনির কথায় যেন রিশাদের ভেতরে তুমুল ঝড় উঠে যায়। অন্তরটা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছে।

অনিকে দুহাতে বুকের সাথে আগলে ধরে রিশাদ।শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে। অনির যেন কান্না থামার নামই নিচ্ছে না। কেঁদে কেঁদে রিশাদের বুক ভাসিয়ে দিচ্ছে। রিশাদের বুকে সে আজ অদ্ভুত প্রশান্তি অনুভব করছে। এত কষ্টের মাঝেও এটাই যেন তার পরম প্রাপ্তি। এই মানুষটা তার জীবনে থাকলে বোধ হয় সুখী হওয়ার জন্য আর কিছু প্রয়োজন নেই।

রিশাদ তার অনন্যময়ীকে বুকে আগলে দাঁড়িয়ে থাকে। এই নির্জন রাত আর সুবিশাল আকাশের অগণিত তারারা তাদের এই ভালোবাসার সাক্ষী। আকশের বাঁকা চাঁদটা যেন তার নৈসর্গিক উজ্জ্বলতা দিয়ে অনি রিশাদের ভালোবাসার মূহুর্তকে স্নিগ্ধতায় ভরিয়ে তুলছে। আজ যে তাদের মাঝে ভালোবাসার আদান প্রদানের পালা, দুটি মনের একত্র হওয়ার সন্ধিক্ষণ যার সাক্ষী শুধু রাতের আকাশের এই ঝিমুতে থাকা প্রকৃতি।

রিশাদ তার অনন্যময়ীর কান্না থামানোর চেষ্টা করে না। তার বুকে মাথা দিয়ে অনন্যময়ীর কান্না শান্তি অনুভব করায়। এই মেয়েটাকে সে আর কখনো কাঁদতে দেবে না। কোন কিছুর বিনিময়েই সে আর অনিকে হারাতে পারবে না। অনেক ভাগ্য করে সে অনন্যময়ীর মতো জীবনসঙ্গী পেয়েছে। সকল কষ্ট থেকে তাকে আড়ালে নিজের বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখতে চায়। দুঃখ কষ্ট যেন একেবারে তার ধরাছোঁয়ার বাহিরে চলে যায়।

এভাবে কতক্ষণ রিশাদ অনন্যময়ী কে আগলে রেখে দাঁড়িয়ে ছিল তা তার জানা নেই। তবে তার মনে হচ্ছে এভাবে সারা জীবনটা যদি কাটিয়ে দেয়া যেত তাহলে মন্দ হতো না। এই মূহুর্তটা তার জীবনের সেরা মূহুর্তগুলোর মধ্যে নিঃসন্দেহে অন্যতম একটি মূহুর্ত।

অনির কান্নার বেগ কিছুটা থেমে এসেছে।এখন সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। সাথে সে রিশাদের শার্ট ভিজিয়ে দিচ্ছে। নাকের পানি চোখের পানি এক জায়গায় হয়ে গেছে। রিশাদের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সে তো এখন অনন্যময়ীতে মত্ত। তাই আর কোন দিকে তার খেয়াল নেই।

–“অনন্যময়ী! “(রিশাদ)

অনির কোন সাড়া পায় না। শুধু নাক টানার শব্দ পাচ্ছে।

–“বাসায় যেতে হবে তো নাকি।এভাবে আর কতক্ষণ কাঁদবেন বলুন তো। এরপর যদি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে কিন্তু সবাই আমাকেই দোষারোপ করবে। আমি কি এমন করি যে বউ বার বার অসুস্থ হয়ে পড়ে।”(রিশাদ)

অনি এবার রিশাদের কথায় মাথা তুলে ভেংচি কাটে। রাগ দেখিয়ে রিশাদের থেকে নিজেকে ছাড়াতে নেয়। রিশাদ অনিকে শক্ত করে থাকে। বিধায় আর অনি ছাড়াতে পারে।

রিশাদ হালকা হেসে বলে;

–“ওরে আমার বিদেশিনী বউটা!একটুতেই এতো রাগ যে কই থেকে আসে। কাঁদতে কাঁদতে তো চোখ মুখ একেবারে লাল করে ফেলেছে। চলুন এবার বাসায় ফেরা যাক।”(রিশাদ)

অনি রিশাদের কথায় কোন উত্তর দেয়না। তবে কিছুটা লজ্জা পায়। রিশাদ অনির লজ্জা মিশ্রিত মুখাবয়ব দেখে মুচকি হাসে।

রিশাদ অনির হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে গাড়ির দিকে যায়। আজকের রাতটা একটা শ্রেষ্ঠ রাত। তার বরাবরই ইচ্ছা ছিল নির্জন রাতে তার প্রিয় মানুষটার হাত ধরে চাঁদের আলোয় এভাবে হেঁটে যাওয়া। অজান্তেই তার সেই ইচ্ছেটাও পূরণ হলো।

অনি হাঁটতে হাঁটতে সামনের দিকে তার আর রিশাদের লম্বা ছায়াটার দিকে তাকিয়ে আছে। যেখানে পাশাপাশি দুজন ছায়া মানব আর মানবীর হাত দুটো এক হয়ে গেছে। এভাবেই যেন চিরকাল তাদের বন্ধন অটুট থাকে।

সৃষ্টিকর্তার কাছে বরাবরই তার নীরব অভিযোগ ছিল কেন তার জীবনটা অন্য সবার মতো না। তবে আজকের প্রাপ্তিতে যেন তার সকল অভিযোগ দূর হয়ে গেছে। তার আর কোন কিছু চাইবার নেই। পরম সুখে সে রিশাদের হাত ছেড়ে দিয়ে তার বাহু চেপে ধরে তার কাঁধে মাথা রাখে। চোখে মুখে খুশি যেন ঠিকরে পড়ছে। নিজেকে বেশ পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে।

বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামায় রিশাদ। গাড়ি থেকে নেমে অনির পাশে দরজাটা খুলে দেয়। কিন্তু অনির নামার কোন হেলদোল নেই। সে নিজের মতোই বসে আছে। রিশাদ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। ব্যাপারটা বুঝতে পারছে না।

–“চলে এসেছি তো।নামুন।”(রিশাদ)

–“উমমম না!নামবো না।”(অনি) কোমড়ে হাত দিয়ে কিছুটা আহ্লাদী স্বরে বলে অনি।

–“কেন নামবেন না কেন?এখানেই থাকবেন সারা রাত?”(রিশাদ)

–“কেন এখানে কেন থাকবো?আমার শ্বশুর মশাইয়ের এত সুন্দর একটা বাড়ি থাকতে আমি কেন গাড়িতে থাকতে যাবো? কি আশ্চর্যজনক কথাবার্তা বলেন?”(অনি)

–“তাহলে মহারানী আপনাকে তো গাড়ি থেকে নামতে হবে। না হলে ভেতরে যাবেন কিভাবে?”(রিশাদ)

অনি গাড়িতে বসেই এদিক ওদিক তাকায়। কোথাও কাউকে দেখতে পায়না।

–“আমি যাব তো। আপনি আমাকে কোলে করে নিয়ে যাবেন গেট অবধি।তাছাড়া আমি নামবো না।”বলেই অনি হেসে দেয়।

রিশাদ অনির এই ছোট্ট আবদার পূরণ করতে তাকে কোলে উঠিয়ে নেয়।

বাড়ির দরজার কাছে এসে অনি বলে;

–“হ্যা আমাকে এখন নামিয়ে দিন। আমি এখান থেকে হেঁটেই যেতে পারবো।”(অনি)

–“উহুম না।আপনার কথা তো আমি রেখেছি এখন আমার কথাও রাখতে হবে। আপনার গেট অবধি কোলে ওঠার ইচ্ছে হয়েছে। আমার ইচ্ছে আমি আপনাকে রুম পর্যন্ত কোলে করে নিয়ে যাবো।”(রিশাদ)

–“একদম না। বাড়িতে এখনো মামনি হয়তো জেগে আছে। আপনার কি কোন কমন সেন্স নেই?হুট করে কেউ দেখলে কি ভাববে?নামান আমাকে আপনি।”(অনি)

–“জি না ম্যাম।আপনাকে আমি নামাচ্ছি না।”(রিশাদ)

অনি অসহায় মুখ করে তাকায়।রিশাদের সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। সে হন হন করে অনিকে কোলে করে বাড়ির ভেতরে ঢোকে। একটু রাত হয়ে যাওয়ায় ড্রইংরুমে কেউ নেই। অনি যেন কিছুটা স্বস্তি পায়।

ড্রইংরুম পার হয়ে সিঁড়ি তে উঠতে যাবে।এমন মূহুর্তেই মিথিলার গলা ভেসে আসে।

–“আরে বাহ!রোমিও জুলিয়েট এত রাতে কোথায় থেকে আসছে?বলেই মিথিলা কিছুটা শব্দ করে হাসতে থাকে।

–“ওই চুপ থাক।তোকে কে এত বক বক করতে বলেছে। যা নিজের কাজ কর গিয়ে। “(রিশাদ)

অনি কিছুটা লজ্জা পায়। লজ্জায় সে রিশাদের কোল থেকে নামার জন্য জোর করতে থাকে।

–“আমি তো আমার কাজ করবোই তোমরাও তোমাদের কাজ চালাও।আমি কয়েকটা ফটো তুলি। “বলেই মিথিলা ক্যামেরা অন করে কয়েকটা ছবি তুলে নেয়।

রিশাদ তার দিকে তেড়ে যেতে নিলেই ভেংচি কেটে সে দৌঁড়ে পালিয়ে গিয়ে নিজের রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়।

রিশাদ একেবারে রুমে গিয়ে অনিকে কোল থেকে নামিয়ে দেয়। অনি রিশাদের দিকে অগ্নিদৃষ্টি নিক্ষেপ করে।

–“আপনি এরকম করলেন কেন?মিথিলা কি মনে করবে?”(অনি)

–“কি মনে করবে আবার?আমার বউকে আমি কোলে করে এনেছি তাতে কার কি মনে হবে আমার কি?”(রিশাদ)

–“আপনি আসলেই একটা যা তা মানুষ আপনার সাথে কথা বলাই মুশকিল।”(অনি)

অনি রিশাদের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়ায়।রিশাদ আস্তে করে অনিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে অনি ছাড়াতে চাইলে রিশাদ আরো শক্ত করব জড়িয়ে ধরে। অনি মুচকি হাসে।
কেমন শান্তি শান্তি অনুভব হচ্ছে তার।

চলবে…….

আসসালামু আলাইকুম।?
আজকের পর্বটা একটু কেমন যেন মনে হচ্ছে আমার কাছে??।ভুলত্রুটি গুলো সুন্দর ভাবে ধরিয়ে দেবেন। কেমন লাগলো একটু কষ্ট করে কমেন্টে জানাবেন?।ধন্যবাদ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here