অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_১৬
শায়লা বেগম তার নিজের রুমে টুকটাক কাজ করছিলেন। রায়হান সাহেব রুমে প্রবেশ করে বিছানায় গিয়ে বসেন।
শায়লা বেগম রায়হান সাহেবের দিকে তাকিয়ে নিজের স্বামীর চোখে জল দেখে কিছুটা বিচলিত হয়ে যান। শায়লা বেগম রায়হান সাহেবের দিকে তাকিয়ে দেখতে পান তার চেহারায় এক তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠেছে। রায়হান সাহেবের অশ্রুসিক্ত হাস্যজ্জ্বল চেহারা দেখে শায়লা বেগম ভাবনায় পড়ে যান।
-কি ব্যাপার কি হয়েছে তোমার?( বিচলিত কণ্ঠে বলেন শায়লা বেগম)
রায়হান সাহেব চশমাটা চোখে দিয়ে শায়লা বেগমের দিকে তাকিয়ে এক শুষ্ক হাসি দেন।
-আজ আমার মনে হচ্ছে আমি জীবনের সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্তটা নিতে পেরেছি। জানো শালু ওই দিন রিশাদ যখন বিয়ের আসর থেকে উঠে গেল তার কিছুক্ষণের মধ্যেই যখন রিশাদের এক্সিডেন্টের খবর পেলাম তখন নিজেকে বাবা হিসেবে পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যর্থ মানুষ মনে হচ্ছিল। বারবার মনে হচ্ছিল আমার ছেলেকে নিজের হাতে আমি মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছি। নিজেকে বড় অপরাধী মনে হচ্ছিল।
আজ যখন অনি মা আর রিশাদকে একসাথে দেখলাম আমার বুকটা জুড়িয়ে যাচ্ছিল। জানো শালু অনি মা কিভাবে রিশাদকে চোখ রাঙিয়ে জোর করে ফল গুলো খাওয়াচ্ছিল আর আমাদের রিশাদ তো বাধ্য ছেলের মতো কোন শব্দ না করে চুপচাপ খেয়ে নিচ্ছিল। অনি মাই পারবে আমার ছেলেটাকে ভালো রাখতে পারবে। আমার রিশাদের জীবনের খারাপ সময়টাকে কাটিয়ে দিতে পারবে। আজ বাবা হিসেবে নিজের ছেলের জীবনটাকে ঠিক পথে আনতে পেরে নিজেকে সবচেয়ে সুখী মনে হচ্ছে। আমি কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেইনি শালু কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেইনি। আমার ছেলেটাও ভালো থাকবে দেখে নিও তুমি। সবার মতো আমার ছেলেটাও সুখি হবে। আমাদের রিশাদ আবার আগের মতো হয়ে যাবে। বলেই রায়হান সাহেবের দুচোখ দিয়ে অঝোরে অশ্রু গড়ায়।
এতক্ষণ ধরে রায়হান সাহেবের কথা শুনে শায়লা বেগমের দুচোখ ভিজে যায়। শাড়ির আচলটা দিয়ে রায়হান সাহেবের দুচোখ মুছে দেন শায়লা বেগম। রায়হান সাহেবের কাঁধে মাথা রেখে তার পাশে বসে পড়েন শায়লা বেগম।
– বাবা মায়ের নেয়া সিদ্ধান্তে সন্তানের কখনো খারাপ হয় না। বাবা হিসেবে পৃথিবীর সবাই নিজ নিজ সন্তানের কাছে শ্রেষ্ঠ। তবে তুমি তাদের মধ্যে অন্যতম। তুমি শুধু বাবা হিসেবে না তুমি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ স্বামী,শ্রেষ্ঠ সন্তান, শ্রেষ্ঠ ভাই। তোমার মতো মানুষকে আমি স্বামী হিসেবে পেয়ে সত্যিই সৌভাগ্যবতী। শায়লা বেগম দুচোখ বুজে রায়হান সাহেবের কাঁধে সুখের অশ্রু গড়ায়।
রায়হান সাহেব অনুভব করতে পারছেন কাঁধের দিকে তার পাঞ্জাবি টা ভিজে যাচ্ছে। পরম আবেশে তিনি শায়লা বেগমের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।
রায়হান সাহেব মনে মনে বলেন; এই পৃথিবীতে আমার আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই আল্লাহ। তুমি শুধু আমার পরিবারকে সব সময় সুখে রেখ।
দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে সাবিনা বেগম নীরবে চোখের জল ফেলছেন। ড্রইংরুম থেকে রায়হান সাহেব কে অশ্রুসিক্ত নয়নে ঘরের দিকে আসতে দেখে সাবিনা বেগম হন্তদন্ত হয়ে তাদের রুমের দিকে যান। দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে তাদের কথাগুলো শুনে সাবিনা বেগমের বুকফাঁটা নীরব আর্তনাদ গুলো অশ্রু হয়ে বেরিয়ে আসছে।
-সবার ভাগের সুখটা সবাই পেল আমার মেয়ের সুখের ঝুলিটা ফাকা কেন বলতে পারো ভাই? তুমি তো আমার মেয়ের মাথার উপর বাবার ছায়া হয়ে সারাজীবন দাঁড়িয়ে ছিলে। বাবার স্নেহ আদর দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছ। কিন্তু আসল সুখটাই আমার মেয়ে পেল না। তোমার কোন দোষ নেই আমি মা হয়ে আমার মেয়ের জন্য কিচ্ছু করতে পারিনি। তুমি আজ পৃথিবীর সবচেয়ে সফল পিতা আর আমি সবচেয়ে ব্যর্থ মা। অনির জায়গায় যদি আমার মেয়েটা থাকত তাহলে কি খুব ক্ষতি হতো?? সাবিনা বেগম মুখ চেপে কাঁদতে কাঁদত নিজের ঘরে চলে যান।
চারদিকে বইখাতা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রেখে পড়াশোনায় ব্যস্ত ছিল মিথিলা। সাবিনা বেগম রুমে ঢুকেই মিথিলাকে দেখতে পেয়ে চোখ মুছে নিজেকে সামলে নিয়ে মেয়ের পাশে বসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।
মিথিলা মাথা তুলে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সাবিনা বেগমের চোখ মুখ ফুলে আছে। চোখটাও কিছুটা লাল হয়ে আছে। মিথিলা অস্থির হয়ে বলে;
কি হয়েছে আম্মু তোমার? তুমি আবার কান্না করছো??
সাবিনা বেগম ম্লান হেসে বলেন;না রে পাগলি। কান্না করব কেন?(সাবিনা বেগম)
-তুমি আমাকে মিথ্যে বলে কি শান্তি পাও বলো তো আমাকে? আমি যত বার তোমাকে এই প্রশ্ন করি তুমি ততবারই এই উত্তর দাও। যাই হোক এখন কথা না বাড়িয়ে বলো তুমি কেঁদেছ কেন? আমার এখন অনেক পড়তে হবে। (মিথিলা)
-আচ্ছা ঠিক আছে। তুই পড়। আমার কিচ্ছু হয়নি আমি একদম ঠিক আছি। (সাবিনা বেগম)
মিথিলা তার মায়ের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। সে খুব ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে তার মা ব্যাপারটা এড়িয়ে যাচ্ছে। তাই সে এই বিষয়ে আর কথা বাড়ায় না।
-আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি এখানে বসো আমি তোমার কোলে মাথা দিয়ে পড়ব। (মিথিলা)
সাবিনা বেগম বিছানায় পা তুলে বসে পড়লে মিথিলা তার মায়ের কোলে মাথা দিয়ে পড়ে। সাবিনা বেগম মিথিলার মাথায় হাত রেখে মুচকি হাসি দেন। তার মনে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যায়।
রিশাদকে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে অনি। ফোনের নোটিফিকেশন টোনের আওয়াজ হতেই সে ঘাড় বাঁকিয়ে একবার দেখে নেয় ফোনের অবস্থানটা। রিশাদ দরজা খুলে স্ক্র্যাচে ভর দিয়ে বেরিয়ে আসে। অনি তাকে ধরে বিছানা অবধি নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয়।
ফোনটা হাতে নিয়ে ইমেইল বক্স ওপেন করতেই তার সামনে মেইলটা ওপেন হয়ে যায়। পর পর দুটো ইমেইল। তিন দিন আগেই এসেছিল। এত ঝামেলার মধ্যে অনির খেয়াল ছিল না। কোন রেস্পন্স না পাওয়ায় আরেকটা ইমেইল এসেছে। অনি মনোযোগ দিয়ে ইমেইলটা পড়ে কিছু একটা ভাবতে থাকে।
কিছুক্ষণ পর ফোন রেখে রিশাদের দিকে তাকাতেই রিশাদের সাথে চোখাচোখি হয়ে যায় অনির। রিশাদ আড়চোখে অনির দিকেই তাকিয়ে ছিল। অনির তাকানো দেখে সে নিজের দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার পূর্বেই অনির সাথে চোখাচোখি হয়ে যায়।
অনি স্বাভাবিকভাবেই বলে; কিছু লাগবে আপনার?
রিশাদ ছোট্ট করে না বলে জবাবা দেয়।
অনি কোন কথা না বলে ফোনটা রেখে দিয়ে রিশাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। রিশাদ অনিকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অনির দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।
অনি কোন রকম ভনিতা না করে বলে; আপনার কাছে একটা ল্যাপটপ হবে?আমার খুন আর্জেন্ট দরকার। ভার্সিটির একটা ইমারজেন্সি কাজ করতে হবে।
রিশাদ আমতা আমতা করে বলে;হ্যা আছে। কিন্তু কি করবেন?
ভার্সিটির একটা ইম্পরট্যান্ট ইমেইল করতে হবে। খুব আর্জেন্ট। আমার ল্যাপটপ টা আমি ওই বাড়িতে রেখে এসেছি। আজকে রাত ১২টার মধ্যে ইমেইলটা পাঠাতে হবে।
-ঠিক আছে। আপনি একটু গিয়ে দেখুন আমার স্টাডি রুমে টেবিলের উপরেই ল্যাপটপ টা পাবেন। পাশের রুমটাই আমার স্টাডি রুম। (রিশাদ)
অনি মাথা নাড়িয়ে ফোনটা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রিশাদ তার যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে থাকে। অঞ্জ বেরিয়ে যাওয়ার পর সে ভাবতে থাকে কি এমন মেইল সেন্ড করতে হবে।
অনি স্টাডি টেবিলের দরজাটা খোলে। রুমটা পুরো অন্ধকার ছিল। অনি ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে সুইচ টিপে লাইট অন করে।
লাইট অন করতেই অনি সামনে একটা সুন্দর পরিপাটি রুম দেখতে পায়। রুমের চারপাশে অনি একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। এক পাশের বিশাল দেয়ালটা জুড়ে বক শেলফে বই গুলো খুব গোছানো ভাবে সাজিয়ে রাখা। সারি সারি বই একটার উপর আরেকটা সাজিয়ে রাখা। বইগুলোর কাছে গিয়ে অনি সেগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে দেখে। বেশিরভাগই ইংলিশ রাইটারদের বুক। কিছু কিছু বাংলা রাইটারেরও আছে। অনি ঠিকঠাক মতো বাংলা পড়তে পারে না।তাই সে বুঝতে পারছে না কি ধরনের বই। তবুও সে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে। বক কালেকশন দেখেই অনি বুঝতে পারে রিশাদ নির্ঘাত বইপ্রেমী মানুষ। যে কেউই সেটা বুঝে যাবে। তাই অনিত বুঝতেও খুব একটা অসুবিধা হয় নি।
রুমের পরিবেশটাও খুব শান্ত। বাইরের কোন সাউন্ড ভেতরে আসছে না। মনে হচ্ছে সাউন্ডপ্রুফ। বই পড়ার মত একটা পারফেক্ট জায়গা।
রুমের মাঝ বরাবর স্টাডি টেবিল। টেবিলের উপর টুকটাক কিছু বই, নোটপ্যাড, পেনস্ট্যান্ড, স্যান্ড ক্লোক,টেবিল ল্যাম্প আর কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা।
রুমের এক পাশের দেয়ালের মাঝ বরাবর বিশাল পর্দা টাঙানো। অনি কৌতূহলী হয়ে সেদিকে যায়। পর্দাটা সরিয়ে দিতেই কাচ দিয়ে ঘেরা। এখান থেকে বাইরের সবটা দেখা যাচ্ছে। সাথে একটা বড় বেলকনি উন্মুক্ত আকাশের নিচে। কাচের এপাশ থেকেই অনি বেলকনিটায় চোখ বুলায়। এক পাশে খুব সুন্দর কারুকার্য করা দোলনা। অপর পাশে টি টেবিল সেট। রেলিং ঘেষে টবে বিভিন্ন ধরনের ফুলের গাছ লাগানো।
জায়গাটা অনির বেশ পছন্দ হয়। তবে এই মূহুর্তে সে সেখানে না গিয়ে স্টাডি টেবিলে রাখা ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে। ল্যাপটপ টা ওপেন করতেই পুরো স্ক্রিন জুড়ে অদ্রি রিশাদের ক্যামেরায় বন্দি একটি ভালোবাসার মূহুর্ত ভেসে ওঠে। ছবিটার দিকে অনি এক পলকে তাকিয়ে থাকে। বেশ ভালোই লেগেছে তার কাছে ছবিটা। এর চেয়ে বেশি কোন অনুভূতি তার মধ্যে কাজ করছে না। তাই সে এই বিষয়ে আর না ভেবে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
অনি খুব সময় নিয়ে ইমেইলটা টাইপ করে। বার বার টাইপ করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করার পূর্বেই আবার ডিলিট করে ফেলে। অনেক ভেবে চিনতে সে লাস্টবারের মতো টাইপ করে নিজের সব সংশয় দ্বিধা দ্বন্দ্বকে উপেক্ষা করে সেন্ড বাটনে ক্লিক করে দু চোখ বুজে কপালে হাত দেয়। তার কিছুটা মন খারাপ লাগছে তবে সে জেনেশুনেই সবটা করেছে।
কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে অনি লাইটটা অফ করে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। বার বার এক কথায় শুধু তার মস্তিষ্কে ঘুরপাক খাচ্ছে। যত সে মনে করতে চাচ্ছে না ততই বেশি মনে হচ্ছে।
এত কিছুর মধ্যে অনির হঠাৎ মনে পড়ল তার ঘাড়ে আর কোন ব্যথা হচ্ছে না। এত তাড়াতাড়ি ব্যথাটা সেড়ে যাবে তা সে ভাবতে পারেনি।তবে তার মনেও পড়ছে না ব্যথাটা কখন সাড়ল। ভাবতে ভাবতে সে রিশাদের রুমে চলে যায়।
অনিকে রুমে ঢুকতে দেখে রিশাদের কেন যেন ভালো লাগছিল। অনির আসতে দেরি হওয়ায় সে বার বার অনির কথাই ভাবছিল। রিশাদের দিকে তাকাতেই অনির ল্যাপটপের ছবিটার কথা মনে পড়ে যায়। রিশাদের দিকে সে তাকিয়ে থাকে তবে মুখে কিছু বলে না।
রিশাদ কিছু বুঝতে পারছে না। সে মনে মনে নিজের উপর খুব বিরক্ত হচ্ছে। অজানা কারণেই অনির সাথে এই মূহুর্তে তার কথা বলতে মন চাচ্ছে। রিশাদ বলেই ফেলে;আপনার কাজ হয়ে গেছে? এত টাইম লাগল যে?
-হ্যা হয়ে গেছে। সরি একটু বেশিই টাইম লাগল।(অনি)
-নো নো ইটস ওকে।(রিশাদ)
রিশাদ অনির সাথে টুকটাক কথা বলে। অনি যতটা সম্ভব কম কথা বলে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করে। এর মধ্যেই অনির ফোনটা বেজে ওঠে। জাহানারা বেগমের নামটা ভেসে ওঠে। সে খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে জাহানারা বেগমের কল করার পেছনের কারণটা। কেননা ইংল্যান্ড থাকতে জাহানারা বেগমই ছিলেন অনির লিগ্যাল গার্ডিয়ান। অনির সব কিছুর ইনফরমেশনই তার কাছে চলে যায়।
অনি ফোনটা রিসিভ করে বেলকনিতে চলে যায়।
-আসসালামু আলাইকুম দিদা(অনি)
-ওয়ালাইকুমুস সালাম।কেমন আছিস? (জাহানারা বেগম)
-আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো?(অনি)
-এইত আলহামদুলিল্লাহ। এখন বল ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্তটা নিয়েছিস তো? নিজের স্বপ্নটাকে এভাবে হাতছাড়া করলি কেন দিদি ভাই? (জাহানারা বেগম)
-এরকম সুযোগ আমার সামনে আরো আসবে ইনশাআল্লাহ । তুমি কিচ্ছু চিন্তা করো না দিদা। আর আমার পড়াশোনাও শেষ হয় নি এখনও। আমার উপর বিশ্বাস রাখো তুমি। (অনি)
-আমি জানি তো তুই সব পারবি। আফটার অল অনন্যময়ী শেখ ইজ দ্যা ভার্সিটি টপার। ইংরেজরাও আমার অনির সামনে পেরে ওঠে না। দেখতে হবে না নাতনিটা কার।(জাহানারা বেগম)
জাহানারা বেগমের কথা শুনে অনি শব্দ করে হেসে দেয়। রিশাদ অনির হাসির শব্দ পেয়ে সেদিকে দেখার চেষ্টা করে।
-কার সাথে এত হেসে হেসে কথা বলছে। এমনিতে তো আমার সাথে যখন থাকে কথাই বলে না দরকার ছাড়া। বললেও মনে হয় কেউ তার মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে আমার সাথে কথা বলাচ্ছে। আমি এত ভাবতে যাচ্ছি কেন? আমার কি তাতে যা খুশি করুক না কেন? (রিশাদ বিড়বিড় করে বলে)
অনি জাহানারা বেগমের সাথে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে। রিশাদ সহ বাড়ির সবার খোঁজখবর নেন। কথা শেষ করে অনি রুমে আসে।
রিশাদ কপাল টা ভাজ করে মুখটা গোমড়া করে বসে ছিল। অনি রিশাদের দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। রিশাদকে কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই………….
চলবে……….