অনন্যময়ী পর্ব_৪০
#সানজিতা_তুল_জান্নাত
গাড়িগুলো একের পর এক ছুটে চলেছে নিজ গন্তব্যের দিকে আপন নীড়ে। মাঝে মাঝে হর্ণের তীক্ষ্ণ শব্দ কানের পর্দায় এসে কেমন অনুভূতি জাগাচ্ছে। কপাল কুঁচকে যাচ্ছে। নীরবতায় ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।যান্ত্রিক ব্যস্ততার মাঝে উদাস অনির মন আছে মরীচিকার পানে ছুটছে। কল্পনাগুলো শুধু তার মস্তিষ্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে পরিণত করার প্রয়াস নেই।
কোলাহল মাঝে মাঝে অনির চিন্তার ছেদ ঘটায়। পুনরায় আবার শুরু থেকে কল্পনার সূচনা হয়। কল্পনাগুলো নিয়ে যেন অদ্ভুত খেলায় মেতে উঠেছে তার মন মস্তিষ্ক যার কোন বিরাম নেই,অন্তহীন।
গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ব্যস্ত শহরের দিকে তাকিয়ে আছে ভাবনায় তার অন্যকিছু। নামহীন অনুভূতিগুলোর সাথে পরিচিত হতে পারলে সমস্যার সমাধান সহজ হয়ে যেত। অন্তত অনির দিক থেকে সহজ হয়ে যেত।
নিতান্তই সহজ একটা সিদ্ধান্ত নিতে এতটা বিড়ম্বনার শিকার হতে হবে তা তো জানা ছিল না অনির। সিদ্ধান্ত তো অনেক আগেই নিয়ে নিয়েছে। অবশ্য সে নেয়নি। সে তো শুধু রিশাদের কথায় নীরব সম্মতি প্রদান করেছিল। আজ তা বাস্তবায়নের দিন ঘনিয়ে এসেছে। বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে এবার যে তাকে ফিরতে হবে। খুব সহজেই তো সেদিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যথাসময়ে ফিরে যাবে। এই অপ্রত্যাশিত সম্পর্কের বাঁধন ছিন্ন করে নিজের নীড়ে ফিরে যাবে।
অবেলায় একমুঠো সুখ পেয়েছিল সে। গ্রহণ করার অধিকার আছে ঠিকি তবে সে অধিকার প্রয়োগ করার অবকাশ নেই। তাই সে নিজেকে গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে। একবারও রুম থেকে বের হয়নি। এবাড়িতে আছেই আর সপ্তাহখানেক।
–“এই অসময়ে আপনি এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে?”(রিশাদ)
রিশাদের কণ্ঠস্বর শুনে অনি কিছুটা কেঁপে ওঠে। রিশাদের উপস্থিতি টেরই পায়নি সে।
–“কিছুনা এমনি। আপনি কখন ফিরলেন?”(অনি)
–“এইতো একটু আগেই।”(রিশাদ)
–“ওহ আচ্ছা।” বলে অনি আগের মতো করে দাঁড়িয়ে থাকে। হালকা হাওয়ায় চুলগুলো নড়ছে। বারবার তার চোখেমুখে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। এতে যেন কোন অনুভূতিই নেই তার।
রিশাদ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকে। এমন নীরব অনিকে দেখতে তার মোটেও ভালো লাগছে না। তার কাছে অনন্যময়ী মানে তো মেঘলা আকশের মাঝেও এক চিলতে সোনালি রোদ। অনন্যময়ী মানেই হাজার নীরবতার মাঝেও শব্দ খুঁজে নেওয়া।
অনির এমন নীরবতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে রিশাদ। আবছা আলোয় অনির মুখটা অস্পষ্টভাবে তার সামনে দৃশ্যমান হয়। শূন্য দৃষ্টি, উদাস চাহনি,মলিন চেহারা। রিশাদ কোথায় যেন কিঞ্চিত ব্যথা অনুভব করে। খুব মূল্যবান কিছু হারানোর সংকেত কি এটা?
অনির মলিন চাহনি রিশাদকে ভেতর থেকে অস্থির করে তুলছে ক্রমাগত। কেমন অদ্ভুত লাগছে অনন্যময়ীকে তার কাছে। যে মানুষটাকে সে ধীরে ধীরে চিনতে শুরু করেছিল,বুঝতে শুরহ করেছিল এক নিমিষেই যেন সে আজ আবার অচেনা হয়ে গেছে। কোন এক অপরিচিতার আগমন ঘটেছে বোধ হয়।
–“আপনার ব্যস্ত সময়ের মাঝে কি একটা দিন আমার জন্য বরাদ্দ করা যাবে?”নীরবতার চাদর ভেদ করে বলে ওঠে অনি।
অনির কথা রিশাদ প্রথমবারে বুঝে উঠতে পারে না। হয়তো তার অবচেতন মন তার কল্পনার অনন্যময়ী নামক ভাবনায় বিভোর ছিল তাই তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে অপরিচিতা অনন্যময়ীর কথাগুলো তার কানে শোনার অনুভূতি জাগালেও শব্দগুলো একত্রে মস্তিষ্কে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়।
–“মানে?কি বললেন আপনি?ঠিক বুঝলাম না।”(রিশাদ)
–“আপনি তো বলেছিলেন আমাকে একদিন আপনাদের ঢাকা শহর ঘুরিয়ে দেখাবেন। আপনার ব্যস্ত সময়ের মাঝে কি একটা দিন আমার প্রাপ্য হতে পারে,রিশাদ?”(রিশাদ)
অনির কথা খুব মনোযোগ দিয়ে শোনে রিশাদ। প্রত্যেকটা কথা তার মস্তিষ্কে গেঁথে যায়। তবে অনির মুখে উচ্চারিত শেষের শব্দটি রিশাদের মস্তিষ্কে শিহরণ জাগায়। তার স্নায়ুতন্ত্রে যেন অদ্ভুত আলোড়ন জেগে ওঠে। এই প্রথম অনির মুখে সে নিজের নাম শুনছে বোধ হয়। এর আগেও একবার বলেছে কিনা তার ঠিক মনে পড়ছে না। তবে বললেও বোধ হয় আজকের মতো অনুভূতি হয়নি তার।
অনির মুখনিঃসৃত “রিশাদ” শব্দটা রিশাদের মস্তিষ্কে বার বার নাড়া দিচ্ছে। অনির এমন আকুতি ভরা কণ্ঠস্বর রিশাদের মনে তোলপাড় শুরু করে দেয়। কেমন ছন্নছাড়া লাগছে নিজেকে।
অনির কণ্ঠে শুধুই যে অস্পষ্ট পীড়া ছাড়া আর কিছুই বোধগম্য হয় না রিশাদের। অনিকে বেশ অস্বাভাবিক লাগছে রিশাদের।
নিজেকে সামলাতে না পেরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনিকে জড়িয়ে ধরে রিশাদ। দুহাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে অনিকে।
কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে রিশাদের এমন ব্যবহারে অনি যেন একেবারেই নিস্তব্ধ হয়ে যায়। তার মস্তিষ্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে,অনুভূতিগুলো যেন একেবারে লোপ পেয়ে যায়। হাত পা ক্রমশ অবশ হয়ে গেছে। মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছে। দুচোখ জুড়ে আঁধার ঘনিয়ে আসছে। এক বুক কষ্টের মাঝে কিঞ্চিত প্রশান্তির হাওয়া অনির রন্ধ্রে রন্ধ্রে জানান দিয়ে যায় রিশাদের প্রতি তার অনুভূতির কথা।
সে কি রিশাদকে ভালোবেসে ফেলেছে? কি আশ্চর্যজনক কথা!সে কিভাবে পারে রিশাদকে ভালোবাসতে। এইসব কিছুই তার জীবনের তাসের ঘরের মতো ক্ষণস্থায়ী। কিছুই তার প্রাপ্য নয়। নাকি সে পেয়েও হারিয়ে ফেলছে নিজের দোষের কারণে। তার দোষটা কোথায়। সে তো আর পারেনা রিশাদের উপর জোর করে কিছু চাপিয়ে দিতে।
অনিকে জড়িয়ে ধরায় যেন রিশাদের ভেতরে ওঠা ঝড় কিছুটা থেমে যায়। অনির সুবাস তার অস্থিরতাকে যেন কাটিয়ে দিচ্ছে। চোখ দুটো তার ক্রমশ ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। দুফোঁটা অশ্রু চোখের কোণা বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। কষ্টবিহীন অশ্রু। এ অশ্রুতে যেন স্বস্তি বেরিয়ে আসে শুধু।
এভাবে যেন সে অনন্তকাল পার করব দিতে পারবে। অনন্যময়ীর প্রতি কেমন টান টান অনুভব করছে সে। এই তো সেই অনন্যময়ী যার সাথে কাটানো নগন্য মূহুর্তগুলোও রিশাদের মাঝে ছোট ছোট ঝড় তুলে দিতো। একটু একটু করে অনুভূতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করেছে।
অনন্যময়ী তার অভ্যেসে পরিণত হয়ে গেছে। প্রতিটা মূহুর্তে তার অনন্যময়ীকে চাই। অনন্যময়ী যদি চলে যায় কিভাবে থাকবে সে? রাতের বেলা ঘুম থেকে জাগা পেলে কার দিকে তাকিয়ে থাকবে সে? ছোট ছোট খুনসুটিতে মেতে উঠবে কার সাথে? ভাবতেই যেন রিশাদের কেমন ফাঁকাফাঁকা লাগতে শুরু করে।অনিকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। নীরবতার বিনিময় হয় একে অপরের মাঝে।
অনির শরীরটা ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। রিশাদের উপর পুরো শরীরের ভারটা ছেড়ে দেয়। সে আর নিতে পারছে না। বার বার সে নিয়তি তার জীবনটা জটিল করে দেয়। কেন এত জটিলতা?সে কি পারেনা একটু স্বস্তিতে বাঁচতে? সবার মতো স্বাভাবিকভাবে চলতে। নিয়তির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে নিতজ বড্ড ক্লান্ত। নিয়তির হাতে জীবনটা ছেড়ে দিয়ে তার জন্য বারবার নিজেকে প্রস্তুত তুলতে নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করেছে। দিনরাত সে পরিশ্রম করেছে। তবুও যেন প্রাপ্তির খাতাটা শুন্য তার কাছে।
অনির নিস্তেজ শরীরটা রিশাদের উপর ক্রমশ ভারী হয়ে যায়। রিশাদের এবার কিছুটা খটকা লাগেম রিশাদ অনির নাম ধরে ডেকে কোন সাড়া পায় না। রিশাদ বুঝতে পারে অনি জ্ঞান হারিয়েছে।
রিশাদ অনিকে ছেড়ে দিয়ে নিজের সামনে দাড় করানোর চেষ্টা করে। অনি রিশাদের গায়ে ঢলে পড়ে। অনিকে এ অবস্থায় দেখে রিশাদ কিছুটা ঘাবড়ে যায়। বার বার অনির নাম ধরে ডাকতে থাকে। অনির কোন রেসপন্স পায়না রিশাদ।
রিশাদ দেরি না করে অনিকে কোলে তুলে রুমে নিয়ে আসে। বিছানায় শুইয়ে দিয়ে জোরে আওয়াজ করে শায়লা বেগমকে ডাকতে থাকে।
রিশাদের এত উদ্বিগ্ন কণ্ঠস্বর শুনে শায়লা বেগম হাতের কাজ ফেলে যেন দৌঁড়ে দৌঁড়ে রুমে আসেন। রিশাদ উত্তেজনায় সবটা গুলিয়ে ফেলছে। শায়লা বেগম জলদি পানি আনতে বলেন।
রিশা দৌঁড়ে গিয়ে পানি নিয়ে আসে। শায়লা বেগম অনির চোখে মুখে পানির ঝাপটা দেন। অনি কোন প্রতিক্রিয়া দেখায় না। রিশাদ ডাক্তার আংকেলকে ফোন দিয়ে আসতে বলে।
হৈ চৈ এর আওয়াজ শুনে সবাই রিশাদের রুমে হাজির হয়। মিথিলাকে অনিকে এ অবস্থায় দেখে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। শায়লা বেগম অনেক চেষ্টা করেও অনির জ্ঞান ফেরাতে পারেন না। শায়লা বেগম আর সাবরিনা লাগাতার অনির হাত পা মালিশ করব দিতে থাকেন। রিশাদ যেন একেবারে অস্থির হয়ে পড়েছে। অনেকক্ষণ যাবত অনির জ্ঞান ফিরছে না।
মিনিট তিরিশেকের মধ্যে ডাক্তার আংকেল হাজির হয়। রিশাদ ওনাকে নিয়ে উপরে নিজের রুমে চলে আসে। ডাক্তার আংকেল অনক্র ব্লাড প্রেসার চেক করে পালস রেট চেক করে।
ব্লাড প্রেসার খুব লো হয়ে গেছে। পালসও অনেক স্লো চলছে। বোধ একটু বেশি মেন্টাল স্ট্রেস থেকে এমনটা হয়েছে বলেই আশংকা করেন ডাক্তার। তবে চিন্তার কোন কারণ নেই।
ডাক্তার আংকেল অনিকে একটা ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে দেন অনির একটু রেস্ট এর প্রয়োজন। কোন কারণে সে খুব টেনশনে আছে বোধ হয়। সেখান থেকেই প্যানিক এট্যাক হয়েছে। অনেক সময় এটা হয়ে থাকে। এটা খুব কমন বাট বেশি হলে তা শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়।
ডাক্তার কয়েকটা মেডিসিন প্রেসক্রাইব করে দেন। দু এক দিন রেস্ট নিলেই হয়তো ঠিক হয়ে যাবে। আর যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে যেন হসপিটালে গিয়ে চেকাপ করিয়ে নেয়।
অনির চেকাপ শেষ করে বেরিয়ে যান ডাক্তার আংকেল। রায়হান সাহেব তাকে এগিয়ে দিতে যান সাথে প্রেসক্রিপশনটাও নিয়ে যান মেডিসিন গুলো আনার জন্য।
অনি এখন ঘুমোচ্ছে। এখনো সে সজাগ হয়নি একবারও। তবে অনির সেরকম কিছু হয়নি ভেবে রিশাদ কিছুটা স্বস্তি পায়। কেন যেন তার মনে হচ্ছে অনির বোধ হয় তার জন্যই এই অবস্থা হয়েছে। কি এক যন্ত্রণাময় পরিস্থিতির শিকার সে।
অনি কিছুটা ধাতস্থ হলে রিশাদ সবাইকে গিয়ে ঘুমোতে বলে। রাতে আর অনির কিছু খাওয়া হয়না। শায়লা বেগম জোর করে রিশাদের মুখে কয়েক লোকমা ভাত তুলে দেন। রিশাদের গলা দিয়ে যেন নামছিলই না। তবুও জোর করে খেয়ে ঢক ঢক করে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেয়।
রাতে শায়লা বেগম অনির কাছে থাকতে চাইলে রিশাদ তাকে আশ্বস্ত করে সে অনির খেয়াল রাখবে। একরকম জোর করেই নিজের রুমে পাঠিয়ে দেয় তাকে। কেননা সে খুব ভালো করেই জানতো তার মায়ের শরীরটাও ভালো নেই। রাত জাগলে হয়তো আরো বেশি শরীর খারাপ করবে।
রিশাদ অনির পাশে খাটের সাথে হেলান দিয়ে বসে থাকে। অনির মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু একটা ভাবতে থাকে। অনির হাতটা নিজের মুঠোয় নিয়ে আরেক হাত দিয়ে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে।
অচেতন অনির কপালে ক্ষণস্থায়ী এক ভালোবাসার পরশ এঁকে দেয় রিশাদ। নিয়ন্ত্রণহীন কয়েক ফোঁটা অশ্রু অনির কপালে গড়িয়ে পড়ে। রিশাদের নিজেকে খুব অসহায় লাগছে আজ। তার যে খুব ইচ্ছে হচ্ছে অনন্যময়ীকে সারাজীবন নিজের কাছে বেঁধে রাখতে।
সে কি পারে না তাকে একটু আপন করে নিতে?খুব কি অসম্ভব তা?? তবে এতদিনে সে বুঝতে পেরেছে অনন্যময়ী শুধুই ভালোবাসার কাঙাল। যেখানেই সে ভালোবাসার অস্তিত্ব খুঁজে বিনা বাক্য ব্যয়ে সেখানেই ছুটে যাবে।
যদি সে পারত এভাবেই তার জীবনটা যেন খাটের কোণায় বসে ঘুমন্ত, অচেতন অনির মলিন মুখের দিকে তাকিয়ে দিতে। খুব কি খারাপ হবে সেটা? জীবন কেন তাকে বার বার এমন পরিস্থিতিতে ফেলে? সবকিছু নতুন করে শুরু করতে চাওয়াটা কি তার খুব অন্যায় হবে?
রিশাদের মুঠোয় ভরা অনির হাতটা কিছুটা নড়েচড়ে ওঠে। অনি তার ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করছে। রিশাদ কিছুক্ষণ ভালোভাবে দেখার পর বুঝতে পারে যে পানি চাইছে।
বেডসাইড টেবিলে থাকা পানির বোতলটা ঢাকনা টা খুলে অনির মুখের সামনে ধরে রিশাদ। অনির পিঠের নিচে হাত দিয়ে ধরে কিছুটা উঁচু করে তাকে পানি খাইয়ে দেয়। অনি পুনরায় ঘুমিয়ে পড়ে।
অনি ঘুমিয়ে পড়লে রিশাদ আবারো আগের মতো করেই বসে থাকে। অনির মাথায় আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। অনির দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে রিশাদেরও কিছুটা তন্দ্রাভাব চলে আসে। চোখ দুটো ছোট হয়ে আসে।
একসময় সে খাটের সাথে মাথা ঠেকিয়ে ওই অবস্থাতেই ঘুমিয়ে পড়ে। তার হাতের মুঠোয় অনির হাত আবদ্ধ। ঘুমের মাঝেও সে হাতদুটো শক্ত করে ধরে রেখেছে যেন ছেড়ে দিলেই সে মহামূল্যবান কোন বস্তু তার জীবন থেকে অনন্তকালের জন্য হারিয়ে ফেলবে।
চলবে……….
আসসালামু আলাইকুম?