অচেনা তুমি পর্ব-৮

0
1280

#অচেনা_তুমি
#মহিমা_হাছনাত_মাহি
#পর্বঃ০৮
রাত প্রায় ১০ টা। প্রচন্ড ঝড় আর শিলাবৃষ্টি হচ্ছে। ঝড়োবাতাসে চারপাশের গাছগুলোর দাপাদাপি শুরু হয়ে গেলো। সাদাফ আর নাদিম বাজার সাজার করে বাড়িতে ফিরছিলো। তারা এতোদিন রেস্টুরেন্টে খেয়ে নিতো। কিন্ত তার মা বাবার রেস্টুরেন্টের খাবার তেমন পছন্দ নয়। তাই আজ বাজার করতে গিয়েছিল। পথিমঘ্যেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হতে হতে ঝড়ের বেগ বেড়ে গিয়েছিল। সাদাফ খেয়াল না করে চলে গেলেও নাদিম দেখলো শুভ্রাদের গেইটের সামনে কে যেন সাদা কাপড় পড়ে শুয়ে রয়েছে।
শুভ্রাকে বের করে দেওয়ার পর দরজা লাগিয়ে মিসেস লুতফা চলে যায়। গেটের উপরে একটা ছোট ছাদ ও নেই যে সেখানে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি থেকে বাচার জন্য আশ্রয় নিবে। ভিজতে ভিজতে এক পর্যায়ে শুভ্রা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল।
নাদিমঃ দোস্ত দেখ দেখ! ভুত!!!!!! সাদা কাপড় পড়ে শুয়ে আছে।
সাদাফঃ হ্যা ঠিক ই তো কেউ পড়ে আছে। আর কিসের ভুত তুত রে? এই বয়সে এসে তুই ভুতে ভয় পাস নাদিম! লাইক সিরিয়াসলি? ( হাসতে হাসতে)
নাদিমঃ দোস্ত তাড়াতাড়ি চল চলে যাই।
সাদাফঃ দাড়া তুই আগে। এমন ঝড়ে কেউ খামকা কেন রাস্তায় শুয়ে থাকতে যাবে?মনে হচ্ছে উনার কোনো প্রবলেম হয়েছে। চল গিয়ে দেখি।
নাদিমঃ ভাইইইইই। যেচে বিপদ কিল্লাই বাড়াতে যাস তুই হ্যা। আমার ভয় করছে দোস্ত চল বাড়ি যাই।
সাদাফঃ এই না তো রাখ তো তোর ডর ভয়। চল আগে দেখি।
এই বলে সাদাফ নাদিম কে নিয়ে টেনে শুভ্রার দিকে এগিয়ে গেলো। নাদিম তো যতরকমের দোয়া আছে সব পড়া শুরু করে দিয়েছে ।
সাদাফঃ এই যে হ্যালো, শুনছেন? হ্যালো আপনাকে বলছি।
বেশ অনেক্ষন ডাকার পরেও সারা দিচ্ছে না। শুভ্রা উবু হয়ে থাকার কারনে মুখটাও দেখা যাচ্ছে না। এখন শুভ্রাকে উল্টো করতে হলে তাকে ছোতেও হবে। আশেপাশে কোনো মহিলা ও দেখতে পাচ্ছে না যে সাহায্যের জন্য জিজ্ঞেস করবে। সাদাফ এক প্রকার বাধ্য হয়েই মেয়েটিকে উল্টায়। উউল্টানোর সাথে সাথে শুভ্রার মুখ দেখেই সাদাফের আশেপাশে মনে হচ্ছে সবকিছু ঘুরছে। সে ঠিক দেখছে না তো। এটা সত্যিই শুভ্রা!
নাদিমঃ দোস্ত এতো ভুতের বদলে ভাবি রে। ভাই এটা কোনো আমাদের ফাদে ফেলার জন্য কোনো জ্বিন ভাবির রুপ ধরে আসে নি তো?
সাদাফ নাদিমের কথায় কোন পাত্তা না দিয়ে শুভ্রার দিকে মনোযোগ দিল।
সাদাফঃ মিস শুভ্রা। মিস শুভ্রা!! চোখ খুলুন, কি হয়েছে আপনার? ( মুখে হাল্কা থাপ্পড় দিয়ে) ।
তারপর সাদাফ পালস রেট চেক করে দেখে শুভ্রা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে। সাদাফ চটপট কোনো দেরি না করেই শুভ্রা কে কোলে নিয়ে উঠে হাটতে লাগলো।
নাদিমঃ দোস্ত করছিস টা কি। কোথায় নিয়ে যাচ্ছিস এরে তুই।
নাদিমের কোনো কথার উত্তর না দিয়ে সে শুভ্রাকে নিয়ে লিফটে উঠে গেলো। সাদাফ যে রেগে, চিন্তায় ফেটে যাচ্ছে নাদিম তা বেশ বুঝতে পারছে। তাই একেবারে চুপ থাকাটাই শ্রেয় বলে মনে হয়েছে তার।
বেল বাজার পর দরজার উপারে নিজের ছেলের কোলে এক মেয়েকে দেখে রীতিমতো টাস্কি খেয়ে গেলেন মালিহা আক্তার।
যে ছেলেকে কোনো দিন জোর করেও মেয়েদের সাথে দেখা বা বন্ধুত্ব করতে দেখেনি, এমনকি মেয়ে কাজিন দের সাথে যে দূরত্ব বজায় রেখেছে, বার বার বিয়ে করতে বলায় পাত্রী রিজেকশনের করেছে সে তার ছেলে আজ একটা মেয়েকে কোলে করে নিয়ে এসে সোজা বাড়িতে আনলো!! তবে এই সেই কেউ যার জন্য সাদাফের অন্যসব মেয়েদের প্রতি এতো অনিহা আর বিরক্তি। অবশ্য হবেই নাই বা কেন মেয়েটা যা দেখতে।
শুভ্রা সাদাফের কোল থেকে প্রায় নেতিয়ে পড়েছে। শুভ্রার মুখ দেখা মাত্রই মনে মনে বললেন ইয়া আল্লাহ এতো কোনো মেয়ে নয় যেন কোন রাজ্যের হুর পরী।
সাদাফঃ এভাবে তাকিয়ে থাকবে আম্নু নাকি ঢুকতে দিবে। মেয়েটা অজ্ঞান হয়ে গিয়েছে।
মিসেস মালিহা তাড়াতাড়ি করে দরজা থেকে সরে তাদের ঢুকার জন্য রাস্তা করে দিলেন।
সাদাফের বাবা সোফায় বসে টিভি দেখছিলেন। সাদাফ এসে শুভ্রাকে পাশের রোমে নিয়ে গেলো। ছেলের পিছে পিছে হাজারো কৌতুহল নিয়ে সাদাফের মা, বাবা আর নাদিম ও গেলো।
নাদিম কে সাদাফের মা বাবা চোখের ইশারায় ” মেয়েটা কে? ” বোঝাতে চাইলে, নাদিম ও ইশারায় ঠোঁট উলটে বললো “জানি না”।
সাদাফের বাবা যখনই শুভ্রার দিকে তাকা মাত্রই চেহারাটা বুকে গিয়ে গেথে যায়। ঠিক হুবহু সেই চেহারার গড়ন, সেই নাকের গড়ন, সেই চোখের গড়ন। এ যেন ঠিকই তার সেই ছোট্ট বেলাকার প্রিয় বন্ধুর চেহারার প্রতিবিম্ব। নিজের সেই প্রানপ্রিয় বন্ধুর চেহারা মি.মঞ্জুর সাহেবের কখনোই ভুলার নয়। শুভ্রাকে দেখে মি.মঞ্জুর বেশ চিন্তিত হয়ে গেলেন। স্বামীকে চিন্তিত চেহারায় দেখে মিসেস মালিহা হাতের কুনুই দিয়ে পেটে গুতু মেরে ফিসফিসিয়ে বলেঃ কি গো। তোমারও মনে কি একই চিন্তা এসেছে?
সাদাফের বাবাঃ কিসের চিন্তা আবার?
সাদাফের মাঃ এহহহ মানে? তোমার মাথায় কোনো ভাবনা আসে নি? তো কি নিয়ে এতো চিন্তা করছো। যাই বলো মেয়েটা কিন্তু বেশ দেখতে।
সাদাফের মায়ের এসব কথা মি. মঞ্জুরের মাথার উপর থেকে উড়ে গেলো।
সাদাফঃ আরে এতো ফিসফিস না করে বলবে আম্মু ওখন কি করে ওকে জ্ঞান ফিরাবো। কি হয়েছে, কে এই মেয়ে, কেন ওকে এনেছি সব বলবো। আগে বলো কি করে ওকে জ্ঞান ফিরাবো?
সাদফের মা এবার খেয়াল করলেন শুভ্রার পুরো শরীর ভেজা। কাপর-চোপর গায়ের সাথে লেপ্টে আছে।
সাদাফের মাঃ তোরা আগে সবাই রুমের বাইরে যা তো। মেয়েটা তো ভিজে নিয়ে একাকার। আমি ওকে চেঞ্জ করিয়ে দেই আগে। ততক্ষণে তুই ডাক্তার ডাক। এতোক্ষণে হয়তো বাইরে ঝড় থেমে গিয়েছে। আশেপাশে ফারমেসি তে কোনো ডাক্তার আছে কিনা দেখে আয়।
সাদাফের মায়ের কথা শুনতে দেরি হয়েছে কিন্তু কথামতো দৌড় দিতে নয়৷ ছেলের এতো ব্যস্ততা দেখে মা বাবা তো অবাক হচ্ছেই সাথে মনের কোণে খুশি ও হয়ে ওঠেছে।
মিসেস মালিহা আর একটি শাড়ি নিয়ে এসে শুভ্রাকে পড়িয়ে দেয়। শাড়ি পড়ানো শেষে সাদাফ আর নাদিম হম্বিতম্বি করে বাড়ি আসলো।
তুমুল বেগে ঝড় হওয়ায় সবাই দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে গিয়েছে। আপাতত কোনো ফারমেসি খুলা নেই।
মিসেস মালিহা বললেনঃ কিছু হবে না। ও শুধু অজ্ঞান ই হয়েছে। সকাল হতেই সে জ্ঞান ফিরে আসবে। কাল সকালে না হয় ডাক্তার আনিস।
মালিহার কথা শুনেও যেন সাদাফের স্বস্তি হলো না। বারবার শুভ্রার দিকে তাকিয়ে হাসফাস করছে। তারপর সাদাফের মা গিয়ে শুভ্রার চুল গুলো মুছে দেয় ভালো করে। তারপর পুরো শরীর কম্বল দিয়ে ঝাপিয়ে দেয়। জ্ঞান আসলে নিজে নিজেই গরমে কম্বল সরিয়ে দিবে।
রাত প্রায় ১ টা, বাজার যে এনেছিল সেই বাজার বাজারের জায়গায় ই রয়ে গিয়েছে। শুভ্রাকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে মিসেস মালিহার রান্নাটাও করা হয় নি। এদিকে এতোক্ষণে সবার খিদে ও লেগেছে। তাই তিনি শুভ্রাকে রেখে আপাতত রান্নাঘরে গিয়েছেন হাল্কা কিছু খাবার বানানোর জন্য।
সাদাফের বাবা ক্ষনে ক্ষনে শুভ্রার দিকে তাকিয়ে পুরনো ভাবনায় হারিয়ে যান। নাদিম বেশ লক্ষ্য করেছে যে সাদাফ আর তার বাব এক মূহুর্তের জন্যেও শুভ্রার দিক থেকে চোখ ফিরাচ্ছে না।
[ কি রে,,, বাপ বাটা দেখি দুইজনেই তাকায় আছে। এই মাইয়া তো দেখি যাদু জানে। কতো সুন্দর আমাদের সবাইরে বুখা রাইখা নিজে আরামে ঘুমাইতাছে ](মনে মনে)
সাদাফের মাথায় শুধু প্রশ্নই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এত রাতে বাইরে কি করছলো, কেন বা ছিলো, অজ্ঞান ই বা কেন হলো, কি হয়েছে তার সাথে।
এসব ভাবতে ভাবতে সাদাফের মা সবার জন্য গরম গরম স্যুপ নিয়ে এসেছে। এতো রাতে কেউ ভারি খাবার খাবে না তাই।
সবাই খেলেও সাদাফ খাবে না বলেছে। যার চোখের সামনে তার একমাত্র প্রিয় মানুষটি নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে রয়েছে, সে যতক্ষণ সুস্থ হচ্ছে না ততক্ষণ খাবে না। তাই সাদাফ বলেছে সে আর নাদিম বাইরে খেয়ে এসেছে। তার খিদে নেই। আর নাদিম তো এই কথা শুনে পুরাই অবাক হয়ে গিয়েছে। এই ছেলে বলে কি। খিদায় তার পেটে আগুন জ্বলছে আবার বলছে খেয়ে এসেছি। নাদিম বেশ বুঝতে পেরেছে যে সে না খাওয়ার জন্যই এই কথা বলেছে।
নাদিমঃ আন্টি আমি খেয়ে এসেছি। তবে তোমার হাতের কি করে মিস করি বলোতো। এতো রাতে কষ্ট করে বানিয়েছো। দেখেই খিদে পেয়ে গিয়েছে। দাও তো।
খাওয়া শেষে মিসেস মালিহা সবাই কে ঘুমাতে চলে যেতে বলে। আজ রাতে তিনি এই মেয়ের সাথে থাকবেন। রাতে যদি হুস আসে। সাদাফের খুব মন চাইছিলো শুভ্রার পাশে থাকতে কিন্তু মা কে সে কথা লজ্জায় বলতেও পারছে না। বাধ্য হয়েই চলে যেতে হলো তাকে। ছেলের এতো অস্থিরতা দেখে মিসেস মালিহা মনে মনে একটু খুশিই হয়েছেন। যাক আল্লাহ এতোদিনে মুখ তুলে চেয়েছেন। শুভ্রাকে সাদাফের মায়ের বেশ মনে ধরেছে কি সুন্দর মায়াবী চেহারা মেয়েটার। এসব ভাবতে ভাবতে তিনি শুভ্রার পাশে বসে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন।
এদিকে সাদাফের চোখে কোনো ঘুম নেই। মুখে চিন্তার ছাপ স্পষ্ট।
নাদিমঃ কি রে দোস্ত ঘুমা না।
সাদাফঃ ঘুম আসছে না রে, তুই ঘুমা।
নাদিমঃ ভাবি দেখছি তোর রাতের ঘুম কাইড়া নিজেই শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।
সাদাফঃ নিশ্চয় আজ ওনাকে অনেক টর্চার করেছে নাহলে কেউ এভাবে বাড়ির বাইরে পড়ে থাকে। আজও ওনার গালে হাতের ছাপ। আমি ছাড়বো না ওদের দেখিস। কালই আমি নারী নির্যাতনের মামলা করবো থানায়।
নাদিমঃ মামা চেইতা যাইস না। আগে ভাবি সুস্থ হোক তারপর সব দেখিস। আপাতত কাল সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা ছাড়া উপায়ও নাই। এখন ঘুমা।
সাদাফ এরপর লাইট বন্ধ করে দিলেও সে সারারাত দুচোখের পাতা এক করতে পারে নি।
সকাল বেলা রুমের বড় থাই গ্লাস দিয়ে সূর্যর আলো চোখে পড়তেই চোখ পিটপিট করে খোলে শুভ্রা। চোখ খোলে দেখে বেশ বড় একটা রূম দামি দামি ফার্নিচার এ সাজানো। পাশা চোখ পড়তেই দেখে তার মাথায় হাত দিয়ে একজন মধ্যবয়ষ্কা মহিলা খাটে হেলান দিয়ে ঘুমুচ্ছে। শুভ্রা তড়িঘড়ি করে উঠে পড়ে। শুভ্রার নড়াচড়া টের পেয়ে মিসেস মালিহার ঘুম ভেঙে যায়। সামনে তাকিয়ে দেখে শুভ্রা চোখ বড় বড় করে এক দৃষ্টিতে উনার দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর শুভ্রা উনাকে সালাম দেয়। সালামের কন্ঠ শুনেই মিসেস মালিহার মন টা হাউয়াই মিঠাইর মতো গলে যায়। কি সুন্দর নরম মিষ্টি গলার সুর।
সাদাফের মাঃ ওয়ালাইকুমুসসালাম। এখন কেমন আছো?
শুভ্রাঃ আলহামদুলিল্লাহ। মাথা টা একটু ব্যাথা করছে। আপনি কে আন্টি?কিছু মনে করবেন না আন্টি আমি না আপনাকে চিনতে পারছি না। আর আমি এখানেই এলাম কি করে।
সাদাফের মাঃ আস্তে আস্তে শান্ত হও। তুমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলে। আমার ছেলেই তোমাকে কোলে করে নিয়ে এসেছে।
কোনো ছেলে তাকে কোলে করে নিয়ে এসেছে শুনেই শুভ্রার মুখ লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছে।
শুভ্রার ওই ফর্সা৷ মুখ টকটকে লাল হয়ে যাওয়ায় মিসেস মালিহা বুঝতে পারছে যে শুভ্রা লজ্জা পেয়েছে।
শুভ্রার এবার নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে সে শাড়ি পড়ে আছে। কোনো মতে এলোমেলো ভাবে বেড়িয়ে পেচিয়ে পড়ানো হয়েছে। নিজের দিকে তাকিয়ে নিজের অবাক হয়ে যাচ্ছে। সে তো শাড়ি পড়েনি তবে!
সাদাফের মা বুঝতে পারছে যে শুভ্রার শাড়ি পড়া নিয়ে অবাক হওয়ার বিষয়টা।
সাদাফের মাঃ বৃষ্টিতে ভিজে কাল রাতে তোমার পুরো কাপড় ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই আমি তোমাকে আমার একটা শাড়ি পড়িয়ে দিই।
শুভ্রা বড় হওয়ার পর নিজের মায়ের সামনে কোনো দিন কাপড় ই বদলাই নি আজ নাকি কোনো অপরিচিত মহিলা তাকে কাপড় পড়িয়ে দিয়েছে। মিসেস মালিহার কথা শুনে শুভ্রা আরেক দফা লজ্জা পেয়ে গিয়েছিল।
শুভ্রাঃআপনাদের এতো কষ্ট দেওয়ার জন্য আমি অনেক লজ্জিত। আমাকে ক্ষমা করে দিন। আমার জন্য আপনাদের অনেক প্রব্লেম হয়েছে আন্টি।
সাদাফের মাঃ এমা এভাবে কেন বলছো তুমি! তুমি তো আমার মেয়ের ই মতো। আমার যদি মেয়ে থাকতো আর সে যদি অসুস্থ হতো আমি কি তাকে সেবা যত্ন করতাম না? ধরে নাও আমি তাই করেছে। আর তুমিও ধরো তোমার মা তোমাকে শাড়ি পড়িয়ে দিয়ে তোমাকে সেবা করেছে। আচ্ছা তুমি ফ্রেস হয়ে নাও। আর শাড়িটাও ভালো করে পড়ে নাও। ঘুমন্ত অবস্থায় তোমাকে ভালোভাবে পড়িয়ে দিতে পারি নি। শাড়ি পড়তে পারো তো? নাকি পড়িয়ে দিবো?
শুভ্রাঃ না আন্টি আমি পড়তে পারি শাড়ি। এতো কষ্ট করতে হবে না আপনাকে।
সাদাফের মাঃ ধুর পাগলি। কষ্ট কিসের? যাও ওইদিক টাই ওয়াসরুম। আমি একটু আসি।
এই বলে সাদাফের মা রুম থেকে বেড়িয়ে যায় দরজা লাগিয়ে। এদিকে শুভ্রার ভাবছে শুধু মিসেস লুতফা আর এই মহিলার কতো ব্যবধান!! যে মানুষটা তাকে চেনে না জানে না তবু কতোটা বিনয়ের সাথে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে মিসেস লুতফার বাড়িতে এতোদিন থাকা সত্ত্বেও তার প্রতি নূন্যতম ভালো ব্যবহার টুকু করে নি। কাল রাতের কথা ভাবতেই চোখ কান্নায় ভিজে এলো। এসব ভাবতে ভাবতে সে ওয়াসরুমে ফ্রেস হতে ঢুকে গেলো।
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here