#অচেনা_তুমি
#লেখিকাঃমহিমা_হাছনাত_মাহি
#পর্বঃ২৩
বাড়িতে সকলে আসার পর শুভ্রা সবার জন্য শরবত, ডিম পরোটা, নুডুলস তৈরি করে। সাথে শুভ্রার মায়ের তৈরি হালিম তো রয়েছে। শুভ্রাকে ইলিয়ানার মা এবং ভাইয়ের পছন্দ হয়েছে অনেক। শুভ্রার ব্যবহার, আচার আচরণ, কথাবার্তা সবকিছুই। আর ইলিয়ানা তো শুভ্রাকে প্রথম দিন থেকেই সহ্যই করতে পারে না। তবে ইলিয়ানার বাবা বেশ চুপচাপ। শুধু হা না ব্যাস এটুকুই কথা।
সাদাফের মাঃ এই নে রে খেয়ে দেখ হালিম টা একবার। আজ শুভ্রার জন্মদিন। তাই নাজু ই আজ সকলের জন্য বানিয়েছে।
ইলিয়ানা মুখ ভেংচিয়ে বলে “না না মামনী আমি ওসব অয়েলি ফুড খাই না। ”
আবিরঃ দাও দাও মামনী আমাকে দাও। উফফফ কতো দিন পর হালিম খাবো। আমাদের বাড়িতে তো সবই আব্বুর রুলস আর রুলস। হেলদি ছাড়া একটু কিছু খেতেই পারি না। ???
তারপর খাওয়াদাওয়া শেষে বড়রা সবাই সোফায় বসে বিয়ের আলাপ আলোচনা করছে। এদিকে ছাদের একপাশে ছোট ছাদ দেওয়া একটা বারান্দাতে এক পাশে বসে নাদিম, কোবরা আজকে বিকেলে শুভ্রার জন্মদিন উপলক্ষে কি কি করবে তা প্ল্যান করছে। কিছুক্ষন পর সাদাফ, শুভ্রা, আবির আর ইলিয়ানা ও আসে।
ইলিয়ানা তো বার বারই সুযোগ বুঝে সাদাফের গা ঘেঁষতে চাইছে। শুভ্রা ইচ্ছে করেই ইলিয়ানা যেন সাদাফের পাশে না ঘেঁষতে পারে সেভাবেই সাদাফের সাথে হাটছে।
আবিরঃ হেই গাইস। কি করছো তোমরা? ( নাদিম আর কোবরাকে লক্ষ করে)
কুবরাঃ না ভায়া তেমন কিছু না। ভাবছি আজকে কোথাও বেড়াতে যাবো, আপুর জন্মদিন উপলক্ষে। তাই মিস্টার বাদাম কে জিজ্ঞেস করছি আর কি।
আবিরঃ বাদাম??? বাদাম আবার কে? মানুষের নাম বাদাম হয়?
কুবরাঃ ওহহহ না নাহ আসলে…( পাশে মুখ ঘুরিয়ে দেখে নাদিম রাগান্বিত চুক্ষে তাকিয়ে আছে) আসলে ইয়ে মানে… নাদিম ভা… ভাইয়া কে জিজ্ঞাস করছি। আসলে বার বার এটা মুখ ফসকে চলে আসে আর কি হে হে ( ঢুক গিলে)
আবিরঃ ওয়াও নাইস। কিউট শুনতে কিন্তু । নাদিম ভায়া কি বলো? তোমারও নিশ্চয় শুনতে ভালো লাগে?
নাদিমঃ হুম খুব ( দাতে দাত চেপে)
এরি মাঝে ইলিয়ানা আগ কেটে বলে উঠে” তা শুভ্রা স্যাডি তোমাকে কি গিফট দিয়েছে?? আজ তো তুমার বার্থডে আর স্যাডির ফিয়েন্স ও তুমি। নিশ্চয় তোমাকে গিফট দিয়েছে? ”
হঠাৎ এমন প্রশ্নে শুভ্রাসহ সকলেই ভেবাচেকা খেয়ে যায়। হ্যা সাদাফ এর কাছ থেকে র্যাপিং গিফট না পেলেও তো জীবনের সবচেয়ে আশ্চর্য সারপ্রাইজ টা তো সাদাফ তাকে দিইয়েছেই৷ এতো সুন্দর করে তার জন্মদিনে কেউই তাকে ইউশ করে নি। আসলে সাদাফ তো কালকে সেই সারপ্রাইজ হিসেবে কিছু এরেঞ্জমেন্টস ই করেছে। গিফট তো আজকে সবার সামনে দিবে বলেই বসে আছে।
ইলিয়ানাঃ কি হলো চুপ করে আছো যে? কিছু দেই নি? অহ মাই গড!! তুমি স্যাডির ফিয়েন্স হয়েও তোমাকে কিছুই দেয় নি। অথচ আমাকে তো গত বছর স্যাডি কতো দামি গোল্ডের ব্রেসলেট দিয়েছিলো। দেখো স্টিল আমি এটা পড়ে আছি। এটা তো আমার ফেভরিট ব্রেসলেট।
শুভ্রাঃ সব কিছু দাম দিয়ে বিচার হয় না আপু। পৃথিবীতে এমন এমনও কিছু উপহার আছে যার মূল্য দাম দিয়ে হয় না। কেননা সেটা টাকা দিয়ে কেনা উপহারের চেয়েও বড় উপহার। আর কে বলেছে আমাকে উনি গিফট দেয় নি। উনি আমাকে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বেস্ট গিফট টাই দিয়েছেন। আর এসব সোনার ব্রেসলেট, গয়নার আমাকে দেওয়া উপহারের চেয়েও মেকি।
শুভ্রার বলা কথাগুলো ইলিয়ানার একদম সহ্য হলো না। হুহ বলে মুখ ভেংচি দিয়ে গটগট করে চলে গেলো। ইলিয়ানা চলে যাবার পর পর আবির শুভ্রার কাছে ইলিয়ানার ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চায়।
আবিরঃ আসলে ভাবি সরি। মেয়েটা এমনই। আমরা এতো বুঝানো সুঝানোর পরেও মানুষ করতে পারলাম না ঠিক মতো। সবসময় এরকম টেরামি করে। ওর হয়ে আমি ক্ষমা চাইছি ভাবি।
শুভ্রাঃ আরে ভায়া ইটস অকে। আমি কিচ্ছু মনে করি নি। উনি তো সাদাফ কে খুব পছন্দ করেন যেহেতু সাদাফ আমায় বিয়ে করছেন এটা তো উনি মেনে নিতে পারছেন না তাই এমন কথা বলেন উনি।
শুভ্রার কথায় আবির লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলেছে। সত্যিই তার বোনের এইসব কান্ডকারখানায় যেখানে সেখানে তাকে অপদস্ত হতে হয়।
বিকেলে সকালে মিলে বের হয় বেড়াতে যাবে বলে। আজ বড়রাও একসাথে বেড়াতে বের হয়েছে। আজ সকলে মিলে বানিজ্য মেলায় বেড়াতে যায়। বড়রা তো গিয়ে শাড়ি, পর্দা, রান্নাবান্নার জিনিসপত্র নিয়ে মাতামাতি শুরু করে দিয়েছে।
কুবরার বড্ড ইচ্ছে করছিলো বড় নাগরদোলাতে চড়তে। কক্সবাজার থাকতেও ভয় পাবে বলে তাদের কোনো দিন চড়তে দেয় নি। এই বারে তো সে চড়বেই চড়বে।
কুবরাঃ এই আপু চলনা নাগর দোলায় চড়বো।
শুভ্রাঃ একদম না আমার খুব ভয় লাগে। এখানে চড়তে গেলে দেখবি নিজেই ভয়ে অজ্ঞান হয়ে মাথা ঘুরে পরে যাবি।
কুবরাঃ উমমম না না আপু। আমি তো এখন আর ছোট নেই ভয় কিসের। চলো না একবার।
সাদাফঃ এতোবার যখন বলছে তাহলে চলোই না। কুবরা…. ওখানে কিন্তু খুব মজা। চড়তে কিন্তু বেশ রোমাঞ্চকর।
নাদিমঃ হুমমম.. বেশ রোমাঞ্চকর…… ( বাকা হেসে)
কুবরাঃ এহহহ আপনি কি বলতে চাইছেন আমি বুঝিনি মনে করছেন নাকি মিস্টার পচা বাদাম ??। আমি কিন্তু মোটেও ভয় পাই না, অত্যান্ত সাহসী লেভেলের মেয়ে আমি। এসব ঠুনকো জিনিসে আমার ভয় পয় কিসসু করে না। ( ভাব নিয়ে ??)
নাদিমঃ তাহলে চলো দেখা যাক।
শুভ্রাঃ দেখুন আমি বলছি, আমার অনেক ভয় করে যাবো না আমি।
সাদাফঃ গিয়েই দেখো না একবার। দেখবে খুব ভালো লাগবে। তেমন ভয় করে না। প্রথম বার ই এমন হয়।
এই বলে সাদাফ আর শুভ্রা একটাতে উঠেছে। নাদিম আর কুবরা একটাতে উঠেছে। ইলিয়ানা আর তার ভাই একটা তে উঠেছে।
প্রথম প্রথম উঠে সব ঠিকি ছিলো। কিন্তূ দোলনা টপ এ উঠতেই শুভ্রার মনে হলে এই বুঝি দুলতে দুলতে টুপ করে ৪ তলার উপর থেকে পড়ে গেলো। চোখ দুটো খিচে বন্ধ করে সাদাফকে শক্ত করে বাহু ধরে জড়িয়ে ধরে শুভ্রা।
সাদাফঃ আরে শুভি ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই। দেখো উপর থেকে বাইরে দৃশ্য কতো সুন্দর।
শুভ্রা প্রথম বার ভয় পেলেও দ্বিতীয় বার সাদাফের কথায় ভরসা পেয়ে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে সত্যিই কি মনোরম দৃশ্য।
এদিকে শুরু শুরু কুবরার দিক দিয়ে সব ঠিকঠাক হাসি খুশিই বাইরে দিয়ে সব দেখছিলো। আস্তে আস্তে যখন উপরে উঠে মনের মধ্যে একটু একটু ভয় কাজ করছিলো। যখন দোলনা উপর থেকে নিচে নামছিলো, কুবরার মনে হচ্ছিলো এই বুঝি দোলনা ভেঙে পড়ে গেলো।
কুবরাঃ আয়ায়ায়ায়ায়ায়া মধ্যে মিস্টার বাদাম…… আমরা পড়ে যাচ্ছি… আয়ায়ায়া দোলনা ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। ( নাদিমকে জোরে চেপে ধরে)
নাদিমঃ আস্তে আস্তে মিস কুবরা… আমার কান তো ফাটিয়ে দিচ্ছেন আপনি।
কুবরাঃ নায়ায়ায়া আমার খুব ভয় লাগছে। আমি নেমে যাবো। আল্লাহগো….. আয়ায়ায়া।
নাদিমঃ হুয়াট রাবিশ, আপনার জন্য কি এখন দোলনা থামাবে নাকি?? এখন আপনার সাহস কোথায় গিয়েছে? আপনি না খুব সাহসী?
কুবরাঃ আল্লাহ মিস্টার বাদাম মিয়া৷ বলছি তো আমার ভয় করছে আমি নেমে যাবো। আল্লাহ আমি আর জীবনেও চড়বো না। আয়ায়ায়ায়া……..
নাদিমঃ এভাবে থাকুব আর চোখ বন্ধ রাখুন। দেখবেন ভয় লাগবে না। ( কুবরাকে নিজের সাথে জড়িয়ে)
কুবরা শক্ত করে নাদিমকে জড়িয়ে ধরে চোখ খিচে বন্ধ করে আছে। কেন জানি না নাদিমকে জড়িয়ে ধরাতে কুবরার খুব ভালো লাগছে। আর ভয় করছে না। চিৎকার ও করছে না। এদিকে কুবরাকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নাদিমের বুকে কেমন প্রশান্তি ফিল হচ্ছে। যেমনটা এর আগেও কুবরা দুইবার জড়িয়ে ধরায় হয়েছিলো। কিসের এতো প্রশান্তি? কিসের এতো ভালো লাগা? তবে কি সত্যি সত্যিই এই ঝগরুটে মেয়েটার মায়ায় জড়িয়ে গেলো? সত্যিই কি ভালোবেসে ফেললো? নাদিম শুধু চোখ বুঝে দোলে দোলে বিষয়টাকে উপভোগ করতে লাগলো।
কিছুক্ষন পর মনে হলো দোলনা থেমে গিয়েছে। এই মূহুর্তে মনে হচ্ছে সময়টা যদি আরো বেড়ে যেতো তবে মন্দ হতো না। আরো কিছুক্ষন এভাবে দুললেও হয়তো মন জুড়াতো না। নাদিম তাকিয়ে দেখে কুবরা এখনো চোখ বন্ধ করে তাকে জড়িয়ে ধরে আছে। নিজের অজান্তেই নাদিম একটা মিষ্টি হাসি দেয়।
নাদিমঃ এই যে মিস কুবরা…. এভাবেই জড়িয়ে ধরে থাকবেন নাকি চলবেন?? দোলনা তো কবেই থেমে গিয়েছে।
কুবরা মাথা তুলে দেখে সত্যিই দোলনা থেমে গিয়েছে। বোঝা মাত্রই চোখেমুখে ফুটে উঠে বিরক্তির ছাপ।
নাদিমঃ কি হলো??? আরো কিছুক্ষন জড়িয়ে থাকার ইচ্ছে নাকি? নাহলে আরেকবার বলো আরেক রাউন্ড দিই ( চোখ টিপ দিয়ে)
এটা শুনার পর পরই কুবরা লজ্জায় নাদিম কে ধাক্কা দিয়ে বেরিয়ে চলে এলো।
সাদাফঃ কি রে তোদের এতোক্ষন লাগে?
নাদিমঃ কি আর করবো বল তোর বোন কাম শালিকা তো চিৎকার দিয়ে আমার কান ঝালাপালা করে ফেললো। মনে হচ্ছে আমি আর কিছু শুনতে পারছি না ( কান ঝাকি দিতে দিতে)
কুবরাঃ তো শুনতে না পারলে উত্তর কি করে দিচ্ছেন…??? ( চিৎকার দিয়ে)
নাদিমঃ ও বাবাগো শেষ আমার কান।
সাদাফ আর শুভ্রা সহ বাকি সবাই হাসতে হাসতে স্টলের দিকে রওনা দিলো।
শুভ্রা আর কুবরা পায়েল, কানের দুল, টিপ, উড়না, বিভিন্ন কসমেটিকস, ফুল, মাথার কাটা, ক্লিপ কিনে। আর সাদাফ আর নাদিম ও বিভিন্ন জিনিস কিনে। আজ সকল কিছু ট্রিট সাদাফের পক্ষ থেকে। তাই সকল কিছুর খরচ সাদাফ নিজেই দিবে।।
স্টল ঘুরতে ঘুরতে একটা রুপার সেট আর একটা পায়েলে চোখ আটকে যায়। মনে মনে কি যেন ভেবে মুচকি হেসে সে দুটু কিনে নেয়।
তারপর সকলে মিলে মেলার এক রেস্টুরেন্টে ঢুকে সাদাফ সবার আগে একটা কেক অর্ডার দেয়। কেক রেডি হতে হতে সকলের জন্য ফুচকা চলে আসে।
।আজও ইচ্ছে ছিলো ওদের ফুচকার রেস দিতে তবে আজ তো ফুচকা ছাড়া আরও অনেক কিছুও খেতে হবে।
খাওয়ার কিছুক্ষন পর কেক সমেত, বিরিয়ানি, চিকেন তান্দুরি, গরুর মাংসভুনা, প্রত্যেকের জন্য মামলেট, মিষ্টি, সন্দেশ, চমচম, চলে আসে।
তারপর সকলে মিলে ফটোশোট করে।
এবং বাড়ি ফিরে আসার পর একে একে সকলে শুভ্রাকে গিফট দেয়।
সাদাফের বাবা শুভ্রাকে একটা আইফোন গিফট করে।
সাদাফের মা তাকে এখান থেকে কিনেই বেশ কয়েকটা শাড়ি দেয়।
ইলিয়ানার বাবা মা তাকে মেলা থেকে কিনেই কয়েকটি থ্রিপিস আর কূর্তি দেয়।
নাদিম একটা বড় গোল্ড ফিশের একুরিয়াম দেয়। বাড়িতে সে লক্ষ্য করেছিলো শুভ্রা বেশ মাছেদের সাথে হেসে হেসে খেলা করতো।
আবির যখন গিফট দিতে আসছিলো তখন কুবরাও এসেছিলো গিফট দিতে। কুইন্সিডেন্সলি তাদের দুজনের উপহার ই মিলে গেলো। দুজনেই শুভ্রাকে ঘড়ি গিফট করেছে।
আবিরঃ আরে মিস কুবরা! আপনার আর আমার পছন্দ এক বলতে হবে। দেখুন কেমন মিলে গেলো দুজনের ই গিফট।
কুবরাঃ হুম তাই ই তো দেখছি। তবে আপনার চয়েস অনেক সুন্দর বলতে হবে। আমার টা থেকে আপনার টা কিন্তু খুব সুন্দর দেখতে৷
আবিরঃ এমা এভাবে বলছেন কেন? আপনার টাও যথেষ্ট সুন্দর। দেখুন ভাবির হাতে ভালো মানিয়েছে।
কুবরাঃ হুমম তা না হয় ঠিক আছে। তবে ভাবছি এবার থেকে শপিং করতে গেলে আপনাকেই নিয়ে যেতে হবে। আপনার চয়েস কিন্তু খুব ভালো। কেনাকাটার সময় ও আপনি আমাকে অনেক হেল্প করেছিলেন।
আবিরঃ যো আপকা মারজি ??।
কুবরা এবং আবির এর এই হেসে হেসে কথা বলাতে নাদিমের ভেতর রাগে আগুন জ্বলছে। ইচ্ছে করছে ওই আবির কে গিয়ে ফাটিয়ে দিতে৷ আর কুবরার ও এভাবে হেসে হেসে কথা বলার কি দরকার।
ইলিয়ানা কিছুই দেয় নি শুভ্রাকে। এমনকি উইশ ও করেনি। সে তার নিজের মতো করে ফোন ঘাটছে।
সবশেষে সাদাফ এসে তার মায়ের ব্যাগ থেকে একটা বক্স বের করে শুভ্রার সামনে দাঁড়ায়। তারপর সেটা শুভ্রাকে ” হ্যাপি বার্থডে মাই ডিয়ার শুভি, এভাবে যেন তুমি দীর্ঘজীবি হয়ে আমৃত্যু আমার পাশে থাকতে পারো। ”
শুভ্রা বক্সটা অন্য গিফটের সাথে নিয়ে রেখে দিতে গেলেই সাদাফ বলে ” খুলে তো দেখো! পছন্দ হয়েছে কিনা? ”
শুভ্রাঃ আপনি নিজের আমার জীবনের বেস্ট গিফট। আর আপনার দেওয়া সকল উপহার ই সবচেয়ে স্পেশাল । অবশ্যই আমার পছন্দ হবে। খুলে বিচার করার কোনো দরকার নেই।
ইলিয়ানাঃ কেন এভাবে তো এড়িয়ে গেলে হবে না। আমাদের ও তো দেখতে হবে স্যাডি তোমাকে কি দিয়েছে।
তারপর সাদাফ নিজে বাক্সটি খুলে। বাক্সটি খুলার সাথে সাথে তো ইলিয়ানার চোখ কপালে উঠে গেছে। কতো সুন্দর একটা ডায়মন্ড এর সেট। নিজের অজান্তেই ইলিয়ানা দেখে “ওয়াও..” বলে উঠে।
সাদাফ শুভ্রাকে সেট টা পড়িয়ে দিতে দিতে বলে ” সাদাফ চৌধুরীর ওয়াইফের জন্মদিন আর আমি তো আমার ওয়াইফ কে সবচেয়ে বেস্ট উপহারটাই দিবো বলো “। তারপর আস্তে আস্তে ইলিয়ানাকে দেখি হাতে হীরের চুড়ি, আংটি, কানের দুল, গলার সেট টা পড়িয়ে দিতে।
ইলিয়ানার তো ইচ্ছে করছে গিয়ে শুভ্রার কাছ থেকে ছিনিয়ে সব নিয়ে ফেলতে। রাগে আগুন জ্বলে খা খা করছে ইলিয়ানার। এতোটুকুও আশা সে করে নি। মুখ ভেংচি দিয়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে চলে যায়।
সকলের ভালোবাসা পেয়ে শুভ্রা আর মহাখুশি। আজ নিজেকে সত্যিউ খুব ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে তার, যে সে এতোগুলো ভালোবাসার মানুষ পেয়েছে। আজ যেন শুভ্রার নিজেকে বড্ড সুখি মনে হচ্ছে।
#চলবে।