অনন্যময়ী সানজিতা_তুল_জান্নাত পর্ব_০৪

0
9102

অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_০৪

ঘর থেকে বেরিয়ে অনি সোজা জাহানারা বেগমের কাছে যায়।জাহানারা বেগম নিজেও
অনির জন্যই অপেক্ষা করছিল।অনি জাহানারা বেগমকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বের হয়।
বেরিয়ে আসার সময় অনির কানে ভেসে আসে;
-অনন্যময়ী…..

কোন নারী কণ্ঠে নিজের নাম শুনে অনির পা দুটো আপনা আপনি থেমে যায়।অনির জীবনে খুব সীমিত সংখ্যক মানুষ অনিকে তার বিশেষ নামে ডাকে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন অনির মা অনামিকা শেখ।

অনি ভেসে আসা শব্দকে অনুসরণ করে পিছনে ফিরে অবাক চাহনিতে মানুষটার দিকে নজর দেয়। সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা কে আন্দাজ করতে পারলেও অনি কিছুটা অবাক হয়।তবে সেটা সে অপ্রকাশিত রেখে কোনরূপ প্রতিক্রিয়া দেখায় না

অনির কোন সাড়া না পেয়ে তার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকে অনামিকা শেখ। সত্যি বলতে অনির জানা নেই মায়ের ডাকে কিভাবে সাড়া দিতে হয়। জন্মের পর থেকেই যে মানুষটার সান্নিধ্য পাওয়ার জন্য উদগ্রীব থাকত আজ সেই মানুষটার ডাক অনিকে নীরবতা ধারণ করায়।

এরপর কিছুটা শান্ত গলায় অনামিকা শেখ বলেন;
তোমরা হাসপাতালে যাচ্ছো?? আমিও তোমাদের সাথে যাব।
অনি অনামিকা শেখের কথায় কোন উত্তর করেনা।জাহানারা বেগম অনামিকা শেখের কথায় সম্মতি দিলে তারা ৩ জন বেরিয়ে পড়ে।

গাড়িতে কেউ কারো সাথে কোন কথা বলে না।একপাশে বসেছে অনি অপরপাশে বসেছে অনামিকা শেখ।মাঝে জাহানারা বেগম।সাধারণের দৃষ্টিতে অনি ও অনামিকা শেখের মধে দূরত্বটুকু সুবিশাল না হলেও বহু বছর আগেই তাদের মধ্যে বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। সময়ের সাথে যা বেড়েই চলেছে। তবে এই দূরত্বের কারণ অনির কাছে আজও অজানা।

অনামিকা শেখ অনির সাথে কখনোই কোনরকম দুর্ব্যবহার বা খারাপ আচরণ করেননি ঠিকি তবে নিজের মেয়ে বলে তাকে কাছে টেনে কখনো দুটো স্নেহের বাণী শুনাননি। নিজের কোলে মাথা রেখে ভুলে হাত বুলিয়ে দেননি;অনির কপালে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেননি।বরাবরই তিনি অনিকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছেন।অনি সব কিছু বুঝতে পারার পর থেকেই অনামিকা শেখের অবহেলা গুলো ধীরে ধীরে অনুধাবন করতে শেখে তখন থেকে সে নিজেও অনামিকা শেখের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে থাকে।অনামিকা শেখের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতে শুরু করে। যার ফলশ্রুতিতে দূরত্বটা ধীরে ধীরে বিশাল আকার ধারণ করেছে। যেখানে মা মেয়ে একি ছাদের তলায় থাকা সত্ত্বেও তাদের মধ্যে কুশল বিনিময় ছাড়া কোন কথা হয়নি।মায়ের উপর অনির বড্ড অভিমান জমে আছে অভিমানের পাল্লাটা দিনে দিনে ভারী হয়ে গেছে।কি এমন করেছে সে যার কারণে তার মা তাকে এত অবহেলা করে।বাইরের সবার কাছে মা মেয়ে হিসেবে পরিচিত থাকলে ভেতরের খবর খুব সীমিত সংখ্যক মানুষেরই জানা।

কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা হাসপাতালে পৌঁছে যায়।অনি তার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে। হাসপাতালের করিডোরে পা রাখতেই অনির নজর পরে রায়হান সাহেবের দিকে।রায়হান সাহেবের পাশেই বসে আছে আশরাফ শেখ।ভোরবেলাই আশরাফ সাহেব হাসপাতালে পৌঁছে যান।বেয়াই এর সম্পর্ক ছাড়াও তাদের মধ্যে বহু পুরনো বন্ধুত্বের সম্পর্ক বিরাজমান।যা এই বিয়েটার মাধ্যমে আরো বিস্তার লাভ করেছিল।তবে ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুটা মন্থর হয়ে যায়।

নত মস্তক, কপালে চিন্তার ভাজ অসহায় ভঙ্গিতে বসে আছে একজন পিতা। রায়হান সাহেব কে দেখে অনির কপালেও চিন্তার ভাজ পরে। দূর থেকে ঝাপসা চোখে কোন অবয়ব কে এগিয়ে আসতে দেখে রায়হান সাহেব হাতের চশমা লাগিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। অনির স্পষ্ট অবয়ব দেখে রায়হান সাহেব এর মুখে ক্ষীণ খুশির ঝলকানি দেখা দেয়।

রায়হান সাহেবকে উদ্দেশ্যে করে অনি বলে;
– আসসালামু আলাইকুম আংকেল। কেমন আছেন?
-এইত মা তোকে দেখে এখন ভালো আছি।
জাহানারা বেগম ও অনামিকা শেখের সাথে কুশল বিনিময় করেন রায়হান সাহেব।

রায়হান সাহেব অনিকে নিয়ে রিশাদের কেবিনে প্রবেশ করে।রিশাদের মাথার কাছেই বসে তার মা শায়লা বেগম ক্রমাগত অশ্রুপাত করছেন। অপর পাশে রিশাও বসে চোখের পানি ফেলছে। অনির আগমনে রিশা বেশ খুশি হয়। সে অনিকে জড়িয়ে ধরে। তবে শায়লা বেগম অনির আসায় খুশি হয়েছেন কিনা তা অনি বুঝতে পারে না। শায়লা বেগম অনির সাথে কুশল বিনিময় করে তিনি পুনরায় নীরবে চোখের ভপানি ফেলতে থাকেন।এই মূহুর্তে অনির উপস্থিতি তার মনে কোন প্রভাব ফেলছে না।আপাতত তিনি তার ছেলেকে নিয়েই অধিক চিন্তিত।

রিশাকে ছেড়ে দিয়ে অনির নজর পর রিশাদের উপর।ঘুমন্ত অবস্থাতেও রিশাদের মুখে বেদনাময় অবয়ব ফুটে উঠেছে। পুরো মাথা জুড়ে সাদা ব্যান্ডেজের ভিড়েও বিষাদের ছায়াটা যেন আরো বেশি দৃশ্যমান। এক হাতে এক পায়ে প্লাস্টার লাগানো। রিশাদের করুণ চাহনি দেখে অনির মনে এক অজানা কষ্টের মেঘ এসে ভিড় জমায়।

অনি রিশাকে অতিক্রম করে ধীরে ধীরে রিশাদের দিকে এগিয়ে যায়।শায়লা বেগম এবার অনির দিকে গভীর ভাবে নজর দেন।এই মেয়েটার চোখে মুখে তিনি প্রথম দিন থেকেই এক অদ্ভুত ধরনের প্রশান্তি খুঁজে পান। অনিকে দেখলেই শায়লা বেগম যেন তার মায়ায় জড়িয়ে যান।তাই হয়তো রায়হান সাহেব যখন রিশাদের সাথে অনির বিয়ের কথা বলেন তখন মুখে হ্যা না বললেও তিনি কোনরকম বিরোধিতা না করে নীরবে সম্মতি প্রদান করেছিলেন ছেলের ভালোর কথা ভেবে।তাই আজ ছেলের এই অবস্থায় শায়লা বেগম ও মনে মনে বেশ অনুতপ্ত।শায়লা বেগম নিজেও বেশ দুর্বল হয়ে পড়েছেন শারীরিক ও মানসিক ভাবে। তাই এই মুহুর্তে অনির প্রতি কোন আকর্ষণ অনুভব করছেন না।

অনিকে রিশাদের মা শায়লা বেগম ইশারা করে নিজের পাশে বসতে বললে অনি তার পাশে বসে পরে।শায়লা বেগমের সাথে টুকটাক কথা বলার পর অনি তাকে জোর করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।শায়লা বেগম ছেলের কাছ থেকে যেতে একদমই নারাজ ছিলেন তবে শারীরিক দুর্বলতা তাকে বেশ কাবু করে ফেলেছিল।যার কারণে শেষমেশ তিনি অনির কথায় রাজি না হয়ে পারেন না।অনি রিশার সাথে শায়লা বেগম কে বাড়ি পাঠিয়ে দেন।সে শায়লা বেগম কে আশ্বস্ত করে রিশাদের পরিপূর্ণ খেয়াল রাখার ব্যাপারে। এতে শায়লা বেগমের চিন্তা কিছুটা দূর হলেও সম্পূর্ণভাবে চিন্তার অবসান হয় না।
এরপর অনি রিশাদের পাশে বসে পরে।তার দুচোখ রিশাদের পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে নেয়।তার স্থির দৃষ্টি এখন গভীরভাবে রিশাদকে পর্যবেক্ষণ করছে।এর আগে সে কখনো রিশাদের দিকে এভাবে তাকায়নি।সে সব সময় সবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলত। রিশাদের ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।হাতে গোনা ২/১ বার রিশাদের সাথে দেখা হয়ে অনির।দেশে আসার পর একদিন বিকেলবেলা জোর করে অনিকে নিয়ে অদ্রি জোর করে বাহিরে যায়।আর সেখানেই আগমন ঘটে রিশাদের।সেদিনের কথাগুলো অনির স্পষ্ট মনে আছে। তার স্মৃতির পাতায় যেন ভেসে ওঠে।

-অনি প্লিয চল না বাইরে থেকে একটু ঘুরে আসি।কতদিন হলো তোর সাথে এক সাথে সময় কাটাতে পারিনা।প্লিয বাবুনি চল না।আর তুই তো এতদিন বাইরে ছিলি তোর ও অনেক ভালো লাগবে।(অদ্রি)
অনি ভ্রু কুঁচকে জবাব দিল;
আচ্ছা অদ্রিপু তুমি যদি আমার সাথে সময় কাটাতে চাও তাহলে তো সেটা বাড়িতেও কাটানো যায় তার জন্য বাইরে যাওয়ার কি দরকার হুম।তোমার মতলবটা কি বলো তো।খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না আমার।

মেকি রাগ দেখিয়ে অদ্রি অসহায় মুখ করে বলল;
এভাবে বলতে পারলি তুই বাবুনি।এত শখ করে আমি তোর সাথে ঘুরতে যেতে চাচ্ছি আর তুই বলছিস এর পিছনে অন্য কোন মতলব আছে। বলেই অদ্রি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে বসে পড়ে।

অদ্রির কথায় অনি মুচকি হেসে পিছন থেকে অদ্রিকে জড়িয়ে ধরে তার ঘাড়ে মুখ রেখে আহ্লাদী কন্ঠে বলে;
অদ্রিপু তুমি জানো তুমি রাগ করলে তোমাকে এত্তোগুলা কিউট লাগে।তুমি সবসময় এভাবে রেগেই থাকবা কিন্তু।
অনির কথায় অদ্রি ফিক করে হেসে দিয়ে অনিকে জড়িয়ে ধরে।

গোসল শেষ করে একটা মিষ্টি কালারের জামা পড়ে বেরিয়ে আসে অনি।মাথায় ওড়না জড়িয়ে বারন্দায় যায় অনি।দুপুরের কোলাহলপূর্ণ শহরে যে যার মত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।গাড়িগুলো আপন গতিতে তার নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে চলছে।ব্যস্ত শহরে বহমানতার দিকে অনি গভীর দৃষ্টি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে।
অদ্রি রুমে এসে অনিকে খুঁজে না পেয়ে বারান্দার দিকে এগিয়ে আসে।পা টিপে টিপে বারান্দায় অনির পিছনে গিয়ে দাঁড়ায়।অদ্রির উপস্থিতি টের পেয়ে অনি বলে;
কিছু বলবা আমাকে??
-তুই কি এইটুকু সময়ের মধ্যেই ভুলে গেলি নাকি যে আমরা ঘুরতে যাব??
অনি হকচকিয়ে গিয়ে বলে- না আপু ভুলে যাইনি তো।এইতো একটু বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে ছিলাম।
-তুই রেডি না হয়ে এখানে কেন দাঁড়িয়ে আছিস? (অদ্রি)
-আমি তো রেডিই আছি আপু শুধু হিজাবটা পরে নেব।(অনি)
তারপর রুমে এসে অনি হিজাবটা বেঁধে চোখে সুরমা লাগিয়ে মুখে হালকা পাউডার দিয়ে নেয়। পা থেকে মাথা পর্যন্ত নিজেকে আয়নায় দেখে নিয়ে ওড়নাটা একপাশে পিন দিয়ে সেট করে রুম থেকে বেরিয়ে যায় অদ্রির রুমের দিকে যায় অনি।
রুম থেকে বেরোতেই অনি অনামিকা বেগমের সামনে পরে।
অনামিকা বেগম অনিকে আপাদমস্তক দেখে কোন কিছু সম্বোধন না করে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন;
তুমি কি কোথাও যাচ্ছো??
অনামিকা বেগমের দিকে একবার তাকিয়ে অনি জবাব দেয়;
অদ্রি আপুর সাথে বাইরে যাচ্ছি।বলেই অনি অদ্রির ঘরের দিকে চলে যায়।
অনামিকা বেগম অনির গমন পথের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। মনে মনে ভাবেন;
মেয়েটা দেখতে মাশাআল্লাহ বেশ সুন্দর হয়েছে। মুচকি হেসে তিনিও নিজের কাজে চলে যান।

অপরদিকে অনি ভাবতে থাকে অনামিকা বেগমের কথা।তার দিকে তাকালেই অনির মনে হয় তার চেহারায় একটা অপরাধবোধ বেদনাহত ভাব ফুটে ওঠে।অনি অদ্রির রুমে এসে দেখে
অদ্রিও সে সময় রেডি হচ্ছিল।সে নিজেও একটা মিষ্টি কালারের সালোয়ার কামিজ পরে হালকা মেকাপ করে নেয়।অনি কে দেখে অদ্রি বলে-
দেখতো অনি আমাকে কেমন লাগছে?
-মাশা আল্লাহ আমার অদ্রিপু দেখতে আগেও সুন্দর ছিল এখনো সুন্দরই আছে। বিয়ে উপলক্ষে সৌন্দর্য যেন আরো বেড়ে গেছে।বলেই অনি মুচকি হাসি দেয়।
অনির কথার জবাবে অদ্রিও লজ্জা মাখা মুচকি হাসি দিয়ে ওড়নাটা ঠিক করে বের হয়।

তারপর অনি অদ্রি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায়। ড্রাইভিং সিটে বসে অদ্রি আর তার পাশে বসে অনি। গাড়িতে বসে অদ্রি অনির সাথে গল্প শুরু করে।অনি অল্প বিস্তর নিজের কথা বলে আর অদ্রির কথার জবাব দেয়।
তারা একটা ফাইভ স্টার হোটেলের সামনে পৌঁছে যায়। অনিকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে বলে;
তুই এখানে দাঁড়া আমি গাড়িটা পার্ক করে এক্ষুণি আসছি।
অনি জবাবে বলে; তুমি গার্ডেন এরিয়ার দিকে এসো আমি সেখানেই দাঁড়াচ্ছি।
অনির কথায় সম্মতি জানিয়ে অদ্রি গাড়ি নিয়ে পার্কিং জোনের দিকে চলে যায়।

অনি গার্ডেন এরিয়ার দিকে চলে যায় যেখানে বাচ্চারা খেলাধুলা করছিল।অনি পাশেই একটা ছাউনির নিচে বসে অদ্রির অপেক্ষা করতে থাকে।

হঠাৎ করেই এক জোড়া হাত এসে পিছন থেকে অনির দুচোখ আলতো করে চেপে ধরে।ঘটনার আকস্মিকতায় অনি কিছুটা হকচকিয়ে যায় এই অচেনা শহরে কে এভাবে তার চোখ জড়িয়ে ধরতে পারে।তার মাথায় তখন অদ্রির কথা আসলেও অচেনা হাত জোড়ার উপর নিজের হাত স্পর্শ করিয়ে বুঝতে পারে এটা কোন পুরুষালি হাত। সাথে সাথেই সে হাত দূটো সরিয়ে দিয়ে পিছনে থাকা ব্যক্তি কে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়। অনি নিজেও কিছুটা পিছিয়ে যায়।

পিছনের দিকে তাকিয়ে সে একজন সুদর্শন পুরুষ কে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। অনি কিছুটা চোখ রাঙিয়ে তার দিকে তাকায়।

অপর পাশে থাকা ব্যক্তি অনিকে দেখে যেন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে……..

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here