You_are_mine season_2 Poly_Anan part_15

0
1764

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_15

রাত যত গভীর হচ্ছে তত ঈশার ভয় যেনো বেড়ে যাচ্ছে। চারিদিকে ঝি ঝি পোকাদের ডাক। সুনশান নিরবতা এই রাতে, ঈশানকে আজ কেন যেন তার বিশ্বাস হচ্ছে না সে নিজেই যানে না।অথচ এই মানুষটার কাদেঁ মাথা রেখে শান্তিতে কত বার ঈশা কেদেছে জড়িয়ে ধরে হেসেছে কিন্তু আজ তাকে বিশ্বাস করতে পারছেনা কেন সে? যখন শুনেছে ঈশান তার হাজবেন্ড তখন থেকেই ক্রমশ ভয় বেড়েই চলেছে।স্বামী হওয়ার সুযোগ নিয়ে উল্টা পালটা কোন অধীকার খাটিয়ে বসবে না তো!দূর কি ভাবছে সে, ঈশানের যদি অসৎ ভাবনা চিন্তা থাকতো তবে আগেই তার সাথে উলটা পালটা কিছু করে বসতো! কই তখন তো ঈশান কিছু করেনি।

তবুও ঈশার দিধা দন্দ্ব কাটছে না।আজ ঈশান এমনিতেই ক্ষেপে আছে তার বিয়েতে রাজি হওয়ার বিষয় টা নিয়ে। তবে যদি……..

ঈশার ভাবনার ছেদ ঘটে ঈশানের ঘর কাপানো একটি ধমকে!
“ঈশা কখন থেকে ডাকছি তোমায়?
” হহহহে!
“কি ভাবছো তুমি?
” আমি বাড়ি যাবো,
ঈশান এবার রাগের মাথায় ঈশার চুলের পেছন দিকটায় টেনে ধরে।
“কত বার বলেছি এক কথা কানে যায় না তোর। আমাকে কেন এত জ্বালাচ্ছিস তুই?
” আহহহ লাগছে আমার,
“লাগুক,।একটা কথা শুনে রাখ আমি তোকে ছাড়ছি না ;না মানে না।তুই আমার,যতই নাটক করিস না কেন তুই আমার।

ঈশান ঈশাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দরজা খুলে বাইরে চলে যায়।ঈশা হাটু মুড়ে কেদেই যাচ্ছে।কেন এমনটা হচ্ছে।বুকের ভেতর অদৃশ্য ছুরি বার বার আঘাত করে যাচ্ছে। মনে মনে নিজের জন্য একটি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা নেয়।ঈশানের সাথে সে যদি আর ১ ঘন্টাও থাকে।তবে সেই একটা ঘন্টা সে ঈশানের মনে কষ্ট না দিয়ে নিজেকে কষ্ট না দিয়ে ঠিক আগের মতো সেই ১ ঘন্টাটাকে ভালোবাসার অনুভূতিতে কাটিয়ে দেবে।

রাগে নিজের চুল ছিড়তে মন চাইছে ঈশানের। কেন এমনটা হচ্ছে। ঈশা কেন তাকে বিশ্বাস করতে চাইছেনা।এদিকে ঝিঝি পোকার ডাকে ঈশানে মাথা ধরে আসছে তবুও কেন যেন অজানা ভালোলাগা কাজ করছে।ঈশান দাড়িয়ে আছে সেই ঘরের সামনের ছোট্ট একটি বেলকুনিতে।চারিদিকে নিরবতা ঘোর অন্ধকারের মাঝে কয়েকটা আলোর সন্ধান দেখা যাচ্ছে।ঈশান ভালো করে পরখ করে বুঝতে পারে এগুলো জোনাকি পোকা।
এর আগে ঈশান জোনাকি পোকা দেখেনি কারন ইউএসে থাকাকালীন তার মমের কাছে এই পোকার আলো নিয়ে গল্প শুনেছে।ঢাকার আসার পর বিলাসবহুল জীবন যাপন।গ্রামে তার রাতে কখনো আসা হয় নি শুধু মাত্র একবার তার সিকিউরিটি চাচাকে দেখতে এসেছিল সকালে তাও কিছুক্ষনের জন্য।

হঠাৎ করে অপ্রাপ্ত জিনিসটি প্রাপ্ত হওয়ায় এক ঝটকায় ঈশানের রাগ ক্ষোভ সব উড়ে যায়।দ্রুত রুমে ফিরে গিয়ে দেখে ঈশা এখনো হাটু মুড়ে কাদছে। ঈশান ঈশার সামনে দাড়িয়ে ঈশার হাত টেনে নিচে নামায় তারপর পাজা কোল তুলে নেয়।
ঈশা অবাক হয়ে তাকালে বলে,

“খবরদার লাফালাফি করবেনা।আজ রাতটা অন্তত আমায় উপভোগ করতে দাও!(ঈশান)
” মানে (ভ্রু কুচকে)
“চোখ বন্ধ কর ওয়াইফী…!

ঈশা চোখ বন্ধ করে নিলেই ঈশান তাকে নিয়ে বাইরে যায়।মাঝ উঠানে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকালে লক্ষ্য করে আজকের তারাদের মেলা।জ্বল জ্বল করছে তারারা তার মাঝে এক ফালি চাদঁ।
” চোখ খোল ঈশু জান…!

ঈশা চোখ খুলে আকাশের দিকে নজর যায় সঙ্গে সঙ্গে সে যেন অন্য রাজ্যে হারিয়ে যায়।ভয় আশংকা রাগ ক্ষোভ দূরে সরিয়ে আজকের পরিবেশটা যেন যানান দিচ্ছে ভালোবাসার।

“পাশে তাকাও ওয়াইফি.!
ঈশা পাশে তাকালেই লক্ষ্য করে এক দল জোনাকির আলো।
সঙ্গে সঙ্গে ঈশার মুখ হা হয়ে যায়। কত দিন হয়ে গেছে জোনাকির আলো তার দেখা হয়নি ছোয়া হয় নি!
” কেমন লাগছে জান..!

ঈশা ঈশানের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসে।।অন্ধকারের মাঝেও যেন ঈশার হাসিটা বেশ ভালো করেই বুকে গেথেঁ গেছে ঈশানের।
ঈশাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলে সে জোনাকির দলের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।সঙ্গে সঙ্গে পোকারা এদিক সেদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।ঈশা একটি পোকাকে দুইহাতের মুঠোতে বন্ধি করে নেয়।তারপর ছুটে গিয়ে হাত দুটো ঈশানের সামনে ধরে।

ঈশা তার জোনাক দেখানোর আগেই ঈশান ঈশার দিকে একটি জোনাক উড়িয়ে দেয় আর বলে,

“এই জোনাক তোমাকে উসৎর্গ করলাম ঈশু জান।এই জোনাকি পোকার মত তুমি আমার জীবনটা আরো আলোয় রাঙ্গিয়ে দিয়ো।এমুঠো ভালাবাসা দিয়ে তোমার আচঁলে আমায় বেধেঁ রেখো।আমি চাই আশে পাশে সমস্ত মানুষ আমাদের ভালোবাসার বন্ধন দেখে হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাক।সবাই যেন একবার হলেও একটি হিংসাত্মক দৃষ্টিতে আমাদের আড় চোখে দেখে।এই সমাজের মানুষের তো আর অন্যর ভালো সহ্য হয় না।তাই বলতে বাধ্য হয়েছি আমাদের হিংসাত্মক দৃষ্টিতেই দেখুক।আমরা আমাদের ভালোবাসাটাকে পরিবারের ভবিষ্যতৎ প্রজন্মের একটি সাক্ষি রাখতে চাই যেন, এই সমাজের মিথ্যা ভালোবাসায় না ফেঁসে একটি সত্যি কারের ভালোবাসায় তাদের জিবনে বেধে নেয়।
হাজারটা ঝগড়া হোক,দূর থেকে আমাদের আলাদা করার চেষ্টা করা হোক তবুও আমরা আলাদা হবো না,। আমাদের সংসার জীবনে রাগ অভিমান ঝগড়া বিবাদ থাকবে তবুও কথা বলা বন্ধ করবো না।সর্বোচ্চ ৩ ঘন্টা কথা না বলে থাকবো এর বেশি না।

শেষ কথাটা বলেই একটি মুচকি হাসি দেয় ব্যস সঙ্গে সঙ্গে ঈশা হারিয়ে যায় অন্য জগৎ।ঈশা ভুলে গেছে অতীত আর ভাবতে চায়না ভবিষ্যৎ সে বর্তমান টাকেই সুখী দেখতে চায়।তাই ঈশানের কথার সম্মোতি যানিয়ে হাতে থাকা জোনাক টাকে ঈশানের সামনে উড়িয়ে দিয়ে বলে,

” উর্সৎগ করলাম আমার জীবন মরনের সাথীকে।আমার পথ চলার পাশে থাকার মানুষটাকে।আমি কথা দিলাম প্রিয়, মৃত্যু ছাড়া আলাদা হবো না।তোমাকে আমি আমার আমিটাই করে রাখবো।আত্নায় মিশে গেছো তুমি এই আত্নাটা আলাদা হয়ে গেলে আমার এই মাংস পিন্ডের দেহর কোন লাভ নেই। সেই দেহ তোমাকে ছাড়া জীবন্ত লাশ।সব ভুলে আমায় কি জড়িয়ে নিবে তোমার বাহুডোরে। শান্ত করে দিবে উত্তপ্ত দুটি মনকে আর ভুলে যাবে আমার অতীতের ছোট বড় সব ভুলকে(করুন কন্ঠে)

ঈশার মাতাল চাহনী, মোহমুগ্ধ কন্ঠে ঈশান থমকে যায়।ঈশার হাত টেনে বাহুডোরে জড়িয়ে নিয়ে কপালে মাথায় অসংখ্য ভালোবাসার পরশ একে দেয়।

ঈশাদের এলাকা যেন আজ কেপেঁ গেছে।পুলিশ র‍্যাবরা আড়ালে ফাদঁ ফেতে রাখলেও শেষ পর্যায়ে সবটা যেনে যায় রায়হান তাই নিজেকে বাচাতে দ্রুত পালানোর সিধান্ত নেয় কিন্তু ফ্লাটের মূল গেট থেকে বের হলেই চারিদিক থেকে তাকে সবাই ঘেরাও করে রাখে নিজেকে বাচাতে তার দলবল সহ গুলি করতে শুরু করে।এতে করে পুলিশরাও পালটা গুলি চালায়।চারিদিকে শুরু হয়ে যায় বিশৃংখলা।এলাকার মানুষ ভয়ে গুটিয়ে যায় শেষ পর্যন্ত অবশ্য রায়হানকে ধরতে সক্ষম হয়। কিন্তু নানান মানুষের মাঝে গুন জন ছড়িয়ে যায় ।সবাই বলতে থাকে, ঈশার একজন সন্ত্রাসীর সাথে বিয়ে হচ্ছে…!অনেকেই বলছে , টাকার লোভে ঈশার মা বাবা না যেনে শুনে এমন একটা ছেলের সাথে তারা মেয়ে বিয়ে দিচ্ছে।

লজ্জা ভয় আতংঙ্কে শকের মধ্যে আছে ঈশার বাবা মা।অনুকে সবাই কিছুক্ষন নানান ভাবেই প্রশ্ন করে ঈশা কোথায়,কার সাথে আছে কি করছে কেন পালিয়েছে সে,সে কি যানতো এইসব।
সবটা যেনেও অনুর উওর একটাই সে কিছু যানে না। কারন সবার সাথে সাথে তাকেও ঘুমের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।ফল সরুপ সে নিজেও ঘুমিয়ে যায়।এবার সবাই শান্ত হয়ে বলতে শুরু করে সবার সন্ধ্যার চা নাস্তার সাথে কে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে।

প্রতিটি তালায় তালায় সিসিটিভি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও ঈশাকে কে নিয়ে গেছে বা কি করে পালিয়েছে তার হদিস পায় নি।কারন ক্যামেরা গুলো আগে থেকেই অকেজো করা হয়।পরবর্তীতে ঈশার বাবা পুলিশদের সাথে যোগাযোগ করলে যানতে পারে ঈশাকে তার হাজবেন্ড নিয়েগেছে।কারন তার ওয়াইফ এখানে সেইফ নয়।এই কথাটা শুনেই সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় হাসিন সহ বাকিরা।কিন্তু পরিচয় যানতে চাইলে কিছুতেই পুলিশ পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় কারন পরিচয় গোপন করে ঈশার হাজবেন্ড এতো বড় সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে প্রমান জোগাড় করেছে এবং তা র‍্যাবের হাতে হস্তান্তর করেছে তাই কিছুতেই সেই ব্যাক্তিটির পরিচয় দিতে রাজি নয় তারা।

এবার আবারো শুরু হয় অনুর উপর পরিবারের সবার জিজ্ঞাসাবাদ। শত ঝড় ঝাপটা উপেক্ষা করে অনু কিছুতেই ঈশার হাজবেন্ডের নাম শিকার করেনা।সে চায় ঈশা যেখানে থাকুক ভালো থাকুক।

“ঈশা…!
” হুম..!
“ভাবছি অনুকে একটা বিশাল বড় গিফট দেবো।
” কেন(ভ্রু কুচকে)
“মেয়েটা আমার বউকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করেছে। শালীটা আমার ভীষন ভালো অল্পের জন্য আজ আমার জীবনে তুফান বয়ে যেতো কিন্তু… মেয়েটার রিন আমি কোন দিন শোধ করতে পারবো না।

” তা কি গিফট দিবেন শুনি।
“রাসেলকে বাবার দেখা শুনার জন্য রেখে এসেছি। আসার সময় ডাক্তার আংকেল বলেছে কন্ডিশন কিছুটা ভালো এখন। রাসেলের সাথে অবশ্য আমার একবার যোগাযোগ হয়েছে বাবা কিছুটা সুস্থ তাই, ভাবছি তোমায় নিয়ে প্রথমে এই কয়েকদিন বান্দরবান ঘুরে আসবো তারপর সোজা ইউএস।সেখান থেকে পাচঁ ছয় মাস পর বিডিতে আসবো।তারপর হাসিন আর অনুর বিয়ে দেবো।

” কি??অসম্ভব…!আমি আমার বাবা মাকে ছেড়ে এতদিন থাকবো নো নেভার।
“হে..অবশ্যই থাকবে শুনে রাখো যত যাই হোক তোমাকে আমি এই বিষয়ে মাফ করছিনা। আমার ভালোবাসা তোমার কাছে ফেলনা মনে হয়েছে তাই তো আরেকজনকে বিয়ে করতে পাগল হয়ে গেছিলে।শাস্তি সরুপ তুমি আমার কথা মত চলতে হবে আর বাবার বাড়ির কথা ভুলে যাও।(চোখ রাঙ্গিয়ে)

” কি, আয়…
“খবরদার আর একটা কথাও না রুমে। এসো ঘুমাতে হবে কাল সকাল সকাল আমাদের বের হতে হবে।

ঈশান ঈশাকে টেনে রুমে চলে যায়। রাগে ঈশার কান্না পাচ্ছে,দ্রুত বিছানার এক কোনায় গিয়ে গুটিয়ে শুয়ে পরে বালিশে মুখ ঘুজে কাদতে থাকে।
ঈশান ঈশার পাশে শুয়ে ঈশাকে টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়।ধমক দিয়ে বলে,
” খবরদার এই রাতে যদি তোমার ফ্যাচ ফ্যাচ কান্না দেখেছি তবে বাইরে রেখ আসবো।
ঈশা কান্না থামিয়ে নিলে ঈশান তার চুলে হাত বুলাতে থাকে।সঙ্গে সঙ্গে ঈশার চোখে নেমে আসে রাজ্যের ঘুম।ঈশান মুচকি হেসে ঈশার মাথায় আলতো করে চুমু খায়।আর ভাবতে থাকে গত কাল কি করবে সে……
(গল্পটি লেখনীতে;পলি আনান)

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরে ঈশা আর ঈশান।
“ঘুম কেমন হলো ওয়াইফি?
” ভালো…(হাই তুলে)
“সামনে কিছু দোকান আছে সেখান থেকেই ব্রেকফাস্টটা কিনে নেবো।এখন বরং পানি নাও..!

ঈশা ঈশানের কাছ থেকে বোতলটা নিয়ে দুই চুমুক পানি মুখে নেয়।চারিদিকে আলো ফুটতে শুরু করে। ঠান্ডা বাতাসের একটি শীতল অনুভূতি।আকাশের সূর্যটা কেমন কমলা সাথে হলুদ মিশ্রনের রং ধারন করেছে।ঈশার হঠাৎ করেই চিন্তারা মাথায় ভর নেয়।তার বুকের ভেতরটায় ধুক ধুক শব্দ করতে থাকে।মাথায় আসছে যেন নানান বাজে চিন্তা।
ঈশাকে ছটফট করতে দেখে ঈশান ঘাড় ঘুরিয়ে তার দিকে তাকায়।
” কি হয়েছে ঈশা এমন করছো কেন?
“ন..না কিছু না। আমার কেন যেন ভয় লাগছে কি যেন হারিয়ে যাবে।
” দূর ফালতু ভাবনা ভেবে এই মূহুর্তটা নষ্ট করবেনা।আমি আছি তোমার সাথে।

ঈশান বামহাতটা বাড়িয়ে ঈশার ডান হাতটা মুঠোয় করে নেয়।তারপর ছোট্ট করে একটি চুমু খায়।
নিজেকে শান্ত রাখার বৃথা চেষ্টা করেও নিজেকে শান্ত রাখতে পারছেনা ঈশা।কেমন যেন ছটফট করছে সে।
“এদিকে দেখছি কোন দোকান খোলা নেই।আমরা কি ব্রেকফাস্ট করবো না?(ঈশান)
” আমার ক্ষিদে লাগেনি…!আপনার লাগলে….
“আমারো লাগেনি আমি তো তোমার জন্য চিন্তা করছিলাম। বাইদা ওয়ে আমার এবার বাবার খবরটা নেওয়া জরুরি।

ঈশান দ্রুত ফোন অন করে রাসেলকে কল করে।
” হ্যা রাসেল বাবার কি অবস্থা।
“আংকেল নাকি মোটামুটি সুস্থ আছে।
” তুই কি হসপিটালে?
“না, ম্যানেজার আংকেল আমাকে অন্য একটা জায়গায় পাঠিয়েছে কিছু ফাইল নিয়ে।দুইজন লোক আসবে এই ফাইল গুলো নিতে তাই আমি এখন আপদত হোটেলে উঠেছি।
” কিন্তু তোকে পাঠিয়ে দিল কেন।অন্য কাউকে পাঠালেও পারতো?
“জানি না।আমাকে আসতে বলেছে আমি এসেছি।
” ওহ ভালো থাকিস তাহলে।
“ঈশা তোর পাশে?
” হুম!
“অ..অনু কেমন আছে!
” আছে ভালো আছে।চিন্তা করিস না আগামী ছয় মাসে তোদের বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলবো!

বিয়ের কথাটা শুনেই রাসেলের মুখে একটি প্রাপ্তির হাসি রেখা ফুটে উঠে।ঠোঁট কামড়ে হেসে ঈশান বলে,
“এখন রাখছি..!
” হুম।

ঈশার ভয় আরো বেড়ে গেছে। তার নিজের কেমন কেমন লাগছে।ঈশানের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছে আর দেখতে পাবে না তাকে।ঈশা এক দৃষ্টিতে ঈশানের দিকে তাকিয়ে আছে।ঈশান ঠোঁট কামড়ে হেসে ঈশাকে টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়।
“তাকিয়ে আছো কেন?
” জানিনা!
“তবে কে যানে?
” যানি না।
“ভালোবাসো আমায়?
” ভীষন..!
“কতটা,?
“যতটা হলে নিজের জীবনের সব সুখ বিসর্জন দেওয়া যায়।
” তোমার জীবনের সবচেয়ে সুখের মূহুর্ত কি ঈশা?
“আমার বাবা মাকে একসাথে হাসতে দেখা।আর আমাকে নিয়ে গর্ব করা।আর…..
” আর..?
“গুন্ডা ঈশানকে হাসি খুশিতে দেখতে পাওয়া।

ঈশান আরো শক্ত করে ঈশাকে জড়িয়ে নেয়।ঈশা দুই ঠোঁটের সাথে ঠোঁট চেপে নিঃশব্দে কেদে যাচ্ছে।ঈশান ঈশার দিকে তাকিয়ে বলে,
” এই কাদছো কেন তুমি?
“যানিনা..!
” তাহলে কি যানো তুমি? তুমি যানো না তোমার কান্না আমার সহ্য হয় না!
“আয়া আমি শুধু যানি আমি গুন্ডা ঈশানকে খুব ভালোবাসি যদি আমাদের কখনো দূরেও সরে যেতে হয় তবেও যেনে রেখো এই ঈশা শুধু তোমায় ভালোবাসবে।(কেদেঁ)
ঈশান এবার ঈশাকে আরো শক্ত কদে জড়িয়ে আর কপালে একটি চুমু খায়।ঈশা ঈশানের শাট শক্ত করে খামছে ধরে।

তখনি ঈশা ঈশানের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।পেছন থেকে একটি ট্রাকের সাথে তাদের ঘাড়ির বেশ জোরে ধাক্কা লাগে।গাড়িটি উলটে মচড়ে আবারো নিচে নেমে যায়। দরজার পাশ থেকে ঈশান ছিটকে পরে রাস্তার মাঝ খানে। ঈশা ছিটকে পরে অর্ধ পাশ ভাঙ্গা একটি বিজ্রের কোনায়।ঈশান শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে ঈশার দিকে তাকিয়ে আছে।তার হাটু যেন ছিন্ন বিছিন্ন হয়ে গেছে নিজের শরীরটাকে নিজেই নাড়াতে পারছে।শুধু দুইহাত হাতড়ে ঈশাকে ডাকছে।আর মুখ দিয়ে
” ঈশশশ
শব্দ করে যাচ্ছে।ভোর হওয়ায় রাস্তা সম্পূর্ণ ফাকা।তার সাথে শহর ছেড়ে কিছুটা গ্রামের রাস্তা।ঈশানের অবস্থা দেখে ঈশা দাড়ানোর চেষ্টা করে আর সেই চেষ্টাই ছিল ঈশার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।আস্তে আস্তে দাড়াতে গিয়ে টাল সামলাতে না পেরে ঈশা ব্রিজের বাইরে ছিটকে নদীতে পরে।

ঈশার অবস্থা দেখে ঈশানের মুখ থেকে চিৎকার দিয়ে বেরিয়ে আসে,
“ঈশা……!
কিন্তু আফসোস ঈশান দাঁড়িয়ে তার ঈশাকে বাচাতে পারেনা।দানবীয় সেই ট্রাক আগেই তার দুই পায়ের বেহাল দশা করে ছেড়েছে।মুখ দিয়ে গল গল করে রক্ত ঝরে ঈশান আস্তে আস্তে চোখ বন্ধ করে নেয়।
ভালোবাসা নামক সুপ্ত অনভূতি হয়তো ঈশানের জীবনে এখানেই থেমে গেছ……!
#চলবে……

?পর্বটা কেমন হয়েছে যানাবেন!আমি যানি একদল পাঠক আজ আমাকে বকবে ?সমস্যা নাই বকতে থাকেন?।

?হ্যাপি রিডিং..!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here