You_are_mine season_2 Poly_Anan part_10

0
1710

You_are_mine
season_2
Poly_Anan
part_10

“কিরে ঈশান আমি কিছুই বুঝলাম না। সকাল থেকে তুই কত খুশি ছিলি অনেক দিন পর তোর ঈশার সাথে দেখা হবে তাহলে একটু আগে কি করলি তুই এইসব।
” চুপ একদম চুপ একটা কথা শুনতে চাই না আমি ওই মেয়ের সম্পর্কে।
কথাটি বলে ঈশান একটি গেস্ট রুমের দিকে পা বাড়ায় তার পেছন পেছন রাসেল ও আসে।ঈশান আড়ালে রাসেল কে ঈশারা করে দরজা অফ করার জন্য।রাসেল সেই অনুযায়ী দরজাটা অফ করে দেয়।
“এবার বল আসল কারনটা কি?
” নাজিম আর সাইফ আমাকে ঈশা আর একটি ছেলের কিছু ছবি দেখায়।মূহুর্তে আমার মাথাটা গরম হয় ঠিকি কিন্তু ঈশার সাথে এমন একটা ছেলেকে জড়াজড়ি অবস্থায় দেখবো তা আমি মোটেও এক্সপেক্ট করিনি।আমার সুক্ষ্ণ মস্তিষ্কের ধারনায় এগুলো এডিট ছবি না।
“তাহলে…..?
” আমার কেন যানি সাইফ আর নাজিমকে সন্দেহ হয় আমি যখন আয়নার সামনে দাড়িয়ে ছিলাম তখন ওরা একজন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে হাই ফাই করে।ওরা ভেবেছে পেছন থেকে আমি দেখতে পাইনি কিন্তু বলদ গুলো যানতনা আয়নার মধ্যে তাদের কান্ডকারখানা গুলো আমি বেশ ভালো ভাবেই পরখ করছিলাম।

“তাহলে ছবি গুলো কার সাথে?
” সেইটাই আমি ভাবছি। নাজিম,সাইফ চলে গেলেও ওরা আমি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরে আবার আসে। আড়ালে আমার আর ঈশার কান্ড গুলো দেখতে থাকে।সব শেষে বুঝতে পারলাম ওরা ভেবেছে ঈশার সাথে আমার সম্পর্ক শেষ কিন্তু না, আমি ঈশাকে বিশ্বাস করি।
একটা ভালোবাসা যদি টিকিয়ে রাখতে চাস তাহলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বাস! যেখানে বিশ্বাস থাকেনা সেখানে ভালোবাসাগুলো মূল্যহীন হয়ে যায়।আমি ঈশাকে বিশ্বাস করি ভরসা করি আফটার অল এই ঈশান শাহরিয়ারের সাথে বেইমানি করার সাহস ঈশা কখনোই পাবেনা।বিশেষ করে আড়ালে রিলেশনে জড়িয়ে থাকা।

“তাহলে ছেলেটা কে..?
” তোর হোয়াটসঅ্যাপে দেখ ছবি গুলো আমি কিছুক্ষন আগেই পাঠিয়ে দিয়েছি।

রাসেল দ্রুত ফোন অন করে ছবি গুলো দেখতে থাকে।কিন্তু ছেলেটির চেহারা দেখা যাচ্ছেনা।শুধু ঈশাকেই ফোকাস করছে।
“আমি চাই তুই এই সত্যিটা বের করবি রাসেল।আমি যানি ঈশা এখন আমার উপর রেগে আছে। তুই অনুর মাধ্যেমে সত্যিটা বের কর…!
” ওকে..!

ঈশান এবার রাসেলের কলার টেনে রুম থেকে বের করে দেয় দরজার সামনে দাড়িয়ে বলে,
“বলেছিনা ওই মেয়ের নাম আর মুখে নিবি না গেট লস্ট…!
তারপর ঈশান ঠাসস করে দরজা আটকে দেয়।
রাসেল স্তব্দ হয়ে গেছে।এটা কি হলো…!সব তো স্বাভাবিক ছিল।কিছুক্ষন পর মনে পড়ে নাজিম আর সাইফ হয়তো আশে পাশেই আড়াল থেকে তাদের ফলো করছে তাই ঈশান এমনটা করেছে।রাসেল মনে মনে ঈশানকে বলে,
” শালা তুই মারাত্নক খেলোয়াড়…!

….
ঈশার জোয়ার ভাঙ্গা কান্নায় কিছুতেই থামাতে পারছেনা অনু মুখের অবস্থা একদম খারাপ।ঈশার মা বাবা, বার বার তাকে প্রশ্ন করে যাচ্ছে তার কান্নার কারনটা কি?সে প্রশ্ন ঘুরিয়ে গেছে মিথ্যা বলেছে একবার বলছে হাসিন ভাইয়ার বাড়ি যাবে কিছুক্ষন পর হাসিন যখন তাকে ফোন করে বললো তাকে নিতে আসছে তখন আর যাবেনা। আরেকবার বলছে তার বাড়িতে থাকতে ভালো লাগছেনা।নানান বাহানা পরিবারের সবাইকে দেখিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু কি করে বলবে সে তার সাথে আজ কি হলো।ঈশান কেন তাকে মিথ্যা অপবাদ দিলো।
কিছুক্ষন আগেই অনু সত্যিটা রাসেলকে জানিয়েছে,ঈশার সাথে সেদিন এই ছেলেটা কে ছিল। রাসেল আবার অনুকে বারন করেছে ঈশাকে কিছু না জানাতে। তাই বেচারি ঈশা এখনো কেঁদেই যাচ্ছে।

এদিকে চিন্তায় পড়ে গেছে সুলতানা আর মুজাহিদ মেয়ের এমন বেহাল দশা দেখে যেকোন বাবা মায়ের মনেই অস্থিরতা সৃষ্টি হবে।ঈশা এখনো রুমে ফুপিয়ে কেদে যাচ্ছে।

ঈশার রুমে আবারো ডুকলেন মুজাহিদ ঈশার হাত টেনে বিছানা থেকে নামিয়ে বলে,
“চল আজ আমরা নিশাচর হবো..!
ঈশা প্রশ্ন বিদ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে তার বাবার দিকে।
” আজ আমরা রাতের ঢাকা শহর টাকে ঘুরে দেখবো।
“কি বলছো বাবা এখন বাজে রাত বারোটা এতো রাতে বের হবো..?
” হ্যা হবো! যা তুই ফ্রেশ হয়ে আয় আমরা বাইরে বের হবো।

ঈশার এই মূহুর্তে আর উপায় না পেয়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ায়।

পিচ ঢালা রাস্তায় নিরিবিলি হাটছে বাবা মেয়ে। ঈশার বাম হাতটা খুব আলতো করে মুঠোয় বন্ধ করে রেখেছে তার বাবা।আর ডান হাতে একটি আইসক্রিম।ঈশার এই মূহুর্তে অনুভূতির কোন নাম দেওয়া যায় না।তার বাবার হাত দরা স্টাইল আর ঈশানের হাত ধরার স্টাইল বলতে গেলে একই।আলতো করে ছুয়ে যাবে কিন্তু বন্ধনটা দৃঢ়। ঈশা মনে মনে ভাবে এই হাত গুলো তার কাছে সবচেয়ে বিশ্বস্ত।
“মামনি একটা প্রশ্ন করি,
” হ্যা আব্বু বলো!
“তোমার মন ভালো হয়েছে এখন?
” ভীষন ভালো হয়েছে আব্বু।

“ঈশা মামনি আমি যানতে চাইবো না তোমার কি হয়েছে আমি যানি তুমি আমাদের মিথ্যা বলছো..?তোমার ব্যক্তিগত জীবন আছে, সেই ব্যক্তিগত জীবনে হয়তো নতুন করে কেউ তোমার ব্যক্তিগত হয়ে উঠেছে তাই তোমার ব্যক্তিগত সে তোমার নিজের হয়েই থাক। আমি যানতে চাইবো না আমার রাজকন্যাটার রাজপুত্র কে?বা আমার রাজকন্যাটা কাকে তার এতো কোমল হৃদয়ের অর্ধ ভাগ দিয়েছে । রাজপুত্রটা হয়তো তোমায় দুঃখ দিয়েছে মামনি তাই তোমার চোখে এতো অশ্রু, এতো কান্না।কেউ ইচ্ছে করে কাউকে কখনো দুঃখ দেয় না মামনি।সে হয়তো কোন সমস্যায় ছিল রাগের মাথায় তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেছে।এটাও হতে পারে তোমাদের মধ্যে কোন ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তাই সে তোমাকে নিজের অজান্তেই আঘাত দিয়েছে।

আমি যানি আমার মেয়ে কেমন, সে খুব সেন্সিটিভ যার কাছে একবার আঘাত পায় তার কাছে আর কখনো ফিরে যায় না সে।তবে তোমার যদি সেই রাজপুত্রের উপর বিশ্বাস এবং আস্থা জন্মে, তাহলে তাকে তুমি আরেকটা সুযোগ দাও মামনি।সেই ছেলেটাও কিন্তু আজ ভালো নেই। কারন তোমাকে কষ্ট দিয়ে সে নিজেই ভালো নেই! অনুশুচনার আগুনে তাকে দগ্ধ করছে। তুমিতো চোখের পানিতে তোমার রাগ অভিমান দুঃখ ধুয়ে দিচ্ছো। কিন্তু শত অভিমানেও ছেলেরা কাদে না। যদি না আঘাতটা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়। আশা করি তুমি আমার কথাটা বুঝতে পারছো?

ঈশা স্তব্দ হয়েচ গেছে তার হাতে থাকা আইস্ক্রিমটি গলে পিচ ঢালা রাস্তায় টুপটুপ করে পরছে।ঈশাকে চুপ থাকতে দেখে তার বাবা আবার বলে,

“আমিও ভালোবেসে তোমার মা কে বিয়ে করেছি।তোমার মায়ের হাতটা আমি যেদিন প্রথম ধরেছিলাম সেইদিন প্রতিজ্ঞা করেছি তোমার মায়ের এই হাত শত ঝড় তুফানেও আমি ছাড়বো না। যেখানে তুমি সত্যি কারের ভালোবাসার আভাস পাবে সেখানে তুমি যেকোন মূল্যে ছুটে যাবে ।কারন সম্পর্ক টিকে থাকে!দুনিয়াতে হাজারো সম্পর্ক আছে ভালোবাসাহীন তবুও দুজন দুজনকে মানিয়ে ঘুছিয়ে নিচ্ছে। ভালোবাসা ছাড়া সম্পর্ক গুলো আত্না ছাড়া দেহের মতো।ভালোবেসে তোমার মায়ের হাত ধরেছি বলেই তুমি আজ নানার বাড়ির ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত।
পরিশেষে এটাই বলবো, সেই রাজপুত্রটাকে তুমি আরেকটা সুযোগ দাও?।

শেষ কথাটা একটু শব্দ করে হেসে চোখ কুচকে বলে মুজাহিদ।

ঈশা তার হাতের বাকি আইসক্রিমটা ফেলে তার বাবার বুকের উপর ঝাপিয়ে পরে কাদতে শুরু করে।মুজাহিদ মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে হাসতে থাকে।যদিও তিনি হাসছেন তবে গাল বেয়ে পড়ছে অবাধ্য চোখের জল। তিনি যানেন না কেন কাদঁলেন তিনি সুখের নাকি দুঃখের!একটু আগেই তো বলেছে ছেলেরা খুব সহযে কাদে না তবে এখন কাদঁছেন কেন তিনি।এইসবটা ভেবে নিজেকে কেমন বোকা বোকা লাগছে তার।
ঈশা ফুপিয়ে উঠছে, হেচকি তুলছে এই বিষয়টা নিয়ে এটাই হয়তো তার শেষ কান্না।

” বাবা তুমি এতো ভালো কেন?তুমি না থাকলে আমাকে কে এইভাবে বোঝাবে।আমি তোমার মেয়ে বাবা তোমার মতো পটু হতে চাই।
“হুম তা ঠিক তোমাকে আমার মতো হতে হবে তবেই নিজের দুঃখ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনতে পারবে।

ঈশা মুখ তুলে তার বাবার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে।মুজাহিদ মেয়ের চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে দিয়ে মেয়ের মাথাটা নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে আবারো হাটতে শুরু করে সেই পিচ ঢালা রাস্তায়।বাবা মেয়ের এই নিশ্বার্থ ভালোবাসার সাক্ষি রয়ে যায় পথের ধারের ল্যাম্প, গাছ, নিরবতা,আর আকাশের সরু ওই চাঁদ টা।

গেস্ট রুমে বসে বেশ আয়েশী ভঙ্গিতে ল্যাপটপের স্কিনের দিকে তাকিয়ে আছে ঈশান। গত রাতে তার চোখে এক ফোটা ঘুমও আসেনি। ঈশার কান্না মাখা মুখটি চোখের সামনে বার বার ভেসে উঠছে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হয়ে পরছে তার নিজেকে যে আরেকটু সামলাতে হবে ঈশানের।
(গল্পটি লেখনীতেঃপলি আনান)
কিছুক্ষন পর রুমে ডুকে নাজিম আর সাইফ।
” হেই ব্রো কি অবস্থা…?
“গুড।
“আজ দেখি মশাই বাড়িতে, দশটা বেজে গেছে।আগে তো সকাল আটটায় আসলেও তোকে পাওয়া যেত না(ভ্রু কুচকে নাজিম)
” কি ব্রো ভাবীর সাথে ঝগড়া হয়েছে?(সাইফ)

ঈশান তাদের কথা গুলো চুপ চাপ শুনছে।এবার রাসেল এগিয়ে এসে ঈশানের হাতে একটি কফি মগ দেয়।
“তোদের জন্য আনবো কফি?(সাইফ আর নাজিমকে উদ্দেশ্য করে রাসেল)
” নো…!নো থ্যাংস।(সাইফ)
ঈশান ল্যাপটপ টা সাইডে রেখে বিছানা থেকে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়ায়।তারপর নাজিম আর সাইফ কে উদ্দেশ্য করে বলে,

“তোরা আমার চোখ খুলে দিয়েছিস রে…! আমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তোদের কাছে আমি সত্যি রিনি হয়ে গেলাম।
” আরে দূর কি বলছিস বন্ধুর কাজ বন্ধুকে হেল্প করা আমরা ও করেছি।তাছাড়া ওই মেয়ে ভালোনা। চরিত্রের দোষ আছে মনে হয়.গিয়ে দেখ কত ছেলের সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে গেছে.(নাজিম)
কথাটি শুনেই ঈশানের হাত মুষ্টি বদ্ধ হয়ে যায়।রাগে তার কপালের নীল রগ ফুলে উঠেছে।তবুও সম্পূর্ণ ঠান্ডা রাখছে নিজেকে।
“হুম তা হবে হয়তো…(শান্ত কন্ঠে)
রাসেল ঈশান আর সামনে থাকা দুই বলদের দিকে তাকিয়ে হাসছে আজ তাদের সাথে ঠিক কি কি হবে রাসেলের নিজেরো ধারনা নেই।

” এই খুশিতে আজ পার্টি দে..(সাইফ)
“পার্টিতো অবশ্যই দেবো…!সাথে একটা বিশাল সারপ্রাইজ…!
” ওয়াও!সত্যি?(নাজিম আর সাইফ)
“হুম যা তোরা এরেঞ্জ কর, যত টাকা লাগে আমি দেবো।

সাইফ আর নাজিম দুজনে হাসতে হাসতে নিচে চলে যায়।এদিকে ঈশান কাকে যেন ফোন করে বলে সব কিছুর ব্যবস্থা করতে সে কিছুক্ষন পর আসছে।আয়নার দিকে একঝলক তাকালে ঈশানের চোখে ভেসে উঠে ঈশার সেই কান্না করা মুখ টা। হাতে থাকা কফির মগের কফিটি ছুড়ে ফেলে আয়নার দিকে। রাসেল সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে যায় কিছু ক্ষন পর ঈশান আবারো আয়নার দিকে তাকিয়ে কফির মগ টি ছুড়ে মারে।সাথে সাথে আয়নাটি ভেঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়।আর রাসেল নিষ্পলক ভাবে ঈশানের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

” ঈশা চল আমরা বের হবো!(অনু)
“কোথায় যাবো?(ঈশা)
” আরে গেলেই দেখতে পাবি চল।
“দেখ অনু আমার এখন ভালো লাগছেনা। দেখেছিস কি রোদ বাইরে এই সময়টায় বের হতে পারবো না। বিকেলে বের হবো।
” আরে প্লিজ চলনা.!
” বললাম তো না.।.না মানে না!(ধমক দিয়ে)
অনু এবার ঈশার কাছ থেকে সরে আসে ওরনার কোনায় চোখ মুছার অভিনয় করে বলে,
“আগে তোকে যদি বলতাম ঈশা চল আমরা মরতে যাবো দুজনে একসাথে মরবো তখন তুই বলতি আমরা কি ভাবে মরবো বিষ খেয়ে নাকি গলায় দড়ি দিয়ে।আর সেই তুই এখন আমার সাথে বাইরে যেতে চাইছিস না। এতোটা পরির্বতন তোর মাঝে। আমি জীবনে ভাবিনি তুই বদলে যাবি।

অনুর নাটক দেখে বিড়বিড় করে ঈশা বলে,
” ড্রামাকুইন!
আচ্ছা যা তৈরি হয়ে আয় বের হবো আমরা। তবে সাথে একটা ছাতা নিবি।বাইরে অতিরিক্ত রোদ।
অনু খুশেতে গদ গদ হয়ে ঈশাকে জড়িয়ে ধরে।

ঈশা অনু একটি গোডাউনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।ঈশা বুঝতে পারছেনা তাকে এখানে আনা হলো কেন।
“আমরা এখানে কেন অনু?
” স..সারপ্রাইজ
অনু নিজেও ভয়ে আছে। কারন পরিবেশটা ভিষন ঘা ছমছমে।
দুজনে একসাথে গেটের ভেতরে ডুকে।চারিদিকটা পরখ করে দালানের ভেতর ডুকতে নিলে কয়েক জন সিকিউরিটি গাড ঈশার চোখে পরে তার বুঝতে আর বাকি নেই এই সবটা ঈশানের চাল।মনে মনে অনুকে একটা বিশ্রি গালি দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার জন্য ছুটে দৌড় লাগায়। কিন্তু বেচারি ঈশা বেশি দূর যেতে পারেনা তার আগেই প্রায় ২২ জন গাড এসে তাকে ঘিরে ধরে চারপাশে।তার জন্য এতো সিকিউরিটিত ব্যবস্থা করেছে ঈশান শাহরিয়ার বাহ!মনে মনে এইসব ভেবে কান্না পাচ্ছে তার। আজকে নিশ্চই তাকে চেয়ারের সাথে বেধে মারবে তাই এখানে নিয়ে এসেছে।

“সরি মেম স্যারের পারর্মিশন ছাড়া আপনি বেরতো পারবেন না।
গাডের কথা শুনে ঈশা ক্রুদ দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকায়। অনু তার দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নেয়।
এইসবটা এতক্ষন ছাদ দেখে দেখছিল ঈশান।আকাশের দিকে তাকিয়ে একটি দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে নিচে নেমে আসে।

গোডাউনের দোতালায় দাঁড়িয়ে আছে ঈশা,অনু রাসেল ঈশান। তাদের সামনেই চেয়ারের সাথে বেধেঁ রাখা হয়েছে নাজিম আর সাইফ কে।
ঈশা অবাক হয়ে সবটা দেখছে কিন্তু কিছুই তার মাথায় ডুকছেনা।সাইফ,নাজিম ভয়ে একের পর এক ঢোক গিলেই যাচ্ছে।
” কিরে এতো বড় মিথ্যা তোরা আমায় বললি কেন?(শান্ত দৃষ্টিতে ঈশান)
“কি মিথ্যা বলেছি আমরা?হ্যা বল কি মিথ্যা বলেছি ওই মেয়ের চরিত্রে দোষ আছে এটাকি মিথ্যা কথা?(রেগে কথাটি বললো নাজিম)

ঈশান সঙ্গে সঙ্গে ঠাসস করে নাজিমের গালে কষিয়ে চড় মারে।
” আমার দুঃখ এটাই,যানিস তোরা যদি বলতি ঈশা অন্য ছেলেকে জড়িয়ে ধরেছে তবে আমি ভুলটা তোদের ধরিয়ে দিতাম।কিন্তু কাল তোরা ঈশার নামে যা নয় তাই বলেছিস। ইনফেক্ট তোরা যানতি ওই ছেলেটি ঈশার ছোট মামা হয়!

সঙ্গে সঙ্গে ঈশা চকিতে তাকায়।এটা নিয়ে তবে এতো ঝামেলা।
“দেখ ঈশান ওই মেয়ের জন্য তুই আমাদের সাথে এমন কররে পারিস না।তোর মেয়ের প্রয়োজন হলে আমাদের বল আমরা তোর জন্য এর থেকেও ভালো মেয়ে জোগাড় করে দেবো কিন্তু ওই মে……..
সাইফকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে একটি লোহার রড দিয়ে তার মাথায় জোরে আঘাত করে ঈশান।সাইফের দূনিয়া যেন ঘুরতে শুরু করেছে।
” কি বললি আমার মেয়ের প্র‍য়োজন হলে তোরা জোগাড় করে দিবি।আচ্ছা শুন বিষয়টা আমার কাছে খাপ ছাড়া লাগছে।শুরু থেকে আমি তোদের বিষয়টা বুঝিয়ে বলি।

তোরা যখন কাল আমাকে কথাটা বললি তখন আমার ভিষন রাগ লাগলো, মনে চাইছিল তুলে একটা আছাড় মারি ঈশাকে কিছুক্ষন পর মনে হলো ঈশা আমাকে সত্যি ভালোবাসা সে আমাকে ঠকাবেনা তোদের হয়তো বুঝতে কোথাও ভুল হচ্ছে তার পর তোরা আমাকে চুপ থাকতে দেখে ঈশার নামে একের পর এক অপবাদ দিয়ে গেলি তাতেও আমি চুপ ছিলাম কারন তখন পরিবেশটা আমার প্রতিকূল ছিল।এরপর যখন মিররের দিকে তাকালাম দেখতে পেলাম তোদের দুই বন্ধুর উচ্ছ্বাস।

তোরা যে এটা প্লানিং করেছিস তখনো বুঝতে আমার বাকি ছিল না।কিন্তু অপেক্ষায় ছিলাম তোদের আসল প্লানিং টা কি ছিল তা বের করার।তাই কাল ঈশাকে বাড়িতে নিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে ভয় দেখাই।কাল যখন সব কিছু ভাঙ্গছিলাম তোরা আমার রুমের বাইরে ছিলি, রাসেলের গাড়ি আসতেই তোরা স্পট থেকে সরে যাস।তোরা যে আমার দরজার বাইরে ছিলি তার প্রমান কি যানিস?আমার রুমের দরজার উপর ছোট্ট স্পাই ক্যামেরা আছে।যেটা সব সময় থাকে।কিন্তু মজা বিষয় আমি ঈশাকে ধমক দিয়েছি ঠিক তাকে রাগ দেখিয়েছি তাও ঠিক ; তবে ঈশার ঘায়ে হাত তুলিনি। যদি ঘটনাটা সত্যি হতো তবে আমাকে ঠকানোর দায়ে এই চেয়ার গুলোতে তোদের অবস্থান হতো না, এই চেয়ার গুলোতে ঈশা বসে থাকতো ।

গেটের সামনে ঈশা যখন বেরিয়ে যায় তখন তোরা দুজন মিলে কোলাকুলি করছিলি ভেবেছিলি আমাদের সম্পর্ক শেষ তোরা সফল।কিন্তু ভুল।কাল তোদের সাথে সারারাত ক্লাবে ছিলাম তোরা কি ভেবেছিলি ঈশান শাহরিয়ার তার আগের রুপে ফিরে এসেছে তাতেও ভুল! কাল ক্লাবে যাওয়ার মূল কারন তোদের প্লানিং সম্পর্কে যানা।মাত্র এক বতল হুইস্কি আর তিন চার প্যাক ড্রিংকস করে তোরা ভেবেছিলি আমি নেশায় বুদ হয়ে গেছি আসলে ভুল। তারপর তোরাও একের পর এক বোতল সাবাড় করে দিলি। নেশায় বুদ হয়ে গেছিলি । কিছুক্ষণ পর রাসেল ক্লাবে এসে পৌছে যায় তারপর ভিডিও করতে থাকে তোদের শিকারক্তি মূলক জবানবন্ধী।আমাকে আর ঈশাকে আলাদা করে তোরা এক রাতের জন্য হলেও ঈশাকে ব্যবহার করবি এই কথাটা বলে যখন দুজন মিলে বিশ্রি হাসি হাসছিলি,বিশ্বাস কর আমার মন চাইছিল তোদের সেখানেই পুতে রেখে দিতে।

তোরা আমাকে সবসময় বলিস, আমি নাকি পবিত্র সাজি ইউএসে কি এইসব হয়না মেয়ে নিয়ে সারারাত পার্টি করা ড্রিংকস করা। আমি কেন তোদের মতো এইসবে আসক্ত না। তোদের ভাবনায় আসতে পারে এতো ড্রিংকস করেও আমি আমার উপর নিয়ন্ত্রণ হারালাম না কেন?আসলে তোদের এইসব ছাইপাসে আমার সত্যিকারের নেশা মিটেনা।আমাদের জন্য আরো হাই লেভের ব্যবস্থা থাকে। কিরে রাসেল ঠিক বললাম তো?(রাসেল কে উদ্দেশ্য করে)

ঈশানের কথায় রাসেল হাসতে থাকে।কারন তারা উপর থেকে যতটা সাধু সন্ন্যাসী সাজে তারা ততটা ও সাধু না।
ঈশান আবারো বলতে শুরু করে,
“কিছুক্ষন আগে কি বলছিলি তোরা আমাকে মেয়ে জোগাড় করে দিবি,আগেও প্রায় সময় বলতি তোদের মতো আমার কেন মেয়ে মানুষের উপর নেশা নেই।আসলে কি যানিস যে বয়সে আমার এইসব নেশায় বুদ থাকার কথা ছিল সেই বয়সটাতেই আমি ঈশার দেখা পাই।তাই অন্যকোন মেয়ে মানুষ আমার মনে ধরে নি।একজনকে চাই আমার সারাজীবনের জন্য। আর সেই একজনের পেছনেই পরে আছি।তোদের মতো আমি এমন ক্লাসলেস না।

ফাইনালি এবার তোদের সাথে কি করা হবে বলতো….?
ঈশানের কথার মাঝেই ঈশা চিৎকার করে বলে,
” এতই যখন ভালোবাসেন তবে আমাকে অবিশ্বাস করলেন কেন….?আর ছোট মামার কথাটাই বা জানলেন কি করে।নিশ্চই এতক্ষনে ছোট মামার হাড্ডি ভেঙ্গে হসপিটালে এডমিট করেছেন..?

ঈশার কথা শুনে ঈশান মনে মনে দাত চেপে বলে,
“আমার বোকা জান..!
#চলবে……
ঈশা আর ঈশার বাবার সম্পর্কে কিছু বলে যাও?‍♀️।
ঈশার প্রশ্ন শুনে ঈশান এবার কি করবে..? ?

?পর্বটা কেমন হয়েছে যানতে চাই।
?হ্যাপি রিডিং….!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here