The Colourful Fragrance Of Love?Part:13

0
1266

?#The_Colourful_Fragrance_Of_Love?

Part: 13

বিকেল তখন সাড়ে চারটের কাছাকাছি,উজানের কথা অনুযায়ী হিয়া আলমারি থেকে বেছে বেছে মেরুন রঙের শাড়ীটা পড়ে সাজুগুজু করে একদম তৈরি,মেরুন রঙের সাথে সোনালী রঙের অর্নামেন্টসে কি যে সুন্দর লাগছে আজ হিয়াকে,,হিয়ার মনে আজ অনেক আনন্দ তার জন্মদিনে এই প্রথম কেউ তাকে নিয়ে এভাবে ঘুরতে যাবে আর যদি মানুষটা হয় তার ভালোবাসার মানুষ তাহলে তো সব কিছুই একদম খাপে খাপ হয়ে মিলে যায়,,

হিয়াঃ কখন আসবে উনি,,আমার তো আর এভাবে একদম বসে থাকতে ইচ্ছে করছে না,,একটা কি ফোন করবো ওনাকে,,না থাক আরেকটু দেখি

হিয়া একবার রুমে আসছে একবার বারান্দায় পায়চারি করছে,ফোন হাতে নিয়েও খুঁত খুঁত করছে ফোন দেবে কি না,উজান তো বললো উজানের আসতে আসতে বিকেল হবে,কিন্তু এখন তো সন্ধ্যা হয়ে আসছে তাহলে উজান কোথায়
____________________________

উজানঃ অভিক কোনো ভাবে কি আজ আট টা বা নয়টার আগে অফিস থেকে বাড়ি ফেরা সম্ভব না

অভিকঃ আটটা নয়টা,,দেখ আগে আজ এগারোটার পরেও বাড়ি ফিরতে পারিস নাকি

উজানঃ এসব বলে ভয় দেখাস না প্লিজ

অভিকঃ ভয়ের আবার কি দেখালাম,,এমন তো না যে এর আগে কখনো এগারোটা বারোটার দিক অফিস থেকে বাড়ি যাসনি

উজানঃ তা নয় রে,,আজকের দিনটা একটু স্পেশাল,আজ হিয়ার বার্থডে আর আমি হিয়াকে বলেছিলাম আমি বিকেলে ওকে নিয়ে একটা জায়গায় যাবো

অভিকঃ যা এটা কোনো কথা হলো,,আমি কি একবার বসের সাথে কথা বলবো যে তোর

উজানঃ লাভ নেই কথা বলে,,আমি সন্ধিকে দিয়ে বলেছিলাম কথা কিন্তু স্যার রাজি হোন নি

অভিকঃ আচ্ছা দেখ কি করবি
____________________

রাত তখন এগারোটা,,উজানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে হিয়া যে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো সে খেয়াল হিয়ার নেই,,ঘুম ভেঙে আসতে শরীর টা আড়মোড়া দিয়ে উঠে বসতেই হিয়া খেয়াল করে উজান এখনো ফেরে নি,,ফোন হাতে নিয়ে লক্ষ্য করে ফোনে বাজছে ১১টা ২২,,সাথে স্ক্রিনে ভাসছে উজানের নাম্বার থেকে আসা Sorry শব্দের দুটো টেক্সট,,টেক্সট দুটো দেখেই হিয়ার মন গেলো আরো ভেঙ্গে সাথে মেজাজ হয়ে আসলো পুরো খারাপ,,এতো কষ্ট করে সেজেগুজে এই তার জন্মদিনের উপহার দিলো উজান ওকে,,আজ বাড়িতে আসুক উজান এর একদিন কি হিয়ার একদিন??

দশমিনিট পর কলিংবেলের লাগাতার শব্দে কেঁপে উঠলো বাড়ি,,বাসবি গিয়ে দরজা খুলে দিতেই উজান হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকে জুতো খুলতে শুরু করলো

উজানঃ খুব কি ক্ষেপে আছে মা

বাসবিঃ হ্যা খুব,,ঘরে ঢুকতে দেয় কি না গিয়ে দেখ আগে

উজানঃ মা ভাত পাবো তো রাতে

বাসবিঃ যা বদমাইশ,,নিজে ভুল করে এখন নিজে এসব বলছিস

উজানঃ হুম মা বেশি কিছু হলে সামলে নিও প্লিজ
_________

বলেই উজান পা টিপে টিপে বুকে একটা ফু দিয়ে রুমে ঢুকতেই পাশে থাকা বালিশ দুটো উজানের গায়ে চটকে দিলো হিয়া,,চোখ মুখ থেকে রাগের আভা খুব সুন্দর করেই ভেসে আসছে তার,আজ সত্যি উজানের রক্ষে নেই,,হাতের চুড়ি গুলো মোচড় দিয়ে খুলে সব ছুড়ে দিলো উজানের গায়ে পাড়লে খুন করে ফেলবে সে তার এই অসভ্য বরটাকে

হিয়াঃ এটা এটা আসার সময় হলো আপনার,,কেনো এলেন আপনি,,কি দরকার ছিলো আসার,অফিসেই বস কে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়তেন

উজানঃ হিয়া আমি

হিয়াঃ একদম না,,ভুলেও আমার কাছে আসার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করবেন না আপনি,,আপনার সাথে কোনো কথা নেই আমার

উজানঃ হিয়া আমার কথা টা শুনো প্লিজ

হিয়াঃ কি শুনবো হ্যা কি শুনবো,,নিজে ঘুরতে নিয়ে যাবার ইচ্ছে দেখিয়ে এখন এসে বলছেন এসব,,লজ্জা করে না আপনার

উজানঃ I am sorry হিয়া

হিয়াঃ আপনার এই সরি আপনি আপনার কাছেই রাখুন,,আমার সাথে আর একটা কথা বলবেন না আপনি,একটাও না মানে একটাও না

বলেই হিয়া উজান কে পাশ কাটিয়ে রাতে পড়া কাপড় গুলো নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো,,গিয়েই ঝপঝপ শব্দ তুলে গায়ে পানি ঢালতে শুরু করলো,,সব রাগ যেনো সে দেখাচ্ছে এই পানি গুলোর উপর,,এদিকে হিয়ার রাগ দেখানোর ভঙ্গি দেখে উজান নিজেই হেঁসে দিলো,কি করে সামলাবে সে তার সবে আঠারো তে পা দেওয়া এই বাচ্চা বউ টাকে!!
______________

ওয়াশরুম থেকে বেড়িয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে মাথা মুছতে থাকে হিয়া,,উজান যে হিয়াকে কিছু বলবে সেই সাহসো পাচ্ছে না,,বাধ্য হয়ে নিজের টাওজার আর টি শার্ট নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো উজান,,এসেই ডাক পড়লো রাতের খাবারের,,ভাগ্যিস হিয়া রাতে তাকে খেতে দিচ্ছে

হিয়াঃ মা তোমার ছেলেকে বলে দিও খেতে দিচ্ছি বলে সে যেনো এটা না ভাবে আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি__নেক্সট টাইম এরকম ভুল করলে খাওয়া তো দূরে থাক বাড়িতেও কিন্তু আমি তাকে ঢুকতে দেবো না?

উজানঃ মা তোমার বউমা কে বলে দিও আমি ইচ্ছে করে দেড়ি করে এই কাজ টা করিনি,,নেহাৎ ফরেন থেকে আসা ক্লাইন্ড গুলো মিটিং টা এ্যারেন্জ করলো বলে আমাকে আঁটকে থাকতে হলো

হিয়াঃ কেনো মা তোমার ছেলের অফিসে কি আর কোনো স্টাফ ছিলো না যে তাকে দিয়েই তাদের বস কে কাজ করাতে হয় সবসময়?

উজানঃ মা তোমার বউমা কে বুঝিয়ে দিও আমি এই ব্রাঞ্চের হেড তাই না চাইলেও সব দায়িত্ব এসে আমার ঘাড়েই জুটে সবসময়

হিয়াঃ এতো এতো কাজ যখন ঘাড়ে এসে জুটে তাহলে মা তুমি তোমার ছেলেকে বলে দিও ওখানে অফিসেই একটা সংসার সাজিয়ে নিতে,বাড়িতে আসার কি দরকার রোজ রোজ?

উজানঃ হ্যা কেউ কেউ তো চায়ই আমি রোজ বাড়ির বাহিরে থাকি তাহলে কে কি বাড়িতে বসে করলো না করলো সেটা তো আর দেখতে হয় না তাই না মা বলো?

হিয়াঃ মা তুমি কিন্তু তোমার ছেলে কে ঠিক করে কথা বলতে বলো হ্যা,,আমি বাড়িতে থেকে কি করি শুনি

উজান হিয়ার উওরে কিছু বলতে যাবে তার আগে বাসবি ওদের থামিয়ে দিয়ে এক গ্লাস দুধ নিয়ে আসে,,দু’জনের এরকম ঝগড়া এই ক মাসে বাসবির অভ্যোসে পরিণত হয়েছে তাই সে এখন কিছু গায়ে মাখে না।

বাসবিঃ দেখি রাজা ঘুমোনোর আগে এই দুধ টা খেয়ে নিস

উজানঃ (হাত ধুয়ে এসে হাত মুছতে মুছতে) এসব দুধ হরলিক্স এ বাড়ির পিচ্চি বাচ্চা টাকে খাওয়াও মা,,আমার গায়ে এখনো যথেষ্ট জোর আছে ওসব আমার লাগবে না

বলেই উজান একটা ফিক করে হাসি দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো,,উজানের সাথে বাসবিও একটা হাসি দিয়ে দিলো?

হিয়াঃ আচ্ছা মা এ বাড়িতে আমার জানা মতে তো কোনো বাচ্চা থাকে না তাহলে তোমার ছেলে কোন বাচ্চার কথা বললো বলো তো?

বাসবিঃ কোন বাচ্চার কথা বলে নি মা,,নে দুধ টা খেয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমোতে যা

হিয়াঃ হুম যাই,,দুধের সর টা কি yummy ?
_____________________

রুমে এসে উজান কে একটা ভেংচি কেটে হিয়া সোফায় গিয়ে শুইয়ে পড়লো,,ইচ্ছে ছিলো কালকে রাতের ওসব অনাকাঙ্ক্ষিত ফুলসজ্জা নামক ঝড়ের পর হিয়া আজ থেকে উজানের সাথে এক বিছানাতেই থাকবে কিন্তু না হিয়াকে আজ কিছুতেই উজান এর কাছে যাওয়া চলবে না,,রাগ দেখাতে হবে তো এখনো তাকে নাকি

উজানঃ হিয়া বিছানায় আসো____হিয়া আমি এখানে আসতে বলছি কিন্তু_____হিয়া_____আমি গিয়ে তুলে নিয়ে আসবো এটাই কি চাইছো তুমি______হিয়া____আসতে বলছি কিন্তু

হিয়াঃ আমি বলছি না আপনার সাথে কোনো কথা নেই আমার

উজানঃ কথা নেই মানে?

হিয়াঃ কথা নেই মানে কথা নেই হু

উজান এবার উঠে গিয়ে সোফা থেকে টুক করে কোলে তুলে নেয় হিয়াকে,,হিয়া নিজেকে ছাড়ানোর হাজার চেষ্টা করে কিন্তু উজানের শক্তির সাথে সে পেরে উঠে না

উজানঃ বুঝো না কেনো তুমি হিয়া,,আমি কি জেনেশুনে আজ__কাল তো হবে না আমি পরশু তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো কথা দিচ্ছি

হিয়াঃ আমার জন্মদিন আজকে ছিলো পরশু না,,

উজানঃ Sorry

হিয়াঃ ঠিক আছে,,পরশু যাবেন তো নিয়ে

উজানঃ হুম যাবো রাত একটা হলেও নিয়ে যাবো কথা দিচ্ছি

হিয়াঃ রাত একটার সময় ঘুরতে গিয়ে আমি কি দেখবো খোলা আকাশ

উজানঃ তাই দেখালে তাই দেখবে?কোথায় বরটা আজ সারাদিন খাটাখাটুনি করে বাড়ি ফিরছে তার একটু সেবা করবে তুমি,,তা না করে উল্টে দেখো আমাকেই এই বাচ্চা টা কে বাগাতে হচ্ছে

হিয়াঃ হি হি,,তা কি সেবাযত্ন করতে পারি আমি আপনার

উজানঃ (একটা মিচকে টাইপ হাসি দিয়ে) কেনো তুমি কি সত্যি বুঝো না কি সেবা তুমি করতে পারো

হিয়াঃ যা অসভ্য লোক একটা!!
__________________________

কিছুদিন পর উজান অফিস থেকে ফিরেই সেই সন্ধ্যা হতে ল্যাপটপে খুব মনোযোগ দিয়ে অফিসের কাজ করছিলো,,এতোটাই কাজে বিভোর ছিলো যে হিয়াকে পর্যন্ত ডেকে যে আজ একটু গল্প করবে সেই সময় টাই ওর হয়ে উঠছিলো না,,শেষমেশ রাত দশটার দিকে সব কাজ গুটিয়ে উজান ওর ল্যাপটপ টা সাইড টেবিলে রেখে বাকি ফাইল গুলো গুছাতে যাবে ওমনি হিয়া এসে এক মনে বকবক করতে থাকেই তো থাকে

হিয়াঃ হয়েছে আপনার কাজ,,খাবেন তো নাকি__যা দশটা বাজে!নিচে নিধি আপুর সাথে কথা বলতে বলতে এতো দেড়ি হয়ে গেলো আজ__তবে কি জানেন রিয়াদ ভাইয়া কিন্তু একটা বউ পাইছে একদম পারফেক্ট,,আপু টা এতো মিষ্টি করে কথা বলে,,আপনি দেখেছিলেন নিধি আপুকে কিছু দিন হলো কিন্তু বিদায় নিয়ে এসেছে একবারে___কি মিষ্টি দেখতে চুল গুলোও কি রকম লম্বা আর ঘন ইসস আমার চুল গুলো যদি ওরকম বড় হতো কোমড়ের নিচ অবধি____এই যে শুনেছেন কিছু বলছি আমি আপনাকে___উফফ আমার তো খুব ইচ্ছে আপুর কাছে টিপস নেবো কি করে এতো বড় বড় চুল গুলোর কেয়ার করে উনি আমি মেয়ে না হয়ে ছেলে হলে ওনাকে তুলেই নিয়ে আসতাম__আরে কি হলো কি আমি কিছু বলছি তো

উজানঃ হ্যা__বলো শুনছি তো আমি

হিয়াঃ আরে কি শুনেছেন আপনি,,আমার দিকে তো মনোযোগই নেই আপনার__বলছি কি নিধি আপুকে দেখেছিলেন আপনি__রিয়াদ ভাইয়া আর নিধি আপুকে কিন্তু পাশাপাশি বেশ লাগে বলুন,,আপু টা কি কিউট

উজানঃ (ফাইল গুছাতে গুছাতে)হ্যা নিধি মেয়েটা সুন্দর অনেক__সেদিন বের হতে গিয়ে কথা হলো একটা নীল শাড়ি পড়েছিলো ভালোই লাগছিলো__দেখবা তোমার যেমন হাসলে গালের এক সাইডে টোল পড়ে মেয়ে টার আবার দুই গালেই ডিম্পল আছে

হিয়াঃ ????????

কথা টা উজান হুজুকের বসে বলে ফেলেছিলো,,সেদিন নিধির সাথে রিয়াদো ছিলো,,উজান কিন্তু নিধিকে ইচ্ছে করে দেখে নি,,রিয়াদ দেখিয়ে বললো তোর ভাবীকে নতুন শাড়ি টা কিনে দিছি তাই ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছি দেখতো কি রকম লাগছে দুজনকে পাশাপাশি,ঔ জন্যেই নিধির দিকে তাকানো আরকি

হুঁশ ফিরতেই উজান বুঝতে পারে উজান একটু আগে একটা সাঙ্ঘাতিক ভুল করে ফেলছে,,এই কথা গুলো বলা একদমই উচিৎ হয়নি তার,,নিজের স্এীর সামনে অন্য একটা মেয়ের প্রশংসা এবার এর ফল তুমি হাড়ে হাড়ে টের পাবা শাহরিয়ার সাহেব

হিয়া কিছু না বলে রাগে গটগট করে দৌড়ে গিয়ে রান্নাঘর থেকে একটা বটি নিয়ে এসে উজানের সামনে দাঁড়িয়ে যায়

উজানঃ হিয়া আমি!!

হিয়াঃ এটা একটু ধরে দেখুন তো এটার ধার আছে কি না___কি হলো ধরুন(ধমকে)

উজানঃ (ধরে দেখে)হ্যা আছে দেখে তো মনে হচ্ছে নতুন কেনা

হিয়াঃ হুম___আচ্ছা আমি যদি এটা দিয়ে কারো ঘাড়ে একটা থাবা বসিয়ে দেই তাহলে কি তার ঘাড় থেকে মাথাটা আলাদা হয়ে যাবে এক কোপা তে

উজানঃ (একটা শুকনো ঢোক গিলে) এসব কি বলছো তুমি হিয়া__তুমি তো কতো নম্র একটা মেয়ে তুমি কেনো কাউকে

সপাটে উজানের কলার ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বটি টা তুলে ধরে

হিয়াঃ আমি যেমন নম্র আমি কিন্তু ঠিক তেমনি ডেঞ্জারাস মেয়েও বুঝলেন??___আপনার সাহস হয় কি করে ঘরে বউ রেখে আপনি অন্য নারীকে এতো খুঁতিয়ে খুঁতিয়ে দেখেন,,ছিঃ__নীল শাড়ি পড়েছিলো,,মেয়েটা কিউট,,গালে নাকি দুপাশে টোল পড়ে ছি ছি ছি শাহরিয়ার সাহেব আপনার নজর তো দেখছি খুবই খারাপ____আপনি এক্ষুনি আমার চোখের সামন থেকে সড়ে যান,,বেড়িয়ে যান এই বাড়ি থেকে এমনিতে কিন্তু আসার পর থেকে ঔ ল্যাপটপ নিয়ে বসে ছিলেন আমার দিকে ফিরেও আপনি তাকাননি তার উপর এখন এই রাতে এসে___আপনি বেরুন তো এই ঘর থেকে বেরুন

উজানঃ আমি এই এতো রাতে কোথায় যাবো হিয়া

হিয়াঃ সে টা তো নিধি আপুকে চোখ ভরে দেখার আগে আপনার ভাবা উচিৎ ছিলো

উজানঃ হিয়া পাখি আমার,,এমন কেউ করে তুমি না আমার ভালো হিয়া বলো

হিয়াঃ ভালো মাই ফুট,,আপনাকে আমি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যেতে বলছি আপনি যাবেন কি

উজানঃ হিয়া বটি টা দিয়ে সত্যি কিছু দূর্ঘটন ঘটে যাবে হিয়া

হিয়াঃ গেলে যাক,,এতো সাহস আপনার আপনি আমাকে রেখে,,অফিসের মেয়ে স্টাফ গুলো কে যে চোখ দিয়ে কি রকম করে গুলিয়ে খান কে জানে___আপনি বের হবেন কি আমার বাড়ি থেকে

উজানঃ মাআআ,,মাআআ

হিয়াঃ এই এই এই মাকে ডাকছেন কেনো হ্যা,,মাকে কেনো ডাকছেন,,আপনি কি ভেবেছেন মা এলে আমি আপনাকে ছেড়ে দেবো

উজানঃ হিয়া আমি কোথায় যাবো এতো রাতে

হিয়াঃ সে আপনি জানেন

উজানঃ হিয়া আমি রাতে খাই নি

হিয়াঃ একটা রাত না খেয়ে বাড়ির বাহিরে কাটালে কিচ্ছু হবে না আপনার

উজানঃ হিয়া শুনো হিয়া

হিয়ার আর উজানের কথা শুনার সময় নেই,উজানের শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে হিয়া উজানকে বাহিরে বের করে দিয়ে গেট লাগিয়ে দেয়,,এদিকে উজানের তো কপালে হাত কি করবে এখন সে

উজানঃ নিজে নিধির এতো এতো প্রশংসা করলো তাতে সমস্যা নেই আমি একটু বলেছি বলে আমাকে এভাবে__এজন্য সন্ধি বলে বাচ্চা বউয়ের প্যারা সামলাতে তোর জীবন চলে যাবে

হিয়াঃ দিয়েছি ইচ্ছে মতো ডোজ,,আজ কিছু না বললে লোকটা মাথায় চড়ে বসতো__এরপর থেকে আমাকে রেখে কোনো মেয়ের দিকে তাকাতে গিয়েই সে দুবার ভাববে হু
_____________________
!
!
!
বাসবিঃ হিয়া মা যাবি,, আবীর রা বাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছে আজ,,ভাইয়ের নাকি সিলেটে ট্রান্সফার হয়েছে হুট করে,,চল গিয়ে দেখা করে আসি

হিয়াঃ যাবো,,আচ্ছা চলো আমার অবশ্য এখন আর তেমন পড়া নেই,,চলো

বাসবি আর হিয়া মিলে আবীরদের বাড়িতে যায়,,বাসবি ভেতরে ঢুকে আবীরের মা’র সাথে গল্প জুড়ে দিলেও হিয়া দু ফ্লাটের মাঝে দাঁড়িয়ে আবীরের সাথে কথা বলতে শুরু করে

আবীরঃ এই যে হিয়া পাখি সরি সরি হিয়া ভাবি তাহলে যাচ্ছি আপনাকে রেখে,,আর রাস্তায় হুটহাট রিক্সায় উঠতে বলে ভয় দেখাবো না

হিয়াঃ আপনি,ইআরকি করছেন তো আমার সাথে,,আমার কিসের ভয় হবে শুনি

আবীরঃ কেনো আপনার শাহরিয়ার সাহেবের,,ওনাকে তো আপনি বাঘের মতো ভয় পান

হিয়াঃ বলছে আপনাকে কচু ভয় পাই ওনাকে,,উল্টে আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড আমাকে ভয় পায়,,আমি না

আবীরঃ ভালো ভালো বউদের একটু আধটু ভয় পাওয়া ভালো,,ধরো এই কার্ড টা রাখো এখানে আমার নাম্বার আছে কখনো দরকার হলে কল করো,,অবশ্য আমার মতো এই হতভাগার কোনো দরকার তোমার হবে বলে মনে হয় না

হিয়াঃ (কার্ড টা নিয়ে)বলেছে আপনাকে,,জীবনে কখন কার দরকার এসে যাবে আমরা কি সেটা বলতে পারি!!!!!কখনো ঢাকা এলে আন্টিকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসবেন,আবার আপনাকে আমার হাতের বেশি মিষ্টি দেওয়া রোস্ট খাওয়াবো

আবীরঃ জিহ্বে জল চলে আসলো তো??জানলে দুপুরের দাওয়াত টা আজ তোমাদের বাড়িতে নেওয়াই যেতো

হিয়াঃ আপনারা এরকম হুট করে চলে যাবেন কে জানতো,,মা তো বললো মা জানলে আপনাদের দুপুরের খাবার টা আজ এখানেই বানিয়ে দিত

আবীরঃ আন্টির খেয়াল রেখো,,এরকম শ্বাশুড়ি কিন্তু সহজে হয় না,,আর তোমার বর তো বাঁধিয়ে রাখার মতো এখনি যা পজেসিভ তোমাকে নিয়ে,,বাচ্চা বউ তো

আবীরের কথাতে হিয়া প্রথমে রেগে গিয়ে পর মুহুর্তে খিলখিল করে হাসতে শুরু করে,,আর এমন সময় উজান সিঁড়ি দিয়ে উঠে এসে আবীর হিয়াকে এক সাথে হাসতে দেখে খানিকটা থমকে দাঁড়িয়ে যায়,,উজানের দিকে চোখ পড়তে হিয়ার হাসি ওখানে থেমে যায়,,আবীর দেখে উজানকে দেখে হিয়ার কলিজা পুরো চুপসে গেছে

উজান উপরে উঠে এসে দু’জনের সামনে দাঁড়াতেই হিয়া ভয়ে পুরো কাঁপতে থাকে

উজানঃ হিয়া ঘরে যাও,,,,কি হলো যা-ও,,

হিয়া এক লাফে এই গেট থেকে ঔ গেটে লাফিয়ে রুমে ঢুকে পড়ে

আবীরঃ (উজানের কাঁধে একটা বাড়ি দিয়ে)তো ব্রো আজকে তো আমরা চলে যাচ্ছি,,ভয় নেই,,তোর পিচ্চি বউ টার দিকে এখন আর অন্য কেউ নজর দিবে না

উজানঃ বিশ্বাস হয় না ঠিক তোকে

আবীরঃ তাহলে আর কি করার,,বিশ্বাস না করতে পারলে একদিন না হয় অবিশ্বাস টাই তোর সত্যি করে দেখাবো

উজানঃ (আঙ্গুল তুলে)হিয়ার দিকে ভুলেও অন্য নজরে তাকাবি না আবীর,,তোর চোখ তুলে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসবো

আবীরঃ যা আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম

উজান আর কিছু না বলে রুমে ঢুকে যায়,,আবীর একটা নীরব হাসি দিয়ে আবার জিনিসপত্র নামাতে শুরু করে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here