senior life partner পর্ব ১২

0
1740

#Senior_life_partner
পর্ব——-12
Afrin Ayoni

নিশুয়ার সামনেই স্কুল পরীক্ষা।খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করছে।আজকাল science teacher টা ও অল্পতেই শুধু punishment দেওয়ার জন্য আগে পিছে লেগে আছে।নিশুয়ার ইচ্ছে করে লোকটাকে ধরে কাদায় নিয়ে চুবাতে,পোলট্রি মুরগির গন্ধওয়ালা ফার্মে আটকে রাখতে।লোকটার সাথে একদিন ফাজলামি করেছে বলে এখন উঠতে বসতে এত কড়াকড়ি দিতে হবে??

হঠাৎ ইসুয়া এসে ঢুকলো নিশুয়ার রুমে,,

এই নিশু!পরশু তোর কোনো important class আছে?

নিশুয়া ভ্রু কুঁচকে বললো, “কেন?”

ইসুয়া– আমাদের ভার্সিটিতে নবীনবরণ উৎসব,যাবি??

নিশুয়া — তোর ভার্সিটির উৎসব,তুই যা।আমি কেন??

ইসুয়া– চল না!! ভালো লাগবে তোর।আর আমার ও একটু comfortable ফিল হবে।

নিশুয়া — কেন?তোর আমি ছাড়া uncomfortable ফিল হবে কেন?তুই কি ভাবছিস রবিন ভাইয়া তোকে সবার সামনে আবার সত্যি সত্যি কিস করে বসবে??

ইসুয়া রেগে, “সবসময় ফালতু কথা নিয়ে বসে থাকিস।ইচ্ছে হলে যাস,নয়তো যেতে হবেনা।”

নিশুয়া কিছুক্ষণ ভেবে,”আচ্ছা দেখি।”

ইসুয়া– আচ্ছা, বল তো কি পড়া যায়??

নিশুয়া– মানে??

ইসুয়া– শাড়ি না কি long কুর্তি??

নিশুয়া– তুই টিচার,,শাড়ি তেই তোকে ফাটাফাটি মানাবে।

ইসুয়া– তাহলে তো শাড়ি সিলেক্ট করতে হবে,তারপর মেচিং করতে হবে সব।ইস্……. কত কাজ বাকি।

নিশুয়া– হুম।এবার যা তুই,আমি একটু পড়বো।

ইসুয়া দরজার দিকে এগোতে এগোতে বলে,”যাচ্ছি যাচ্ছি।”
………………………………………………..

রিদীমা স্বাদের ঘর থেকে বেরিয়ে রান্না ঘরে আসে।রেহানা বেগম কাজ করছিলেন।রিদীমা কে রান্নাঘরের দরজায় দেখে বললেন,,,

ভিতরে আয়।

রিদীমা– কি করছেন??

এই তো রান্না বসাবো।বিরিয়ানি খাবি??

রিদীমা– আমার না ঝাল ঝাল সবজি খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে।

রেহানা বেগম– আচ্ছা, সেটাই হয়ে যাক তাইলে।

রিদীমা– তাহলে তো সবজি কাটতে হবে অনেক।

রেহানা বেগম– কেটে দিতে পারবি না??

রিদীমা– কেন নয়।একশোবার……..

রেহানা বেগম– ওকে ….. একটুখানি হেল্প করলেই হয়ে যাবে।

স্বাদ ততক্ষণে নিজের পোশাকের ব্যবস্থা করে নিচে নেমে এসেছে। রিদীমা আর রেহানা বেগম টেবিলে বসে সবজি কাটছিলেন ছুরি দিয়ে। স্বাদ দুজনকে একবার আড়চোখে দেখে সোফায় বসে টিভি অন করে।

রিদীমা কে উদ্দেশ্য করে স্বাদ বলে,”লন্ডনের one &only business woman রিদীমা চৌধুরী,,,,স্বাদ আহসানের ড্রয়িং রুমের টেবিলে বসে তার মায়ের সাথে সবজি কাটছে …… news টার বিস্তারিত দেখতে চোখ রাখুন মফিজ টেলিভিশনের পর্দায়।”????

রেহানা বেগম– মশকরা করোস??

স্বাদ– যা দেখলাম তা বলছি।

রিদীমা– ভালো, তোর দিন বলতে থাক।

স্বাদ– তা আজ হঠাৎ কি মনে করে?এতদিন “আমার বাসায় আয়” বলতে বলতে আমার জিভে ঘা হয়ে গেছে তারপর ও তোর দয়া মায়া হল না।আজ সকাল সকাল কোন মতলবে এসেছিস।

রিদীমা চোখ গুলো ছোট ছোট করে,”এতদিন আসিনি ভালো ই হয়েছে।আজ নিজ থেকে এসে তোকে কত কৈফিয়ত দিতে হচ্ছে।”

তারপর রিদীমা রেহানা বেগমের দিকে তাকিয়ে, “আচ্ছা আন্টি!আজ বরং আমি চলে ই যাই।”

রেহানা বেগম– তুই ঐ খাটাশের বাচ্চার কথা শুনে আমার বাড়ি থেকে চলে যাবি।বাড়িটা আমার, আমিই থাকি 24 hours…..ও তো দুই তিন ঘন্টার ব্রেক টাইমে আসে।

স্বাদ– আমি তোমার মত আজাইরা না মা,পুরো লন্ডনের রোগীদের দেখাশোনার দায়িত্ব আমার কাঁধে।তাই ঐ 2,3 ঘন্টা ও যে বাড়িতে থাকি,সেটাই যথেষ্ট নয় কি??

আর আমাকে যে খাটাশের বাচ্চা বললা!! আমি তোমার বাচ্চা তাও কি ভুলে গেছো??

রেহানা বেগম অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে, “হুম হুম আমি তোর বোঝা।দেশে গিয়ে উষ্টা মেরে ফেলে দিয়ে আয়।যদি তোর ঘাড় হালকা হয়।”

স্বাদ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। স্বাদ– এসব কেমন কথা মা??

রিদীমা মা আর ছেলের দুষ্টু মিষ্টি অভিমানী ঝগড়ার মাঝে রেহানা বেগমকে সাপোর্ট করে স্বাদ কে শাসাতে বললো,”ঐ ঐ তোর সমস্যা কী?”

স্বাদ নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী দল ভারী দেখে অসহায় মুখ করে বললো,”আমার একটাই সমস্যা। আর সেটা হল নানির মেয়ে খালি প্যারা দেয়।”

————————————————————

দেলোয়ার খান কারো সাথে ফোনে কথা বলছিলেন,,

“তোদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না কুত্তার বাচ্চার দল, জারজের বাচ্চা, সামান্য একটা মেয়ে মানুষ কে মারতে পারলি না?বাস্টার্ড।।”

অন্য পাশ থেকে, “বস আমরা অনেক চেষ্টা করেছি।কিন্তু হাত ফসকে বেরিয়ে গেল।”

দেলোয়ার খান– আমার ডিকশনারি তে ব্যর্থতা বলতে কিছু নেই।আমার কাজ গুলো ঠিকঠাক মতো করতে না পারলে তোদের দুধ কলা দিয়ে পুষছি কেন??

অন্য পাশ থেকে– বস ,আর এরকম ভুল হবেনা।

দেলোয়ার খান– আচ্ছা রাখ।

অন্য পাশ থেকে– বস আরেকটা কথা।

দেলোয়ার খান– বল!

অন্য পাশ থেকে– যে মেয়ে টা কে মারার হুকুম দিয়েছিলেন,উনি কি কোনো famous super star নাকি??

দেলোয়ার খান– এ কথা কেন??

অন্য পাশ থেকে– বস ,তার চার পাশে সুরক্ষা চক্র ঘুরছে।তার কাছে পৌঁছাতে হলে আমাদের আরো দুটো স্টেজ পার করতে হবে।কেউ তাকে রক্ষা করছে আর কেউ তাকে মারার চক্রান্ত করায় আমাদের দলের লোকদের গুম করছে,ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

দেলোয়ার খানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। ছোট করে বলে,”রাখ!আমি দেখছি।”

দেলোয়ার খান বড়ই চিন্তায় পড়ে গেলেন, তার একটা পথের কাটাকে শেষ করতে গিয়ে হাজার হাজার বাঁধা আসছে।
……………………………………………….

ইসুয়া ভার্সিটির ফার্স্ট ইয়ারের ক্লাস নিচ্ছিলো।দরজায় কারো অনুমতি নেবার শব্দ শুনে তাকালো,,,,

রবিন— may we come in Miss.অধ্যাপিকা?

ইসুয়া ভ্রু কিঞ্চিত করে— Yes

রবিন শুভ আর নয়ন ইসুয়ার অনুমতি পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করলো।ক্লাসের মেয়ে গুলো একটু নড়েচড়ে বসে। সবাই যেন বড় ভাইদের নজরে পড়তে ব্যস্ত।

ইসুয়া– কি ব্যপার??

শুভ — কাজ ছিলো।

ইসুয়া– কি??

নয়ন — রবিন জানে।

রবিন মুখ টিপে হাসে আর ইসুয়ার একটু কাছাকাছি এসে বললো,”আজ দুজনে মিলে কি করে প্রেম করতে হয় সেটা শিখাবো।”

ইসুয়া রেগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই রবিন চোখ মেরে বলে,”No tension Miss.অধ্যাপিকা। আপনার বেশি সময় waste করবো না।”

রবিন স্টুডেন্ট দের দিকে তাকিয়ে, “So guy’s সামনেই নবীনবরণ, এই তো আর দুদিন।”

সবাই চিল্লানি দিয়ে উঠে—- হ্যাঁ

রবিন– প্রতিবার সবাই নানা ইভেন্টে অংশগ্রহণ কর ।এইবার ও কে কি করবে?সেটা আমাদের জানিয়ে দাও।আর ভার্সিটির অনুষ্ঠান টা আরো সুন্দর করতে help কর।

একটা মেয়ে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লো,”রবিন ভাইয়া আপনার সাথে ডুয়েট কিছু করার সুযোগ পাব?”

ইসুয়া রবিন শুভ আর নয়ন হা করে আছে।

মেয়ে টা — আমার অনেক দিনের ইচ্ছে আপনার সাথে কিছু একটা করার ,হয় গান নয়তো নাচ।প্লিজ…..

শুভ — সরি সিস্টার। আমাদের রবিন এইবার একটাই performance করবে,তা ও singing with dance ….

মেয়ে টা — রবিন ভাইয়া আমি কি partner হতে পারি?

রবিন অসহায় মুখ করে,”সরি sis …. আমার সিনিয়র পার্টনার সিলেক্ট হয়ে গেছে।”

মেয়ে টা মুখ কালো করে বসে পড়ে। শুভ আর নয়ন সবার নাম লিস্ট করতে থাকে। শুভ কাগজে কিছু লিখছে আর মুখ টিপে টিপে হাসছে। ইসুয়া মনে মনে মেয়ে টার প্রতি ক্ষোভ আনে আর ভাবে,”এইটা কোনো পোলা হইলো?ভার্সিটিতে আর কোনো পোলা নাই তার সাথে partnership করার ?কি choice ছি!!”

_________________________(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here