Ragging To Loving ?part-8

0
1104

? Ragging To Loving ?
Part:: 8
Writer:: Ridhira Noor

পান্নাঃঃ- হ্যাঁ! আমি। কি হচ্ছে টা কি আমাকে কি প্লিজ জানাবে? এই কয়দিন ছিলাম না বলে এত কিছু হয়ে গেল।

আফরান শুধু প্রশ্ন সূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কি বলছে কিছুই বুঝতে পারছে না। পান্না আর কিছু না বলে বিরক্তিকর ভাব নিয়ে নিজের ফোনে কি যেন করল। আফরানকে বলল তার ফোন চেক করতে। ফোনে এমন কিছু দেখে চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। সাথে রাগও হচ্ছে ভীষণ। সবাই একে একে ফোনের দিকে তাকিয়ে ভ্যাবচ্যাকা খেল। ওইদিনের কাদার ফাইটিং এর ছবি আর ভিডিও সোস্যাল মিডিয়াতে দেওয়া যা দেখে অনেকে হাসাহাসি করছে। আফরান এবার রাগ কন্ট্রোল করতে না পেরে ফোন মুষ্টি বদ্ধ করল। রাগে হনহন করে চলে এলো সেদিক থেকে। নূর আর বাকিরা ক্লাস করছিল। আফরান কিছু না ভেবে হুট করে ক্লাসে ঢুকে পড়ল। স্যার কিছু বলতে যাবে তার আগেই আফরান নূরের হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে বাইরে নিয়ে গেল। ক্লাসের সবাই শুধু হা হয়ে বসে আছে। কি হলো সব মাথার উপর দিয়ে গেল। নূরের মুখ দিয়ে যেন কোন শব্দ বের হচ্ছে না। রোবটের মতো হয়ে আছে হঠাৎ কি হলো কি বুঝতে পারছে না। কি যেন ভেবে হাত ঝাড়া দিয়ে আফরানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল।

নূরঃঃ- কি হচ্ছে এসব। এটা কোন ধরনের অসভ্যতা। (রাগী সুরে বলল। আফরান কোন ভ্রুক্ষেপ না করে আবার টেনে নিয়ে যাচ্ছে) আরে আরে এটা কি হচ্ছে। ছাড়ুন বলছি। ছাড়ুন।

আফরানের সেই দিকে কোন খেয়াল নেই। নূরকে টেনে একটি খালি ক্লাসরুমে নিয়ে গেল। নূর ভয়ে কাঁপছে। কোন অঘটন ঘটবে না তো? আফরান হঠাৎ এভাবে নিয়ে এলো। কি করতে চাইছে।

নূরঃঃ- আপ… আপনি আমাকে এ…

নূরকে কিছু বলতে না দিয়ে বাহু ধরে টেনে দেয়ালে চেপে ধরল। রাগে আফরানের পুরো শরীর কাঁপছে। চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে আছে। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপাল ছুঁয়ে চোখে পড়ছে।

আফরানঃঃ- তুমি সব ইচ্ছে করে করেছ তাই না?

নূরঃঃ- আ… আমি কি… করেছি?

এক হাতে নূরকে চেপে ধরে অন্য হাতে ফোন বের করে ভিডিও দেখালো। ভিডিও দেখে নূর অবাক হলেও পরক্ষণে ফিক করে দিল। কারণ ভিডিওটা দেখে যে কেউ হাসতে বাধ্য। একেকটার অবস্থা এমন হয়েছে যে বলে বুঝানো যাবে না।

নূরঃঃ- এটা কোথা থেকে পেলেন। (বলে হাসতে লাগলো)

আফরানঃঃ- জাস্ট শাট আপ। (চিল্লানোতে নূর কেঁপে উঠল।) তোমার হাসি পাচ্ছে? তোমার জন্য আমাদের নিয়ে সবাই কত হাসাহাসি করছে বুঝতে পারছ।

নূরঃঃ- ওহ হ্যালো! আমার জন্য মানে? আমার জন্য কি? আপনার জন্য হয়েছে। আপনি শুরুতে আমাদের উপর কাদা ছিটিয়ে ছিলেন। কি ভুলে গেলেন। তাও ভুল করে হলে কথা ছিল আপনি ইচ্ছে করে এমন করেছেন। সব দোষ আপনার আর আপনি উল্টো আমাকে দোষারোপ করছেন। বাহ্।

আফরানঃঃ- আর ভিডিও? এটা তুমি আপলোড করেছ তাই না? যাতে সবাই আমাদের এই অবস্থায় দেখে হাসুক। আমাদের সবার কাছে অপমানিত করতে এমন করেছ। কি তাই তো?

নূরঃঃ- প্রথমত আমি এই ভিডিও সম্পর্কে কিছু জানি না। আপলোড করা তো দূরে থাক। আর আমি আপনাকে অপমানিত করব কেন?এখানে অপমানজনক কোন কিছু তো দেখছি না। হাসাহাসি করার কথা বলছিলেন। যাক অন্তত না জানা বশত কারো মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি। ভালোই লাগছে।

আফরানঃঃ- সিরিয়াসলি? তোমার মাথায় বুদ্ধি বলতে কিছু আছে নাকি সব গোবরে ভরা। এইটুকু সেন্স তোমার মধ্যে নেই যে ভার্সিটির সবাই আমাদের দেখে হাসছে। আমরা তাদের কাছে হাসির পাত্র হয়ে গিয়েছি। ইটস সো ইনসাল্টিং।

নূরঃঃ- তাতে আমার কি? তা নিয়ে আপনি চিন্তা করুন। তাতে আমার কিছু যায় আসে না। আর কিছু করার আগে ভেবে চিন্তে করবেন। (আফরানকে সরিয়ে চলে গেল।)

আফরানঃঃ- (দেয়ালে সজোরে ঘুসি মারল) আই জাস্ট হেইট হার।

নূরঃঃ- (বাইরে বেরিয়ে) আই জাস্ট হেইট হিম।

এদিকে বাকিরা তাদের খুঁজাখুঁজিতে ব্যস্ত। নূর ক্লাসের দিকে যেতেই দেখে তার বান্ধবীরা তাকে খুঁজছে। নূরকে দেখে তারা তড়িঘড়ি করে দৌড়ে এলো। এসেই নানা প্রশ্নের তীর ছুড়ে দিল তার দিকে। নূর তাদের থামিয়ে পুরো কাহিনি বলল। ওই দিকে ওরাও আফরানকে খুঁজছে। রাগের চোটে কি না কি করে বসে। পান্নাকে এই কয়দিন ঘটে যাওয়া কাহিনি বলায় সেও নূরের উপর ক্ষেপে যায়। পার্কিং এরিয়া বসে ছিল তারা দেখে আফরান তাদের দিকে আসছে।

পান্নাঃঃ- কি হয়েছে? এভাবে রেগে কোথায় গিয়েছ?

আফরানঃঃ- (এক গভীর নিশ্বাস ছেড়ে বলল) বাদ দাও এমনিতেই মাথা ঠিক নেই।

পান্নাঃঃ- এসব নিশ্চয় ওই মেয়ে কি যেন নাম বললে… হ্যাঁ নূর ওই করেছে। তোমাকে সবার সামনে ইনসাল্ট করতে।

আফরানঃঃ- না ও কিছু করেনি। সে এই ভিডিওর ব্যাপারে কিছু জানত না। আমি বলার পরই জেনেছে। এন্ড প্লিজ চেঞ্জ দ্যা টপিক।
.
.
.
নূরঃঃ- এখন আর ক্লাস করার মুড নেই চল শপিং মলে যায়। মুডটা ফ্রেশ হবে।

শপিং মলে গেল। দুই ভাগ হয়ে গেল। যার যার প্রয়োজনীয় জিনিস নিবে আর এক ঘন্টার মধ্যে নিচ তলায় রেস্টুরেন্টে একত্রিত হবে। নূর আলিফা মেহের দুই তলায় পুষ্প আমরিন সিমা তিন তলায়। সিমার একটা শোপিস ভীষণ পছন্দ হলো সে পুষ্পকে টেনে দোকানটাতে গেল। আমরিন আশেপাশে তাকিয়ে হাটছিল হঠাৎ কারো সাথে ধাক্কা লাগলো। সরি বলতে তার দিকে তাকিয়ে থেমে গেল।

আহিলঃঃ- হাই মাই লাভ।

আমরিনঃঃ- আই এম নট ইউর লাভ।

আহিলঃঃ- বললেই হলো।

এগিয়ে আসতেই আমরিন পিছিয়ে যায়। আবার এগিয়ে আসতেই আমরিন রেগে যায়। এবার আমরিন উল্টো তার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আহিল পিছিয়ে যাচ্ছে।

আমরিনঃঃ- কি সমস্যা আপনার? বার বার আমার দিকে এগিয়ে আসেন কেন?

এগুতে এগুতে সিড়ির পাশে চলে এলো। আহিল সিড়িতে পিছলে পড়ে যেতে নিলে আমরিন তার কলার ধরে টেনে নিল। আহিল টান সামলাতে না পেরে আমরিনের কোমর জড়িয়ে ধরে তার গায়ের উপর পড়ে যায়। আমরিন চোখ খিছে ফেলল।

আহিলঃঃ- জানি না কেন বারবার তোমার দিকে এগিয়ে যায়। কিছু একটা আমাকে তোমার দিকে টানে। না চাওয়া সত্ত্বেও তোমার দিকে এগিয়ে যায়।

আহিলের কথায় আমরিন চোখ খুলে তার দিকে তাকিয়ে বলে “এসব ফ্লার্টি কথা বার্তা আমার উপর চলবে না।” আহিলকে সরিয়ে উঠে দাঁড়ায়। আহিলও দাঁড়িয়ে যায়।

আহিলঃঃ- ফ্লার্ট করছি না। মনের কথা বলছি। আর সত্যি বলছি। এক অজানা টান অনুভব করি তোমার প্রতি। যা আগে কখনো অনুভব করি নি। আমি সত্যি বলছি।

হঠাৎ আমরিনের বুক ধুকপুক করে উঠল। এক দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেল। বুকে হাত দিয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিতে লাগলো। যখনই আহিল আমরিনের কাছে আসে তার নিশ্বাস ভারি হয়ে উঠে। সেদিন ভার্সিটির ক্যান্টিনের বাইরে। আর ওইদিন কাদা লাগানোর সময়। আমরিন চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো মূহুর্তটা।
“”””””সবাই যখন কাদা নিয়ে মাখামাখি করছি সেও কাদা ছুড়ে মারল আহিলের গায়ে। আহিল শান্ত দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে কাদা হাতে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে আসছে। আমরিনের অনেকটা কাছে এসে দাঁড়াল। আলতো করে তার গাল দুটো ছুঁয়ে দিল। আমরিন বরফ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তখন বুকে ঠিক এমন কম্পন হচ্ছিল। হঠাৎ করে কাদা নিয়ে আহিলের পুরো মুখে মাখিয়ে দিল। “”””””
আহিলও ভাবছে হঠাৎ ওর কি হয়ে যায় যখন আমরিন ওর সামনে আসে। ওইদিন ক্যান্টিনের বাইরে গিয়েছিল তার র‍্যাগিং করতে কিন্তু হুট করেই তার কাছে চলে এলো। আবার কাদা লাগানোর সময়ও কি ভেবে না জানি ইচ্ছে হচ্ছিল আমরিনের সাদা গাল দুটো আলতো করে ছুঁয়ে দিই। আর আজ যা বলল সে নিজেও কল্পনা করেনি এমন কিছু বলবে। আর আমরিনের লজ্জায় লাল হয়ে যাওয়া মুখটা ভেসে আসছিল। এসব ভাবতে ভাবতে মুচকি হাসি দিল।
.
.
.

সিমা শোপিসটা দেখতে লাগলো। বেশ সুন্দর একটা ইউনিকর্ণ। ধবধবে সাদা ঘোড়ার মতো লেজ আর মাথার শিং সাত রঙে রঙিত। শোপিসে হাত দিতেই তার হাতের উপর আরেকটা হাত।

ওয়াসিমঃঃ- মিস পিংকি?

সিমাঃঃ- মি. পিংপং!

.
.
.
চলবে

বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here