Ragging To Loving ?part-15

0
1035

? Ragging To Loving ?
Part:: 15
Writer:: Ridhira Noor

আফরানকে রেগে যেতে দেখে ছেলেরা তার পিছনে গেল। রেগে আফরান বাইরে গিয়ে গাড়ির পাশে দাঁড়ায়। সানগ্লাস পড়ে আয়না তাকিয়ে জোরে জোরে হাসতে লাগলো। ছেলেরা বাইরে এসে দেখে আফরান হাসছে। এতই হাসছে যে হাসতে হাসতে গাড়িতে লুটিয়ে পড়ছে। ওকে এভাবে হাসতে দেখে বাকিরা হেসে তার কাছে গেল।

আরিফঃঃ- সেই কবে তোকে এত হাসতে দেখেছি মনে নেই। দীর্ঘ সময় পর তোকে মন খুলে হাসতে দেখেছি।

ইয়াশঃঃ- আগে এভাবেই হাসি খুশি থাকতি। অন্যদের হাসাতি। কিন্তু….

ওয়াসিমঃঃ- আসলেই নূরের মধ্যে নিশ্চয় কোন জাদু আছে। একটা মানুষের মন যতই খারাপ হোক পাঁচ মিনিট ওর সাথে থাকলে ডিপ্রেশনও ডিপ্রেশনে চলে যাবে। সবাইকে আনন্দ দেয়।

আফরানঃঃ- সে তো “আনন্দিতা”। (মুচকি হেসে আনমনে বলে উঠল। আবার মূহুর্তে চুপ হয়ে গেল) আচ্ছা চল। (সানগ্লাস পড়তে নিলে আবার হেসে পকেটে রেখে দেয়। তারপর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।)

তাদের বের হওয়ার পর নূর আর বাকিরাও বেরিয়ে পড়ে। বাইরে এসে আফরানকে হাসতে দেখে তারাও অবাক। নূর তো অবাক দৃষ্টিতে আফরানের হাসি দেখছিল। এই প্রথম সে আফরানকে মন খুলে হাসতে দেখেছে। হাসলে তাকে অসম্ভব সুন্দর দেখায়। কিন্তু শেষে আফরান তাকে যে নাম দিল “আনন্দিতা”। নামটা শুনে তার অবাক হওয়ার সীমানা পেরিয়ে গেল।

নূরঃঃ- আনন্দিতা? (দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল)

মেহেরঃঃ- কিছু বললি?

নূরঃঃ- না। কিছু না। চল। আর শোন যে যার মতো করে প্রস্তুতি নিবি। যুদ্ধের জন্য অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়। আমাদের প্রধান অস্ত্র বাঁশ। এমন বাঁশ দিব জীবনে ভুলবে না।

বাকিদের ড্রপ করে আফরান আর রিহান বাসায় পৌঁছাল। আফরান সবার আড়ালে মুখ টিপে হাসছে। রিহান সেটা খেয়াল করলেও কিছু বলছে না। কারণ আফরানকে প্রায় অনেকদিন পর মন খুলে হাসতে দেখছে।

রিহানঃঃ- (থ্যাংকস নূর। আজ তোমার জন্যই আফরানকে সে আগের রূপে ফিরে পেলাম।)

আফরানের মাঃঃ- কি হয়েছে তোর এভাবে হাসছিস কেন?

আফরানঃঃ- পান্ডা… না মানে কিছু না এমনি।

আফরানের মাঃঃ- তুই পাগল নাকি যে এমনি এমনি হাসছিস।

রিহানঃঃ- পাগল না বড় মা। তোমার ছেলে পান্ডা হয়েছে। (আফরান তেড়ে আসতেই দিল দৌড়।)

আফরানের মাঃঃ- কিসের পান্ডা আফরান?

আফরানঃঃ- কিছু না মা। (মাথা চুলকাতে চুলকাতে চলে গেল।)

আফরানের মাঃঃ- জানি না কি হয়েছে? কিন্তু যাই হোক অনেকদিন পর এত আনন্দে দেখলাম। তোর এই আনন্দের কারণ যেন আজীবন থাকে।

ওয়াসিম আহিলকে ফোন করলো।

ওয়াসিমঃঃ- আহিল তুই কি কিছু খেয়াল করেছিস?

আহিলঃঃ- হ্যাঁ। আমরিন সিমা ওই দিনের পর থেকে আমাদের কাছ থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে থাকছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে সামনেই আসছে না। ভার্সিটিতে আসলেও ক্লাস করে দুইজন একসাথে পালিয়ে যায়।

ওয়াসিমঃঃ- আজকেও এমন হয়েছে। প্রোগ্রামে আমি সিমার কাছে গিয়েছিলাম কথা বলতে। কিন্তু সে আমাকে এভয়েড করে দৌড়ে চলে গেল। আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাদের ইগনোর করছে।

আহিলঃঃ- আমারও তাই মনে হয়। এতদিন আমরা ওদের পিছনে দৌড়েছি। এখন ওদের আমাদের পিছনে দৌঁড়াব। দেখবি ওরা নিজে এসে কথা বলবে।

ওয়াসিমঃঃ- কিন্তু কিভাবে? আমি সত্যি সিমাকে অনেক ভালবাসি। সে না আমার জবাব দিচ্ছে না কথা বলছে। ওর ইগনোর আমার ভীষণ খারাপ লাগছে। কি করে বুঝব সে আমাকে ভালবাসে কি না?

আহিলঃঃ- আমিও জানতে চাই আমরিন আমাকে ভালবাসে কি না? তা জানার জন্য আমার একটা প্লান আছে। যা কালকে এক্সিকিউট করব।

ওয়াসিমঃঃ- ওকে। থ্যাংকস ইয়ার। এই কয়দিন আমার কেমন ফিল হচ্ছিল বলে বুঝাতে পারব না।

আহিলঃঃ- বুঝাতে হবে না। আমারও সেম ফিল হচ্ছিল। ওকে বাই।

পরের দিন ভার্সিটিতে_________________

নূর ও বাকিরা ক্লাসের দিকে যাচ্ছিল। আমরিন সিমার কানে ফিসফিস করে বলছে।

আমরিনঃঃ- আজকেও আমাদের বেঁচে থাকতে হবে। কোনো ভাবে ওদের সামনে আসা যাবে না। হলে আবার পিছনে পড়বে।

সিমাঃঃ- হ্যাঁ রে….. (সামনে তাকিয়ে দেখে আহিল ওয়াসিম) ওই দেখ সামনে। শয়তানের নাম নিলি শয়তান হাজির। (কিন্তু একি আহিল ওয়াসিম তাদের দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেল।) কিরে আজ সূর্য কোন দিকে উঠল রে।

আমরিনঃঃ- মনে উত্তর দিকে। এমনি সবসময় আমাদের দেখলে দৌড়ে চলে আসে। ক্লাসের বাইরে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে। আর আজ এই দেখি অন্য দৃশ্য।

নূরঃঃ- তোদের কি হয়েছে বল তো। কিছুদিন ধরে দেখছি দুইজন কি খিচুড়ি রাঁধছিস। ফিসফিস করে কথা বলিস। ক্লাস করে এমন দৌড় দিস যেন কেউ বাঁশ নিয়ে তোদের তাড়া করে। আজ তো বলতেই হবে।

আমরিন সিমা একে অপরের দিকে তাকিয়ে এক ঢোক গিলল। ক্যান্টিনে গিয়ে বসল। সেখানে সিমা আমরিন সব কাহিনি বলল।

নূরঃঃ- অসভ্য অভদ্র বেয়াদব নির্লজ্জ বেহায়া। লজ্জা করে না তোদের। তোদের তো থাপরাইয়া…. থাক আর বললাম না। এত কিছু চলছে এতদিন ধরে আমাদের একটু জানালি না। ওহ এই ফ্রেন্ড আমরা তোদের। ভালো ভালো খুব ভালো। (ইমোশনাল অত্যাচার)

আমরিনঃঃ- আরে আমরা নিজেরাই বুঝতে পারছি না কি করব। তাই….

আলিফাঃঃ- ওদের দিকটা তো বললি। এবার তোদের বল।

সিমাঃঃ- আমাদের কি?

আলিফাঃঃ- তোরা ওদের ভালবাসিস? দেখ ওদের দুইজনকে যতটুকু দেখেছি ওরা কিন্তু খুব ভালো। হ্যাঁ আহিল ফ্লার্ট করত। কিন্তু ভার্সিটিতে আসার পর আর কোন মেয়ের সাথে দেখিনি। ওয়াসিম সত্যি খুব ভালো খুব মিশুক।

মেহেরঃঃ- তোরা সময় নিয়ে ভেবে চিন্তে দেখ। ভালবাসা পাওয়া কিন্তু অনেক কঠিন। আর যদি পেয়েও হারিয়ে ফেলে তাহলে তার মতো হতভাগা আর নেই।

নূরঃঃ- ভালবাসা মন থেকে হয়। একবার নিজের মনকে জিজ্ঞেস কর সে কি চাই। বাকিটা তোদের উপর। আর যদি হয়ে যায়। তাহলে দুই ফকিন্নি মিলে ডাবল ট্রিট দিবি।

আমরিন-সিমাঃঃ- আগে হোক।

তারা গেল ক্লাসে। ক্লাস শেষে আমরিন আর সিমা বারবার বাইরে দেখছে আহিল ওয়াসিম আছে নাকি? কিন্তু তারা নেই। বাইরে বেরিয়ে দেখে সেখানেও নেই। আগে তাদের থেকে লুকিয়ে থাকত আর এখন তাদেরই খুঁজছে। সিমা পার্কিং এরিয়ায় দিকে চোখ যেতেই চোখ দুটো রসগোল্লা হয়ে গেল। আমরিন সিমাকে এমন অবস্থায় দেখে সেও সেদিকে তাকিয়ে দেখে তার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। আহিল ওয়াসিম পার্কিং এরিয়া তাদের সাথে দুইটা মেয়ে। খুব হেসে হেসে কথা বলছে। আহিল ওয়াসিম আড়চোখে তাদের দিকে তাকিয়ে তাদের রিয়েকশন দেখছে আর হাসছে। সিমা চোখ কচলিয়ে আবার দেখতে লাগলো।

সিমাঃঃ- আমার চোখে কোন সমস্যা হয়েছে নাকি তুইও তা দেখছিস।

আমরিনঃঃ- আমিও তা দেখছি রে।

আহিল ওয়াসিম জীপে উঠে মেয়ে দুইটার সাথে চলে গেল। সিমা আমরিন হা হয়ে তাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে।

ওয়াসিমঃঃ- তোর আইডিয়া কাজে আসলো।

আহিলঃঃ- এখন শুধু দেখব ওদের রিয়েকশন কেমন হয়।
.
.
.
ভার্সিটির ক্যাম্পাস এরিয়ায় সবাই একত্রিত হলো।

নিহাল স্যারঃঃ- প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ আসা করি সবাই ভালো আছেন। আপনারা হয়তো জানেন প্রতি বছর আমাদের ভার্সিটিতে প্রতিযোগিতা হয়। এই প্রতিযোগিতা বিভিন্ন খন্ডে বিভক্ত থাকবে। শুরু শক্তি নয় বুদ্ধিও প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিযোগিতা তিনদিন পর শুরু হবে। আশা করি সকল শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবেন। প্রতিযোগিতা কি হবে সেটা সারপ্রাইজ। আর এই প্রতিযোগিতা যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় তার দায় দায়িত্ব আমার। যদি কারো কোন প্রশ্ন থাকে বা কিছু বলার থাকে তাহলে আমাকে জানাতে পারেন।

আফরান গুটিগুটি পায়ে নূরের পাশে গিয়ে দাঁড়াল। কানে ফুহ্ দিল। আচমকা নূর কেঁপে উঠল।

আফরানঃঃ- হেই চাশমিশ। গেট রেডি টু লুজ। এন্ড বি প্রিপেয়ার্ড টু বি টর্চার্ড।

নূরঃঃ- (টর্চার তো আপনার প্রতিযোগিতায় করব। অভদ্র পান্ডা, বিলাতি বক।) ওহ তাই। লেটস সি।

.
.
.

চলবে

বিঃদ্রঃ ? কিছুই মাথায় আসছে না। যা চিন্তা করি লেখার সময় ভুলে যায়। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here