Mysterious Part 27

0
215

Mysterious
Part -27
Romoni

“স্তব্ধ” শব্দটা যেনো এক তৃষ্ণার্ত প্রেয়সীর অপ্রকাশিত আক্ষেপ কে আরো তীব্র মাএায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নিয়েছে।
ভালোবেসে কি সত্যিই সে ভুল করে ফেলেছে?
এই প্রশ্নটা একাধিক বার তায়াশার মনে গভীর থেকে গভীরতম ভাবে কড়া নেড়ে চলেছে, তবে এই প্রশ্নদ্বয়ের কোনো প্রতিউওর যেনো আজ বিলীন প্রায়।

–আচ্ছা ইয়ান স্যার, একটা সত্যি কথা বলবেন? (তায়াশা)

— কি? (ইয়ান)

–ইফান কি সত্যিই আমায় ভালোবাসে?(তায়াশা)

তায়াশার এহেন প্রশ্ন ইয়ান এর কর্নপাত হতেই, ইয়ান এর হৃদয় এর অতল গহীন থেকে এক অসহনীয় দীর্ঘ শ্বাস বহিরাগত হয়ে আসে।
যার কারন তায়াশার অজানা, তায়াশা শুধু অদ্ভুত এবং ইয়ান এর থেকে তায়াশার প্রশ্নের উওর পাওয়ার এক ব্যাথিত উদ্বিগ্ন দৃষ্টি নিয়ে দৃষ্টিপাত করে আছে ইয়ান এর দিকে।
অতঃপর তায়াশার উদ্বিগ্নতার অবসান ঘটিয়ে ইয়ান বলে, এই প্রশ্নের উওর না হয় ইফানই আপনাকে দেবে,
আরো কিছু সময় না হয় অপেক্ষা করুন তায়াশা।

ইয়ানের উওরে তায়াশা কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে,এরপর হঠাৎই তায়াশা প্রসঙ্গ বদলে ইয়ানকে বলে, এখন তাহলে মা বাবাকে কিভাবে স্বাভাবিক করবো?
তায়াশার মুখ মন্ডলে চিন্তার আভা স্পষ্ট।

— ইয়ান তায়াশার দিকে এগিয়ে গিয়ে তায়াশার হাত ধরে তায়াশাকে প্রজ্জ্বলিত দেয়ালটার সামনে এনে দাঁড় করায়, তারপর তায়াশার কাছ থেকে প্রিন্সেস লকেটটা নিয়ে ব্ল্যাক পেপার টা প্রিন্সেস লকেট থেকে বের করে, সম্পূর্ণ পেপার টা খুলে দেয়াল এর সামনে ধরে, আর সাথে সাথেই দেয়াল এর মধ্যে একটা চিহ্ন ভাসমান হয়, আর এই একই চিহ্ন ব্ল্যাক পেপারটাতেও আছে।
এরপর ইয়ান ব্ল্যাক পেপার টা তায়াশার হাতে দিয়ে বলে, এই ব্ল্যাক পেপার এ থাকা চিহ্নটা ওই দেয়ালে ভাসমান চিহ্নটার সঙ্গে মিলিত করুন।
তায়াশা ইয়ানের কথা অনুযায়ী কাজ করে।
তায়াশা ব্ল্যাক পেপার এর চিহ্নটা দেয়ালে থাকা চিহ্নের সাথে মিলিত করার সাথে সাথেই দেয়ালটা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে যেতে থাকে, আর ইয়ান ব্ল্যাক পেপারটা দেয়াল থেকে সরিয়ে নেয়।

তায়াশার মা বাবা ধীর গতিতে স্পষ্ট ভাবে দৃশ্যমান হয়, আর দুজনেই চোখ মেলে তাকায়।
তারপর ইয়ান নিজের জিন্স এর পকেট থেকে দুইটা লকেট আর চেইন বের করে, দুটো চেইন দুজনের গলায় পড়িয়ে দেয়।

এদিকে তায়াশা নিজের মা বাবাকে এতো বছর পরে নিজের চোখের সামনে জীবিত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।
তায়াশার মা বাবা দুজনে একসাথে এসে তায়াশাকে জড়িয়ে ধরে, এতোটা সময় পরে নিজেদের চোখের সামনে নিজেদের মেয়েকে দেখছে, চোখের পানি যেনো আজ বাঁধ মানছে না।
তায়াশাও তাদের জড়িয়ে ধরে উচ্চ শব্দে কাঁদতে থাকে।

এদিকে ইয়ান তায়াশার কাছে তার মা বাবাকে ফিরিয়ে দিতে পেরে এক প্রশান্তির নিঃশ্বাস ফেলে,ইয়ানের ঠোঁটের কোনে আছে এক চিলতে হাসি।
আজ কিছুটা হলেও তায়াশার কষ্টের মাএা কমেছে, এটা ভেবেই ইয়ানের মধ্যে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করছে।

ইয়ান এগিয়ে এসে তাদেরকে কান্না করতে বারন করে।
এরপর তারা তিনজন নিজেদের সামলে নিয়ে বলে, ইয়ান তায়াশা তোরা এখানে?
আর আমরাই বা এখানে কি করে এলাম?

ইয়ান তাদের প্রশ্নে মৃদু হেঁসে বলে, একটু ধৈর্য ধরো সবটা নিজেরাই বুঝতে পারবে।
তোমাদের দুজনের ভ্যাম্পায়ার পাওয়ার লকেট তোমাদের গলায় আছে, এর কার্যকারীতা শুরু হতে একটু তো সময় লাগবেই, এতোগুলো বছর তোমাদের পাওয়ার লকেট ছিলো ডেভিল পাওয়ার এর অধীনে, তাই প্রায় অনেকটাই দুর্বল হয়ে গেছে এই লকেট এর কার্যকরী ক্ষমতা, তাই তোমরা একটু সময় দেও, অমাবস্যা শেষ হলে যখন চন্দ্রিমা প্রকাশ পাবে, তখন চন্দ্রিমার আলোয় এই পাওয়ার লকেট এর কার্যকরী ক্ষমতা পুনরায় ফিরিয়ে আনতে হবে, আর তখন আমায় আর তোমাদেরকে কিছু বলে দিতে হবে না, তোমরা নিজেরাই সব জানতে পারবে।

আচ্ছা যাইহোক, এখন এসব বাদ দেও, এবার তোমরা বিশ্রাম নিবে, এসো আমার সাথে আমি তোমাদের ঘর দেখিয়ে দিচ্ছি।
তারপর ইয়ান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়, আর ইয়ান এর পিছনে পিছনে তায়াশার বাবা মাও যায়।
ইয়ান গিয়ে একটা ঘরের সামনে থেমে গিয়ে ইয়ান ঘরের দরজা খুলে দেয়, আর তিনজনে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে।
ইয়ান বলে, এটা তোমাদের ঘর, আর কোনো কিছু প্রয়োজন পড়লে আমাকে বা মম আছে তায়াশা আছে বলো।
আর সার্ভেন্টরাও আছে তাদেরকে প্রয়োজন পড়লে ডেকে নিও।

আচ্ছা বলবো, তুই এতো ভাবিস না ইয়ান, এতো ব্যাস্ত হওয়ার কিছু নেই আমাদের নিয়ে (তায়াশার বাবা বলেন)।

–আচ্ছা আঙ্কেল (ইয়ান)।

ইয়ান তাদের সাথে কথা শেষ করে বেরিয়ে আবার সেই কক্ষে ফিরে যায়, কারন ইয়ান যখন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায় তখন তায়াশা সেখানেই নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো, ইয়ান এর সাথে আসে নি।
ইয়ান কক্ষে প্রবেশ করে দেখে তায়াশা সম্পূর্ণ কক্ষ ঘুরে ঘুরে দেখছে, ইয়ান পিছন থেকে তায়াশাকে ডাক দেয়, আর হঠাৎই ইয়ান এর কন্ঠ স্বর শুনে তায়াশা কিছুটা হকচকিয়ে যায়, আর পিছনে ঘুরে দেখে ইয়ান দাঁড়িয়ে আছে।

–ওহ ইয়ান স্যার আপনি? (তায়াশা)

–হ্যা, কেনো আপনি কাকে আশা করেছিলেন? (ইয়ান)

–কাউকে না, হঠাৎ ডাকলেন তো তাই একটু ভয় পেয়ে গেছিলাম। (তায়াশা)

তায়াশার কথায় ইয়ান খানিক হেঁসে দুষ্টুমি ভঙ্গিতে বলে,ভ্যাম্পায়ার প্রিন্সেসও ভয় পায়?

এমন পরিস্থিতিতে ইয়ানকে হাসতে দেখে তায়াশা রেগে বলে, এখন আপনি আমার সাথে মজা করছেন?
আপনি আপনার এসব মজা করা বাদ দিয়ে বলুন তো আপনি বাবা মায়ের পাওয়ার লকেট আর পাওয়ার কোথায় পেলেন?
আর আমিই বা এসব কিছু আপনার মাইন্ড রিড করে জানতে পারছি না কেনো?
আপনি আপনার মাইন্ড রিড এ আমায় বাঁধা কেনো দিচ্ছেন?
আর কতো বার এক প্রশ্ন করবো আপনাকে?

তায়াশার করা প্রশ্ন গুলো শুনে ইয়ান বিস্ময় দৃষ্টিতে তায়াশার দিকে তাকিয়ে আছে।
ইয়ান একটা প্রশ্নের উওর খুঁজতেই ব্যার্থ যে, তায়াশা এতো কথা একসাথে বলে কিভাবে?

কি হলো ইয়ান স্যার?
আমি তো কিছু প্রশ্ন করছি, উওর দিন।

ইয়ান একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে শুরু করে, আসলে ইফান যখন আমাদের পাওয়ার আমাদের থেকে নিজের কাছে টেনে নিতে চাইতো, তখন আমি ইফান এর কাজে বিঘ্ন ঘটিয়ে উল্টে ইফান এর পাওয়ার এবং আঙ্কেল আন্টির পাওয়ার ইফান এর কাছ থেকে একটু একটু করে আমার কাছে টেনে নেই।
এর ফলে ইফান যখন আমাদের পাওয়ার নিজের কাছে নিতে ব্যার্থ হোতো তখন কিছুটা দুর্বল অনুভব করতো, তবে ইফান এর মনে এতে কিছুটা অজানা সন্দেহ উৎপন্ন হতো আমাদের প্রতি, কিন্তু সঠিক কারনটা কখনোই খুঁজে বের করতে পারতো না, কেনোনা ইফান এর থেকে আমাদের পাওয়ার অধিক।
তবে এতোবার ব্যার্থ হওয়ার পরেও ইফান দমে যায় নি, নিজের চেষ্টা চালিয়ে গেছে।

আর আঙ্কেল আন্টির পাওয়ার লকেট আমি নতুন ভাবে Lone island থেকে তৈরি করে এনেছি।
আর কারোর পাওয়ার লকেট যদি কোনো কারণে তার কাছে না থাকে, তবে তা শুধু মাএ কিং আবার নতুন করে তৈরি করতে পারবে, কারন অন্য কারোর এই পাওয়ার লকেট নতুন ভাবে তৈরি করার ক্ষমতা নেই,আপনি তো জানেনই কিং লকেট বর্তমানে আমার কাছে আছে,তাই এখন ইনভিসিবল আর্থ এর কিং আমি।
আর ইফান এর কাছ থেকে আমি পাওয়ার লকেট দুটো না এনে, শুধু পাওয়ার নিজের কাছে নিয়ে এসেছি কারণ, আমি যদি ইফান এর কাছ থেকে পাওয়ার লকেট নিতে চাইতাম,আর কোনোভাবে যদি ইফান তা জানতে পারতো, তাহলে ইফান কোনো একটা সমস্যার সম্মুখীন আমাদের করতো, এতে আমাদের উদ্দেশ্য সফলে বাঁধা আসতো।

আর আপনাকে মাইন্ড রিড এ বাঁধা দেই কারন………..

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here