Mysterious
Part -16
Romoni
ড্যাডকে কিং লকেট দিয়ে দিবো, আর আপনাকেও ড্যাড এর কাছে রেখে আসবো, যাতে আপনার মধ্যে থাকা স্পেশাল পাওয়ার ব্যাবহার করে ড্যাড নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী আরো বেশি পাওয়ারের অধিকারী হতে পারে, এবং অল ডেভিল আর্থ আর অল ইনভিসিবল আর্থ এর পাওয়ার ড্যাড নিজে অর্জন করে নিতে পারে।
আর আপনার খেয়াল রাখার জন্য আমায় এখানে আসতেই হোতো, কারন ড্যাড এবং রাফিম একবার যখন আপনার পাওয়ার ব্যাবহার করার উদ্দেশ্য পা বাড়িয়েছে, এতো সহজে তারা থামবে না, আপনার পাওয়ার নিজের মধ্যে স্থাপন করার জন্য সে যা খুশি করে দিতে পারে, আর lone island এ থেকে আমার পক্ষে আপনাকে প্রটেক্ট করা খুব কঠিন হয়ে পড়তো।
কেনোনা আপনার কোনো বিপদ হলে, আপনাকে সাহায্য করার জন্য, আমায় সেখান থেকে আসার পথে অবশ্যই কেউ না কেউ বাঁধাগ্রস্থ করতো। আর আমার আসতে আসতে আপনার যদি কোনো ভয়ংকর বিপদ হয়ে যেতো?
তাই আমার এই মানব পৃথিবীতে বসবাস।
–কিন্তু নিজেকে প্রটেক্ট করার জন্য পর্যাপ্ত পাওয়ার আমার কাছে ছিলো।(তায়াশা)
–হ্যা পাওয়ার ছিলো, তবে বুদ্ধি ছিলো না। (ইয়ান)
–মানেহ?
আপনি কি আমায় ইডিয়ট ভাবেন?
তায়াশা ইয়ানের এহেন কথায় ইয়ান এর উপর রেগে যায়।
–হ্যা, আর শুধু যে আমি আপনাকে ইডিয়ট ভাবি তা নয়, আপনি আসলেই এজটা ইডিয়ট।
ড্যাড নিজের আসল পরিচয় আপনাকে জানিয়ে দিয়ে যদি আপনাকে একটু ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল করতো, অথবা ইফান বা ড্যাড দুজনের মধ্যে কেউ একজন যদি আপনাকে একটু বেশিই ভয় দেখাতো, তাহলে আপনি তাদের ভয়ে অথবা তাদের প্রতি ইমোশনাল হয়ে নিজের পাওয়ার তাদের মধ্যে আবদ্ধ করার পথে কোনো বাঁধাই দিতেন না, বরং নিজের অজান্তেই তাদের উদ্দেশ্য আপনি পূরন করে দিতেন।
আর ইফান এর প্রতি আপনি অনেকটা নির্জিত, তাই আপনাকে ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইল করে আপনার পাওয়ার আপনার থেকে সরিয়ে নিজের করে নিতে ইফানের খুব বেশি সময় লাগতো না।
তাই আপনার সুরক্ষার জন্য আমায় আসতেই হলো।
আর মমকেও সেখান থেকে নিয়ে আসতে হয়েছে, কেনোনা দাদু তখন সম্পূর্ণ অবচেতন ছিলো, দাদুকে তখন প্রটেকশন হোল এর মধ্যে রাখতে হয়েছিলো, আর মা সেখানে একা একা নিজের প্রটেক্ট করতে এবং পুরো ইনভিসিবল আর্থ এর দায়িত্ব সামলাতে পারত না।
তাই দুই দিক আমায় একাই সামলাতে হয়েছে।
আশা করি আপনি আপনার প্রশ্নের উওর পেয়ে গেছেন, আর কোনো প্রশ্ন আছে? (ইয়ান)
–সব প্রশ্নের উওর এখনো পাই নি, একটা তো রয়েই গেলো, এটা তো বললেন না, আমার জন্য আপনি আপনার অস্তিত্ব বিলীন করতেও রাজি, কিন্তু কেনো,আর কি হয়েছিলো?
তায়াশার প্রশ্নে ইয়ান মাথা নিচু করে বলে, কিছু প্রশ্নের উওর অজানাই থাকা ভালো।
যাইহোক এবার আমায় যেতে হবে, আসি।
ইয়ান তায়াশার প্রশ্নের উওর না দিয়েই চলে যায়, আর তায়াশা ভ্রু কুচকে ইয়ানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।
তায়াশার ঠিক বোধগম্য হয় না একজন এতোটা রহস্যময় কি করে হতে পারে?
ইয়ান হঠাৎ করেই আবার ফিরে আসে।
তায়াশা ইয়ানকে আবার ফিরে আসতে দেখে বলে, ইয়ান স্যার আপনি আবার ফিরে এলেন যে,কোনো সমস্যা হয়েছে কি??
ইয়ান তায়াশার প্রশ্নের উওরে হাসি মুখে বলে, নাহ কোনো সমস্যা নেই তায়াশা, তবে আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
বলেই ইয়ান তায়াশাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে, তায়াশার হাত ধরে তায়াশার ঘরের মাঝামাঝি এনে দাঁড় করায়।
তায়াশার ঘরের মাঝামাঝি অবস্থিত দেয়ালের দিকটায় শুধু একটা দেয়াল ঘড়ি ছাড়া আর কোনো আসবাব নেই,খালি আছে।
ইয়ান সেই দেয়ালের দিকে একটা violet boll ছুড়ে দেয়, আর সাথে সাথে দেয়ালটা একটা সচ্ছ কাঁচে পরিনত হয়।
কাচের দুইপাশই দুই দিক থেকে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, তবে কোনো সাধারন মানুষ এই আর এই কাচ দেখতে পাবে না, অথবা এই কাঁচের অপরপাশে থাকা কোনো কিছুই দেখতে পাবে না।
কাঁচের সামনে প্রতিস্ফুটিত থাকা স্থানটা দেখে তায়াশা হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে থেকে বলে,
–এর মানে কি ইয়ান স্যার?
এটা তো আপনার বাড়ি,কিন্তু ?
ইয়ান বলে, হ্যা এটা আমার বাড়ি।
–তাহলে আপনি সেদিন আমায় এতোটা পথ ঘুরিয়ে নিয়ে গেলেন কেনো, আর এই বিল্ডিংটার পেছন দিকে যে এমন একটা জায়গা আছে আমি জানতামই না।
শুধু জানতাম এই বিল্ডিং এর পেছনে একটা কবরস্থান আছে।(তায়াশা)
–জানবেন কি করে?
আপনি তো কখনো এই বিল্ডিং এর ছাদেই ওঠেন নি। আর আপনাকে এতোটা পথ ঘোরানোর কারন ছিলো সেদিন বিল্ডিং এর পেছনের রাস্তায় কনস্ট্রাকশন এর কাজ চলছিলো।(ইয়ান)
–ওহ, তো আগে বলেন নি কেনো?(তায়াশা)
–বলতে ইচ্ছে করে নি তাই।
আচ্ছা এবার আমি যাই, বলে ইয়ান চলে যায়।
আর তায়াশা এখনো সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে।
ইয়ান নিজের ঘরের সামনে গিয়ে তায়াশাকে হাত নেরে টাটা দিয়ে ভেতরে চলে যায়।
ইয়ানের দুষ্টুমি গুলো দেখে তায়াশা স্মিত হেসে, নিজের পাওয়ার ব্যাবহার করে দেয়ালটাকে আবার আগের ন্যায় স্বাভাবিক করে দেয়।
অতঃপর, সেদিনটা তায়াশার একা একাই কেটে যায়, ইয়ান সারাদিনে একবারও তায়াশার সাথে কথা বলতে আসে নি।
বিকেল ৫ টায়,
প্রায় এক ঘন্টা ধরে তায়াশা একা একা একটা লেকের ধারে বসে আছে,লেকটা তায়াশার বাড়ির থেকে কিছুটা দূরেই, আগে ইফান আর তায়াশা মাঝে মাঝেই এখানে আসতো, তবে আজ তায়াশার পাশে থাকা ইফানের স্থানটা ফাঁকা, আর তার দায়ভার ইফানের নিজেরই।
ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নেমে আসছে, তায়াশা বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্য হেঁটে চলেছে।
তায়াশা বিল্ডিং এর প্রায় সামনেই চলে এসেছে।
তবে, তায়াশা যে বিল্ডিং এ থাকে সে বিল্ডিং এর থেকে কিছুটা সামনের দিকে একটা দোকান আছে, সেখানে ছোট একটা টিভি বসানো থাকে, এলাকার লোকজন খেলা দেখে সেখানে।
সেই টিভিতে একটা নিউজ শুনে তায়াশা থেমে যায়।
“আজকের ব্রেকিং নিউজ ”
লেকের পাশে থাকা ঝোপের মধ্যে পাওয়া গেছে আরো এক বিভৎস মৃত দেহ, মুখমন্ডলে খুব ভয়ঙ্কর ভাবে বারংবার ছুড়িকাঘাত করা হয়েছে,হাতের উপর সেই একই alfabet S.R. খোদাই করা।
পুলিশ এবং গোয়েন্দা কয়েক বছর ধরে তদন্ত করেও জানতে পারে নি, কে এই S.R.
আর কেনোই বা সে মানুষকে এমন ভয়ঙ্কর ভাবে খুন করে।
আর খুন করার পরে নিজেই আবার ফোন করে পুলিশকে জানিয়ে দেয়।
তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে S.R. যে নাম্বার থেকে ফোন করে সে নাম্বারটা না ট্রেস করা যায়, আর না ফোন কেটে যাওয়ার পর সেই নাম্বারটা S.R. এর ফোনের অপর পাশে থাকা ব্যাক্তির ফোনে পাওয়া যায়, যতটা সময় কথা বলা হয় ঠিক ততক্ষণই নাম্বারটা স্ক্রিনে ভাসে।
নিউজ বলা শেষ হওয়ার পরে,একটা লেকের ছবি ভেসে ওঠে টিভির স্ক্রিনে, তায়াশা লেকের ছবিটা দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
কেনোনা তায়াশা কিছুক্ষণ আগে এই লেকটার পারেই বসে ছিলো, আর লেকের ওপারেই লাশটা পাওয়া গেছে।
তায়াশা বুঝতে পারছে না কখন হলো এসব?
তায়াশা যখন সেখানে ছিলো তখন তো সব ঠিকই ছিলো।
অতঃপর তায়াশা সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাড়িতে ফিরে যায়।
এদিকে কেউ একজন আড়াল থেকে তায়াশার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত রেখে ধীর কন্ঠে বলে ওঠে, যে তোমার দিকে তাকাবে, অথবা আমার কাছ থেকে তোমায় কেড়ে নিতে চাইবে, তাকেই ভয়ঙ্কর মৃত্যু উপহার দিবো আমি।
কথাটা বলে, ভয়ঙ্কর ভাবে স্মিত সে ব্যাক্তি সে স্থান ত্যাগ করে নিজের গন্তব্যে চলে যায়।
.
.
.
কালো রঙের একটা কাপড় বাঁধা নাসিকার উপর থেকে, পড়নে ব্ল্যাক জিন্স,ব্ল্যাক শার্ট ইন করা, পায়ে ব্ল্যাক শু, স্টাইলিশ ফিঙ্গারলেস গ্লাভস পড়া হাতে একটা রিভলবার আঁকড়ে, অন্ধকার একটা ঘরে পেছন দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে আছে এক ব্যাক্তি।
তার পেছনে দুজন সম্পূর্ণ কালো পোশাক পরিহিত লোক দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে একজন বলে, Sir, the work is done.
গার্ডটির কথা শুনে সেই ব্যাক্তিটি বাঁকা হেঁসে বলে,Well, now you go.
গার্ড দুজন তার কথা মতো ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।
To be continue…