Mysterious Part 1

0
1937

Chapter -1

আজ রাতের আঁধারে আবার সে আসবে, তবে আজ তার উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন, সে যা চায় তা যদি আজকের মধ্যেই না পায় তবে, আজই হয়তো বা আমার শেষ দিন।
ইয়ান স্যার আপনি আমায় একটা হেল্প করবেন প্লিজ?

–আপনি খুব ভালো করেই জানেন অজানাকে উদ্ধার করে প্রকাশিত করার উদ্দেশ্যই আমার পথচলা,তাই কি হেল্প চান বলুন? আমি আমার বেস্টটা দিয়ে চেষ্টা করবো আপনার হেল্প করার।
আমাদের কাছে আর বেশি সময় নেই মিস তায়াশা বারোটা বাজতে আর মাএ এক ঘন্টা ষোলো মিনিট বাকি, আমি হিডেন ক্যামেরা কাবার্ড এর আড়ালে অন করে রেখেছি,এবার আপনার সাথে ঠিক কি কি ঘটেছে প্রথম থেকে শেষ অব্ধি আমায় বলুন, একটা ঘটনাও যেনো বাদ না পড়ে।
–ওকে স্যার।
আমি ভেবেছিলাম এই অভিশপ্ত গেইমটা শুরু হয় আজ থেকে আরো তিনদিন আগে,তখন সময় রাত ১১.৫৯ মিনিট,আর আমার রাত জেগে পড়ার অভ্যাস আছে, আমি পড়ছিলাম আর ইফানের ফোনের জন্য অপেক্ষা করছিলাম,কারন প্রত্যেকবার ইফানের বার্থডের আগের রাতে আমি উইশ করার আগে ইফান নিজেই ফোন দিয়ে আমায় বলে, উইশ করবেনা? একমাএ ওর বার্থডের আগের রাতেই ওর সাথে আমার কথা হোতো, তাছাড়া কখনোই ইফান রাত বারোটার পরে আমার সাথে কথা বলতো না, বিষয়টা আমার খুব অদ্ভুত লাগতো, কিন্তু পরে ভেবেছি হয়তো ওর ভালো লাগে না কথা বলতে,তাই বলেনা।
আর তাছাড়াও ইফানের এমন অনেক কাজই ছিলো যা খুব একটা স্বাভাবিক নয়,রহস্যে ঘেরা,আর আমি সেসব নিয়ে প্রশ্ন করলে ইফান প্রতিউওরে একটু মুচকি হেসে বলতো আমি এমনই,অবশ্য ইফানের এমন রহস্যময় ব্যাপারটা আমার খুব ভালো লাগতো, আর আমি রহস্যকে উন্মোচন করা পছন্দ করতাম না,কারন কোনো কিছু প্রকাশ্যে এলেই তো তা সম্পর্কে জানার কৌতুহলটা আর থাকবেনা,তাই আর কথা বাড়াতাম না।
তখন ঘড়িতে ১১.৫৯ বেজে গেছে, তবুও ইফানের ফোন না আসায় আমিই বই রেখে ইফানকে ফোন দেই, ও ফোন রিসিভ করার পরপরই ঘড়ির কাটা বারোটায় গিয়ে থেমে যায়,আর আমি ইফানকে বার্থডে উইশ করি, তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো ইফান প্রতিউওরে আমায় প্রশ্ন করে।
–আমি তোমার কাছে বার্থডে উইশ নয়,অন্য কিছু চাই দেবে?
তখন ইফানের কথায় ছিলো কঠোরতা আর গম্ভীররতা,আনন্দের কোনো স্পষ্টতা ছিলো না ইফানের কন্ঠে,আর ইফানের প্রশ্ন শুনে মনে হচ্ছিল, ইফান আমার কাছে কিছু চাওয়ার আড়ালে আমায় আদেশ করছে।
আর আমি এতে খুব অবাক হই, কেনোনা আমাদের তিন বছরের সম্পর্কে কোনোদিন ইফানকে আমার কাছে কিছু চাইতে দেখিনি,আজ হঠ্যাৎ কি এমন চাইবে যে আমি ইফানকে বার্থডে উইশ করলাম, তাতে ইফান খুশি না হয়ে কঠোর হলো? সেই মুহুর্তে অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরছিলো,এরমধ্যে ইফান আবার বলে, কি হলো যা চাই দেবে না?
–কি চাও?
–ব্ল্যাক পেপার।
–আচ্ছা দেবো,কিন্তু..
আমার কথা সম্পূর্ণ না শুনেই ইফান ফোন কেটে দেয়, এতে খুব কষ্ট পেয়েছিলাম সে রাতে, কারন ইফান আগে কখনো এমন করেনি, আমার প্রতি খুব কেয়ারিং ছিলো,কখনো আমায় এইটুকুও কষ্ট দিয়ে কথা বলেনি, আর আজ হঠাৎ কি এমন হলো?
সেই রাতটা নির্ঘুমভাবেই কাটতে থাকে,আমি বিছানার এক কোনো হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে বসেছিলাম, হঠাৎ আমি অনুভব করি কেউ আমার কাঁধে হাত রাখে, আমি চোখ মেলতেই দেখি ইফান আমার সামনে বসা,আর ঠোঁটের কোনে রয়েছে তার এক ভয়ঙ্কর নিরব হাসি।
ইফানকে এভাবে দেখে আমি ভয় পেয়ে যাই,তবে ইফান আমায় নির্ভয় থাকতে বলে আমার মুখ ইফানের দুইহাতের মধ্যে আবদ্ধ করে, আমার চোখে চোখ রেখে এক অদৃশ্য শক্তি দ্বারা আমার কাছ থেকে আমার এক স্পেশাল পাওয়ার নিজের মধ্যে নেওয়ার চেষ্টা করে, আর আমি তা বুঝতে পেরে ইফানের চোখ থেকে নিজের চোখ নামিয়ে নেই, আর ঠিক তখনই আমার চোখে পড়ে ইফানের হাতে থাকা এক অদ্ভুত ট্যাটু,যার মধ্যে আমি ঠিক সেই চিহ্নটার একটা অংশ দেখি,যেটা আমার কাছে থাকা ব্ল্যাক পেপারটাতেও আছে।
এরপর ইফান আমায় ছেড়ে বলে ওঠে,ব্ল্যাক পেপারটা দিয়ে দাও আমায়।
কিন্তু আমি দেই নি,কারন আমার মনে হচ্ছিলো ইফানের উদ্দেশ্য সঠিক নয়, আর অদ্ভুত ব্যাপার হলো ইফানও আমায় এ বিষয় জোড় করে নি, কিন্তু সেই রাত থেকে রোজ রাত বারোটার পর ও আসতো আর ব্ল্যাক পেপারটা চাইতো, আর আমি না করার পরে ইফান আমার চোখের ওপর হাত রেখে কোথাও উধাও হয়ে যেতো,বুঝতাম না ও কিভাবে আসতো আর কিভাবে চলে যেতো,এভাবে প্রায় দুইদিন অতিবাহিত হয়,কিন্তু গতকাল ইফান সরাসরি বলে, যদি আগামীকালের মধ্যে ব্ল্যাক পেপার না পায় তবে আমায় মেরে ফেলবে।

ইয়ান:ব্ল্যাক পেপারের রহস্যটা কি?

–একদিন আমি আর ইফান একটা কফিশপে বসে কফি খাচ্ছিলাম,হঠ্যাৎ আমার চোখ যায় টেবিলের পাশে, তখন টেবিলের পাশে পড়ে থাকতে দেখি একটা কালো রঙের কাগজ, আর তাতে এক অদ্ভুত ধরনের চিহ্ন আকা ছিলো,চিহ্নটা দেখে কৌতুহলের বসে আমি পেপারটা উঠাই।
এরমধ্যেই ইফান আমায় বলে, এটাকে খুব যত্ন সহকারে রাখতে, তখন আমি ভ্রু কুচকে ইফানকে জিগ্যেস করি, কি আছে এতে? ইফান বলে,সময় হোক জানতে পারবে, এর বেশি প্রশ্ন কোরো না।
আর কথাটা ইফান আমায় এতোটা সরিয়াস ভাবে বলে এবং ওর কথায় এক প্রকার নতুনত্বের আভাস ছিলো যে, আমি আর ওকে কোনো প্রশ্ন করি নি, শুধু নতুন কিছু ঘটার জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেই।
আর তখন থেকেই সেটা আমি আমার কাছে রেখে দেই।
আর তারপর থেকেই আমি আমার মাঝে এক অদৃশ্য শক্তি অনুভব করতে শুরু করি যেমন, আমি কোনো কিছু যদি চাইতাম, তাহলে কোনোনা কোনো ভাবে সেটা আমার কাছে চলে আসতো,আর সেই জিনিসটা আমার কখনোই পাওয়ার কথা নয়, আমি তা খুব ভালো করেই জানতাম,তবুও তা আমার হয়ে যেতো, আর তা পাওয়ার পর আমার চোখের সামনে আবছায়ায় ভেসে উঠতো সেই ব্ল্যাক পেপার, আর ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারি, এসবের পিছনে ওই ব্ল্যাক পেপারই প্রধান।
এই বিষয়ে আমি ইফানকেও জানাই, ও বলে, যা হচ্ছে হতে দাও, এটা কোনো এক অজানা আর্থ এরই হয়তো অংশ।
ইফানের কথার মানে আমি বুঝতে পারি নি সেদিন,আর আজও পারছি না।
–মানে?
–মানে, সেদিনের পর থেকে ইফানের আচরনে আমি পরিবর্তন দেখি,ইফান আমার সাথে খুব একটা কথা বলতো না,কিছু একটা নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতো, আর আমি কিছু জিগ্যেস করলে এড়িয়ে যেতো, আর যতটুকু সময় ইফানের সাথে আমার কথা হোতো, সেই ব্ল্যাক পেপার নিয়েই হোতো, এর বাহিরে কোনো কথা ইফান পছন্দ করতো না।

–হুম, আপনি ভয় পাবেন না তায়াশা, আমি ওই কাবার্ড এর পেছনেই থাকবো, আর ওই ব্ল্যাক পেপারটা আমায় দিন।

ব্ল্যাক পেপারটা তায়াশা এনে ইয়ান এর কাছে দেয়, ইয়ান সেটাকে নিয়ে একটা কাঠের বাক্সে রেখে বক্সটাকে একটা চেইন দ্বারা আবদ্ধ করে দেয়।

–ইয়ান স্যার, এটা কি করছেন?
–তায়াশা এটা একটা সেইফ বক্স এন্ড সেইফটি চেইন,কোনো অশুভ শক্তি এটাকে স্পর্শ করতে পারবেনা।
এরপর ইয়ান নিজের সাথে থাকা ব্যাগ থেকে আরো একটা একই রকমের দেখতে চেইন বের করে তায়াশাকে দেয়, আর চেইনটা পড়তে বলে,তায়াশা চেইনটা পড়ে নেয়
আর ১২ টা বাজতে আর মাএ ২.৫৭সেকেন্ড বাকি, ইয়ান কাবার্ড এর পেছনে গিয়ে ক্যামেরার পাশে দাঁড়িয়ে যায়, আর বারোটা বাজতেই ঘরটা সম্পূর্ণ অন্ধকার হয়ে যায়,তবে ইয়ান সব ধরনের ব্যাবস্থা আগেই করে নিয়েছিলো, আলো নিভে যেতেই ইয়ান কাবার্ড এর পেছনে থাকা একটা সুইচ চেপে দেয়, আর সম্পূর্ণ ঘর আলোকিত হয়ে যায়,আর এরপর যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণ অবিশ্বাস্য বলে মনে হচ্ছে তায়াশার কাছে, কিন্তু অদ্ভুত ইয়ানের ঠোঁটে রয়েছে কিঞ্চিৎ রহস্যময় হাসি।

To be continue…

Mysterious
Part 1
Romoni

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here