Ex গার্লফ্রেন্ড পর্বঃ৭

0
686

Ex গার্লফ্রেন্ড
পর্বঃ৭
#আবির হাসান নিলয়

রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে আছি তখন দরজা
নক করার শব্দ পেলাম।এতো রাতে আবার
কে আসলো…।সেদিকে আর কান দিলাম
না।হয়তো পাশের বাসার কেউ আসছে।তাই
আপন মনে ফোন চালাচ্ছি কিন্তু হঠাৎ আমার
রুমেও নক শুরু হলো।
আমিঃকে?
জান্নাতঃতোর অন্তগামী পিশাচ
আমিঃহোয়াট দ্যা ফাও কথা
জান্নাতঃদরজা খুল ব্যাটা
আমিঃকেনো,কি দরকার?
জান্নাতঃকথা আছে
আমিঃএতো রাতে কথা বলতে হবে না।কাল
সকালে কথা হবে যা।
জান্নাতঃতুই খুলে দিবি নাকি আমি এখনি
চিল্লানি শুরু করবো।
আমিঃওয়েট খুলে দিচ্ছি

শুয়ে না থেকে রুমের দরজা খুলে দিতেই
কুত্তীটা কলার চেপে ধরলো।
জান্নাতঃসালা দুটো বিয়ে করার খুব শখ
তোর তাই না?
আমিঃপাবলিকের কাছে জিজ্ঞাস কর দুটো
বিয়ে করার সুবিধা কি।
জান্নাতঃতোর পাবলিক তোর কাছেই রাখ
আমিঃতুই এতো রাতে এখানে কি করিস?
যদি বাসার কেউ জেনে যায় এসব?

আমাকে কিছু না বলে রুমের দরজা বন্ধ
করে দিলো।
আমিঃকলার ছাড় এখন?
জান্নাতঃকি জানি বলছিলি??
আমিঃএখানে কেনো?
জান্নাতঃবাসর করার জন্য আসছি
আমিঃতোর বিয়ের বয়স হয়েছে?
জান্নাতঃতোর কি মনে হয়?আমি এখনো
পিচ্চি ছোট আছি?
আমিঃআমার কাছে তুই ছোটও না আবার
খুব একটা বড়ও না।তুই যদি সেই আগের
ছোট থাকতি তাহলে অনেক আগেই তোর
সাথে সংসার করতাম।
জান্নাতঃদেখ নিলয়,মানুষ মাত্রই ভুল হয়।
তুই বল সেই ভুলের জন্য আমাকে কি করতে
হবে।তুই যেটা বলবি সেটাই করবো।
আমিঃএতো কিছু করতে হবে না।এখন তুই
বাসায় যা,তা না হলে আমাদের এক রুমে
দেখলে অনেক খারাপ কিছু ভাববে।
জান্নাতঃযা ভাবার ভাবুক,আজ আমি তোর
সাথে থাকবো।
আমিঃদেখ ফাজলামি করার লিমিট থাকে
জান্নাতঃসেই ফাজলামির রাণী আমি।
আমিঃতুই যা প্লিজ
জান্নাতঃযাবো না

এই বলে বিছানার উপর শুয়ে আমার ফোন
চালাতে শুরু করলো।ফোনের অবশ্য অনেক
জায়গাতেই লক করা,তাই ওর মন যা চাইবে
সেইটা করতে পারবে না।কিছুক্ষণ চেয়ারে
বসে থাকার পর এবার ওর কাছে গিয়ে
ফোনটা কেরে নিয়ে হাত ধরে শুয়া অবস্থা
থেকে তুলে বসালাম।
আমিঃচল বাসায় যাবি
জান্নাতঃবলছি তো যাবো না
আমিঃতাহলে নিলুর রুমে যা
জান্নাতঃনা,আমি এই রুমে থাকবো।
আমিঃতাহলে আমি নিলুকেই পাঠিয়ে দেয়
জান্নাতঃশোন(হাত ধরে)
আমিঃকি?
জান্নাতঃঅনেক ভালোবাসি তোকে,আমি
বুঝতে পারছি না তোর মাঝে কি হয়েছে।
কিন্তু আমিও জানি যে তুই আমাকেও
অনেক ভালোবাসিস।
আমিঃগুড,এখন যা
জান্নাতঃক্ষুধা লেগেছে
আমিঃখাস নাই?
জান্নাতঃনা
আমিঃঠিক আছে তুই থাক আমি খাবার
নিয়ে আসছি।
জান্নাতঃখাবার লাগবে না
আমিঃতোর নাকি ক্ষুধা পেয়েছে

জান্নাত আর বসে না থেকে উঠে দুজনের
ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।প্রথমদিকে জান্নাতের
এই মায়ার দুনিয়া থেকে বের হতে চাইলেও
পরে আর পারিনি।জান্নাতের চুল ধরে মাতাল
হয়ে যেতে শুরু করলাম দুজন।হঠাৎ কিছু
একটা মনে হতেই জান্নাতকে ছেড়ে দিলাম।
জান্নাতঃকি হলো?
আমিঃআমার কেনো জানি মনে হচ্ছে এটার
জন্য এখনি পারফেক্ট সময় না।
জান্নাতঃকাল আমার বাসা যাবে তুমি
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃআমা……

কিছু বলার আগেই বাইরে থেকে আম্মু বলল.
আম্মুঃনিলয়,জান্নাত এসেছে?
আমিঃহ্যা আম্মু
আম্মুঃকিছু হয়েছে জান্নাত?
জান্নাতঃনা আম্মা,ক্ষুধা পেয়েছিলো তাই
আম্মুঃ…(আম্মু মানে)
আমিঃআল্লাহ কি শুরু করলি তুই?
জান্নাতঃতুই চুপ থাক
আম্মুঃমা তুই বাইরে আয় তো
জান্নাতঃওকে

আমাকে রেখে জান্নাত রুমের বাইরে গেলো।
কি হচ্ছে সেটা বোঝার জন্য আমি নিজেও
দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।
আম্মুঃরাতের খাবার খাস নাই?
জান্নাতঃনা আম্মা
আম্মুঃআম্মা মানে?
জান্নাতঃওহ সরি এটা তো সিক্রেট ছিলো।
আম্মুঃকিসের সিক্রেট?
জান্নাতঃনিলয় গোপন রাখতে বলছে
আম্মুঃকি গোপন রাখতে বলছে?
জান্নাতঃআমাদের বিয়ের কথা
আম্মুঃমানে কি এসবের‍?
জান্নাতঃআসলে আম্মা আমাদের অনেক
আগেই বিয়ে হয়ে গেছে।দুজন পালিয়ে
বিয়ে করেছিলাম।
নিলুঃপালিয়ে কেনো?
জান্নাতঃআমার বাসা থেকে তখন কেউ
মেনে নিতো না তাই।
আম্মুঃতুই এখানে কি করিস?যা রুমে যা

নিলু ধমক খেয়ে রুমে চলে গেলো।
আম্মুঃমা তোর মাথা ঠিক আছে তো?
জান্নাতঃহ্যা আম্মা
আম্মুঃতোর বোনের জন্য বিয়ে নিয়ে আসছিলো
জান্নাতঃসেই জন্যই তো শ্বশুর বাড়ি আসলাম
আমার স্বামীর দিকে অন্য কেউ চোখ দিবে
আর আমি সেটা মেনে নেবো সেটা কিভাবে
হয় আম্মা বলো?
আম্মুঃতা তো বটে,ঐ বাদর এদিকে আয়
আমিঃআমাকে বলছো?
আম্মুঃহ্যা তোকে
আমিঃবলো(জান্নাতের পাশে গিয়ে বসলাম)
আম্মুঃও যেটা বলছে সব সত্যি?
জান্নাতঃআমার কথা বিশ্বাস হয়না তোমার?
আম্মুঃহয় কিন্তু ওর…
জান্নাতঃযাও বিশ্বাস করতে হবে না।আমি
আমার ননদিনীর রুমে গেলাম।

ক্ষ্যাপে গিয়ে উঠে সোজা নিলুর রুমে চলে
গেলো।এই মেয়ে ড্রিংক করেনি তো..কিন্তু
যখন দুজন ভালোবাসার মহে পড়েছিলাম
তখন তো কোনো গন্ধ আসেনি।
আম্মুঃকি বলছে ও?
আমিঃএমনি মজা করছে
আম্মুঃসত্যি করে বল
আমিঃআরে সত্যি,ও আমাকে ভালোবাসে।
কিন্তু সাদিয়ার এমন পাগলামি দেখে ও রেগে
গেছে।তাই আজ বাসায় চলে আসছে।
আম্মুঃআর তুই ওকে ভালোবাসিস না?
আমিঃ…….
আম্মুঃআমাকেও বলবি না?
আমিঃসত্যি বলতে আম্মু,আমি নিজেও
ওর মতো একটা পাগলিকে চাই।যে আমাকে
তোমার মতো শাসন করবে।ভুল করলে বকা
দিবে।আমার ফ্যামিলিকে নিজের ফ্যামিলি
মনে করবে।
আম্মুঃকিন্তু সাদিয়া?
আমিঃওর সাথে বন্ধুত্ব ছাড়া আর কিছুই না
আম্মুঃআজ যখন বাসায় আসছিলো তখনো
তো তুই কিছু বললি না।
আমিঃজান্নাতের জন্য
আম্মুঃকেনো?
আমিঃও নিজেই লুকিয়ে রাখতে বলছিলো।
এখন সমস্যা ওর জন্য হয়েছে তাই ওকেই
এসবের সমাধান খুঁজতে হবে।
আম্মুঃবেশি দেরি করলে জানিস তো কি হবে
আমিঃতোমরা তো আছোই
আম্মুঃহুম জানি,এখন ঘুমিয়ে পর আমি
ওর সাথে কথা বলছি।
আমিঃকিছু খায়নি ও,তাই একটু খাইয়ে দিও
আম্মুঃহুম

আম্মুর থেকে উঠে রুমে এসে মুচকি একটা
হাসি দিয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।

******জান্নাতের কথা********
আম্মু নিলুর রুমে গিয়ে দেখলো নিলু আর
জান্নাত শুয়ে আছে।
আম্মুঃযদি তোর বাসা থেকে না মেনে নেয়
জান্নাতঃআমি মানিয়ে নেবো
আম্মুঃতবুও যদি না মানে?
জান্নাতঃপালিয়ে যাবো
আম্মুঃতখন তোর বাসার লোকজন আমাদের
কি করবে বুঝতে পারছিস?
জান্নাতঃএতো ভয় পাও কেনো
আম্মুঃতোদের পরিবার আমাদের মতো না,
তোদের আছে অনেক লোকজন,আছে
অনেক ক্ষমতা।
জান্নাতঃআমি থাকতে তোমাদের কিছুই হতে
দেবো না।
আম্মুঃতুই বাসায়ায় গিয়ে নিলয়ের ব্যাপারে
সব বল।এখনো কিছুই হয়নি,কিন্তু দেরি
করলে অনেক কিছু হয়ে যেতে পারে।
জান্নাতঃঠিক আছে আমি এখন গিয়ে বলছি
আম্মুঃএখন যেতে হবে না,সকালে যাস
জান্নাতঃবাসায় বলে আসি নাই
আম্মুঃতখন তো বললি
জান্নাতঃমিথ্যা বলছি
আম্মুঃআজ যেতে হবে না
জান্নাতঃঠিক আছে,আর অনেক ক্ষুধা লাগছে
নিলুঃআম্মু আমি খাবার নিয়ে আসি
আম্মুঃযা

নিলু চলে যাওয়ার পর দুজন কিছু কথা
বললো।নিলু খাবার আনার পর জান্নাত খেতে
শুরু করলো।
নিলুঃতোমার ফোন আনো নাই আপু?
জান্নাতঃনা
নিলুঃবাসায় কল দিয়ে জানিও দাও,আজ
আর যাবে না।
জান্নাতঃখেয়ে নেয়,আম্মুকে কল দিয়ে বলবো
আম্মুঃআমি তাহলে গেলাম।আর অনেক
রাত হয়ে গেছে দুজন ঘুমিয়ে যাবি
নিলুঃঠিক আছে আম্মু।

আম্মু চলে যাওয়ার পর জান্নাত খাবার
শেষ করে প্লেট বাইরে রেখে আসলো।
জান্নাতঃতোর ফোন দে
নিলুঃআমি ফোন কোথায় পাবো?
জান্নাতঃতুই ফোন ব্যবহার করিস না?
নিলুঃজ্বি না
জান্নাতঃতুই সেই ভালো মাইরি,তোর ভাইয়ের
ফোন দিয়ে কল দেয় তাহলে।
নিলুঃওকে

জান্নাত ফোন নিয়ে ওর আম্মুকে কল দিলো।
কয়েকবার রিং বাজার পর রিসিভ করলো।
জান্নাতঃআম্মু আমি
আন্টিঃএই নাম্বার কার?
জান্নাতঃআমি নিলুদের বাসায়
আন্টিঃকেনো?
জান্নাতঃনিলুর সাথে আজ থাকবো তাই
আন্টিঃযাওয়ার সময় একবারো বলছিস?
জান্নাতঃনা
আন্টিঃতাহলে এখন কেন বলছিস?
জান্নাতঃসরি আম্মু,আর তোমার সাথে আমার
কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা আছে।
আন্টিঃতোর সাথেও কথা আছে
জান্নাতঃকি কথা?
আন্টিঃতোর বিয়ের কথা,শু***য়ের বাচ্চা
তুই বিয়ে করবি আমাদের বল।তুই ঐ বাসায়
গিয়ে বিয়ের কথা বলছিস কেনো?
জান্নাতঃতোমাকে বলে দিছে?
আন্টিঃনা বলবে না,তুই আগে বাসায় আয়
তারপর তোকে আমি দেখাচ্ছি।
জান্নাতঃএমন করলে আমি বাসায় যাবোই না
আন্টিঃতুই থাক আমি এখনি আসছি
জান্নাতঃএই না আম্মু প্লিজ,তুমি না আমার
ভালো আম্মু,কিউট আম্মু।তুমি আইসো না
প্লিজ।আমি কাল ভোরেই চলে আসবো।আর
মাত্র কয়েক মিনিট লাগে।
আন্টিঃতোর বাপ জানলে কি হবে জানিস তুই
জান্নাতঃকি জানবে?
আন্টিঃতোর আর নিলয়ের ব্যাপারে
জান্নাতঃআমরা একজন আরেকজনকে
ভালোবাসি।
আন্টিঃআর সাদিয়া?
জান্নাতঃসাদিয়া হচ্ছে আমাদের গল্পের সাইড
নায়িকা।আমাদের ভালোর জন্য তো ওকে
সেক্রিফাইজ করতেই হবে।
আন্টিঃতুই কাল বাসায় আয় তারপর তোকে
দেখাচ্ছি আমি।
জান্নাতঃআম্মু নেটওয়ার্ক সমস্যা বাই

কল কেটে দিয়ে লম্বা একটা শ্বাস নিলো।
জান্নাতের মামিদের উপর রাগ হচ্ছিলো।
কিছুই চেপে রাখতে পারে না।কিন্তু এখন
কিছুই করার নেই।তাই ফোনটা রেখে নিলুর
সাথে ঘুমানোর চেষ্টা করলো।

*******নিলয়ের কথা*********
ঘুম থেকে উঠে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি
হচ্ছি তখন আম্মু বলল….
আম্মুঃতোকে জান্নাত ওদের বাসায় যেতে
বলছে আজ।
আমিঃকেনো?
আম্মুঃতোদের বিষয় নিয়ে।
আমিঃএখন যাবো?
আম্মুঃহুম যা
আমিঃঠিক আছে
আম্মুঃওখানে গিয়ে কোনো হৈচৈ করবি না
আমিঃআচ্ছা

আর কলেজে না গিয়ে সোজা জান্নাতদের
বাসায় আসলাম।বাসার মধ্যে একটা নিরবতা
বিরাজ করছে।সোজা বাসার মধ্যে যেতেই
দেখলাম সবাই জান্নাতকে দাড় করিয়ে বসে
আছে।দেখে মনে হচ্ছে সবাই ওর প্রতি রেগে
আছে।জান্নাতকে এমন দেখে ওর পাশে
গিয়ে দাঁড়ালাম। জানিনা কি হতে চলেছে তবে
বুঝতে পারছিলাম খারাপ কিছু হবে।
আন্টিঃনিলয় তুই এখন বাসায় যা
আমিঃকিছু কথা বলতে এসেছি।
আন্টিঃতোদের কথা শোনার জন্য কেউ এখন
বসে নাই।তাই তুই চলে যা।

চলবে…………
(আমার গল্পে জান্নাতই সেরা,তাই সবাই রাজি না থাকলেও আমি জান্নাতকেই আমার প্রিয়তমা করবো।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here