Ex গার্লফ্রেন্ড পর্বঃ১২

0
567

Ex গার্লফ্রেন্ড
পর্বঃ১২
#আবির হাসান নিলয়

আমিঃআয় বাসর করি?
জান্নাতঃতোর দরকার তাই তুই নিজেই বাসর
কর।আমি গেলাম।
আমিঃতোমাকে ছাড়া কিভাবে বাসর করবো।
তুমি থাকো,,,হিহিহি
জান্নাতঃছি: কুত্তা
আমিঃহোয়াট দ্যা কথাবার্তা,মুখ দিয়ে এসব
আজেবাজে কথা বের হলে লাথি দিয়ে রুম
থেকে বের করে দেবো।
জান্নাতঃআমি মনে হয় তোর রুমে শুয়ে আছি
এমনেই চলে যাবো হু?
আমিঃতাহলে আসলি কেনো?
জান্নাতঃআন্টি বললো তাই আসলাম।
আমিঃআমার কাছে আন্টি,আর আন্টির
কাছে আম্মা।ভালোই কেমিস্ট্রি আছে।
জান্নাতঃবাচ্চা মানুষ তাই তুই বুঝবি না।
আমিঃবুঝায় দে
জান্নাতঃআমি টিচার না
আমিঃকিন্তু বোঝাতে তো তুই পারবি
জান্নাতঃবুঝিয়ে দেয় না আমি
আমিঃকেনো?
জান্নাতঃআমার মুখ,এখন যদি আমার মুখ
তোকে বলতে না চায় তাহলে কি করবো?

জান্নাতের হাত ধরে টান মেরে নিজের কাছে
নিয়ে এসে বাহুডোরে আবদ্ধ করলাম।
জান্নাতঃঢং বাদ দিয়ে ছাড়
আমিঃআমি তো ধরিনি,আমার হাত যদি ধরে
রাখে তাহলে কি করবো বলো?
জান্নাতঃভাব দেখানো হচ্ছে?
আমিঃএকটা পাপ্পি দে
জান্নাতঃপাপ্পি কি?
আমিঃজানোস না পাপ্পি কি?
জান্নাতঃকুত্তার পাপ্পি?
আমিঃকুত্তার পাপ্পি মানে?
জান্নাতঃকুকুরদের হাতে নিয়ে চুমু খায় সেটা?
আমিঃআমাকে কুকুর মনে হয় তোর?
জান্নাতঃকুকুরের চেয়েও যদি অন্য কিছু
থাকে তাহলে সেটা বলতাম।
আমিঃথাক তোর দিতে হবে না।আমার লাগবে
তাই আমি নিজেই তোর থেকে নিচ্ছি।
জান্নাতঃসর এখান থেকে…

কে শোনে কার কথা,পাগলিটাকে শক্ত করে
ধরে ভালোবাসার পরশ একে দিলাম।জান্নাত
হাত দিয়ে নিজের ঠোঁট পরিষ্কার করতে ব্যস্ত
আর এদিকে আমি জান্নাতকে দেখতে।
আমিঃভালো লাগেনি?
জান্নাতঃকুত্তা তোর কখনো ভালো হবে না।
আমিঃতুই কাছে থাকলেই হবে,ভালো খারাপ
সেটা পরের চিন্তা।
জান্নাতঃগেলাম আমি
আমিঃকিছু কথা ছিলো সেগুলো…?
জান্নাতঃকোনো দরকার নাই
আমিঃআরে শোন(হাত ধরে)
জান্নাতঃকি?
আমিঃআমার সাথে থেকে যা,আম্মু আব্বু
চলে যাবে।থাকার মধ্যে আমি আর মাহি
এখানে পরে থাকবো।
জান্নাতঃমাহি থাকবে মানে?
আমিঃমাহি এখানে থেকে পড়াশোনা করবে
জান্নাতঃদুজন এক বাসায় থাকবি?
আমিঃহুম
জান্নাতঃভালোই তাহলে
আমিঃথেকে যা তাহলে
জান্নাতঃসরি,আমাদের সম্পর্ক আগের মতো
থাকলে হয়তো থেকে যেতাম।কিন্তু…
আমিঃআগের থেকে এখন ভালো আছি,
তখন সবটা সময় মনোমালিন্য হয়ে থাকতাম।
কিন্তু এখন দেখ,কতো হাপী আছি।
জান্নাতঃআমার জন্য আমার ফ্যামিলি ভালো
নেই।আমাদের জন্য আম্মু আজ এমন।
আমিঃতোর সুখ মানেই আন্টির সুখ
জান্নাতঃউনি আমার মা হওয়ার পাশাপাশি
একজনের স্ত্রী।
আমিঃহুম
জান্নাতঃবাদ দে এসব,আমি ওদের সাথে
গিয়ে ঘুমাইলাম।
আমিঃওকে
জান্নাতঃশুভ রাত্রি
আমিঃশুভ রাত্রি

কিছু একটা বলতে চেয়েও বলতে পারলাম
না।কেমন একটা বাধা আসার কারণে আমি
কোনো কথাই বলতে পারছিলাম না।জান্নাত
রুম থেকে বের হওয়ার পর রুমের দরজা
লক করে দিয়ে ঘুমাতে গেলাম।রাত জাগা
এখন অনেক হারে ছেড়ে দিছি।ফোনটা রেখে
আমি নিজেও ঘুমানোর চেষ্টা করলাম।

পরেরদিন……
আগে নিয়মিত সকালে উঠলেও এখন থেকে
আর উঠতে হবে না ভেবেই ঘুমিয়ে আছি।
যদিও অনেক ভোরে ঘুম ভেঙে গেছিলো
তবে অলসতা করে উঠা হয়নি।

অনেকটা সময় পর নিলুর ডাক শুনলাম।
নিলুঃভাইয়া আম্মু ডাকে(বাইরে থেকে)
আমিঃকেনো?
নিলুঃঅনেক বেলা হয়েছে,উঠে খাবার খেতে
বলছে তোকে।
আমিঃহুম উঠি।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম ১০টা বেজে
গেছে।আর শুয়ে থাকা ঠিক হবে না।উঠে
ফ্রেস হয়ে বাইরে আসলাম।।সবার সাথে
দেখা হলেও জান্নাতকে দেখতে পারছিলাম না
আমিঃজান্নাত ওঠেনি?
আম্মুঃঅনেক আগেই উঠেছিলো
আমিঃকোথায় ও?
আম্মুঃচলে গেছে
আমিঃকেনো?
আম্মুঃওর ফ্যামিলির জেনো কেউ না দেখে
সেই ভয়ে চলে গেছে।
আমিঃওহ,নাস্তা করে যায়নি?
আম্মুঃনা
আমিঃওহ,হয়তো আমদের দুজনের মিল
এক হওয়ার না আম্মু।জানিনা ওর মাঝে
কি চলে।বুঝতে পারি না জান্নাত আমাকে
আসলেই ভালোবাসে কিনা।
আম্মুঃভালো না বাসলে তোর কথায় রাতে
এই বাসায় আসতো না।
আমিঃআমাকে বিশ্বাস পায়না বলেই কাল
রাতে এসেছিলো।
আম্মুঃমানে?
আমিঃভেবেছিলো আমার আর মাহির মধ্যে
কিছু একটা আছে।

কথাটা শুনে সবাই হেসে দিলো।আর হাসবেই
না কেনো,মাহিকে আম্মু নিজের মেয়ের মতো
করেই ভালোবাসে।যেমনটা নিলুর প্রতি উনার
ভালোবাসা ঠিক তেমন।
আম্মুঃভালোবাসে বলেই তো সন্দেহ করে
আমিঃআমি তো এই সন্দেহ চাই না আম্মু,
আমি চাই জান্নাত আমাকে বিশ্বাস করুক।
আমাদের মাঝে কোনোপ্রকার সন্দেহ কিংবা
মনোমালিন্য চাই না।কিন্তু জান্নাত…
আম্মুঃআমি ওর সাথে কথা বলবো,এখন তুই
খেয়ে নে।
আমিঃতোমরা খেয়েছো?
আম্মুঃহ্যা
আমিঃঠিক আছে
বসে না থেকে সকালের খাবার খেয়ে সবার
সাথে আড্ডা দিলাম।আম্মু আব্বু এখানে
আর বেশিদিন থাকবে না।হয়তো কিছুদিন
পরেই চলে যাবে।সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছি
তখন ফোনটা বেজে উঠলো।হাতে নিয়ে
দেখলাম বৃষ্টি কল করেছে।
আমিঃকিরে?
বৃষ্টিঃকোথায় আছিস?
আমিঃবাসায়
বৃষ্টিঃজান্নাতের মামা বাসায় যাই চল
আমিঃকেনো?
বৃষ্টিঃআমাকে যেতে বলছে
আমিঃতো তুই যা
বৃষ্টিঃতুইও চল
আমিঃব্যস্ত আছি,তুই চলে যা
বৃষ্টিঃমন খারাপ করতে পারে
আমিঃকরবে না আমি জানি
বৃষ্টিঃকিন্তু…
আমিঃআচ্ছা রাখি
কল কেটে দিয়ে আবার সবার সাথে মজা
করতে শুরু করলাম।

বিকেলের দিকে রুমে বসে গান শুনছি তখন
নিলু রুমে আসলো।
আমিঃকিছু বলবি?
নিলুঃচল ঘুরতে যাই
আমিঃঘুরতে কেনো?
নিলুঃচলেই যাবো কিছুদিন পর
আমিঃতুই চিনোস না কিছু ?
নিলুঃচিনি,কিন্তু..
আমিঃখরচ হবে সেটা তাই না?
নিলুঃহুম,আর তুই থাকলে কেউ কিছু বলার
সাহস পাবে না।
আমিঃতোকে এমনিতেও কেউ কিছু বলে না।
নিলুঃযাবি কিনা বল
আমিঃযা মাহিকেও রেডি হতে বল
নিলুঃওকে

নিলু রুম থেকে চলে যাওয়ার পর আমিও
বসে না থেকে রেডি হতে লাগলাম।কিছু
সময় পর দুজন আসলো।
মাহিঃচল
আমিঃরেডি?
নিলুঃহুম
আমিঃচল

রুম থেকে বাইরে এসে আম্মুর কাছে গেলাম।
হাতে কিছু টাকা থাকলেও শিওর না এই
টাকাতে ঘুরতে পারবো।যদি বেশি লাগে তাই
আম্মুর থেকে কিছু টাকা নিয়ে তিনজন বের
হলাম।বাসার বাইরে দাঁড়িয়ে রিক্সার জন্য
অপেক্ষা করছি তখন বৃষ্টি দেখলাম একটা
রিক্সা নিয়ে আসলো।
আমিঃকিরে কই গেছিলি?
বৃষ্টিঃজান্নাতের মামা বাসায়
আমিঃওহ
বৃষ্টিঃতোরা কোথায় যাচ্ছিস?
আমিঃঘুরতে যাচ্ছি ওদের সাথে
বৃষ্টিঃআচ্ছা যা

বৃষ্টি চলে যাওয়ার পর সেই রিক্সা নিয়েই
আমরা বের হলাম।কোথায় যাবো এখনো
সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।মাহি অবশ্য তেমন কিছু
চিনবে না।তাই নিলুকে বললম….
আমিঃযাবি কই?
নিলুঃআমাদের স্কুল ছেড়ে কিছুদূর যাওয়ার
পর একটা পুকুর চক্কর আছে।সেখান থেকে
উত্তরে কিছুদূর গেলে একটা মাঠ পাওয়া যায়
আমিঃতুই জানলি কি করে?
নিলুঃএকবার ফ্রেন্ডদের সাথে গেছিলাম।
আমিঃঅনেক বড় হয়ে গেছিস তাহলে
নিলুঃতবুও সবাই ছোট ভাবে?
মাহিঃআমি কিন্তু বড় ভাবি
নিলুঃতুমি নিজেই সবাইকে ছোট বলো হু
মাহিঃহাহাহা,এখন থেকে বলবো তুই বড়
আমিঃবড় বলবে কেনো?ছোটকে ছোট বলবে
নিলুঃকইছে তোরে,এবার কলেজে যাবো

টুকটাক কথা বলছি তখন জান্নাত কল করলো…
জান্নাতঃকই তুই?
আমিঃঘুরতে আসছি
জান্নাতঃতোকে যে আসতে বলছিলাম সেটা?
আমিঃআমাকে কখন বললি?
জান্নাতঃবৃষ্টি তোকে বলেনি
আমিঃবৃষ্টি বলছে,তুই না।
জান্নাতঃআমি নিজেই তো ওকে দিয়ে বলাইছি
আমিঃমজাও হতে পারতো,কারণ বৃষ্টি তো
মাঝেমধ্যে এমনেই ফাজলামি করে।
জান্নাতঃকুত্তা
আমিঃধন্যবাদ
জান্নাতঃতোর ধন্যবাদের গুষ্টি,আব্বু আমাকে
নিতে আসছে।
আমিঃতোর আব্বু তোকে নেয়ার জন্য যেতেই
পারে।আমাকে হুদাই বলার দরকার আছে?
জান্নাতঃওখানে গেলে আমার সাথে কথা
বলতে পারবি না।
আমিঃতুই তো আমাকে ভালোবাসিস না।
তাহলে কথা বলে কি হবে বল..!
জান্নাতঃমজা নিচ্ছিস?
আমিঃমজা নেয়ার কি আছে?
জান্নাতঃতো তুই আসবি না?
আমিঃনা,নিলু কিছুদিন পর চলে যাবে তাই
ওকে নিয়ে বের হয়েছি।
জান্নাতঃওহ

আমাকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না
দিয়ে কল কেটে দিলো।আমিও আর সেদিকে
না ভেবে ওদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে
নিলুর বলা স্থানে আসলাম।রিক্সা থেকে নেমে
মাঠের এক পাশে বাদাম নিয়ে বসলাম।

অনেকটা সময় আড্ডা দেয়ার পর উঠে
ঘুরাফেরা করে সন্ধ্যার পরে বাসায় আসলাম।
এসবের মাঝে নিলু মাহি নিজেদের জন্য কিছু
কেনার পাশাপাশি আমাকেও কিছু কিনে
দিয়েছে।যদিও পুরোটা আমার পকেট থেকেই
গেছে।তাই বলা চলে ওরা শুধু পছন্দ করে
দিছে।সে যাই হোক,বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে
বিছানায় বসতেই রাফি কল দিলো।
আমিঃবল
রাফিঃবাসার বাইরে আয়
আমিঃতুই কোথায়?
রাফিঃতোর বাসার সামনে
আমিঃদাড়া

কল কেটে দিয়ে বাসা থেকে বের হতেই দেখি
রাফি দাঁড়িয়ে আছে।
আমিঃএখন এখানে কেনো?
রাফিঃসালা তোমার শ্বশুরকে দেখলাম তার
মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসলো।
আমিঃহুম আমাকেও বলছে
রাফিঃএই বাসায় থাকলে কি হবে জানিস না?
আমিঃকি হবে?
রাফিঃওকে বিয়ে দিয়ে দিবে।
আমিঃবিয়ে কেনো দিবে?
রাফিঃতুই ওকে উল্টাপাল্টা বলছিস,আর
ওর মাথা কেমন তুই খুব ভালো করেই জানিস
আমিঃসেটা ঠিক,পাগল একটা।
রাফিঃতোকে বলার বলে দিলাম।এখন তুই
দেখ কি করবি।
আমিঃআচ্ছা চল ওর বাসার দিকে যায়
রাফিঃএখন আবার ওর বাসায় দিকে কেনো?
আমিঃমাঠে গিয়ে বসি চল
রাফিঃআচ্ছা

দাড়িয়ে না থেকে মাঠের দিকে গেলাম।কিছু
সময় বসে থাকার পর লক্ষ্য করলাম সাদিয়া
বাসায় আসলো।
আমিঃকোথায় গেছিলো রে?
রাফিঃজানিনা
আমিঃপ্রতিবেশি তবুও জানিস না?
রাফিঃবিয়ে করা বউয়ের খোজই অনেকে
জানে না।আর আমি তো প্রতিবেশী।
আমিঃসালা মজা নিস
রাফিঃআরে না সত্যি

দুজন অনেকটা সময় আড্ডা দেয়ার পর
বাসায় এসে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।

চলবে……….
(কেমন হয়েছে জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here