Story:- #Different_Love
Writer:- গল্পছোঁয়া
Part:- 22
আয়মান শার্ট ঠিক করে নিয়ে দরজা খুলে দেখলো আরিফ দাঁড়িয়ে, হাতে একটা ফাইল।
আরিফ রুমে ঢুকতে যাবে তখনই আয়মান বললো…
— পেপারসগুলো দে,সব ঠিক আছে তো?
— ইয়েস স্যার,আর ওই রু…
— এই নিয়ে পরে কথা বলছি,আমি একটু বিজি
— বাট স্যার,ইট’স আর্জেন্ট।
ইম্পর্ট্যান্ট ইনফরমেশনস
— তোর থেকে একটু হলেও বেশি বুঝি আমি, না ভেবেচিন্তে কোনো কথা বলিনা।
— সরি স্যার (আরিফ পেপার্স ফাইল টা আয়মানের হাতে দিয়ে চলে গেলো)
আয়মান দরজা আবার লক করে দিয়ে ফাইল টা নিয়ে উল্টোদিকে ঘুরেই দেখলো আরিয়া বেডে পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে,আয়মান চোখ ছোটছোট করে তাকালো।
— দেখোতো কেমন লাগছে আমাকে,লুক এ্যাট মি।একদম সেইম ভাবে সেজেছি যে সাজে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। আবদ্ধ হয়েছিলাম দুজনে,এক পবিত্র বিবাহ বন্ধনে।
— এখানে থেকে যান (চোখ রাঙিয়ে)
— আরে এমন করছো কেন,ভালো করে দেখো একদম সেইম গেটআপে আছি।তফাত শুধু আগের থেকে একটু মোটা হয়েছি বটে,কিন্তু খুব বেশি না।
— শাটআপ,হেট আউট ফ্রম হেয়ার?
— দেখো আয়মান,অনেক সহ্য করেছি আর না। I can’t tolerate this,প্লিজ এই বন্ধ দরজার ভেতরে অন্তত ড্রামা করোনা।
— লিসেন,আমি আপনাকে সকাল থেকে…
— আবার ওই একই কথা,আরে তখন তো রুহি নামের মেয়েটা ছিল তাই ওগুলো বলেছো,বাট এখনতো ও নেই। সো,স্বীকার করো।
আয়মূন ট্রাস্ট মি,আর পারছিনা আমি।প্লিজ এমন করোনা,তোমাকে অনেক কিছু বলার আছে।
— বিয়ে করেছেন না??
হাজবেন্ডের নম্বর টা দিন তো,তাকে কল করে ডেকে নিয়াসি।
আপনার কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে আপনার ১ম হাজবেন্ড আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে অথবা সে মৃত,আর এখন আমাকে দেখে আপনার মনে হচ্ছে আমিই সে।
ইট’স এ হ্যালুসিয়েসন,হয়তোবা আপনার মাথায় প্রবলেম নয়তো সত্যিই আমি তার মতো দেখতে হয়তো-বা।
আচ্ছা ধরে নিলাম, আপনি যার কথা বলছেন আমিই সে,কিন্তু কি হবে আমি যদি সে হই তো??
আপনার তো হাজবেন্ড আছে,আবার বিয়ে করেছেন
— বিয়ে কিসের বিয়ে,আমি সেকেন্ড কোনো বিয়ে করিনি ওকে?
আমি আমার আয়মান কে কথা দিয়েছিলা আমি তাকেই মনেপ্রাণে নিজের স্বামীরূপে মানি,আমি আর কোনো ছেলেকে তার জায়গায় বসাতে পারবোনা।তাইতো আয়মান আমাকে বারবার ফিরিয়ে দিলেও এখনকার মতোই তার পিছে পরে থাকতাম।
হাহ্,এসব আর না-ই বলি।আপনি আমার আয়মান নন,আই এম সরি।
এতো ডিসটার্ব করার জন্য,একচুয়ালি কি বলুনতো।আপনাকে দেখতে সত্যিই আমার আয়মানের মতোই,আর নামটাও সেইম।
আর সে অনেক চতুর,বুদ্ধিমান একজন ছিল,যাকগে আমারই ভুল।
আপনার এখনকার ব্যবহারে বুঝে গেছি আপনি আমার আয়মান হতে পারেননা,আমার আয়মান কখনোই আমার সাথে এমন বিহেভিয়ার করতে পারতোনা। (আরিয়া ফুফিয়ে কান্না করছে আর বাম হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছছে)
— দেখুন আসলে আমি এভাবে বল… (আয়মান পুরো কথা বলার আগেই ওর ফোন বেজে উঠলো,স্ক্রিনে নম্বর দেখে দ্রুত বের হয়ে গেলো রুম থেকে)
আরিয়া বেডে বসে থেকে কাঁদতে কাঁদতে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে সেটা অজানা।
নিজের ঠোঁটে কারোর ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে ঘুম ভেঙে গেলো আরিয়ার,দম আটকে আসছে তার।তাকিয়ে দেখে রুম অন্ধকার,কে ওকে এতো গভীর ভাবে কিস করছে সেটা দেখতে পাচ্ছে না আরিয়া।
দুহাত দিয়ে মানুষটিকে নিজের ওপর থেকে আপ্রাণ সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু সে বিফল,বিপরীত মানুষটি যে বলিষ্ঠ শক্তিশালী সেটা বুঝাই যাচ্ছে। এদিকে শ্বাস নিতে না পারায় ক্রমশ দূর্বল হয়ে পরছে আরিয়া,মানুষটাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে ক্লান্ত সে।তবুও যদি এক চুল পরিমাণ সরাতে পারতো।
মানুষটি এবার আরিয়ার ঠোঁট ছেড়ে ঘাড়ে গলায় কিস করছে,আরিয়ার কাঁধ থেকে জামা নামাতে গেলে আরিয়া আবার ধস্তাধস্তি শুরু করে দিলো কিন্তু যে-কে সে-ই।
মানুষটার শক্তির সাথে সে পেরে উঠছে না,হার মানতে বাধ্য হলো আরিয়া,নিজেকে বিসর্জন দিলো সে।
তবে ধীরে ধীরে স্পর্শ গভীর হতেই আরিয়া বুঝতে পারলো এই মানুষটা ১০০% আয়মানই হবে, আয়মানের স্পর্শ,ঘ্রাণ যে তার অতি পরিচিত।
আজ ৪র্থ বার মিলন হলো ওদের।
★
পরদিন সকালে একটু দেরিতে ঘুম ভাঙলো আরিয়ার,তাও কলের রিংটোনের আওয়াজে।চোখ বন্ধ করেই হাতরে হাতরে ফোন খুঁজে ঘুমঘুম চোখে ফোন স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে কলটা কোনোমতে রিসিভ করে কানে ধরলো আরিয়া।
— হ্যালো,আসসালামু আলাইকুম (ঘুম জড়ানো কন্ঠে)
— ওয়ালাইকুম আসসালাম,আরিয়া আপু।
কোই তুই,আমান কান্না করছে দ্রুত আয় (অহনা)
লাফ দিয়ে উঠে বসলো আরিয়া,আর মৃদু আর্তনাদ করে উঠলো সে।পুরো শরীরে প্রচুর ব্যাথা করছে,সেদিকে আপাতত পাত্তা না দিয়ে অহনাকে বললো…
— ফিডারে দুধ আছে তো,খাওয়া।
— আর কতক্ষণ,আমান কি তোকে ছাড়া থাকে নাকি।গতরাত থেকে এটাসেটা করে সামলে রেখেছি ওকে।আর পারছিনা,একটু আগে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকেই কান্না জুরেছে।
কোই আছিস তুই সেটা বল আগে,আমি এখানে বিয়ে খেতে আসছি নাকি তোর ছেলেকে সামলাতে?
— রাগ করিসনা বনু,সরি।
আমি আধঘন্টার মধ্যে আসছি।
— এতক্ষণ আমানকে সামলাবো কি করে,তোর ছেলে তুই ছাড়া কারোর বুঝ মানেনা।
— আচ্ছা ভিডিও কল দিয়ে ওর সামনে ধর,আমি ওর সাথে কথা বলছি।আমার ছেলে এতটাও অবুঝ নয় সেটা তুইও জানিস।
— ওকে ওয়েট, কল কেটে নেটে আয়।ভিডিও কল দিচ্ছি।
আরিয়া কল কেটে ডাটা অন করলো।তারপর নিজের দিকে তাকিয়ে দেখলো ওর অবস্থা শোচনীয়,দ্রুত বেডের চাদর টেনে নিজেকে ভালো করে কভার করে নিলো সে,এতক্ষণে গতরাতে কথাও মনে পড়লো।আশেপাশে তাকিয়ে দেখে এটা সেই রুম,যে রুমে গতকাল সে আয়মানের সাথে কথা বলতে এসেছিলো,আর কাদতে কাঁদতে তো এখানেই ঘুমিয়ে গিয়েছিল সে।
আর তারপর গভীর রাতে তো আয়মান… কিন্তু কোথায় আয়মান,আরিয়া এদিক-ওদিক তাকিয়ে আয়মান কে দেখতে পেলো না।এরমধ্যেই অহনার কল,আরিয়া চাদর দিয়ে নিজের চোখমুখ মুছে নিয়ে কল রিসিভ করলো।
— মাম্মাম,তুমি কোতায় (আমান কাঁদতে কাঁদতে)
— আমি তোমার বাবাইকে খুঁজতে এসেছি সোনা,আমি একটু পরেই আসছি।
আন্টিক ডিস্টার্ব করোনা কেমন।
— আমি আন্তিকে ডিস্টাব করিনি,তোমাকে এতকুলো মিচ করথিলাম।তাই কান্না কচ্ছিলাম,আল কান্না কববোনা।তুমি বাবাইকে নিয়ে আসো
—তোমার বাবাই এখানেই আছে সোনা,আমি একটু পরেই আসছি। তারপর তোমাকে তোমার বাবাইয়ের সাথে দেখা করিয়ে দিব কেমন।
—আচ্চা, ইয়ে কি মজা।আন্তি আজকে আমি বাবাইয়ের সাতে দেকা করব,মাম্মাম বলতে।
মাম্মাম উম্মাহ,তালাতালি আসো।
আরিয়া কল কেটে দিয়ে ফুস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে ফোন টা রেখে বিছানা থেকে নামলো,আজকেও হাঁটাচলা করতে কষ্ট হচ্ছে।পুরো শরীর ব্যথায় টনটন করছে,ধীরপায়ে হেঁটে ওয়াসরুমে গেলো আরিয়া।বেশকিছুক্ষন ধরে শাওয়ার নিয়ে টাওয়াল নেওয়ার জন্য বাথটবের ওদিকে গিয়ে দেখলো কমোডের ওপরে দুটো শপিং ব্যাগ রাখা।আরিয়া ভ্রু-কুচকে সেদিকে গিয়ে আগে টাওয়াল টা নিয়ে ভালোভাবে হাত মুছে শপিং ব্যাগ দুটো নিয়ে খুলে দেখলো একটাতে ব্লাক থ্র্রীপিচ,আর আরেকটিতে ক্রিম কালার গর্জিয়াস গাউন রয়েছে,সাথে ক্রিম কালার ম্যাচিং হিজাব আর টাইচ।এগুলোর ওপরে সাদা জুরির কাজ করা।
একটা চিরকুটও রয়েছে,আরিয়া সেটা হাতে নিয়ে পড়লো।সেখানে লিখা..
❝এখন শাওয়ার নিয়ে থ্রিপিস টা পড়ো আর সন্ধ্যায় রিসেপশন পার্টিতে এই গাউনটা পরবে।
AAC❞
আরিয়ার বুঝতে বাকি নেই কাজটা কার,গতরাতে এমনেই ১০০% শিওর হয়ে গেছিলো সে,এখন তো সন্দেহের অবকাশই নেই যে এটা আয়মান।
কিন্তু সামনে আসলে কেন যে স্বীকার করছে না সে-ই জানে।
আরিয়া সব ভাবনা সাইডে রেখে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো, গলা,ঘাড়সহ শরীরের অনেকজায়গায় ছোপছোপ দাগ,আরিয়া জানে এগুলো কিসের চিহ্ন।
দাগগুলো তে হাত বুলিয়ে মুচকি হাসলো আরিয়া।
তারপর আয়মানের দেওয়া দামি ব্লাক থ্রিপিস টা পরিধান করলো সে।
★
ঘন্টাখানেকের মধ্যে পুরোপুরি রেডি হয়ে আরিয়া অহনার কাছে ওই রুমে গেলো,যে রুমটি মিঃ মুখার্জি আরিয়া আর অহনার জন্য রেখেছিল।
আয়মানকে একবারও চোখে পরেনি আরিয়ার,কি জানি কোই সে।
আরিয়া রুমে ঢুকতেই আমান দৌড়ে এসে আরিয়াকে জড়িয়ে ধরলো,আরিয়ার গালে কিসি দিলো।
আরিয়াও আমানের গালে কপালে চুমু দিলো।
— মাম্মাম, বাবাই কোতায়???
To be continue….
((