Different Love পার্ট ২৩

0
1396

Story:- #Different_Love
Writer:- গল্পছোঁয়া
Part:- 23

— মাম্মাম,বাবাই কোতায়???

— আছে সোনা,সন্ধ্যা বেলায় দেখতে পাবে ইনশাআল্লাহ।

— আচ্চা
মাম্মাম রোজ আন্তেল কোতায়,বাবাই আর আন্তেল তো বন্দু।তাহলে রোজ আন্তেল আমাকে বাবাইয়ের কাচে যেতে দেয়নি কিনো,আন্তেল কুব খারাপ

— না সোনা,রোজ আঙ্কেল ভালো।
তোমার আঙ্কেল জানতো না তাই তোমাকে তোমার বাবাইয়ের কাছে যেতে দেয়নি।

— নিমু আন্তির বেবি হলে আমিও আমাল বাই কে রোজ আন্তেলের কাচে যেতে দিবনা হুম।

— হইচে,অনেক পাকাপাকা কথা শিখছো।
এবার এসোতো কিছু খাওয়া লাগবেতো তাইনা,নাহলে শুকিয়ে যাবে.তখন..

— এএএ আমি একুনি কাবো,নাহলে আমার বাবাইয়ের মতো বডি অবেনা।
চলো চলো কেয়ে নিই।

আরিয়া আমানকে রেডি করলো,খাবারের জায়গায় গিয়ে দেখলো আয়মান নেই।
সবার সাথে সকালের ব্রেকফাস্ট করে নিলো সে,অহনা আমানকে নিয়ে ঘুরতে গেছে বাইরে।আরিয়াই পাঠিয়েছে ওদের,কারণ আরিয়া চায়না এখনই আয়মান আর আমানের দেখা হোক।
বেলা ১১টার দিকে আয়মান দেখা মিললো তাও রুহির সাথে।আয়মান আর রুহি একে-অপরের হাত ধরে হাঁটছে,দুজনেই খয়েরী রঙের ম্যাচিং ড্রেসাপ করেছে।
কাপল কাপল লাগছে ওদের।আরিয়ার এতো রাগ লাগছে বলার মতো না।
সারাটাদিন অনেক চেষ্টার পরও আয়মানের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলার মতো প্রাইভেসি পায়নি আরিয়া।
পুরোটা দিন আয়মান আর রুহি পাশাপাশি ছিল,আরিয়া ওদের কাছ গেলেই রুহি উল্টাপাল্টা বলে আর আয়মান তো আরিয়াকে না চেনার ড্রামা করেই যাচ্ছে?
বিকেলের দিকে একটা ফোন কল এটেন্ড করার জন্য আয়মান রুহিকে ছেড়ে একটু সাইডে গেলেই আরিয়া দ্রুত আয়মানের হাত ধরে আড়ালে নিয়ে গেলো।আয়মানের বোধগম্য হলোনা,এই মেয়েটা হুট করে এমন করছে কেন।
আরিয়া জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে আর এদিক-ওদিক উঁকি দিচ্ছে,আয়মান ভ্রু-কুচকে আরিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

— বাপরে,তুমিতো যখন খুশি টেনেহিঁচড়ে আমায় নিয়ে যাও আর আমি তোমাকে এটুকু আনতেই দম বেরিয়ে যাচ্ছে।
আলহামদুলিল্লাহ,এদিকটায় কেউ নেই আর ওই পেত্নী টাও নেই।এবার বলো,কি সমস্যা তোমার হুম

— আমার আবার কিসের সমস্যা,আপনার কি সমস্যা সেটা বলুন।আপনাকে গতকাল থেকে বারবার বলছি আপনি যাকে ভাবছেন আমি সে নই আমি সে নই তবুও আমার পিছনে পরে আছেন

— ওই ড্রামাবাজ,এখানে তুমি আমি ছাড়া কেউ নেই সো স্টপ ইওর ড্রামা।

— জাস্ট শাট আপ,কি শুরু করেছেন টা কি আপনি।ভালো ভাবে বলছি বলে গায়ে লাগছে না তাইবা,আপনি জানেন আমি কে আর আমি চাইলে আপনার কি করতে পারি (রেগে)

— ওররে আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম,এইযে মিঃ আয়মান আহির চৌধুরী তুমি যদি ভেবে থাকো আমি আগের সেই বোকা আরিয়াই আছি তাহলে তুমি ভুল।আমিও আফরিন নিশু আরিয়া,নিজের হাজবেন্ড কে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী আমি না।আগেও স্ত্রীর অধিকার পাওয়ার জন্য স্ট্টাগেল করেছি আর এখনো করবো।

— আপনি আপনার লিমিট ক্রস করছেন,লিসেন আপনি যাকে ভাবছেন সত্যিই আমি সে নই।

— হাহাহা,লাইক সিরিয়াসলি।
তাহলে গতরাতে আমার কাছে কেন এসেছিলে শুনি।কি ভেবেছো,রাতের অন্ধকারে আমাকে ভালোবাসবে আর ভোরবেলায় আমি উঠার আগেই পালিয়ে যাবে। হাহ,শোনো আমি গতরাতেই বুঝে গেছিলাম ওইটা তুমি।ইউ নৌ হোয়াট,তুমি আমার আশেপাশে থাকলে আমি ফিল করতে পারি,তোমার স্পর্শ-ঘ্রাণ সবই আমার চেনা,খুব করেই পরিচিত আমি সেগুলোর সাথে।ভালোবাসি তো,হোকনা সেটা #Different_Love

আরিয়ার কথা শুনে বিষম খেলো আয়মান,আরিয়া যেন আগে থেকেই জানতো এরকম হবে তাই আগে থেকেই পানির বোতল সাথে রেখেছিলো সে।
পানির বোতলটা আয়মানের দিকে বাড়িয়ে দিলেই আয়মান বোতলটা নিয়ে ঢকঢক করে পানি খেলো।

— রিল্যাক্স মিঃ আয়মান রিল্যাক্স।
আমি তো তোমারই বউ,এতো ঘাবড়ানোর কি আছে বলো।পর কেউ তো নই।

— শাট আপ,আর একটাও বাজে কথা বলবেননা।ছিঃ লজ্জা করেনা,পরপুরুষের কাছে এসে এসমস্ত কথাবার্তা বলতে।

—তাই নাকি,তুমি পরপুরুষ তাইনা।দেন এখনই প্রুফ করে দিচ্ছি আমি ভুল মানুষের সাথে কথা বলছিনা।

— মানে

— জাস্ট ওয়েট & সি,নো টক।

আরিয়া আয়মান কাছে গিয়ে আয়মানের পাঞ্জাবির হাতা ওপরের দিকে উঠাতে লাগলো।

— হোয়াট ইজ দিস,ডন্ট টাচ মি।
আরে কি করছেনটা কি এটা,ছারুন।
আজবতো,আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন। (আয়মান দ্রুত আরিয়ার থেকে সরে গেলো)

— কি হলো,সরে গেলে কেন।প্রুফ দেখবানা,গতরাতে যে তুমি আমার কাছে এসেছিলে সেই প্রুফ টাই দেব।
আঁধারের মাঝেও তোমার শরীরে আমি বেশ অনেক গুলো চিহ্ন একে দিয়েছি,হাতেও আছে দেখাই।আসো

আরিয়া আবারও আয়মানের দিকে এগিয়ে ওর পাঞ্জাবিট হাতায় হাত দিতে যাবে তখনই কেউ একজন এসে আরিয়ার হাত ধরে ফেললো।
আরিয়া হাতের মালিক কে দেখার জন্য সাইডে তাকাতেই দেখলো রুহি অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

— বেস,অনেক হয়েছে আয়মান।আর নাহ,আজ এই মেয়েকে উচিত শিক্ষা দিয়েই ছারবো।এতদিন তুমি না করতে বলে চুপ ছিলাম কিন্তু আর নয়,আজকে তোমার গায়ে হাত দিয়েছে সাহস কত বড়।
তাইতো বলি সারাদিন আমাদের পিছুপিছু ছিল কেন,আমি ছিলাম বলে নোংরামি করার চান্স পায়নি আর এখন যখন দেখলো আমি নেই সেই সুযোগটাই কাজে লাগালো।কতবড় নোংরা নির্লজ্জ মেয়েমানুষ, ভাবা যায়। (রুহি আয়মানের বাহু জড়িয়ে দাঁড়িয়ে)

— রুহি,ছেরে দাওনা।
উনি ওনার হাজবেন্ডের সাথে আমাকে গুলিয়ে ফেলেছেন তাই এমন করছেন।

— কিন্তু আয়মান

— কোনো কিন্তু না,ওনার মনের অবস্থা টাও ভাবো।ছেরে দাও,চলো আমরা ওদিকটায় যাই

— ঠিক আছে,কিন্তু এই মেয়েকে যেন ২য়বার তোমার আশেপাশে না দেখি।
আর এইযে তুমি (আরিয়াকে) ওটা তোমার হাজবেন্ড নয়,বুঝেছো।
শেষবারের মতো মাফ করে দিলাম এরপর কিন্তু ছেড়ে কথা বলবোনা।

রুহি আর আয়মান হনহন করে চলে গেলো আর এদিকে আরিয়া দেওয়ালে হ্যালান দিয়ে চোখের পানি ফেলছে,বারবার আয়মানের এই ব্যবহার কাটার মতো বিঁধছে ওর দেহে।বেশ অনেক্ষন যাবৎ সেভাবেই কান্না করে যাচ্ছে আরিয়া,হঠাৎ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে দ্রুত চোখের পানি মুছে সাইডে তাকিয়ে দেখলো নিমু দাঁড়িয়ে।

— তুই এখানে??

— কাঁদিস না আরু,আমি সবটাই জানি।
সব ঠিক হয়ে যাবে,আয়তো তোকে রেডি করে দি।

— কিন্তু তুই এই অবস্থায় কি করছিস এখানে?

— কনেপক্ষ আমি,কনেরা যে ফ্ল্যাটে থাকে তার পাশের ফ্ল্যাটে আমরা থাকি,আর ওদের সাথে একটা ভালো বন্ডিং হয়েছে।
এ অবস্থায় আসতে চাইনি তবুও জোর করে নিয়াসলো।

— ওও,রোজ ভাইয়া কোথায়?

— রাস্তায় অহনা আর আমানের সাথে দেখা হয়েছিল,রোজ আমানকে নিয়ে চিপ্স কিনে দিতে গেছে আর আমি অহনার সাথে চলে আসলাম।আর কিছুক্ষণের মধ্যেই রিসেপশন পার্টি শুরু হবে, অহনা রেডি হতে গেছে।চল তোকেও রেডি করে দি।

— না,আমি যেভাবে আছি ঠিক আছি।
ভালো লাগছে না

— চুপ কর,চলতো।

— প্লিজ নিমু,আমার মনের অবস্থা টা বোঝ।

— আমি সবটাই জানি,চল আমার সাথে।
কোন রুমটায় আছিস,সেখানে নিয়ে চল।

নিমু আরিয়া কে জোর করে নিয়ে গেলো,আয়মানের দেওয়া ক্রিম কালার গাউনটাই পরতে হলো আরিয়া কে, তারপর সিম্পলের মধ্যে সুন্দর করে সাজিয়ে দিলে।
হিজাবটাও পার্ফেক্টলি সেট করে দিলো।
অনেক সুন্দর লাগছে আরিয়াকে। (এতো বর্ণনা দিতামনা,পরে সমালোচনা করবেন,এটুকুই থাক??)

নিমু ৩মাসের প্রেগন্যান্ট,ও নিজেও একটা গর্জিয়াস ঢিলা গাউন পরেছে ব্লাক কালার,সাথে ম্যাচিং হিজাব আর হালকা সাজ।
অহনা কফি কালার গাউন,আর ব্রাইডাল সাজ।চুলগুলো ফ্র্যান্স বিনুনি করেছে।

৩জনেই রেডি হয়ে রিসোর্টের হলরুমে গেলো,যেখানে রিসেপশনের আয়োজন করা হয়েছে।
নিমু,অহনা আর আরিয়া একটা টেবিলের চেয়ার টেনে চুপচাপ বসে আছে।তাদের টেবিলের অপজিটে ২টেবিল পরেই রুহি আর আয়মান বসে আছে।আয়মান আজ হোয়াইট শার্ট আর ক্রিম কালার ব্লেজার পরেছে।আরিয়ার সাথে ম্যাচিং, কিন্তু তাতে কি।সে-তো রুহির সাথে আছে।
হেসেহেসে কথা বলছে একে-অপরের সাথে।
আরিয়ার দৃষ্টি তাদের দিকেই নিবদ্ধ,নিমু ভালো করেই বুঝতে পারছে আরিয়ার মনের অবস্থা।
নিমু দ্রুত রোজকে কল দিয়ে আসতে বললো।
কিছুক্ষণ পরে রোজ আমানকে নিয়ে উপস্থিত হলো,রিসোর্টের গেট দিয়ে রিসোর্টে ঢুকতে যাবে তখনই আয়মানের সামনে পরলো তারা।রোজ আর আয়মান একে-অপরের দিকে তাকিয়ে আছে আর আমান আয়মানের দিকে তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে…..

To be continue….

((বাবা-ছেলে মুখোমুখি, কি হবে এরপর ?))

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here