Story:- #Different_Love
Writer:- গল্পছোঁয়া
Part:- 11
— আমি সিক্রেট অফিসার,police এ আছি।সো,বিনা অনুমতি তে ভিসা ছাড়া বর্ডার ক্রস করতে যাওয়ার অপরাধে তোমার কি শাস্তি হতে পারে জানোতো??
ঠিক আছে,মিষ্টি শাস্তি তোমাকে খেতে হবেনা।ওঠো,you are under arrest Miss. Afrin Nishu Ariya (হ্যান্ডকাফ বের করে)
শুকনো ঢোক গিললো আরিয়া।
— দদেখুন,এএটা সরান আমার সসামনে থেকে।ভয় লাগে আমার, আআমি কিছু করিনি।এএইতো চা খাচ্ছি দেখুন (চায়ের কাপ হাতে নিয়ে)
— রিভলবার দেখে ভয় লাগেনা,অচেনা ছেলের সঙ্গে ঝগড়া করো।আর এখন এই হ্যান্ডকাফ দেখে ভয় পাচ্ছো,লাইক সিরিয়াসলি মিস.আরিয়া (মুচকি হেসে)
আরিয়া কিছু না বলে কাপটা নিয়ে দ্রুত চা খেতে গিয়ে গরম চায়ে “উফফ” বলেই কাপটা সরিয়ে ফেললো।
আয়মান চমকে উঠে দাড়িয়ে আরিয়াকে গিয়ে ধরলো।
— আর ইউ ওকে,এতো দ্রুত কে খেতে বলেছে তোমাকে। [আয়মান টেবিল থেকে পানির বোতলের ছিপি খুলে আরিয়ার হাতে দিলো]
দ্রুত খাও।
আরিয়া বোতল টা নিয়ে কয়েকঢোক পানি খেলো।আয়মানের ফোনে কল আসলে..
— হ্যাঁ,রাহুল।
হুম আসছি,রোজ কে বের হতে বল(টুটটুটটুট)
মিসঃ আরিয়া চলো,টিচার রা তোমাদের খোঁজ করছে।
চায়ের বিল পে করে আয়মান আরিয়াকে নিয়ে বর্ডার ক্রস করে আবার বাংলাদেশে আসলো,রোজ নিমু আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল।আয়মান এসে রোজের থেকে একটা মাস্ক নিয়ে পড়লো।
আয়মান রোজ সবাইকে নিয়ে জাফলং এর ওয়াটার ফলের ওখানে গেলো,আরিয়াদের টিচার্স সহ বাকি স্টুডেন্টসরা ওখানেই আছে।
— আরিয়া,নিমু এতক্ষণ কোথায় ছিলে তোমরা?? (একজন প্রফেসর চিন্তিত হয়ে)
নিমু আর আরিয়া কাচুমাচু করছে,কি বলবে বুঝতে পারছেনা।
— এক্চুয়ালি ম্যাম,ওরা দুজন পথ হারিয়ে ফেলেছিলো।আমরাই ওদের নিয়ে আসলাম আপনাদের কাছে। (আয়মান)
— আপনারা??
আয়মান আর রোজ নিজেদের আইডিকার্ড দেখালো।নিমু আরিয়াকে ভালো করে দেখে রাখার কথা বললো,রোজ যে নিমুর উডবি হাজবেন্ড সেই পরিচয়ও দিলো।কিছু কথা বলে চলে গেলো তারা।
— তোমরা এখানে আমাদের দ্বায়িত্বে আছো,এখানে একটা মেয়ের কিছু হলে পুরো রেসপনসেবলিটি আমাদের নিতে হবে।আমরা যেখানে নিয়ে যাব,সেখানেই যাবে।এটা তোমাদের শহর না যে যেখানে খুশি সেখানে যাবা,পাহাড়ি এলাকা তাও অচেনা। আজ ওনারা না থাকলে কি হতে পারতো ভেবে দেখেছো। নেক্সট টাইম যেন এরকম খামখেয়ালিপোনা না দেখি।
প্রফেসর আরও কিছু ঝারি দিয়ে আরিয়া নিমুকে নিয়ে ওয়াটার ফলের কাছে গেলো।
যথারীতি ট্যিউর শেষে আবার রাজশাহী ব্যাক করলো সবাই।
হোস্টেল রুমে আরিয়া নিমু…
— নিমু?
— কি হয়েছে, রাগিস কেন
— ওরা এখানে আছে, বলিসনি কেন?
— যাহ বাবা,আমি কতবার বলতে চেয়েছিলাম, তুইই তো শুনলিনা।
— ওরা পুলিশে আছে, তুই জানতি?
— হুম,রোজের থেকে সব শুনেছি। তোকেওতো বলতে চেয়েছিলাম শুনিসনি।
— যে ভয়টা পাচ্ছিলাম সেটাই হলো।
— শোন আরু,আয়মান ভাইয়া হেড ওফ সিক্রেট অফিসার।রোজ তাদেরই একজন জুনিয়র অফিসার।
— আম্মু-আব্বু যতই পুলিশ অপছন্দ করুক, কিছু একটা করে ম্যানেজ করে নিব।কিন্তু আয়মান তো আমাকে মানতেই নারাজ,শুধু আমি কেন ও নাকি কোনো মেয়েকেই ওর জীবনের সাথে জড়াতে চায়না।ওর নাকি জীবনের নিশ্চয়তা নেই।
— হুম,আগেইতো বললি
— রোজ ভাইয়াও তো একই প্রফেশনে আছে, ও তো তোকে ঠিকই বিয়ে করছে,দেড় বছর ধরে চুটিয়ে প্রেমও করছিস,ফেমিলিও জানে।এক্সাম পরে বিয়ে
রোজে ভাইয়ার যখন কোনো প্রবলেম নেই তাহলে আয়মানের এতো প্রবলেম কেন।
— বলামনা,আয়মান ভাইয়া হেড অফিসার।তার লাইফরিস্ক তো থাকবেই, প্রতিটি মিশনে নিজের দক্ষতা দিয়ে পুরো সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করে সে।
— ওর আইডির নাম জানিস?
— হুম,তোকেতো আগেই বলতে চেয়েছিলাম নিসনি।
— আচ্ছা এখন বল।
— Ahir Chowdhury
আরিয়া ফেসবুকে নাম সার্চ করলে ১মেই আয়মানের আইডি চলে আসলো।বাহ কেয়া প্রোফাইল পিকচার হ্যায়,পুরো ফর্মাল গেটআপে আছে। ন্যাভি ব্লু কোর্ট,প্যান্ট,শার্ট।চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা,চোখে সানগ্লাস, হাতে ওয়াচ।আনলিমিটেড ভোল্টের ক্রাশ খেলো আরিয়া।
ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট দিতে গিয়ে দেখে বাহ্,আইডিতে ফুল সিকিউরিটি দেওয়া।ফলৌ দেওয়া যায়,এ্যাডফ্রেন্ড করা যায়না।মেসেজ করাও যায়না,জোচ?
— নিমু,তোর সাথে এ্যাড আছে??
— নারে,রোজকে বলতে চাইছিলাম যাতে ভাইয়াকে বলে।কেমন জানি আনইজি ফিল হয়,তাই আর বলিনি।
— ওও,নম্বর আছে?
— তোর বরের নম্বর তোর কাছেই নেই,আমায় জিজ্ঞেস করছিস আমার কাছে আছে কিনা।বাহ অসাধারণ বইন।
— যা ভাগ,তোরে আর কিছু কমুনা।
আরিয়া আয়মানের প্রোফাইল স্ক্রল করছে, বাহ এতো এতো মেয়েদের লাভ রিয়াক্ট,লুতুপুতু কমেন্ট।আরিয়ার গা পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে একেবারে,
—মেয়েদের থেকে দূরে থাকিস ভালো কথা কিন্তু এত ছবি ছারতে হবে কেন।আচ্ছা, ছবি ছারবি ভালো কথা, প্রোফাইল লক রাখলেওতো পারিস,ঢং যতসব।এটা কেরে,উদাম শরীরে পিক ছারে কেন।সিক্সপ্যাক বডি বানাইছোস সেটা আবার সবাইরে দেখিয়ে বেড়াতে হবে নাকি।দেখো আমার বডি দেখো,শয়তদন লুচু বদমায়েশ ছেলে।
আর একবার তোরে পাই,মিসঃ আরিয়া মিসঃ আরিয়া করা বের করছি আমি। তুই নাকি পুলিশ,আইন বুঝিস না নাকি।স্বামীর ওপর বউয়ের পুরো অধিকার আছে,দেখ কি করি আমি।
— কিরে আরু কি বিরবির করছিস??
— কিছুনা,ঘুমা।
— শোন না,একটা কথা
— ভালো লাগছে না,অকাজের কথা কইসনা আবার।
— আরে শুনতো,রোজের সাথে ঘুরতে যাব।
আয়মান ভাইয়াও থাকবে মেবি,যাবি তুই??
— কি কথা শুনালিরে বোন আমার, উম্মাহ।
কবে যাব বল
— সামনে সপ্তাহে,ওদের সিলেটের মিশন টা শেষ হলেই রাজশাহী ব্যাক করবে।রোজ মাত্র বললো আমায়।
— আচ্ছা।
★
নিমু আরিয়া রেডি হয়ে বের হয়েছে,আজ রোজের সাথে নিমু ঘুরতে যাবে।রোজকে দিয়ে আয়মানকেও সাথে নিয়েছে, আয়মান জানেনা আরিয়াও আসছে।
দুজনেই আজ গাউন পরেছে,ন্যাভি ব্লু কালার বাট ডিজাইন আলাদা।
নিমু গোল্ডেন হিজাব আর আরিয়া ব্লাক হিজাব মেরেছে।রেডি হয়ে দুজনেই রিকশা নিয়ে চললো জিয়া পার্কের উদ্দেশ্যে,সেখানেই রোজ আর আয়মানের থাকার কথা।
কিছুক্ষণ পরেই আরিয়া নিমু পৌঁছে গেলো কাঙ্ক্ষিত জায়গায়, রোজ কারে হেলান দিয়ে ফোন স্ক্রল করছে আর আয়মান তার থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ফোনে কারোর সাথে কথা বলছে।বেশ চেচিয়ে চেচিয়ে, উত্তেজিত রেগে আছে বুঝাই যাচ্ছে।
আয়মান ব্লাক শার্ট তার ওপর ক্রিম কালার ব্লেজার পরেছে,চোখে সানগ্লাস।চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা, হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি,অতিরিক্ত রেগে থাকায় তার ফর্সা মুখোশ্রি লাল হয়ে গেছে।
রোজও বা কম কিসে,সে পরেছে এ্যাশ কালার ব্লেজার,আর কফি কালার টিশার্ট।চুলগুলো গোছানো,হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি। সানগ্লাস হাতে নিয়ে আছে।
নিমু আরিয়া ওদের কাছে পৌঁছে গেলো। রোজ নিমুর সাথে কথা বলছে আর আরিয়া কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে,রোজ নিমু ইশারা দিচ্ছে আয়মানের কাছে যাওয়ার জন্য কিন্তু আরিয়া ভয়ে যেতে পারছেনা।আয়মান ফোনে কাউকে ইংরেজিতে গালিগালাজ করছে,চেচিয়ে কথা বলছে।
নিমু আরিয়ার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাতেই আরিয়া একটু সাহস সঞ্চয় করে আয়মানের দিকে ধীর পায়ে এগোতে লাগলো।
— এরকম কচ্ছপের গতিতে গেলে কস্মিনকালেও পৌঁছাতে পারবিনা,আসার আগেওতো বললি এই করবি সেই করবি এখন এরকম করছিস কেন। (নিমু বিরক্ত হয়ে)
— উহুম উহুম,ম্যাডাম।আপনার ওনাকে নিয়ে আসতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে,আমার পরিশ্রম মাটি করবেননা প্লিজ।যান স্যার এর কাছে (রোজ মুচকি হেসে)
আয়মান উল্টো দিকে ঘুরে আছে, তাই পেছনে কি হচ্ছে কারা আছে দেখেনি এখনো। আরিয়া শুকনো কিছু ঢোক গিলে ধীরেধীরে এগোচ্ছে, আয়মানের কাছাকাছি যেতেই পায়ের কাছে ইট বেধে পড়ে গেলো আয়মানের পিঠের ওপর,ভয়ে আয়মানকে শক্ত করে ধরলো আড়িয়া।
হঠাৎ পেছনে থেকে কেউ এভাবে ঝাপটে ধরায় আয়মান চমকে+রেগে পেছনে ঘুরে মানুষটির বাহু ধরে টেনে নিজের থেকে সরালো।
— ডাফা.. (আরিয়াকে দেখেই) আরিয়া তুমি (অবাক হয়ে)
আরিয়া চোখমুখ খিচে দাড়িয়ে আছে।
— আই কল ইউ লেটার (টুটটুটটুট)
আরিয়া,আর ইউ ওকে।কি হয়েছে বলো,কেউ পিছু নিয়েছে?? দেখিয়ে দাও,আমি তাকে দেখে নিব (চিন্তিত হয়ে আরিয়াকে জড়িয়ে ধরে)
আরিয়া চুপ হয়ে আছে,আয়মানের টেনশন হচ্ছে খুব।
রোজ আর নিমু মুচকি হাসছে এদের কাহিনি দেখে।
— ভাইয়া,আরু উষ্টা খেয়ে পরেছে।কেউ ওর পিছু নেয়নি,হাইপার হবেননা প্লিজ (নিমু হাসতে হাসতে)
আয়মান যেন এতক্ষণে স্বস্তি পেলো।
— এই মেয়ে,যেখানে যাও যা-ই করো একটা না একটা কাহিনি বাধাবেই।দেখেশুনে চলতে পারোনা (ধমক দিয়ে)
আরিয়া মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে….
To be continue…
((কেমন হচ্ছে জানাবেন,অনেক ব্যস্ততার মধ্যে লিখিতো
রিচেক করিনি,ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন))