Different Love পার্ট ১০

0
1660

Story:- #Different_Love
Writer:- গল্পছোঁয়া
Part:- 10

আরাফাত ওকে অঙ্কে,ইংলিশে হেল্প করে যতটা পসিবল।
কলেজ অডিটোরিয়ামে ডাকা হয়েছে সমস্ত স্টুডেন্টসদের,আরিয়া,আরাফাত,নিমুও উপস্থিত হয়েছে।
অ্যানাউসড করা হলো,নেক্সট উইকে সিলেট ট্যিউরে নিয়ে যাওয়া হবে ফার্স্ট & সেকেন্ড ইয়ারের স্টুডেন্টদের।
নিমু,আরিয়া তো ভীষণ এক্সাইটেড। ওদের অনেক দিনের ইচ্ছে সিলেটের জাফলং এ যাওয়ার,কাছে থেকে বাংলাদেশ ভারতের বর্ডার দেখবার।ওরা খুশি মনে নিজেদের নাম লিখিয়ে দিয়ে হোস্টেলে এ ব্যাক করলো।আরাফাতও যাবে।

রাতের বেলায় এশার নামাজ ও ডিনার শেষে আরিয়া আর নিমু বেডে গিয়ে শুয়ে পড়লো।দুজনেরই উদ্দেশ্য বাড়িতে কল করে পারমিশন ও টাকা নেওয়ার।

আরিয়া ওর আব্বুকে কল দিয়ে সিলেট ট্যিউরে যাওয়ার কথা বলতেই খেলো এক ধমক।এতদূরে মেয়েকে কিছুতেই যেতে দিবেননা তিনি,যদি কোনো বিপদআপদ হয় তখন কি হবে।

— আব্বু,ওখানে যাওয়া বাধ্যতামূলক।
যেতেই হবে।

— কিন্তু এভাবে একা,নাহ্ যাওয়া যাবেনা।

— আব্বু প্লিজ,আমি এখন যথেষ্ট বড় হয়েছি।আর আমি তো একা যাচ্ছি না,আমাদের ডিপার্টমেন্টের সবাই যাবে প্লাস টিচাররাও তো আছে। আমাদের পুরো রেসপনসেবলিটি তাদের ওপর।
আচ্ছা ঠিকআছে,তুমি প্রিন্সিপাল স্যার কে কল দিয়ে কথা বলে নাও।

নিমুও বাড়িতে কল করে সেইম কথাই বলেছে।
নিমু ও আরিয়ার আব্বু কলেজ প্রিন্সিপালের সাথে কথা বলে সবটা ঠিকঠাক করে নিলো।মানে ওরা ট্যিউরে যাচ্ছে??
৭দিনের দিন,বাসের মধ্যে।
পাশাপাশি সিটে বসেছে আরিয়া আর নিমু।
আরিয়া কানে এয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছে, এয়ারফোনের একটা তার আরিয়ার কানে অন্যটা নিমুর কানে।নেহা কক্করের গান শুনছে দুজন।
আরিয়ার আট নিমুর বাসা থেকে ট্যিউরের জন্য বিকাশে ২০০০টাকা পাঠিয়ে দিয়েছে,কমবেশি করে এর মধ্যেই খরচ করতে হবে।
সিলেট পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত ৮টা বেজে গেছে, হোস্টেল আগে থেকেই বুক করা ছিল।
এক রুমে ২জন করে, সবাই যারযার রুমে ফ্রেশ হয়ে নিলো।
হোস্টেলের নিচেই রেস্টুরেন্ট,নাম “ভর্তা বাজার”
এই হোটেলের বিশেষত্ব হলো,বিভিন্ন রকমের ভর্তা পাওয়া যায়। এমন কিছুই নেই যেটার ভর্তা করেনি,এখানকার মেইন রেসিপিই হলো ভর্তা। ভাতের সঙ্গে ভর্তা দেয় ওরা।
খাওয়াদাওয়া শেষে সবাই আবার রুমে গিয়ে সুয়ে পড়লো, কাল সকালে উঠে জাফলং এ যাবে ওরা।


সকাল ৭ঃ৩০ টার দিকে বাস ছেড়ে দিলো,রওয়ানা হলো সবাই জাফলং এর উদ্দেশ্যে।
নিমু আরিয়া তো ভীষণ এক্সাইটেড, নিমু আরও বেশি। ওকে অনেক খুশি দেখাচ্ছে, মনে হচ্ছে যেন হারিয়ে যাওয়া কিছু ফিরে পেতে চলেছে, এতোটা এক্সাইটমেন্ট ও খুশি সে।আরাফাত হিমুর সাথে ফোনে কথা বলছে।
প্রায় ১ঘন্টা পরে সবাই পৌঁছালো জাফলং এ।আরিয়ার মাথায় অনেক শয়তানি বুদ্ধি ঘুরছে।

— নিমকি সোনা, আজ করবোই কিন্তু।
মনে আছে তো সব??

— হুম,ওপারে যাবোই?

— কিরে কোই যাবে তোমরা, আমাকেও বলো (আরাফাত)

— কাউকে বলবিনা তো,প্রমিস মি।

— ওকে প্রমিস।

— নিমু আর আমি মিলে প্ল্যানিং করেছি, বর্ডার ক্রস করবো লুকিয়ে। ওইদেখ, ওপারে ওই চা-স্টল আছেনা।ওইটা তো ইন্ডিয়ার মধ্যে পরে,ওইখানে যাব। (আরিয়া শয়তানি হাসি দিয়ে)

— ধরা পড়লে জেলে নিয়ে যাবে নয়তো ক্রস ফায়ার। মরতে চাও নাকি

— হোয়াট এভার।মরলে মরবো,নো প্রবলেম।
রিস্ক তো নেওয়াই যায়,আরিয়া কিছুতে ভয় পায়না।

নিমু এতক্ষণ কলে রোজের সাথে কথা বলছিলো,এবার আরিয়ার পাশে এসে দাঁড়ালো।

— নিমু ওইদিকটা চল,আশেপাশে কেউ নেই।সুযোগ বুঝে বর্ডার ক্রস করবো,চল বইন।

— বইন আমি যাবোনা,রোজ বারণ করেছে।

— আরে ইয়ার,রোজ কি এখানে দেখতে আসবে নাকি,চলতো।

আরিয়া নিমুর হাত ধরে টেনে বর্ডার দড়ির কাছে চলে গেলো।
জাফলং ০ পয়েন্টে বর্ডার টা দড়ি দিয়ে ঘেরা,দড়ির নিচ দিয়ে ওপার যেতে পারলেই ইন্ডিয়া। এইজায়গা টাতে high security দেওয়া নেই। আরাফাতও কিছুটা সাহস নিয়ে আরিয়া আর নিমুর পেছনে দাঁড়ালো।
আশেপাশে দেখে নিলো কেউ ওদের দিকে তাকিয়ে আছে কি-না, না নেই।
যেই আরিয়া দড়ি উঁচু করতে যাবে তখনই এক লোক এসে বললো..

— তোমরা এটা কি করছো

— না মানে, আআমরাআ তো চা খেতে যাচ্ছিলাম। ওইযে চা-স্টল দেখছেননা। (আরাফাত)

— চা-স্টল তো এদিকেও আছে। ওপারে কেন যাচ্ছো।ওইটা ইন্ডিয়ার মধ্যে পরে, ভিসা ছাড়া ওপার গেলে জেলে নিয়ে যাবে।

— সরি আমরা বুঝতে পারিনি, থেঙ্কু (আরিয়া)

লোকটা আরও কিছু পরামর্শ দিয়ে চলে গেলো, যেগুলো আরিয়া এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে বের করে দিয়েছে। আরাফাত বারবার না করছে কিন্তু কে শুনে কার কথা। আরিয়া ওপারে যাবেই যাবে,ওই দোকানের চা খেয়েই ছারবে।
নিমু নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে, ভয় পাচ্ছে ও।

— এই শোন নিমকি,তোর রোজ এখানে নেই বুঝলি।ভয় পাওয়া বাদ দিয়ে চল

— আরে আরু রোজ আ..

আরিয়া কিছু না শুনে নিমুর হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো।নিমুর হাত ছেড়ে এক হাত দিয়ে আবার দড়ি উঠিয়ে পার হতে যাবে তখনই কেউ একজন আরিয়ার অন্য হাত ধরে টান দিলো,আকস্মিকতায় আরিয়া হুমরি খেয়ে মানুষটির বুকে গিয়ে পড়লো।
হঠাৎ কি হলো কিছুই বুঝলোনা আরিয়া,হুস আসতেই বুঝতে পারলো সে কারোর উদাম বুকে,তৎক্ষনাৎ নিজেকে ছাড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো কিন্তু মানুষটি তাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরছে।

— আরে আজব তো কে আপনি,এভাবে আমাকে ধরে আছেন কেন।ছাড়ুন বলছি,এই শুনুন মেয়ে দেখলেই জড়াজড়ি করতে ইচ্ছে করে নাকি।ছাড়ুন আমায়,আরে আজব তো কি ধ… (মাথা তুলে লোকটা কে দেখেই) আপনিইই?? (অবাক হয়ে)

আরিয়া তাকিয়ে দেখে আয়মান ক্লান্ত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।

— এই মেয়ে, পাগল তুমি??
ইউ ব্লাডি ফুল,জেচে বিপদ ডেকে আনতে ভালো লাগে তাইনা।যেখানে তুমি সেখানেই একটা নাতে একটা ব্লান্ডার করবে,হুয়াই??
স্বাভাবিক ভাবে চলতে পারোনা, আজ আমি রাইট টাইমে না আসলে কি হতো বলো??

— আআমি ননা মমানে, আআপনি এএখানে ককেন

— শাট আপ, তুমি এটা কি করছিলে বলো।
ওপারে যাওয়ার চেষ্টা করছিলে,এনি আইডিয়া কি হতে পারতো??

আয়মান প্রচন্ড রেগে আছে, এই প্রথম আয়মান কে এরকম রাগতে দেখলো আরিয়া।ভয়ে কাচুমাচু হয়ে আছে সে।

— ভাইয়া,আমি আরিয়া কে বারবার বারন করছিলাম বাট ও শোনেনি। ওপারের ওই চা-স্টল থেকে চা খাবে জিদ ধরে বসে আছে।(আরাফাত)

— এসো আমার সাথে সবাই

আয়মান আরিয়ার হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে, পেছন পেছনে নিমু আর আরাফাত ও যাচ্ছে। আয়মান একটা টেন্টের ভেতরে নিয়ে গেলো আরিয়াকে,ওখানে রোজ,রাহুলও আছে। নিমু তো রোজ কে দেখে খুশিতে বাকবাকুম।রাহুল চেয়ার এগিয়ে দিলো,সবাই চেয়ারে বসে পড়লো।
রাহুল আয়মানের দিকে একটা বোতল এগিয়ে দিলো..

— স্যার, নিন।

আয়মান বোতলটা নিয়ে চোখে মুখে পানির ছেটা দিয়ে কয়েক ঢোক পানি পান করলো তারপর টিস্যু দিয়ে মুখের পানি মুছে গায়ে একটা টিশার্ট পড়ে নিলো।

— আরিয়া চলো,আজ কতো চা খেতে পারো দেখবো আমি।

— আমি খাবোনা,ওই এমনই আমি আসলে ওপারে যেতে…

— ওপারে যেতে চাও তাইতো,ওকে চলো।

আয়মান আরিয়ার হাত ধরে বেড়িয়ে গেলো, বর্ডারের কাছে গিয়ে বর্ডারের সিকিউরিটি গার্ডের কাছে গেলো।
গার্ড স্যালুট দিলো।

— can I help you sir??

— yes (আয়মান কিছু একটা বললো যেটা আরিয়ার বোধগম্য হলোনা)

আরিয়া শুধু এটুকু বুঝতে পারলো যে আয়মান ওকে নিজের ওয়াইফ বলে পরিচয় দিয়েছে।

— চলো এবার।

আয়মান আরিয়ার হাত ধরে বর্ডার ক্রস করে সেই চা-স্টলে নিয়ে গেলো।
একটা টেবিলে গিয়ে চেয়ার টেনে বসলো,আরিয়ার অপজিটে।
আরিয়ার সামনে ৭কাপ চা,আরিয়া চোখমুখ কুঁচকে একবার আয়মান আর একবার চায়ের কাপগুলোর দিকে তাকাচ্ছে।
আয়মান চুপচাপ ফোন স্ক্রল করছে।

— নাও খাও,সবগুলো কাপ শেষ করবে।নাও স্টার্ট

— সরি,আমি আর কখনও এমন করবোনা।

— চুপচাপ খাও

— আপনি এতো ফোর্স করছেন কেন হুম,আপনিতো আমাকে ওয়াইফ হিসেবে মানেননা তাহলে আমার ওপর ফোর্স করছেন কোন অধিকারে (সাহস জুগিয়ে বলে ফেললো আরিয়া)

কথাটা শুনে আয়মান একটু ইতস্তত হলো বটে,বাট ক্রমেই নিজেকে সামলে নিলো।

— You know what,who I’m??

— (দুদিকে মাথা ঝাকালো আরিয়া,যার অর্থ না)

— আমি সিক্রেট অফিসার,police এ আছি…..

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here