#উত্তরণ
পর্ব_৪৫
দ্রুত একটা নম্বর ডায়াল করে উজান۔۔۔
উজান: মি: সংকল্প সেন?
সংকল্প : বলো উজান۔۔
উজান: Need your help.. একজন কে নজরে রাখতে হবে. এয়ারপোর্টে আমাদের লোক আছে কিন্তু বাইরে তোমার লোক চাই কারণ ও আমাদের অনেককেই চেনে.
সংকল্প: নাম আর ফোটো পাঠিয়ে দাও, বাকিটা আমি দেখে নেবো.
উজান: একটা সিঙ্গেল মুভমেন্টও যেন বাদ না যায়. ওর বাড়িতে যদি হাউসহোল্ড হেল্পার থাকে তার জায়গায় তোমার লোক ইমপ্লান্ট করো. But all those persons has to be very efficient. কারণ যদি ধরে ফেলে তাহলে কিন্তু ও বিপদজ্জনক হয়ে উঠবে.
সংকল্প: Male or female?
উজান: Female..
সংকল্প: Dont worry… আমি সেইরকম লোকই ইমপ্লান্ট করবো. কাজ কতদূর??
উজান: অনেকটাই হয়ে গেছে. কাল আমি বেরিয়ে যাবো۔۔
সংকল্প: আর মিস মিত্র?
উজান: উনি আপাতত ওনার ফ্ল্যাটে থাকবেন. ওনাকে কাল পৌঁছে দেবে আমার লোক. তুমি ওনাকেও হাই এলার্ট সিকিউরিটি দিও.
সংকল্প: সে তুমি চিন্তা করোনা. আচ্ছা উনি জানেন আমি তোমার সাথে কানেক্টেড?
উজান: না۔۔۔ সময় মতো জানিয়ে দেব. এখন রাখছি. Thanks again সংকল্প দা۔۔
ফোন রেখে উজান সংকল্পকে সব ডিটেলস পাঠিয়ে দিয়ে অফিসের দিকে রওনা দেয়۔۔
অফিসে সবাই উপস্থিত. উজান পুরো প্ল্যানটা বোর্ডে এঁকে বুঝিয়ে দিচ্ছে ওর টিমকে۔۔
উজান: টোটাল সাতটা টিম হবে. প্রত্যেক টিমকে একটা লোকেশন এনকাউন্টার করতে হবে. শুধু আমার টিম দুটো লোকেশনকে ক্যাটার করবে۔۔۔۔۔মাদুরাই আর লখনৌ. কারন এই দুটো জায়গায় ছোট্ট একটা ডিসপিউট আছে যেটা অলরেডি আমরা জেনেছি. যদিও হাই চান্স সেরকম কিছু না হওয়ার, তাও কোনো ঝুঁকি নেবার মতো জায়গায় আমরা নেই. আমরা যে লোকেশন গুলো ইডেন্টিফাই করতে পেরেছি সেগুলো টেররিস্টরা বেস হিসেবে ব্যবহার করবে বলেই আমার বিশ্বাস. কিন্তু আমাদের মেন লোকেশন খুঁজতে হতে পারে যদি ওরা অন্যত্র বোম্ব ইমপ্লান্ট করে থাকে. যদিও মনে হয়না ওরা আগে থেকে ইমপ্লান্ট করার রিস্ক নেবে এতে ওদের প্ল্যান ফেল হবার চান্স যথেষ্ট হাই۔۔
আরোহী: স্যার আমরা সাত ভাগে ভাগ হলে প্রত্যেক টিমে মেম্বার্স কম হয়ে যাবে. সেক্ষেত্রে যদি আমরা এডিশনাল সাপোর্ট না পাই আমাদের প্রব্লেম ফেস করতে হতে পারে, কারণ ওরা সংখ্যায় খুব কম হবেনা۔۔
উজান: Dont worry… হেডকোয়াটার ফোর্স পাঠাবে. আমরা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছনোর পর ওরা আমাদের জয়েন করবে. লোকাল পুলিশ ফোর্সের সাহায্যও পাবো যদি দরকার পরে. তাছাড়া হার্দিকের টিম আমাদের সাথে এই অপারেশনে কাজ করবে. ওরা অনেকটাই জানে এটার ব্যাপারে. হার্দিকের পর অফিসার ইকবাল এখন টিম ইনচার্জ. উনি ওনার টিম নিয়ে আমাদের আজই জয়েন করবেন.
মুরুগেশ: অফিসার ইকবাল۔۔۔۔۔মানে স্নাইপার এক্সপার্ট যিনি?
উজান: Yes…He will join soon..
সারাদিন প্ল্যান মতো কাজ করতে করতেই কেটে যায়. সন্ধ্যের সময় অফিসার ইকবাল ওনার টিম নিয়ে উপস্থিত হন. ওনাকেও পুরো প্ল্যান ব্রিফ করে দেয় উজান. সবাই তৈরী শেষ লড়াই এর জন্য۔۔
ভোর রাত্রে উজান আসে হিয়ার রুমে, আর কিছুক্ষনের মধ্যেই ওদের বেরোতে হবে. যাবার আগে একবার হিয়াকে দেখে যেতে চায়, কে জানে আর দেখা হবে কিনা. হিয়া প্রতিদিনের মতো আজও অপেক্ষারত, ওর প্রিয়তম আজ অনেক বড় লড়াই এ যাচ্ছে. উজান রুমে আসতেই হিয়া হেসে বলে۔۔
হিয়া: সব তৈরী?
উজান: হুম۔۔
হিয়া: কখন বেরোবেন?
উজান: আর আধঘণ্টা পর۔۔
হিয়া: ও۔۔
উজান: ভয় পাচ্ছেন?
হিয়া: ভয় কেন পাবো? ভয় তো পাবে টেরোরিস্টরা (হাসে হিয়া)
উজান: হুম۔۔۔۔۔বুঝলাম. আসলে আপনার চোখ ছলছল করছে তো۔۔۔۔۔۔তাই বললাম۔۔
হিয়া: আগে হলে ভয় পেতাম, কিন্তু নীলিমাদি কে দেখে শিখলাম যে আমাদের ভয় পেতে নেই, কাঁদতে নেই. আমরা ভয় পেলে আপনারা সাহস পাবেন কি করে?
উজান একটু এগিয়ে আসে হিয়ার কাছে. উজান নিজের হাত রাখে হিয়ার গালে আর রাখামাত্র হিয়ার চোখে এতক্ষন সযত্নে আটকে থাকা জল টুপ্ করে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে. উজান সযত্নে সেটা মুছে দিয়ে বলে۔۔
উজান: আপনার উপর অনেক দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি. সবাইকে দেখে রাখবেন, বিশেষত আমার “ইডিয়ট” টা কে, কারণ উনি আবার একটু বেশি বোঝেন মাঝে মাঝে. কাল আপনাকে আপনার ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেবে আমার লোক. কোনো প্রব্লেম হলে বাবাকে বা সংকল্প সেন কে ফোন করবেন, আর কাউকে না. আপনাকে অন্য ফোন, অন্য সিম দেওয়া হবে, ওটাই ব্যবহার করবেন. কোনো পরিচিত বা অপরিচিতকে ফোন করবেন না. সংকল্প সেন আমার পরিচিত. উনি আপনার ব্যাপারে সব জানেন. আপনি সিকিউরিটির মধ্যে থাকবেন۔۔۔
হিয়া অবাক হয়ে প্রশ্ন করে: ACP সংকল্প সেন? মানে যিনি এই কেসটাই আমার সাথে কমিউনিকেট করছিলেন?
উজান: হ্যাঁ۔۔۔ উনি আমার পরিচিত. আমার কথা অনুযায়ীই উনি আপনার সাথে কমিউনিকেট করতেন۔۔
হিয়া: বেশ ঠিক আছে, আমি আপনার সব কথা শুনবো কিন্তু মা আর ঠাম্মিকেও কল করবো. আচ্ছা মা এলে কোথায় উঠবেন?
হিয়া লক্ষ্য করে না কখন বাসবী ওর কাছে কাকিমা থেকে মা হয়ে গেছে, কিন্তু উজানের কানে কিছু এড়ায় না. হেসে বলে۔۔
উজান: আপনি ডাকছেন মাকে, আপনি ওনার থাকার ব্যবস্থা করবেন. চাইলে আপনার কাছেই রাখতে পারেন. মা আপনার কাছে থাকলে আপনারা দুজনেই ভালো থাকবেন. তবে মায়ের সামনে আমার কাজ সম্পর্কে কিচ্ছু বলবেন না. কাল মায়ের সাথে কথা হয়েছে আমার, বলেছি ট্রেনিং এ যাচ্ছি কয়েকদিনের জন্য. আর হ্যাঁ, খুব ডেলিকেট ইস্যু, সাবধানে ডিল করবেন. এবার আসি. সাবধানে থাকবেন কেমন?
বিদায়বেলা উপস্থিত. ভেতরে ভেতরে ভাঙছে হিয়া, তাও নিজেকে জোর করে জোড়া লাগিয়ে উজানের সামনে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করছে ও. হিয়া কয়েকমুহূর্ত উজানের চোখে চোখ রাখে, তারপর আলগোছে উজানের বুকে মাথা রাখে. উজানের সাথে সময়ও যেন ওখানেই থমকে দাঁড়ায়. কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে হিয়া বলে۔۔۔۔
হিয়া: তাড়াতাড়ি ফিরবেন. অনেককিছু শোনা বাকি আছে আপনার থেকে۔۔۔۔۔আমি অপেক্ষায় থাকবো۔۔
হিয়ার এই অকস্মাৎ এতো কাছে আসা উজানের মধ্যে একটা আবেশ তৈরী করে. কিছুক্ষন হিয়াকে বুকের মধ্যে আগলে সেই আবেশেই ভাসতে থাকে ও. বেশ খানিক্ষন পর উজান দুহাতে হিয়ার মুখটা তুলে ধরে হিয়ার কপালে আলতো করে চুম্বন এঁকে দেয়, তারপর আর এক মুহূর্ত দেরি না করে বেরিয়ে যায় হিয়ার রুম থেকে. হিয়া ভালোবাসার প্রথম পরশে সম্পৃক্ত হয়ে, সিক্ত নয়নে উজানের যাওয়ার পথে তাকিয়ে থাকে۔۔۔۔
দেখা যাক উজান কি মিশন শেষ করে ফিরবে হিয়ার কাছে–!
(আজ অনিবার্য কারণ বসত #ভালোবাসার_নীড় পোস্ট করা সম্ভব না–কাল যথাসময়ে পোস্ট করা হবে।আর কপিবাজ পাবলিকদের ঘুম নষ্ট করে দিলাম হয়তো কারণ এখন তো ঘুম থেকে উঠতে হবে কপি করার জন্য???)