অনন্যময়ী সানজিতা_তুল_জান্নাত পর্ব_১৮

0
6631

অনন্যময়ী
সানজিতা_তুল_জান্নাত
পর্ব_১৮

রেহানা বেগম হিমাদ্রী কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে আবেশে তার চোখের জল ছেড়ে দেন। হঠাৎ করে ছেলেকে দেখে তিনি নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি।
ছেলের কপালে তিনি পরম আবেশে ভালোবাসার পরশ এঁকে দেন। হিমাদ্রী তার মায়ের চোখের জল মুছে দিতেই রেহানা বেগম লম্বা হাসি দেন। চোখের কোণায় জলের কণাগুলো চকচক করছে। হিমাদ্রীর কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় বস্তু হলো তার মায়ের এই আনন্দের অশ্রু মেশানো হাসি।

হিমাদ্রী তার মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে হেসে দেয়। তারপর হিমাদ্রী তার মাকে উদ্দেশ্য করে বলে; পাপা কোথায় আম্মু?পাপা কি ঘুমিয়ে পড়েছে?? ভাবি,গুনগুন ওরা কোথায়?

-না রে তোর পাপা তো এই মাত্র ডিনার শেষ করে উপরে গেল। তুই আসবি আগে বলবি না তাহলে একসাথে ডিনার করতাম। গুনগুন কে নিয়ে নিরা বাপের বাড়ি গেছে। কালকে হয়ত আসবে। তুই আসবি জানলে আগেই চলে আসত ওরা।

হ্যা রে আগের বার যখন এসেছিলি বাড়িতে তো আসিস ই নি। তোর উপর কিন্তু আমি খুব রেগে আছি। তুই ঢাকায় আসলি একটা বার বাসায় আসবি না!!কি এমন রাজকার্য করিস যে মায়ে সাথে দেখা করার দুদণ্ড সময় হয় না তোর। বাপ ছেলে হয়েছে একবারে একরকম। কারো কাছে আমার জন্য সময় নেই। কেউ পাত্তাই দেয়না আমাকে। কথাগুলো অভিমানী স্বরে বলে হিমাদ্রীর দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন রেহানা বেগম।

হিমাদ্রী তার মায়ের কথায় তার মাকে আদুরে গলায় বলে; সরি আম্মু!আর এরকম হবে না। লাস্ট টাইম সত্যিই খুব ব্যস্ত ছিলাম। তুমি রাফিকে বলে দেখ।

হিমাদ্রী দুহাত দিয়ে কান ধরে করুণ স্বরে বলে; সরি আম্মু। এবারের মতো মাফ করে দাও আর এরকম হবে না। আমার সোনা আম্মু প্লিজ রাগ করো না।

রেহানা বেগম হিমাদ্রী কে দেখে ফিক করে হেসে দিয়ে বলেন;হয়েছে বাবা এখন তোর ড্রামা বন্ধ কর। প্রত্যেকবার এভাবেই আমার সাথে ড্রামা করিস আর আমার রাগ ফুড়ুৎ করে উধাও হয়ে যায়। তোদের এসব ড্রামা দেখতে দেখতে আমার চুল পেকে গেছে।

-উফ আম্মু।কি যে বলো না। আই লাভ ইউ আম্মু। এত্তোগুলা ভালোবাসি তোমাকে। বলেই হিমাদ্রী তার মায়ের গালে টুপ করে চুমু খায়।

রেহানা বেগম শব্দ করে হেসে দিয়ে বলে; ঠিক আছে আর মায়ের রাগ ভাঙাতে হবে না। তো তুই যে বললি রাফি এসেছে। কোথায় আরেকটা বাদড়??

হিমাদ্রী পেছন ফিরে তাকিয়ে রাফিকে দেখতে পেয়ে তার মা কে; আমার সাথেই তো ছিল। মনে হয় গাড়ি পার্ক করছে।

হিমাদ্রীর কথা শেষ হতে না হতেই পিছন থেকে রাফির আওয়াজ ভেসে আসে।

রাফি বাড়িতে ঢুকতে ঢুকতে রেহানা বেগম কে সালাম দেয়। রেহানা বেগম সালামের জবাব দিয়ে রাফিকে উদ্দেশ্য করে বলে;আমার ছেলেটা তো বাড়ির রাস্তা ভুলেই গেছে তো জনাব আপনিও কি এ বাড়ির রাস্তা ভুলে গেছেন নাকি? আপনার যে ছায়াও দেখা যায় না আর। কি ব্যাপার বল তো। কাজ করতে করতে কি আশেপাশের সব মানুষদের কে ভুলে গেলি নাকি তোরা?

-না না আন্টি। তুমি ভুল বুঝছো। তোমার ছেলেই তো আমাকে এত্তো এত্তো কাজ দেয় বলেই তো আমি শ্বাস নেয়ার পর্যন্ত সময় পাই না। কি যে বলব আন্টি তোমায় তোমার ছেলে আমাকে এতো খাটায়। একটুও দয়া মায়া হয় না। রেহানা বেগমকে অসহায় ভাব দেখিয়ে কথাগুলো বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

রেহানা বেগম ভ্রু কুঁচকে তার দিকে তাকিয়ে থাকে। অপর দিকে রাফির কথা গুলো শুনে হিমাদ্রীর চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। মনে হচ্ছে সে টুপ করে আকাশ থেকে পড়েছে।

দাঁত কটমট করে হিমাদ্রী রাফির দিকে তাকায়। রাফি একটা ক্যাবলা মার্কা হাসি দেয়। হিমাদ্রীর রাগী রাগী চেহারা দেখে রাফি কিছুটা ভড়কে গেলেও সে জানে রেহানা বেগমের সাথে সে তাকে কিছুই করতে পারবে না। এরপর কি করবে তা ভাবতেই হিমাদ্রী একটা বড় ঢোক গেলে।

হিমাদ্রী রাগী কণ্ঠে রাফি কে উদ্দেশ্য করে বলে;
ওই তুই কি বলছিস এসব? আমি তোকে দিয়ে কোথায় কাজ করায়? তুই নিজেই তো সিব সময় খালি খালি আমাক তাড়া দিস। আম্মুর সামনে নিজে হিরো সেজে আমাকে ভিলেন বানাচ্ছিস?

রেহানা বেগম দুজনকে থামিয়ে দিয়ে বলে; চুপ একদম চুপ তোদের দুটো কেই আমি জন্মের পর থেকে চিনি। কে কেমন আমি খুব ভালো করেই জানি। আমার সামনে ভালো সাজার চেষ্টা করে লাভ নাই। তো এখম আর কথা না বাড়িয়ে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আয়। আমি তোদের ডিনার টা সার্ভ করে দিচ্ছি।

হিমাদ্রী আর কোন কথা না বাড়িয়ে উপরে চলে যায়। রাফিও তার পিছনে পিছনে উপরে চলে যায়। বিশাল ঢোক গিলে সে হিমাদ্রীর রুমে প্রবেশ করে। রাফি রুমে প্রবেশ করার সাথে সাথে হিমাদ্রী তার উপর ঝাপিয়ে পড়ে। রাফিকে বিছানায় ফেলে ধুপ ধাপ মারতে শুরু করে। রাফি কোন মতে হিমাদ্রীকে শান্ত করে বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে শ্বাস নেয়।

হাঁপাতে হাঁপাতে হিমাদ্রী কে বলে; ভাই রে ভাই। আজ তো আমাকে মেরেই দিতি ভাই তুই। আমার বউ তো বিয়ের আগেই বিধবা হয়ে যেত। আমার বাচ্চা গুলো জন্মানোর আগেই এতিম হয়ে যেত। মাফ কর ভাই এবারের মতো।

-শালা হারামি তোকে আমি ছাড়ব না। তুই আম্মুর সামনে আমাকে কিভাবে কেস খাওয়ালি। তোকে দিয়ে আমি কাজ করায় তোকে শুধু শুধু খাটায় আমি। তোকে তো আজ উগান্ডা পাঠাব। (হিমাদ্রী)

-সরি ভাই। এই দেখ কান ধরছি। এবারের মতো মাফ করে দে।(রাফি)

রাফির সাথে আরো কিছুক্ষণ ঝগড়া করে হিমাদ্রী ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে।

একটু পরেই তারা দুজনেই নিচে নেমে আসে। রেহানা বেগম ডাইনিং টেবিলে তাদের জন্য খাবার পরিবেশন করে দেন। রেহানা বেগমের সাথে টুকটাক কথা বলে রাফি ও হিমাদ্রী ডিনার সেরে নেয়।

খাওয়া শেষ করে হিমাদ্রী তার পাপার সাথে দেখা করে রুমে চলে যায়। রাফি বাসায় যেতে চাইলে সে জোর করে রাফিকে তার সাথে থেকে যেতে বলে। রাফিও হিমাদ্রীর কথায় রাজি হয়ে যায়।

রাতে রাফি আর হিমাদ্রী একসাথে ঘুমায়। এ বাড়িয়ে হিমাদ্রী এর আগেও এসেছে। মূলত হিমাদ্রীর জন্মের সময় রেহানা বেগমের পাশের কেবিনেই ছিলেন রাফির মা রুনা বেগম। রুনা বেগমের সাথে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সখ্যতা গড়ে ওঠে রেহানা বেগমের। রাফি ও হিমাদ্রী একই ফাইন জন্মগ্রহণ করে। রাফির জন্ম হয়েছিল সকালে আর হিমাদ্রী বিকেলে।

আড়াই বাজতে চলেছে। হিমাদ্রীর চোখে ঘুম নেই। পাশেই রাফি বড় বড় শ্বাস ফেলে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। হিমাদ্রী তার মায়াবতীর ভাবনায় বিভোর হয়ে আছে। নিজের অজান্তেই সে বিড় বিড় করে বলে; আমি চলে এসেছি মায়াবতী। তোমাকে আমার রাজ্যের রাণী করে নিয়ে যাব। হিমাদ্রীর ঠোঁটের কোনায় মুচকি হাসি ফুটে ওঠে। ভাবনার জগতে হারিয়ে যায় সে। ভোর বেলার দিকে তার দুচোখ লেগে যায়।

ফজরের আজানের ধ্বনি কানে ভেসে আসতেই অনি জাগা পেয়ে যায়। নিজের দুহাতের মধ্যে আরো একটি হাতের অস্তিত্ব অনুভব করে আনি। চোখ মেলে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে সে দুহাত দিয়ে রিশাদের বাম হাতটা আঁকড়ে ধরে আছে। যেন ছেড়ে দিলেই রিশাদকে হারিয়ে ফেলবে।

অনি এ ধরনের কাজে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। রিশাদের হাতটা ছেড়ে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে বসে পড়ে সে। রিশাদ কিছুটা নড়েচড়ে ওঠে। হাত দিয়ে দুচোখ কচলে ভালো ভাবে তাকায় অনি। রিশাদ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। রিশাদকে ঘুমোতে দেখে সে কিছুটা স্বস্তি পায় তবে পুরোপুরি ভাবে অস্বস্তি ভাবটা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।

রিশাদের দিকে তাকিয়ে অনির চোখ আটকে যায়। এলোমেলো উষ্কখুষ্ক চুলগুলো কপালের সামনে এসে ভিড় জমিয়েছে।গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি।ঠোঁট দুটো বেশ শুষ্ক মনে হচ্ছে। ব্যান্ডেজে আবৃত ডান হাতটা বুকের উপর রেখে ঘুমাচ্ছে। ঘুমন্ত চেহারায় তাকে বেশ প্রশান্ত মনে হচ্ছে। মুখের চাহনি মলিন শান্ত নীরব মমে হচ্ছে অনির কাছে। রিশাদকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে অনি। রিশাদের মলিন চেহারা অনিকে ভাবাচ্ছে। সে মনে মনে ভাবছে রিশাদ কি কোন দিনও স্বাভাবিক হতে পারবে না?? তার মনে বিশাল প্রশ্ন জাগে।

কিছুক্ষণ পর অনি উঠে ওয়াশরুম থেকে অযু করে বেরিয়ে আসে। নামাজটা শেষ করে সে কিছুক্ষণ বিছানায় বসে কাটিয়ে দেয়। এই মূহুর্তে তার মন চাচ্ছে বাইরে গিয়ে সূর্যোদয় উপভোগ করতে। কিছু একটা ভেবে সে নিজের ইচ্ছেটাকে আর বাস্তবায়িত করে না। সে বিছানায় গা এলিয়ে দেয়।

প্রায় সাতটা বেজে গেছে। রিশাদ ঘুম ঘুম চোখে চোখ মেলায়। ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকাতেই অনিকে দেখতে পায়। বিছানার কোণায় গুটিসুটি মেরে ডান হাতের তালু মাথার নিচে রেখে ডান কাঁধে শুয়ে আছে।

রিশাদ অনিকে দেখে মুচকি হাসি দেয়। অনির দিকে তাকাতেই তার রাতের কথা মনে পড়ে যায়। মাঝ রাতে হাতে টান পড়ায় রিশাদের ঘুম ভেঙে যায়। হাতের উপর ভারী কিছু অনুভব করে রিশাদ। হাতের দিকে তাকাতেই তার চোখে পড়ে অনি তার হাতটা চেপে ধরে বেখেয়ালি ভাবে ঘুমাচ্ছে। রিশাদ বিড় বিড় করে বলে; দিনের বেলা তো একবারের জন্যও সে আমার ধারে কাছে ঘেষে না এখন দেখো ঘুমের ঘরে আমার হাতটাকেই বালিশ ভেবে বসে আছে।এমন ভাবে ধরে আছে যেন ছেড়ে দিলেই আমি হারিয়ে যাব।

রিশাদ হাত সরাতে নিলেই অনি নড়ে চড়ে ওঠে। অনির চোখমুখ কুঁচকে যায়। রিশাদ হাতটা আবার যথাস্থানে রেখে অনির দিকে তাকিয়ে থাকে। ডিম লাইটের আবছা আলোয় অনিকে মারাত্মক সুন্দর লাগছে। তার উপচে পড়া সৌন্দর্যে রিশাদের চোখ বার বার আটকে যাছে।

অনির গালের পাশের তিলটা রিশাদকে প্রচণ্ড ভাবে আকৃষ্ট করছে। রিশাদের মনে অস্থিরতা প্রবলভাবে জেকে বসেছে। এই অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে সে দুচোখ বুজে ফেলে। চোখ বুঝতেই অনির ঘুমন্ত চেহারাটা রিশাদের স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে। রিশাদ চরম ভাবে বিরক্ত হচ্ছে। তার মন মস্তিষ্কের মধ্যে বিরাট যুদ্ধ চলছে। কিছু সময় এভাবেই পার করে রিশাদ। ক্রমেই পুরনো অতীত গুলো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার পূর্বেই রিশাদের তন্দ্রাভাব চলে আসে।

অনি ঘুম থেকে জাগা পেয়ে রিশাদকে তার দিকে একধ্যানে তাকিয়ে মুচকি হেসে যাচ্ছে। অনি কিছুটা ছোখ দুটো কুঞ্চিত করে রিশাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। রিশাদের সেদিকে কোন খেয়াল নেই। অনি কিছুকাল পর রিশাদের চোখের সামনে হাত নাড়ায়। রিশাদ থতমত খেয়ে যায়। দ্রুত গতিতে রিশাদ চোখ ফিরিয়ে নিয়ে উঠে বসার চেষ্টা করতেই ব্যথা পায়। ব্যথাতুর কণ্ঠে রিশাদ বলে ওঠে;আহ!!!

অনি লাফ দিয়ে উঠে রিশাদকে আগলে ধরার চেষ্টা করে। বিচলিত কণ্ঠে রিশাদকে বলে; কি হলো আপনার? কোথায় ব্যথা পেয়েছেন? দেখি কোথায় লেগেছে আপনার??

অনির বিচলিত চিন্তিত কণ্ঠ শুনে রিশাদের মনে হালকা ভালো লাগা কাজ করে। যেন সে চাইছিল অনি তার জন্য চিন্তিত হোক। তবে তার এমন অবান্তর ইচ্ছার কোন কারণ সে খুঁজে পাচ্ছে না।

অনি রিশাদের কোন জবাব পায় না। রিশাদকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে সে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকে। রিশাদ অনির দিকে তাকাতেই অনি বলে;
আপনার কি কোথাও লেগেছে? আপনি একা কেন উঠতে গেলেন? আমি তো ছিলাম এখানেই? আর আপনি তখন ওভাবে তাকিয়ে কি দেখছিলেন?

রিশাদ অনির প্রশ্ন শুনে কোন উত্তর খুঁজে পায়না। রিশাদ অনিকে বলে; না কোথাও লাগে নি। আমি ঠিক আছি। আমাকে একটু ওয়াশরুমে নিয়ে যাবেন প্লিজ?? অনি রিশাদের কথায় সম্মতি জানিয়ে তাকে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়।

অনেকক্ষণ যাবত রাফি হিমাদ্রিকে ডেকে যাচ্ছে তার কোন হেলদোল নেই। হিমাদ্রী বেঘোরে ঘুমোচ্ছে মাঝে মাঝে ঘুমের ঘোরে রাফিকে ধমক দিচ্ছে। রাফি হাল ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে। হিমাদ্রীকে পুনরায় জাগানোর চেষ্টা করে রাফি। এবারেও সে ব্যর্থ হয়ে সে নিচে চলে যায়।

রেহানা বেগমের সাথে দেখা করে রাফি কাজ আছে বলে বেরিয়ে যায়। রেহানা বেগম তাকে নাস্তা করতে বললে সে কোন মতে একটা স্যান্ডউইচ খেয়ে বেরিয়ে যায়। রেহানা বেগম কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

অনি রিশাদকে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ করিয়ে আনিয়ে বিছানায় বসিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ যাবত রিশাদ অনি টুকটাক কথা বলে। অনির মনটা চাচ্ছে বাইরের দিকে যেতে। অজানা সংকোচবোধ তাকে আটকে দিচ্ছে।

রিশাদ অনির দিকে তাকিয়ে তার মনের কথা বোঝার চেষ্টা করছে। কোন কূল কিনারা খুঁজে পায়না সে। হতাশ হয়ে সে অনিকে বলে; রুমে বসে থাকতে খুব বোর লাগছে। চলুন না একটু বাইরের দিক থেকে ঘুরে আসি। বলেই রিশাদ অনির উত্তরের অপেক্ষায় তার দিকে তাকিয়ে থাকে।

রিশাদের কথায় অনি কিছুটা খুশি হয়। তবে সে তা মুখের ভাব ভঙ্গির কোন পরিবর্তন না এনে খুশিটা অপ্রকাশিত রাখে।

অনি রিশাদকে ধরে ধরে রুমের বাইরে নিয়ে যায়। খুব সাবধানে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে। ড্রইং রুম পেরিয়ে দরজা খুলে সে রিশাদকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। শায়লা বেগম তখন রান্নাঘরের দিকে যাচ্ছিলেন। দূর থেকে রিশাদ আর অনিকে এভাবে দেখে মুচকি হাসি দেন। রিশাদ অনি যতক্ষণ না দৃষ্টির বাইরে চলে যায় ততক্ষণ পর্যন্ত শায়লা বেগম হাসি মুখে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকেন। এরপর তিনি রান্নাঘরের দিকে যান।

চলবে…..

আসসালামু আলাইকুম ??

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here