#লাভনীতি
বিথি হাসান-১৭(শেষ)
৪৫.
জীবন বড়ই অদ্ভুত। যার কপালে সুখ থাকে তাকে অফুরন্ত সুখ দেওয়া হয়।আর যার কপাল খারাপ সে যেনো সারাটা জীবন এই খারাপ কপাল নিয়েই কাটায়।বিষয়টা এতোটা সহজ নয়।যতটা লিখা যায়।জীবনের মোরের কাহিনি লিখা খুব কঠিন একটা বিষয়।এবং সহ্য করা এর থেকেও বেশি কঠিনতর।
আফসানার ভাবনা চিন্তার এই হাল দেখে অর্ক খুবই চিন্তায় পরে যায়।প্রেগন্যান্সির লাস্টেজে এসে মানুষ নাকি এমন হাজার রকমের বাজে চিন্তা ধারা নিয়ে থাকে।আফসানা ও এদের মধ্যে পরে গেছে।এখন মেয়েটা কে সাহস দেওয়া ছাড়া কিছুতে ভরসা দেওয়া যাবে না।
—-“চিন্তা করিছনা সানা।জীবন যেমনই হোক জীবন সুন্দর। একবার যার জীবন যায় সে বার বার প্রত্যাশায় থাকে আবার জীবন পাওয়ার।কিন্তু পায় না।জীবন সুন্দর তবে যাপন করতে পারলে।তুই যেমন জীবন চাস সেটা তরই তৈরী করে নিতে হবে।আমার জীবনেই দেখ।আমি যেমন জীবন চেয়েছিলাম।উপরওয়ালা ঠিক তেমন আমাকে প্রথমে দেয়নি।কিন্তু আমি ধৈর্য ধরে ঠিক তেমন করে নিতে পেরেছি।আর এখন দেখ,,,আই’ম হেপি।
নম্রতার কথায় আফসানা একটা মলিন হাসি দেয়।তারপর নম্রতার কোল থেকে আশ্রাফ কে নিজের কোলে নেয়।ছেলেটা দেখতে দেখতে কত বড় হয়ে গেলো।এই তো সেদিন নম্রতা রাগ করে তাদের বাসায় চলে এসেছিলো।তারপর তারপর কত কাহিনি না হলো।নম্রতা পেরেছে আসাদকে নিজের মত করে নিতে।জীবন সাজাতে।সে ও কি এমন একটা জীবন লিড করতে পারবে?জানতে বড়ই ইচ্ছে হয়,
——-“ভাইয়া,,ভাবি তোমার কাছে কখনো মাঝরাতে আইসক্রিম খাওয়ার বায়না করেনি???
নম্রতার কথায় নড়ে চড়ে বসে অর্ক।আরে আসলেই তো অনেক মেয়েরাই প্রেগন্যান্সির সময় নাকি মাঝরাতে এটা সেটা খাওয়ার বায়না করে।কিন্তু কই আফসানা তো কখনো তার কাছে এমন আবদার করেনি।সে অবাক হয়ে আফসানার দিকে তাকায়।
—–“নাহ।ও তো কখনো এমন বায়না করেনি।
—–“আচ্ছা।আমাদের সানা ভাবি কোন খাবারটা বেশি খেয়েছে??
—“আরে তুই তোর ভাইকে কেন জিজ্ঞেস করছিস?ও কি করে বলতে পারবে??(আফসানা)
—–“ভাইকেই জিজ্ঞেস করব।দেখতে হবে না ভালোবাসা আছে কিনা?
নম্রতার কথায় আসাদ এবার গভীর চিন্তায় পরে গেলো।আচ্ছা নম্রতা কি খেয়েছিলো?ও হ্যা মনে পরেছে তার।নম্রতা প্রেগন্যান্সির সময় আলু বেশি খেয়েছে।আসাদ নম্রতার জন্য আলু দ্বারা যত রকমের আইটেম ছিলো সব করে করে খাইয়েছে।বাসায় সেফ পর্যন্ত রেখেছে।
নম্রতাদের বসার রুমে বসে গল্প করছিলো সবাই।মুরুব্বি বাদে।তামিমও আছে এ দলে।বোনের এমন পরিস্থিতিতে যদি পাশে থাকতে না পারে তবে নিজের কাছেই ছোট মনে হয়।তাই ব্যাগ গুছিয়ে একদম চলে এসেছে।অর্ক কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর বলল,
—-“তোর ভাবি বেশি জাল খেয়েছে।আমার সামনেই তো খেতো।এক সাথে ৮-১০টা পর্যন্ত কাচা মরিচ খেয়ে ফেলত।না জানি আমার বাবুটা কেমন তেজি হয়!!!
অর্কের কথায় বসার রুমে হাসির রোল পরে যায়।আর আফসানা মিটি মিটি হাসতে থাকে।বড় ভাই সামনে বসে কিছু বলতেও পারছে না।শুধু মনে মনে ভাবছে সামনে পাই তারপর দেখাচ্ছি তোমাকে।
এদিকে নম্রতার দিক থেকে চোখ সরাতে পারছে না তামিম।এ কি সেই তাদের নম্রু?শরীরে আর সেই শুটকি ভাব নেই।মোটাসোটা হয়ে একদম গলুমলু লাগছে।মেয়ের ভাবটা কেটে এখন নারীর ভাবে লাগছে।এক বাচ্চার মা বলে কথা।কিছুক্ষণ পর পর নম্রতার ঐ হাসি তীরের মত লাগছে তার কাছে।তামিম চোখ নামিয়ে ফেলে।তারপর কি ভেবে আসাদের দিকে তাকায়।আসাদও তার প্রিয়তমার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে।
তামিমের বড্ড হিংসে হলো।ছেলেদের হিংসা জিনিসটা থাকে না।তবে এই এক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের হিংসুটে ভাবটা।
আজ যদি নম্রতা তার হতো।কাউকে চোখ তুলে তাকাতেও দিতো না এই মেয়েটার দিকে।কিন্তু আফসোস সে আজ নিজেই এই মেয়েটার পরপুরুষ।তাই নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করল।
———————————————–
৪৬.
রাতে অর্ক রুমে আসতেই তার উপর ঝাপিয়ে পরে আফসানা।ভারী পেট নিয়ে বুকের উপর বসে পরে।অর্ক তো ভয়ে আফসানাকে ঝাপটে ধরে।একটুপরে আফসানার হাসিতে তার হুস আসে।সে রাগি লুকে আফসানার দিকে তাকাতেই।আফসানা হাসি বন্ধ করে সেও রাগি লুকে তাকায়।
—–“এই অসভ্য!!! কার সামনে কি বলতে হয় জানেন না????
—–“নাহ জানি না।বেবির আম্মু যদি একটু শিখিয়ে দিতো তবে ভালো হতো।
অর্কের হাতে একটা চিমটি কেটে পাশে চিৎ হয়ে শুয়ে পরে আফসানা।এইটুকু তে কত ক্লান্ত লাগছে তার।আফসানা পাশে শুতেই অর্ক এক হাতে ভর দিয়ে তাকায় প্রেয়সীর দিকে।কি মায়া এই রসমালাই তে।কি দারুন স্বাদ তার ভালোবাসায়।
—-“কি দেখো???
আফসানার কথায় হেসে এক হাতে গলা জরিয়ে ধরে অর্ক।আর এক পা তুলে দেয় শরীরে।তাতেই সারছে আফসানা তো দিছে এক চিৎকার।ভয়ে আফসানা কে ছেড়ে বুকে থুথু মারে অর্ক।
—–“হলো কি চিৎকার করার?
—-“কি হলো জানেন না? বেবির চাপ লাগছিলো।এভাবে কেউ শরীরের সাথে ঘেঁষা ঘেষি করে???গাধার দল।
—–“এই একদম বাবুর সামনে এসব আমায় বলবে না।ও কি মনে করবে আমায়??
—-“তো গাধা বাপকে ভালো মনে করবে কেন শুনি?গাধা হলে যে কি জালা সেটা এখন বুঝো।আজাইরা।সরো পেচাল না পেরে পা গুলো তে একটু তেল দিয়ে দাও।তারপর একটু আঙুল গুলো টেনে টেনে দাও।বাবুর আরাম লাগবে।হাহাহহা
আফসানার কথায় অর্ক তেল নিয়ে আসতে আসতে বলে,
—-“পা টেনে দিবো আপনার আর আারাম লাগবে আমার বাবুর?চালাকি?
—“বারে আমার আরাম মানে বাবুর আরাম। জানো না প্রিয়?এখন কথা না বলে ভালো মতো করো।এই সময় টাই প্রতিশোধ নেওয়ার আসল সময়।বিয়ের পর প্রত্যেকদিন তুমি আমাকে দিয়ে মাঝরাত অবদি পা টিপিয়েছো।এখন দেখো কেমন লাগে।হ্যা হ্যা এই পা টায় বেশি চাপ দাও।আহ!কি করছো লাগছে তো?
—-“চালাকি তুমি যতই করো।এখন কিছু বলবো না।কয়দিন পর আমার বাচ্চাটা কে আসতে দাও।তখন বুঝবা কত ধানে কত চাল।
——————
—–“ভাই!!!ভাবি চিৎকার দিচ্ছে কেন?কোন সমস্যা?
নম্রতার কথায় অর্ক আফসানা একে অপরের দিকে তাকায়।তারপর বেডে বসেই জোরে অর্ক বলে,
—-“নাহ।তোর ভাবি আমার সাথে ঘাড়ত্যাড়ামি করছিলো।তাই ঘাড়টা ভেঙে দিছি।
অর্কের কথায় পা দিয়ে অর্কের পেটে একটা গুতা মারে আফসানা।অর্ক হেসে ওঠে।ঐ দিকে দরজার ঐপাশ থেকে শব্দ আসছে।
——-“মামা!!মামা!!মামুলিকে মেলো না!!!
আশ্রাফের কথায় সবাই হেসে দেয়।আশ্রাফ কে কোলে নিয়ে নম্রতা চুমু খায়।
—–“বাবা!!তুই কখন ঘুমাবি?
আসাদের কথায় নম্রতা চোখ পাকিয়ে তাকালেই আসাদ মাসুম ফেস বানিয়ে ফেলে।আসাদ একটা অসভ্য।ছেলেটা ঘুমালে সে যেন দুনিয়ে সবচেয়ে সুখি মানুষ। অথচ ছেলেটা তার বড়ই শান্ত।আসলে সেই অশান্ত। ছেলে ঘুমালেই আগে ছেলের ঘুম পরিক্ষা করেই নম্রতাকে দিয়ে তার পিঠ চুলকাবে।তারপর পা টিপাবে।তারপর চুল টানতে বলবে।তারপর তো আসেই আরো কতশত অত্যাচার।
তাই তার অত্যাচার করার সুযোগ না পাওয়ায় মন থেকে দ্বীর্ঘশ্বাস বের হচ্ছে।
ছেলেটা হওয়ার পর থেকে আসাদ যেন আরো বেহায়া হয়ে গেছে।কিছু বললেই হঠাৎ করে এসে চুমু খাবে।আর রাগ দেখালে তো কথাই না।ছেলেটা সহ তার পক্ষে চলে যায়।পরে আর নম্রতা তার রাগ ধরে রাখতে পারে না।রুমের মধ্যে হুটহাট কোলে তুলে নিবে।আশ্রাফ বাবা মায়ের এমন অদ্ভুত কান্ড দেখে আর হাসে।আসাদকে কিছু বললেই সে বলে,,
—-“দেখুক না ছেলে।তারও জানা উচিত তার বাবা তার মাকে তুলে এনে বিয়ে করেছে এবং এতো এতো ভালোবাসে যে কয়দিন পর তার আরেক বোনও চলে আসতে পারে।হাহাহা
নম্রতা ভেবে পায় না এতো প্রেম পায় কোথায় আসাদ?সে কি প্রেমের সাগর থেকে এসেছে নাকি?নাকি কোন প্রেম দেবতা থেকে তার শশুর শাশুড়ী আসাদকে আশীর্বাদ হিসেবে পেয়েছে।যেমনটা রুপকথার গল্পে পায়।নিজের এমন উদ্ভুদ্ধ ভাবনা দেখে নিজেই হেসে দেয় নম্রতা।
—————————————————
৪৭.
মাত্রই আশ্রাফকে ঘুম পাড়িয়ে ছিলো নম্রতা।এর মধ্যে দরজায় নক হয়।আফসানার পেইন শুরু হয়ে গেছে।ইমার্জেন্সিতে নিতে হবে।আর কি হুস থাকে নম্রতার।আসাদকে ডেকে৷ দ্রুত দরজা খুলে বের হয়।আফসানা চিৎকার করছে।এর মধ্যে সবাই লিভিং রুমে হাজির।ড্যাট তো আরো পরে।তাহলে কিসের জন্য এই ব্যথা? মিসেস আহমেদ কে আশ্রাফের কাছে থাকতে বলে আফসানা কে নিয়ে রওনা হয় সবাই।
জরুরী বিভাগের ডাক্তার গুলো এতো দায়িত্বহীন হবে ভাবেনি তামিম।সেই কখন নিয়ে ওটিতে ডুকিয়ে রেখেছে আফসানাকে।নার্স কয়জন দৌড়াদৌড়ি করছে।নম্রতা এর মধ্যে কান্না করে দিছে।সে দেখেছে মেয়েটা রাস্তায় কিভাবে তার হাত ধরে কান্না করছে।মনের জমানো অব্যক্ত কথা গুলো তাকে বলেছে।যত আশা ছিলো তা বলে গেছে নম্রতাকে।এবং ওয়াদাও করিয়েছে।সে যদি আর না ফিরে তার বেবিটা কে যেন কেউ অবহেলা না করে।এগুলো শুনে যে কেউ ভেঙে পরবে।নম্রতা তো একজন মেয়ে।একজন মা।তার মন তো নরম সে একদম ভেঙে পরছে।আসাদ সামলাচ্ছে।
অর্ক চিৎকার চেচামেচি করছে।ডাক্তার গুলোর জন্য যদি কিছু হয় তার বউয়ের তবে সে একেক জনকে দেখে সারবে।আসাদ হাসতাপালের সিনিয়র ডাক্তারকে ফোন করেছে।সে আসতেছে।
কিছু সময় পর সিনিয়র ডাক্তারের সাথে ৪-৫জন ডাক্তারও হাজির।দ্রুত ওটিতে ডুকে পরে তারা।
কিছুক্ষণ পর পর ওটির দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে অর্ক।আসছে না কেন?বারবার আফসানার বলা কথা গুলো মনে পরছে।কত বাচার প্রবনতা ছিলো সেই কথায়,,
—–“অর্ক আমি কি আমার সন্তানকে বুকে জরিয়ে ঘুমাতে পারব না?আমি কি তোমার সাথে আমাদের বাবুকে নিয়ে ঝগড়া করতে পারব না?আমি কি বাকি ৮-১০টা মেয়ের মত স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে সংসার করতে পারব না?আসলেই কি দুনিয়া ছাড়া সহজ?
অর্ক পারছে না চিৎকার করে কাদতে।কথা গুলে এখন কেন মনে পরলো?আসলে মানুষ যখন অতি বিপদে পরে তখন তার জীবনের সব কষ্টের কথা মনে পরে।এবং সে মনে মনে ভাবে।সৃষ্টিকর্তা তাকেই দুনিয়ার সব কষ্ট দিয়েছে।আসলেই কি তাই???
——“অর্ক নিজেকে সামলাও।এমন করলে চলবে ভাই?আমি তো এসময় টা নিজের পরিবারের সাথে ছিলাম না।তার উপর নিজের জানের উপর হামলাও হচ্ছিল।আমার পরিস্থিতিটা চিন্তা করে দেখো।তেমার থেকে ভয়ংকর ছিলো সে সময় টা আমার।আমি যদি এতো খারাপ সময় সাফার করে ভালো সময়টা উপভোগ করতে পারি।তুমি তো তোমার পরিবারের সাথে আছো।তাহলে তুমি পারবেনা কেন?তোমার বোনকে দেখো।আফসানার থেকে বেশি কিন্তু ওর সমস্যা টা ছিলো তখন সে শক্ত ছিলে তবে আজ দেখো কত ভেঙে পরেছে।ওকে সাহস জোগাতে হলেও তোমার শক্ত থাকতে হবে ভাই।বিষয়টা বুঝো।
আসাদের কথা শেষ হওয়ার আগেই কানে বিদ্যুৎ বেগে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে এলো।সিজারিয়ান ব্যাপার গুলো সবসময় দ্রুত হয়।সবাই ওটির কাছে যায়।
ডাক্তার প্রথমে বেরিয়ে আসে।
—-“মাদার এন্ড বেবি বোথ আর অলরাইট। কংগ্রেচুলেসন।
ডাক্তারের সাথে কথা বলতে বলতে আসাদ ও ডাক্তারের পিছনে চলে যায়।নম্রতা অর্ক তামিম নার্সের সাথে কথা বলতে থাকে।
—-“সরি এখন উনার অবস্থা ততটা ভালো নয়।কেবিনে দিলে তখন দেখা করতে পারবেন।আপাতত বেবিকে দিয়ে যাচ্ছি। টেককেয়ার।
——————————————–
৪৮.
নম্রতার কোলে বাবুকে দেখে দিদুনের কোল থেকে ঝাপিয়ে পরে আশ্রাফ।তার মা শুধুই তার মা।অনেক কষ্টে তাকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছে নম্রতা যে বাবু তার বোন হয়।তার ছোট্ট বোন।
এবার সে বোন কে তার মার কোল ছাড়া কারো কোলে নিতো দিচ্ছে না।
আশ্রাফের দুষ্টামি দেখে হাসছে অর্ক আফসানার হাত ধরে।আফসানা মুচকি হেসে হাতটা টেনে নিয়ে গভীর একটা চুমু খেয়ে ধীরে বলে ওঠে,
—“ধন্যবাদ তোমাকে।আমার মা হওয়ার স্বপ্ন পূরন করার জন্য।
অর্ক কিছু না বলে মুচকি হাসে।সবাই আশ্রাফের কথায় মোজে তাই কেউ তাদের এই গোপন অঙ্গভঙ্গি খেয়াল করেনি।কেবিনে বাবুকে আফসানার কাছে রেখে অর্ক বাদে সবাই বেরিয়ে যায়।অর্ক বাবুসহ আফসানা কে জরিয়ে ধরে তারপর অসংখ্য চুমুতে ভরিয়ে দেয় মা মেয়ের মুখে।এর মধ্যে আফসানাও তার মেয়েকে কয়েকটা চুমু খেয়ে নেয়।
কি নিদারুন দৃশ্যই না দেখছে সে।এক প্রেমিকের প্রেমবিলাশের সাক্ষি সে।
——“এই যে আমার প্রেমিক পুরুষ!! আর কত আনন্দ পেটে ভরে রাখছেন শুনি?হইছে তো বাবু সব দেখছে।
আফসানার কথায় মাথায় একটা লম্বা চুমু খেয়ে প্রিয়তমার দিকে তাকায় অর্ক
——-“কি খারাপ তুমি সানা!!
—–“আমি কি করলাম শুনি?
——“আমাকে কত কষ্টই না দিকে কাল।আর এখন একটু সুখ সুখ অনুভব করছি তাও তেমার সহ্য হচ্ছে না।এতে পাষান কেন তুমি?
—–“আমার এখন আমার বাবুর কথা ছাড়া অন্য কারো কথা ভাবার সময় আছে নাকি বাপু!!দেখি দেখি সড়ো।বাবু ঘুমাবে।
—–“ওওও!!একবার বাসায় যেয়ে নেই।তোমার সময় কিভাবে বের করবো তুমি নিজেও টের পাবা না।
—-“আচ্ছা! দেখা যাবে।
এর মধ্যে আসাদ আর নম্রতা কেবিনে ডুকে।কোলে আশ্রাফ।তারা বাবুর জন্য নতুন জামা এনেছে।কেবিনে ডুকে অর্ক আর আফসানার ঝগড়া দেখে দুজনই হেসে দেয়।তাদের হাসি দেখে আশ্রাফ ও হেসে কুটি কুটি।কত সুখ সুখ লাগছে আজ নম্রতার কাছে।পৃথিবীটা কি সত্যি এতো সুন্দর? নাকি সৃষ্টিকর্তা তাকে সেই সুখ কপালে রেখেছে বলে পৃথিবী সুন্দর লাগছে?
সত্যিই কি জীবন এতো মধুর?
(সমাপ্ত)