–“আমি অন্ধ জেনেও কেন বিয়েটা করতে চাইছেন উনি? আমার মতো একটা অন্ধ মেয়েকে বিয়ে করে কি পাবেন উনি? কেন করছেন এই পাগলামো? এটা ঠিক নয় মা।”
একনাগাড়ে কথাগুলো মাকে বলে দিলাম। আমাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য নিজ হাতে সাজাচ্ছে আমার মা। আমার কথায় মা কোনো জবাব দিল না। বেশ কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর মা বলল…
–“জামাই তোকে অনেক পছন্দ করে। সেকারণে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে কোনো কথা না বলে সোজাসুজি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। গতকালকের ঘটনার পর এতো ভালো বাড়ি থেকে তোর বিয়ের প্রস্তাব এসেছে এটা তো তোর ভাগ্য। আমার কথা শোন। চুপচাপ তৈরি হয়ে বিয়েটা করে নে আনিশা। রাজরানীর মতো থাকবি।”
–“কিন্তু মা! তুমি তো জানো আমি অন্য একজনে ভালোবাসি।”
মা এবার কড়া কন্ঠে বলে ওঠে…..
–“কীসের ভালোবাসা? কত টাকা আয় করে তুই যাকে ভালোবাসিস? এখনো তো পড়াশোনাও শেষ করে উঠতে পারেনি। তুই জানিস আমাদের অবস্থা! তবুও ভালোবাসা নিয়ে পড়ে আছিস? তোর বাবার ক্যান্সার আর তোর ছোট ভাইয়ের হার্টে ফুটো! আর তুই তো নিজেও অন্ধ। মেনে নেবে তোর সঙ্গে ওই ছেলের বিয়ে হলে ওর পরিবার? আমার কথা শুনলে অন্তত তুই দেখতে পাবি ভবিষ্যতে নিজের চোখ দিয়ে। তোর মা আমি। তোর খারাপ কখনোই চাই না।”
মায়ের কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লাম। আমি অন্ধ! আজ পর্যন্ত এভাবে আমার মা কখনো খোঁটা দেয়নি। চোখের কোণে অশ্রু জমা হচ্ছে আমার। অতঃপর অনুভব করলাম মা আমার কপালে টিকলি ঝুলিয়ে দিচ্ছে। হঠাৎ করেই নিজেকে বউ রুপে দেখার ইচ্ছে জাগল ভীষণভাবে। কিন্তু দেখব কি করে? ঢক গিলে কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম…..
–“মা? তোমার কি একবারের জন্যও সন্দেহ হচ্ছে না? আয়াশ রায়হানের মতো এতো বড় একটা লইয়ার কেন হঠাৎ আমার মতো সাধারণ এবং দৃষ্টিহীন মেয়েকে বিয়ে করতে চাইছে? নিশ্চয় এর পেছনে কোনো স্বার্থ রয়েছে। লইয়ার উনি। কারণ ছাড়া একধাপও এগিয়ে যান না।”
–“কারণ থাকলে থাকবে। তাতে তোর কি? বিয়েটা চুপচাপ করে নে। এতেই তোর ভালো। নয়ত আর কেউ তোকে বিয়ে করবে না বলে রাখলাম। এমনিতে কাল যে কান্ড ঘটিয়েছিস এরপর কেউ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবে? আগেই তোর বাবা কে পইপই করে বলেছিলাম। মেয়ে মানুষ তার ওপর চোখে দেখতে পায় না। যখন তখন বাইরে যাইতে দিস না। কে শোনে আমার মতো বুড়ির কথা? হলো তো অঘটন?”
আমার বুঝতে দেরি হলো না যে এই কথাগুলো মা নয় আমার দাদিমা বলছে। আমি কপাল কুঁচকে ফেললাম। অদম্য রাগ নিয়ে বললাম…..
–“আমাকে কি ঘরবন্দী বানিয়ে রাখতে চাও দাদিমা? আর কাল যা ঘটেছে আমি নিশ্চয় ওটাও আয়াশ রায়হানই করিয়েছেন। আমি অন্ধ তবে কানে কালা নই। একজন মানুষের কন্ঠ এতোটা মিলতে পারে না।”
দাদিমা আমার রাগান্বিত কন্ঠে ভারি অসন্তুষ্ট হলো। চেঁচিয়ে মাকে বললেন…..
–“দেখছো বউমা দেখছো? তোমার মেয়ে মুখে মুখে তর্ক করে। এখনি ওকে আদবকায়দা শিখিয়ে দাও। ভবিষ্যতে স্বামী আর স্বামীর বাড়ির কারোর সাথে এমন বেয়াদবি করলে ওরা সহ্য করবে?”
–“মা আপনি যান। আমি দেখছি। ওকে সব বলে দিচ্ছি।”
দাদিমা হয়ত রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেলেন। তার পায়ের শব্দ শুনে বুঝে গেলাম আমি। দাদিমা যেতে না যেতে আমি মায়ের হাত হাতাতে হাতাতে একসময় মায়ের হাত ধরে বললাম….
–“মা? আমার বয়স তুমি জানো। কলেজেও পা রাখিনি এখনো। এতো কিছুর পরেও দুই বছর স্বাভাবিক ভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কলেজে উঠতে কি আর পারব না?”
–“পারবি না কেন? অবশ্যই পারবি। বরণ ওই বাড়িতে তোর বিয়ে হলে আরো ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবি। তোর চোখের চিকিৎসা হবে। তখন কোনো সমস্যা থাকবে না। আমি আসছি। তুই বস। ওদিকে জামাই বসে আছে। বিয়েটা শুরু হলো বলে।”
আমার কোনোরকম কথা না শুনে মা বেরিয়ে গেল আমার হাত ছেড়ে। হতাশ হয়ে বসে রইলাম কিছুক্ষণ। কি করা উচিত এখন? লোকটাকে বিয়ে করে নেওয়া? তিক্ত হলেও সত্যি উনার বয়স আর আমার বয়সে ডিফারেন্স অনেকটা। আমার বয়স ১৬ বছর আর আয়াশ রায়হান নামক লোকটার প্রায় ২৯ বছর তো হবেই। যদিও এসব কেউ ধরে না। মূল বিষয় আমি অন্য একজনকে ভালোবাসি। তাছাড়া আমি এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চাই না। আরো পড়তে চাই। যদিও বিয়ের পর হয়ত পড়াশোনা করতে দেবেন। আমি এটাও শুনেছি যার সঙ্গে আমার বিয়ে হচ্ছে উনার মানসিক সমস্যা আছে। মাঝেমধ্যে উনার পাগলামি এতোটাই বেড়ে যায় সে ঘরের মধ্যে বন্দি রাখতে হয় তাকে। এমন লোকের সঙ্গে সংসার করা যায়?
আমি আনিশা সাবিহা। হেমা আহমেদ এবং মাহমুদ আহমেদের বড় মেয়ে। আমার ছোট ভাইয়ের নাম তুষার আহমেদ। পরিবারে সব থেকে বড় সদস্য আমার দাদিমা শিউলি আহমেদ। তার আদেশ সকলে মানার চেষ্টা করে আমি বাদে। কেননা দাদিমা কুসংস্কারে পরিপূর্ণ! আমাদের পরিবার নিম্নমধ্যবিত্ত। বাবার ক্যান্সার ধরা পড়ার পরে যা আয় হতো তাও কমে গেল। হঠাৎ করে বড়লোক পরিবার থেকে সম্মন্ধ আসার পর সকলেই রাজি হলো শুধু আমি বাদে।
আর যার সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে তার পুরো নাম আয়াশ রায়হান। তার সম্পর্কে অনেক শুনেছি। উনি নাকি এমন একজন মানুষ যে টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না। টাকা আর লাক্সারি উনার জীবনের সব। মাত্র দেড় বছরে উনি লইয়ার হিসেবে বিখ্যাত হয়েছেন। উনার যুক্তিতর্কের কাছে সকলে হেরে যায়। তবে ভালো কাজ করতে লইয়ার মোটেও হন নি। শুনেছি খারাপ লোকেদের পক্ষে থেকে লাখ লাখ টাকা নিয়ে তাদের হয়ে তর্ক করেন আদালতে। এমন বাজে লোকের সঙ্গে বিয়ে হলে জীবনটা তছনছ হয়ে যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। এসব ভাবতেই কান্না চলে এলো আমার। কেন যে উনার সঙ্গে দেখা হয়েছিল?
এখন কি করব? বিয়ে করা ছাড়া আর কোনো পথই তো দেখতে পাচ্ছি না। আমি তো ভালোবাসি নীলাদ্রকে। অথচ বউ সাজতে হচ্ছে অন্যজনের জন্য। মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আমার। মাথায় একটাই কথা ঘুরছে এমন পাগল লোকের সঙ্গে বিয়ে করা যাবে না। যাকে কিনা প্রয়োজনে ঘরবন্দীও রাখতে হয়। এই কথাটা আয়াশের মা আমায় বলেছেন। আর এটাও স্পষ্ট ভাবে বলেছেন এই বিয়ে যাতে আমি না করি। যদিও বা এই বিয়ে করি আমার ভবিষ্যত অন্ধকার!
আয়াশ রায়হান। সাহাদ রায়হান এবং মালিহা রায়হানের একমাত্র ছেলে। বয়স ২৯ বছর। পেশায় লইয়ার। তার বাবার আলাদা বিজনেস থাকলেও LAW কমপ্লিট করে নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করে শুধুমাত্র বাবাকে পছন্দ করে না সেকারণে। আর মিসেস. মালিহা আয়াশের সৎমা। আয়াশের আসল মা মৃত।
এতোকিছুর মাঝেও নিজের হাতে-মুখে হাত বুলালাম আমি। হাতভর্তি চুড়ি, নাকে নথ, মাথায় টিকলি ও টায়রা। গলা ভর্তি গয়না। সবই বরপক্ষ থেকে দেওয়া। আয়াশ নিজে কিনেছেন এসব। আচ্ছা বউ সাজে আমায় কেমন লাগছে? অজান্তেই নিজের আয়না হাতালাম। আয়না পেতেই নিজের সামনে ধরে একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেললাম। কি করে দেখব নিজেকে?
–“ইউ লুকিং গর্জিয়াস নিশাপাখি!”
হকচকিয়ে উঠলাম কোনো পুরুষালি ভার গলায়। এই কন্ঠটা আমি চিনি। আচমকা হাত থেকে ছুটে গেল আয়না। পড়ে গেল নিচে। তবে শব্দ হলো না। বোধহয় আয়াশ আয়না ধরে ফেলেছে।
–“আরে সাবধানে! আয়না পড়ে গিয়ে ভেঙে যাবে তো।”
–“আ…আপনি এই ঘরে কি করছেন? তাও এই সময়? চ….চলে যান।”
হাসির আওয়াজ আসে। আমার ভ্রু কুঁচকাতেই উনি দাম্ভিকতার সঙ্গে বললেন…..
–“আমি যখন ইচ্ছে তোমার কাছে আসতে পারি। না এর জন্য আমার পারমিশন দরকার আর না কোনো বাহানা। জাস্ট ইচ্ছে দরকার। আর তোমাকে তো নিজের সামনে সারাজীবন বসিয়ে রাখার ইচ্ছে রয়েছেই আমায়।”
আয়াশের নিঃশ্বাস আমার মুখের ওপর আঁচড়ে পড়ছে। উনার কন্ঠে অদ্ভুত শীতলতা। একা ঘরে আমি আর উনি। উনি আমার অনেক কাছে আমার ওপর ঝুঁকে রয়েছেন সেটা আমি অনুভব করতে পারছি। ঢক গিলে পা খাটের ওপরে তুলে পিছিয়ে এলাম আমি। এবারও পেলাম হাসির শব্দ।
–“ওহ হো নিশাপাখি? তুমি দেখি ভয় পাচ্ছো আমায় দেখে। কেন? হয়ত ভাবছো তোমার সাথে কিছু করে ফেলব? ভুল ভাবছো। আজ তো বিয়ে। বাসর রাত তো তারপর আছেই না?”
–“আপনাকে আবারও সাবধান করছি। আমার মতো অন্ধ মেয়েকে বিয়ে করার ভুলটা করবেন না। এতো বড় ভুল করবেন না আপনি।”
–“এটা যদি ভুল হয় তাহলে তো খুবই সুন্দর একটা ভুল। এই ভুলটা করতে আমি শতবার রাজি।”
উনার মুখে এরূপকথা শুনে কেঁপে উঠলাম আমি। এটা কেমন যুক্তি? হালকা খুক খুক করে কেশে নিজের মনে সাহস আনার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সাহসরা আজ আয়াশ রায়হানকে দেখে লুকিয়ে পড়েছে। কথাগুলো নিজের মনে তৈরি করে এক নিশ্বাসে বললাম…..
–“প্রথমত, আমি বিয়েটাই করতে চাই না। আপনি শুধু শুধু নিজের সময় নষ্ট করছেন। আমি অন্য কাউকে ভালো….”
আমার কথা শেষ না হতেই আমার ডান বাহু ধরে খুব নিষ্ঠুরতার সঙ্গে মুখ চেপে ধরলেন আয়াশ। আমার মনে যতটুকু সাহস ছিল তাও মোমের আগুনের মতো নিভে গেল। বাম হাত দিয়ে উনার হাতে হাত রেখে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে থাকলাম।
–“হুঁশশ….! পরের শব্দটা ভুলেও উচ্চারণ করবে না। এর জন্য তোমায় কিন্তু শাস্তি পেতে হবে। অন্যকেউ থাকবে না তোমার মনে। ভালোই ভালোই বলছি, যে তোমার মনে ছিল তাকে ঝেড়ে ফেলে দাও। তোমার বর্তমান আর ভবিষ্যত তোমার হবু বর আয়াশই হবে। এটা যত তাড়াতাড়ি তোমার ছোট্ট মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে ফেলবে তত তাড়াতাড়ি তোমার পক্ষে ভালো। নয়ত ফল খুব খারাপ হবে।”
আয়াশের প্রত্যেকটা কথা ভীষণই ধারালো। ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছি আমি। একটা সময় উনি নিজ থেকে আমার মুখের ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেয়। আমি যেন প্রাণ ফিরে পেলাম। বড় বড় শ্বাস নিতেই আয়াশ বিরক্তি নিয়ে বলে উঠলেন…..
–“উফফ….তোমার ঠোঁটের সব লিপস্টিক উঠে আমার হাতে চলে এলো। লাগিয়ে দেব আমি?”
আমি আর কিছু বলার সাহসই পাচ্ছি না। আয়াশের মায়ের বলা কথাগুলো মনে পড়ছে। উনার মা ঠিকই বলেছিলেন। উনার সাথে আমার বিয়ে হলে জীবনটাকে শেষ করে ছাড়বেন। আমার নিরবতা দেখে উনি আবারও বললেন….
–“আই থিংক আবার লাগানোর কোনো দরকার নেই। তোমাকে এমনিই দেখতে রানীর মতো লাগছে। কৃত্রিম জিনিস লাগিয়ে তোমার আসল সৌন্দর্য ঢাকতে চাই না আমি। এভাবেই থাক। আরেকটা কথা! যেটা বলতে এই রুমে এসেছি। আমি চাই না তোমায় এই রুপে আর কেউ দেখুক। তোমার মা, দাদিমা দেখেছে এটা ইনাফ। আর কেউ না। কোনো ছেলে তো না-ই।”
শেষ কথাগুলো ধমকে বললেন উনি। তারপর অনুভব করলাম উনি আমার মাথার কাপড় মুখ পর্যন্ত নামিয়ে দিলেন। আমি মূর্তির মতো বসে আছি। আসলে আমি উনার এমন ব্যবহারে অনুভূতিশূন্য। কানে এলো পায়ের ধাপের আওয়াজ। আস্তে আস্তে মিলিয়ে গেল। এরমানে আয়াশ চলে গেছে। সঙ্গে সঙ্গেই নিজের মাথার কাপড় ফেলে দিলাম। উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমি এই বিয়ে কোনোমতেই করছি না। হাতড়ে হাতড়ে সবজাগায় ফোন খুঁজছি। মায়ের ফোন এখানেই থাকার কথা। টেবিলে ফোনটা পেয়ে হাতে নিজে খুব সাবধানে নীলাদ্রের নম্বর ডায়াল করে কল করলাম। ফোনটা রিসিভড হতেই শব্দ করে কেঁদে ফেললাম আমি। ভেসে এলো নীলাদ্রের অস্থিরতায় ভরা গলা।
–“আনিশা? কি হয়েছে তোমার? কাঁদছো কেন? কোনো সমস্যা? এভাবে কেঁদো না। আমায় অন্তত বলবে তো কি হয়েছে?”
–“আজ আমার বিয়ে নীলাদ্র! হঠাৎ করে কোথা থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারলাম না। আমি এই বিয়ে করব না।”
নীলাদ্র যেন আকাশ থেকে পড়ল। হতভম্ব হয়ে বলল….
–“কি বলছো তুমি? আজ বিয়ে? কি করে? তাও এতো তাড়াতাড়ি?”
আমি কাঁদতে কাঁদতে সব নীলাদ্রকে বলে ফেললাম।
–“আর যাই হোক আমি ওই লোকটার সঙ্গে বিয়ে করব না। কিছু করো প্লিজ। মরে গেলেও বিয়েটা করব না।”
নীলাদ্র কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল….
–“ওকে রিলাক্স! কাঁদলে চলবে না। ঠান্ডা মাথায় যা করার করতে হবে। তোমার বাড়িতে পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে এসো। কোনোভাবে সমুদ্রের পাড়ে দেখা করো। তারপর আমি দেখছি। পালানো ছাড়া কোনো গতি দেখছি না আমি। কষ্ট করে চলে এলো আনিশা।”
আমি আর উপায়ন্তর পেলাম না। বুকটা দুরুদুরু করছে ভয়ে। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললাম….
–“ঠিক আছে। আমি আসছি। তুমি প্লিজ থেকো।”
–“আচ্ছা। আমায় বিশ্বাস করতে পারো। তুমি সাবধানে এসো।”
কল কেটে দিলাম আমি। অনেক কষ্ট করে যাওয়ার আগে ছোট্ট করে আন্দাজমতো চিঠি লিখলাম। হাতে বেশি সময় নেই। তাই গয়না বা বেনারসি কিছুই চেঞ্জ করার সময় নেই। এই ছোট ঘর থেকে বেরিয়েই আগে একটা ভাঙ্গাচোরা ঘর পড়ে। সেখান দিয়েই বের হওয়ার পথ রয়েছে। অনেক সাবধানে ঘরটা থেকে দরজা খুলে বেরিয়ে এলাম আমি। হাতাড়ে হাতড়ে দ্রুত পায়ে হাঁটতে শুরু করলাম।
চলবে…….??
#মনের_অন্দরমহলে
#আনিশা_সাবিহা
সূচনা পর্ব