#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ১০
সায়ন আর অন্তু গোসল করে ওয়াশরুম থেকে লুকিয়ে দেখলো তনু রুমে আছে কি না। দেখলো তনু নেই তাই দুইজনে পা টিপে টিপে রুমে গেল৷ অন্তু আর সায়ন সব জায়গা চেক করে দেখলো তনু সোফার মধ্যে ঘুমিয়ে আছে। অন্তু আর সায়ন যেন হাফ ছেড়ে বাঁচল। অন্তুকে খাবার টেবিলে বসিয়ে সায়ন তনুর সামনে যেয়ে ফ্লোরে বসে পরলো। তনুর মুখের ওপর পরে থাকা চুল গুলো কানের পিঠে গুজে দিয়ে তনুর গালে হাত রেখে তনুকে ডাকতে লাগলো।
সায়ন : মেরি জান,, উঠো খাবার খাবে। খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পরো। উঠো,,, ( নরম স্বরে)
তনু : উমমমম,,,,, পরে। আমি আরও ঘুমাবো। তুমিও ঘুমাও আসো,, ( বলে সায়ন এর হাত মাথার নিচে দিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পরলো)
সায়ন : মেরি জান কি করছো, উঠো।
সায়ন বুঝতে পারলো যে তনুকে ডেকে আর কাজ হবে না তার চেয়ে বরং ঘুমাতে থাকুক। সায়ন আস্তে করে তনুকে কোলে তুলে নিলো। তারপর রুমে নিয়ে এসে বিছানায় শুইয়ে দিল। তনুকে শুইয়ে দিয়ে তনুর কপালে একটা চুমু দিয়ে ডাইনিং এ চলে এলো। অন্তুকে খাইয়ে দিয়ে সায়ন অন্তুকে নিয়ে রুমে চলে এলো। রুমে এসে অন্তুকে বিছানার মাঝখানে শুইয়ে সায়নও শুয়ে পরলো।
অন্তু : বাবাই একটা গল্প বলো না!
সায়ন : ওকে তাহলে তুমি আগে চোখ বন্ধ করো। তারপর আমি গল্প বলবো।
অন্তু : ওকে বাবাই। ( বলে চোখ বন্ধ করলো)
সায়ন অন্তুর মাথায় বিলি কাটতে কাটতে গল্প বলছিলো। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলো অন্তু ঘুমিয়ে পরেছে। তাই সায়নও ঘুমিয়ে পরলো।
In evening,,,,,
তনুর ঘুম ভাঙলো ক্ষুধার কারনে। উঠে বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ৭ টা বেজে গেছে।
তনু : হায় আল্লাহ!!! আমি এতোক্ষণ ঘুমিয়ে ছিলাম। আচ্ছা আমিতো সোফায় ছিলাম, এখানে এলাম কি করে?ধুর যেভাবেই আসি না কেন নিজের রুমেই আছি। অন্তুকে খাওয়ানোও হয় নি। ( এসব বলে পাশে ফিরলো)
পাশে ফিরে দেখে সায়ন এর বুকে অন্তু ঘুমিয়ে আছে আর সায়ন অন্তুকে জড়িয়ে ধরে আছে। অন্তু আর সায়নকে দেখলে যে কেও বলবে ওরা বাপ মেয়ে। ওদের দুজনের নাক, চোখ আর ঠোঁট সব একই।সায়ন এর চুলের মতো অন্তুর চুলও অনেক সিল্কি। তনু এসব ভেবে একটু হাসলো। তারপর আবার খাওয়ার কথা মনে পরতেই সায়নকে ডাকলো।
তনু : সায়ন,,,এই সায়ন,,,( সায়নের হাত নাড়িয়ে)
সায়ন : হুমমমম,,,বলো মেরি জান,, ( ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে উত্তর দিল)
তনু : ( ঘুমের মধ্যেও ফাইজলামি করে, বাদর ছেলে) উঠো বলসি। ( রেগে)
সায়ন : উফ!! আস্তে কথা বলতে পারো না। দেখছো না প্রিন্সেস ঘুমাচ্ছে। ( বিরক্ত ভংগিতে)
তনু : না খেয়ে এতোক্ষণ ঘুমিয়েছে উঠাও ওকে।
সায়ন : আমি অন্তুকে খাইয়ে ঘুম পারিয়েছি।
তনু : ওহ। তুমি খেয়েছো?? ( আর চোখে তাকিয়ে ?)
সায়ন : মেরি জান, তোমাকে রেখে কি আমি খেতে পারি। ( ঢং করে)
তনু : দরকার এর সময় ঠিকি ছেড়ে চলে গিয়েছিলে ?
সায়ন আর কিছু বলতে পারলো না। কারণ তনুর বলা কথা গুলো ঠিক। সায়ন ভুল করেছে। তনু আর কিছু না বলে ফ্রেশ হয়ে খেতে চলে গেল। সায়ন যায় নি। এখনো অন্তুকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে আছে। অন্তুর কপালে একটা চুমু দিয়ে বালিশে শুইয়ে দিল। তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে বাইরে চলে গেল।
তনু খাওয়ার কথা বলতে চেয়েও বলে নি। কারণ সায়ন যা করেছে তার কাছে তনুর বলা কথা সামান্য মাত্র।
তনু খেয়ে রুমে গেল। দেখলো অন্তুর ঘুম ভেঙে গেছে তাই উঠে বসে আছে। তনু যেয়ে পাশে বসতে অন্তু তনুকে জড়িয়ে ধরলো।
তনু : মামনি টার ঘুম হলো? ( অন্তুর চুল ঠিক করতে করতে)
অন্তু : হুম,,, মাম্মাম, বাবাই কোথায়?
তনু : বাবাই বাইরে গেছে। হয়তো কাজ আছে।
অন্তু : তুমি আর বাবাই খেয়েছো? বাবাই আমাকে খাইয়ে দিয়েছিলো। তুমি খাওনি বলে বাবাইও না খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলো।
তনু : ওওও,,, হ্যাঁ, হ্যাঁ, খেয়েছি আমরা। তুমি যাও ফ্রেশ হয়ে পড়তে বসো।
অন্তু : ওকে। ( বলে চলে গেল)
তনু ভাবছে ছেলেটা না খেয়ে কোথায় চলে গেল। অন্তু পড়া শেষ করে সায়ন এর জন্য অপেক্ষা করছে অনেকক্ষণ কিন্তু সায়ন আসছে না বলে ডিনার করে ঘুমিয়ে পরেছে। তনু সায়ন এর জন্য অপেক্ষা করছে।
এতোক্ষণ ব্যাপারটা নরমালি নিলেও এখন তনুর টেনশন হচ্ছে।
রাত ১২ঃ২০
সায়ন বাসায় ঢুকে দেখে তনু ছোফায় বসে ওর জন্য অপেক্ষা করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছে। তাই সায়ন তনুকে কোলে করে রুমে নিয়ে শুইয়ে দিলো। তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে অন্তুর পাশে শুয়ে পরলো।
In morning,,,,
তনু উঠে দেখলো সায়ন কলেজের জন্য রেডি হয়ে গেছে অলরেডি। তনুও কিছু না বলে রেডি হতে লাগলো। সায়ন এসে অন্তুকে উঠানোর জন্য পাশে গিয়ে বসলো।
সায়ন : মাই প্রিন্সেস, জলদি উঠো। আজ আমরা একসাথে কলেজে যাবো।
অন্তু : সত্যি বাবাই!!! ( সায়নের কথা শুনে খুশিতে উঠে বসলো)
সায়ন : হুম,যাও রেডি হয়ে নাও।
সায়ন অন্তুকে রেডি করতে করতে তনু নাস্তা বানিয়ে টেবিলে দিলো। সবাই একসাথে নাস্তা করে বেরিয়ে পরলো কলেজের জন্য।
কলেজে এসে সায়ন গাড়ি থেকে নামতেই একটা মেয়ে এসে সায়নকে জড়িয়ে ধরলো!!!
#চলবে