না_চাওয়া_পূর্ণতা পর্ব : ২০

0
2117

#না_চাওয়া_পূর্ণতা ?
লেখক : সানজিতা আক্তার মীম
পর্ব : ২০

তনুদের বাসায় চলে এসেছে সবাই। বেল বাজাতেই তনুর মা এসে দরজা খুলে দিল।
তনু নিজের মাকে দেখে অপরাধীর মতো করে তাকিয়ে আছে। চোখে জল দুজনেরই।

তনুর মা : মায়ের কাছে আসবি না? এতো রাগ করে আছিস?
তনু : সরি, মা।আমাকে মাফ করে দাও।( বলে মাকে জড়িয়ে ধরলো)
তনু আর তনুর মা দুজন সিরিয়ালের মা-মেয়ের মতো কান্না করছে তা দেখে অন্তু বিরক্ত হয়ে দুজনকে হাত ধরে ডাকতে লাগলো।
অন্তু : মাম্মাম! নানু! ওফ্ফো! আমার দিকে কারো খেয়ালই নেই। আমিও তো আজ প্রথম এলাম। বাবাই চল আমি বাসায় যাব৷ থাকবো না এখানে। চল ( অন্তু রেগে সায়নের হাত ধরে টানতে শুরু করলো বাসায় যাবে বলে)
তনুর মা : এটা আমার নাতনি? ( অবাক হয়ে)
তনু : হ্যাঁ। কেন বাবা বলে নি?
তনুর মা : তুমি আমাকে বলো নি কেন? ( রেগে)
তনুর বাবা : সারপ্রাইজ!
তনুর মা : (অন্তুর সামনে দাড়িয়ে) দেখলে তোমার নানাভাই আমাকে বলেই নি যে, আমার এতো কিউট নাতনি আছে। নাম কি আমার নানুটার?
অন্তু : আমার নাম অন্তু। ?( বলে জড়িয়ে ধরলো)

তনুর মা অন্তুকে নিয়ে সোফায় বসালো। সবাই বসে আছে সায়ন বাদে। সায়ন এখনো দরজার সামনে দাড়িয়ে। তা দেখে তনুর বাবা সায়নের কাছে গেল।

তনুর বাবা : কি হলো বাবা,এখানে দাড়িয়ে কেন। ভেতরে চলো।
সায়ন : আমাকে তো মা ভেতরে যেতে বলে নি।মেয়েকে পেয়ে আমাকে খেয়ালই করলো না। ( মন খারাপ করে)
তনুর মা : লাগাবো মাইর। দুষ্টু ছেলে।
সায়ন : আচ্ছা। কাল গায়ে হলুদ তাই অনেক কাজ। আমার জান আর প্রিন্সেসটাকে রেখে যাচ্ছি। খেয়াল রাখবে ভালো করে। পরশু নিয়ে যাব।
নুহাশ : নির্লজ্জ ছেলে।
সায়ন : নিজের বউকে কিছু বলতে কিসের লজ্জা। হুহ।জান আসি তাহলে। প্রিন্সেস বাই।

সবাই ডেকোরেশন নিয়ে বিজি। তনু একা একা বোরিং ফিল করছে। তাই সায়নকে কল করলো। একবার রিং হতেই রিসিভ হয়ে গেল,

সায়ন : মেরি জান, এতোটুকুতেই মিস করছো। সামনে থাকলে তো শুধু দূর করে দেওয়ার বাহানা খুঁজো।
তনু : জ্বি না। মোটেও মিস করছি না। আমার বোরিং লাগছে৷ সবাই কালকের ফাংশন নিয়ে বিজি। আমি একা একা বসে আছি।
সায়ন : আমি আসবো নাকি?
তনু : ধুরর। টুট টুট টুট। ( কল কেটে দিল)

তনুর কান্ডে সায়ন হাসতে লাগলো। তারপর কিছু একটা ভেয়ে কয়েকজন কে কল করলো। কল শেষ করে আবার নিজের কাজে চলে গেল।

তনু বসে ছিল রুমে। হঠাৎ রুমের বাইরে থেকে হইচই শুনে বাইরে বের হলো। বের হয়ে দেখে তনু আর সায়নের বন্ধু-বান্ধবীরা এসেছে। ও সবার সামনে যাওয়ার আগেই কল আসলো। সায়ন কল করেছে। তনু কল রিসিভ করে কানে দিতেই,,

সায়ন : এখন বোরিং লাগবে না। ওদের সাথে গল্প করো। রাতে এসে দেখা করে যাব। কেমন।
তনু : হুহ। লাগবে না। বাই। i am busy.
সায়ন : ওরে বাটপার! আমার বিড়াল আমাকেই মেও।
তনু : ??( ভেংচি দিয়ে কল কেটে দিল)

তনু সব বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিল। সবাই আজ তনুদের বাসায়ই থাকবে। অন্তু তো মহা খুশি এতো মানুষ দেখে। তনু আর সায়নের সব বন্ধুরা অন্তুকে আদর করছে। তাই অন্তুর অনেক মজা হচ্ছে। এভাবে সারা বিকেল চলে গেল।

রাতে,,,,,,
সবাই ডাইনিং টেবিলে খেতে বসেছে। তনুর মা আর তনু সবাইকে খাবার সার্ভ করে দিচ্ছে। যদিও তনুকে নিষেধ করা হয়েছে কিন্তু তনু কথা শুনে না।সবাই খাচ্ছিলো এমন সময় সায়ন আর নুহাশ বাসায় এলো।

সায়ন : বাহ! আমাকে রেখে রেখে পোলাও কোরমা খাওয়া হচ্ছে। নট ফেয়ার। ( ঢং করে)
নুহাশ : এই ঘষেটিও খেতে বসেছে। ১ বছর না খেয়ে ছিল না জানি আজ সব শেষ করে দিবে। মা আমাকে খেতে দাও। আগে আগে খেয়ে ফেলি।
তনু : ভাইয়াাাা তুমি কি বললা। ( রেগে)
সায়ন : হে তাইতো। ভাইয়া আমার জানটাকে তুমি এভাবে বলতে পারলা। সুন্দর করে বলবা যে, এক বছর খায় নি তাই তোমার খাবারটা যেনো খেয়ে না ফেলে।
তনু : ওই তুই কি বললি। আমি তোকে বিয়েই করবো না। আমি খাবোও না। হুহ। ( বলে রুমে চলে গেলো)
সায়ন : যাক বাবা৷ আমি কি করলাম। মা খাবার দিন তো। রুমে যাই মহারানী রাগ করেছে।
তনুর মা : দুজন মিলে শুধু শুধু মেয়েটাকে রাগালি। যা এবার রাগ ভাঙ্গা।
নুহাশ : সায়ন তুই আয় আমি যেয়ে একটু রাগ কমাতে থাকি।
সায়ন : ওকে ব্রো।

নুহাশ চুপি চুপি রুমে উকি দিল। দেখে তনু খাটে বসে আছে আর একা একা বক বক করছে। এর মানে নুহাশ আর সায়ন এর ১৪ গুষ্টি উদ্ধার করছে। নুহাশ একটা ঢোক গিলে রুমে ঢুকলো।
সায়ন খাবার হাতে রুমে ঢুকে দেখলো নুহাশ কান ধরে দাড়িয়ে আছে। তা দেখে সায়ন জোরে জোরে হাসতে লাগলো। সায়নের মনেই নেই ও যে বাঘিনীর সামনে দাড়িয়ে হাসছে।
৫ মিনিট পর।।।।
সায়নও কানে ধরে দাড়িয়ে আছে আর নুহাশও। আর তনু বসে বসে খাচ্ছে। ??
সায়ন : মেরি জান, আমিও খাই নি। তুমি আমাকে রেখে একা একা খেতে পারো না। ( অসহায় ভাবে)
নুহাশ : এএএএহ! আমি কতো খেয়ে বসে আছি। আমারও ক্ষুধা লেগেছে৷
তনু : আরও আধা ঘণ্টা দাড়িয়ে থাকতে না চাইলে চুপচাপ কানে ধরে দাড়িয়ে থাকো। একটা সাউন্ড যেন না শুনি।

অন্তু রুমে আসছিলো সায়ন আর তনুর বন্ধুদের নিয়ে গল্প করতে এসে দেখে বাবা আর মামা কানে ধরে দাড়িয়ে আছে। তা দেখে অন্তুসহ সবাই হাসতে লাগলো। নুহাশ আর সায়ন বেচারার নাক কাটা গেলো। পরে সায়ন আর নুহাশ খাবার খেতে চলে গেল আর তনু সবার সাথে গল্প করতে লাগলো। রাতে সায়ন বাসায় চলে যায়।

সকালে,,,,,,,
#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here