বেলা_শেষে_শুধু_তুমি পর্ব ১৯
#আনিশা_সাবিহা
–“আপনি এখানে? তারমানে এটা কি সায়রার জন্য ছিল? আই এম সরি। আপনি আমাকে সায়রা ভেবে জড়িয়ে ধরলেন। আমি হয়ত রেস্টুরেন্টের দরজায় নোটিশ দেখিনি। আই এম রিয়েলি সরি। সব স্পয়েল করে দিলাম। আমি যাচ্ছি।”
কাঁপতে কাঁপতে এলোমেলো পায়ের ধাপ ফেলল ঐশানী। তার পায়ের সাথে শপিংয়ের ব্যাগ লাগতেই হালকা নিচু হয়ে ব্যাগ গুলো তুলতে লাগল সে। এতোগুলো ব্যাগ একসাথে তুলতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে তার। একটা একটা করে ব্যাগ তুলে দাঁড়াতেই রেস্টুরেন্টের দরজা খুলে প্রবেশ করে একটা মেয়ে।
ঐশানী দ্রুত দাঁড়িয়ে পড়ে। সায়রাকে এর আগে এক ঝলক দেখেছে ঐশানী। তাই তাকে চিনতে তার ভুল হলো না। সায়রা ভেতরে আসতেই ঐশানী আর অভয়কে দেখে তার চলা থামিয়ে দিল। হয়ত সেও প্রচন্ড অবাক হয়েছে। যার কারণে চলা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ঐশানীকে একনজর দেখে সে সরাসরি অভয়কে প্রশ্ন করে…..
–“কেন ডেকেছো আমাকে?”
–“ঐশানী তোমাকে ডাকতে বলেছিল। তাও জাঁকজমক ভাবে ডাকতে বলেছিল।”
সায়রা ঐশানীর দিকে তাকায়। আর ঐশানী অভয়ের দিকে। অভয় টেবিলে হাত রেখে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তার দৃষ্টিতে যেন সব স্বাভাবিক। ঐশানী ভেবেই পেলো না অভয় কেন এমন করছে!
চমকিত হয়ে জোরেই সে বলল…..
–“কিন্তু আমি তো শুধু আপনার আর সায়রার মাঝে যাতে…..”
কথাটা সম্পূর্ণ হতে দেয় না সায়রা। তার পক্ষে এসব দেখা খুব কষ্টের। সে ভেবেছিল অভয় হয়ত শুধু তাকে ডেকেছে। হয়ত সে চায় সায়রাকে। কিন্তু ঐশানীকেও দেখে মনটা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যেতে তার একটুও সময় লাগল না। একটা মন আর কতবার ভাঙবে কে জানে!
–“কেন ডাকতে বলেছিলে অভয়কে আমায় মিসেস. ঐশানী খান? আমি তো দূরেই সরে গিয়েছি। শান্তি হয়নি তোমাদের?
–“আমার কথা শোনো সায়রা। আমি এখানে আসতে চাইনি।”
সায়রা আঘাত পেয়েছে। অভয় ফোন করে তার বউয়ের সাথে নিজেকে এই রোমান্টিক জায়গায় দেখাবে বলে জানলে কখনো আসত না। চোখ থেকে এক ফোঁটা পানি পড়তেই কারোর কথা না শুনে হনহন করে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে যায় সে। ঐশানী অনেকবার ডেকেও কোনো লাভ হয় না। পেছন ফিরে চেয়ে তাকায়। সাদা শার্ট তার ওপর কালো ব্লেজার পরিহিত অভয়ের দিকে। আজ ঐশানী কোনো অপরিচিত অভয়কে দেখছে। ক্ষীণ আওয়াজে সে জানতে চায়…..
–“আপনি এমন কেন করলেন?”
–“কে হয় সায়রা তোমার?”
–“আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি। আপনি তার উত্তর না দিয়ে উল্টে আমাকে আজগুবি প্রশ্ন করছেন? আর সায়রা কে হবে? ওকে চিনিও না।”
–“তাহলে কেন ওর প্রতি এতো দরদ দেখাচ্ছো? ওর কষ্ট, রাগ, অভিমান সব বুঝতে পারো। আমি তোমার এতো কাছে থাকি আমার ভেতরে যে ক্ষোভ, রাগ আছে তা কেন দেখতে পাও না?”
অভয়ের একটা কথাও ঐশানী ঠিকঠাক বুঝতে পারে না। মনের মধ্যে শুধু তার প্রশ্নই জমা হচ্ছে। উত্তর পাচ্ছে না। যার কারণে তার অস্থির লাগছে। অস্থিরতায় বার বার চোখ বন্ধ করে খুলতে থাকে ঐশানী। ক্লান্তি ভরা কন্ঠে বলে….
–“কি বলছেন আপনি? আপনি চেয়েছিলেন সায়রার সাথে আপনার সম্পর্ক ঠিক হক। আমি সেকারণে আইডিয়া দিয়েছি। আপনি সেই অনুযায়ী আজ রেস্টুরেন্ট বুক করলেন। কিন্তু ভুলক্রমে আমি চলে এলাম। তাতে আপনি আমাকে সায়রা ভেবে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন। তারপর……”
–“আমাকে কি তোমার কানা মনে হয়? নাকি আমি চোখে পট্টি পড়ে থাকি? তোমার আর সায়রার মাঝে পার্থক্য আমি যথেষ্ট বুঝি। সায়রা কখনো শাড়ি পড়ে না।”
–“হ্যাঁ তো?”
ভালোভাবে অভয়ের কথাগুলো না বুঝেই প্রশ্ন করে ফেলে ঐশানী। তৎক্ষনাৎ ওর খেয়ালে আসে অভয়ের বলা কথাগুলো। ও কিছুটা বুঝে উঠতে পেরে এক আকাশ বিস্ময় নিয়ে তাকায়।
–“ত…তার মানে আপনি জানতেন ওটা আমি?”
–“আমি কখনো সায়রাকে ছোঁয়ার ইচ্ছে পোষণও করি না। যদি ও আমার স্ত্রী হতো তাহলে হয়ত করতাম। কিন্তু ও আমার স্ত্রী নয়।”
ঐশানী আরেক দফা চমকায়। আজ অভয়ের মুখে এতো বিস্ময়কর কথাবার্তা সে আর নিতে পারছে না। মাথাটা ভনভন করছে। আজ কি সারপ্রাইজ ডে? অভয় স্ট্রেট দাঁড়িয়ে পকেটে হাত গুঁজে ঐশানীর দিকে এগোয়। গমগমে আওয়াজে বলে ওঠে…..
–“ব্যাস….অনেক হয়েছে ভদ্রভাবে তোমাকে বোঝানোর চেষ্টা করা। খারাপ রুপও তোমার দেখে নেওয়া উচিত।”
ঐশানী পলকহীন চোখে তাকায় আগ্রহ নিয়ে অভয় কি করতে চায় তা দেখার জন্য। পকেট থেকে হাত বের করে হঠাৎ করেই একহাত ঐশানীর পিঠে অন্যহাত দিয়ে ঐশানীর গাল চেপে ধরে অভয়। ঐশানী নড়াচড়া করারও সুযোগ পায় না। অভয় সেই অবস্থায় বলতে শুরু করে…..
–“সবার মনের অবস্থা বুঝতে পারো তুমি। সায়রাকে শুধু একপলক দেখে বুঝলে ও কষ্ট পাচ্ছে, যন্ত্রণা পাচ্ছে। সবার মনের যন্ত্রণা দূর করার চেষ্টায় মেতে থাকো তুমি। কিন্তু আমার সাথে সারাদিন থাকো। আমার সাথে ঘুমাও। তবুও বুঝতে পারো না আমার মনের অবস্থা? হয়ত আমার পাগল। আমি বুঝতে পারি না কখন আমি নিজে কি চাই। আমার ভালোবাসা কে, আমার ডেস্টিনি কে আমি এসব কিচ্ছু বুঝি না। নিজের মনকে এখনো পড়তে পারি না। কিন্তু তুমি কেন পারো না?”
ঐশানী যেন কথা বলাই ভুলে গিয়েছে। আর সত্যিই তো এসব কথার পাল্টা কি জবাব দেওয়া উচিত? অভয় কেনই বা এসব কথা বলছে? সে অস্পষ্ট কন্ঠে বলে…..
–“আপনি তো বলেছিলেন সায়রাকে ভালোবাসেন। তাই তো আমি এসব বলেছিলাম।”
অভয় আবারও ঐশানীর মুখে সায়রার নাম শুনে বিরক্ত হয়। কিন্তু একসময় এই সায়রাকে ছাড়াই সে থাকতে পারত না। একমুহূর্ত কাটানো ওর কাছে কঠিন হয়ে দাঁড়াতো। আর এখন সায়রা নামটা শুনতেও তার মাঝে তিক্ততার সৃষ্টি হচ্ছে। ঐশানীর গাল আরো জোরে টিপে ধরে সে দাঁতে দাঁত চেপে বলে…..
–“চুপ! সায়রা বাদ। এখন শুধু তুমি আর আমি। আর যদি আমার ব্যবহার আজকে তোমার উইয়ার্ড মনে হয় তাহলে আই এম সরি। আমার এই ব্যবহারের পেছনে দোষটা তোমার। কেন সেই রিসেপশনের দিন নিজের গজদাঁতের সেই মায়াময় হাসিটা দেখিয়েছিলে? সেই হাসিটাই আমার মনের দুয়ারে কড়া নাড়িয়েছিল। আমি মনের দুয়ার খুলে উঁকি মারার সাথে সাথেই তুমি জোরজবরদস্তি করে ঢুকে পড়েছো আমার মনের ছোট্ট ঘরে। এটা তোমার দোষ। তোমার হাসির দোষ। আমি সেদিন নিজের অনুভূতিকে পাত্তা দিইনি। দ্বিতীয় বার প্রেমে পড়ি তোমার সেই মালাই খেয়ে মালাই ভরিয়ে রাখা চেহারার ওপর। তৃতীয় বার প্রেমে পড়ি তোমার কাঁদার পর ফোলা চোখমুখের ওপর। তোমার সেই লাল হয়ে যাওয়া নাকের ডগার ওপর। চতুর্থ বার প্রেমে পড়ি গতকাল পড়ন্ত বিকেলের মিষ্টি রোদে ভিজে চুপসে যাওয়া তোমার ওপর। চতুর্থ বার প্রেম দ্বারা খুন করেছো আমায়। কিন্তু…..”
ঐশানী অভয়ের কথাগুলো শুনে নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। অভয় কখনো তাকেও এসব কথা বলতে পারে সেটা কখনো সে স্বপ্নেও ভাবেনি। তবে তার কথাগুলো ঐশানীর কাছে বড্ড মোহনীয় হয়ে ঠেকছে। আগ্রহ নিয়ে বলে…..
–“কিন্তু?”
–“কিন্তু কাল যখন তুমি বললে তোমার ড্রিমবয় পেলে তুমি তার সাথে বিয়ে করে সেটেল হয়ে যাবে তখন আমার কি হলো জানি না। আগুন ধরে গেল আমার হৃদয়ে। কিন্তু নিজেকে দমিয়ে আমি তখন স্বাভাবিক আচরণ করেছি। আমার ভাবনা শুরু হয় কাল রাতে। আবার তুমি যখন বললে যে আমাদের মাঝে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থেকেও নেই। তখন আমি ভড়কে গেলাম। সারারাত আমি ভেবেছি যে তুমি যদি কখনো ছেড়ে যাও আমায় তখন আমার কি হবে? সায়রা যদি আমার জীবনে ফিরে আসে আর তুমি যদি চলে যাও আমি মানতে পারছিলাম না। সায়রাকে আমি দূরে সরিয়ে দিতে রাজি আছি। কিন্তু তোমাকে আমি পারব না। জড়িয়ে গেছি তোমার মাঝে। আজ তোমার ওপর রাগ করেই একপ্রকার এসব অ্যারেঞ্জমেন্ট করেছি। কিন্তু তোমাকে আমি শপিংমলে ঢুকতে দেখি। আমি ভেবেছিলাম আজই সায়রাকে সরি বলব। ওকে মিথ্যে সম্পর্ক থেকে মুক্ত করব নিজেও মুক্ত হবো। তার আগেই তুমি ঢুকে পড়লে।”
কথাগুলো বলতে বলতে আলগা হয়ে আসে অভয়ের বাঁধন। ঐশানী অভয়কে হালকা ধাক্কা দিয়ে বেশ কয়েক হাত দূরে সরে আসে। বিস্মিত হয়ে চেয়ে বলে……
–“আপনি কি বলছেন আপনি জানেন? এইতো মাত্র দুদিন আগে আপনি সায়রাকে ভালোবাসেন। ওর সম্পর্ক আপনার সাথে ভেঙেছি বলে চিল্লিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ আপনাকে যখন এডভাইজ সব ঠিক করার তো আপনি উল্টো সুরে গাইছেন। আপনি ঠিক কি চান সেটা কি আপনি আদোও জানেন?”
অভয় দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে। ঐশানীর দিকে এগিয়ে এসে অসহায় নয়নে চেয়ে বলে…..
–“আমি তোমাকে চাই ঐশানী। আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি বিয়ের বন্ধনে আমি বাঁধা পড়ে গেছি। মরার আগ পর্যন্ত আমার ছাড় নেই এই বাঁধন থেকে। আর সায়রার কথা বললে আমি বলব ও সত্যিই আমার কাছে একটা মোহ ছিল। মায়া ছিল। আর্কষণ ছিল। জেদ ছিল। ভালোবাসা কোনোকালেই ছিল না। একটা মানুষের সঙ্গে যদি দৈনন্দিন যোগাযোগ করা হয়। কথা হয়। তবে সেই মানুষের প্রতি মায়া তো জন্মাবেই। সায়রার সঙ্গে আমার কথা হতো। ভালোবাসা আর ভালো লাগার তফাত না বুঝেই সেটাকে ভালোবাসা বলে চিল্লাতে শুরু করি আমি। ওর জন্য আমার খারাপ লাগছে। ওর কাছে আমি ক্ষমা চাইব। অবশ্যই চাইব। কিন্তু তোমাকে হারাতে পারব না।”
–“আর কয়েকদিন পর যদি আমার ওপর থেকে আপনার মন উঠে যায়? যদি আপনার মনে হয় আমিও আপনার মোহ? যদি তখন মনে হয় সায়রাই আপনার সত্যি ভালোবাসা ছিল? সেদিন কি আমাকেও সরি বলবেন বা ক্ষমা চেয়ে সায়রার হাত ধরবেন?”
একনাগাড়ে প্রশ্ন গুলো অভয়ের দিকে ছুঁড়ে দিল ঐশানী। অভয় মাথা নাড়াতে নাড়াতে বলে….
–“না ঐশানী। বিলিভ মি! আমি বুঝেছি আমি কাকে ভালোবাসি আর কাকে বাসি না।”
–“আজকে যখন আপনি উল্টো সুরে গাইছেন তারপর থেকে আপনাকে বিশ্বাস করা আমার পক্ষে একটু কষ্টকর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। কাল যদি আপনি আবার উল্টো সুরে গাইতে থাকেন তাহলে আপনাকে চরিত্রহীন ছাড়া কিছুই ভাবতে পারব না আমি।”
কথাটা শুনে বেশ রাগ হয় অভয়ের। কাল থেকেই ওর রাগ চড়ে আছে। তবে অভয়ের একটি ভালো স্বভাব হচ্ছে ও সহজে নিজের রাগ প্রকাশ করে না। কারোর সাথে চিল্লাপাল্লা করে কথা বলে না। কাউকে আঘাত করে না। কিন্তু কাল বিকাল থেকে ও রাগ কমাতে পারেনি। উপরন্তু এসব কথায় রাগটা আরো বাড়ে তার।
–“আমি এমন করবি না ঐশানী।”
–“গ্যারান্টি কি? হয়ত আপনি করবেন। সেদিন সব হারিয়ে বসে থাকা ছাড়া আমার উপায় নেই। আর আপনি আজ ওই মেয়েকে কষ্ট দিলেন। আমার এটা ভালো লাগেনি।”
–“আমার কথাও ভাবো ঐশানী প্লিজ।”
–“পারছি না আপনার কথা ভাবতে আমি। আর না আপনার এসব কথা বিশ্বাস হচ্ছে।”
অভয় চোখ বন্ধ করে বলে…..
–“স্ট্রাস্ট মি!”
–“সরি আই কান্ট। ইউ আর এ লায়ার। ইউ আর এ চিটার।”
আর রাগ দমন করতে পারে না অভয়। হুট করেই চোখ খুলে ডান হাত দিয়ে ঐশানীর বাম গালে চড় বসিয়ে দেয়।
–“আই এম নট চিটার। আই এম নট লায়ার। মায়া, মোহ সবার জন্মায়। আমি বুঝতে পারিনি। এটা কি স্বাভাবিক নয়? তুমি আমাকে ভুল বুঝছো। বার বার একই কথা বলছি। কিন্তু তুমি একই কথা বলছো। ফলস্বরূপ আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না।”
ঐশানী গালে হাত দিয়ে নিরব দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। এই মানুষটা যেন চেনা থেকে বড্ড অচেনা হয়ে উঠেছে। অভয় এগিয়ে আসতে নেয়। কিন্তু ঐশানী সরে যায়। বাইরে ছুটে বেরিয়ে যায়। অভয় পিছু ডাকলেও শোনে না।
বাইরে বের হতেই রাস্তার ওপারে অনিন্দিতাকে দেখতে পায় ঐশানী। নিজেকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করতে করতেই অনিন্দিতা রাস্তা পার হয়ে তার কাছে চলে আসে। নিজের ফোনটা দেখিয়ে বলে…..
–“সরি ভাবি। আসলে ফোনটা আর পার্স ভুলে মলে ফেলে এসেছিলাম। কিন্তু কোন দোকানে ফেলে এসেছি ভুলে গেছিলাম। তাই আবারও ব্যাক করতে হলো। সারা দোকান খুঁজে খুঁজে অনেক দেরি হয়ে গেল। তুমি কি একা রেস্টুরেন্টে ঠান্ডা খাবার ইনজয় করলে নাকি?”
–“তেমন কোনো ব্যাপার নয়।”
অনিন্দিতা খেয়াল করে ঐশানীর চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে রয়েছে। তার বাম গালে লাল দাগ পড়ে গিয়েছে।
–“তোমার চেহারা এমন লাগছে কেন? আর তোমার গালে কীসের দাগ? কি হয়েছে?” (চিন্তিত হয়ে)
–“তেমন কিছু না। বাড়ি যাব চলো। সেখানেই একবারে বিশ্রাম নেব গিয়ে।”
অনিন্দিতা আরো কিছু বলতেই অভয়কে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতে দেখে। জোরে ডেকে বলে…..
–“আরে ভাইয়া? তুই এখানে?”
হকচকিয়ে উঠে তাকায় অভয়। ঐশানীর দিকে একবার চোখ বুলিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়। একটা মেকি হাসি দিয়ে বলে…..
–“হুমম তো কেমন হলো তোদের শপিং?”
–“হুমম ভালো হয়েছে। কিন্তু তুই এখানে কি করে?”
–“এমনিই এসেছি। একটা কাজে।”
ঐশানী অস্বস্তি বোধ করে দ্রুত বলে…..
–“অনিন্দিতা বাসায় যাবে না? আমার খুব ক্লান্ত লাগছে। আমি গাড়ি ডেকে নিচ্ছি।”
ঐশানীর অদ্ভুত ব্যবহার দেখে সরু চোখে একবার একবার করে ঐশানী আর অভয়কে দেখে নেয় অনিন্দিতা। সে আন্দাজ করতে পারে তাদের মাঝে কিছু হয়েছে। ঐশানী দ্রুতই গাড়ি ডাকতে যায়। অভয়কে পেয়ে অনিন্দিতা সরাসরি জিজ্ঞেস করে…..
–“কি হয়েছে রে তোদের?”
–“কিছু না। আমার অফিসে কাজ আছে আমি যাচ্ছি। আর বাড়িতে যাস সাবধানে।”
অভয়ও কেমন যেন এড়িয়ে চলে যায়। অনিন্দিতা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দুজনকে বোঝার চেষ্টা করে।
চলবে……
[বি.দ্র. যারা বলছিলেন গল্প আগের মতোই রয়ে গেছে তাদের জন্য। আদোও গল্পটা একই সুরে যায়নি। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]