খোঁজ পর্ব ৫

0
518

#খোঁজ ৫ম_পর্ব
লেখক মোঃ কামরুল হাসান

মিথিলার বাবা বুলবুল সাহেব যখন রাতের মধ্যে বাড়ি ফিরে এলেন না। তখন পুলিশের লোকজন বুঝতে পারলো এটা নিশ্চয়ই কোন একটা চক্রের কাজ। নিশ্চয়ই তারা এটা বিনা কারণে করছে না! কিন্তু কি কারণ থাকতে পারে এর পিছনে? শত চেষ্টা করেও সেটাই তারা ভেবে পাচ্ছে না।

তিন, তিনজন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে অথচ এখনো পর্যন্ত কারও জন্যই কোন ধরনের মু*ক্তিপণ দাবি করা হয়নি! প্রফেশনাল কেউ বা কোন চক্র যদি এই কাজ করতো। তবে এতোদিনে অন্ততপক্ষে অদিতির মুক্তিপণ দাবি করা হতো? যেহেতু অদিতির নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটা প্রায় মাসখানেক হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে তা মোটেও ঘটেনি।

বরং একজনের পর একজন নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। এদিকে পুলিশ অফিসার টেনশনে আছে এই খবর আবার এক কান দুকান করে কোনদিন না জানি সাংবাদিকের কাছে পৌঁছে যায়?

তখন তো পাবলিক ও উপর মহলের চাপে তাদেরকে চ্যাপ্টা হয়ে যেতে হবে। তাই এই কেসটার তদন্ত তোর জুড়ে শুরু করে দিলো তারা। স্থানীয় দাগী আসামিদের মধ্যে যারা বাইরে আছে তাদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় শুরু হয়ে গেলো।

আজ একে ধরে পেটাচ্ছেন, তো কাল আরেক জনকে ধরে। কিন্তু কেসটা যেখানে ছিলো ঠিক সেখানেই রয়ে গেল। মোটেও কোন অগ্রগতির লক্ষ্মণ দেখা গেলো না। তাদের কাছে একটা সূত্র ছিলো মিথিলার হাত ধরে কিছু একটা পাবার আশা। কিন্তু সেই তো এখন নিখোঁজ হয়ে গেছে। সাথে সাথে তার বাবাও!

লিটু একদিন ফোন করে জানালো কেসটা মনে হচ্ছে আমাদের হাতে আর থাকছে না। এক সপ্তাহের মধ্যে আমরা যদি এর কূল কিনারা করতে না পারি তবে স্পেশাল টিমের হাতে কেসটার তদন্ত ভার তুলে দেওয়া হবে। আর আমাদের তখন রাঙামাটি বান্দরবানের মতো কোন দূর্গম জায়গায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

লিটু আমাকে অনেক কিছু বলার পরে অনুরোধ করে বললো, তুই একটু ভেবে দেখতো, অদিতি তার কোন শত্রুর কথা কখনো তোর সামনে বলেছে কি-না? অথবা এমন কারও নাম যা, সেই লোকটা কে অদিতি অনেক ঘৃ*ণা করে, তার দ্বারা ক্ষতি হতে পারে?

আমি একটুখানি ভেবে দেখলাম, কিন্তু তেমন কিছুই অদিতির মুখ থেকে আমি কখনো শুনিনি। তাই জিজ্ঞেস করলাম এ-সব কথা কেন জিজ্ঞেস করছিস? তোদের কি ধারণা অদিতির ব্যাক্তিগত কোন ঘটনার উপর ভিত্তি করে এসব ঘটনা ঘটে যাচ্ছে?

লিটু বললো ঘটনাটা হয়তো সেই দিকেই মোড় নিয়েছে? কারণ, এখন পর্যন্ত তিন জনের মধ্যে থেকে কারও জন্য কোন মুক্তিপণ দাবী করা হয়নি। কোন প্রফেশনাল ক্রিমিনাল এমন আচরণ করতে পারে না! তারা টাকার জন্যই অ*পহ*রণ করে থাকে। শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত কোন শত্রুর পক্ষেই এমন আচরণ করা সম্ভব! আমরা যে এঙ্গেল থেকে তদন্ত শুরু করেছি তাতে করে এই এঙ্গেল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের।

তুই কথাটা ভালো করে ভেবে তারপর আমাকে জানাবি। এই বলে লিটু ফোন রাখতে যাচ্ছিলো। আমি বললাম, ভেবে আর কি দেখবো? অদিতির সেই রকম কোন শত্রুতা কখনো কারও সাথেই ছিলো না। তবুও আমি আমার শ্বাশুড়ির কাছে জিজ্ঞেস করে পরে তোকে জানাবো। কিন্তু একটা কথা জিজ্ঞেস করতে মন চাইছে?

লিটু জিজ্ঞেস করে কি কথা? বললাম তিন জন কে যে একই কারণে অ*পহ*রণ করা হয়েছে তা কি করে বলা যায়? আর লোকগুলোও যে একই তাই কি বলা যায়? লিটু হেসে বলে, আমরা ধারণা করছি, শিওর নই!

পরদিন আবার শ্বশুর বাড়ি গেলাম। আমাকে দেখে শ্বাশুড়ি আম্মা কতক্ষণ চোখের জল ফেললেন। তারপর জিজ্ঞেস করলেন, বাবা! অদিতির কোন খবর পাওয়া গেলো?

আমি মাথা নিচু করে রইলাম। তিনি একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, জানি আর পাওয়া যাবে না, অদিতির খোঁজ! হঠাৎ এই কথাটা আমার হৃদয়ে একেবারে গেঁথে গেলো। ভাবলাম তিনি এতোটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে কেমন করে বলছেন? অদিতির খোঁজ আর পাওয়া যাবে না! তবে কি তিনি সব জেনেও, না জানার অভিনয় করে যাচ্ছেন? নয়তো এমন কথা কেন বলছেন তিনি?

আমিও ছাড়বার পাত্র নই! ঠিক পুলিশের লোকজন যেমন করে কোন আসামীকে জেরা করে। আমিও ঠিক তাই করলাম। জিজ্ঞেস করলাম, আম্মা আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আপনি অনেক কিছু জানেন? কিন্তু কোন কারণে ইচ্ছে করে তা লুকিয়ে রাখছেন!

আমি বলছি, আম্মা! এখনো সময় আছে। আপনি যা জানেন, পুলিশকে সবকিছু সরাসরি বলে দেন। নয়তো সত্যি গোপন করে রাখার জন্য আপনার শাস্তিও কেউ আটকাতে পারবে না! আমি আপনার কাছে অনুরোধ করছি, আপনি যা জানেন আমার কাছে নির্ভ*য়ে খুলে বলুন!

আমার শ্বাশুড়ি তখন চোখের জল নিজের শাড়ির আঁচলে মুছে বলেন, তুমি এ-সব কি কথা বলছো সায়েম? তুমি কি ভুলে গেছো, আমি অদিতির গর্ভধারিণী জননী! আর সেই আমি কি-না লুকিয়ে রাখবো কোন কথা? কেন লুকিয়ে রাখবো আমি! আমি কি চাই না, আমার মেয়ের খোঁজ মিলুক? আমি তার যুক্তির কাছে হেরে গেলাম ঠিক। কিন্তু তবুও কেন যেনো তার কথাগুলো আমার বিশ্বাস হতে চাইছে না!

যদিও আমি বুঝতে পারছি না। জগতে কোন মা চাইবে, নিজের নিখোঁজ সন্তান কে খুঁজে পাওয়া না যাক? কিন্তু আর কেউ বুঝতে না পারলেও আমি তো বুঝতে পারছি। সেই প্রথম দিন থেকে তিনি কিছু একটা তো লুকিয়ে রাখতে চাইছেন সবার কাছ থেকে। আজ এমন ভাবে তিনি বললেন, অদিতির খোঁজ আর পাওয়া যাবে না। যেনো তিনি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেছেন!

তাই জিজ্ঞেস করলাম, তবে বারবার কেন বলছেন, অদিতি কে আর পাওয়া যাবে না? তিনি আবারও কেঁদে উঠে বলেন, বাবা! মায়ের মন যে সবসময় কু ডাক ডাকে! তাই কেন যেনো বারবার মনে হচ্ছে এতোদিনেও যখন অদিতির কোন খোঁজ পাওয়া গেলোনা, তবে হয়তো আমার মেয়েকে আমি আর ফিরে পাবো না?

উনার মুখে এমন কথা শুনে বোঝতে পারলাম এর বেশি কিছু বললে, গুরুজনের অন্তরে আঘাত করা হবে! তাই আর কোন প্রশ্ন করে তাঁকে কষ্ট দেওয়ার ইচ্ছে হলো না।যদিও উনার উপর এখনো আমার একটুখানি স*ন্দেহ বাকিই রয়ে গেছে।

চলে আসার সময় শুধু জিজ্ঞেস করলাম, অদিতির কি কোন শত্রু থাকতে পারে? তিনি চমকে উঠে জিজ্ঞেস করলেন একথা কেন জিজ্ঞেস করছো বাবা! পুলিশের ধারণা অদিতির নিখোঁজ হওয়ার পিছনে কোন ব্যাক্তিগত ঘটনার জের থাকতে পারে? কথাটা শুনে তিনি কেমন যেনো চুপসে গেলেন। জিজ্ঞেস করলাম তেমন কেউ কি আছে? আমার জানা মতে নেই বাবা!

কিন্তু বাবা পুলিশের কেন এমন ধারণা হলো? বললাম ভেবে দেখুন, এখন পর্যন্ত অদিতির মুক্তিপ*ণ দাবী করা হয়নি! আমার শ্বাশুড়ি বলেন, তাই তো বাবা!

শ্বশুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে লিটু কে ফোন করে জানিয়ে দিলাম, অদিতির কোন ব্যাক্তিগত বিষয় এতে নেই। লিটু আচ্ছা ঠিক আছে বলে, লাইনটা কেটে দিলো।

দুদিন পরে সন্ধ্যার নামার একটু আগে হঠাৎ করেই মিথিলা বাড়ি ফিরে এলো। পুলিশের লোকজন আগেই সেখানে গোপনে পাহারায় ছিলো। লিটুর কাছে যখন খবর পেলাম মিথিলা ফিরে এসেছে। তখন আর কালবিলম্ব না করে সেখানে যাবার জন্য রওনা হয়ে গেলাম। রাত নয়টা নাগাদ সেখানে পৌঁছে থানায় গিয়ে জানতে পারলাম। মিথিলার অবস্থা খুব বেশি একটা ভালো নেই! তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বাড়ি পৌঁছে কিছু একটা বলতে গিয়ে সে অচেতন হয়ে পড়ে। তবে যেটুকু ওর মা বুঝতে পেরেছেন তাতে মনে হচ্ছে, সে তার বাবার সমন্ধে কিছু বলতে চাইছিলো! কিন্তু কি বলতে চেয়ে ছিলো তা স্পষ্ট করে বলার আগেই সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। মিথিলার মায়ের ভাষ্য অনুয়ায়ী ওর বাবাকে কেউ আঁটকে রেখেছে। তাই বলতে চেয়েছিলো মিথিলা। কিন্তু শেষটা ভালোভাবে বলতে পারেনি সে। মেয়েটা আমার কোলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

মিথিলা যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, সেখানে কড়া পাহারার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। রীতিমতো চিকিৎসা চলতে লাগলো তার। জ্ঞান ফিরে এলেও চিকিৎসক বললেন, আজ নয় কাল রোগিণীর সাথে কথা বললে ভালো হয়। কারণ রোগিণী মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েছেন। এখনই কোন ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে!

তাই হালকা পাতলা কয়েকটা কথা জিজ্ঞেস করে লিটু মিথিলার কেবিন থেকে চলে আসে। লিটু মিথিলার কাছ থেকে বেশি কিছু জানতে পারেনি। শুধু এইটুকু জেনেছে সে একটা খাবার দোকানে বসে হাল্কা কিছু খেয়ে বের হবার পরে একটা অটোরিকশাতে করে বাড়িতে আসছিলো। কিন্তু সেখানেই সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

কিভাবে তার সাথে এই ঘটনাটা ঘটেছে সেটা সে এখনো বোঝতে পারছে না। যখন তার জ্ঞান ফিরে এলো তখন দেখতে পায় মুখে কালো কাপড় দিয়ে একটা লোক তাকে পাহারা দিচ্ছে। চিৎকার করে লোকজন ডাকবে সে উপায় ছিলো না। তার হাত-পা ও মুখ বাঁধা ছিলো।

এইটুকু বলার পরেই মিথিলা অসুস্থ বোধ করতে থাকে। ডাক্তার লিটু কে অনুরোধ করে চলে যেতে বলে। এরপর দুদিন কেটে গেলো। মিথিলার শরীর এখন পুরোপুরি সুস্থ না হলেও অনেকটা ভালো হয়ে গেছে সে। ডাক্তাররা তাঁকে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছে।

তদন্ত অফিসার লিটু তার বাসায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য ডেকে পাঠায়। মিথিলার মা তাঁকে মিথিলার বেডরুমে নিয়ে যায়।

মিথিলা লিটুকে দেখে শোয়া থেকে উঠে বসার চেষ্টা করতেই সে বলে, থাক উঠার দরকার নেই। শুয়ে শুয়ে আমার কয়েকটি প্রশ্নের জবাব দিলেই হবে। মিথিলার দিকে তাকিয়ে অফিসার জিজ্ঞেস করে, এখন কেমন আছেন?

মিথিলা লিটুকে নিচু স্বরে জবাব দেয়, জ্বি ভালো আছি!

আচ্ছা আগে বলুন কেমন করে আপনি ওদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন? মিথিলা বলে আমি একটা ভাঙা কাঁচের টুকরো কুড়িয়ে পেয়ে সেটা দিয়ে আস্তে আস্তে দড়ি কেটে সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। যখন লোকটা খাবার দিতে দরজা খুলে ঘরে প্রবেশ করে। আমি দরজার আড়ালে লুকিয়ে ছিলাম। সে পিছনে ফিরে তাকানোর আগেই বাইরে গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দেই। আর দৌড়ে বেরিয়ে আসি সেখান থেকে।

লিটু আবারও জিজ্ঞেস করে, আপনি বেরিয়ে আসার সময় কেউ আপনাকে দেখতে পায়নি? মিথিলা স্বাভাবিক ভাবেই জবাব দেয়, জানি না স্যার! কিন্তু কেউ পিছু নেয় নি।

আপনি সেখানে কয়জন লোককে দেখতে পেয়েছেন? খাবার নিয়ে ঘরের ভিতরে সবসময় একজন লোকই প্রবেশ করতো। কিন্তু মুখ দেখতে পাইনি বলে, বুঝতে পারছি না। তারা একজন লোক নাকি পাল্টাপাল্টি করে আসতো?

লিটু একটু নড়েচড়ে বসে বলে, তবে তো আপনি কাউকে চিনতে পারবেন না, তাই না? জ্বি স্যার! মিথিলা জবাব দিতে গিয়ে একটু হাঁপাচ্ছে মনে হলো। অটোরিকশার চালকের আসনে যে ছিলো, তাকে তো চিনতে পারবেন নিশ্চয়ই?

মিথিলা একটুখানি ভেবে বলে, না স্যার! তার মুখটাও আমি ভালো করে দেখিনি। লিটু অবাক হয়ে বলে, তবে কাউকে চিহ্নিত করার উপায় নেই! না-কি বলেন, মিস মিথিলা? মিথিলা চুপ করে থাকে। এর কোন জবাব হয়তো তার জানা নেই, অথবা ইচ্ছে করে চেপে গেলো!

আচ্ছা আরেকটা কথা আপনার বাবা-র বিষয়ে। আপনার মা বললেন, সেদিন যখন আপনি বাড়ি ফিরে এলেন তখন আপনার বাবার সমন্ধে কিছু বলতে চাইছিলেন। কি সেই কথা এখন একটু বলবেন কি?

মিথিলা বাবার কথা মনে করে কেঁদে ফেলে বলে, আমি সেদিন বাবার কন্ঠ সেখানে শুনতে পেয়েছিলাম। তাঁকে মনে হয় অনেক মেরেছে লোকগুলো। তিনি কয়েক বার আমার নাম ধরে ডেকে ছিলেন কিন্তু আমি তখন কোন জবাব দিতে পারিনি।

আচ্ছা তবে আপনার বাবা কিভাবে বুঝতে পারলেন আপনি আশপাশে কোথাও আছেন? কথাটা বলে লিটু অধীর আগ্রহে মিথিলার দিকে তাকিয়ে রইলো। মিথিলা স্বাভাবিক ভাবে জবাব দেয়, সেটা আমি বলতে পারবো না স্যার!

জবাবটা শুনে লিটু মনে হচ্ছে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। বলে উঠে আপনি দেখি অনেক কিছুই জানেন না। অটোরিকশার চালক কে ছিলো তা জানেন না। সেখানে কয়েক জন ছিলো তা জানেন না। এমনকি তাদের কারও চেহেরাটাও দেখেন নি। কেমন করে জ্ঞান হারিয়েছেন তাও জানেন না।

আচ্ছা যেখান থেকে পালিয়ে এসেছিলেন, সেই জায়গাটা কোথায় সেটা চিনেন তো! নাকি তাও চিনতে পারবেন না? লিটুর কথায় মিথিলার যে ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে তা তার চেহেরা দেখে স্পষ্ট বোঝা গেলো। তাই লিটুর এমন প্রশ্নে সে অবাক হয়ে জবাব দেয়, তা মনে থাকবে না কেন? তবে বলুন দেখি সেই জায়গাটা কোথায়? লিটু মিথিলার দিকে সন্দেহ ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে।

মিথিলা লিটুর চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে বলে, শহর থেকে একটু দূরে একটা ডিগ্রি কলেজ আছে। তার পিছনে একটা পুরাতন ভাঙা আছে। আমি যখন বাড়িটা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় উঠি তখনই বুঝতে পারি, আমি এতোদিন সেই বাড়িতে বন্দী হয়ে ছিলাম! আচ্ছা বুঝতে পেরেছি মিস মিথিলা।

এখন তবে বলুন তো দেখি আপনি কেন সেখান থেকে আপনার বাবাকে সাথে নিয়ে এলেন না! যেহেতু আপনি জানতে পেরেছিলেন আপনার বাবা সেখানে রয়েছে? মিথিলা একটু চিন্তা করে বলে, আমি তখন অনেক ভয়ের মধ্যে ছিলাম। এমনকি পালিয়ে আসার সময় বাবার কথা আমার মনেও ছিলো না।

লিটু বলে পরেও তো যেতে পারতেন? আমার সেই সাহস ছিলো না তখন। আর শরীরও চলছিলো না আমার! কোনমতে একটা অটোতে উঠে বাড়ি পর্যন্ত এসেছি। আর বাবাকে ততোদিন সেখানে রেখেছিলো কি-না বুঝতে পারছিলাম না। কারণ একদিন মাত্র তার ডাক শুনতে পেয়েছিলাম আমি। পরে আর কখনো তার কোন সাড়াশব্দ শুনতে পাইনি!

আচ্ছা আমরা তদন্ত করে দেখবো আপনার বাবা এখন কোথায় আছে।

এবার লিটু একটু কড়া গলায় জিজ্ঞেস করে, মিস মিথিলা আপনি অদিতির সাথে দেখা করেছেন, তবুও তা অস্বীকার করেছেন। কিন্তু বুঝতে পারছি না, অস্বীকার করার কারণ কি?

এই কথা শুনে মিথিলা চমকে উঠে!

চলবে,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here