প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
পার্ট :১০
প্রীতি ভার্সিটি থেকে বাসায় চলে এসেছে ৷শরীর এখনো কালো রং এ ভর্তি ৷ রাস্তা দিয়ে আসার সময় অনেকেই তাকে দেখে হাসছিল ৷প্রীতি বাসায় এসে দেখলো ছেলে মেয়ে দুটো ঘুমিয়ে আছে ৷প্রীতি ওদের কপালে চুমু দিল ৷তারপর ফ্রেশ হতে চলে গেল ৷
প্রীতি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখলো ওরা এখনো ঘুমাচ্ছে ৷ গায়ের রং গুলো উঠাতে বেশ সময় লেগেছে ৷প্রীতি মাথা মুছে ছেলে মেয়েদের কাছে গেল ৷তারপর আদুরে গলায় ডাকতে লাগলো
বাবাই ওঠো ৷আমার মা তাড়াতাড়ি ওঠো ৷খাবার খেতে হবে তো সোনা ৷
প্রীতির আদুরে গলায় ছেলে মেয়ে দুটো চোখ খুলে তাকালো ৷প্রীতি মুচকি হেসে বলল
তাড়াতাড়ি ওঠো ৷ এখন খেয়ে নেবে ৷আর দেরি করা যাবে না ৷প্রীতি খাবার নিয়ে আসার জন্য যাবে ৷এমন সময় পেছন থেকে মেয়েটা বলল
আমরা তোমার কাছে থাকবো না ৷আমরা আব্বু আম্মুর কাছে যাবো ৷আমাদের বাসায় দিয়ে আসো ৷প্রীতি মেয়েটার কথায় কোনো জবাবা দিল না ৷আবারো হাটা দিল কিচেনের দিকে ৷
ঘড়ির কাটায় রাত নয়টা ৷প্রীতির বাড়ীটা বেশ নিরিবিলি ৷একাই এই বাড়ীটাতে থাকে ৷বাড়ীটা কেমন যেন একটা নিস্বব্ধ ভাব নিয়ে থাকে সব সময় ৷প্রীতির কাছে ছেলে মেয়ে দুটো আসতে চায় না ৷প্রীতিও ওদের খুব একটা জোর করে না ৷জোর করে আটঁকে রেখেছে ওদের ৷এটাই তো অনেক ৷বারান্দায় বসে সিগারেটের ধোয়া শূন্য উড়িয়ে দেয় প্রীতিলতা ৷চোখের পানিতে গাল গলা ভিজে গেছে ৷ পাচঁ ছয়টা সিগারেট শেষ ৷একটার পর একটা খাচ্ছে ৷আজকাল নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করে ওর ৷ভালো লাগে না আর এই জীবন ৷মরনটাই যেন তার এক মাত্র বন্ধু ৷জীবনের কোনো মানে এখন আর খুজে পায় না ৷পাবে কি করে নিজের ভাইয়ের কাছে চাইলেই যেতে পারে না ৷চাইলেই সন্তানতুল্য ঐ ছেলে মেয়ে দুটোকে বুকে জড়াতে পারে না ৷চাইলেই ভালোবাসার মানুষটাকে নিজের আসল পরিচয় দিতে পারে না ৷চৌদ্দ বছর ধরে অভিনয় করে আসছে ৷আর যেন পারছে না সে ৷এই তো সে কাদঁছে ৷কিন্তু কেউ তার চোখের পানি মুছে দেওয়ার নেই ৷আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে সে ৷নিজেকে আজ কাল জোকার মনে হয় প্রীতি ৷যার এক এক সময় এক একটা রুপে অভিনয় করতে হয় ৷
আকাশের দিকে তাকিয়ে নিরবে চোখের পানি ফেলছিল প্রীতি৷ হঠাৎ নিজের গালে নরম একটা স্পর্শ পেল সে ৷ পাশে তাকিয়ে দেখলো ছেলেটা দাড়িয়ে আছে ৷কত মায়া এই ছোট মুখটাতে ৷ ছোট ছেলেটা তার অস্পষ্ট ভাষায় বলল
তুমি কাদঁতো কেন পতা আন্তি ৷তুমি সিগালেল খাও ৷এতা তো পতা লোকেলা খায় ৷এতা খেলে মানুত তালাতালি মলে যায় আন্তি ৷তুমি এতা খেও না ৷
কেন যেন এই ছোট ছেলেটার কথায় প্রীতি হিচঁকি দিয়ে কেদেঁ উঠলো ৷ বড্ড কষ্ট হচ্ছে ৷এই ছেলে মেয়ের মধ্যে এত মায়া কেন প্রীতি জানে না ৷ওদের তো সে কাছে টানতে চায় না ৷তাহলে কেন ওর এই পাপে ভরা জীবনে ওরা জরিয়ে যাচ্ছে ৷
ছোট ছেলেটা প্রীতির মাথায় নিজের ছোট নরম হাতটা বুলিয়ে দিতে দিতে বলল আন্তি তুমি তো আমাদেল ধলে এনেতো ৷তুমি তো খালাপ মানুত ৷খালাপ মানুতরা এভাবে কাদেঁ ৷আল তুমি আমাদেল না মেলে ৷এভাবে আদল কেন কলছো ৷
প্রীতি কাদঁতে কাদঁতে বলল এই রকম ছোট ছোট মা বাবাকে কেউ মারে নাকি বাবাই ৷
আমাদের একদম ছোট বলবে না ৷ আমরা অনেক বড় ৷প্রীতি পাশে তাকিয়ে দেখলো ছোট মেয়েটা কোমরে হাত দিয়ে কথা গুলো বলছে ৷প্রীতি চোখের পানি মুছে বলল
আমি তো ভুলেই গিয়ে ছিলাম তোমরা অনেক বড় ৷দাড়াও দেখাচ্ছি মজা ৷প্রীতি ছেলে মেয়ে দুটোকে কাতুকুতু দিতে লাগলো ৷আর ছেলে মেয়ে দুটো হাসতে হাসতে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে ৷প্রীতির প্রানহীন গৃহে আজ হাসির জোয়ার ৷প্রীতিও হাসছে ৷
রাত গভীর ৷প্রীতি নিজের বাড়ী থেকে বের হয়ে গেল ৷ছেলে মেয়ে দুটো ঘুমিয়ে গেছে ৷ প্রীতি বাসার বাইরে এসে নিজের বাইক স্টার্ট দিল ৷তারপর এগিয়ে চলল নিজের গন্তব্যে ৷অনেকক্ষন পরে একটা বিশাল বড় বাড়ীর সামনে প্রীতি বাইকটা থামায় ৷বাড়ীটার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে সে ৷হ্যা এই বাড়ীতেই তো তার বউ হয়ে আসার কথা ছিল ৷ কিন্তু তা আর হলো না ৷এখানেই তার স্বপ্ন মানবের বাস ৷প্রীতি দেওয়াল টপকে বাড়ীর ভেতরে ঢুকে গেল ৷প্রীতি খুব সাবধানে দুই তলায় উঠে গেল ৷তারপর একটা ঘরে প্রবেশ করলো ৷ঘরের মধ্যে কোনো আলো নেই ৷তবে চাদেঁর আলোয় বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা যুবকটাকে দেখা যাচ্ছে ৷কত নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে সে ৷কিন্তু তার জন্য এখনো যে কেউ রাত জাগে ৷সেই খবর কি এই স্বপ্ন পুরুষ জানে ৷প্রীতি ছেলেটার পাশে যেয়ে বসলো ৷তারপর কপালে পরে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিল ৷কত শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে ৷আর কখনো কি তাকে এভাবে দেখা হবে ৷তা প্রীতি জানে না ৷বলা তো যায় না কখন ওপারে যাওয়ার সময় চলে আসে ৷আচ্ছা শরীরের রং বদলে গেলেই কি মানুষ বদলে যায় ৷হয়তো তাই হবে ৷ তা না হলে তার সূর্য সেন কেন তাকে চিন্তে পারছে না ৷এভাবে ভুলে যাওয়ার তো কথা ছিল না ৷সে কি একবারও তার প্রীতিলতাকে চিনতে পারে নি ৷সে তো নিজের কাজে সব সময় প্রমান দিয়ে চলেছে মানুষটার কাছে ৷কিন্তু তবুও এই মানুষটা কেন তাকে চিনতে পকরছে না ৷প্রীতি নির্ঝর নামক তার স্বপ্ন পুরুষের কপালে একটা চুমু দিল ৷
ঘুমের মাঝে নিজের পাশে কারো উপস্থিতি বুঝতে পেরেই নির্ঝর চোখ খুলল ৷আর খপ করে প্রীতির হাত ধরে ফেলল ৷নির্ঝরের হঠাৎ জেগে যাওয়ার প্রীতি কেপেঁ উঠলো ৷প্রীতি নির্ঝরকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল ৷প্রীতি বেশি দূর যেতে পারলো না ৷তার আগেই নির্ঝর তাকে ধরে ফেলল ৷তারপর বলল
কে আপনি ৷এত রাতে আমার ঘরে কি করছেন ৷ আপনি এর আগেও আমার ঘরে এসে ছিলেন ৷ কিছু দিন আগেও আপনি এসে ছিলেন ৷কিন্তু আমি আপনাকে ধরার আগেই চলে গেছেন৷কেন আসেন এখানে আপনি ৷
প্রীতি জবাব দিল না ৷এখানে বেশিক্ষন থাকলে সে ধরা পরে যাবে ৷তাই উপায় না পেয়ে আজও নির্ঝরের মুখে চেতনা নাশক স্প্রেটা স্প্রে করে দিল৷
চলবে….
প্রীতিলতা আসবে বলে
লেখিকা :আফরিন ইসলাম
বোনাস পার্ট
প্রীতি নির্ঝরকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিল ৷তারপর কিছুক্ষন নির্ঝরের দিকে তাকিয়ে থাকলো ৷ নির্ঝরের দুই চোখে চুমু দিল প্রীতি ৷নির্ঝরের গায়ে একটা চাদর দিয়ে ঢেকে দিল ৷তারপর আবারো বেরিয়ে গেল ৷
চারিদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার ৷কোথাও জন মানবের চিহ্ন নেই ৷প্রীতি নিজের মুখ থেকে মাস্কটা খুলল ৷তারপর পেছনের পকেট থেকে একটা ফোন বের করলো ৷মোবাইলটা অন করলো প্রীতি ৷তারপর একটা নাম্বারে কল করলো ৷
কিছুক্ষন বাজার পর প্রীতির কল ওপাশ থেকে রিসিভ হলো ৷ওপাশ থেকে একটা চিরচেনা কন্ঠ প্রীতির কানে ভেসে আসছে ৷ আজ কত দিন পর এই কন্ঠটা সে শুনছে ৷ফোনের ওপাশ থেকে আবেশ কথা বলে যাচ্ছে ৷কিন্তু প্রীতি কথা বলছে না ৷অবশেষে আবেশ কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে বলল
এত রাতে ফোন করে মানুষকে কেন জালাচ্ছেন ৷যত্তসব ৷আবেশ ফোন রাখতেই যাবে ৷এমন সময় একটা কথা শুনে সে থমকে গেল ৷
নিজের সন্তানদের চাই আবেশ চৌধুরী প্রীতি বলল ৷
আবেশ কাপাঁ স্বরে বলল আপনি কে ৷প্লিজ আমার ছেলে মেয়েদের ফিরিয়ে দিন ৷আমার স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি ৷ওরা ছাড়া আমার কেউ নেই ৷দয়া করে ওদের কোনো ক্ষতি করবেন না৷ আপনার কত টাকা লাগবে আমাকে বলুন ৷কিন্তু তবুও আমার ছেলে মেয়ের কিছু করবেন না ৷আমি আপনার পায়ে পড়ি বোন ৷দয়া করুন ৷আবেশ কথাটা বলেই কাদঁতে লাগলো ৷
প্রীতির বুকটা ফেটে যাচ্ছে ৷ প্রীতি নিজের কন্ঠে অতি কষ্টে রাগ ফুটিয়ে বলল
আপনি অতিরিক্ত কথা বলেন ৷আমি কি আপনার কাছে টাকা চেয়েছি ৷আপনার টাকা আমার দরকার নেই ৷আপনার স্ত্রী কেমন আছে আগে সেটা বলুন ৷
আমার নিরুপমা ভালো নেই ৷কাল থেকে কিছুই খায় নি ৷ঘুমায় ও না ৷পাগলের মতো করছে ৷নিরুপমার কিছু হলে আমি মরে যাবো ৷একটু দয়া করুন ৷
আপনার স্ত্রীর কাছে কি ফোনটা দেওয়া যাবে ৷
হ্যা ৷
তাহলে তাকে ফোনটা দিন ৷ফোনটা দিয়ে বলুন তার সন্তানকে যে কিডন্যাপ করেছে ৷সে কল করেছে ৷
আবেশ দৌড়ে নিরুপমার কাছে গেল ৷সে বালিশে ফুপিয়ে কাদঁছে ৷আবেশ স্ত্রীর কাছে যেয়ে বলল
নিরু কথা বলো ৷
আমি কারো সাথে কথা বলবো না ৷আমাকে আমার ছেলে মেয়ে এনে দাও আবেশ ৷ওরা কোথায় আছে আমি জানি না ৷আর তুমি নাটক করছো আমার সাথে ৷নিরুপমা চিৎকার করে কথা গুলো বলল ৷
একটু শান্ত হও নিরু ৷ যে কিডন্যাপ করেছে ৷ সেই কল করেছে ৷তোমার সাথে নাকি তার কথা আছে ৷ একটু কথা বলো লক্ষী ৷
নিরুপমা স্বামীর হাত থেকে খাবলে ফোনটা নিয়ে নিল ৷তারপর বলল
আমার ছেলে মেয়েকে কেন নিয়ে গেলে ৷আমি তো কারো ক্ষতি করি নি ৷আমার কোলটা খালি করো না ৷আমি আমার বাচ্চাদের ফেরত চাই ৷আমাকে ভিক্ষা দাও সন্তান ৷নিরুপমা কাদঁতে লাগলো ৷
একটা শর্তে দিতে পারি ৷
কি শর্ত বলো ৷আমি রাজি ৷যা বলবে সব করবো ৷দরকার হলে আমাকে মেরে ফেলে দাও ৷কিন্তু ওদের ছেড়ে দাও৷
কে বলেছে আমি ওদের মারবো ৷দরকার হলে নিজের জীবনটাই দিয়ে দেব আমি ৷তাও ওদের কিছু হতে দেব না ৷আর আপনাকে এখন থেকে ঠিক করে খেতে হবে ৷নিজের যত্ন নিতে হবে ৷ তবেই ওদের দেব আমি ৷
আমি এখনই খাবার খাবো ৷শুধু আমার মানিকদের ফেরত দাও ৷
দু দিন পর ফেরত পাবেন ৷আর একটা কথা ৷ওদের ফেরত পাবার পর দূরে কোথাও পাঠিয়ে দিবেন ৷এখানে ওদের জীবনের ঝুকি আছে ৷আপনার আত্মীয়ের মধ্যে কেউ ওদের খুন করতে চায় ৷নামটা আপনাদের এখন বলতে পারবো না ৷আর হ্যা আমি যে কল করেছি ৷এই ব্যাপারে কাঊকে কিছু বলবেন না ৷যদি বলেন তাহলে ছেলে মেয়ের আশা ছেড়ে দিন ৷এই জীবনে আর ওদের মুখ দেখবেন না ৷
তুমি যেমনটা বলেছ ৷আমরা ঠিক তেমন টাই করবো ৷কিন্তু ওদের ফিরিয়ে দাও ৷ আর আমার ছেলে মেয়েকে কেউ কেন মারতে চাইবে ৷
ওটা এখন বলা যাবে না ৷ সময় হলেই জানতে পারবেন ৷ ওদের নিয়ে একদম চিন্তা করবেন না ৷ওরা ঠিক আছে ৷একটু পর ওদের ছবি পাঠিয়ে দেব ৷দেখে নিবেন ৷এবার আমি ফোন রাখি দুষ্টু ছেলের বউ ৷
নিরুপমার কান্না হঠাৎ করেই থেমে গেল ৷ফোনের স্পিকার অন থাকায় আবেশেও এমন কথায় চমকে উঠলো ৷এই নাম ধরে প্রীতি ডাকতো নিরুপমাকে ৷তাও সবার সামনে না ৷প্রীতি কেবল আবেশের সামনেই তাকে দুষ্টু ছেলের বউ বলে ডাকতো ৷
প্রীতিলতা হাসছে ৷হাসতে হাসতে বলল কি চৌদ্দ বছর পর ডাকলাম এই নামে তোমাকে তাই না ৷
নিরুপমা শুধু বলল প্রীতিলতা ৷
প্রীতি জবাব দিল না ৷নিজের কন্ঠ স্বাভাবিক করে বলল রাখি ভালো থেকো ৷বেচেঁ থাকলে দেখা হবে ৷
আবেশ ফোনটা কানে নিল ৷আর চিৎকার করে প্রীতির নাম ধরে ডাকতে লাগলো ৷কিন্তু ততক্ষনে প্রীতি কল কেটে দিয়েছে ৷আবেশের ফোনে হঠাৎ মেসেজ আসার শব্দ এলো ৷আবেশ দেখলো তার ছেলে মেয়ের ছবি পাঠিয়েছে ৷তাদের হাসিমাখা মুখের ছবি ৷নিরুপামা আর আবেশ একে ওপরকে জরিয়ে কাদঁতে লাগলো ৷তাদের ছেলে মেয়ে ঠিক আছে ৷যেখানেই আছে ভালো আছে ৷এর থেকে আর কি চাই ৷
সকালের সোনালী রোদ নির্ঝরের চোখে পড়তেই তার ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷মাথাটা এখনো ভার হয়ে আছে ৷কাল রাতেও মেয়েটা তাকে অঙ্গান করে পালিয়েছে ৷এখন থেকে সাবধানে থাকতে হবে ৷আবার আসুক সে ৷তখন নির্ঝরও তাকে বোঝাবে কত ধানে কত চাল ৷নির্ঝর ঝাড়া মেরে চাদরটা সরিয়ে দিল তারপর ওয়াসরুমে চলে গেল ৷
নির্ঝর দাতঁ ব্রাশ করতে করতে আয়নায় নিজের চেহারা দেখে থমকে গেল ৷একি তার চোখে ,কপালে ঐ ফাজিল মেয়েটা চুমু খেয়েছে ৷আবার লিপস্টিকের দাগও রেখে গেছে ৷একদম লাল টকটকে রং ৷হাতের কাছে পেলে দেবে এক চড় ৷বেয়াদব মেয়ে একটা ৷
অপরদিকে প্রীতি বাচ্চাদের খাইয়ে দিল ৷তারপর নিজে রেডি হতে বসলো ৷ আজ সে ছদ্দবেশ ধারন করবে ৷আজ প্রীতি পুরুষের ছদ্দবেশ ধারন করলো ৷তাকে তার পরবর্তী শিকারের জন্য বের হতে হবে ৷বাচ্চা দুটো তার দিকে তাকিয়ে আছে ৷প্রীতি ওদের দিকে তাকিয়ে হাসলো ৷তারপর ওদের চুমু দিয়ে বেড়িয়ে গেল ৷
প্রীতি ছদ্দ বেশে একজন বৃদ্ধ সেজেছে ৷কেউ বলবেই না সে কোনো মেয়ে ৷প্রীতি একটা রিকশা নিয়ে নিজের গন্তব্যে বেড়িয়ে গেল ৷তার এবারের লক্ষ্য ডঃ শাকিল ৷প্রীতি রিকশা করে একটা বিরাট হাসপাতালের কাছে এলো ৷তারপর রিকশা থেকে নেমে খুড়িয়ে হাটতে লাগলো ৷ হাসপাতালের ভেতর যেয়ে প্রীতি ডঃ শাকিলের খোজ করলো ৷
প্রীতি চেয়ারে বসে আছে ৷একটু পরেই ডঃ শাকিল আসবে ৷প্রীতির মাথায় ঘুড়ছে ভয়ংকর কিছু ৷একেও সে ছাড়বে না ৷যেই লোকটা তার মাকে তারই সামনে দুই বার ধর্ষন করেছে ৷তাকে সে কি করে ছেড়ে দেবে ৷
প্রায় একঘন্টা পর ডঃ শাকিল এলো ৷কয়েক জনের পর প্রীতির সিরিয়াল ৷সেও আজ শাকিলের কাছ থেকে চিকিৎসা নেবে ৷একটু পরে প্রীতির ডাক পড়লো ৷প্রীতি ভেতরে ঢুকে গেল ৷
চলবে …..