বোনু
Part_12
#Writer_NOVA
২দিন পর…..
অনেকদিন ধরেই অথৈই টিউশনি করে ফেরার পথে পিছনে তাকাতে তাকাতে আসে।যদি সেদিন যে ছেলেটা ওকে বখাটে ছেলেদের হাত থেকে বাঁচিয়ে ছিলো তাকে দেখতে পায়। ৬ মাস কেটে গেছে তার সাথে দেখা নেই।
অথৈঃ ঐ ছেলেটা কি সত্যি কোন মানুষ ছিলো।নাকি ভূত-প্রেত। বাবা—গো সত্যি যদি ভূত হয়?।নির্ঘাত ভালো ভূত।খারাপ ভূত হলে তো আমায় মেরেই ফেলতো।নিশ্চয়ই ঐ টা ভূত ছিলো।এই রে আজও তো রাত হয়ে গেছে যদি আজ আমায় একা পেয়ে ঘাড়টা মটকে দেয়।বেশি বেশি করে দোয়া পড়তে পড়তে ভাগি।ব্যাঙের রাস্তাও আজ ফুরাবেও না।
আজও এই পথে বাড়ি ফিরছে আদিল।মনটা ভালো নেই একরাশ বিষন্নতা ঘিরে রেখেছে।একজনের কথা খুব মনে পরছে।সে এমনটা না করলেও পারতো।গাড়ি চলছে আপন গতিতে।হঠাৎ চোখ আটকে যায় অথৈর দিকে।ল্যাম্প পোস্টের আবছা আলোতে যদিও মুখটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না। তবে আদিলের মনে হচ্ছে এটা সেদিনের মেয়েটাই হবে।মেয়েটার সব খবর,বায়োডাটা তার পরের দিন খোঁজ নিয়ে জেনে গিয়েছিলো আদিল।অথৈই কে দেখে মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে গেল।কেন জানি ওকে দেখলে একটা ভালো লাগা কাজ করে।
আদিলঃ মনে হচ্ছে মেয়েটা অথৈ।আজও একা বাড়ি ফিরছে।সেদিন সাবধান করে দিলাম এতো রাত করে ফিরতে না।আজও সে একি কাজ করছে।মেয়েটাকে কে বুঝাবে রাতটা মেয়েদের জন্য সেফ না।এক কাজ করলেই তো হয় ওকে আমি গাড়ি করে বাসায় পৌঁছে দেই। তাহলেই তো ঝামেলা মিটে যায়।
আদিল গাড়ি অথৈ এর সামনে থামালো।হঠাৎ করে একটা গাড়ি অথৈ এর সামনে থামতে দেখে অথৈই ভয় পেয়ে গেল।বুকটা ঢিপ ঢিপ করছে। কে জানি কোন লম্পট, বদমাশ আবার ওর সর্বনাশ করার জন্য এলো।
অথৈঃ আল্লাহ রক্ষা করো।আজ বাঁচিয়ে দেও।এই কান ধরেছি আর কখনও এতো রাত করে বাড়ি ফিরবো না।এবারের মতো বাঁচিয়ে দেও না।
(বিরবির করে)
আদিল দেখলো অথৈ চোখ বন্ধ করে কি জানি বিরবির করছে।হালকা বাতাসে কপালের বেবি চুলগুলো নড়ছে।মুখটা অসম্ভব মায়াবী লাগছে।মুখের মধ্যে নেই কোন সাজ-সজ্জা।অবাক নয়নে আদিল ওর দিকে তাকিয়ে আছে। অনেকখন ধরে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে অথৈ টিপটিপ করে চোখ খুললো।চোখ খুলে যে আদিলকে দেখে আরেকদফা ধাক্কা খেলো।
অথৈঃ ও আল্লাহ গো ভূত।কে কোথায় আছো গো? আমায় বাঁচাও।আমাকে জলজ্যান্ত ভূতে ধরছে।পালা অথৈ পালা।তোর ঘাড় মটকে দিবে।
আদিলঃ ভূত কে ভূত?অথৈ আর ইউ ওকে।কি যা তা বলছো? ওয়েট দাঁড়াও।
আদিলের কথা শোনার আগে অথৈ ফুটপাত দিয়ে দৌড়।ওর ভাবনা আদিল কোন মানুষ নয়।আদিল গাড়ি থেকে বেরিয়ে অথৈর পেছনে ছুটলো।
আদিলঃ অথৈ স্টপ।আমি কোন ভূত নই।
অথৈঃ এই রে ভূতটাও তো আমার পেছন পেছন আসছে।অথৈই আজকে তুই শেষ। তোরসব রক্ত খেয়ে তোকে মেরে ফেলবে।
আদিলঃ অথৈ দাঁড়াও।কি উল্টো -পাল্টা বকছো?
অথৈঃ আমার নামও জানে।ডিজিটাল ভূত মনে হচ্ছে।
একটা সরু গলিতে ঢুকে পেছনে তাকিয়ে অথৈ আদিলকে দেখতে পেলো না।বুকের মধ্যে বড় করে একটা ফুঁ দিয়ে হাঁটতে লাগলো। মনটা তার ভিষণ খুশি।ভূতকে বোকা বানাতে পেরেছে সে।
অথৈঃ বাহ্ বাহ্ । কেয়া ব্যাত হে।আমিতো হেব্বি জিনিয়াস হয়ে গেছি।ভূতের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফেলেছি।এই বীরত্বের কাহিনী তো সবাইকে বলতেই হয়।আমিতো ফেমাস হয়ে যাবো।
আনমনে হাসতে হাসতে সামনে কিছুর সাথে বারি খেয়ে পরে যেতে নিলে কেউ ওর হাতটা ধরে ফেললো।
অথৈ তাকিয়ে দেখে আদিল।
অথৈঃ ??ভ—উ–ত।
আদিলঃ একটা থাপ্পড় মেরে দাঁতগুলো সব ফেলে দিবে।কে ভূত? আমি রক্তে,মাংসে গড়া মানুষ। যদি ভূত হতাম তাহলে কি তোমায় ধরতে পারতাম?
অথৈঃ আপনি তো ডিজিটাল ভূত তাই ধরতে পারেন।
আদিলঃ ঠাটিয়ে চড় খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছে। আরেকবার ভূত বলবে তো হাত ছেড়ে দিবো।হাতটা ছাড়লেই তুমি গিয়ে পরবে পেছনের ড্রেনে।
অথৈঃ ও আল্লাহ গো।পেছনে দেখি ড্রেন।ইয়ে মানে ভূত ভাই একদম ছাড়বেন না বলে দিচ্ছি। পরে গেলে আমার কোমড়টা শেষ। আর ড্রেনের পানি যেই দূর্গন্ধ।
আদিলঃ আরেকবারআমায় ভূত বললে আজকে তোমায় এই ড্রেনের পানিতে গোসল করে বাড়ি ফিরতে হবে।
অথৈঃ আচ্ছা, আর বলবো না।আপনি তো মানুষ।
আদিল অথৈই কে হাত ধরে সোজা করে দাঁড় করালো।তারপর টানতে টানতে গাড়ির দিকে নিয়ে যেতে লাগলো।
অথৈঃ আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
আদিলঃ তোমার ঘাড় মটকাবো।
অথৈঃ এবারের মতো ছেড়ে দিলে হয় না?।
আদিলঃ চুপচাপ আমার সাথে চলো।আমি তোমায় বাড়ি পৌঁছে দিবো।
???
সকালে……
সব ভাই-বোন একসাথে ব্রেকফাস্ট করতে বসেছে।উষার ডান পাশে ঈশান,বাম পাশে ইশাত।আদিলের পাশে অর্ণব।
ঈশানঃ বোনু জুসের জগটা দে তো।
উষাঃ তোর সাহস কত বড় আমাকে বলিস জগ দিতে।তুই উঠে নিয়ে যা।
ঈশানঃ দে জলদি করে।
উষাঃ নে ধর।
ঈশানঃ ব্রেড টোস্টটা দে তো।
উষাঃ আমি পারবো না। তোরটা তুই নিয়ে নে।
ইশাতঃ আমাকে পানির গ্লাসটা দে তো উষা।
উষাঃ তোরা কি আমাকে কাজের মেয়ে পেয়েছিস?
ঈশানঃ দে না ব্রেড টোস্টটা।
উষাঃ পারবো না, যা ভাগ।তোর বউকে বল।
ঈশান বিষম খেয়ে কাশতে লাগলো।আসলে উষা কথাটা নুহার দিকে তাকিয়ে বলেছে।আর এতখন ঈশান নুহার দিকে তাকিয়ে উষার কাছে একটার পর একটা জিনিস চাচ্ছে। নুহা কিচেন থেকে এসে এটা সেটা টেবিলে রেখে যাচ্ছে।
ইশাতঃ আমাকে গ্লাসটা দে।
উষাঃ তুমি কি চাচ্ছো আমি তারু বেবির কথাটা ভাইয়াদের বলি? কি রে সেজ ভাইয়ু?
ইশাতঃ লক্ষ্মী বোনু আমার।তোর কোন কিছু দিতে হবে না।বরং তুই আমায় বল তোর কি লাগবে?
উষাঃ মনে রাখো।পরেরবার কিছু চাইলে ভেবে চিন্তে চাইবা।নয়তো বড় ও মেজো ভাইয়ুর কানে আস্তে করে বিষ ঢেলে দিবো।আমি কিন্তু সব জানি।তারু বেবি আমায় সব বলে দিয়েছে।
ইশাতঃ কি বলেছে তোকে?
উষাঃ যা বলার তাতো বলছেই।এখন আমি যদি ভাইয়ুদের বলি তুমি তারুর পিছনে পিছনে ঘুরো।তাহলে সেটাই ভাইয়ুরা বিশ্বাস করবে।সো বি কেয়ার ফুল।
ইশাতঃ আল্লাহ এতো বড় মিথ্যা কথা।
উষাঃ সেটা তো তুমি আর আমি জানি।ভাইয়ুরা জানে না।আমি যা বলবো তাই বিশ্বাস করবে।
(এক চোখ মেরে)
ইশাতঃ থাক বোনু তোর কিছু বলতে হবে না।বল তোর কি লাগবে?আমি তাই এনে দিবো।
উষাঃ ঘুষ দিচ্ছো।
ইশাতঃ বোনু আমার তুই যা চাইবি তাই দিবো।ছোট বেলায় একবার আমায় মিথ্যা কথা বলে যা মার খাইয়েছিস। আমি এই বয়সে মার খেতে চাই না।
উষাঃ এতো করে যখন বলছো তাহলে তো নিতেই হয়।নইলে তোমাকে অসম্মান করা হয়।বেশি না ৫ হাজার টাকা দিও তো।
ইশাতঃ ৫ হাজার। এতো টাকা দিয়ে কি করবি?২ হাজার দিবো।
উষাঃ একদম কিপ্টামি করবে না।যা চেয়েছি তাই দিবে।এক পয়সাও কম নয়।
ইশাতঃ ওকে দিয়ে দিবো।কিন্তু তুই ভাইয়াদের উল্টো পাল্টা কিছু বলবি না।
উষাঃ ওকে সেজু ভাইয়ু।
ঈশানঃ ফলের ঝুড়িটা দে তো।
উষাঃ এবার তোর ব্যবস্থা করতে হবে। তোমার হাত থেকেও আমি ৫ হাজার গলাবো।(মনে মনে)
ঈশানঃ কি রে হা করে কি দেখছিস?
উষাঃ কি শুনলাম তোমার নামে ছোট ভাইয়ু?তুমি নাকি নুহাকে পছন্দ করো?
ঈশানঃ তোকে কে কে কে বলছে?
(আমতা আমতা করে)
উষাঃ মনে হচ্ছে ঠিক জায়গায় তীরটা মেরেছি।আমায় তো চিনো না ভাইয়ু।আমাকে দিয়ে কাজ করানো বের করছি।এখন থেকে তুমি আমার সব কথা শুনবা।
(শয়তানি হাসি দিয়ে)
অর্ণবঃ বোনু,ঈশান তোরা কি শলা-পরামর্শ করছিস?
ঈশানঃ কিছু না ভাইয়া।
উষাঃ বড়, মেজো ভাইয়ুকে বলবো তোর সাথে নুহার লাইন আছে। তুই নুহার সাথে লাইন মারার চেষ্টা করছিস।কিন্তু নুহা রাজী হচ্ছে না।কি রে বলবো না কি?(ভ্রু নাঁচিয়ে)
ঈশানঃ বোনু তুই না একটা হেডফোন চেয়েছিলি আমার কাছে। তোকে আজি সেটা কিনে দিবো।জাদু বোনু আমার কিছু বলিস না।
উষাঃ আমি এখন আর হেডফোন নিবো না।আমাকে ৫ হাজার টাকা দিও। তাহলেই চলবে।
ঈশানঃ ৫ হাজার টাকা!!!
উষাঃ দিবে না তো।ওকে বড় ভাইয়ু,মেজু ভাইয়ু।
আদিলঃ কি হয়েছে বোনু?
অর্ণবঃ কিছু লাগবে বোনু?
ঈশানঃ বোনু প্লিজ কিছু বলিস না।আমি দিয়ে দিবো।
উষাঃ বড় ভাইয়ু,মেজো ভাইয়ু কিছু না।
ঈশানঃ তোকে আমি পরে দেখে নিবো।
উষাঃ তুই আমার কিছু করতে পারবি না।ঘুষি মেরে তোর চেহারার আদল বদলে দিবো।চেহারায় বড় বড় আলু দেখতে পারবি।
ঈশানঃ ??
???
সাদা রংয়ের একটা গাড়ি এসে থামলো মির্জা কুঠিরের সদর দরজা সামনে।গাড়ি থেকে নামলো জিবরান ও জিনিয়া।বিজনেসের চাপে জিবরান নিঃশ্বাস ছাড়ার সময় পায় না।আজ কাজ সব ফেলে রেখেই প্রিয়সীকে দেখতে এসেছে। ব্যাংককে ৪ বার গিয়ে উষার সাথে দেখা করে এসেছে। উষার স্মৃতি শক্তি নেই বলে ১মে মন খারাপ হলেও এখন খারাপ হয় না।উষা পুরোপুরি সুস্থ আছে এটাতে আল্লাহর কাছে লাখ কোটি কোটি শুকরিয়া আদায় করে।
ভেতরে ঢুকলো দুই ভাই-বোন।
জিবরানঃ আসালামু আলাইকুম।
ইশাতঃ বড় লোক মানুষ তাহলে আমাদের গরিবের গৃহে পদার্পণ করেছে।
ঈশানঃ খান ইন্ড্রাস্টির ওনার মোঃজিবরান খানকে আমাদের মাঝে দেখা যাচ্ছে।
আদিলঃ সরি খাওয়ার সময় সালামের উত্তরটা নিতে পারলাম না।কেমন আছো জিবরান?
জিবরানঃ আলহামদুলিল্লাহ, আপনাদের দোয়ায় ভালো।
অর্ণবঃ নাস্তা কর জিবরান।
জিনিয়াঃ কেমন আছো সবাই?
ইশাতঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপু।
আদিলঃ আরে জিনিয়া আপু যে।কি খবর?
জিনিয়াঃ কেমন আছো অর্ণব?
অর্ণবঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো?
জিনিয়াঃ ভালো।
উষাঃ এই আপুটা কে?
জিনিয়াঃ আমি জিনিয়া। উষা তুই আমাকে চিনতে পারছিস না।
উষাঃ চেহারাটা চেনা চেনা লাগছে।ঠিক চিনি না।উনাকে (জিবরান) তো ব্যাংককে দেখেছি কয়েকবার।উনার নাম জিবরান খান। কিন্তু আপনি কে?
জিনিয়াঃ আমি ওর বড় বোন জিনিয়া খান।
উষাঃ ও আপনি উনার বোন।ভালো আছেন আপু?
জিনিয়াঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
ঈশানঃ জিবরান তোকে তো আজকাল ফোনেও পাই না।খবর কি তোর?
জিবরানঃ আমার খবর।এই তো বেঁচে আছি, ভালো আছি। এর থেকে বেশি আর কি?
কথাগুলো উষার দিকে তাকিয়ে একটা বড় দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো। জিনিয়া অপলক চোখে অর্ণবের দিকে তাকিয়ে আছে। ভেবেছিলো আজ হয়তো অর্ণব নিজ থেকে ওর সাথে অনেক কথা বলবে।কিন্তু না,আপন মনে সে খাবার খাচ্ছে।
উষাঃ কি ছোঁচা রে? ভাইয়ু মাত্র একবার বললো খেতে বসতে অমনি খেতে বসে পরলো।ইনি নাকি বিজনেস ম্যান।সত্যি বিজনেস ম্যান তো। নাকি রাস্তা থেকে সব কিছু ভাড়া করে নিয়ে এসে ফুটানি দেখাচ্ছে।বাপরে কি ছোঁচার ছোঁচা। (মনে মনে)
চার ভাই ও জিবরান সবাই চোখে চোখে কি জেনো ইশারা করে বুঝালো।ইশাত ইঙ্গিত পেয়ে শুরু করলো।
ঈশানঃ জিবরান তোর লাভ স্টোরির কিছুটা আমাদের বল।কোন দিন তো কিছু বললি না।
জিবরানঃ চল আজ বলি। আমি একজনকে অনেক ভালবাসতাম। তাকে বিশাল বড় একটা গোলাপের তোড়া নিয়ে প্রপোজ করতে গিয়েছিলাম ৮ মাস আগে।
আদিলঃ হঠাৎ এসব কথা।
জিবরানঃ মনে পরলো তাই বললাম।
ঈশানঃ তারপর কি হয়েছিলো?
জিবরানঃ সে মানুষটা বললো তার নাকি গোলাপ ফুল পছন্দ না। তাকে যদি আমি দুই হাত ভর্তি করে কচুরি ফুল দিয়ে প্রপোজ করতে পারি তাহলে সে আমাকে এসেপ্ট করে নিবে।
ইশাতঃ কচুরি ফুল!!(অবাক হয়ে)
জিবরানঃ জ্বী হ্যাঁ।কচুরি ফুল।ঢাকার শহরে আমি কচুরি ফুল পাবো কি করে?এখানে তো পুকুর নেই। যেগুলো আছে সেগুলো তো পরিষ্কার করে রাখে।তাতে কচুরিপানা রাখে না।এই গরমের দিনে কচুরিফুল পাবো কোথায়?আমি পরে গেলাম বিপাকে।
অর্ণবঃ আমাদের বোনুরও তো কচুরিফুল পছন্দ।
ঈশানঃ কি বিচ্ছিরি পছন্দ?অবশ্য মানুষ যেমন পছন্দ তো তেমন হবেই।
উষাঃ ভাইয়ু চুপ করিস কিন্তু। নয়তো বলে দিবো কিন্তু। (কপাল কুঁচকে)
ঈশানঃ ?
আদিলঃ তারপর কি হলো?
জিবরানঃ তারপর আবার কি হবে? আমি কচুরি ফুল পাইনি আর তাকে প্রপোজ করাও হয়নি।তবে আমি চিন্তা করেছি এর মধ্যে তাকে প্রপোজ করবো।
ইশাতঃ কচুরিফুল পেয়েছিস?
জিবরানঃ সেটা তো সেদিন দেখা যাবে। যেদিন তাকে প্রোপজ করবো।
উষা চুপ করে জিবরানের কথা শুনছিলো।ওর কেন জানি মনে হচ্ছে জিবরান কথাগুলো ওকেই বলছে।মাথাটা চক্কর দিচ্ছে। কেমন জানি করছে? জিবরানকে খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে। উষা চুপ করে উঠে নিজের রুমে চলে গেল। এতোখন সবাই প্ল্যান করেই এসব কথা বলছিলো।
জিবরানঃ আমার মনে হয় না কাজ হয়েছে?
অর্ণবঃ তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
ইশাতঃ সবকিছু মনে করাতে হবে।
জিনিয়াঃ চেষ্টা করতে ক্ষতি কি?
ঈশানঃ কবে যে আমাদের বোনুর সব মনে পরবে?
আদিলঃ আল্লাহ ভালো জানে।
জিবরানঃ ওর যদি স্মৃতি শক্তি না ফিরে তাহলে বলতেও পারবো না কে ওকে এক্সিডেন্টর দিন কফি হাউসে ডেকেছিলো।
অর্ণবঃ আদি তুই কি কিছু বের করতে পেরেছিস?
আদিলঃ না ভাইয়া,নাম্বারটা এক ফেক্সিলোডের দোকানদারের।সে কিছু বলতে পারে না।সেদিন নাকি তার সহযোগী দোকানে বসেছিলো।চিন্তা করো না সে যেই হোক তাকে আমি খুঁজে ঠিক বের করবো।
জিবরানঃ অরূপ কে দেখছি না যে।
ইশাতঃ অরূপকে একটা কাজে পাঠিয়েছি কিছু দিনের জন্য।
জিবরানঃ আমি আগামী পরশু উষার জন্য একটা পার্টি রেখেছি। সেদিন আমি উষাকে প্রপোজ করবো।যদি ওর কিছু মনে পড়ে।যদি আপনাদের আপত্তি না থাকে।
অর্ণবঃ আমাদের আর কি আপত্তি থাকবে? তুমি যেটা ভালো মনে কর তাই করো।
চার ভাই বোনকে তৈরি হওয়ার জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্র এগিয়ে দিচ্ছে। ঈশানের হাতে কালো জুতো,আদিলের হাতে ড্রেস,অর্ণবের হাতে ওরনা,আদিলের হাতে স্কার্ফ।
অর্ণবঃ বোনু তৈরি হয়ে নে।
আদিলঃ কলেজে দেরি হয়ে যাবে তো।
দরজায় নুহা ও জিনিয়া দাঁড়িয়ে ওদের কান্ড দেখছে। জিবরান উষার রুমের সোফায় বসে মোবাইল গুতাচ্ছিলো।হঠাৎ করে সেখান থেকে উঠে উষার কাছে গেলো।হুট করে সবার সামনে উষাকে পেছন থেকে গলা জড়িয়ে ধরলো। নিজের থুঁতনিটা উষার মাথার ওপর রাখলো।সবাই অবাক জিবরানের কান্ডে।শুধু উষা নিশ্চুপ হয়ে থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে।
#চলবে
গল্পটা বোধহয় খুব পেঁচানো হয়ে যাচ্ছে। আমি চেষ্টা করি যাতে না পেঁচায়। তারপরও মনে হচ্ছে কি রকম পেচাঁনো ও অগোছালো হয়ে যাচ্ছে। আমি আপনাদের মনের মতো করে গুছিয়ে লিখতে পারছি না।তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিছু দিন ধরে আমি প্রচুর মাথা ব্যাথায় ভুগছি।হয়তো এই কারণে গল্পটা গুছিয়ে লিখতে পারছি না বা অগোছালো হয়ে যাচ্ছে। আমি দুঃখিত তার জন্য ??।
#Part_11
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2947914865437246/