বোনু Part_13

0
614

বোনু
Part_13
#Writer_NOVA

সারা পার্টির পরিবেশটা অন্ধকার। স্লো ভয়েজে রোমান্টিক গান বাজছে। যে যার যার প্রিয় মানুষটার সাথে কাপল ডান্স করছে।তারিন আজ ফিরোজা কালার বড় গাউন পড়েছে।সাথে হালকা মেকআপ,ঠোঁটে একটু গাঢ় করে লিপস্টিক। চুলগুলো অর্ধেক সামনে এনে দুইটা গোলাপ ফুলের ক্লিপ মারা।ইশাত আজ ফিরোজা কালার শার্ট, কালো প্যান্টের সাথে ইন করে পরেছে।কোমড়ের বেল্টের মধ্যে স্পষ্ট E অক্ষরটা দেখা যাচ্ছে। চুলগুলো স্পার্ক করা।চোখে কালো সানগ্লাস। পুরো ক্যান্ডি বয়।পার্টির সব মেয়েরা আড় চোখে ইশাতকে খেয়াল করছে। তারিনের ইচ্ছে করছে গিয়ে ওর গালে কামড় দিতে।

তারিনঃ এই ছেলেটা এতো স্টাইল করে এসেছে কেন? আমাকে পাগল বানাবে নাকি।আমারতো ইচ্ছে করছে এখনি গিয়ে খেয়ে ফেলি।ইস,কত সুন্দর লাগছে আমার জানুটাকে।এই জন্যই তো ওকে আমি এত ভালবাসি।কবে যে বুঝবে আমাকে?সব মেয়েদের কি আমার ইশাতের দিকেই তাকাতে হবে।বেহায়া,নির্লজ্জ মেয়েগুলো স্টাইল করা ছেলে দেখলেই হা করে তাকে গিলতে হবে।যেটা আমার ইশাতের দিকে তাকাবে তার চোখ তুলে নিবো।দাঁড়া বের করছি তোদের হা করানো।আমি ইশাতকে আমার জন্য বুকিং দিয়ে রেখেছি।শরম করে না তোদের।অন্যর হবু জামাইয়ের দিকে তিতা বেহায়ার মতো তাকাতে।

ইশাতকে ঘিরে অনেক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বাস্কেটবল টিমের ক্যাপ্টেন বলে কথা। তাছাড়া সবার ক্রাসতো আছেই। তারিন রেগে ইশাতকে ভিড় ঠেলে মাঝখানে থেকে হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে এলো।ইশাতও একটা বড় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো।এতক্ষণ বেচারাও এতো মেয়ের ভিড়ে আন কমফোর্টেবল ফিল করছিলো।
তারিনঃ আমার দিকে তাকাও তো।
ইশাতঃ কি করছিস তারু?
তারিনঃ একদম কথা বলবে না।কাজলের টিপ দিচ্ছি যাতে কারো নজর না লাগে।
ইশাতঃ পাগল হলি তুই।
তারিনঃ সেটা তো কবের থেকেই।দেখি আমার দিকে তাকাও।

তারিন চোখের থেকে কাজল নিয়ে ইশাতের কপালের কোণে একটা ছোট করে টিপ পড়িয়ে দিলো।যদিও টিপটা স্পষ্ট হয়নি।তবুও এতেই তারিনের মন শান্তি হলো।
তারিনঃ এখন আর কেউ নজর দিলেও কাজে লাগবে না।আমার জানুটাকে আমি অন্য কারোর নজর লাগাতে দিবো না।যত নজর আছে সব আমি দিবো।
ইশাতঃ একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না।
তারিনঃ কোন কিছু বেশি হচ্ছে না।আচ্ছা বলতো তুমি আজকে এতো সেজে কার জন্য এসেছো? খবরদার বলে দিচ্ছি এতো মেয়েদের মতো একদম সাজ-গোজ করে আসবে না।যদি আবারও এরকম সাজতে দেখেছি তাহলে পুরো মুখে কালি দিয়ে ভূত বানিয়ে দিবো বলে দিলাম।
ইশাতঃ তুই আমায় থ্রেট দিচ্ছিস??(ভ্রু উঁচু করে)
তারিনঃ যা ভাবো তাই। দাঁড়াও আমি একটা কাজ করছি।তাহলে আর কেউ তোমার দিকে তাকাবে না।

তারিন কথাটা বলেই বেচারা ইশাতের স্পার্ক করা চুলগুলো হাত দিয়ে এলোমেলো করে দিলো।চোখের থেকে সানগ্লাস খুলে ফেললো।
ইশাতঃ তারু কি করছিস? ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। আমার চুলগুলো এলোমেলো কেন করলি? আমার সানগ্লাস ফেরত দে?
তারিনঃ আমার মনে হয় আরো কিছু এলোমেলো করা বাকি আছে। তবে সেটা কি?
মুখে আঙ্গুল দিয়ে নখ কামড়াতে কামড়াতে ইশাতকে ভালো করে লক্ষ্য করতে লাগলো তারিন।ইশাত তো রাগে সাপের মতো ফোঁস ফোঁস করছে।
তারিনঃ পেয়েছি।তোমাকে শার্টটা ইন করে পরতে কে বলেছে?নতুন বেল্ট পরেছো সেটা কি সবাইকে দেখাতে হবে।নো প্রবেলেম আমি শার্টটা বের করে দিচ্ছি।

তারিন যেই ইশাতের কোমড়ে হাত দিয়ে শার্ট বের করতে যাবে তখনি ইশাত এক লাফে পিছনে চলে গেলো।
ইশাতঃ কি করছিস তুই? এটা পাবলিক প্লেস।তুই আমার কোমড়ে হাত দিচ্ছিস কেন? দূরে সর।একদম কাছে আসবি না বলে দিলাম।
তারিনঃ যে যার কাজে ব্যস্ত।কেউ দেখবে না।শার্টটা ওপরে উঠাবে।বেশি কিছু নয়।নেগেটিভ মাইন্ডে নেও কেন?
ইশাতঃ তুই আমার কোমড়ে হাত দিবি না।
তারিনঃ কেন?(কপাল কুঁচকে)
ইশাতঃ আমার কোমড়ে অনেক সুড়সুড়ি।

ইশাতের কথা শুনে তারিন হাসতে হাসতে বসে পড়লো।তারিনের পেট ব্যাথা হয়ে গেছে। কোন ছেলের যে কোমড়ে মেয়েদের মতো সুড়সুড়ি থাকতে পারে সেটা ওর জানা ছিলো না।ও জানতো কোমড়ে শুধু মেয়েদের সুড়সুড়ি থাকে।

তারিনঃ তুমি দেখছি মেয়েদের থেকেও কম না।আমার জানা মতে মেয়েদের কোমড়ে সুড়সুড়ি থাকে।কিন্তু তোমারও আছে।
ইশাতঃ এতো হাসির কিছু হয়নি।অনেক ছেলের কোমড়ে সুড়সুড়ি আছে। শুধু আমার একা নয়।
তারিনঃ আচ্ছা বাদ দেও এসব।চল আমরা কাপল ডান্স করি।
ইশাতঃ তোর সাথে করবো কাপল ডান্স তাও আমি। যা ভাগ এখান থেকে।
তারিনঃ তোমায় কি করে নিতে হবে আমার জানা আছে। তুমি শুধু দেখতে থাকো।

তারিন ইশাতের কোমড়ে হাত দিয়ে সুড়সুড়ি দিতে লাগলো।ইশাত তো সাপের মতো একবার এদিক আরেকবার ঐ দিক মোচড় মারছে।বেচারার অবস্থা নাজেহাল।
ইশাতঃ তারু স্টপ।প্লিজ তারু বন্ধ কর।
তারিনঃ ডান্স করবে চলো।
ইশাতঃ ওকে করবো।প্লিজ তুই বন্ধ কর এসব।

তারিন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ইশাতকে আবার টানতে টানতে নাচের স্টেজে নিয়ে গেল।এক হাত ইশাতকে ধরলো। আরেক হাত দিয়ে ইশাতের একটা হাত ওর নিজের কোমড়ে রাখলো।ডারপর ডান্স শুরু করলো। বক্সে স্লো ভয়েজে ফটো সং বাজছে।

Mee dekhu teri photo, so so bar kure(×2)
K uthde tufan sine bij, so so bar kure (×2)
Tu sapne me ahi hi jati heee,
Tu nid urahi jati heeee….(×2)
Tu mile akbar kure
Mee dekhu teri photo,so so bar kure

???

মায়ের ডাকাডাকিতে তারিনের ঘুম ভাঙ্গলো।মায়ের ধাক্কা খেয়ে খাটের থেকে ধপাস করে পরলো তারিন।হকচকিয়ে উঠে বসে পরলো।বোঝার চেষ্টা করলো ও কোথায় আছে আর কি হয়েছে?তখনি ওর কানের রুশা আহমেদের চেঁচামেচি কানে এলো।

রুশাঃ সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমানো নবাবজাদীর।কলেজে যেতে হবে সে খেয়াল আছে তার।১০ টা বাজে আর সে এখনো পরে পরে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। বলি তারিন এতো বড় হয়েছিস কবে বুঝবি বল? আজ কি নবাবজাদী কলেজ যাবেন না।এসে খাবার খেয়ে আমায় উদ্ধার করুন তো দেখি।আমার যত জ্বালা হয়েছে। এই বিচ্ছু মেয়েকে নিয়ে আমি আর পারি না।

তারিনঃআমার মাথা ভনভন করছে।তার মানে এতক্ষণ আমি ইশাতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখছিলাম।এই মাদার বাংলাদেশটাও ঘুম ভাঙ্গানোর সময় পায় না।কি সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।সেটাও তার সহ্য হচ্ছিল না।আরেকটু পরে ভাঙ্গালে কি এমন ক্ষতি হতো।আসলে আমার ভালো কারো সহ্য হয় না।
(বিরবির করে)
রুশাঃ কি বিরবির করছিস?
তারিনঃ ইশাতকে নিয়ে কত সুন্দর একটা স্বপ্ন দেখছিলাম। সেটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছো তুমি?
রুশাঃ ঝাড়ুর বারি পরলে এমনি তোর সুন্দর স্বপ্ন পালাবে।কয়টা বেজেছে দেখছিস? আজ কি কলেজে যাবি না? ১০ টা বেজে গেছে।
তারিনঃ কি-ই -ই-ই?(চিৎকার দিয়ে)
রুশাঃ জ্বী হ্যাঁ,মহারাণী।
তারিনঃ বাপ–রে।আজ আমার অবস্থা হালুয়া হয়ে যাবে।উষানি আমায় আজ তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।আর আমি ইশাতকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে দেখতে ১০ টা বাজিয়ে ফেলেছি।সরো,সরো আমায় তৈরি হতে দেও।

তারিন কাপড়চোপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
রুশাঃ পাগলী একটা।ইশাত বলতেই অজ্ঞান।ইশাতের জন্য এতো পাগল কেন হলো কে জানে? সারা রুম ভর্তি ইশাতের ছবি।বালিশের নিচেও ইশাতের ছবি।ওর বাবাকে অর্ণবের কাছে ইশাত ও তারিনের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যেতে বলবো।আমার মেয়ে যার কাছে সুখী থাকবে আমি তার হাতেই তুলে দিবো।

রুশা আহমেদ এসব কথা বলে চলে গেল। তারিন ওয়াশরুমের থেকে বের হয়ে তৈরি হচ্ছে।রুমের সারা দেয়াল ভর্তি ইশাতের ছবি।এতটা পাগল ওর জন্য যে বালিশের নিচে,সোফার ওপরে,ডেসিং টেবিলেও ইশাতের ছবি। ওর পাগলামির সবকিছু ওর বাবা-মা জানে।কিন্তু ইশাত জানে না।ওর বাবা-মায়েরও ইশাতকে খুব পছন্দ। তারিন ওর সব কথা বাবা-মাকে বলে।যাতে করে তাদের মধ্যে কোন মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং তৈরি হয় না।তারিন ইশাতের একটা ছবির সামনে গিয়ে গান গাইতে লাগলো।

তারিনঃ Meri good morning tu hee,Meri good night vee tu.A duniya wrong lage,Meri liye right vee tu.Tu ban meri jan kure.

কোনরকম তৈরি হয়ে নিচে নামলো।মায়ের বকার হাত থেকে বাঁচতে একটা পাউরুটির পিস মুখে নিয়ে দৌড়ে পালালো কলেজের উদ্দেশ্য।

???

কলেজ ক্যাম্পাসে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো রুমান,আসাদ,জয়,নিশান।আরান এখনো ওদের মাঝে আসেনি।তখনি সেখানে এলো অনু।অনু ওদের ক্লাসমেট।অনু বেশির ভাগ সময় ওদের সাথে থাকতেই পছন্দ করে। একদম সরল সোজা মেয়ে।

রুমানঃ আবার এসেছিস তুই? সেদিন আমার সব টাকা খরচ করে পকেট খালি করেছিস।দেখিস আল্লাহ তোর ওপর শুকনো ঠাডা ফালাইবো।নয়তো তোর ঐ মেকআপ ভালো হইবো না।তোর মুখে ব্রণ উঠবো।আবার সুন্দর হওয়ার যে ক্রিম কিনছিস সেটা মাখলে ক্যামিকালে তোর মুখ পুড়ে যাইবো।মিলিয়ে নিস আমার কথা।আমার কথা কখনও ভূল হয় না।গরীবের কথা বাসি হলেও ঠিকই ফলে।আমার মতো বোকাসোকা একটা কলুর বলদ মার্কা ছেলে পেয়ে যা করেছিস।আমি দেখে সহ্য করে গেলাম।দেখিস আল্লাহ সহ্য করবে না।ঠিকই তোর বিচার করবে।তোর সব মেকআপ নষ্ট হয়ে যাবে।
অনুঃ অনেক বড় রচনা বলছিস।এবার একটু থাম।পানি খাবি তুই। গলা শুকিয়ে গেছে মনে হয়।
আসাদঃ বেচারা রুমান।
নিশানঃ একদম ঠিক হইছে।এক প্যাকেট সিগারেট খাইতে চাইলে তোর পকেটের থেকে একটা টাকা বের হয় না।এবার বোঝ মজা।
রুমানঃ হারামী তোরা বন্ধু নামে কলঙ্ক। আমার টাকা।তোর মেকআপ ভালো হবে না অনু।তুই দেখে নিস।আমার টাকা,পুরো পকেট খালি করছে??।
জয়ঃ বেশ করেছে।
অনুঃ গাইস আজকে আমায় কেমন লাগছে? আজ আমি রুমান যেই মেকআপগুলো কিনে দিয়েছে সেগুলো দিয়ে সাজ-গোজ করে এসেছি।আজকে আরান আমার দিকে নিশ্চয়ই তাকাবে।
আসাদঃ শেওরা গাছের পেত্নী যত সুন্দর করেই মেকআপ করে আসুক, পেত্নী দেখতে পেত্নীর মতোই থাকে।পেত্নী কি পরী হবে না কি রে?(বিরবির করে)
নিশানঃ বোন তোকে অনেক সুনদর লাগতাছে।এতো সুন্দর আর কি বলবো?আরান তোকে দেখে প্রত্যেকদিন উল্টো দিকে দৌড় দেয়। আজকে তোকে দেখে অজ্ঞান হয়ে পরে যাবে।
রুমানঃ ভাববে এই সাদা পেত্নী আবার কোথা থেকে এলো?
অনুঃ আমায় সুন্দর লাগছে না।(মুখ গোমরা করে)
আসাদঃ কে বলছে সুন্দর লাগছে না? আয় বোন আমার কোলে আয়। আমি তোকে বড় করে কপালে একটা আলকাতরার টিপ দিয়ে দেই।যাতে কারো নজর না লাগে।
জয়ঃ আমি একটা কথা চিন্তা করতাছি অনু।
অনুঃ কি কথা?
জয়ঃ তোরা কি রাতের বেলা লাইট জ্বালাস?
অনুঃ রাতের বেলা লাইট না জ্বালালে চোখে দেখবো কি করে?
জয়ঃ তোর মতো ২ নাম্বার সুন্দরী যে ঘরে আছে সেখানে কি আবার লাইট লাগে।তোর মুখেই তো লাইট জ্বলে। রাতের আঁধারে তোকে রুমে বসিয়ে রাখলেই তো সারা রুম আলোকিত হয়ে যাবে।
অনুঃ ধূর ছেমড়া, কি বলোছ এসব?
নিশানঃ তোকে যে এতো অপমান করি তোর গায়ে লাগে না।অবশ্য লাগবো কি করে মেকআপ আর সুন্দর হওয়ার ক্রিম মেখে তো গন্ডারের চামড়া বানিয়ে ফেলছিস।তাই এতো কিছু বলার পরও তুই বুঝবিও না,শোধরাবিও না।(বির বির করে)

???

নিঃশব্দে গাড়িতে বসে ড্রাইভ করছে জিবরান।ওর পাশে জানালার দিকে তাকিয়ে এক ধ্যানে বাইরের আবহাওয়া উপভোগ করছে উষা।জিবরান নিজ থেকে আজ ওকে কলেজে পৌঁছে দিতে চেয়েছে।উষারও মানা করতে মন চাইনি।

জিবরানঃ আমার মাথাটা বোধহয় গেছে। আমি এতোটা মনভূলো হলাম কি করে?তখন সবার সামনে উষাকে ঐভাবে জড়িয়ে ধরা আমার ঠিক হয়নি। সবাই কি ভেবেছে আমায়? নির্ঘাত বেহায়া ছাড়া আর কিছু নয়।কোন ঘোরে ছিলাম আমি? আসলে উষাকে এতোদিন পরে দেখে আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে যাইনিতো।ধ্যাত,তখনকার কাজের জন্য আমি নিজেই লজ্জিত। কি থেকে কি করে বসলাম?(মনে মনে)
উষাঃ এই মিঃ ছোঁচা?(তুড়ি বাজিয়ে)

জিবরান জোরে ব্রেক কষলো।উষা ওকে ছোঁচা বললো কেন?গাড়ি থামিয়ে উষার মুখের দিকে তাকালো।
জিবরানঃ কি বললে তুমি?
উষাঃ ছোঁচা বললাম গো আপনাকে ছোঁচা বললাম।
জিবরানঃ হোয়াট? আর ইউ মেড? কি বলছো এসব?
উষাঃ এই রে কি থেকে কি বলে ফেললাম?
(জিহ্বা কামড় দিয়ে)
জিবরানঃ তুমি আমায় ছোঁচা বললে কেন?
উষাঃ তো কি বলবো? বড় ভাইয়ু মাত্র একবার খেতে বসতে বললো আর আপনি ওমনি বসে পরলেন।একবার দুইবার তো না ও করতে পারতেন।
জিবরানঃ আমি বড়দের কথা অসম্মান করি না।তাই উনি একবার বলায় বসে পরেছি।উনি না বললেও খেতে বসে পরতাম।
উষাঃ আল্লাহ কি বলে? আপনি দেখছি হাই লেভেলের ছোঁচা। না বললেও বসে পরতেন।আহারে্ কত দিন ধরে বোধহয় ভালো-মন্দ খায়নি? আগে বলতেন আমরা আবার ফকির মিসকিন কে না খাইয়ে রাখি না।এতো ভালো ভালো খাবার দেখে নিশ্চয়ই লোভ মানে নি।(মুখ টিপে হেসে)
জিবরানঃকি আমি ফকির-মিসকিন?(রেগে)
উষাঃ তাইতো মনে হলো।
জিবরানঃ তুমি কিন্তু বেশি বলে ফেলছো।আমার কাছে লাখ লাখ ফকির মিসকিন খাওয়ানোর টাকা আছে।
উষাঃ এই গাড়িটা কি আপনার? নাকি ভাড়া করে এনেছেন? যে না বললেও খেতে বসতে পারে তার কাছে তো নিশ্চয়ই গাড়ী থাকলে সেটা তার নিজের হবে বলে আমি মনে করি না।
জিবরানঃ উষা তুমি কিন্তু তোমার লিমিট ক্রস করে ফেলছো?আরেকটা কথা বললে এখানে নামিয়ে চলে যাবো।
জিবরান উষার অনেকটা কাছে ঝুঁকে এসে কথাটা বললো।উষা ভয়ে চুপসে গেল।চোখ দুটো বড় বড় করে অন্য দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো।

উষাঃ বেশ রাগানো হয়েছে।এর থেকে বেশি রাগালে আমাকে হেঁটে কলেজ যেতে হবে।তারচেয়ে এখন চুপ হয়ে যাই।যদি সত্যি সত্যি আমায় ফেলে রেখে চলে যায়।তখন কি করবো? আমি তো এতোখানি পথ হাঁটতে পারবো না।(মনে মনে)
জিবরানঃ আরো কিছু বলবে নাকি?(ভ্রু নাঁচিয়ে)

উষা অসহায়ের মতো বাচ্চা বাচ্চা ফেস করে মাথা নাড়ালো।এখন কিছু বললে ওকে বিপদে পরতে হবে।
জিবরান ওর সামনে থেকে সরে গেল।উষা বড় করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।এতখন মনে হচ্ছিল জানটা বের হয়ে যাবে। এতো সামনে আসতে হয়।

জিবরানঃ কি চুপ হয়ে গেলেন কেন মিস. উষা মির্জা।
উষাঃ আমি আর কোন কথা বলবো না।এই চুপ হয়ে গেলাম। প্লিজ আমাকে রেখে যাবেন না।
জিবরানঃ মনে থাকে যেনো।
উষাঃ আমি ভাইয়ুদের বলে দিবো তো আপনি আেমার সাথে এরকম করেছেন?।আপনি একটুও ভালো না।অনেক পঁচা। আমার সাথে রাগ দেখিয়েছেন।
জিবরানঃ তোমার ভাইয়ারা আমায় কিছুই বলবে না।
উষাঃ আপনি পঁচা। ই ই ই ই ই ??।

জিবরান উষার এরকম বাচ্চামো কান্ড দেখে মনে মনে হাসছে।স্মৃতি শক্তি হারিয়ে গেলোও আগের মতো দুষ্টামী ও বাচ্চামীগুলো যায় নি।এজন্যই তো বারবার উষার প্রেমে পরে যায় জিবরান।উষা ঠোঁট উল্টে গাল ফুলিয়ে বসে আছে। জিবরান মুচকি হেসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।

#চলবে

#Part_12
https://www.facebook.com/groups/2401232686772136/permalink/2948789465349786/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here